vilen part 23
আনু
কাল বিকেলের দিকে সকল ফর্মালিটি শেষ করে রোজির বাবা ৬ টায় বাসায় এসে পৌছান। রোজির বেশি কিছু হয় নি পেটে লেগেছে তবে বাচ্চা এবং সে সুস্থ আছে। রোজির বাবা ভাবছেন মেয়ে তার খুব ভয় পেয়ে আছে। উশখুশ করছিলো গাড়িতে বসে। রোজির মা মেয়ে কে পেয়ে যেনো পুলোকিত হয়ে মেয়ে এর মুখে চুমু খেতে লাগলেন। সবাই একত্রে বসে গল্প করতে লাগলো। তবে রোজি বেশি কথা বাতরা বলছে নাহ। মেয়ে এর দূর্বলতা বুঝতে পেরে রোজির মা রোজির বাবা কে বললেন,
রোজির মা : শুনছো? হইছে তো মেয়ে টা আমার অসুস্থ ওকে এবার রেস্ট নিতে দাও।
রোজির বাবা : মেয়ে কে এতটা দিন পর পেয়েছি তাই সকল কথা বলতে ইচ্ছে করছিলো।
রোজি যাও মা তুমি রেস্ট নেও। রোজির মা লেমন জুস এগিয়ে দিতে দিতে বললেন। রোজি হাতে নিয়ে সেটা খেলো খেয়ে তারপর উপরে গেলো। গিয়ে দেখলো তার রুম টা এখনো আগের মতোই।রোজি ক্লান্ত থাকায় শুয়ে পরলো আর ঘুমিয়ে পরলো।
এদিকে,
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
নিলয় তখনো কিছুই জানে নাহ। তাই রোজির বাবা রোজিকে নিয়ে যেতেই মেডটি রোহিদকে কল দিলো সকল কিছু জানাতেই রোহিদ তড়িগড়ি করে নিলয়ের কাছে গেলো গিয়ে সকল কিছু বললো। এগুলো শুনে নিলয় রেগে গেলো। নিলয় তাড়াতাড়ি হসপিটাল গেলো। গিয়ে মেডগুলোকে সকল কিছু জিজ্ঞেস করলো। যখন শুনলো রোজি সিড়ি থেকে পড়ে গিয়েছিলো। তাই সে সিসিটিভি দেখলো। দেখলো পড়ে গিয়ে রোজি শুধ তাকে ডাকছিলো মেয়েটা তার পেট চেপেই চিৎকার করছে আর নিলয়কে ডাকছে কল করতে বলছে।
নিজের মধ্যে যেনো অপরাধবোধটা বেড়েই চলেছে।
সেই মুহুর্তে রোহিদ একটু সাহস সঞ্চয় করে নিলয়কে বললো,
রোহিদ : ভাই সেইদিন আপনি যেই চিঠিটা পেয়েছিলেন নাহ এবং আমাকে তদন্ত করতে বলেছিলেন?
নিলয় : হুম?
রোহিদ : ওটা রোজি ভাবির লিখা না আমি রোজি ম্যাম এর লিখা আর ওই চিঠির লিখা মিলিয়েছি।
নিলয় : মিল ছিলো?
রোহিদ : নাহহহ!!!
বলেই একটা সিসিটিভি দেখালো যেখানে একজন লোক চিঠিটি রেখে যাচ্ছে। এটা দেখে নিলয় থমকায় নিজের চোখে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে সে এতটা দিন মেয়েটাকে কষ্ট দিয়ে গেছে। মেয়েটা কষ্টগুলো সয়ে নিয়েছে। নিলয় নিজেকে শক্ত করে রেখেছে। তার মধ্যে আবার ও রেদোয়ান বল্লো,
রেদোয়ান : ভাই ম্যাম সেদিন নিজ ইচ্ছায় ওই
বা* স্টার্ড টার কাছে যায় নি ম্যাম নেশায় ছিলো।
ওই বা* স্টার্ড গুলি লেগেছে বলে ম্যাম অজ্ঞান হয়ে যায় নি ভয়ে ও আতঙ্কে অজ্ঞান হয়েছিলো।
এটা শুনে নিলয় যেনো আর পিছিয়ে গেলো।ধপ করে নিচে হাঁটু গেরে বসলো।সেই মুহুর্তে মেডটি এগিয়ে এসে বল্লো,
মেড : স্যার আপনি বাবা হতে চলেছেন।
নিলয় থমকায় মেডটির দিকে তাকায় জিজ্ঞেস করে,
নিলয় : কক কি ব বল্লে?
মেডটি পুনরায় বল্লো!,
মেড : আপনি বাবা ও ম্যাম মা হতে চলেছেন।
নিলয় উঠে দাড়ায় চোখে বিন্ধু কণা জমেছে গড়িয়ে পড়তে দিলো না ছেলেটা সন্তপর্ণে মুছ নিলো। আভেক ভড়া গলায় বল্লো,
নিলয় : রোদ, রেদু?
রেদোয়ান ও রোহিদ : জি ভাই?
নিলয় : মিষ্টি নিয়াসো পুরো হসপিটালের দেও কেও যেনো বাদ নাহ যায় রাস্তায় রাস্তায় মিষ্টি দেও সবাইকে বলো নিলয় বাবা হতে চলেছে।
ছেলেটা কষ্টের মাঝে সুখ খুজে পেলো। দ্রুতো গাড়িতে নিজেকে চাপিয়ে রোজির বাড়ীর উদ্দেশ্যে বের হলো বের হয়ে রোজির রুমের সিসিটিভি চালু করলো। দেখলো মেয়েটা ক্লান্তি ভড়া মুখে শুয়ে আছে। এলোমেলো কী মায়াবি মুখ। নিলয় বির বির করলো,
নিলয় : সরি মায়াবিনি। আমি খুব বড় ভুল করেছি। জান আমি সব ঠিক করে দিবো
আই সয়ার!!!
নিলয় এগুলো ভাবতে ভাবতে রোজির বাসায় যেয়ে পৌঁছালো। সে বাড়িতে নক করলো রোজির মা এসে তরজা খুলল। রোজির মা নিলয়কে দেখেই দরজা বন্ধ করে দিতে চাইলেন। কিন্তু নিলয় দরজা বন্ধ করতে দিলো না দরজা ধাক্কা দিয়ে খুলে বাড়িতে প্রবেশ করল এনকাণ্ডে রোজির বাবা উঠে দাঁড়ালেন হুংকার ছুড়লেন,
রোজির বাবা : কোন সাহস এখানে এসেছ তুমি? আমার মেয়েটিকে এত পুড়িয়ে শান্তি হয়নি আরো পড়াতে এসেছ?
নিলয় তাদের কথায় পাত্তা দিল না কারণ রোজির বাবা এর আগেও তার সাথে বেইমানি করেছে মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে।
নিলয় : আমার বউ আমার কষ্টের ফসল নিয়ে এখানে চলে এসেছে আমার ফেক্টরি আর প্রডাক্ট এই বাড়ীতে তাই আমিও এই বাড়ীতে।
বলেই নিলয় দুটো মিষ্টি তুলে একটা রোজির বাবাকে আর একটা রোজির মা কে খায়িয়ে দিলো। নিলয় এর এমন লাগামহীন কথায় কতজন চোখ বড় বড় করে নিলয়ের পানে চাইলেন। তার পর নিলয় কিছু নাহ বলে উপরে উঠতে নিতেই রোজির বাবা বললেন,
রোজির বাবা : যাবে নাহ তুমি একদম যাবে নাহ!!!
কথা শেষ করার আগে নিলয় বলল এর আগে আপনার কথা শুনে বউয়ের কাছ থেকে ২১ টা দিন দূরে থেকেছি। আপনার তো বউ আছে আপনি কি বুঝবেন বউ না থাকার জ্বালা?
আমি আপনার কোন কথা শুনছি না। বলেই গট গট করে উপরে চলে গেলো।
সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে যাওয়ার সময় লাগছিল সিড়ির শেষ হচ্ছে না। লাগছে সে তাড়াতাড়ি হাঁটতে পারছে না তাও যত তাড়াতাড়ি যাওয়া যায় কত তাড়াতাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করলে ছেলেটা। কাঙ্ক্ষিত মানুষের রুমটার কাছে যেতেই দাঁড়িয়ে পরল। রুমটায় প্রেবেশ করার আগে বুক ধক ধক করছিল তার! তাও এই দুরুদুরু বুকে আস্তে আস্তে রুমটিতে প্রবেশ করল।
রুমটায় চারিদিক থেকে নিস্তব্ধতা আশেপাশে কোন আলো নেই বুঝার কোন জোর নেই যেখানে কি আছে বা না চারিদিকে তাকালো একটু আলোর সন্ধানে তো কোথাও আলো নেই। জানালার পানে চাইল থাইগুলো লাগিয়ে পর্দা টেনে দেওয়া। তবে এতোটুকু ঠাহর করতে পেরেছে যে রুমে কেউ আছে হয়তো ঘুমাচ্ছে এসি চলছে হালকা পাওয়ারে বেশি গরমও না বেশি ঠান্ডাও না মিডিয়াম। কিন্তু সে তো এর আগে ওই রুমে এসেছে তাই বিছানার ধারে গেল। গিয়ে হাত দিয়ে হাতড়ে হাতড়ে কিছু খোঁজার চেষ্টা করল কাঙ্খিত জিনিসটা খুঁজেও পেল।
সে আর কেউ না তার বউ রোজি!!! হাতটা ধরেছে শুধু এটা রোজি বুঝতে পেরে বেড সাইড টেবিলের ল্যাম্পটা জ্বালালো। অমনি মৃদু আলোতে
রোজির মুখ দেখতে পেলো নিলয়! গুটিশুরি মেরে শুয়ে আছে মেয়েটা। ঠোঁট টা ফুলিয়ে তবে চোখের পাতা ভেজা নিলয় জানে এর কারন তবে সে অনেকটাই অনুতপ্ত!
সে উঠে ওয়াসরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে এলো। নিজের কোর্ট এবং শার্টটা খুলে ফেলল। উদোম শরীরে বিছানার ধারে গেল গিয়ে রোজির সাথে শুয়ে পড়লো রোজিকে টান মেরে নিজের বুকে নিয়ে নিলো। মেয়েটা মনে হয় অনেক গভীর ঘুমে তাই একটু নড়াচাড়া করে আবার ঘুমিয়ে পড়ল তবে ঘুমের মাঝে নিলয় কে শক্ত করে আসতে পৃষ্ঠা জড়িয়ে পড়ল। এটা দেখে নিলয় মুচকি হাসলো রোজির মাথায় হাত বোলাতে লাগলো। হঠাৎ করে আবার উঠে বসলো। উঠে বসে রোজিকে একদম সোজা করে সরিয়ে দিল। রোজির পরনে ছিল কামিজ আর পায়জামা। সে কামিজটা তুলে পাজামাটা একটু নামালো যেন রোজির পেটটা দেখা যায় সে সেখানে হাত বুলাতে থাকে। হাত বুলাতে বোলাতে নিজের ঠোঁটটা রোজির পেটের সামনে নিয়ে যায়।
নিয়ে গিয়ে রোজির পেটে অসংখ্য চুমু খেতে থাকে মাথা দিয়ে রাখে যেন কিছু একটা শুনতে পায় তার অস্তিত্ব রোজির পেটে রয়েছে ঠিক এই খানটায় পেট বরাবর তাকিয়ে করে।
কিন্তু এ তো কয়েক মাসের ভ্রুণ কোন আওয়াজ কোন ইসারা নেই। নিলয় ব্যর্থ হল তাও চুমু দিতে থাকলো যে পেটে। হঠাৎ পেটে সুরসুরি লাগায় ঘুম আলগা হয়ে গেল। আর কয়েকটা চুমু পড়তেই রোজি উঠে বসলো দেখল নিলয় বসা আর বসে বসে ওর পেটে চুমু দিচ্ছে। এটা দেখে তো রোজই আকাশ থেকে পড়ল এবং ভয়ও পেল যে সে তার বাবার সাথে চলে এসেছে তাই নিলয় তাকে মারবে!
সে চোখ মুখ ঢেকে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলো,
রোজি : পি পি প্লিজ আমাকে মারবেন না আমি খুব অসুস্থ আমি অসুস্থ হওয়ার পর আপনাকে অনেক ডেকেছি নেট গুলোকে কল করতে বলেছি কিন্তু আপনি কল ধরেননি তাই বাবার সাথে চলে এসেছি আমাকে মারবেন না প্লিজ!!!!
নিলয় স্তব্ধ!!!!! মেয়েটা তাকে এত ভয় পায় কই আগে তো ছিল না এমন ভয় এখন কেন এত ভয় পায়। নিলয় এতসব না ভেবে দাঁড়ালো যে না রোজিকে ধরতে যাবে তেমনি রোজি লাভ মেরে উঠে দাঁড়ালো। ভয়ে ক্রমশ দেয়ালের দিকে পিছুতে লাগলো নিলয় এক পা এগোলে রোজি দুই পা পেছচ্ছে। রোজি বলতে লাগলো,
রোজি : আমাকে মাফ করে দিন। আমি এখনই আপনার সাথে চলে যাচ্ছি কিন্তু আমাকে মারবেন না প্লিজ।
বলতে বলতে রোজি দেয়ালে মিশে গেল। নিচে বসে পড়ল দেয়াল ঘেঁষে। নিলয় একটু এগোলো এগিয়ে রোজিকে আস্তে করে দাঁড় করালো।রোজিত ভয়ে কাঁপছে নিলয় রোজির চুলগুলো ধরে একটু উপরে তুলল ভয়ে কষ্টে আতঙ্কিত হই রোজির নাক লাল হয়ে যাচ্ছে নিলয় স্নেহভরা স্পর্শ দিল রোজির কপালে। রোজি চোখ বন্ধ করে ফেলল। রোজির কপালে একটা চুমু দিল , রোজি নাকি একটা চুমু দিল, দু গালে দুইটা চুমু দিল আর বললো,
নিলয় : রোজ?
রোজি তাকালো স্তব্ধ সে। নিলয় তাকে আবারো সেই নামে ডাকছে? স্তব্ধতা ভেঙ্গে আবার ডাকলো,
নিলয় : রোজ উওর দিবে নাহ?
রোজি : ককক কী?
নিলয় খুশি হলো। বললো,
নিলয় : ভয় পাচ্ছো?
রোজি : জ জজ জি!!!
নিলয় : কেনো?
রোজি : আপনি মারবেন আমায়?
নিলয় : নাহ জান আমি মারবো না।
vilen part 22
রোজি : আপনিতো মাফিয়া আমাকে মেরে ফেলতে পারেন সাথে চলে এসেছি বলে?
নিলয় হাসলো, চমৎকার একটা হাসি দিল। বলল,
নিলয় : জান তোকে যদি আমি মেরে দেই আমি থাকবো টা কার সাথে?
রোজি : তো এতদিন এমন করলন কেনো?
নিলয় একটু মুখটা নিচু করে বলল,
নিলয় : ভুল বুঝে তবে আমার ভুল এখন ভেঙ্গে গিয়েছে! আমি অনেক অনুতপ্ত আমাকে একটু মাফ করে দিবে বউ?
রোজি : কী ভুল?
নিলয় : অজানা থাকা ভালো সকল কিছু জানতে নেই!