vilen part 25
আনু
চারপাশে বইছে বাতাস হালকা একটু রোদ্দুর! মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে আবার থেমে যাচ্ছে! রোদ্দুর অনেক থাকলেও হালকা বৃষ্টির কারণে চার দিকটা কেমন যেন সাথে হয়ে আছে তবে গরম লাগছে না ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশ! সেই কারণে আজ ছাদে ওঠা।
রোজি নিলয়ের বাড়ী এসেছে আজ তিন দিন হতে চলল। তবে এই লোক বিদেশ গেছে তার কিসের আলতু ফালতু মিটিং এর জন্য। লোকটা হঠাৎ চলে গেছে মিটিংয়ে। নিলয় তো সন্ধ্যায় বাসায় চলে আসে। প্রতিদিনই সন্ধ্যা ছয়টা বা সাতটার মধ্যে বাসায় চলে আসে। কিন্তু আজ রাত দশটা পেরিয়ে গেল নিলয়ের আসার নাম গন্ধ না পেয়ে রোজি নিলায় কে কল করে। নিলয়ের কাছে মিটিং খুবই ইম্পরট্যান্ট হলেও রোজির কাছে এগুলো আলতু ফালতু এইতো দুপুর বেলা বলছিল ফোনে,
রোজি : আপনি কোথায়?
নিলয় : এয়ারপোর্টে!
রোজি : কী??????
নিলয় : বলে আসতে পারি নি তবে টেনশন করো নাহ।
রোজি : আমি একা কেমনে থাকবো?
নিলয় : তোমার আম্মু আর আশাকে আসতে বলেছি।
রোজি : তাই?
নিলয় : Happy?
রোজি : হ্যা।
নিলয় : গুড।
রোজি : কবে আসবেন?
নিলয় : বলতে পারছি নাহ!
রোজি : এই আলতু ফালতু জিনিস কবে শেষ হবে?
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
নিলয় ভোরকে গেল কারন নিলয়ের সাথে মিটিং করার জন্য অনেকে লাইন দিয়ে থাকে কেননা নিলয় বড় মাপের বিজনেসম্যান তার বাহিরে অনেকগুলো শাখা আছে তার মধ্যে নিলয় আবার মাফিয়া নাম ডাক অনেক বেশি আছে!
নিলয় : কী বললা এগুলো আলতু ফালতু?
রোজি : তা নয়তো কি এগুলোর কারণে আপনি আমার থেকে দূরে দূরে থাকেন হুহহহ!
নিলয় : বাসায় আসলে কিছু করতে নিলে আবার লুচু বলবে?
রোজি : নাহ বলবো নাহ!
নিলয় : ওকে এসে দেখবো।
এমনি তাদের মধ্যে অনেকগুলো কথোপকথন হয় রোজা আরো কিছুক্ষণ ন্যাকামি করে তারপর নিলয়ের কিছু কাজ আসতে নিলয় ফোন কেটে দেয় কথোপকথনের ইতি ঘটায়!
রোজী আজকে ছাদে এসেছে।কেননা ছাদে অনেক গাছপালা আছে যেগুলোতে হালকা ফোটো ফোটা বৃষ্টি হওয়ার কারণে পানি জমে গিয়েছে সেগুলো পরিষ্কার করছে এবং গাছগুলো দেখছে এরই মধ্যে চোখে পড়ল বড়ই দেখে তো তার চোখ ছানা বড় ভাবতে থাকে,
রোজি : ওমাগো ছাদে আমার প্রিয় ফল আগে জানতাম না গাছ পুরো টৈটুম্বুর আমি তিনদিনে শেষ করে ফেলব! 🙂
বলেই ছাদ থেকে ছেড়ে মেয়ে কে ডাকতে লাগলো,
রোজি : এই শিউলি আছো আমাকে মরিচের গুরো লবণ এনে দাও???
কিছুক্ষণ পর একটি মেয়ে আসে যে কিনা নতুন কেননা এই মেয়েটিকে রাখার কারণ হচ্ছে এই মেয়েটি অনেক কিছু জানে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে জ্ঞানী বললে ভুল হবে কারন সকল কিছুতে জ্ঞানী মেয়েটি মোটামুটি নাম শিউলি। তাই নিলয় এই মেয়েটিকে রোজের খেয়াল রাখার জন্য রেখেছে যেন রোজির কিছু হলে এই মেয়েটি কিছু না কিছু করে রোজির খেয়াল রাখে।
মেয়েটা দৌড়ে ছাদে এলো রোজির কথামতো জিনিস নিয়ে রোজি মেয়েটির হাত থেকে ছোঁ মেরে কৌটা নিয়ে নিল এবং বড়ই গাছের নিচে বসে বড়ই পেরে পেরে খেতে লাগলো। মেয়েটার মুখেও জল চলে এসেছে। মেয়েটা রোজির দিকে তাকিয়ে আছে এটা দেখে রোজি বললো,
রোজি : নজর দিচ্ছো?
শিউলি : না ম্যাম।
রোজি : ম্যাম বইলো নাহ আপু বলো।
রোজি আবার বললো,
রোজি : তাকিয়ে না থেকে ছিড়ে খাও আমি তোমাদের স্যার এর মতো এতটা নির্দয় না!আর এমনি তাকিয়ে থেকো না আমার বাচ্চার পেট ব্যথা করবে!!
মেয়েটা ভরকে গেলো তাও কিছু বললো নাহ এমনি ই মেয়েরা টক দেখে পাগল হয়ে যায়। মেয়েটা একটু একটু করে খেতে লাগলো। রোজি একটু মেখে দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে এটা একজন মেড ভিডিও কলে দেখাচ্ছে নিলয়কে। অনেকখন পর আশা এলো। আশা এর আগে কখনো নিলয় দের বাসার ছাদে আসেনি । এসে নিজের বোনকে এভাবে টক খেতে দেখে এবং সাথে মেয়েটা কিভাবে টক খেতে দেখে নিজের লোক যাবে সে দৌড়ে বোনের কাছে গিয়ে বসলো নিজে একটা একটা করে ছিড়ে খেতে লাগলো। কেননা বড়ই গাছটা বেশি বড় না এটা বাহিরে গাছ তাই নিচ থেকে ফল হওয়া শুরু হয়েছে। বসে বসে কি শুয়ে শুয়ে পেড়ে খাওয়া যাবে। রোজি আশাকে নিজের পাশে বসতে দেখলে জিজ্ঞেস করল,
রোজি : মা কই?
আশা : নিচে!
রোজি আশার মাথায় গাট্টা মেরে বললো,
রোজি : আমি ও তো জানি মা নিচে, করছে টা কী এটা বল গাঁদি।
আশা : তোর জন্য হ্যেলদি ফুড বানায় মানে নুডুলস।
নিলয় অনেক কেয়ার ফুল রোজির প্রতি তাই রোজির মাকে সকল কিছু বুঝিয়ে দিয়ে গেছে যেন বাহির কোনো কিছু নাহ খায় ও। তাই রোজির মা চালের গুরো দিয়ে ঘরে নুডুলস বানাচ্ছে সেটা সেদ্ধ করে ওলিভওয়েন দিয়ে রান্না বসান। রোজির প্রতেকটা খাবার বাসায় বানানো। রোজির মা তাই সকল কিছু বাসায় বানান তবে একা নয় মেড আছে তারা সাহায্য করে। আশা কথা শুনে রোজি বললো,
রোজি : ওকে খাবো নুটুস।।।।
বলেই খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো। এটা দেখে শিউলি ও আশা ও হেসে উটলো। এমনি কেটে গেলো ২ দিন। রোজি ও আাশা শিউলিস সাথে অনেক ক্লোজ হয়ে গেছে। মনেহয় যে ৩ টা ফ্রেন্ড। রোজি বেশিরভাগ সময় ওদের সাথে কাটায় কিন্তু রাতে ঘুমতে গেলে নিলয়ের কথা মনে পরে। কিন্তু লোকটাকে কলে সে পায় না। অনেক ব্যাস্ত মনে হয়। অভিমান হয় রোজির কিন্তু পরোক্ষনে মনে পরে যে লোকটা তো তাদের জন্যেই কষ্ট করছে। নাহলে সে যেই লুচু রোজিকে ছাড়া থাকতে পারে?কী যেনো একটা ভেবে সে নিলয়কে কল করে। নিলয় কল ধরতেই রোজি খুশি হলো যাক লোকটা কল ধরেছে,
নিলয় : হ্যালো রোজ?
রোজি :।।।।।।।
নিলয় : রাগ করেছো জান?
রোজি : হুহহহহহ
নিলয় : কাজ শেষ জান ২ দিন পর আসবে বন্ধুদের সাথে একটু ঘুড়ি?
রোজি এটা শুনে কল কেটে নিলয়কে ভিডিও কল দিলো। নিলয় কল ধরেই শুখনো ঢোক দিলো।কারন রোজি ইনার পরে ভিডিও কল করেছে। ফোকাস দিয়ে রেখেছে নিজের বক্ষস্থলে। নিলয় খালি ঢোক গিলছে। রোজি ঠোঁট দিয়ে চুমু দেখাচ্ছে। ঠোঁট গোল করে বিভিন্ন বঙ্গিমা করছে। এগুলো দেখে নিলয় পাগল প্রায়। নিলয় বললো,
নিলয় : জান থাম বলছি।
রোজি : ননন নো
নিলয় : জান কন্ট্রল হাড়িয়ে ফেলছি কিন্তু।
রোজি : আমি কী করবো তাতে?
নিলয় : আমি দাড়িয়ে যাচ্ছি জান থাম তুই এতো দূর আমি কী করবো?
রোজি : হুহহহহহ।
নিলয় : আমার গরম করলে কিন্তু তোর খবর আছে।
রোজি : করবোই!!!
নিলয় কল কেটে দিলো রোজির এটা দেখে মুখে আধার নেমে এলো। তখন ঠিক রাত ৯ টা রোজি আর কিছু নাহ করে ঘুমিয়ে পরলো। প্রায় মধ্যরাত প্রায় ৫ টা ছুই ছুই। বিছানায় নিজে একা থাকা শর্তেও মনে হচ্ছে অন্যজনের উপস্থিতি। ভাবলো ভুমিকম্প হচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ,
নিলয় : বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বানা, ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাজাক্বতানা।
বলেই দিলো একটা ওমনি রোজি,
রোজি : আহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহহ!
রোজি : আ আ আপনি?
নিলয় : কাকে ভেবেছিলে?
রোজি : আমি ভয় পেয়ে গেছি আর কী করছেন ছাড়ুন আমায়।
নিজেকে ছারাতে ছারাতে বললো রোজি। নিলয় রোজিকে জাপটে ধরলো বললো,
নিলয় : নড়বি নাহ বউ ।
রোজি : বাবুর কিছু হয়ে যাবে তো?
নিলয় : ১ মাস ও হয় নি ডাক্টার থেকে পারমিশন নিয়েছি।
রোজি : এতো রাতে ডাক্টার পেলেন কই?
নিলয় : শালাকে হাজারটা কল দিসি ধরে নি তাই বাসায় গিয়েছি দেখি বউ এর সাথে ১/১ করছে তাই বউকে তুলে নেয়ার হুমকি দিয়েছি আর কী বেটা সকল ফাইল বের করে তারপর পারমিশন দিয়ে দিসে।
রোজি : ছাড়ুন কী করছেন বিদেশের খাবার খেয়ে পাওয়ার বেড়ে গেলো নাকি!!
নিলয় : ৬ দিন বউকে ডিএনএ দেই নি তাই সব একত্রে হয়ে পাওয়ার বেড়ে গেছে আবার তুই বউ যা দেখালি আমাকে তাই এভাবে আসতে হলো এতোটুকু তো তোর পাওনা তাই নাহ?
বের হওয়ার পরপর নিলয় রোজিকে দুধের গ্লাস এগিয়ে দিল আর বললো,
নিলয় : এটা খাও ?
রোজি : চুপ করুন কথা বলবেন না।
বলেই মুখ ফুলিয়ে রাখলো। নিলয় আর কী বলবে ওটা খেতে ইশারা করলো। কিন্তু রোজি ডানে বামে মাথা নাড়লো মানে সে খাবে নাহ। এটা দেখে নিলয় চোখ রাঙ্গিয়ে বললো,
নিলয় : এটা খাবে নাহ আমার কিছু করতে হবে?
এটা শুনে রোজি বড় বড় চোখ করে নিলয়ের পানে চাইল। রোজি জিজ্ঞেস করল,
রোজি : আপনি একটা ঠোটকাটা কেন?
নিলয় : বউয়ের কাছে ঠোট কাটা না হলে কার কাছে গিয়ে ঠোঁট কাটবো শুনি?
রোজি : আপনার মাথায় এসব কথা কে দেয়?
নিলয় : তুমি ছাড়া কে দিবে?
রোজি ভাব নিয়ে বললো,
vilen part 24
রোজি : মোটেও আমি এসব কথা বলিও না এবং আপনার মাথায়ও দেই না!
নিলয় : যাত এগুলো বাদ দাও এখন গ্লাসটা ফিনিশ কর।
রোজি হাত দিয়ে নাক চেপে ধরে তারপর গ্লাসটা পুরো ফাঁকা করে দিল। তারপর দুজনে বারান্দায় গেল কেননা এটা সকাল টাইম। বারান্দায় গিয়ে দুজনে অনেক খুনসুটি করলো হাসি তামাশা করল নিলয় রোজির চুল গুলো মুছে দিল রোজি ওর নিলয়ের চুল গুলো মুছে দিলো। নিলয় বারান্দার দোলনাটায় বসা এবং রোজি তার কোলে এভাবে বসে বসে দুজন সূর্যোদয় দেখল। তারপর দুজনের ঘরে এসে একটু ঘুম দিলো।