vilen part 31

vilen part 31
আনু

“”কিছুসময় আমাদের কাছে কিছু জিনিস অল্পতে অনেকটাই আপন হয়ে যায় তা হতে পারে কোনো মানুষ বা কোনো জিনিস!””
নিলয়ের কাছে রোজি তেমনটাই। অল্পকিছু দিনে ছেলেটার মনে মেয়েটার রাজত্ব। কিন্তু যদি সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিকে অন্য কারো সঙ্গে দেখা যায় মস্তিষ্ক ঠিক থাকে নাহ। নিলয়ের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে সেদিন আরুসকে রোজির এতোটা কাছাকাছি দেখে নিলয়ের মাথা ঠিক ছিলো নাহ। আবার রোজির খোঁজ চালাতে নিলয়ের এত পাহারা দেয়া বাড়িতে ড্রোন আসেছে। এটা নিয়েও নিলয় খুব দুশ্চিন্তায় ছিল। তাই রোজিকে বারান্দায় সহ যেতে মানা করেছিলো। কিন্তু রোজি তা মানে নি। বাদরের দল নিয়ে বাহিরে চলে গেছে। গেছে তো গেছে শিকারীর কাছে গেছে।

-কিংহুর ছোটো ভাই এই আরুস যাকে রোজির সাথে তাদের বিয়ে হওয়ার আগে দেখে রোজিকে তুলে নিয়ে ছিলো নিলয়। কিন্তু রোজিকে তা জানায়নি। কেননা রোজি দুশ্চিন্তায় পড়ে যাবে। তবে রোজি তো আরুসকে বন্ধু ভাবতো। কিন্তু আরুস তাকে বন্ধু ভাবতো নাহ। রোজিকে মন ই মন পছন্দ করতো। যখন শুনলো নিলয় জোর খাটিয়ে রোজিকে বিয়ে করেছে তখন আরুস ভেবেছে রোজিকে সে তুলে নিবে। কিন্তু রোজির মোবাইল বন্ধ ছিলো। নিলয় রোজির সিমকার্ড পাল্টে দিয়েছিলো। তার পাশাপাশি এতোটা পাহারায় ছিলো রোজি বাহিরে গেলে নিলয় সাথে থাকতো। নিলয় যেতে নাহ পারলে গার্ড থাকতো সাথে তো আশা ও শিউলি আছেই। তবে সে জানতো আরুস রোজিকে ছাড়বে নাহ।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

এ সকল কিছু নিলয় আরুসের এক ক্লোজ বন্ধুর কাছ থেকে জেনেছে। তবে রোজিকে কিছু জানায় নি সে ভাবেছে রোজিকে নাহ করলে রোজি বের হবে নাহ কিন্তু তাকে ভূল প্রমান করে দিয়ে রোজি বাহিরে বের হয়েছে। রোজিকে জানানোর প্রয়োজন মনে করে নি কারন আরুস কিছুদিন নিস্তব্ধ ছিল তার কিছুদিন খোঁজ ছিল না। এটাও নিলয়ের কাজ ছিলো। তবে রোজি প্রেগনেন্ট এটা জানার পর আরুস মরিয়া হয়ে উঠেছিলো রোজিকে তার করে নিতে। তাই রোজি বের হয়েছে খবর আসতেই আরুস ছুটে গিয়েছিলো। এমন অভিনয় করেছে যেন তাদের অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে দেখা হয়েছে। বোকা রোজিটাও তাই বিশ্বাস করেছে।

নরম বিছানায় শুয়ে আছে রোজি। শরীরে জরানো সাদা ব্ল্যাঙ্কেট। হালকা রোদের ঝলক মুখে পরতেই ঘুম ভাঙলো। পিটপিট করে চোখ খুললো। আরমোরা ভেঙে পাশে তাকাতেই দেখলো নিলয় নেই। রাতরের কথা মনে করতেই চোখের কোন ঘেষে চিকন পানির স্রোত নামলো। হাত দিয়ে মুখ চেপে কান্না আটকানোর বেথর্ চেষ্টা করছে। অনেকখন পর চোখ মুছে একটু নরতেই অনুভব করলো পেটে চিনচিনে ব্যথা তবে পাত্তা দিলো না একপ্রকার অগ্রাহ্য করে বিছানা থেকে নামলো হাটতে কষ্ট হচ্ছে। বুঝে গিয়েছে তার উপর নিজের সব রাগ ঢেলেছে নিলয়।

একদম গোসল শেষ করে নিচে আস্তে আস্তে নামলো রোজি। যেয়ে দেখলো শিউলি নেই নিচে আশা বসে আছে মুখে চিন্তার ছাপ। নিলয়রা অফিস চলে গেছে। রোজি খুরাতে খুরাতে এগিয়ে গেল।
রোজি : আশা শিউলি কই রে?
আশা রোজির গলা শুনি রোজির দিক তাকালো। রোজি আশার মুখ দেখে অবাক হয়ে গেলো চোখ লাল হয়ে আছে, গালে থাপ্পরের দাগ, শরীরে কামড়ের দাগ। গলা শুকিয়ে এলো রোজির। আশার শরীরে ব্যথা থাকা শর্তেও এক প্রকার ছুটে গেলো রোজির কাছে গিয়ে জোরে জরীয়ে ধরলো।
রোজি : আ’হহহহ!!! আশা আমার শরীরে ব্যথা।
আশা দ্রুতো ছেড়ে দিলো রোজিকে। তারপর বললো,
আশা : আপু সরি সরি।
রোজি : কীরে তোর কী হয়েছে?

আশা চুপ করে আছে যতোই হোক বোন লাগে এগুলো শেয়ার করা যায় নাহ একদম। আশাকে চুপ দেখে রোজি যা বুঝার বুঝে নেয়। এটা তাদের স্বামী ও স্ত্রী এর মেটার এখানে তার কথা বলার দরকার নেই। তবে শিউলির কথা মনে পরতেই রোজি দুর্বল গলায় আবার আশাকে জিজ্ঞেস করল,
রোজি : কীরে বললি নাহ শিউলি কই?
আশা ইতস্তত বোধ করে মিন মিন করে,
আশা : আপু মানে তুমি একটু যাও আমি ও আসছি।
রোজি কিছু বললো নাহ সে বুঝলো আশা বলতে চাইছে নাহ সে কথা বাড়ালো নাহ শিউলির ঘরের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো। “মেয়েটা তো এমন নাহ কী হলো ওর সকাল সকাল রোজির কাজ নাহ করলে মেয়েটার পেটের ভাত হজম হয় নাহ রোজি কত মানা করতো যে শিউলির করা লাগবে নাহ তাও নিজের বোনের মত খেয়াল রাখতো ” আনমনে এগুলো ভেবে খুরাতে খুরাতে শিউলির ঘরে গেলো।

শিউলির ঘরের সামনে যেতেই রোজি দেখলো দরজা চাপানো। “মেয়েটা তো দিনে দরজা চাপায় নাহ কী হলো ওর ” ভেবেই তাড়াতাড়ি দরজা খুল্লো খুলো রোজি ভয় পেয়ে গেলো শিউলি বিছানায় আধশোয়া হয়ে আছে। চুল উস্কো খুশ্কো শরীরে রাতের অত্যাচার। দু গালে পাচ আঙুল এর দাগ কালসিটে হয়ে আছে। রোজির বুকটা দক করে ওঠে। দ্রুতপ্রায়ের কাছে গেল শিউলিকে বুকে জরীয়ে মাথায় হাত বুলাতে লাগলো। শিউলি রোজির বুকে কান্না করতে লাগলো।
শিউলি : রররোজ আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে উনি আমার সাথে এমনটা কেনো করলো?
রোজি কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। রোজি শিউলিকে বুঝালো,
রোজি : দেখ রোদ ভাই রেগে গেছিলো রোদ এমন নাহ শুন যারা তোকে ভালোবাসবে তারাই রাগ দেখাবে।
শিউলি : হুমমমম!
অনেকখন কথা বলে শিউলি ফ্রেস হতে গেলো। রোজি আশাকে অনেকখন বুঝিয়েছে যেনো রোহিদ এর সাথে তর্ক নাহ করে আরও অনেক কিছু। কিন্তু মনই মন তার নিলয়ের প্রতি চাপা অভিমান কাজ করছে।

সকলে ফ্রেশ হয়ে বের হতেই মেডরা টেবিলে ব্রেকফাস্ট দিল তারা বসে আস্তে ধীরে খেয়ে নিল। যে যার মত রুমে চলে গেল। ইতিমধ্যে রোজির পেটের ব্যথাটা অনেকটা বেড়ে গেছে। কিছু ভালো লাগছে নাহ। বিছানায় শুয়ে পরলো পেটটা চিন চিন করছে সহ্য করতে নাহ ফুঁপিয়ে উঠলো রোজি। অনেকখন এপাশ ওপাশ করলো রোজি। আর সহ্য হচ্ছে না আস্তে আস্তে কাউকে ডাকার চেষ্টা করলো রোজি কিন্তু কেউ এলো নাহ।গলায় কথা দলা পাকিয়ে যাচ্ছে দম বন্ধ লাগছ রোজির। অতিরিক্ত ফর্সা হওয়ায় মুখ নিল হয়ে আসেছে রোজির। আস্তে আস্তে উঠে বসতেই মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো। আর নাহ পেরে নিচে পরে গেলো রোজি। হাতে লেগে কাঁচের গ্লাস নিচে পরে ভেঙে বিকট শব্দ করে উঠে।

নিলয়,রোহিদ,রেদোয়ান বাসায় এসেছে সোমবার তারা দুপুরে চলে আসে। তারা এসে সবে মাত্র ড্রয়িংরুমে বসেছে ওমনি নিলয়ের রুম থেকে এমন বিকট শব্দ পেয়ে পিলে চমকে ওঠে তাদের। নিলয় দ্রুত নিজের রুমে ছুট লাগায়। যেয়ে রোজিকে পেট ধরে এমনি কাতরাতে দেখে,
নিলয় : রোজজজজজ!!!!!
নিলয় দ্রুতো রোজিকে তুলে বিছানায় নিলো। নিলয় কিছু বুঝতে পারছে নাহ। বার বার জিজ্ঞেস করছে,
নিলয় : কাল ব্যথা পেয়েছ? কী হয়েছে বলো জান প্লিজ আমি বুঝতে পারছি নাহ তো।
রোজি কিছু বলতে চাইছে পারছে নাহ। নিলয় আর নিতে পারলো নাহ রোহিদকে গাড়ি বের করতে বললো। রোজিকে আস্তে কোলে তুলে হসপিটালের নিয়ে যেতে লাগলো। নিলয় কখনো রোজিকে কপালে চুমু দিচ্ছে, মাথায় হাত বোলাচ্ছে। কিন্তু রোজির কিছুই হচ্ছে নাহ,

রোজি : নননিলয় আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে কিছু করুন প্লিজ।
নিলয় এর বুক দুরু দুরু করছে। বুকটা ফেটে যাচ্ছে। হসপিটালের পৌছে নিলয় রোজিকে কোলে তুলে ভেতরে গেলো। আশা ও শিউলি কাদতে কাদতে এগিয়ে যাচ্ছে রোহিদ ও রেদোয়ান তাদের সামাল দিচ্ছে। ডক্টর রোজির এমন অবস্থা দেখে রোজিকে দ্রুতো নিয়ে গেলেন।
হসপিটালের ওয়েটিং রুমে বসে আছে নিলয় মুখে চিন্তার ছাপ। নিজের চুলগুলো খামচে ধরলো রাগে নিজেকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে। প্রায় ৪২ মিনিট পর ডক্টর বের হলেন নিলয় তারাতারি গেলো।
ডক্টর : মিস্টার নিলয় আপনার ওয়াইফ ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নিশ্চয়ই আপনি জানেন?
নিলয় : কথা ঘুরাবেন নাহ সোজা বলুন!

ডক্টর ঢোক গিলে তার মহিলা সহকর্মীকে ডেকে বুঝাতে বললেন। মহিলা ডক্টরটি বললো,
ডক্টর : আপনার ওয়াইফ প্রেগনেন্ট এসময় আপনারা একসঙ্গে থাকতে পারেন তবে এতোটা রুড হওয়া আপনার ঠিক হয় নি। দয়া করে সামনে এমন করবেন নাহ।
নিলয় শক্ত মুখে তাকিয়ে রইলো মুখের ভঙিমা চেন্জ হলো নাহ শক্ত মুখে বললো,
নিলয় : ও ঠিক আছে?
ডক্টর : জি আপনার বাচ্চা ঠিক আছে।
নিলয় : আমি আমার ওয়াইফ এর কথা আস্ক করেছি?
ডক্টর : জী উনি বিপদ মুক্ত।

vilen part 30

ডক্টর আরও অনেক কিছু বলে চলে গেলেন। নিলয় রোজির কেবিনে গেলো তার জান টা শুয়ে আছে যেনো বেডে মিশে যাবে। মুখটা ফেকাসে হয়ে আছে। ঠোঁট শিকিয়ে আছে নিলয় শব্দ করে রোজির ঠোঁটে চুমু খেলো। নিলয় প্রায় অনেকখন রোজির মাথার কাছে বসে রইলো। রোজির এক হাত ধরে। কপালে চুমু দিয়ে অওরালো,
নিলয় : আম সরি রোজ, আমি এমনটা করতে চাই নি। আমার রাগ উঠলে আমি হিংস্র হয়ে যাই। আমি নিজেকে কন্ট্রল করতে পারি না সরি সরি সরি!!!!

vilen part 32

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here