সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি পর্ব ২০
Jannatul Firdaus Mithila
~ জানবাচ্চা,চোখ খোল! তাকা আমার দিকে সোনা!কিচ্ছু হবে না তোর।আমি থাকতে তোর গায়ে একটা আঁচড়ও পড়তে দিবো না! এ-ই, এই জানবাচ্চা! কোথায় কষ্ট হচ্ছে তোর!
অরিন আর কি বলবে! ফোবিয়ার কারনে সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারায় তার রোদ ভাইয়ের বাহুডোরে।
রৌদ্র অরিনের জ্ঞান চলে যাওয়ায় অস্থির হয়ে ওঠে। অরিনের দুগালে হালকা চাপড় দিতে থাকে কিন্তু নাহ! অরিনের কোন হুঁশ নেই।রৌদ্র আর দেরি না করে অরিনকে পাঁজা কোলে তুলে নেয়।হেটে চলে গাড়ির দিকে। অনিককেও চোখ দিয়ে ইশারায় সঙ্গে আসতে বলে। রৌদ্র গাড়ির ব্যাকসিটে চলে যায় অরিনকে কোলে নিয়ে, অনিককে আদেশের সুরে বললো,
~ ড্রাইভ কর!
অনিকও সম্মতি জানায়।দ্রুতপদে বসে পড়ে ড্রাইভিং সিটে।অতপর কালবিলম্ব না করে গাড়ি স্টার্ট দেয়।
রৌদ্র অরিনের নিশ্চল মুখশ্রীর দিকে অনিমেষ চোখে তাকিয়ে রয়। তার চোখ বেয়ে অরিনের গালের ওপর গড়িয়ে পড়ে দুফোটা নোনা জল! রৌদ্র সময় নিয়ে পলকহীন তাকিয়ে থাকে সেই অশ্রুকনার দিকে।যত্নের সহিত দু-আঙুলের সাহায্যে মুছে দেয় অবলীলায় গড়িয়ে পড়া অশ্রুকনাগুলো!পরে হালকা নাক টেনে, জ্ঞানহীন অরিনের মাথায় আলতো হাতে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। অনিক ড্রাইভিং করার ফাঁকে ফাঁকে লুকিং গ্লাসে এসব দেখছিলো। পরে একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবারও মনোযোগ দেয় ড্রাইভিং-এ।অনিকের মাথায় এখন অসংখ্য চিন্তা। কিভাবে বাসায় অরিনের সাথে হওয়া দূর্ঘটনার কথা বলবে? কিভাবে সবটা সামাল দিবে? অনিক যখন এসব ভাবনায় মশগুল তখন পেছন থেকে রৌদ্রের রাশভারি কন্ঠ কানে আসে তার,
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
~অনিক! গাড়ির সামনের ড্রয়ারে পানির বোতল আছে। পাস কর! আর সামনে যে হসপিটাল আগে আসবে সেখানেই গাড়ি থামাবি।
অনিক সবটা শোনে।ঘাড় নাড়িয়ে একহাত গাড়ির স্টিয়ারিং-এর ওপর রেখে অন্যহাত দিয়ে পানি এগিয়ে দেয় ব্যাকসিটে।রৌদ্র পানি নিয়ে নিজের পকেটে থাকা রুমালটি বের করে ভিজিয়ে নেয় কিছুটা।ভেজা রুমাল দ্বারা ধীরে ধীরে মুছে দেয় অরিনের মুখমণ্ডল। কাজ শেষ করে রৌদ্র এবার অরিনের পালস রেট চেক করে। একহাত দিয়ে অরিনের পালস চেপে ধরে অন্যহাতে থাকা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে থাকে। অরিনের পালস রেট বেড়ে গিয়েছে অনেকটা। রৌদ্র চিন্তায় আবারও হাসফাস করে ওঠে। অনিককে আবারও তাড়া দিতে থাকে,
~ অনিক! গো ফাস্ট।
অনিক কিছু না বলে শুধু মাথা ঝাকায়। অতপর প্রায় বিশ মিনিটের মাথায় তারা পৌঁছে যায় একটি হসপিটালে।রৌদ্র কোনোরূপ সময় নষ্ট না করে অরিনকে ফের কোলে তুলে হাটা ধরে হসপিটালের ভেতর।অনিক এবার রৌদ্রের পথ আটকায়।কাতর চোখে তাকায় ভাইয়ের দিকে।রৌদ্র অনিকের হাবভাবে ভ্রু কুচকায়। মেজাজ দেখিয়ে বলে,
~ হোয়াট? পথ আটকে দাড়িয়েছিস কেন?
অনিক আমতা আমতা করে, কাতর গলায় বলে,
~ইয়ে,ভাইয়া বলছিলাম কি,বনুকে নাহয় আমি নিয়ে যাই ভেতরে!
রৌদ্রের মেজাজ মুহুর্তে বিগড়ে যায়। চোয়াল শক্ত করে ধমকে বললো,
~এটা নাটক করবার সময় না অনিক।সর সামনে থেকে! আর এমনিতেও কয়েকদিন পর থেকে ওর সবকিছু আমিই করবো সো ধরে নে এটা প্রি-ওয়ার্ক!
কথা শেষ হওয়া মাত্র আর একমুহূর্ত দেরি করলো না রৌদ্র। গটগট পায়ে এগিয়ে যায় হসপিটালের ভেতর। অন্যদিকে পেছনে এখনো হতবিহ্বল হয়ে দাড়িয়ে আছে অনিক।ভাবছে,— কি বললো রোদ ভাই! এটা তার প্রি- ওয়ার্ক মানে? বনুর জন্য তার রোদ ভাইয়ের মাথাটা কি একেবারেই গেলো নাকি!
অনিক রৌদ্রের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে এখনো।নিজ চোখে অবলোকন করছে একজন উম্মাদ প্রেমিকের উম্মাদনা।তার বনুর জন্য রোদ ভাইয়ের এমন পজেসিভনেস, কেয়ারিং বিহেভিয়ার দেখে অনিক মুগ্ধ! প্রতিটা ভাই নিজের আদরের বোনের জন্য হয়তো নিঃসন্দেহে রৌদ্রের মত মানুষকে চাইবে।অনিক মুখে প্রশান্তির হাসি টানে।মনে মনে দোয়া করে,
“এই জুটি যেন সারাজীবন অটুট থাকে”
রৌদ্র অরিনকে নিয়ে একটি কেবিনে চলে আসে।সেখানে আগে থেকেই দুজন নার্স উপস্থিত ছিলো।নার্স দুজন রৌদ্রকে দেখে হা করে তাকিয়ে থাকে।রৌদ্র তাদের দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে নিজের পরিচয় দেয়।নার্সরাও আর তেমন কোন বাধা দেয় না তাকে। রৌদ্র অরিনকে বেডে শুইয়ে দেয়। অতপর নিজেই শুরু করে অরিনের ট্রিটমেন্ট। রৌদ্র প্রথমে অরিনের প্রেসার চেক করবে বলে নার্সদের দিকে না তাকিয়েই বললো,
~গিভ মি দা স্টেথোস্কোপ!
নার্স দুজনের কেওই কি শুনলো সে কথা? নাহ শুনলো না তো! এই যে এখনো তারা কেমন হা করে তাকিয়ে আছে রৌদ্রের দিকে।রৌদ্র এবার তাদের দিকে দৃষ্টি আনে।সঙ্গে সঙ্গে আবারও মেজাজ হারায় ও। কর্কশ গলায় খেঁকিয়ে বলতে থাকে,
~স্টপ স্টেয়ারিং মি লাইক দিস! আ’ম নট এন এলিয়েন। কাজ করতে না পারলে এখান থেকে বের হন দুজন আর শীঘ্রই অন্য কাওকে পাঠান।
নার্স দুজন রৌদ্রের কথায় হকচকিয়ে একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে। রৌদ্র আবারও খেঁকিয়ে ওঠে,
~ কি হলো? যান এখান থেকে!
নার্স দুজন এবার আমতা-আমতা করে। একজন মিনমিনিয়ে অপরাধীর সুরে বললো,
~সরি স্যার আর হবে না।এই নিন স্ট্যাথোস্কোপ।
বলেই স্ট্যাথোস্কোপটি এগিয়ে দেয় রৌদ্রের সামনে। রৌদ্র একবার সেদিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে ফোস করে নিশ্বাস ফেলে।অতঃপর মনোযোগী হয় অরিনের দিকে। রৌদ্র অরিনের প্রেসার চেক করে দেখে অরিনের প্রেসার ফল করেছে।রৌদ্র নার্সকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই তাদের মধ্য থেকে একজন আগে-ভাগে অরিনের জন্য স্যালাইন রেডি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। রৌদ্র আর কিছু বলে না।অরিনকে স্যালাইন লাগানোর আগে অপর নার্সকে আদেশের সুরে বলে,
~ওকে পেশেন্ট ড্রেস পরিয়ে দিন।আর হ্যা অবশ্যই সাবধানে।
বলেই রৌদ্র বাহিরে যেতে উদ্যোত হয়।নার্সটি রৌদ্রের কথামতো অরিনকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।তারাহুরো করতে গিয়ে অরিনের গলার কিছুটা নিচের দিকে অরিনের গলায় থাকা চেইনের আঁচড়ে অল্প একটু কেটে যায়। নার্সটি সেখানে তেমন কোন পাত্তা দেয় না। কিন্তু তখনই পেছন থেকে ভেসে আসে এক বিরাট ধমক,
~হেই! ইউ ইডিয়ট, হোয়াট ইউ হেভ ডান!
রৌদ্র তারাতাড়ি এগিয়ে আসে অরিনের কাছে।গলার নিচে লেগে থাকা তরলের দিকে তাকিয়ে সঙ্গে সঙ্গে চোখ বন্ধ করে দুহাত মুষ্টিবদ্ধ করে নেয়।পরক্ষনেই রৌদ্র চোয়াল শক্ত করে তাকায় নার্সটির দিকে।নার্সটি রৌদ্রের এভাবে তাকানোতে ভড়কে যায়। আমতা আমতা করে নিজের সাফাই দেওয়ার সুরে যেই না মুখ খুলবে ওমনি রৌদ্র আরেক হুংকার ছেড়ে বলে ওঠে,
~শাট আপ! জাস্ট শাট আপ। এক্ষুনি আমার দুচোখের সামনে থেকে সরে যাবেন Otherwise আমি এই মুহুর্তে কি করবো তার নিশ্চয়তা আমি নিজেও দিতে পারবো না। গেট লস্ট আই সে!
নার্সটি রৌদ্রের এহেন ব্যাবহারে হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে রয়।সামান্য এতটুকু ব্যাথা লাগায় কেও এমন রিয়েক্ট করে? এই লোক কি পাগল? না না, পাগল হলে কি আর ডক্টর হতে পারতো!
নার্সটির নিজের চিন্তায় মজে থাকা অবস্থায় রৌদ্র আরেকবার চেচিয়ে উঠে,
~আউট!
নার্সটি তৎক্ষনাৎ আতকে ওঠে। সৎবিৎ ফিরে পেয়ে মুখে জগতের আধার নিয়ে প্রস্থান করে কেবনটি থেকে। অন্যদিকে রৌদ্র এবার নিজ উদ্যেগে অরিনের সবটা সামলায়।অরিনকে নিয়ে যে সে বিন্দুমাত্র আপোষ করতে পারবে না!
~” অনিক কেথায় তুই? সেই যে ১ ঘন্টা আগে ফোন দিয়ে বললি অরি তোর সাথে তারপর তো এখনও বাসায় ফিরলি না।বলছি তোদের ভাই-বোনের ঘোরাঘুরি কি আজ আর শেষ হবে? তোর আব্বুও বিরাট ক্ষেপে আছেন তোর ওপর। কখন ফিরবি তোরা?
রাফিয়া বেগমের কথায় ওপাশে অনিক নিরব ভূমিকা পালন করে। অনিক তখন অরিনকে খুজে না পেয়ে তার মায়ের কাছে মিথ্যে বলেছিল যে অরিন তার সঙ্গেই আছে এবং তারা দুজন একটু বাহিরে ঘোরাঘুরি করে তারপর ফিরবে।এই সম্পূর্ণ কথাটি অবশ্য রৌদ্রই তাকে শিখিয়ে দিয়েছিলো।অনিকতো শুধু কপি-পেস্ট করেছে আরকি! অনিক বেশ কিছুক্ষণ পর হালকা গলা খাঁকারি দিয়ে বলতে শুরু করে,
~আসলে আম্মু আর বেশিক্ষণ লাগবে না এই তো জাস্ট আধ ঘন্টা!
~কিহ! এখনো আধ- ঘন্টা পর বলছিস! ঠিক আছে যা ইচ্ছে কর তোরা।রাখছি আমি।
বলেই রাফিয়া বেগম খট করে ফোনটি কেটে দেয়। অনিকও যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে।
চোখ দুটো পিটপিট করে খোলার ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছে অরিন।মাথায় কেমন ভোতা একটা যন্ত্রণা হচ্ছে ওর। কিয়ৎকাল বাদে চোখ দুটো খুলে আশেপাশে তাকায় অরিন, বুঝতে চেষ্টা করে এই মুহুর্তে ওর অবস্থান। কয়েক মুহুর্ত বাদে ধীরে ধীরে তখনকার ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা একে একে মনে পড়তে থাকে ওর।তৎক্ষনাৎ ভয়ে কেঁপে ওঠে অরিন।চোখে মুখে নেমে আসে এক বিষাদের আভাস।অরিন সঙ্গে সঙ্গে চোখ মুখ কুচকে বন্ধ করে ফেলে।হঠাৎ টের পায় তার মাথার ওপর কারো আলতো হাতের ছোয়া।অরিন ধীরে ধীরে চোখ মেলে,মাথার ওপর থাকা হাতের মালিকের দিকে তাকাতেই চোখে-মুখে দেখা মিলে এক অদ্ভুত দ্যুতির। অরিন কিছু বলতে যাবে তার আগেই তার চোখের দৃশ্যপটে ভেসে ওঠে রৌদ্রের রক্তাক্ত মুখশ্রী। অরিনের সর্বাঙ্গে আবারও কাঁপনের সৃষ্টি হয়।অরিন রৌদ্রের হাতটা মাথা থেকে ঝটকা দিয়ে সরিয়ে দেয়। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো,
~ছো-ছোবেন ন-না আ-আমায় র-রোদ ভাই।আ-আপনার হাতে র-রক্ত।
অরিন ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে। আর রৌদ্র! সে তার প্রেয়সীর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তার মুখভঙ্গি একদম স্বাভাবিক। কিছুক্ষণ আগেও যেই মানুষটার চোখেমুখ অরিনের জন্য ব্যাকুলতা,অস্থিরতা, চিন্তায় বিভোর ছিলো এখন সেই মানুষটা একদম শান্ত, নির্বিকার! রৌদ্র অরিনের বেডের পাশের টুলে বসে।হাত বাড়িয়ে অরিনের একটি হাত নিজের হাতের আজলায় নিয়ে সযত্নে চেপে ধরে। অরিনও যেন মুহুর্তেই সবটা ভুলে শান্ত হয়ে গেলো। টলমল চোখে তাকিয়ে রইলো রৌদ্রের দিকে।রৌদ্র সেই টলমল আঁখি দ্বয়ের দিকে তাকিয়ে সামান্য ঢোক গিলে।অতপর অত্যন্ত কোমল গলায় বলতে লাগলো,
~অরি! এই পৃথিবীতে সবাই ভালো না বাচ্চা! সবাই যেমন ভালো না তেমনই কেও কেও ভালো ব্যাবহারের যোগ্যও না।ঠিক তেমনি আজকে তোকে যারা কষ্ট দিতে চেয়েছিলো তারা কি ভালো ছিলো বল?
অরিন আস্তে করে মাথা নাড়িয়ে না বলে।রৌদ্র সেদিকে তাকিয়ে আবারও বলতে শুরু করে,
~হুম এক্সাক্টলি।ওরা যেমন ভালো ছিলো না তেমনি ভালো ব্যাবহারের যোগ্যও ছিলো না।তাইতো আমি ওদের মারলাম। আচ্ছা তুই বলতো আমার জায়গায় তুই হলে কি করতিস? মারতি না ওদের?
অরিন তৎক্ষনাৎ মাথা ঝাকায়। রৌদ্র তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে। অতঃপর ঠান্ডা স্বরে বললো,
~হুম বুঝলাম। যদি এমনটাই হয়ে থাকে যে আমাদের অরিও ওদের মারতো তাহলে তো অরি খুব স্ট্রং তাই না?
অরিন নিচু স্বর,
~হু
~তাহলে স্ট্রং মেয়েরা এতো তারাতাড়ি দূর্বল হলে কিভাবে হবে বলতো! নিজেকে যতটা স্ট্রং রাখবি ততোটা নিজের জন্যই ভালো। আর আরেকটা কথা বলবো শুনবি?
অরিন তাকায় রৌদ্রের দিকে।রৌদ্র শান্ত স্বরে বলে,
~বাসায় আজকের হওয়া কোন ঘটনা একদম বলবি না ওকে!
অরিন ভ্রু কুচকায়। চটপট করে বললো,
~কেন? বলবো না কেন?
রৌদ্র গম্ভীর কণ্ঠে বললো,
~আজকের ঘটনা বাসায় বড়দের কান অবদি গেলে সবার আগে সবাই তোর বাহিরে যাওয়া বন্ধ করবে দ্বিতীয়ত, তারা খামোখা টেনশন করবে। এখন তুই বল তুই কি এসবের একটাও চাস?
অরিন তৎক্ষনাৎ মাথা নাড়িয়ে না বোঝায়। রৌদ্রও মনে মনে বাঁকা হাসে। বোকা অরিন কি আর বোঝবে তার রোদ ভাই কেন তাকে এগুলো বাসায় জানাতে বারন করেছে। রৌদ্র অরিনকে কেবিনে রেখে বাহিরে চলে আসে। অনিককে দেখে তার দিকে এগিয়ে এসে গম্ভীর গলায় শুধায়,
~অরিন ইজ ওকে নাও।ওর শুধু এখন রেস্টের প্রয়োজন। তুই ওকে বাসায় নিয়ে যা।আর যেমনটা আমি বলেছি ঠিক তেমনটাই বাসায় বলবি কেমন!
অনিক মাথা নাড়ায়।কিন্তু আবারও প্রশ্ন করে ওঠে,
~আমি বনুকে নিয়ে যাবো তার মানে তুমি আমাদের সাথে আসছো না?
রৌদ্র প্রতিত্তোরে নিরব থাকে।অনিক আবারও জিজ্ঞেস করে,
~বলোনা! এতো রাতে এখন আবার কোথায় যাবে?
রৌদ্র এবার চোয়াল শক্ত রেখে শার্টের হাতা গুটাতে গুটাতে জবাব দেয়,
~একজনের পাওনা বাকি আছে! তাকে তার পাওনা বুঝিয়ে তারপর ফিরবো!
অনিক চোখ বড় করে তাকায় রৌদ্রের দিকে।কিছু বলবে তার আগেই কানে আসে রৌদ্রের আলটিমেটাম,
সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি পর্ব ১৯
~নো মোর ওয়ার্ডস! তোর ভাইয়ের প্রানকে সাবধানে বাসায় নিয়ে যাবি।ওর যাতে চুল পরিমাণ অসুবিধে নাহয় সম্বন্ধীমশাই!
অনিক হতবিহ্বল হয়ে দাড়িয়ে আছে এখনো।রৌদ্রের মুখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবছে,
“এটা সত্যিই আমার রোদ ভাই তো!”