সে আমার হৃদয় হরণী পর্ব ১৪
বুশরা আহমেদ
তৌফিক আর রাহি একসঙ্গে ব্রেকফাস্ট করছিল।
এদের দুইজনের জন্যই কথার মাঝখানে বুশরা নিচে নেমে এলো। সবাই একসঙ্গে ব্রেকফাস্ট করে বের হয়ে গেল।রাহি আর বুশরা এক গাড়িতে।আর তৌফিক তার নিজের গাড়িতে।রাহি ড্রাইভ করছে আর বুশরা পাশে বসে আছে ।
কিছুক্ষণের মধ্যেই রাহি গাড়ি থামালো বুশরার ভার্সিটি এর সামনে।
রাহি গাড়ি থামালো,, বুশরার বের হতে যাবে তখনি রাহি বুশরার হাত ধরলো ,,
বুশরা : কিছু বলবে রাহি ভাইয়া?
রাহি: আজকে তোর ভার্সিটি তে প্রথম দিন। তুই সবার সঙ্গে কম কথা বলবি ।আর বন্ধু বানাতে হলে বুঝে শুনে বানাবি । সাবধানে থাকবি। কোন প্রবলেম হলে আমাকে ফোন দিবি। আর হ্যাঁ ভার্সিটি শেষে গাড়ি এসে তোকে নিয়ে যাবে।আমার সময় হলে আমি নিয়ে যাব।
বুশরা : হুম বুঝেছি।আমি ছোট বাচ্চা না এতো টেনশন করিও না।
রাহি : আমি জানি তুই যথেষ্ট ম্যাচিয়র কিন্তু সাবধান করছি ।
বুশরা’: হুম।এখন আসি । আল্লাহ হাফেজ।বলেই বুশরা গাড়ি থেকে নেমে চলে যেতে লাগলো।
রাহি আবার ডাকলো,,
রাহি: নুর…
বুশরা: হুম,,আর কিছু বলবে ,,
রাহি: কোন কিছু হলে আমাকে ফোন দিবি।
বুশরা : ওকে।বলেই চলে গেল।
রাহি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো ,, কেন এতো চিন্তা করি তোকে নিয়ে কি করে তোকে বোঝাবো white queen.. তুই যে আমার সব তোর কিছু হলে আমি নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবোনা। আমি বেঁচে থাকতে তোর গায়ে এক ফোটা আঁচ ও লাগতে দিবো না ।ইটস্ মাই প্রমিস বেবিগার্ল
বলেই চলে গেল নিজ গন্তব্যে।।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
রিফাত এর এখন এক্সাম চলিতেছে, সামনে তার SSC পরিক্ষা। খুব ব্যাস্ততার মধ্যে তার দিন যাচ্ছে। আফরিন ও তার পড়াশোনা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গেছে । রিফাত আর আফরিন এখন আর এক সঙ্গে স্কুল এ যায় না।এই জন্য আফরিন এর মন টা খারাপ । বাসার গাড়ি তেই যাওয়া আসা করে ।
অন্যদিকে,, বাংলাদেশ ,ঢাকা আহমেদ মেনসন,,।
রিফাত, আফরিন, পরিবারের সদস্যরা সবাই বিকেলে এক সঙ্গে বসে আছে ।
কয়েকটা দিন থেকে আফরিন ঠিক করে কথা বলছে না রিফাত এর সঙ্গে এই জন্য রিফাত এর মন খারাপ।
সবার কথা বলার মাঝখানেই আফরিন উঠে ছাদে গেছে ,, কিছুক্ষণ পর রিফাত ও আফরিন এর পিছনে পিছনে ছাদে গেছে।
রিফাত : আমাকে ইগনোর করছিস নাকি?
আফরিন: কেন তোমাকে ইগনোর করবো ।
রিফাত: একা একা স্কুলে যেতে প্রবলেম হচ্ছে নাকি তোর?
আফরিন: না তো । আমি এখন রিল্যাক্স এ যাই । তুমি থাকলে তো আর রিল্যাক্স এ যেতে পারতাম না।
রিফাত এর রাগ হলো কিন্তু কিছু বললো না।
আফরিন: তুমি ছাদে কেন আসলে রাদ ভাইয়া। তোমার তো আর বেশি সময় নাই কয়েকটা মাস । গোল্ডেন প্লাস না পেলে বিদেশে যাবে কি করে ।
রিফাত: তুই চাস না আমি বিদেশে যাই ?
আফরিন : হুম চাই । তুমি চলে গেলে আমি একা এ বাসায় রাজ করবো । সবার ভালোবাসা আমি একাই পাবো ।
রিফাত: তা তো আমি হতে দিব না। আমি বিদেশে গেলে তোকেও যেতে হবে ।তোকে সবার ভালোবাসা একা একা আমি ভোগ করতে দিবনা।
আফরিন: তাই নাকি।বলেই আফরিন চলে গেল।
রিফাত ও পিছনে পিছনে নিচে নেমে এলো।
এইদিকে হিয়ার একা একা ভালো লাগছে না।বুশরাই ছিল হিয়ার একমাত্র বেস্ট ফ্রেন্ড। এমনিতেই অনেক ফ্রেন্ড থাকলেও সব দিনাজপুর এ।ঢাকাতে হিয়ার তেমন কোন ফ্রেন্ড নেই ।
হিয়া ফোন টা হাতে নিয়ে সেই কখন থেকে তৌফিক এর ছবি দেখেই যাচ্ছ।
হিয়া মনে মনে ভাবছে তৌফিক কে একটা কল দিবে ।
কিন্তু দিল না। এই দিকে বুশরার নাম্বার ও নাই ।বুশরাও হিয়াকে কল করে নি ।হিয়ার অনেক রাগ হলো ।
আমিরিকা , নিউইয়র্ক এর পাশে জঙ্গল ও নদীর ধারে, ম্যারিল্যান্ড রাজ্যের ম্যারি প্যালেস এ অবস্থান করছে ,,
বিশাল করিডোর রুমে সামনের চেয়ারে বসে আসে ,সেই চিরচেনা মুখোশধারী,লং কোর্ট পরা বেক্তি । তার পাশে বসে আছে আসিটেন্ট ইনটালিজেন্ট তৌফিক জোবায়েদ ।
কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখানে উপস্থিত হলো সিআইডি ও আর্মি অফিসার ও ইনচার্জ।
সবার সামনে বসে আছে মুখোশধারী ব্যক্তি তাজোয়ার আহমেদ রাহি।
রাহি: কি কারণে আমাকে প্রয়োজন হলো আপনাদের।
আর্মি অফিসার: অনেক অনেক লোক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ দের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি কিছু কিছু রাজনীতিবিদ দের মেরে ফেলা হয়েছে । সেখানে আপনার লোকদের দেখা গেছে মি.তাজোয়ার ।
রাহি : আপনার কেন এমন মনে হচ্ছে।আর আমি এই সব ছোট খাটো বিষয় এ। জড়াতে চাই না।
সিআইডি ইনচার্জ: আমরা জানি এই কাজ আপনি করেন নি। কি আমার আপনাদের হেল্প চাই ।আমরা জানি আপনি নিজ হাতে মানুষ খুন করেন না। কিন্তু আপনার ট্রেনিং প্রাপ্ত কুকুর রা তো ছিঁড়ে খায় । আমাদের তাদের সাহায্য চাই ।এই লোকটা কে খুঁজে পেতে ।
সে আমার হৃদয় হরণী পর্ব ১৩
রাহি উচ্চস্বরে হেসে উঠলো,তার হাসিতে সবাই ভয়ে কেঁপে উঠলো। তার চোখ দুটো রক্তিম হয়ে উঠছে।
রাহি হুংকার দিয়ে বলে উঠলো,, আমাকে দোষারোপ করে আমার কাছেই সাহায্য চাচ্ছেন আপনারা। আমি মানুষ খুন করে নিজের হাত নোংরা করি না। কিন্তু ছেড়েও দেই না ,, তাদের মারার জন্য আমার গার্ডসরাই যথেষ্ট। নেক্সট টাইম আমার কাছে সাহায্যের জন্য আসলে ভেবে চিন্তে আসবেন।
রাহি উঠে চলে যেতে লাগলো, দরজার কাছে গিয়ে আবার বললো ,, আপনাদের সাহায্য করার কথা ভেবে দেখবো। বলেই দ্রুত গতিতে স্থান ত্যাগ করলো।