বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৩৬
ইশরাত জাহান
রাত গভীর।চারদিক নিস্তব্ধ শুধু দেওয়াল ঘড়ির টিকটিক শব্দ শোনা যায়।শোভা বিছানায় উপর বসে আছে।দু’চোখে শুধু তার অপেক্ষা।ঘড়ির কাঁটা এগোচ্ছে কিন্তু দর্শন ফিরছে না।
হঠাৎ দরজার বাইরে থেকে পায়ের শব্দ আসে। মুহূর্তেই শোভার হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়।বুঝে যায় তার স্বামী আসছে।দরজা খুলে দর্শন ভিতরে ঢুকতেই শোভা ছুটে এগিয়ে আসতে নেয় কিন্তু দর্শনের কণ্ঠে ঝাঁজ মেশালো।কঠিন কন্ঠেই বলে,“Stop there.”
শোভা থমকে দাঁড়ায়।চোখে বিস্ময়।ঠোঁটে কোনো প্রশ্ন না আসলেও চোখে প্রশ্নবিদ্ধ ছায়া ভাসে।
দর্শনের দৃষ্টি কঠিন,গলা গভীর ও দৃঢ় কন্ঠে বলে,“আমার কাছে আসবে না।”
শোভার এতক্ষণের অপেক্ষা যেন বরফের মতো বুকের ভেতর অভিমান হয়ে জমে যায়।দর্শন এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে ট্রাউজার আর টি-শার্ট হাতে নিয়ে সোজা বাথরুমের দিকে চলে যায়।
ঝর্নার নিচে দাঁড়িয়ে দেয়ালে হাত ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে সে বড় বড় নিশ্বাস ফেলতে থাকে।এডম অ্যাপল ফুলে উঠছে,শ্বাসের শব্দ পানির শব্দের সঙ্গে মিশে ভারী হয়ে ওঠে। মনে ভেসে ওঠে কিছুক্ষণ আগের রক্তাক্ত দৃশ্য…..
জবরুল আহমেদকে শেষ করে লোক দিয়ে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।বাকি দুজনকে টেনে আনা হলো।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
প্রথমজন,যে নরপশুর মতো শোভার গায়ে চাবুকের আঘাত করেছিল তার হাত দর্শন মেঝেতে শক্ত করে চেপে ধরে ছুরি দিয়ে এমনভাবে চিরে দেয়, যেন প্রতিটি আঁচড়ের সঙ্গে প্রতিশোধের আগুন মিশে আছে।লোকটার আর্তনাদে আরেকজন কেঁপে উঠলো।মনের মধ্যে পালাবার পায়তারা।কিন্তু পারছে না।হাত পা বেঁধে রাখা তার।প্রথমজনকে এখনও আঘাত করে যাচ্ছে।তার হাত ক্ষতবিক্ষত করে বলে,“আমার ওয়াইফির অনুমতি ব্যতীত তাকে এখনও টাচ করিনি আমি আর তুই তাকে চাবুকের আঘাত করেছিস তাও এই হাত দিয়ে।আজ এই হাত তোর জীবনের কাল।”
বলেই রক্ত ঝড়া হাতে লবণ ঢেলে দেয়।লোকটার আর্তনাদে বেরিয়ে আসে।দর্শনের মস্তিষ্কে আরাম লাগে এই শব্দ।শোভার যে অবস্থা তারা করেছিল তার থেকেও খারাপ অবস্থা তাদের হবে।
এবার পালা দ্বিতীয়জনের,যে চোখদুটি শোভাকে বিদ্ধ করেছিল।তার সেই চোখেজোড়ায় হিংস্র চাহনি দিলো দর্শন।দর্শন দাঁতে দাঁত চেপে হিংস্র হয়ে বলে,“এই চোখ দিয়ে আমার ওয়াইফিকে নেশালো দৃষ্টিতে দেখছিলি।আমার তো ভাবলেই মাথা কাজ করা বন্ধ করে,যে আমি না আসলে তুই ওর কি করে দিতিস!এখনও শান্তি পাচ্ছে না আমার মন-মস্তিষ্ক।তাই এর শাস্তি তোকে দিয়ে আমি শান্তি পেতে চাই।”
এগিয়ে এসে লোকার মাথা মেঝের সাথে চেপে ধরে ছুরি ঢুকে দেয় তার চোখের মণি বরাবর।তীব্র যন্ত্রণায় তার চিৎকার থেমে যায় কিন্তু সেই মুহূর্তে রক্ত ছিটকে এসে দর্শনের সাদা শার্টের বুকজুড়ে ছোপ ফেলে।
এখনও থামেনি দর্শন।।স্পষ্ট মনে আছে শোভাকে আঘাত করার সময় এই দুজনের ঠোঁটে বিকৃতির হাসি ফোটানো ছিলো।পকেটে থাকা মোটা ও বড় সুই সাথে কালো সুতা নিয়ে একের পর এক সেলাই টেনে দেয় ঠোঁটজুড়ে।একসাথে সাত-আটবার।চিৎকার বন্ধ,মুখ বন্ধ।শেষ আঘাতে রক্ত মেঝেতে জমে থাকে আর তাদের নিথর দেহের চারপাশে নীরবতা নেমে আসে।
ফেরার সময় সাদা শার্টের ওপর ব্লেজার পরে নেয় দর্শন,যেন কোনো দাগ বাইরে থেকে দেখা না যায়।
দরজা খুলে ঢোকার পরই শোভাকে দূরে সরতে বলেছিল,যেন এই গোপন রক্ত তার চোখে ধরা না পড়ে।দর্শনের হাতেও ছিলো রক্তের ছোপ ছোপ দাগ।এই শরীরে নিজেকেই অসহ্য লাগছে আর শোভার মত পবিত্র এক মেয়েকে কিভাবেই বা কাছে টানে?অনেকদিন পর আজকে শান্তি পেলো সে।
গোসল সেরে দর্শন বাইরে আসে।ঘরে কেউ নেই। দু চোখ এদিক ওদিক করে খুঁজলো শোভাকে।ব্যালকনি দিয়ে শব্দ আসলো।হয়তো এক পা সরিয়েছিল বা কিছুর সাথে শোভার আঘাত লাগে।দর্শন মৃদু হেসে সেদিকে গেলো।শোভা চেয়ে আছে দূর আকাশের চাঁদের দিকে।দর্শন পাশে আসতেই শোভা বুঝে যায়।সঙ্গে সঙ্গে সরে ঘরে আসতে নেয়।দর্শন কপালে ভাঁজ ফেলে।প্রথমেই কিছু ধরতে পারল না।এখন সে একটি আগের বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে চায়না তাই কোনকিছুই মাথায় রাখেনি।শোভার এভাবে যাওয়াটা দর্শনের পছন্দ হলো না।শোভার সাথে সাথে সেও ঘরে এসে।প্রশ্ন করে,“কি হলো?”
শোভা মুখ ভার করে বলে,“কোথায় কি হলো?”
“এভাবে চলে আসলে কেন?”
শোভার মন চাইলো বলতে, “আপনিই তো চান না আপনার নিকটে আমি যাই।মনের আবেগে আজ প্রথমবার আপনার নিকটে যেতে চেয়েছিলাম।আপনার এতদিনের যত্ন ভুলেই গেছিলাম আপনি একমাস পর আমাকে ছেরে দিবেন।সব ভুলে যখন কাছে আসতে নেই আপনি নিজেই দূরে ঠেলে দিলেন।এখন আবার জিজ্ঞাসাও করছেন!”
মুখে বলতে পারল না শোভা।দর্শন ভ্রু কুঁচকে বলে,“আনসার মি!”
দর্শনের রাগী কণ্ঠে বলে।শোভা আতকে ওঠে।এভাবে রাগ করতে কখনও দেখেনি।স্বাভাবিক মুখভঙ্গি থাকে দর্শনের।যেটা দেখে শোভা নিজেও প্রতিবাদ করতে পারে।আজকের কথার ধাঁচ ভিন্ন।শোভা মুখ ফিরিয়ে চলে যেতে নেয়।এখানে ভালো লাগছে না তার।দরজার কাছে যেতেই দর্শন ছুটে এসে শোভার হাত জব্দ করে ধরে।শোভা ব্যাথা পায়।চোখটা ব্যাথাতুর করে তাকায়।দর্শন চোখ রাঙিয়ে বলে,“কোথায় যাচ্ছো?”
শোভা আর্তনাদের সাথে বলে, “দিজার কাছে যাবো।”
“এই রাতে ওকে বিরক্ত করতে হবে না।”
“তাহলে ছাদে যাবো।হাত ছাড়ুন।”
“এই রাতে কোথাও যাওয়া চলবে না।”
“আমার এখন এই ঘরে থাকতে ইচ্ছা করছে না।”
“কেন?”
“এমনি।হাতটা ছাড়ুন!লাগছে তো আমার।”
দর্শন এখনও রেগে আছে।শোভা পিটপিট করে দেখছে।মনে মনে পালানোর সুযোগ খুঁজছে।ভাবছে কি করা যায়।সুযোগ বুঝে দিলো দর্শনের হাতে কামড়।এই মেয়ে পাল্টা আঘাতে অভ্যস্ত যেনো।দর্শন একটু আঘাত করলেই আর পাল্টা আঘাত করাই লাগে।এখন এটা এদের দুজনের অভ্যেসে পরিণত।
দর্শনের হাতের চামড়ার মধ্যে দাঁত ঢুকে রক্ত বের হচ্ছে।শোভা বুঝতে পারল কারণ জিহ্বায় নোনতা লাগে।মুখ সরিয়ে দেখে দর্শনের হাতে দাঁতের ছাপ সাথে রক্ত।শোভা ঘাবড়ে গিয়ে বলে,“আস্তেই দিতে চেয়েছি কিন্তু জোরে লেগে গেলো।”
দর্শনের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।সে যেনো মজাই পেলো।শোভা মেডিসিন বক্স এনে দর্শনের হাতে মলম লাগিয়ে দেয়।দর্শন ঘাড় কাত করে দেখে আর মনে মনে বলে,“এই প্রথম কেউ আমার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠলো।আমাকে আঘাত করেও অস্থির হয়ে নিজেই সযত্নে আগলে নিচ্ছে।আমি তো এটাই চাই।তুমি যদি আমাকে আঘাতের পর আগলে নেও,তবে তোমার থেকে আমি বারবার আঘাত নিতে প্রস্তুত।”
খানিক সময় ধরে দুজনের মধ্যে নীরবতা।দর্শন দেখছে শোভাকে।শোভা মেঝেতে চেয়ে আছে এক নাগাড়ে।মুহূর্তটা ভালো লাগছে দর্শনের।শোভা আড়চোখে কিছুক্ষণ পরপর দেখছে দর্শনকে।তবে তাকানোর ফলে দৃষ্টি মিলে যায়।যেটাতে লজ্জা পায় শোভা।মুখে ম্লান হাসি আসে দর্শনের।শোভাকে সে ইচ্ছা করেই দূর করে আবার মেয়েটা দূরে গেলে কাছে টানে।দর্শনের কাছে এই মুহূর্ত বেশি প্রিয়।ওই আবেগ জড়িয়ে মাখো মাখো প্রেমকে দর্শন মেনে নিবে না।সে নিজেও পারে না লুতুপুতু করতে তার বউ তো জানবেই না পারা তো দূর।
নীরবতা কাটিয়ে শোভা বলে,“রাতে খাবেন না?”
“হুমমম,খাবো তো।”
“খাবার নিয়ে আসব?”
“তুমি খেয়েছো?”
“না।”
“তাহলে নিয়ে আসো।”
শোভা উঠে দাড়ায়। দু কদম গিয়ে আবার ফিরে তাকিয়ে বলে,“আমি খেলে কি করতেন?”
“ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতাম।”
“কেন ক্ষুধা নেই?”
“উহু।”
“বাইরে থেকে খেয়ে এসেছেন?”
দর্শন আশ্চর্য চাহনি দিলো।ভ্রু উঁচিয়ে বলে,“ওয়াইফ ম্যাটেরিয়াল সাজছো?”
শোভা ভরকে গেল।জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলে,“এমন কিছু না।”
“তাহলে কেমন কিছু?”
শোভা মিনমিন করে চাইলো।অতঃপর জানায়,“খাবার আনছি আমি।”
শোভা চলে গেলো।দর্শন বিছানায় মাথা এলিয়ে হাসছে মৃদু। সে তার বউকে এককে সময় একেক রকম অনুভূতির সাথে সাক্ষাৎ করাবে।কখনও রাগ, কখনও লাজুকতা,কখনও ভয় আবার কখনও ভালোবাসায়।
শোভা খাবার নিয়ে এলো।দুজনের জন্য প্লেট এনে বিছানায় রাখে।নীরবে বসে দুজনেই খেতে শুরু করেছে।শোভা তাকায়নি আর দর্শনের দিকে।দর্শন আড়চোখে বেশ কয়েকবার দেখেছে তাকে।খাবার শেষে প্লেট রেখে আসে শোভা।দর্শন নেই ঘরে।ব্যালকনি থেকে গিটারের শব্দ ভেসে আসে।শোভার মনটা চাইছে দর্শনের কাছে যেতে।ব্যালকনি থেকে আসা ঠান্ডা হাওয়ায় বসে দুজনে গল্প করতে অথবা দর্শন গান গাইবে শোভা মুগ্ধ হয়ে শুনবে।কিন্তু কোনো না কোনোভাবে অভিমানী মনটা বাধা দিলো।যেভাবে দর্শন তাকে ওই সময় বাধা দিলো,সেভাবে তার মাঝের অভিমান জমে আছে।এই অভিমানী মনের মাঝে শোভার কানে ভেসে আসে দর্শনের কন্ঠ,
“পুষে রাখে যেমন ঝিনুক
খোলসের আবরনে মুক্তর সুখ
পুষে রাখে যেমন ঝিনুক
খোলসের আবরনে মুক্তর সুখ
তেমনি তোমার গভীর ছোঁয়া
ভিতরের নীল বন্দরে
আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে
আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে।”
গান থামিয়ে দর্শন চোখ বন্ধ করে ছোট ছোট নিশ্বাস ছাড়ে।মনের মধ্যে একটু আগেই জানান দেয় ঘরে ফেরা মাত্র সে শোভাকে দূরে সরে যেতে বলে।মাথায় ঢুকলো অবশেষে,যে কেন তাকে শোভা অভিমান দেখাচ্ছে।ভাবতেই এই লাইনগুলো গাইতে শুরু করে।মাথা উঁচিয়ে একবার ঘরের দিকে তাকালো।শোভা নিশ্চুপ চাহনি দিয়ে আছে।তাকেই দেখছে।সে তাকানো মাত্র চোখ সরিয়ে আয়নার কাছে যায়।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চিরুনি নিয়ে খোপা থেকে কাকরা খুলে। খোপাটা খোলা মাত্রই শোভার লম্বা হাঁটু অব্দি চুলগুলো ঢেউয়ের মত বেয়ে গেলো।দর্শনের চোখ সেখানেই আটকে গেলো।এত সুন্দর চুলগুলো তাও আবার গোছা মোটা দেখলে যেনো চোখ ফেরানো দায়।নিজের বউ ব্যতীত অন্য কোনো নারীর এমন চুল আছে কি না জানা নেই।এমনিতেও কারো দিকে তাকানোর সময় তার নেই।যদিও বাইরের দেশের বা লেখাপড়া জীবনে অনেক মেয়েই আশপাশে ছিল তবুও এমন লম্বা ও ঘনো চুল কারো দেখেনি।
শোভা চুলগুলো হাতে নিয়ে আঁচড়ে জট ছাড়ায় অতঃপর তিনটা ভাগ করে বিনুনী করতে শুরু করে।দর্শন চেয়ে আছে।একেকটা ভাগের চুল কিভাবে আরেকটার সাথে প্যাঁচিয়ে যাচ্ছে বুঝতেই পারছে না।মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে যেনো।তার কাছে মনে হলো এই বিনুনী করার থেকে একটু আগে করে আসা খুনটাও সহজ।অবশ্য দর্শনের মনে আছে তার দাদীজান যখন প্যারালাইজড ছিলো দাদাজান কি সুন্দরকরে বিনুনী করে দিতো।মাথায় তেল দেওয়া,খাইয়ে দেওয়া এমনকি দাদীজানকে পরিষ্কার করানোতে ত্রুটি রাখেননি দাদাজান।
শোভা বিনুনী করে আয়নায় তাকাতেই দেখে দর্শনের চাহনি।প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে নিজের মত বিছানায় উঠে জানালার পাশে শুয়ে পড়ে।চোখটা জানালার বাইরে।কালো আকাশের গায়ে ছোট ছোট তারা। চাঁদের দেখা মিলছে না।সে অন্যদিকে আছে।চোখ মেলে দেখে ভাবছে জীবনের সময়গুলো কিভাবে চলে গেলো।এরমধ্যেই ঘরটা অন্ধকার হয়ে এলো।দর্শন আলো নিভিয়ে দেয়।দর্শন যে তার পাশ থেকে কাঁথা নিচ্ছে এটা সে আন্দাজ করছে নরনচরণে।
শোভা নিজের শরীর আরেকটু সরিয়ে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে নিলো।দেয়াল ঠান্ডা বেশ।বাইরের আবহাওয়াও ঠান্ডা।বাতাস আসছে বাইরে থেকে।ইদানিং রাতের বেলাতেই বৃষ্টি আসে।
বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৩৫
এখন আবহাওয়া দেখা না গেলেও বোঝা যাচ্ছে বৃষ্টি আসবে।জানালা বন্ধ করার ইচ্ছা নেই কারোর।বাতাসটা ভালো লাগছে।বরং মনটা ফুরফুরে লাগছে।আচমকা গরম উষ্ণতা পেলো সে।এক বলিষ্ঠ হাত আর কাঁথা তার গায়ের উপর জাপটে ধরে।শোভা কেঁপে ওঠে।এই গরম উষ্ণতা তার গায়ের লোম দাঁড়িয়ে দেয়।বিনুনী করার ফলে পিঠের উন্মুক্ত ফাঁকা জায়গাটায় নিশ্বাসের ভার এসে পড়ছে।গরম নিশ্বাস।শোভার মধ্যে এক অজানা অনুভূতি ইশারা করছে।সে চোখ খিঁচে বন্ধ করে।শুকনো ঢোক গিলে দ্রুত গতিতে নিশ্বাস নেয়।দর্শনের হাত তার গায়ের উপর।এমনকি একটু নড়লেই যেনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে যাবে।এই পরিস্থিতিতে কেঁপে কেঁপে উঠছে শোভা।এদিকে মুখে কোনো ভাব প্রকাশ না করেও নীরবে নিজ কার্য ঘটায় দর্শন।