এমপি তামিম সরকার পর্ব ৮২
কাফাতুন নেছা কবিতা
তামিম সুবহার এক কথাতেই শিক্ষক পরিবর্তন করে দেয়! বউ যেহেতু বলেছে সে তো আর না করতে পারবে না! আর নিজে ছয় শয়তানের পড়াশোনার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেই! এদের ছাড় দেওয়া মানে পরীক্ষায় ডাহা ফেল করানো!
—এভাবেই কিছু দিন কেটে যায়! দেখতে দেখতে ছয় শয়তান ক্লাস টেস্ট ও দিয়ে আসে! আজকে তাদের ক্লাস টেস্টের রেজাল্ট বের হওয়ার কথা! ছয় শয়তানের মধ্যে একজন ও আজকে কলেজে যায়নি! তাই রেজাল্ট ও আনেনি! কিন্তু তারা এটা জানতো না যে তামিমের কাছে খাতা হেঁটে হেটে চলে আসবে! আর এলো ও তাই!
–সরকার বাড়ির গার্ডেনের খোলা জায়গায় গোল করে দাড়িয়ে থাকে ছয় শয়তান! সামনে তামিম সরকার দাড়ানো! হাতে তাদের পরীক্ষার রেজাল্ট শীট আর আরেক হাতে সেগুন কাঠের মোটা স্কেল! তাদের থেকে একটু দূরে চেয়ারে বসা তানভীর সরকার এবং তার পাশে আয়েশা সরকার দাড়ানো! তামিম আজকে এতোটা রেগে আছে বলার বাহিরে! ছয় শয়তান মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়ে থাকে, এবং থেকে থেকে তানভীর সরকার এবং আয়েশা সরকারের দিকে তাকায়! যদি তারা তামিমের হাত থেকে তাদের রক্ষা করে!
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” তোরা কী পড়তে গেছিলি না-কি গরুর ঘাস কাটতে গেছিলি? এগুলা কী? একজন ৭ পাইছোস, একজন ৪ পাইছোস, একজন ৯, একজন ৬ , একজন ১ আরেক জন তো ওর্য়াল্ড রেকর্ড করছে ডাবল জিরো! তাও দুইটা বড় বড়! এগুলা কী নাম্বার না-কি ফোন নাম্বার?”
তামিমের ধমক শুনে ছয় জনই মুখে ক্লুলু পাতে! এখন মুখ খুললেই বিপদ! নিজের বিপদ নিজেই ডাকা পাগলের লক্ষণ! আর তারা তো সুস্থ মানুষ, নিজের বিপদ কী আর নিজে ডেকে আনবে!
” পরীক্ষার বাকি আর ১১ দিন! আর এরা টেনে টুনে ও পাস করতে পারলো না!”
প্রচন্ড রাগে আর ক্ষোভে এক একটাকে ঝাড়তে থাকে তামিম!
প্রায় ২০ মিনিট ধরে তামিম সকলের ক্লাস নিতে থাকে! একদম ইজ্জতের ফালুদা যাকে বলে! বকাবকি করার পর তামিম শামসুর সাথে বেরিয়ে যায় পার্টি অফিস! আর ছয় জনকে কান ধরে গার্ডেনেই দাঁড়িয়ে থাকার শা’স্তি দিয়ে যায়! তামিম যাওয়ার আগে বলে গেছে, ৪৫ মিনিট ধরে যেনো কান ধরে দাড়িয়ে থাকে তারা! না-হলে শনি আছে এক একটার কপালে! আর কী? সকলেই তাই দাড়িয়ে থাকে!
” এই বুইড়া বয়সে আইসা কান ধইরা দাড়ায় আছি, তাও পড়াশোনার জন্য! ধুর ধুর!”
” ঠিক কইছোস সাকিব! এমনে ইজ্জতের ফালুদা হইবো ভাবি নাই!”
” তোর তো খালি ইজ্জতের ফালুদা হয়ছে মাহির! কিন্তু আমার তো অনেক কিছু! কোনো মাইয়া আমারে বিয়া করবো? এমনে কান ধরা দেখলে?”
” মাইয়া ছাড়া কী তোর মুখে কোনো টপিক নাই কালার বাচ্চা?”
” বাদ দে রফিক! এই জাও’রা চরি’ত্রহীন!!”
পঞ্চ পান্ডব একজন আরেকজনের সাথে তর্ক বির্তক শুরু করে দেয়! আর অন্য দিকে সুবহা লজ্জায় ম’রে যায়! শশুড় শাশুড়ীর সামনে কান ধরে দাড়িয়ে আছে! কতোটা অসম্মান! তাও শয়তান সরকারের জন্য! সে তো সুবহাকে আলাদা শা’স্তি দিলে ও পারতো! কিন্তু না! তা করবে কেন? যেখানে অন্যান্য নায়করা নায়িকাদের শা’স্তি দেয়, ডার্ক রোমা’ন্স, তো অন্য সব দুষ্টু কাজ, সেখানে তামিম সরকার পান থেকে চুন খসলেই বউকে উত্তম মধ্যম দেয়! কখনো ৪৫ টি থাপ্প’ড় তো কখনো আগু’নে পা পুড়ি’য়ে দেওয়া, কখনো চুল কে’টে দেওয়া, মানে সুবহার জীবন পুরো অতিষ্ঠ হয়ে উঠে! কেন তামিম সরকার এতো আলাদা? সে কী নোবেল পড়ে একটু রোমান্টিক হতে পারে না? রোমান্টিক রোমান্টিক শা’স্তি দিবে, তা না শুধু উত্তম মধ্যম!
সাকিব সবাইকে ইশারা করে সুবহার দিকে! সে যে তামিমের গুষ্টি উদ্ধার করছে সেটা তার মুখের বিরবির করা দেখলেই বোঝা যায়!
” একটু জোরে কন ভাবি-মা! কিছু হুনি না!”
সুবহা একটা রাগি লুক দেয় সাকিবের দিকে! সাথে সাথে সাকিব উপরে তাকায়!
” আকাশ ভরা তারা!”
” আমাগো সকলের গু…!”
মানিক পুরো কথা শেষ করার আগেই বাকি চারজন তার মুখ চেপে ধরে! কারণ সুবহার সামনে আর যায় হোক তারা কোনো বা’জে কথা বলতে পারবে না! এটা কেমন দেখায়! যাকে মা বলে ডেকেছে তার সামনে উল্টো পাল্টা কথা!
” ভাবি-মা! ”
সুবহা মাহিরের ডাকে তাকায় তার দিকে!
” আর মাত্র ১১ দিন আছে! ফেল করলে ভাই আমাগো পিন্ড চটকা’ইবো! করুম ডা কী?”
মাহিরের কথা শুনে সুবহা কিছু ক্ষণ চুপচাপ থাকে! ফেল করলে সকলে বলবে তামিম সরকারের তিন কবুল বলা হালাল বউ ফেল! এতো বড় অপমান!
” একটা উপায় আছে! ”
পঞ্চ পান্ডব উপায়ের কথা শুনে সাথে সাথে সুবহাকে গোল করে ঘিরে ধরে!
”————– ঠিক আছে? ”
সুবহার কথা শুনে সকলের চোখ কপালে উঠে যায়! মানে এটা ও কী সুবহার মাথা থেকে বের হয়েছে?
” কিন্তু ভাবি-মা ধরা পড়লে ভাই আমাগো হাড্ডি ছুডাইবো!”
” শয়তান সরকার জানলে তো!”
” কিন্তু! ”
” কোনো কিন্তু না সাকিব! তুমি কাজে লেগে পড়ো!”
” টাকা?”
” ১ ঘন্টার মধ্যে হয়ে যাবে মেনেজ!”
দূর থেকে তানভীর সরকার এবং আয়েশা সরকার ছয় শয়তানের সমস্ত গতি বিধি লক্ষ্য করছিলো! কিন্তু তাদের কোনো কথা শুনতে পাইনি! তামিম বলেছিলো নজর রাখতে, কিন্তু এরা ছয় জন এতো ধূর্ত! ধরা মুশকিল!
” কর্তা! এরা কী করছেন বলুন তো!”
” আমি ও তাই ভাবছি! ”
আয়েশা সরকার একটু চিন্তায় পড়ে যায়! এরা যদি আবার কিছু করে তামিম তুলকালাম করে দিবে!
——-রাত ১০ টা ১৭ মিনিট!
তামিম তখন ও পার্টি অফিসে! সুবহাকে কিডন্যাপ করা ব্যক্তিদের সে তো পরপারে পাঠিয়ে ছিলো! কিন্তু তারপর ও মনে একটা খটকা তামিমের থেকেই যায়! কোথায় কী কোনো গাফিলতি হচ্ছে? নাহ! এবার আরো সিকিউরিটি বাড়াতে হবে সুবহার! দু-বার সুবহাকে হারাতে হারাতে ফিরে পেয়েছে তামিম! এবার আর তাকে হারানো যাবে না! সুবহা তো তেমন বাইরে ও যায় না! তার ভাইয়ের চিকিৎসা ও বাড়িতে থেকেই হচ্ছে! তারপর ও তামিমের মনে এক অজানা ভয় বাসা বেঁধেছে!
তামিম এক এক করে ক্লু মিলাতে থাকে! কোথায় কী কোনো গাফিলতি হলো? কেউ কী আছে যাকে তামিম দেখে ও দেখছে না?
এসব ভাবতে ভাবতে তামিমের মুঠোফোনে তিনবার অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসে! তামিম নিজের ভাবনায় এতোটাই বিভোর ছিলো যে সে দিকে কোনো ধ্যানই দেয়নি! কিন্তু চতুর্থ বারের বেলা তামিম মোটামুটি বিরক্ত হয়! কিছু ক্ষণ ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে থেকে রিসিভ করে!
হ্যালো বলতেই অপর পাশ থেকে কেউ একজন এক নাগাড়ে কিছু বলতে থাকে! তামিমের রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে যায়!
” শামসু গাড়ি বের কর জ্বলদি!”
তামিম হন্তদন্ত হয়ে রীতিমতো দৌড় দিয়েই নিচে নামতে থাকে! লিফটে ও উঠে না! শামসু ও তামিমের সাথে সাথে তাড়াতাড়ি করে যেতে থাকে! ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দিয়ে রাখে,
” ভাই যামু কই?”
” পুলিশ স্টেশনে…!”
—–পুলিশ স্টেশন——–
তামিম তাড়াতাড়ি করে পুলিশ স্টেশনে পৌঁছায়! সেখানে গিয়ে দেখে মিডিয়ার লোকরা ভির বেঁধে রেখেছে! প্রায় সমস্ত নামি দামি নিউজ রিপোর্ট এসেছে! কিন্তু কাউকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি! তামিম এবং তার বডি গার্ডরা সোজা থানায় ঢুকে পড়ে!
তামিম ভিতরে এসে লকাপে থাকা সুবহার দিকে চোখ পড়ে তার! তামিমকে দেখা মাত্র সুবহা ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে!
” কাম সারছে! ”
সুবহা পিঠ ঘুরিয়ে উল্টো মুখ হয়ে দাড়ায়! আর তামিম প্রচন্ড রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সে-দিকে!
” তামিম বাবা!”
” আঙ্কেল, আমার বউ ভিতরে কেন?”
” বাবা আমি অনেক চেষ্টা করেছি বাইরে রাখার, কিন্তু তারা ছয়জন মহিলা কেউ বাইরে থাকতে চাইনি! নিজ ইচ্ছেতে ভিতরে ঢুকে পড়েছে! ”
” ছয় জন মহিলা মানে? আর কারা?”
” ওই যে কালো বোরকা পরা ৫ জন! সে তো ভাগ্য ভালো আমি সুবহা মা-কে দেখে চিনে ছিলাম, না-হলে একবার যদি মিডিয়াতে তার মুখ ক্যাপচার হতো…!”
তামিম সুবহার সাথে থাকা বাকি পাঁচ জন বোরকা পরা মহিলার নাম শুনতেই বুঝে যায় এটা তার পঞ্চ পান্ডব ছাড়া আর কেউ না! এমন কুকর্ম তাদের দ্বারাই সম্ভব! কিন্তু আজকে এরা যা করেছে, এদের আস্ত রাখবে না তামিম!
” এটা একটা ভুয়া নিউজ বলে চালিয়ে দেন আঙ্কেল! বাইরে যেনো কোনো রিপোর্ট না হয়! এখনই থানা ক্লিয়ার করুন!”
” জ্বি তামিম বাবা!”
অফিসার বাইরে গিয়ে নিউজ রিপোর্টারদের সাথে কথা বলে! আর তামিম ভিতরে বসে রাগে ফুলতে থাকে!
——কিছু ক্ষণ আগে……!
ছয় শয়তান ঠিক করে তারা সাকিবের তৈরি বো’ম দিয়ে সোজা শিক্ষা বোর্ডই উ’ড়িয়ে দিবে! না থাকবে বোর্ড! আর না থাকবে পরীক্ষা! আর ১১ দিন কেন, আগামী ১১ মাসে ও পরীক্ষা হবে কী-না সন্দেহ! যেই কথা সেই কাজ!
সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাইকে করে ছয় শয়তান আরশি নগর শিক্ষা বোর্ডের পিছনে চলে আসে! হাই সিকিউরিটি থাকায় তারা প্রচন্ড সর্তকতা অবলম্বন করে! ধরা পড়লে জামিন নাই! তাই তারা একটু ডিস্টেন্সে দাড়িয়ে সাকিবকে উৎসাহ দিতে থাকে! তার হাতের তাক যথেষ্ট ভালো! বো’ম দিয়ে উড়াতে পারবেই! অথচ বোকার দলরা এটাই বুঝলো না, তাদের এই বো’মে বোর্ডের দরজা ও উড়বে না!
” তোর এক্স গার্লফ্রেন্ডের কথা মনে কর সাকিব! ভাব ওইটা ওর বাড়ি! সোজা মাই’রা দে!”
” মাগার আমার তো কোনো গার্লফ্রেন্ডই নাইকা!”
” হা’লার ঘরে হা’লা কল্পনা কর!”
সকলে সাকিবকে উৎসাহ দিতে থাকে! পাশ থেকে একজন গার্ড শুনতে পাই, ছয় জন বোরকা পরা মহিলা বো’ম মা’রার পরিকল্পনা করছে,! সে চুপচাপ পুলিশে কল করে! তারা যতক্ষণে সাকিবকে উৎসাহ দিচ্ছিলো, ততক্ষণে পুলিশ ও চলে আসে! সাকিব এমনিতেই তামিমের এক কথায় দুনিয়া উড়া’য় দিতে পারে! কিন্তু শিক্ষা বোর্ড! কখনোই না! তামিম জানলে যে তার গোল্ডেন চাপা’তি দিয়ে সবার আগে সাকিবের মা’থা আলাদা করবে এটা বলায় বাহুল্য!
তারা পরিকল্পনা করতে করতে পিছনে পুলিশের বাহিনি দাড়িয়ে পড়ে! তার তাদের ধরে ও ফেলে! সকলে নিকাব দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে! সুবহা ও!
তাদের ধরে সোজা থানায় নিয়ে আসা হয়! পাঁচ জনই মুখ ঢেকে রাখে! কিন্তু সুবহার মুখ খোলা থাকে! যার জন্য ডি আই জি তাকে দেখেই চিনে ফেলে! প্রধানমন্ত্রীর ছেলের বউ থানায়! ডি আই জি মিডিয়াতে কোনো ব্রিফিং করে না! সে চুপচাপ থাকে! কিন্তু ততক্ষণে পুরো স্যোসাল মিডিয়াতে তোলপাড় হয়ে গেছে একটাই নিউজে! ছয় জন বোরকা পরিহিত দুঃক্রিতি কারিরা শিক্ষা বোর্ডে বো’ম মা’রার পরিকল্পনা করে!
—-বর্তমান—-
ডি আই জি, বাইরে গিয়ে প্রচার করে এটা সম্পূর্ণ গুজব! দেশে ত্রা’স সৃষ্টি করতে এগুলো ষড়যন্ত্র! কোনো রকম মিডিয়া ঠান্ডা করে ডি আই জি ভিতরে আসে!
” ওদের ছেড়ে দিন আঙ্কেল! ”
” জ্বি বাবা!”
লেডি হাবিলদার সকলকে এক এক করে বাইরে নিয়ে দাড় করায়! প্রথমে তারা না না করলে ও তামিমের ভয়ে বাইরে দাড়িয়ে পড়ে!
তাদের জামিন করিয়ে, তামিম প্রচুর টাকা ঢেলে নিউজে ধামাচাপা দিয়ে দেয়! তামিম রাগে সুবহার হাত ধরে খুব জোড়ে টেনে নিয়ে যেতে থাকে! পিছু পিছু তার পঞ্চ পান্ডব ও! বোরকা পরায় বেশ অসুবিধা হয় তাদের হাঁটতে! কিন্তু তামিম তাদের নেকাব খোলার ও সুযোগ দেয় না!
তামিম সুবহাকে সোজা গাড়িতে বসিয়ে সে ও বসে পরে পাশের সিটে! আর বাকিরা অন্যান্য গাড়িতে!
গাড়ি সোজা গিয়ে থামে সরকার বাড়িতে! তামিম সুবহার হাত ধরে টেনে ভিতরে নিয়ে যায়! আর বাকিরা ও আসতে থাকে!
” ওর হাত এভাবে টানছিস কেন বাপ? আর এরা কারা বোরকা পড়া!””
” মহিলা আক্তার পুরুষ আম্মা!”
” মানে?”
” তোরা বোরকা খুলবি, না-কি আমার খোলাতে হবে?”
তামিমের বোকা শুনে সকলে এক এক করে বোরকা খুলতে থাকে! শুধু সুবহা চুপচাপ দাড়িয়ে থাকে!
বোরকা থেকে পঞ্চ পান্ডবকে দেখে আয়েশা সরকার রীতিমতো চমকে উঠে! মানে মানুষ কতোটা বদজাত হলে এমন বোরকা পড়ে মহিলা সাজে! তানভির সরকার ও নিচে এসে দাড়ায়!
” কী হয়েছে বাবা জান?”
” পরীক্ষা থেকে বাঁচতে ছয় শয়তান শিক্ষা বো’র্ড উড়াই’তে গেছিলে আব্বা! ”
” কীহহ?”
” জ্বি আব্বা!”
তানভীর সরকার বেশ অবাক হয়! তারা দুষ্টু ঠিক আছে! কিন্তু এতোটা? পরীক্ষা থেকে বাঁচতে শেষমেষ শিক্ষা বোর্ড!
তানভির সরকার সুবহার সামনে গিয়ে দাড়ায়!
” এই বুদ্ধি কোথায় থেকে আসলো সুবহা মা?”
সুবহা ছোটো ছোটো দৃষ্টি করে তানভীর সরকারের দিকে তাকায়! তারপর ছয় জন একসাথে হাত দিয়ে তামিমের দিকে লক্ষ্য করে দেখায়!
তামিম তাদের এই কান্ডে পুরো বেআক্কল হয়ে যায়!
” কী-রে আমি কখন তোদের শিক্ষা বোর্ড উ’ড়াইতে বললাম?””
তানভীর সরকার সুবহার দিকে তাকায়!
” নীর ভয়ে বলো সুবহা মা!”
” আসলে বাবা, শয়তান সরকার বিয়ের আগে একবার বলেছিলো আমার জন্য শিক্ষা বোর্ড উ’ড়িয়ে দিবে! তাই আমি ভেবেছি আমি দিলে ও কিছু হবে না!”
তানভীর সরকার রাগি দৃষ্টিতে তাকায় তামিমের দিকে!
” শিক্ষা বোর্ড কী আমার বাপের সম্পত্তি না-কি? ”
” আপনিই তো বলেছিলেন আমরা ৪৫ মিনিট রিলেশনশীপে আছি, বিয়ে করা উচিত! আমি পরীক্ষার কথা বলায়, বোর্ডই উড়ি’য়ে দিতে চেয়েছিলেন! সে সাহসেই তো আমি গেলাম!”
তানভীর সরকার একটু কড়া দৃষ্টিতে তাকায় তামিমের দিকে! আর তানভীর সরকারের তাকানো দেখে তামিম তার কাছে চলে আসে!
” মিথ্যা কথা আব্বা! আমি উড়া’নোর মতো লোকই না!”
” বাবাজান! আপনার সব কাজে আমার ফুল সার্পোট আছে! কিন্তু সুবহা মায়ের মাথায় এতো উল্টো পাল্টা বুদ্ধি দেওয়া ঠিক হয়নি আপনার!”
” আব্বা ট্রাস্ট মি! এই শয়তান ছেমরি মিথ্যা বলতাছে, আমি ওদের হাত খরচ ও দেয় না!”
তানভীর সরকার তাও তামিমকে বিশ্বাস করে না! সে সুবহাকে বিশ্বাস করে! তামিম খু’ন করলে ও তানভীর সরকার সেগুলো মেনে নেই! কিন্তু আজকে সুবহার মাথায় এতো ভুল বুদ্ধি দেওয়া সে কিছুতেই মানতে পারেনি!
তামিম খুব রাগি দৃষ্টিতে তাকায় তার পঞ্চ পান্ডবের দিকে!
‘ এটা কার প্ল্যান ছিলো?”
পঞ্চ পান্ডব একসাথে সুবহার দিকে তাকায়! সুবহা আবার ও বিশাল বড় বাঁশ খায়! পঞ্চ পান্ডব আবার ও তাকে ধোঁকা দিলো!
” আমি তো তোদের কোনো টাকা দেয়নি, তাহলে তোরা বো’ম বানানোর টাকা কই পাইলি?”
পঞ্চ পান্ডব আবার ও সুবহার দিকে তাকায়! তামিম এবার তার বউয়ের কুকর্মে প্রচন্ড রেগে যায়! পাঞ্জাবির হাতা উপরে তুলতে তুলতে সুবহার সামনে এসে দাড়ায়!
” তুমি টাকা কই পাইছো!”
সুবহা অবলার মতো দৃষ্টি করে তামিমের দিকে তাকায়!
” আপনার ঘড়ি আর পারফিউম বিক্রয়. কমে বিক্রি করে দিছি! ”
তামিম সুবহার কথা শুনে পুরো বলদের মতো তার দিকে তাকায়!
” পুরো ২ লাখ টাকা পেয়েছি! সব কাজে লেগেছে, বাকি ৫০০ টাকা বেঁচে আছে! সেটা আপনার!”
তামিমের ইচ্ছে করছিলো নিজের মাথায় নিজেই বারি দিতে! তার বউ এতো পেকেছে? তামিম এদিক ওদিক তাকাতে থাকে!
এমপি তামিম সরকার পর্ব ৮১
” এই কেউ একটা চ্যালা কাঠ দে তো, আজকে ছয় শয়তানের ভুত ছুটাবো!”
” ভাই ক্ষেপছে রে! পালা শা’লার ভাইরা!”
পঞ্চ পান্ডব দৌড় লাগায় বাইরের দিকে! সাকিব সুবহার হাত ধরে টান মারে!
” পালান ভাবি-মা! ”
ছয় জন একসাথে দৌড় লাগায় বাইরে! আর তামিম তাদের পিছনে!
” আজকে তোগো হা’ড্ডি গুরা করবো আমি!”