প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ২৮

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ২৮
জান্নাত নুসরাত

মাগরিবের আজান দিয়েছে কিছু সময় হলো। সূর্য পশ্চিম আকাশে ডুবেছে। মেহেরুন নেছার রুম থেকে কোরআন তেলাওয়াতের সুর ভেসে আসছে। হেলাল সাহেব নামাজ পড়ে আহান আর আরিশাকে জিজ্ঞেস করলেন নামাজ পড়েছে কি না। একসাথে দু-জন বলল তারা নামাজ পড়েছে।
হেলাল সাহেব আজ ড্রয়িং রুমে বসেছেন। একে একে সবাইকে নিজে ডেকে নিয়ে আসলেন। আস্তে ধীরে সবাই ড্রয়িং রুমে আসলো। হেলাল সাহেব মাঝ সোফায় বসে ইসরাতকে তার পাশে বসার জন্য ডাকলেন। ইসরাত উনার পাশে গিয়ে বসলো। এক পাশ ইসরাত আর অন্য পাশে অনিকা বসলো। দু-হাত প্রসারিত করে হেলাল সাহেব জড়িয়ে ধরে রাখলেন নিজের বাহুতে দু-জনকে।

নুসরাত এসে হেলাল সাহেবের সামনের সোফায় বসলো। তার এক পাশে এসে আহান বসলো। অন্য পাশে আরশ বসলো। আরিশা এসে আরশের ঘা ঘেষে বসলো। আরশ এক হাত দিয়ে ছোট বোনকে বাহুডোরে বন্ধি করলো। নুসরাত চুপ করে বসে রইলো। আহানের পাশে সাদিয়া বসলো। অনিকার পাশে সৌরভি ও ইরহাম বসলো।
হেলাল সাহেব সচারাচর সন্ধ্যা বেলা বই পড়েন। আজ ড্রয়িং রুমে সবাইকে নিয়ে গল্পের আসর বসাবেন এজন্য রুম থেকে বের হয়ে আসছেন। নুসরাতকে তার পাশে এসে বসার জন্য বললে সে বলল সে ঠিক আছে এখানে।
” তো সবার পড়াশোনা কেমন চলছে?
“জি ভালো!

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” আজ এখানে বসলাম, নতুন বউকে কিছু উপহার দেওয়ার জন্য। আর তোমাদের সাথে কিছু গল্প করার জন্য।
হেলাল সাহেব তার টাউজারের পকেট থেকে টাকার বান্ডিল বের করে ইসরাতের হাতে দিলেন। ইসরাতের লজ্জা গাল লাল হয়ে গেল। টাকা গুলো নিতে না করল হেলাল সাহেব জোর করে হাতের মুঠোয় ভরে দিলেন।
হঠাৎ বাবাকে টাকা দিতে দেখে আরশ ভ্যাবাচেকা খেলো। ভুলে গিয়েছিল নতুন বউকে কিছু দিতে হয়। আরশ পকেট হাতরে টাকা ছাড়া কিছু পেল না। একে বড় ভাইয়ের বউ তার উপর ছোট বোন দুই সম্পর্কে দুটো গিফট দেওয়া তো বাধ্যতা মূলক। টাউজারের পকেট থেকে টাকা বের হলো দশ হাজারের মতো আরশ তা দিয়ে দিল ইসরাতকে।
“মাত্র দশ হাজার টাকা উঁহু আরো বেশি দেওয়া উচিত ছিল তোর আরশ।

” এখন যা ছিল পকেটে দিয়েছি বাবা, পরে দিব! প্যান্ডিং এ থাক! ইসরাত রাজি তো।
ইসরাত মাথা নাড়ালো।
“নুসরাত তুমি কিছু দিবে না।
আরশ ফোড়ন কাটলো কথা বলার মাঝে।
” দিয়েছে তো।
“কি দিয়েছে?
” সকালে খামচি দিয়েছে ইসরাতকে।
হেলাল সাহেব চোখ ছোট ছোট করে তাকালেন নুসরাতের দিকে। নুসরাত দাঁতে দাঁত চেপে বসে রইলো। কোনো কথা বলল না, শুধু মনে মনে গালি দিল,” শালা খচ্চর, কপালে বউ জুটবে না। আমার অভিশাপ লাগবে তোর উপর। মানুষের সামনে আমাকে লজ্জা দিস। ওহ নো নুসরাত ভুলে যাস কেন? লজ্জা বলতে তোর ডিকশনারিতে কিছু নেই।
” তাহলে তো তোকে বেশি গিফট দিতে হবে নুসরাত।
“সময় হলে দিয়ে দিব।
অনিকা শুধু অবাক হয়ে এদিক থেকে সেদিক তাকালো। বড় আপুকে এতো গিফট দেওয়ার কারণ কি সে বুঝল না? তাই জিজ্ঞেস করলো,” আপুকে এতো গিফট কেনো দেওয়া হচ্ছে?
অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন হেলাল সাহেব,

“তুই জানিস না। তোর মা কিছু বলেনি।
” জি না।!
“গতকাল রাতে জায়িন আর ইসরাতার আকদ হয়েছে।
অনিকার মুখ কালো হয়ে গেল। মুখে কুলুপ এঁটে বসে রইলো। মেহেরুন নেছা লাঠিতে ভর দিয়ে টুক টুক শব্দ করে ড্রয়িং রুমে আসলেন। হেলাল সাহেব মা কে নিজের পাশে বসার জন্য বললেন।
” তুমি তোমার পোলার বউ লইয়া বসছ বও। আমারে ডাকো ক্যা? আমি বুড়ি মানুষ এক খাইনে বসলেই হয়।
মেহেরুন নেছা গিয়ে বসলেন। রহিমাকে ডাক দিলেন।
“ওই রহিমা কই মরলি? আমার পান সুপারির বাটি নিয়ে আয়। আর বউদের গিয়া কইয়া আয় খাবার কিছু স্ন্যাক দেওয়ার জইন্য।
” দাদি স্ন্যাক না স্ন্যাকস হবে এটা।

“ওতো শুদ্ধ কইয়া কি হইব? একটা কইলেই তো হয়। তোমাগো বুঝলেই হইব।
মেহেরুন নেছা নিজের গলার চেইন খুলে ইসরাতের দিকে এগিয়ে দিলেন।
” এই নাও তোমার গিফেট। আমার বুড়ির কাছে আর কিছু নাই। এইডা নিয়া খুশি থাকো।
“দাদি এসবের প্রয়োজন ছিল না।
” হইছে আর এইসব কওয়া লাগত না। মনে মনে খুশি হইতাছো এইডা আমি জানি।
ইসরাত কথা বললো না। হেলাল সাহেব উঠে দাঁড়ালেন।
“তোদের সাথে গল্প করতে আসলাম আর একটা কাজের কথা মনে হলো। যাই নাছিরকে একটা কল দিয়ে আসি।
হেলাল সাহেব চলে গেলেন নিজের রুমে।
” দাদি আমার বউয়ের জন্য কিছু রাখনি। তোমার বড় নাতির বউকে দিলে আর আমার বউকে দিবে না। এটা তো মানায় যায় না। এটা গূঢ় অন্যায়!

” বিয়ে করার আগে বউ পাগল হয়ে গিয়েছে। ওরে আমার বউ পাগলা নাডি, তোর বউরে না দিলে হইব। তুই কিন্না দিবি তোর বউরে। তোর টাকা পয়সার অভাব আছে নাকি?
“সেটা না তুমি বড় ভাইয়ার বউকে দিবা ছোট ভাইয়ার বউ আমার বউকে কেন দিবে না?
” আমি না দিলে তোর মা দিব, চাচি দিব, তুই দিবি জায়িন দিব, জায়ান দিব, সক্কলে দিবে। আমি একজনে না দিলে কি হইব?
ঝর্ণা বেগম এনে এর মধ্যে ডালের ভরা, আর কাবাব দিয়ে গেলেন। এখনো রাতের খাবার রান্না করা বাকি। তাই তাড়াহুড়ো করে চলে গেলেন। নাহলে তিনি ও এখানে যোগ দিতেন।
দুটো কাবাব আর ডালের ভরা হাতে নিয়ে নুসরাত আর আহান উঠে দাঁড়ালো। নুসরাত আহানের হাত ধরে ইরহামের রুমের দিকে চলে গেল। সাদিয়া, সৌরভি, আর ইরহাম ও গেল নুসরাতের পিছে পিছে।
“নিজে গেল সাথে নিজের গ্যাং নিয়ে চলে গেল। এর কি হবে এক আল্লাহ ভালো জানে?

ইরহাম নুসরাতকে কখন থেকে খুচাচ্ছে সৌরভি কে কি যেন বলার জন্য? নুসরাত ইরহামের কানের গোড়ায় থাপ্পড় লাগালো।
” আরেকবার কানের গোড়ায় এসে গে গে করবি থাপড়ে কান ফাটিয়ে ফেলবো। সর এখান থেকে, বলছি না বলবো! এখন সর এখান থেকে। মাথা প্রচুর গরম হয়ে আছে এখন। তোর মাথা ফাটাবো আর একটা কথা বললে।
ইরহাম মুখ কালো করে চেয়ারে বসলো। নুসরাতের দিকে তাকালো করুন চোখে।
“এইই তোর আশিকরে নিয়া সর এনহান থাইক্কা, নইলে আমি দুটোর মাথা ফাটাবো। ডং দেখে বাঁচি না, এই কুত্তা সৌরভিকে তুই পছন্দ করিস এটা ও জানে! এ তো ডং করছিল তোর সাথে। তুই বাল ওরে পছন্দ করিস শালী জানতো।

ইরহাম অবাক হয়ে তাকালো সৌরভির দিকে। সৌরভি অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিল। এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো। এমন করলো যেন ও কিছু জানে না। ইরহাম মাথা নিচু করে মুচকি হাসলো। নুসরাত এদের কাহিনি দেখে হা করে তাকিয়ে রইলো। এই সময়ের মধ্যে এদের ভালোবাসা বাসি শুরু। ও নো, এটা কি হলো? তার তো এসব রোমান্টিকজম দেখে রাগ লাগছে।
“তোদের এসব ভালোবাসা ছাদে গিয়ে একজন আরেকজনকে দেখা আমার এমনি কোমর ব্যথা করছে তার ভিতর এই বালের মাথা ব্যথা। আর তোদের এসব ভালোবাসা দেখে আমার ইচ্ছা করছে তোদের দুইটারে ধরিয়া কুচি কুচি করে কাটার জন্য।

রাত দশটার দিকে বিধ্বস্থ অবস্থায় জায়ান বাড়ি ফিরলো। চোখ মুখ লাল, নাকের ঢগা লাল হয়ে লাল লাল র‍্যাশ পড়ে গিয়েছে। ঘাড় সমান চুলগুলো অগোছালো হয়ে আছে। পরণের শার্ট উপরের দুটো বোতাম খোলা আর জায়গায় জায়গায় ভাঁজ হয়ে আছে। টাই লোজ হয়ে ঝুলে পড়েছে কোনো রকম গলার মাঝে। জায়ান যেখানে বাড়িতে ঢুকলে মা, মা বলে বাড়ি গরম করে ফেলে সেখানে আজ চুপ করে নিজের রুমে চলে গেল।
রুমে ঢুকতেই কল আসলো। ওয়ালপেপারে ভেসে উঠলো ইনায়া। কল কেটে দিল জায়ান। পর পর তিনবার কল আসলো একই নাম্বার থেকে। রাগে হাতের ফোনটা ঢিল মারলো বারান্দায়। মোবাইলটা বারান্দার রেলিং এর সাথে বারি খেয়ে নিচে পরে গিয়ে খট করে শব্দ হলো। মোবাইলের উপরের গ্লাস ভাঙার আওয়াজ হলো।
জায়ান টাই আর শার্ট খুলে বিছানার উপর ছুঁড়ে ফেলল। ভেসে উঠলো ঘামে ভেজা শুভ্র রঙ্গের বুক, পিঠ। টি-টেবিলের উপর থেকে এসির রিমোট নিয়ে এসির পাওয়ার বাড়িয়ে দিল। ঘাড় সমান চুলগুলো কপাল থেকে পিছনের দিকে ঠেলে দিল। উদাম গায়ে ধপ করে বিছানার উপর শুয়ে পড়ল। চোখ বন্ধ করলো জায়ান! অতিরিক্ত রাগের কারণে প্রেশার হাই হয়ে গিয়েছে। চোখের পাতায় ভেসে উঠলো কিছুক্ষণ আগের ঘটনা।

কিছুক্ষণ আগে,
ইনায়া তাকে ফোন করে বলেছিল তাড়াতাড়ি আসার জন্য জরুরি কিছু। জায়ান এতো সিরিয়াস করে বলায় তাড়াতাড়ি বের হয়েছিল নিজের কাজ রেখে। ইনায়ার পাঠানো লকেশনে পৌঁছানোর পর জায়ান দেখলো ইনায়া কে একটা ছেলের সাথে হাস্যজ্জ্বল মুখ নিয়ে ঘনিষ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। জায়ানের রাগ লাগলে প্রকাশ করলো না। ছেলেটার সাথে হায়,হ্যালো করে ইনায়াকে ছেলেটার কাছ থেকে সরিয়ে আনে। কিন্তু, ছেলেটা আবার এসে ইনায়ার গা ঘেঁষে দাঁড়ায়। জায়ান সহজে রাগে না, কারণ তার ডিকশনারিতে রাগ বলতে কিছু নেই। ছেলেটাকে বার বার ইনায়ার শরীর ঘেঁষে দাঁড়াতে দেখে মাথা গরম হয়ে গেল। এবার সরাসরি জায়ান গম্ভীর গলায় বললো, ” ইনুর থেকে দূরত্ব রেখে দাঁড়াও।
ছেলেটা চোখ বাঁকা করে তাকালো। জায়ানের কথা না শোনে ইনায়ার কাঁধ চেপে ধরলো।

“তুমি কে? তোমার কথা কেন শুনতে হবে?
” আমি কে তার ডেফিনেশন আমি কেন তোমাকে দিব? হু আর ইউ?
ছেলেটা আবার স্পর্শ করলো ইনায়াকে। এবার সরাসরি হাত রাখলো ইনায়ার কোমরে। জায়ানের চোখ ছেলেটার হাত পর্যবেক্ষণ করলো। হাত দিয়ে কোমর ধরার স্থান দেখিয়ে বললো,”এখান থেকে হাত সরা তুই।
“তুই তোকারি করছেন কেন? আর আমার যেখানে ইচ্ছে সেখানে হাত রাখব আপনার কি? আপনি এতো অধিকার কেন দেখাচ্ছেন?

ইনায়া ভিতরে ভিতরে হেসে গড়াগড়ি খেল। সে তো এই রিয়েকশনটা চেয়েছে জায়ানের থেকে। কিন্তু জায়ান বুঝল না, এটা একটা প্রাংক, রাগে রেস্টুরেন্টে বসার টেবিল লাথ মেরে উল্টে দিল। শান্ত মানুষ রাগ করলে ভয়ংকর হয়ে যায় তার প্রমান জায়ান নিজে। ছেলেটাকে তারপর ও হাত সরাতে না দেখে হাত মুচড়ে ধরলো। ছেলেটা চিৎকার করে উঠলো। জায়ানের হাত থেকে বাঁচার জন্য ডান হাত দিয়ে ঘুষি মারলো। রাগ মাথায় চড়ে বসল জায়ানের! তার হাঁটুর বয়সী ছেলে তাকে ঘুষি মারে। হাত ছেড়ে গালে এক থাপ্পড় মারলো ছেলেটা দু-হাত দূরে গিয়ে মেঝেতে পড়ল। মেঝেতে পড়ে নাক ফেটে গেল। রেস্টুরেন্টে বসা মানুষ হা করে গিলছে সবকিছু। কেউ কোনো প্রতিবাদ করলো না! ছেলেটাকে কলার ধরে তুলে আরো দু-একটা থাপ্পড় মারলো জায়ান। ছিমছাম গড়নের ছেলেটা জায়ানের মতো বলিষ্ঠ দেহের পুরুষের কাছে চুনোপুঁটি। এক হাত দিয়ে গলা চেপে ধরলো ছেলেটার।

” এখানে সবকিছু ডিসমিস করে দেই। মেরে ফেলি! আমার সম্পত্তির দিকে তুই হাত বাড়াস কোন সাহসে? আমি না করা সত্ত্বেও এই হাত দিয়ে ধরেছিস। যে হাত দিয়ে আমার সম্পত্তি ধরেছিস সে হাত কেটে গলার সাথে জুলিয়ে দেই।
ইনায়া ছাড়ানোর চেষ্টা করলো। ছেলেটার নাক দিয়ে রক্ত বের হয়েছে এমনিতেই। তার উপর আর কতক্ষণ এভাবে থাকলে দেহ থেকে রুহ অক্কা পাবে। জায়ানের হাত থেকে ছুটালো জোর করে ছেলেটাকে।
জায়ান এবার ইনায়ার দিকে তাকাল রাগী চোখে।
“কি শুরু করছো কি জায়ান? রেস্টুরেন্টে সিনক্রিয়েট করছ কেন? মানুষ তোমায় নিয়ে হাসছে এসব দেখছ না।
” ওহ রিয়েলি, আমি সিনক্রিয়েট করছি। কিছুটা থেমে জায়ান বলল, আমি সিনক্রিয়েট করলে দোষ আর তুমি ছেলেদের সাথে ঢলাঢলি করলে দোষ না। আমাকে কি বোকাচো* পেয়েছ।

“একদম গালাগাল করবে না। চ্যাহ তোমার মুখের ভাষা এতো খারাপ। তোমার সাথে আমি আর কোনো সম্পর্ক রাখবো না।
” তুই রাখবি না মানে তুই কে? তুই রাখবি না বললেই হলো। তুই সম্পর্ক রাখবি, তোর বাপে রাখবে আমার সাথে সম্পর্ক! তুই না রাখার কে?
ইনায়া তর্জনী আঙুল তুলে শাসালো।
“একদম বাপ তুলে কথা বলবে না জায়ান।
জায়ান ইনায়ার আঙুল মুচড়ে ধরলো।
“একশতবার বলবো, তুই কি করবি আমার?

ইনায়ার ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙলো। রাগে থাপ্পড় বসালো জায়ানের গালে। জায়ান গালে হাত দিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে হাত তুলল থাপ্পড় মারার জন্য কিন্তু হাত ফিরিয়ে নিল আগের জায়গা। ইনায়ার গা জ্বালানো কথা শুনে ঠাস করে দু-গালে দুটো থাপ্পড় মারলো জায়ান। তারপর রাগ করে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে আসলো।
এসব ভাবছিল জায়ান শুয়ে শুয়ে হঠাৎ নিচ থেকে হট্টগোলের শব্দ ভেসে আসলো। বিছানার উপর রাখা ঘামে জড়জড়িত শার্ট গায়ে চাপালো। নিজের রুম থেকে বের হয়ে জায়িনের সম্মুখীন হলো। জায়িন নিজে ও রুম থেকে বের হয়েছে চিৎকার চেচামেচি শোনে।
সবাই সবার রুম থেকে বের হয়ে ড্রয়িং রুমে ভীর জমালো। উল্টো ঘুরে কথা বলায় জায়ান মেয়েটার মুখ দেখতে পেল না। কিন্তু ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানান দিল মেয়েটাকে সে চিনে, খুব ভালো করে চিনে।

” কি হয়েছে? সোরগোল করছেন কেন? আর কে আপনি?
কর্কশ গলার স্বর শোনে পিছন ফিরে তাকালো ইনায়া। তার বয়সী শ্যামলা বর্ণের, রোগা পাতলা একটা মেয়ে বিরক্ত হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। শ্যামলা হলে ও মুখটা মায়াবী। নিসন্দেহে মায়াবতী বলা যায় মেয়েটাকে। নিজ মনে হিসাব কষলো জায়ান একদিন দেখিয়ে ছিল এই মেয়ের ছবি। কি যেন নাম? মাথায় চাপ দিতে মনে হলো হ্যাঁ হ্যাঁ নুসরাত! ছবির মধ্যে ও কপাল ভাঁজ করে বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে আছে।
“আমি ইনায়া আমান। আর আমি এখানে শোরগোল করছি না।
” তো আপনি কি করছেন?
“আমি শুধু আপনাদের সবাইকে এখানে আনার জন্য ডাকছিলাম।
” কেন ডাকছিলেন?
“একটু দাঁড়ান সবুর করুন।

জায়ান আর জায়িন এসে দাঁড়ালো। বসার ঘরের সবার মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জায়ান ইনায়ার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকলো।
জায়িনের কাছে মেয়েটার চেহারা কারোর সাথে মিল আছে মনে হলো। কার সাথে কার সাথে? হঠাৎ মনে হলো ডেলার কথা। মাথা ঝাড়া মেরে চিন্তা বাহিরে ফেলে দিল।
হেলাল সাহেব জিজ্ঞেস করলেন,
” কি জন্য এখানে এসেছ মা? কোনো প্রয়োজন?
ইনায়া আবেগে আপ্লুত হলো। ঠোঁট উলটে কান্না করে দিল। ইসরাত ভীর ঠেলে দৌড়ে আসলো। মানুষের কান্না দেখলে ইসরাতের নিজের ও কান্না পায়। ইসরাতের ও চোখ ছলছল করে উঠলো,মেয়েটার কান্না দেখে! মেয়েটাকে সোফায় নিয়ে বসালো। নিজে পাশে বসলো! পিঠে হাত বুলিয়ে দিল বড় বোনের মতো করে। ভরসার হাত কাঁধে রাখলো। নুসরাত বিরক্ত হলো ইসরাতের উপর। এতো আধিখ্যেতা দেখানোর কি?

সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে গেলেন গোল করে রাখা সোফায়। নাজমিন বেগম এবং নাছির সাহেব আহানকে নিয়ে বসেছেন এক পাশের সোফায়। নাজমিন বেগমের পাশে বসলেন ঝর্ণা আর রুহিনি। হেলাল সাহেব, ইনায়া, ইসরাত, আর লিপি বেগম এক সোফায় বসলেন। জায়ান, জায়িন,আরশ, অনিকা,আরিশা এক সোফায় বসলো, আর নুসরাত আর ইরহাম দাঁড়িয়ে। তাদের পাশে চেয়ার টেনে বসলেন শোহেব, সোহেদ,সৌরভি আর সাদিয়া। পুরো ড্রয়িং রুম ভর্তি মানুষে। ইনায়ার সাথে একটা ছেলে থাকে নাম জিজ্ঞেস করলে বলল তার নাম জোহেল।
ইনায়াকে সব খুলে বলার জন্য বলা হলো। লিপি বেগম মায়ার দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকলেন নাদুসনুদুস গোলগাল মেয়েটার দিকে। গাল গুলো ফোলা ফোলা। উচ্চতার সাথে স্বাস্থ্য ভালো গিয়েছে, দেখলে ইচ্ছে করে লাল গালগুলো টিপে দিতে।

ইনায়া সব খুলে বলল। লিপি বেগম একবার ছেলের দিকে তাকান আবার মেয়েটার দিকে তাকান। তার সবগুলো ছেলে উচ্ছন্নে গিয়েছে।
লিপি বেগম মুখ গম্ভীর করে জিজ্ঞেস করলেন,
“পরিচয় কিভাবে তোমাদের?
“জি ইন্সট্রাগ্রামের মাধ্যমে।
লিপি বেগম কথা বলার ভাষায় হারিয়ে ফেলেছেন। উনি কি বলবেন? জায়ানটা ও রিলেশন করে!
নুসরাত তাকালো মেয়েটার দিকে। মেয়েটাকে উপর থেকে নিচ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো। উচ্চতা পাঁচ ফুট দুই এর মতো হবে? পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চির মেয়েটাকে দেখতে কিছুটা খাটো লাগছে নুসরাতের কাছে। তার মধ্যে আবার গোল ফ্রক আর গলায় চেরি কাপড়ের ওড়না ঝুলানো। চুলগুলো পনিটেল করে রাখা। থুতনি দেখতে আপেলের মতো। অনিকার বয়সী লাগছে মেয়েটাকে দেখতে।
জায়ান এবার কথা বলল,

” তুমি এখানে আসছ কেন?
“তুমি আমার উপর রাগ করে ফোন ধরছিলে না এজন্য এসেছি। ফোন ধরছ না কেন? আমি কি করেছি?
বলতে বলতে মেয়েটা বাচ্চাদের মতো কেঁদে উঠলো। নুসরাত বিরক্ত হলো এতো বড় মেয়ে কথার সাথে কান্না করে দে কেন? নুসরাতের ইচ্ছে করলো গাল চেপে ধরে বলতে,” চুপ কান্না বন্ধ করো! আমার মাথা ব্যথা করছে। আর একবার কান্না করলে গাল ফাটাবো।
হাত নিশপিশ করলো। এক হাত দিতে আরেক হাত চেপে ধরলো। মেয়েটা দেখতে সুন্দরী হলেও ন্যাকা কান্না করে। নুসরাত নাম দিয়ে দিল ন্যাকু রানী।
“তুমি কি করেছ বলতে হবে?
জায়ান শার্টের হাতা গুটিয়ে নিল। কিছুক্ষণ আগের থাপ্পড়ে এখনো গাল ব্যথা করছে আবার মারবে নাকি। ইসরাতের পিছনে মুখ লুকালো ইনায়া।
হেলাল সাহেব ধমকে উঠলেন,

” বস নিজের জায়গায় বস জায়ান। বেয়াদব হচ্ছ দিন দিন মেয়ে মানুষের গায়ে হাত তুলা আমি তোমাদের শিখিয়েছি। কোন সাহসে তুমি ওকে থাপ্পড় মারলে?
জায়ান মাথা নিচু করে বসে রইলো। তার কাছে দেওয়ার মতো উত্তর নেই।
লিপি বেগমের মেয়ে পছন্দ হয়েছে কিন্তু ওই প্রেমের সম্পর্কের প্রতি তার একটা বিতৃষ্ণা রয়েছে। সেসব পাশে রাখলেন! যদি মেয়েটা তার জায়ানের বউ হয় তাহলে তো ভালোই। দেখতে মেয়েটা মাশাল্লাহ, সুন্দরী, জায়ানের সাথে পার্ফেক্ট ম্যাচ হবে। ইসরাত আর ইনায়ার দু-জনের মুখের দিকে তাকালেন। ইসরাতের স্বাস্থ্য ঠিকঠাক! ইনায়ার স্বাস্থ্য একটু বেশি। ইসরাত কিছুটা লম্বা আর মেয়েটা ইসরাতের তোলনায় খাটো। মেয়েটা ইসরাতের তোলনায় একটু বেশি সাদা। ইসরাতকে ইসরাতের দিক থেকে ভালো লাগে। ইনায়া কে ইনায়ার দিক থেকে ভালো লাগে। দুজনি সুন্দরী! কেউ কারোর থেকে কম না। ভাবনার অবসান ঘটলো জোহেল নামের ছেলেটার কথায়।
“ভাইয়া একবার কথা শুনলে তো আর এরকম হতো না। আমরা তো আপনার সাথে প্রাংক করছিলাম।
ছেলেটা কাঁদো কাঁদো মুখ করে বললো,

” আমাকে মেরে নাক ফাটিয়ে দিয়েছেন ভাইয়া। এই দেখুন ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে আপু। এখানে আসার সময়।
” তোকে আরেকটা দিব? আর একটা কথা বললে।
হেলাল সাহেব ধমক দিলেন।
“যার যা ইচ্ছে হচ্ছে করছ আমাকে কারোর চোখে লাগছে না। আমি যে বড় তা তোমাদের চোখে লাগছে না। ভালো যা করার করো। আমি কে?
আরশ বলল,
” আব্বু রাগ করছো কেন? আমি তো তোমার কথা শুনি। আর ভাইয়ারা ও শোনে। রাগ করবেন না।
নুসরাত বিড়বিড় করল,
“বাল শোনে।

” আঙ্কেল রাগ করবেন না। আমি শুধু জায়ানের চিন্তা আপনাদের বাসায় এসেছি। ও আমার কল পিক করলে আমি আসতাম না। এক্ষুণি চলে যাব,আমি আপনাদের ডিস্টার্ব করতে চাইনি।
মেহেরুন নেছা লাঠি ভর দিয়ে আসলেন ড্রয়িং রুমে। এতক্ষণ নিজের রুমে বসে সব শুনছিলেন তিনি। ড্র‍য়িং রুমের উল্টো দিকে তার রুম হওয়ায় মেহেরুন নেছার রুমে বসে সব শোনা যায়।
মেহেরুন নেছা নিজের লাঠি দিয়ে ইনায়ার পিঠে খুঁচা দিলেন। ইনায়া ধড়ফড় করে পিছন ঘুরলো। মেহেরুন নেছা কপালে ভাঁজ ফেলে তাকিয়ে রইলেন।
“এই ছ্যাঁমড়ি তুই জায়ানের প্রেমিকা, আমি হাছা কইছি না।
ইনায়া আমতা আমতা করল,
” জি দাদি।

আরশ উঠে গিয়ে মেহেরুন নেছাকে বসার জায়গা করে দিল। মেহেরুন নেছা সোফায় বসে লাঠি নাড়াচাড়া করলেন।
“সব হুনলাম এখন আমি এই সিদ্ধান্তে পৌছেছি যে তোমাগো বিয়া দেওয়া অত্যইন্তো জরুরি।
জায়ান নিজের জায়গা থেকে উঠে দাঁড়ালো।
” দাদি এসব কি বলছ?
“যা হুনতে পাইছ তা কইছি।
” আর এটা কীভাবে সম্ভব? আমি এখনো রেডি নই বিয়ের জন্য।
“কেউই রিডি থাইকে না বিয়ের জন্য। এই ফোনডা কেউ নিয়ে আসো। আইজি ওগো বিয়া দিমু আমি। হারাম সম্পর্ক করো আবার বিয়া দিবার চাইলে রিডি থাকো না।
নুসরাত মেহেরুন নেছার ফোন এনে দিল। মেহেরুন নেছা কল দিলেন ইমাম সাহেবকে।
” হ্যালো আসসালামু আলাইকুম চাচি।

“ওয়ালাইকুম আসসালাম। আসল কডায় আসি একডা বিয়া পরাইবার লাগবো। তাড়াতাড়ি আহেন আমাগো বাড়ি।
” আপনাদের বাড়িতে শুধু মাঝরাতেই বিয়ে হয়। মানে আমি বলতে চাইছি….
“হ আমাগো বাড়িতে মাঝরাইতে বিয়ে হয় তোমার কোনো সমইস্যা। তুমি মিয়া বিয়া পরাইবা, পরাইয়া আলগোছে বিদায় হইবা এতো কথা কইবার কইছি না তোমারে। এখন ফোন রাহ, রাহিয়া তাড়াতাড়ি আও। এক মিনিট দেরি হইব টাকা কম দিমু। আমি মেহেরুন নেছা এক কডার মানুষ।
ইনায়া গাইগুই করলো। তার কিছু বলতেই ভয় করছে।
” দাদি এতো রাতে বিয়ে করবো। আগামীকাল ফ্যামেলির সাথে বসে আলাপ করে বিয়ে করলে হয় না।
“না হয় না। আইজ আইছো, সিনিক্রিয়িট করছ আইজ বিয়া ওইবো। হউর বাড়ি সিঙ্গিল আইছো মিঙ্গিল ওইয়া তউ এই বাড়ির বাইরে পা রাখবা তার আগে না। আগে বুইঝা আইলা না ক্যা?
মাহেরুন নেছা লাঠি দিয়ে মেঝেতে বারি দিলেন।
” ও বড় বউ তোমার বিয়ার শাড়ীর লগর কি যেন মাথায় দে ঘোমটা ওইটা নিয়া আও।
“জি আম্মা।

রুহিনি, সোহেদ, জায়িন, ইসরাত আর জোহেলকে পাত্রী পক্ষের সাক্ষী রাখা হলো। নুসরাত আর ইরহাম নিরপেক্ষ দাঁড়িয়ে রইলো। তারা দু-জন শুধু দাঁড়িয়ে নাটক দেখলো। সাদিয়া আর সৌরভি নুসরাতের পাশে মুখ চোখ উল্টে দাঁড়িয়ে রইলো। শুধু সৌরভি বললো,” তোদের বাড়িতে শুধু ধরে ধরে বিয়ে দেওয়া হয় না কি? ভাই আমার ভয় লাগতাছে কোন দিন না জানি, আমারে আর সাদিয়ারে ধরে তোর দাদি বিয়ে দিয়ে দে।
“কোনদিন দেখবি আমাকে ও বুড়িটা ধরে কোন হালার পুতের সাথে বিয়ে দিয়ে দে।
নুসরাত জোরে নিঃশ্বাস ছাড়লো। সে প্রচুর ব্যথিত!

ইমাম সাহেব বিয়ে পড়ানোর পর কবুল বলার জন্য বললেন জায়ানকে। সময় ওয়েস্ট না করে আলহামদুলিল্লাহ কবুল বললো জায়ান। সবাই আলহামদুলিল্লাহ বললো। এবার মেয়েকে ইমাম বললেন কবুল বলার জন্য মেয়ে করুন সুরে কান্না করে দিল কবুল বলতে গিয়ে! মহিলাদের চোখ পানিতে ছলছল করে উঠলো। ধীরে ধীরে ইনায়া হাউমাউ করে কান্না করে উঠলো। সবার চোখ পানিতে ভেসে গেল। ইসরাতের চোখের কোণে পানি জমা হলো। নুসরাত সেদিকে তাকিয়ে আফসোস করল শুধু। মনে মনে একটাই কথা প্রতিধ্বনি হতে লাগল,”সবাই বলে, মেয়ে মানুষ সহজে কা*ন্না করতে পারে, কিন্তু আমি মেয়ে হয়েও কেন কাঁদতে পারি না…! কেন আমার চোখের জল, কোটর হতে গড়ায় না! আল্লাহ কেন আমাকে কান্নার করার এই সক্ষমতা দেয়নি!

পরপর আবারো নিজেকে শাসিয়ে নিয়ে বিড়বিড়িয়ে আওড়াল,” দেননি ভালো হইছে, নাহলে যেখানে সেখানে চোখ খুলে বসে যেতাম এদের ন্যায়। তারপর কোথার জল কোথায় গড়াতো আল্লাহ মালুম ভালো জানে।
নুসরাতের চিন্তা ভাবনার মধ্যেই মেহেরুন নেছার কথা ভেসে আসলো কানে। তিনি বলছেন, ” তাড়াতাড়ি কবুল কও। যত তাড়াতাড়ি কইবা ওত তাড়াতাড়ি নিজের বাড়ি যাইবা।
ইনায়া নাক টেনে কবুল বললো। তার পর কান্নার ধুম পড়ল সৈয়দ বাড়িতে। নুসরাত শুধু তাকিয়ে দেখলো কান্না কাটি। তার মোটে ও কান্না আসছে না। তার এসব দেখে হাসি আসছে সাথে আবার মাথা ব্যথা লাগছে। নুসরাত চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখলো সবার কান্না। নুসরাতের হাসি পেল কি যেন দেখে মুখ টিপে হাসলো?
আরশের চোখ নুসরাতের দিকে ওই সময় গেল। নুসরাতকে হাসতে দেখে বিড়বিড় করে বললো,”সবাই কান্না করছে আর একে দেখ এতোক্ষণ রোবটের মতো তাকিয়ে ছিল। আর এখন হা হা করে হাসছে।

নুসরাত হাসতে হাসতে মরে যাবে মনে হচ্ছে আহান চাচিদের সাথে যোগ দিয়ে নিজে হাউমাউ করে কান্না করছে। কান্না ধরণ দেখে নুসরাতের পেট ফেটে হাসি বের হলো। এটা এভাবে কান্না করে কেন? একে তো ভ্রু নেই তার উপর রুহিনি কাল টাকলা করে দিয়েছেন। সামনের দুটো দাঁত পড়ে যাওয়ায় আহানকে দেখতে বুড়োদের মতো লাগছে। নুসরাত পেট চেপে হাসতে হাসতে লুটোপুটি খেল। ইরহাম গাট্টা মেরে বললো, “মেজ বাবা দেখেছে। নুসরাতের হাসি ফুস হয়ে গেল। নিজের বাবার দিকে তাকাতে দেখলো মুখ শক্ত করে তার দিকে তাকিয়ে আছেন।

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ২৭

ইনায়া আর জায়ানের বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর মেহেরুন নেছার আদেশে রাতের খাবার খাইয়ে ছাড়া হলো ইনায়াকে।গাড়িতে করে যাওয়ার সময় জায়ান আর ইনায়া এক আরেকজনের সাথে একটা কথা বললো না। নীরবে মান-অভিমান চলল। শুধু পিছনের সিটে বসে জোহেল কথা বলে গেল। পুরো রাস্তা জোহেলের বক বকে কান লেগে গেল।

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ২৯

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here