তাজমহল দ্বিতীয় খন্ড পর্ব ২

তাজমহল দ্বিতীয় খন্ড পর্ব ২
প্রিমা ফারনাজ চৌধুরী

দু’জন কাজের বুয়া রেখেছেন রওশনআরা। এতবড় বাড়িটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজ আগেভাগে করে রাখা উচিত ছিল কাউকে এখানে পাঠিয়ে দিয়ে। এখন মহাঝামেলায় পড়ে গেছেন। দুপুর গড়িয়ে বিকেল। এখনো ঝাড়ুর কাজ শেষ হয়নি। ধোয়ামোছা তো আছেই। ধোয়ামোছার কাজ বাকি রেখে বাকি অন্যান্য কাজে হাত দিলেন তিনি। তাসনুভা নিজের ঘর নিজেই পরিষ্কার করছে। কাউকে হাত দিতে দেবেনা তার ঘরে।
শাইনা নিজের ঘরে এসে দেখলো সব এলোমেলো হয়ে আছে। তাজদার সিদ্দিকী ঘরের এমন অবস্থা করে মহিষ কিনতে গিয়েছিল? পুরো ঘরটা আউলা ঝাউলা হয়ে আছে।
ঘরে ঢুকতে ঢুকতে তার মাথা ঘুরে উঠলো। এত কাজ কখন করবে?
বুয়া দু’জন এসে বলল,”তুমি একটু বাইরে যাও বউ। ঘরটা একটু ঝাড়ু দিয়ে ফেলি।”

শাইনার একটু শুতে ইচ্ছে করছিল। সে তিতলির ঘরে গিয়ে চুপিসারে শুয়ে পড়লো।
ঘরদোর ঝাড় মোছ করতে করতে বিকেল গড়িয়ে গেছে। রওশনআরার তবুও মনে হচ্ছে পরিষ্কার হয়নি ভালোমতো। বেশি খুঁতখুঁতে হলে এটাই সমস্যা।
ছেলেরা বাড়ি এল মাগরিবের নামাজের পর। চুলোয় চা বসানো হলো। সবাই চা খাবে। তাসনুভা ঘরদোর সাফ করে গোসল নিয়ে টিশার্ট পরে পরে ঘুরছিল।
তিতলি ঝিমলির বাবুকে কোলে নিয়েছে। তাই রওশনআরা তাকে ডাকলো,”তিতলি নুভাকে ডাকো। চা দিয়ে আসতে বলো।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“আর কাউকে বলতে পারছেনা? শুধু নুভা নুভা আর নুভা।”
চুলটা ভালো করে বেঁধে বিড়বিড় করতে করতে রান্নাঘরে এল তাসনুভা। টিশার্টের সাথে একটা ওড়না প্যাঁচিয়েছে গলায়। চায়ের ট্রে নিয়ে নিচে আসতে যাবে তখুনি দেখলো তাজদারের পাশাপাশি বসে আছে আনিস। দুজনেই ফোনে কি যেন দেখছে আর গুরুতর ভঙ্গিতে কথাবার্তা বলছে। তাসনুভা আবার রান্নাঘরে চলে গেল। রওশনআরা বলল,”কি হলো?”
তাসনুভা বলল,”টিশার্ট পাল্টে আসি।”
“আশ্চর্য! চা ঠান্ডা হয়ে যাবেনা?”
“আবার গরম করবো।”

তাসনুভা টিশার্ট পাল্টে থ্রিপিস পরে নিল। চুল থেকে কাঠি খুলে হাত দিয়ে বাঁকা সিঁথি করে দিল। একটা ছোট্ট ক্লিপ দিয়ে পেছনের চুলগুলো হালকা আটকে দিল। তারপর সামনে শর্ট হেয়ার গুলো কয়েকটা পাশে নামিয়ে দিল। বিরক্তিকর! বাইরের লোকজন এসে বসে থাকে যেদিন টিশার্ট পরবে সেদিন। অসহ্য!
তিতলি বাবুকে দোল দিতে দিতে এসে দেখলো সে ঠোঁটে লিপবাম দিচ্ছে। এ আবার সেজেগুজে কোথায় যাচ্ছে এখন? একটুও শান্তিতে বসা নেই। এতদূর থেকে এসে আবারও ঘুরতে চলে যাচ্ছে। বদহজমি।
কিন্তু কিছুক্ষণ পর তাকে চায়ের ট্রে হাতে নিচে যেতে তিতলি চোখ গোলগোল করে তাকালো। নিচে যাওয়ার জন্য এত সাজগোছ? নতুন ড্রেসও তো পরেছে দেখছি। তিতলি চোখ কচলালো। না ঠিকই দেখছে।
তাসনুভা টি টেবিলে চায়ের ট্র রাখতেই তাজউদ্দীন সিদ্দিকী বলল,”আরেহ আজকে আমার নুভামণি চা বানিয়েছে নাকি?”

চা মা বানিয়েছে। কিন্তু তাসনুভার লজ্জা লাগছে সে বানায়নি কথাটা বলতে। তাই সে বললো,
“আমি চা বানাতে পারি আব্বু।”
“জানি জানি। আমার মেয়ে সব পারে।”
তাজদার আর আনিস এতটাই ব্যস্ত ছিল যে চা এসেছে সেটা তারা খেয়াল করেনি। তাসনুভার রাগ লাগছে। এরা তাকে কি চাকর মনে করেছে? ভাইয়াটা একদম বেশি বেশি। এতদিন তাকে ওখানে খাটিয়েছে। তার ইচ্ছে করছে চায়ের কাপ ঢেলে দিতে।
তাজউদ্দীন সিদ্দিকী বললেন,
“চা এসেছে। তোমরা চা নাও। তাজদার, আনিস।”
আনিস ফোন নিয়ে উঠে গেল। তাজদারকে বলল,”আমি তোর হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেব।”
তৈয়বউদ্দীন সিদ্দিকী বললেন,”চা খাও।”

“না, খেয়ে এসেছি চাচ্চু। আমি এতবার চা খাইনা।”
তাজদার বলল,”আরেহ খেয়ে যা।”
আনিস তাসনুভার পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে বলল,
“না, তোর সাথেই তো খেলাম। হোয়াটসঅ্যাপ চেক করিস।”
সে বেরিয়ে গেল। তাজদার চায়ের কাপ নিয়ে চুমুক বসিয়ে তাসনুভাকে বলল,
“নাশতা নিয়ে যাও। শুধু চা খাব।”
সবার চা খাওয়া শেষ হতেই তাসনুভা ট্রে নিয়ে চলে গেল। সিংকের উপর শব্দ করে ট্রে’টা রাখলো। রওশনআরা অবাক চোখে তাকালেন।
“কি হয়েছে?”

যে কাপের চা খাওয়া হয়নি ওই কাপের সব চা পুরোটাই তাসনুভা বেসিনে ঢেলে দিল। ওটা আনিসুজ্জামান সিদ্দিকীর জন্য ছিল মানে ওটা আর কেউ খেতে পারবে না। তার বাসি চা অন্যজন খাবে কেন? যত্তসব ফালতু। ভাব বেড়ে গেছে তাদের বাড়িতে বোন বিয়ে দিয়ে।
হনহনিয়ে ঘরে চলে গেল সে। চা নাশতা কিছুই খেল না। ঝিমলি তিতলিকে বলল,”ননদ বাঘিনীকে আবার কে খোঁচা দিয়েছে?”
তিতলি ঠোঁট উল্টে বলল,”বজ্জাতি একটা। সারাক্ষণ উগ্র মেজাজ তার।”
তিতলি তার ঘরে ঢুকলো ঝিমলিকে নিয়ে। আলো জ্বালাতেই দেখলো শাইনা ঘুম। এই মেয়েটা এত ঘুমাতে পারে। ঝিমলি ডাকলো,

“মেঝ জা রাত হয়ে যাচ্ছে। আর কত ঘুমাবেন। রাতের জন্য বাকি রাখেন। এই মেঝ জা? শাইনা?”
তিতলি শাইনার গা ধরে হালকা ঝাঁকুনি দিল। শাইনা চোখ ছোট ছোট করে তাকালো।
গায়ের আলসেমি ঝেড়ে ধীরেধীরে উঠে পড়লো শোয়া থেকে। ঝিমলি বলল,”না খেয়েদেয়ে শুধু ঘুমালে হবে? শরীরের অবস্থা তো বারোটা বেজে গেছে।”
তিতলি বলল,”ভাইয়া ঘরে গেছে দেখলাম। তোমাকে খুঁজছে বোধহয়।”
শাইনা শোয়া থেকে উঠে গেল। কতক্ষণ ঘুমিয়েছে আল্লাহ জানে! ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে সে জিভে কামড় দিল। নিজের বাড়ি মনে করে ঘুমাচ্ছে ঢুসে ঢুসে। তিতলি বলল,”চা খাবে? এনে দেব?”
শাইনা বলল,”না না চা খাব না। চা অনেকদিন হলো খাচ্ছি না। কিছু খাব না।”
সে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
নিজের ঘরের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো সে। ভেতরে আলো জ্বলছে, শব্দ হচ্ছে দেখে বুকের ভেতর ঢিপঢিপ করছে।

হালকা করে দরজা ঠেলতেই ভেতরে তাজদার সিদ্দিকীকে দেখে গলা আরও শুকিয়ে এল। গায়ে একটা ডার্ক ব্লু রঙের শার্ট। এই রঙটা খুব মানায় তাজদার সিদ্দিকীর গায়ে। এখন আরও মানাচ্ছে। কারণ বসে বসে খাওয়াদাওয়া করায় একটু স্বাস্থ্য এসেছে আগের চাইতো।
সাহস করে ভেতরে প্রবেশ করার সময় দাদীমা এল। শাইনা উনাকে সামনে রেখে নিজে পেছনে দাঁড়িয়ে ধীরেধীরে ঘরে ঢুকলো।
দাদীমা হাসছে। বলছে, দাদুভাই তোমার বউ ভয় পাচ্ছে বর মহিষের গুঁতো খেয়ে মাথায় শিং নিয়ে ফিরেছে এসেছে ভেবে। গুঁতো খাওয়ার ভয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
তাজদার একটুখানি মাথা ঘুরিয়ে তাকালো।

ঘরটা গোছগাছ করে রাখা। দেখেই শান্তি লাগছে এখন। শাইনা তার দিকে না তাকিয়ে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেল। মুখহাত ধুয়ে বেরিয়ে এল। তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে ল্যাপটপের স্ক্রীনের দিকে তাকালো। দাদীমাও মনোযোগ দিয়ে দেখছে। তাদের বিয়ের ভিডিওগুলো চলছে। বধূবেশে সে, বরবেশে তাজদার সিদ্দিকী।
দাদীমা বললেন,”দেখো দেখো বউ এখনো নতুনই আছে। অথচ মনে হচ্ছে কত সময় চলে গেছে।”
স্ক্রিনটা হঠাৎ নিভে গেল। ল্যাপটপ চার্জে লাগিয়ে তাজদার ধীরে উঠে দাঁড়াল। হাত দুটো ঝাড়া দিয়ে ঘাড়টা এপাশ-ওপাশ ঘুরিয়ে নিল। তারপর শাইনার পাশ ঘেঁষে হেঁটে গিয়ে বলল,
“হাই!”

শাইনা চমকে তাকাল তার দিকে। তাজদার ওয়ারড্রবের সামনে গিয়ে থামল, মাথা উল্টে তাকাল শাইনার দিকে। চোখেমুখে দুষ্টু ঝিলিক। ভ্রু দুটো হালকা নাচাল। শাইনা তার তাকানোর ভঙ্গিমা দেখে মৃদু হেসে দাদীমার দিকে ফিরে গেল।
দাদীমা বলল,”আমি গেলাম। তোমাকে এটা বলতে এসেছিলাম। তোমার মা বললো খালি পেটের ঔষধগুলো খেয়ে নিতে।”
“ওকে।”
দাদীমা চলে যাচ্ছিল। তাজদার থামিয়ে দিয়ে বলল,”দাদু ওর নামটা বললে না এখনো।”
“কার?”
“ওই প্রতিবেশীর নামটা যে হাসপাতালে বিলাপ করে কাঁদছিল।”
দাদীমা শাইনার দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে চলে গেলেন। তাজদার দরজা অব্দি এগিয়ে দিয়ে বলল,
“মনে করে বলবে কিন্তু।”

বলতে বলতেই দরজাটা শব্দ করে বন্ধ করে দিল সে। ঘরের ভেতর নিস্তব্ধতা নামল। শাইনার পেটের ভেতর হঠাৎ ‘গুড়গুড়’ করে উঠল। এখন তাকে ইচ্ছেমতো পচাবে।
তবে তাজদার এমন কিছুই করল না, যেমনটা শাইনা ভেবেছিল। বরং ফোনটা হাতে নিয়ে একেবারে ব্যস্ত হয়ে গেল। কাকে যেন একের পর এক ফোন করছে, এদিক-ওদিক পায়চারি করছে, আবার ফোন করছে। একদম থামছেই না। শাইনা অনেকক্ষণ ধরে নীরবে তার এই অস্থিরতা দেখছিল।
অবশেষে বিরক্তি চেপে রাখতে না পেরে মৃদুস্বরে জিজ্ঞেস করল,“কার খোঁজ করছেন?”
তাজদার ফোনটা কান থেকে নামিয়ে একটু থেমে শাইনার দিকে তাকাল। ঠোঁটের এককোণ টেনে হেসে বলল,
“ওই প্রতিবেশীটার খোঁজ করছি যে হাসপাতালে চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে কাঁদছিল।”
কথাটা শুনে শাইনা আবারও ঘুরে দাঁড়ালো। সে চলে যাবে এখন এই ঘর থেকে। বাজে লোক।
তাজদার ফোনটা কানে চাপলো। ওপাশে তৌসিফ কথা বলছে। অনেকক্ষণ কথা বললো তাজদার। কোন বিষয়ে কথা বলছে সেটা শাইনার কাছে স্পষ্ট নয় যদিও।
তবে শেষের দিকে রসিকতা করে বলল,

“ওই প্রতিবেশীটার খোঁজ পেয়েছিস? আমি তো হাঁটে বাজারে যেতে পারছিনা। মানুষ আমাকে জাপ্টে ধরছে জানার জন্য ওই প্রতিবেশীটা কেন এমন বিলাপভাবে কাঁদছিল? মা বোন কাঁদছিল তা মানা যায়। কিন্তু প্রতিবেশী কেন বিলাপ করে কাঁদবে? হু ইজ শী? আমাকে তো একটা জবাব দিতে হবে তাদেরকে।”
শাইনা রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে উঠলো,
“আমি মোটেও বিলাপ করে কাঁদিনি।”
তাজদার কপাল কুঁচকে তার দিকে তাকালো। শাইনা টেবিলের ওপাশে চলে গেল। টেবিলটা গোছগাছ করতে লাগলো। নিজেকে ব্যস্ত রাখলো। তাজদার টেবিলের ওপাশে দাঁড়ালো টেবিলের উপর হাত রেখে। শাইনার মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য ডাকলো,

“হ্যালো!”
শাইনা তাকালো চোখ তুলে। তাজদার সিদ্দিকী সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল,
“প্রতিবেশী বউ কেন বিলাপ করে কাঁদবে? হাতেনাতে প্রমাণ না পাওয়া অব্দি আমি বিশ্বাস করছিনা।”
শাইনার মুখ গম্ভীর হয়ে গেল। তাজদার তাকে আপাদমস্তক দেখছে। শাইনা ওড়না টেনে নিজেকে ঢেকেঢুকে বই গোছগাছ করতে লাগলো। বলল,
“করবেন না।”
তাজদার সিদ্দিকী সরু চোখে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল,
“আসল রোগী কে?”
শাইনা তার দিকে আবারো তাকালো। বলল,
“আপনি।”
“আমাকে দেখলে কেউ বলবে না আমি রোগী।”
“আমাকে দেখলে বলবে?”
তাজদার জোর দিয়ে বলল,”অফকোর্স।”
“রোগী কে বানিয়েছে?”

তাজদার ঠোঁটের কোণায় আবারও দুষ্টু হাসি চাপলো।
শাইনা একটা বই মুখের ওপর তুলে দিয়ে বলল,”আমি ঘর থেকে বেরিয়ে যাব।”
“আমি কি করেছি?”
শাইনা মিনমিন করে কি যেন বললো। তাজদার মাথা একটু উঁচু করে দুলে দুলে হেঁটে শাইনার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। একদম পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ফিসফিস করে বলল,
“Let me see the result of my magic.”
শাইনার কান গরম হয়ে উঠলো। অসভ্য! বিড়বিড়িয়ে বলল,
“কচুর ম্যাজিশিয়ান। মহিষের গুঁতো খেয়ে হাসপাতালের বেড থেকে উঠেছে দুইদিন হয়নি।”
বলেই ওড়না দিয়ে নিজেকে আরো ঢেকেঢুকে নিল সে। দেখাবে না তার ম্যাজিকের রেজাল্ট।
তাজদার তার বিড়বিড়িয়ে বলাটা বুঝে ফেলেছে। মাথা নিচু করে শিং দিয়ে গুঁতো মারার ভঙ্গিতে শাইনার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলল,

“এসো তোমাকে দেখাই কিভাবে মহিষ আমাকে গুঁতো মেরেছে। এসো এসো।”
বলেই শাইনার দিকে হেঁটে এল হেলেদুলে মজার ছলে। শাইনা পিছু হাঁটতে গেল। কিন্তু পালানোর সম্ভব হলো না। শুধু ঘুরে গেল সে। তাজদার সিদ্দিকী তাকে দু-হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে ফেললো পেছন থেকে খুব আলতো করে। পেটের কাছটায় শাইনার জড়ো করে রাখা হাতদুটো শক্ত করে ধরে বলল,

“It’s my right to see the result of my magic shyna mumtaj. don’t keep me waiting.”
শাইনা কাঁপছিল তার স্পর্শে। গরম নিঃশ্বাসটা ওড়নার ফাঁক দিয়ে ঘাড়ে এসে পড়ল। এক হাতে তার হাত দুটোকে শক্ত করে ধরে রেখেছে তাজদার, আর অন্য হাতের তিনটি আঙুল নিঃশব্দে উদরের কোমল ত্বক স্পর্শ করতেই শাইনার শরীরের সমস্ত কোষ সাড়া দিয়ে গোটা শরীরটা কেঁপে উঠল। হঠাৎ এক ঝটকায় সে সামনের দিকে ছুটে গেল। তাজদার সিদ্দিকীর বুকে ঠেকে গেল মাথা। সঙ্গে সঙ্গে তাকে আঁকড়ে ধরল তাজদার। এতক্ষণ এটাই চাচ্ছিল সে। দু’জনই একে অপরকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখলো।

তাজমহল দ্বিতীয় খন্ড পর্ব ১

শাইনার শরীর কাঁপছিল।হয়তো তার গর্ভে বেড়ে ওঠা প্রাণটিই এতটা তীব্র কাঁপুনি আনছিল পিতৃস্পর্শ পেয়ে। শাইনার চোখে অচেনা অনুভূতির জল ভেসে এলো। নিয়মে বাঁধা ভালোবাসা আসে হিসাব মতো, কিন্তু মানুষের প্রতি মানুষের মায়া আসে হঠাৎ, অযাচিত নিয়মের বাইরে। নইলে পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ সংসারবিহীন থাকত। তাজদার সিদ্দিকী আর শাইনা মমতাজও।

তাজমহল দ্বিতীয় খন্ড পর্ব ৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here