প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৩৯

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৩৯
জান্নাত নুসরাত

তীব্র আলোক রশ্মি চোখের উপর পড়তেই ইসরাত কপালে ভাঁজ ফেলে চোখ মেলে তাকালো। নিভু নিভু চোখে একবার তাকিয়ে আবার চোখ বন্ধ করে নিল। ধীরে ধীরে যখন সবকিছু মনে হতে লাগলো চোখ খুলে আবার তাকালো। নিজেকে ড্রয়িং রুমে সোফায় শুয়ে থাকতে দেখে একটু অবাকই হলো বটে। হাতে ভর দিয়ে সোফাতে বসতে যাবে চিনচিন ব্যথা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ল। না চাওয়া সত্ত্বেও মুখ দিয়ে বের হয়ে আসলো ব্যথাতুর শব্দ।
জায়িন কিচেন থেকে পানি গরম হাতে নিয়ে ফিরে আসলো। ইসরাতকে মুখ চোখ কুঁচকে বসে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করলো,”কি হয়েছে?

ইসরাত কথা বলল না। ক্লান্তিতে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে তার। কথা বললেই মনে হচ্ছে শক্তি নষ্ট হবে। জায়িন উত্তর দিতে না দেখে উঠে গিয়ে নিজের রুম থেকে ফাস্ট-এইড-বক্স নিয়ে আসলো।
ইসরাতের হাত টেনে নিয়ে তুলো দিয়ে ময়লা, রক্ত পরিস্কার করলো। তুলোয় স্যাভলন লাগিয়ে ইসরাতের হাতের ক্ষত স্থানে স্পর্শ করলো। ইসরাতের হাতে স্পর্শ করতেই স্যাভলনের জন্য জ্বালা করে উঠলো। ইসরাত দাঁত খিচে বসে রইলো। জায়িন কপালের পাশের ক্ষততে ধীরে ধীরে স্যাভলন লাগিয়ে জায়গা পরিস্কার করে এইড প্লাস্টার লাগিয়ে দিল।
জায়িন ইসরাত কে জিজ্ঞেস করলো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“আর কোথাও ব্যথা পেয়েছো?
ইসরাত মাথা নাড়িয়ে না করলো। জায়িন ইসরাতের কথা বিশ্বাস না করে ওভার কোটের উপর থেকে হাতে চাপ দিল। চাপ দিয়ে উপরের দিকে উঠে কনুইয়ে চাপ দিতেই ইসরাত ব্যথায় আম্মু বলে চিৎকার করে উঠলো।
” আ’ম স্যরি! বেশি ব্যথা পেয়েছো। আমি বুঝিনি! আর ইউ ওকে?
ইসরাত দাঁতে দাঁত চেপে মাথা নাড়ালো। জায়িন ইসরাতের হাতের তালু থেকে শুরু করে কনুই পর্যন্ত ক্রেপ পট্টি বেঁধে দিল। পায়ের নখের দিকে তাকিয়ে আঁতকে উঠলো।
“পায়ে কি হয়েছে? নখের এই অবস্থা কেন?
ইসরাত মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে তাকাল। আগের তোলনায় মুখ আরেকটু বেশি গম্ভীর হয়ে গিয়েছে।
জায়িন ইসরাতের পায়ের গোড়ালিতে ধরে মুচড় মারলো। ইসরাত পায়ের ব্যথায় চোখ মুখ খিচে আব্বু বলে ডুকরে কেঁদে উঠলো।

” আরে আরে কান্না করছো কেন? কান্না করো না পায়ের ব্যথা কমে যাবে। পায়ের হাড্ডি মচকে গেলে ঠিক হয়ে যাবে।
ইসরাত কান্না গিলে নিতে চাইলো কিন্তু পায়ের ব্যথা আর হাতের চিনচিনে ব্যথায় না চাইতে ও কান্না আসছে। জায়িন ইসরাতের পায়ে ক্রেপ পট্টি বেঁধে দিতে দিতে জিজ্ঞেস করলো আবার,”পায়ে কি হয়েছে? নখের এই অবস্থা কেন?
ইসরাত গম্ভীর গলায় বলল,
“নখ পরে গিয়েছে!
” কীভাবে?
ইসরাত থমথমে গলায় বলল,
“সাইকেলের চেইনে ঢুকে।
জায়িনের মাথায় হঠাৎ আসলো এটা তো সে ঘটিয়ে ছিল। ইসরাতের দিকে অসহায় চোখে তাকিয়ে বলল,” এতো বছরে নখ উঠেনি?
ইসরাতের সোজা সাপ্টা উত্তর,
“মরে গেছে।
জায়িন করুন চোখে তাকিয়ে রইলো ইসরাতের দিকে। নিজের উপর নিজেরই রাগ হলো। ইশ মেয়েটার নখের এই হাল সে করেছে। ইসরাত উঠে দাঁড়ালো। পা টেনে টেনে নিয়ে রুমে গেল। জায়িন ইসরাতের পায়ের দিকে করুন চোখে তাকালো। নিজেকে নিজের কাছে অপরাধী মনে হলো।

নুসরাত আরশের চুলে ধরে টান দিয়ে বলল,
” ভাইয়া আমাকে একটা বেশি মেরেছে তাই সমান সমান করে নিলাম। এবার মনে হচ্ছে সমান সমান হয়েছে।
নাজমিন বেগম বললেন,
“নুসরাত হাত ভেঙে দিব। স্বামীর উপর হাত তুলো। তোমার সাহস দেখছি দিন দিন বাড়ছে।
আরশ নাজমিন বেগমকে উৎসাহ দিয়ে বলল,
” চাচি দু-একটা থাপ্পড় মেরে বোঝান,স্বামী হলো পিতার সমাম্মম্মম……
নুসরাত ভ্রু উঁচিয়ে বলল,
“হ্যাঁ হ্যাঁ বলেন স্বামী কীসের সমান?
আরশ চুরের মতো মুখ লুকালো। নুসরাত চেপে ধরলো বলার জন্য! আরশ আমতা আমতা করতে লাগল।

” হয়েছে আর যেন একটা আওয়াজ তোমাদের রুমের বাহিরে না যায়। স্বামী স্ত্রী মিলে যা ইচ্ছে করো। নিজেদের রুম ভেঙে ফেল কিন্তু আল্লাহর ওয়াস্তে আমাদের ঘুমাতে দাও।
হেলাল সাহেব বের হয়ে গেলেন। নাছির সাহেব ভাইয়ের পিছন পিছন গেলেন। নাজমিন বেগম ভাশুর কে বের হতে দেখে হাত উপরে তুলে নুসরাতের দিকে আসলেন। নুসরাত লাফ মেরে গিয়ে আরশের পিছনে লুকালো।
“আর যদি বেয়াদবি করতে দেখি তাহলে থাপড়ে গাল মুখ বন্ধ করে দিব।
“আম্মা থাপড়ে মুখ কীভাবে বন্ধ করবে।
“দেখবি তুই….
” না না দেখবো না।
নাজমিন বেগম আর লিপি বেগম বের হয়ে গেলেন। নুসরাত আরশের পিছন থেকে উঁকি ঝুঁকি মেরে দেখলো মা কে বের হতে। আরশ পিছন ফিরে নুসরাতের দিকে তাকালো। নুসরাত ও তাকাল। দু-জন দুজনের দিকে রাগী দৃষ্টি দিয়ে গিয়ে শুয়ে পড়ল। আরশ টেবিল ল্যাম্প হাত বাড়িয়ে অফ করে দিল।

নুসরাত বালিশের দিকে মুখ দিয়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে। আরশ শাওয়ার নিয়ে এসে নুসরাত কে ঘুমাতে দেখে জ্বালালো না একবার ভাবল জ্বালাবে, পরে ভাবলো ঘুমাচ্ছে যখন ঘুমাক এখন আর জ্বালাবে না।
আরশের রুম পরিপাটি করে রাখা। নিজে যেমন পরিস্কার থাকে তার রুম ও সেরকম পরিস্কার থাকে। কিন্তু নুসরাত আরশের উল্টো আরশ যেখেনে পরিপাটি থাকে নুসরাত সেখানে অগোছালো হয়ে ঘুরে বেড়ায়। যেখানে খায় সেখানে ফেলে দেয়। কাবার্ড খুলে কালো রঙের শার্ট আর কালো রঙের প্যান্ট ইন করে পরে নিল। হাতে কোট নিয়ে রুম লক করে বের হয়ে গেল। আরশ যেতেই নুসরাত আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলো। আরশের ওয়াশরুমে ঢুকে সব চোখ দিয়ে স্ক্যান করলল। আরশের বাথরুমে দামি দামি ব্র‍্যান্ডের প্রোডাক্ট দেখে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি ভাবলো?
সব জিনিস দু-হাত ভরে নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসলো। ইরহামের রুমে গিয়ে ইরহামকে দেখালো।

“কিনবি?
ইরহাম জিনিস গুলো নাড়িয়ে চাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো,
” তুই কোথায় পেলি এতো দামি দামি ছেলেদের জিনিস?
“পেয়েছি। এবার বল কত টাকা দিবি?
” উমম দাম তো এগুলোর অনেক বেশি তুই কত টাকা দিয়ে সেল করবি সেটা বল।
“মাত্র দুই হাজার টাকা।
“আচ্ছা দিচ্ছি! কিন্তু খচ্ছরনি তুই দাঁত ব্রাশ করিস নি।
“না।
” ছি্হ, মুখ না ধুয়ে রুম থেকে বের হয়ে আসলি। ছি্হ ছি্হ….
নুসরাত ইরহামের কাছে আরশের জেল, শেভিং ক্রিম, ফেইস ক্রিম, সিরাম, সব বেচে দিল। দুই হাজার টাকা প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে ভাঙা গলায় গান গাইতে গাইতে রুমে আসলো। আরশের কাবার্ড খুলে নুসরাতের চোখ মনে হয় খুলে হাতে চলে আসলো।

কাপড়ে ভর্তি কাবার্ড। নুসরাত আরশের কাবার্ডের ভিতর থেকে সব কাপড় বের করে বিছানায় রাখলো। জিন্স, ব্যাগ্গি প্যান্ট, কার্গো প্যান্ট,শর্টস,থ্রি কোয়াটার, গ্যাবার্ডিন সব ধরণের প্যান্ট আছে।
শার্টের ওখানে পেল ওভার সাইজড টি-শার্ট, ওভার সাইজড গেঞ্জি, ফর্মাল শার্ট, নুসরাত সব হাতে নিয়ে নিয়ে দেখলো। সব তো তারই প্রয়োজনীয় জিনিস। এসব তার কাজে আসবে।
নুসরাতের চেক করার মাঝে ইরহাম এসে নুসরাতকে কাপড় বের করে দেখতে পেল। জিজ্ঞেস করলো,”এসব দিয়ে কি করবি তুই?
” দেখ ইরহাম সব আমার টাইপ কাপড়। এই গুলা এখন থেকে সব আমার। আমি গরীব কোনো কাপড় নাই আর এই বেডার দেখ কাবার্ড ভর্তি কাপড়ের কালেকশন।
“আমি এখান থেকে কিছু নিতে পারি?
” তু তো মেরি জানের জিগার দোস্ত। যা ইচ্ছে, তাই নে।

ইরহাম নুসরাতের কথা শোনে আরশের কাপড়ের কাবার্ড থেকে ইচ্ছেমতো কাপড় নিয়ে নিলো।
“নুসরাত তোর রুমে তো তালা দেওয়া রাখবি কই কাপড় তুই?
” আরে চিল ব্রো! তোর কাবার্ডে রাখবো।
নুসরাত আর ইরহাম মিলে আরশের কাবার্ড খালি করে কাপড় নিয়ে চলে গেল। সব কাপড় ইরহামের কাবার্ডে দলা পাকিয়ে রেখে দিল। দুজন কাপড় গুলো রেখে হাত ঝাড়লো।
“এই ভাইয়া কি পরবে? আমরা তো সব কাপড় নিয়ে চলে আসছি।
“আছে আমার কাছে আইডিয়া!
“কি?
নুসরাত ইরহামের কানে কানে কিছু বলল। ইরহাম মাথা নাড়ালো। তারপর দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে হাই ফাই করে হেসে উঠলো।

ইসরাত এক ঘুম দিয়ে রাত দুটোর দিকে ঘুম ভাঙলো। মেঝেতে পা রাখতেই চিনচিন করে উঠলো সারা শরীর। কোনোরকম রুম থেকে পা টেনে টেনে বের হয়ে আসলো। ড্রয়িং রুম অন্ধকারে ডুবে আছে। অন্ধকারের মধ্যে হালকা আলোক রশ্মির ছটা সোফার উপর রাখা যান্ত্রিক ডিভাইস থেকে আসছে।
জায়িন ল্যাপটপ থেকে চোখ তুলে তাকালো ইসরাতের দিকে। ইসরাত একবার জায়িনের দিকে তাকিয়ে কিচেনে যেতে নিবে জায়িন সুইচ বোর্ডে চাপ দিয়ে লাইট অন করে নিল। থমথমে গলায় বলল, ” এখানে বসো! আমি খাবার নিয়ে আসছি। পায়ে ভর পড়লে ব্যথা কমবে না। আরো বাড়বে।
জায়িন গিয়ে খাবার নিয়ে আসলো। খিচুড়ি আর ডিম করেছে। ইসরাতের মুখে চামচ তুলে খাইয়ে দিতে যাবে ইসরাত বলল,”আমি অতোটা ও দূর্বল নই যে আপনাকে আমায় খাইয়ে দিতে হবে। ধন্যবাদ কন্সার্ণের জন্য। আমি নিজে খেয়ে নিতে পারবো।
জায়িন সোফার উপর প্লেট রেখে ল্যাপটপ কোলে নিয়ে বসে গেল। ইসরাত খাবার শেষ করতেই জায়িন এসে প্লেট নিয়ে পানি এনে দিল। পানি দুই চুমুক খেয়ে উঠে ইসরাত রুমে চলে গেল।
জায়িন ইসরাতের দিকে তাকিয়ে তাকলো নির্মিশেষ দৃষ্টিতে। তার নিজেকে বার বার অপরাধী মনে হচ্ছে। তার জন্য মেয়েটার পায়ের নখ উপড়ে গিয়েছে। জায়িনের চোখে সামনে আবার ইসরাতের পা ভেসে উঠলো। সে মাথা ঝাড়া দিল যাতে আর মনে না আসে।

আরশ রাত দশটার দিকে বাসায় আসলো। রুমে গিয়ে নুসরাতকে একবার খুঁজলো কিন্তু পেল না। না পেয়ে রুমের দরজা লক করে হাতে টাওয়াল নিয়ে আরশ গোসল সারতে গেল। গোসল শেষে টাওয়াল কোমরে পেঁচিয়ে বাহিরে বেরিয়ে আসলো।
হাত দিয়ে চুল নেড়ে পানি ঝাড়লো। কাবার্ড খুলে আরশের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। তার কাবার্ডের ভিতর কাপড় গুলো উধাও হয়ে গিয়েছে? ছোট কাপড়ের ড্রয়ার খুলে আরশের চোখ বিস্ময়ে বড় বড় হয়ে গেল। তার কোথাও কোনো কাপড় নেই। নুসরাতের কাপড় যেখানে রাখা হয়েছে সেখানের পার্ট খুলেও দেখল ব্যগ্গি প্যান্ট কয়েকটা, ফ্লেয়ার প্যান্ট, টি-শার্ট ছাড়া আর কিছুই নেই। নুসরাতের কাপড়ের জায়গা খালি খালি পড়ে আছে। আরশ কাবার্ডের নিচের দিকে তাকালো যেখানে কম্ফোটার রাখা থাকে সেখানে লাল কালার গেঞ্জি আর হলুদ কালার থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট রাখা।

আরশ রাগে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে টাওয়াল পড়ে রুম থেকে বের হয়ে আসলো। নুসরাত ইরহামের রুমে বসে লুডু খেলছিল। আরশকে ধড়াম করে দরজা খুলে রুমে ঢুকতে দেখে নুসরাত আর ইরহাম দু-জন কেঁপে উঠলো।
আরশ রাগে কথা বলতে পারলো না। দাঁতে দাঁত চেপে নুসরাতের দিকে রাগী চোখে নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে রইলো। ইরহাম বুঝলো আবহাওয়া গরম কেটে পরাই ভালো। আলগোছে আরশের পাশ কাটিয়ে বের হয়ে গেল রুম থেকে। নুসরাত মাথা কাথ করে আরশের দিকে গভীর চোখে তাকালো। চোখ বড় বড় করে আরশের উপর থেকে নিচের দিকে চোখ বুলালো। চোখ বুলানো শেষে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে মুচকি মুচকি হাসল।
“আমার কাপড় কি করেছিস?
নুসরাত সে কথার উত্তর না দিয়ে আরশের দিকে এগিয়ে গেল। তর্জনী আঙুল তুলে আরশের বুকের মাঝ বরাবর ঘুরালো। আরশ নুসরাত কে উত্তর না দিতে দেখে হাত চেপে ধরে বুকের উপর থেকে নামিয়ে আনলো।

” প্রশ্নের উত্তর দে?
নুসরাত মুখে হাত দিয়ে আরশের দিকে নির্লজ্জের মতো তাকিয়ে বলল, ” বাহ আপনার এবস আছে! আগে তো দেখিনি।
আরশ নুসরাত কে তার দিকে এভাবে তাকাতে দেখে থতমত খেল। নুসরাতকে নিষেধ করে বলল,”নির্লজ্জের মতো তাকাবি না। আমার কাপড় কই রাখছিস এসে বের করে দে?
“না দিলে কি করবেন?
“তোর সামনে আমি সারারাত এভাবে বসে থাকবো।
নুসরাত বাঁকা চোখে তাকিয়ে বাঁকা হাসল।

“উপস, আমি ভয় পেয়ে গেলাম। আপনাকে তো এভাবে দেখতে প্রচুর হট লাগছে। চলুন চলুন, আপনাকে সামনে বসিয়ে আজ সারারাত মন ভরে দেখবো। চাইলে আপনি টাওয়াল টা ও খোলে ফেলতে পারেন এতে আপনাকে আরো বেশি হট, এন্ড সেক্সি লাগবে আর আজ রাতে যদি আমি নিজের উপর থেকে কন্ট্রোল হারাই তাহলে ডবলিউ ডবলিউ ম্যাচ ও হয়ে যেতে পারে।
আরশ নুসরাতের চোখ চেপে ধরলো। নুসরাত আরশের হাত চোখের উপর থেকে টেনে নামাতে চাইল কিন্তু আরশ শক্ত করে ধরে রাখলো। নুসরাত হাস্কি গলায় বলল,
” আপনাকে দেখে আমার কি যে করতে ইচ্ছে করছে? পার্সোনাল রুমে চলুন টাইটলি চেপে ধরে আপনার ঠোঁটে একটা চুমু খাব।

আরশ নুসরাতের ফাউল কথায় কান দিল না। গম্ভীর গলায় বলল, “আমার কাপড় বের করে দে?
” ভাই আমি কি জানি? আপনার কাপড় কোথায় আপনি জানবেন? আর আমি জানলে তো বের করে দিব। আমি আপনার কাপড় কোথায় রাখা সেটাই জানি না?
“নুসরাত গালে থাপ্পড় পড়বে। ভালোয় ভালোয় দিয়ে দে।
” থাপ্পড় পড়লে ও আমি এটা বলবো। আমি জানি না!
” জানি না মানে কি?
“জানি না!
আরশের ইচ্ছে করলো না নুসরাতের সাথে কথা বলতে। রুম থেকে বের হতেই আহান আরশকে দেখে চিৎকার করে তার মাকে ডাকলো।

“আম্মু দেখে যাও, সেজ ভাইয়া লেহেঙ্গা পড়ে নিয়েছে ব্লাউজ ছাড়া।
আরশ দৌড়ে গিয়ে আহানের মুখ চেপে ধরলো। ততক্ষণে রুহিনি চলে এসেছেন। আরশকে টাওয়াল পরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নিজে লজ্জা পেয়ে চলে গেলেন। আরশের লজ্জায় গাল লাল হয়ে গেল। নুসরাত আরশকে লজ্জা পেতে দেখে ছেলেরা যেভাবে মেয়ে দেখলে মুখ দিয়ে শিষ দে নুসরাত ও শিষ দিল।
আহান লুটোপুটি খাচ্ছে হেসে ভাইয়া লেহেঙ্গা পড়েছে, তাহলে উপরে কেন ব্লাউজ পরেনি? নাজমিন বেগমকে এদিকে আসতে দেখে আরশ নুসরাতকে টেনে নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে দিল। নুসরাতের মতো ছিমছাম গড়নের মেয়ে আরশের মতো সুঠাম দেহের লোকের সামনে দাঁড়িয়ে অর্ধেক ও হলো না। নাজমিন বেগম অনিকার রুমে ঢুকে গেলেন। আরশ নুসরাত কে নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে নিজে পিছনে হেঁটে রুমে গেল। নুসরাতের কাবার্ডের পার্ট খুলে নুসরাতের টিশার্ট আর কার্গো প্যান্ট বের করলো। নুসরাত নিজের জিনিস কবজা হতে দেখে দু-পাশে হাত মেলে গিয়ে দাঁড়ালো কাবার্ডের সামনে।

” কি ভাই? আমার জিনিস নিয়ে টানাটানি করছেন কেন?
আরশ কাবার্ডের দরজায় হাত দিয়ে নুসরাতের দিকে ঝুঁকে গেল। নুসরাতের মুখের কাছে নিজের মুখ নিয়ে আসলো। আরশের নাক নুসরাতের নাকের প্রায় ছুঁই ছুঁই। এক ইঞ্চির দূরত্ব রাখলো নিজেদের মধ্যে। হাস্কি স্বরে বলল,”তুই পুরোটাই তো আমার। তোর জিনিস আমার জিনিস বলতে কি?
“কিছু খেয়ে এসেছেন নাকি? আমাকে বোকা পেয়েছেন! শালা অন্যদিকে গিয়ে এসব ফ্লার্ট করেন আমার সাথে করতে আসবেন না। আপনার থেকে ভালো ফ্লার্ট করতে আমি জানি। আপনাকে করে দেখাবো?
নুসরাত হাত দিয়ে আরশের গালে আঙুল নাচালো। গাল থেকে আঙুল নাকের কাছে নিল। নাক থেকে ঠোঁট, ঠোঁট থেকে থুতনি বেয়ে বুকের কাছে তর্জনী আঙুল রাখলো। আরশ নুসরাতের হাত সরিয়ে দিল বিরক্তির সহিত। নুসরাত ফ্লায়িং কিস ছুঁড়ে দিল আরশের দিকে।
আরশ বিরক্ত হয়ে বলল,

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৩৮ (২)

” টিজিং করা বন্ধ কর।
নুসরাত ঠোঁট চুমুর মতো করে আরশের দিকে তাকালো। আরশ নুসরাতের মুখে হাত দিয়ে ঠেলে পিছনে সরিয়ে নুসরাতের কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল। আরশ চলে যেতেই নুসরাতের হাসি হাসি মুখ শক্ত হয়ে গেল। দাঁতে দাঁত চেপে কটমট শব্দ করলো।

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৪০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here