তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ৩১
তাবাস্সুম খাতুন
রাত আট টা বেজে বিশ মিনিট।তিমিরে ঢাকা আঁধারের মধ্যে জঙ্গলের নিচে থাকা গোপন টর্চার সেল থেকে কিছু মানুষের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে।
নিশানের গাড়ি মাত্র এসে থামলো জঙ্গলের রাস্তায়। সে দ্রুত পায়ে গাড়ি থেকে বেড়িয়ে জঙ্গলের ভিতরে ঢুকলো। কিছুদূর যেতেই নিচু হয়ে গোপন টর্চার সেল এর দরজা খুলে তার ভিতরে প্রবেশ করলো ধীর পায়ে। ভিতরে ঢুকে আবারো দরজা লাগিয়ে দিলো। নিশান দৃঢ়তার সাথে হেঁটে ভিতরে ঢুকলো। তাকে দেখে খাঁচায় বন্ধী হিংস্র প্রাণী গুলো ডাক দিয়ে উঠছে। নিশান সেইদিকে একবার তাকিয়ে রুমের ভিতরে ঢুকলো। নিশান কে দেখে জিহান সোফা থেকে উঠে বসলো একটা চেয়ারে। নিশান গিয়ে সোফায় বসে জিহানের উদ্দেশ্য গম্ভীর কণ্ঠে বললো,,,
“তুই যা এই খান থেকে।”
জিহান কোন প্রশ্ন না করে বেড়িয়ে গেলো। সেলিনা নিশান কে দেখে বলে উঠলো,,,
“আব্বু তুই আমাদের এইখানে এনেছিস কেন? কি বাজে গন্ধ আমার বমি আসছে।”
নিশান কোন উত্তর দিলো না ঘাড় এইপাসে ঐপাশে কাত করে ঘাড় ফুটিয়ে নিলো। নিশান উঠে দাঁড়ালো সোজা সে ছেলেটার কাছে গেলো ছেলেটা নিশানের দিকে তাকিয়ে আছে। নিশান হুট্ করে জোরে থাপ্পড় লাগালো ছেলেটার গালে। ছেলেটা মাথা নিচু হয়ে গেলো নিশান দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,
“মাথা এইভাবে নিচু করে রাখবি উঁচু নয়।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
ছেলেটা কিছু বলতে পারছেনা তার হাত পা বাঁধা। তার রাগে মাথা ফেঁটে যাচ্ছে তাকে কি এই নিশান চেনে। তার কত বড়ো পাওয়ার এই দেশে সেইটা হয়তো জানেনা। নিশান সোজা ভাবে ছেলেটা কে জিজ্ঞাসা করলো,,,
“নাম কি তোর?”
ছেলেটা এখনো কোন কথা বলছে না। নিশান পাশে থাকা একটা রড তুলে ছেলেটার হাতে জোরে বাড়ি মারলো। ছেলেটা জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলো নিশান এইবার বললো,,,
“নাম কি?”
ছেলেটা রাগে তিরতির করতে করতে বললো,,,
“সাফরাজ খান নীলয়।”
নিশান ভ্রু কুঁচকে বললো,,,
“নীলের ভাই?”
নীলয় মাথা নাড়লো। নিশান শান্ত কণ্ঠে বললো,,,
“পার্টি তে কি করতে এসেছিলিস?”
নীলয় — “আব্বুর বিজনেস সম্পর্কে আসছিলাম।”
নিশান — “আমার বউ কে নষ্টা করার কথা কে বলেছে তোকে?”
নীলয় কিছু বললো না চুপ রইলো। নিশান এক পলক দেখে টেবিলের কাছে গেলো সেইখানেই থাকা একটা বড়ো বাক্স সে খুললো। সেখান থেকে একটা নেইল কাটার বাহির করলো। হাতে নিয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে সেইটা নীলয়ের কাছে আনলো।নীলয় এখনো নিশ্চুপ। এইদিকে মিষ্টি আর সেলিনা ভয়ে কাঁপছে না জানি তাঁদের সাথে কি করে। নিশান নীলয়ের কাছে এসেই নীলয়ের বাম হাতের একটা আঙ্গুল কেটে দিলো। নীলয় চিৎকার দিয়ে উঠলো। নিশান আরেকটা আঙ্গুল কাটতে গেলেই নীলয় বলে উঠলো,,,
“কাটবে না আর আমি বলছি আমি বলছি।”
নিশান হাত নামালো নীলয় বলে উঠলো,,,
“ঐযে ওই দুই মহিলা ওরা আমাকে বলেছে তোমার বউ কে নষ্ট করে দিতে। যেন তুমি তাকে ভুল বুজে ছেড়ে দাও। আর এর জন্য আমাকে বিশ লক্ষ্ টাকা তারা দিতে চেয়েছে।”
নিশান নীলয়ের হাতের বাঁধন সহ পায়ের বাঁধন খুলে দিলো। নীলয়ের ঘাড়ে হাত রেখে বললো,,,
“সত্যি কথা বলেছিস তাই শাস্তি একটু কম দেবো। তবে ঐযে মেয়েটা না ওই মেয়েটার সাথে তোর এখন অন্তরঙ্গ হতে হবে এই মুহূর্তে আমার সামনে। যদি পারিস তবে তোকে জ্যান্ত যেতে দেবো যা।”
বলে নিশান আবারো সোফায় গিয়ে বসে পড়লো। সেলিনা চিৎকার দিয়ে বললো,,,
“নিশান এইটা কি করছিস বাবা তুই? অমন করিস না। ও একটা মেয়ে ওর সন্মান এইভাবে নষ্ট করিস না। ওকে কলঙ্কিত করিস না।”
কিন্তু নিশান কোন কথা শুনলো না সে নীলয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,,,
“জ্যান্ত থাকার ইচ্ছে থাকলে যা বললাম করে ফেল।”
বলে নিশান নিজের ফোন বাহির করে স্ক্রল করতে লাগলো। এইদিকে নীলয় মিষ্টির কাছে গেলো মিষ্টি বলে উঠলো,,,
“নীলয় আমি তোর বোনের মতো প্লিজ আমার এই সর্বনাশ করিস না।”
নীলয় মিষ্টির কাছে এসে মিষ্টির উড়না গা থেকে ফেলে দিয়ে বললো,,,
“বোনের মতো বোন তো আর না।”
মিষ্টি কাকুতি মিনতি করে বললো,,,,
“নীলয় এমন করিস না। আমাকে কলঙ্কিত করিস না তুই টাকা নিয়েছিস তো। আমি আরো দেবো।”
নীলয় এইবার মিষ্টির জামা ছিঁড়ে ফেললো এক টানে বলে উঠলো,,,
“তোর টাকা তুই কবরে নিয়ে যাস। আমার জ্যান্ত বেরোতে হবে এই জায়গা থেকে।”
মিষ্টি কে আর কোন কথা বলার সুযোগ দিলো না। নীলয় ধীরে ধীরে মিষ্টির সাথে অন্তরঙ্গ করে ফেললো। সেলিনা চোখ খিচে বন্ধ করে নিলো। সে নিশানের উদ্দেশ্য বলে উঠলো,,,
“ছি নিশান ছি তোকে আমার ছেলে ভাবতে ঘৃণা লাগছে। কি পাপ করলে যে তোর মতো ছেলে পেটে ধরলাম আমি থু।”
নিশান বাঁকা হেসে বললো,,
“ছেলে তো কোনোদিন ভাবো নি।আর যদি আসে পাপের কথা। আমার মনের কাঠগোড়ায় আগে তুমি উঠেছো,কতটা নিচ্ মনমানসিকতা যা আমার ধারণার বাহিরে।”
সেলিনা কিছু বললো না। নিশান ও নিজের মতো ফোন স্ক্রল করতে লাগলো। দশ মিনিট পরে নীলয় নিশানের কাছে আসলো বললো,,,
“ভাই যা করতে বলেছো আমি করেছি এইবার আমাকে যেতে দাও।”
নিশান ফোন রেখে দিলো। নীলয়ের কাছে আসলো। নীলয়ের ঘাড়ে হাত দিয়ে বললো,,,
“খুব ভালো আমার কথা যারা শুনে চলে তাদের আমি লাইক করি। তবে যে আমার পার্সোনাল ফুলকে অপবিত্র করে সে হাজার আমার কথা শুনলেও তো বাঁচতে পারবে না।”
বলে প্যান্টের পিছনে গুঁজে রাখা ছুরি বাহির করে সোজা নীলয়ের বাম পাশের বুকে কোপ মারলো। নীলয় চিৎকার দেওয়ার আর কোন সুযোগ পাচ্ছে না। নিশান টেবিলের কাছে এসে দুইটা বোতল আনলো হাতে হ্যান্ড গ্লাফস পরে দুই বোতলে থাকা নাইট্রিক এসিড দিলো নীলয়ের দুই হাতে। নীলয় ছটফট করতে লাগলো। নিচে পরে গেলো। নিশান বসলো তার পাশে ছুরি নিয়ে নীলয়ের বুকে বারবার কোপ কোপ দিতে দিতে বললো,,,
“ছুঁয়েছিলিস তো আমার ইশু কে? এই কুত্তার বাচ্চা বুক কাঁপি নি একবারও আমি যদি জানতে পারি তোর কি অবস্থা হবে। তোর কলিজা ছিঁড়ে কুত্তা দিয়ে খাওয়াবো জানোয়ারের বাচ্চা।”
বলে নিশান নীলয়ের বাম পাশের বুকে বারবার কোপ দিতে লাগলো। নীলয়ের কলিজাটা হাত বাড়িয়ে তুলে নিলো। সে উঠে দাঁড়িয়ে টেবিলের কাছ থেকে বড়ো ছুরি তুলে এনে। নীলয়ের পাশে বসলো ফচ ফচ করে নীলয়ের দেহ গোশের মতো কাটলো। যা দেখে মিষ্টি আর সেলিনা চোখ বুজে আছে। নিশান নীলয়ের গোশের দিকে তাকিয়ে হুহংকার ছাড়লো,,,
“তোর অবস্থা এর থেকেও খারাপ হবে। তোর এই গোস আমি তোর পরিবার দিয়ে খাওয়াবো। আমার ইশু কে নষ্ট করার জন্য তোর এই পরিণতি রাস্কেল।”
বলে উচ্চসরে জিহান কে ডাক দিলো। জিহান রুমে আসলো দেখলো মিষ্টি একটা উড়না জড়িয়ে আছে গায়ে। সেলিনা আর মিষ্টি দুইজনেই চোখ বন্ধ করে আছে। আর নিশান নিচে বসে আছে তার মুখে রক্তের ফোঁটা। তার পাশে আছে নীলয় কে কেটে রাখা মাংস। জিহান আসতেই নিশান বললো,,,
“এই গোস গুলো আমার হিংস্র প্রাণীদের দে। আর দুই কেজি তুলে রাখ ওর বাড়িতে পার্সেল করে পাঠিয়ে দেবো। সাথে এই কলিজা কুকুরের দিয়ে খাওয়া। যা কুইক।”
বলে নিশান উঠে দাঁড়ালো। জিহান পাঁচ মিনিটের মধ্যে জায়গা পরিষ্কার করে চলে গেলো। নিশান এইবার ধীর পায়ে মিষ্টির কাছে গেলো। মিষ্টি কাঁপছে তার সাথে কি করবে জানেনা সে আগে থেকেই শরীর দুর্বল করে দিয়েছে। নিশান গিয়ে মিষ্টির পাশে দাঁড়ালো শান্ত কণ্ঠে বললো,,,
“নিজে মেয়ে হয়ে অন্য মেয়েকে কিভাবে নষ্ট করতে চাইছিলিস বল?”
মিষ্টি কেঁপে উঠলো বললো,,,
“ভু.. ভুল… হয়ে গেছে মাফ করে দাও।”
নিশান হেসে বললো,,,
“মাফ? আজ যদি আমি ঠিক সময়ে না আসতাম আমার ইশু কে ছেড়ে দিতিস তোরা? কি ভেবেছিস ভুল প্রমান করবি ইশু কে আমার কাছে?”
মিষ্টি কিছু বলবে এর আগে নিশান নিজের শক্ত হাতের চড় বসালো মিষ্টির গালে। মিষ্টির মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো। নিশান আবারো একটা চড় মারলো। মিষ্টির মাথা যেন আরো ঘুরছে। নিশান টেবিলের কাছে গেলো একটা গ্লাসের ভিতরে কি যেন ঢাললো যার গন্ধ মিষ্টি আর সেলিনার নাকে আসলো তাদের পেটের নারীভুঁড়ি যেন উল্টিয়ে বেড়িয়ে আসতে চাইলো। নিশান সেই গ্লাস মিষ্টির কাছে আনলো মিষ্টি দম বন্ধ করে রাখচ্ছে গন্ধ নিতে পারচ্ছেনা। নিশান মিষ্টির মুখের কাছে গ্লাস ধরে বললো,,,
“আজ এক বছর ধরে এই পুঁচ সংরক্ষণ করে রাখছি আমি। ভাবছিলাম কোন একদিন কাজে দেবে ফার্স্ট দ্রুত খেয়ে ফেল।”
মিষ্টি মাথা এইপাসে ঐপাশে করে না করতে লাগলো। নিশান বাঁকা হেসে মিষ্টির মুখ ধরে এক গ্লাস পুঁচ তাকে খাইয়ে দিলো। মিষ্টি সম্পূর্ণ খেলো ঠিকই কিন্তু খাওয়ার সাথে সাথে হরহর করে বমি করতে লাগলো। পেটের নারীভুঁড়ি ও যেন বেড়িয়ে আসবে এমন বমি। নিশান বললো,,,
“মিষ্টি নাম হলেও মুখ থেকে এমন দুর্গন্ধ যুক্ত পুঁচ ই বাহির হয়। তাই তোকে খাইয়ে দিলাম। Dont mind এখনো অনেক কিছু আছে।”
বলে নিশান নিজের হাতে হ্যান্ড গ্লাফস পড়লো। মিষ্টি এখনো বমি করছে নিশান একটা বোতলে নাইট্রিক এসিড নিয়ে আসলো। সেলিনা বলে উঠলো,,,,
“নিশান নিশান বাপ তোর পা ধরি মারিস না মেয়েটাকে মরে যাবে ও। ছেড়ে দে।”
কিন্তু নিশান কোন কথার উত্তর না দিয়ে সেই এসিড ছুড়ে মারলো মিষ্টির মুখে হাতে। মিষ্টি ছটফট করতে লাগলো আর্তনাদ করতে লাগলো। কিন্তু তার আর্তনাদ যেন নিশানের কানে পৌচাচ্ছে না। নিশান ঘাড় এইপাসে ঐপাশে কাত করে ফুটিয়ে নিলো। মিষ্টির সারা দেহ ঝলসে গেছে। নিশান এসে সিমির হাত পায়ের বাঁধন খুলে দিলো। একটা ছুরি মিষ্টির হাতে দিয়ে বললো,,,
“নিজেই নিজেকে বারবার ছুরি দিয়ে আঘাত কর। তবে এইটা সহজ শাস্তি হবে আর না পারলে এর থেকেও কঠিন শাস্তি পাবি।”
বলে নিশান আবারো সোফায় গিয়ে বসলো। মিষ্টি ছুরি টা শক্ত করে ধরলো সেলিনার দিকে তাকালো সেলিনা কান্না করছে না করছে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে। মিষ্টি নিশানের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে নিজের পেটে বারবার আঘাত করতে লাগলো ছুরি দিয়ে। চার বারের মাথায় সে আর শক্তি পেলো না। মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। হয়তো শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছে। সেলিনা কান্না করছে যার জন্য এত দূর সে নেই সে মারা গেছে। কি নিকৃষ্ট ভাবে খুন করা হলো তাকে। সেলিনার কান্নার মধ্যে নিশান বলে উঠলো,,,
“সেলিনা চৌধুরী? আপনার ওপিনিয়ন গুলো আমাকে বলেন একটু? মানে আমার বউ কে নিয়ে আপনার এত সমস্যা কোথায়?”
সেলিনা কান্না থামালো নিশানের দিকে তাকিয়ে চিৎকার দিয়ে বললো,,,
“ঘৃণা করি আমি সিমি কে। শুধু ওর জন্য আমি তোকে দশ বছর কাছে পাই নি। দশ বছর দূরত্ব গুজিয়ে রাখছিল আমার থেকে। যেই বয়সে আমার ছেলের মায়ের আদর স্নেহ দরকার ছিলো। সেই বয়সে আমার ছেলেকে শুধু ওই মেয়ের জন্য মেরে রক্তাত করে বিদেশ পাঠিয়েছিল? আমি মা কিভাবে ভালোবাসবো সেই অসহ্যকোর মেয়েকে।”
নিশান গম্ভীর কণ্ঠে বললো,,,
“মানলাম এই জন্য তবে তাকে নিয়ে যদি আমি সুখী থাকি তবে আমার সুখে থাকার অক্সিজেন কেড়ে নিচ্ছেন কেন?”
সেলিনা — “কারণ তোর পাশে আমি ওই সিমিকে সয্য করতে পারি না।”
নিশান — “সয্য করা কি না করার কি আছে? বিয়ে করছি আমি? বাসরও করছি আমি? আর কয়দিন পরে বাচ্চা পয়দা করবো আমি। এইগুলো আমি সয্য করতে পারি তো আপনার সয্য না করার কারণ?”
সেলিনা — “তোর পাশে ওকে মানাই না। আমি সিমি কে সয্য করতে পারিনা ভালোবাসি না এইটাই মূল কারণ।”
নিশান উঠে দাঁড়ালো,,,
“ঘৃণা থাকা ভালো তবে এতটা পরিমান যার জন্য একবার আমার ইশু কে জঙ্গলের মধ্যে রেখে এসেছিলেন? তো একবার আমার ইশু কে নোংরা করতে চেয়েছিলেন? আরে মা নামে তো কলঙ্ক আপনি নিজেই? নিজ হাতের নিজের ছেলের বেচা থাকার অক্সিজেন কে কেড়ে নিয়ে মারতে চাইছিলেন? ভেবে দেখেছেন একেবারও? ওই অক্সিজেন না থাকলে আপনার ছেলে আদাও বাঁচবে কি না বাঁচবে না?”
নিশান থামলো ক্ষণিক পরে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,
“ভুল করেছেন অনেক বড়ো ভুল। আমার ইশু কে আমার থেকে কেড়ে নেওয়া উচিত হয় নি আপনার। ইশু একান্ত আমার। আমার পার্সোনাল প্রপার্টি। এতটাই পার্সোনাল ওর কিছু হলে এই তানভীর চৌধুরী নিশান ধুলোয় মিশে যাবে। সে যে তার ইশু কে ছাড়া বেঁচে থাকার কল্পনাও করতে পারে না।”
বলে নিশান একটা এসিডের বোতল নিয়ে তার মায়ের কাছে আসলো। সেলিনা বলে উঠলো,,,
“এখন কি নিজের মাকেও মারবি? মেরে ফেল। সামান্য একটা মেয়ের জন্য পাগল হয়ে মাকে মারবি মার।”
নিশান বাঁকা হাসলো বললো,,,
“পাপি আপনি হতে পারেন যে নিজের ছেলেকে কষ্ট করে জন্ম দিয়ে বড়ো করে। আবার সেই ছেলেকেই গলা টিপে হত্যা করছে। বেশি কিছু করবো না। আপনার একটা হাত একটা পা আর আপনার অর্ধেক মুখ পুড়িয়ে দেবো। যেন নিজের ছেলেকে হত্যা করার আগে দশবার ভাবেন যে তাকে তো আমি নিজেই পেটে ধরে মানুষ করছি।”
বলে নিশান আর দাঁড়ালো না তার মায়ের বাম হাত বাম পা সহ বাম পাশের মুখে নাইট্রিক এসিড দিলো। সেলিনা চিৎকার দিয়ে উঠলো সাথে সাথে সেলিনার সেই জায়গা গুলো ঝলসে গেলো। নিশান বললো,,,
“এইটাই লাস্ট চান্স। দ্বিতীয়বার এমন করলে আমি বুকে ছুরির আঘাত করতে দ্বিধা বোধ করবো না।”
বলেই নিশান বেড়িয়ে গেলো। জিহান বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলো। নিশান সেইদিকে পাত্তা না দিয়ে সোজা বেড়িয়ে গেলো টর্চার সেল থেকে। জিহান রুমে গেলো সেলিনার হাতে পায়ের বাঁধন খুললো। সেলিনা কে ধরে বেরোলো টর্চার সেল থেকে নিজের গাড়িতে সেলিনা কে বসিয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা দিলো। নিশান নিজের গাড়িতে বসে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলো। তার রাগ এখনো কমে নি। মাথা ফেঁটে যাচ্ছে। ফুল স্প্রিডে গাড়ি চালাতে লাগলো নির্জন রাস্তার মধ্যে দিয়ে। আঁধার রাতে।
“ভাই ভাই।”
বডিগার্ড এর কণ্ঠ শুনে নীল উঠে দাঁড়ালো প্রশ্নবোধক চাহুনি তে তার দিকে তাকাতেই বডিগার্ড বললো,,,
“ভাবির উপরে যে অ্যাটাক করেছিল? সে আপনার ছোট ভাই নীলয়।”
নীল চোখ বন্ধ করে নিলো কিৎক্ষণ পরে বললো,,,
“বেঁচে আছে কি?”
বডিগার্ড — “খুন করা হয়েছে তাকে। একটা পার্সেল আসছে সেইটাতে নীলয় ভাইয়ের মাংস আর একটা চিরকুট যেইখানে লেখা। নীলয়ের মাংস।”
নীল একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,,,
“যেইটা হয় ভালোর জন্য হয়। নিশান ওকে না মারলে আমি নিজ হাতে খুন করতাম। যেইটুকু মাংস দিয়ে গেছে ঐগুলো কবর দেওয়ার ব্যবস্থা কর। আর পুলিশদের ঘুষ দিয়ে বল আতহত্যা করছে ট্রেনের তলে পরে ধামাচাপা দিয়ে দে।”
বলে নীল উঠে চলে গেলো বাড়ির ভিতরে। বডিগার্ড টা যেতে নিলেই আরেকটা বডিগার্ড বলে উঠলো,,,
“জীবনে এই প্রথম একটা মানুষ দেখলাম যে নিজের ভাইয়ের খুনি কে কিছু না বলে আরো সেই খুনি কে বাঁচিয়ে ধামাচাপা দিচ্ছে।”
ওদের কথা শুনে বডিগার্ড দাঁড়িয়ে বললো,,,
“নীল ভাই কেমন? তার সাথে দুইটা বছর থাকলে বুজে যাবে? আমি আজ ছয় বছর ধরে আছি তোমরা তো মাত্র এক বছর হয়েছে?”
লোকটা বলে উঠলো,,,
“থাকা না থাকার প্রশ্ন আসবে না। একটা মেয়ের জন্য কিভাবে মারতো নিজের ভাইকে?”
বডিগার্ড টা হেসে বললো,,,
“এই নীল ভাইয়ের বেঁচে থাকার একমাত্র অক্সিজেন ওই মেয়েটাই। তাই তাকে নিয়ে কেউ খারাপ কথা বললেও এক সেকেন্ড এর ভিতরে লাশ বানায়ে দিতে হাত কাঁপবে না ভাইয়ের।”
বলে আর দাঁড়ালো না বডিগার্ড টা। সে নিজের মতো কাজ করতে চলে গেলো। লোক দুটো ও আর কোন কথা বললো না নিজের কাজে চলে গেলো। এইদিকে নীল নিজের রুমে গেলো তার দেওয়াল জুড়ে শুধু সিমির ছবি। নীল একটা বড়ো ছবির সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। যেই ছবিটাতে সিমি স্কুল পড়তো সেই সময়ের ছবি। স্কুল ড্রেস পড়া দুই পাশে বিউনি করা চুল সামনে এনে রাখা। নদীর পারে হাত মেলে দাঁড়িয়ে আছে।নীল সেই ছবিটার দিকে তাকিয়ে হেসে বললো,,,
“তুমি শ্যামলা না তবুও তোমাকে আমার শ্যামা বলে ডাকতে খুব ভালো লাগে। দেখো শ্যামা সেই ছোট থেকে তুমি কত বড়ো হয়ে গেলে? তোমার কি আদাও মনে আছে তোমার নীল ভাইয়ের কথা? আমি দীর্ঘ দিন পরে এসেছি শুধু তোমাকে দেখতে। তুমি বিয়ে করেছো শুনেছি জোর করে বিয়ে করেছিল। নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম আমার সাথে। কিন্তু আজকে দেখলাম তুমি ভালো আছো কারোর সাথে জোর করে নও। ”
বলে থামলো নীল নরম কন্ঠে বললো,,,
তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ৩০
“আমি দূর থেকেই তোমাকে দেখবো শ্যামা। তুমি ভালো থেকো অন্যের কাছে আমার হৃদয়ের শ্যামা পাখি হয়ে। আমি নাহয় প্রক্টেক করবো দূর থেকে তোমাকে সকল বিপদ হতে।”
বলে নীল নিজের চোখের কোনে আসা নোনা পানি টুকু হাত দিয়ে মুছে ফেললো। আর দাঁড়ালো না সোজা ওয়াশরুমের ভিতরে ঢুকে পড়লো। সাওয়ার এর নিচে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে কান্না করতে লাগলো। সে ভালো থাকতে চাই। তার শ্যামা তো ভালো আছে তার ভালো তে নাহয় সেও ভালো থাকার চেষ্টা করুক এই আশায়।