প্রেমতৃষা পর্ব ২৯

প্রেমতৃষা পর্ব ২৯
ইশরাত জাহান জেরিন

দুই দিন কেটে গেল। হৃদয় যেন বিষাক্ত কাঁটায় ঢাকা পড়েছে। আশপাশের সবাই এখন বলছে প্রেম এমনই। সে মন থেকে কাউকে ভালোবাসতেই পারে না। যখন তার মন চাইবে সে অধিকার খাটাবে। যখন মন চাইবে সকল অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে চলে যাবে, হারিয়ে যাবে।এই কথাগুলো তৃষার ভেতর একেকটা জোড়া ছুরি ঘোরালো। বিশ্বাসের পেঁচায় জড়িয়ে থাকা আশার গায়ে ছোপ ছোপ দাগ পড়তে থাকল। সপ্তাহ গড়িয়ে গেল, ব্যথার এই মরসুমে যে এক জনই একটুখানি সান্ত্বনা দিয়েছে, পাশে দাঁড়িয়ে, হাত বাড়িয়ে দিয়েছে যে মানুষটি সে প্রত্যুষ দেওয়ান।

আইনের পেশায় এক স্থিরচিত সুপুরুষ। প্রত্যুষ প্রতিদিন, একরাশ ধৈর্যের সাথে, তৃষার ভাঙা মনটাকে বেঁধে রাখার চেষ্টা করছে। তৃষা তবু চায় না, চায় না আরেকবার ভাঙতে, চায় না কোনো নিষ্প্রাণ প্রতিশ্রুতিতে নিজেকে ফিরিয়ে দিতে। কিন্তু মানুষের অনাবিল মন। তবু কেন জানি মনটা বুজ মানছে না। চারপাশের বিষবাণে তৃষার মনে দাগ কেটে গেলেও সে ভুলতেই পারছে না প্রেমকে। ভুলবার বদলে জেদ জেঁকে বসছে একসময় যে হারানোর পার্থীব ব্যথায় কান্না করত, এখন সেই জেদই তার ভিতর আগুন জালিয়ে দিচ্ছে। প্রেমা সেদিন কথায় কথায় বলে উঠল, “প্রেম ভাইকে আমি নিজেই ভালোবাসি, তবে সে রাতে বাইরে থাকে, নেশায় ডুবে যায়, টাকা উড়িয়ে দেয় এমন পুরুষের যে নারী দোষ নেই তার কোনো সাক্ষী আছে? কথাগুলো তৃষার কানে বাজল বার বার,জেদ বাড়ল।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সেই রাতে, প্রেমার ঠোঁট থেকে ছুটে এলো আরও কঠোর এক ভাষ্য, ‘প্রেম ভাই যেটা চায় সেটা আদায় করে নেয়। এই যে ধরো সে চাইল তোমাকে তার প্রেমে ফেলবেই, তারমানে যত নিচে নামতে হয় না কেন, কঠিনের থেকে কঠিন কিছু করতে হলেও সে তোমাকে এমন ভাবে হিপনোটাইজড করবে যে তোমার তার প্রেমে পড়তে বাধ্য হতেই হবে।’

শেষে বারবার মনকে বোঝানোর চেষ্টা করল, প্রেম ভাই ফিরে আসবে। সে তাকেই ভালোবাসে। কিন্তু মন তার অন্য কথা বলছে। বলছে প্রেমের আর ফেরা হবে না। সে ছন্নছাড়া পাখি, যাকে বেঁধে রাখা যায় না। বাঁধলে পাখির মরণ নিশ্চিত! তৃষার চোখ-মুখ ফুলে উঠেছে। কাল রাতে অনেক সাহস করে হাতের কব্জিতে ব্লেড ধরেছিল আত্মাহত্যার জন্য। ভয়ে হাত তার কাঁপছিল। মানুষ মনের দিক থেকে যতই শক্ত হোক না কেন মৃত্যুর ভয় সবারই আছে। জানের ভয় সকল জীবের আছে। কেউ মরতে চায় না। শেষে ব্লেডটা হাতে ছোঁয়াতে যাবে তার আগেই প্রত্যুষ রুমে এসে ব্লেড হাত থেকে কেড়ে নেয়। ওয়াশরুমে গিয়ে হাত মুখ ভালো করে ধুইয়ে দেয়। তবে অনেক হয়েছে। আর নয়। এখানে থাকলে কেবল নিজের রাগ জিদ বাড়তেই থাকবে। তৃষা ব্যাগ বের করল। কাপড়চোপড় প্যাক করতেই রুমের দরজায় প্রত্যুষ এসে নক করল। তাকে দেখেও পাত্তা না দিয়ে নিজের কাজে মন দিলো তৃষা। এই প্রত্যুষটাও না। সে ভালো মানুষ, অনেক ব্যস্ত মানুষ। তবে শেষ হয়ে যাওয়া তৃষার পাশে দাঁড়িয়ে নিজের সময় নষ্ট করলে চলবে? প্রত্যুষ কিছুক্ষণ চুপ থেকে তৃষাকে বলল, ‘কি করছো এসব?’

‘আমার বোজা আপনাদের কাঁধ থেকে সরিয়ে নিচ্ছি।’
‘কখনো বলেছি তুমি বোজা? এসব মাথায় আনো কি করে? কোথায় যাচ্ছো? এসব কি করছো তৃষা?’
তৃষা প্রেমের দেওয়া জামাটা হাতে নিয়ে রেখে দিলো। তারপর প্রত্যুষকে বলল, ‘জীবন হচ্ছে একটা রাস্তা। মানুষ তার শুরু জানে, গন্তব্য নয়। তবুও তারা পথ চলে, রাস্তার বিপদের কথা চিন্তা না করে রওনা হয়। ধরে নেন আমি পথে একটা বিরতি নিয়েছিলাম। আবার পথ চলতে শুরু করব। কোথায় পৌছাবো জানা নেই তবে এই টুকু জানি মৃত্যু গন্তব্যের শেষ প্লার্টফম।’

‘চাইলে এই পথের সঙ্গী হতে পারি। প্রেমকে ভুলে যাও তৃষা। সে ফিরবে না। তুমি নিজেই বলো! এটা কোনো জীবন? তোমার মনে হয় এটা ভালো থাকা? আচ্ছা প্রেম দূরে সরে তোমায় দেখিয়ে দিলে তুমি কেন দূর্বল হয়ে পরে থাকবে? তুমিও তাকে দেখিয়ে দাও কারো জন্য তোমার জীবন থেমে নেই। কখনোই থেমে থাকবেও না।’
‘কিভাবে দেখাবো?’
‘মিসেস দেওয়ান হয়ে। আমার বউ হবে?’
তৃষা তখনো বিস্ফোরিত নয়নে তাকিয়ে আছে প্রত্যুষের দিকে। প্রত্যুষ তার চোখে চোখ রেখে বলল, ’ তাড়াহুড়োর কিছু নেই। তুমি ভাবো। যত সময় লাগে তত সময় নিয়ে ভাবো। তুমিও একটু ভেবে দেখবে আমায় নিয়ে। উত্তর না হলেও আমি শান্তি পাবো। জানো তো কেন? কারণ ওইযে তোমার মস্তিষ্ক একটা সেকেন্ড আমাকে নিয়ে ভেবেছে সেটা আমার জন্য কম পাওয়া হলো নাকি? বাকিটা জীবন এই একটা বিষয় নিয়ে দিব্যি পার করতে পারব।’

আজকে ৫ টা দিন প্রত্যুষের সেই কথা নিয়ে ভাবছে তৃষা। কান্নাকাটি তো জীবনে অনেক করেছে। এসব করে কেবল নিজের ক্ষতি তা বুঝতে ভালোই সময় লেগেছে। এই যেমন মাস তো পেরিয়ে গেল। কিন্তু এত কষ্ট, কান্নাকাটি যার জন্য তাকে পাচ্ছে কি? সে কান্না দূর করার জন্য চাইলেই কি চলে আসতে পারত না? আবার তৃষার মাঝে মাঝে ভয় হয়। মানুষটার কিছু হয়ে গেল না তো? সে ঠিক আছে তো?

বারান্দার রেলিংয়ের ওপর পা ঝুলিয়ে বসে আছে তৃষা। ভালোই লাগছে। পরে গেলে সর্বোচ্চ মারা যাবে তার থেকে বেশি আর কিছুই নয়। দীর্ঘক্ষণ কি একটা চিন্তা করে শিমলাকে কল করল। শালীর ঘরে শালী বিয়ে করে বাসর করেও ফেলেছে। আর তৃষা কেঁদে কেটে মুখটা বানরের পাছার মতো লাল করে ফেলেছে। এখন যে অন্য একটা ছেলে এসে প্রোপজ করবে তাও হবে না। শিমলা ওইদিন নতুন সিম দিয়ে কল করেছিল তৃষাকে। কিছুক্ষণ কথা বলে বুঝায়। তারপর অনেক বার কল দিয়েছিল তৃষার ইচ্ছে করেনি কল ধরতে। তেমন মন মানসিকতাই ছিল না তো ধরবে কেমন করে? আর শিমলা কানায় সবসময় প্রেমের প্রশংসা করে। যত দোষ তৃষা ঘোষ আর প্রেম ভাই তো ফিডার খায়। ন্যাকামির বস্তা সবকটা।

একেবারে পিন্ডি চটকাতে ইচ্ছে করে। তৃষা চোখের পানি, নাকের পানি মুছে শিমলাকে কল করল। এই মাঝ রাতে নির্ঘাত জামাই নিয়ে রোমান্স করছে। ভালোই হয়েছে ওদের গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে ব্যঘাত ঘটিয়ে দেবে তৃষা। এদিকে তৃষার কোনো গতি হতেই পারছে না তাহলে শিমলা কেন এত বেশি বেশি করে ফেলবে? সারাজীবন একটা প্রেম করতে না পারা মেয়েটা এখন পালিয়ে সংসার করছে, বাসর করছে আর তৃষা কি বালটা ফেলেছে? এত এত ছেলে তার পেছনে ঘুরেও শেষে এখন চোখের জল বের করে সাগর বানাচ্ছে। এত কষ্টের বিষয়ে ভাবলে আরো কষ্ট লাগে, তখন আরো কষ্ট চলে আসে। তৃষা শিমলাকে কল করেই বলল, ‘ গুন্যমান্য আপু স্বামী নিয়ে ইয়ে করার সময় মানে ঘুমানোর সময় বিরক্ত করার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।’

‘ছি কি বলছিস? তোর এখন কি অবস্থা?’
‘এই শালীর ঘরের বান্ধবী তুই আগে বল লাং নিয়ে কোন জায়গায় শুয়ে শুয়ে চাঁদ দেখছিস?’
‘আপাতত স্বামীর বুকে আছি। তবে চাঁদ দেখা যাচ্ছে না। মাথার ওপর সিলিং আছে তো।’
‘আমার ইয়েটা আছে। এই তুই জানিস আমি কত কষ্টে আছি? প্রেম ভাইকে বিয়ে করে বাচ্চার মা হওয়ার আগে ওই হালারপুত আমাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে না জানি কোন শালীর সঙ্গে ভবিষ্যত বাচ্চা পয়দার ব্যবস্থপনা করছে।’
‘ছি তৃষা এই মুখের ভাষা কবে ঠিক হবে?’
‘তুই মরলে।’
‘তো মেরে ফেল।’
‘মারাই উচিত। একা একা স্বামীর আদর খাচ্ছিস। তুমি আমার বালের বান্ধবী।’
‘তবুও তো বান্ধবী।’

‘এখন এত কথা বাদ দে। আর শুনে রাখ আমি খুব জলদি বাসর করব। আর দেখিস আমার বাচ্চা তোর আগেই হবে। আমার একটা ছেলে হবে। তোর মেয়ের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে দেব আর আমাকে রেখে বাসর করার অপরাধের শাস্তি তোর মেয়েকে দেব দেখিস। ‘
‘তো কি শাস্তি দিবি?’
‘গরুর গোবরের ভর্তা খাওয়াব।’ তৃষা একটু চুপ থেকে বলল, ‘এই আমার মাথায় একটা বুদ্ধি আছে আমরা ওই সবুজ সবুজ গোবরকে ধনিয়া পাতার ভর্তা বলে বাজারে চালান করে দেই ভালো ব্যবসা হবে না? কেউ কালার দেখে বুঝতেও পারবে না।’
‘তোর না শুনলাম মনে অনেক কষ্ট? তাহলে এসব কি বলছিস?’

‘আরে বোন দুঃখ আমার সুখকে ছিদ্র করে তলানির ফুটো দিয়ে চলে গেছে। তাই নিজেকে একটু দুঃখ থেকে বের করতেই তো এসব বলছি। দিলি তো আমার দুঃখটাকে আগের থেকে বাড়িয়ে? এখন জামাই খুঁজে দে, নইলে দুঃখ মুছে দেওয়ার জন্য মানুষ কই পাবো?তোর দাদাকে কবর থেকে তুলে কাপল প্লেটার খেয়ে দুঃখ কমাব নাকি? আমার ওই হারে বজ্জাত প্রেম ভাইকেই চাই। শালাকে উদুম কেলানি দেব। আমার সঙ্গে ঠকবাজি? ‘
‘অংকুর ডাকছে কাল কথা বলি? কত রাত হয়েছে? একটু ঘুমানোর চেষ্টা করো বাবু না ভালো।’
‘লাংয়ের জন্য ভাতার হারাইও না চান্দু। আর বাবু? বাবু তো তোমার সঙ্গে শুয়ে আছে। যাও গিয়ে ওটাকে ফিদার খাওয়াও। আমার বালের ঢং করো তুমি? তোমার এমন ঢং আমি তৃষা গায়ের ময়লা ভেবে রোজ লাইফ বয় সাবান দিয়ে ঘষে মেঝে ফেলে দেই।’

তৃষা থেমে কি একটা ভেবে বলল, ‘অংকুর তোর পাশেই না?’
‘হু।’
‘লাউডে দে।’
‘কেন?’
‘বাল দে না।’
শিমলা ফোন লাউডে দিতেই তৃষা বলল, ‘আমি বিয়ে করছি।’
‘মানে? মজা করছিস?’

‘না করছি না তবে প্রত্যুষ বিয়ের জন্য প্রোপোজ করেছে। পারফেক্ট একজন পুরুষ। বিয়ে করলে ক্ষতি কি? অন্তত প্রেমের মতো বাটপার তো আর নয়। আমি জানি অংকুর ভাই জানে প্রেম কোথায়। তোর স্বামীকে বলিস খুব জলদি আমি মিসেস দেওয়ান হবো খবরটা যেন নেওয়াজের কান অবধি পৌঁছে দেয়। ভাইয়ের বিয়ে বলে কথা।’ বলেই ফোনটা রেখে দিলো তৃষা। তারপর হঠাৎ করেই কেন জানি ডুকরে কেঁদে উঠল। ফোনটা বিছানায় ছুঁড়ে দিয়ে বলল, ‘দেখবে প্রেম একদিন আমিও তোমার সামনেই সুখী হব। তুমি সেদিন আমার সুখ দেখবে আর আফসোস করে বলবে আমি কি হারালাম।’ তৃষা আর এক মিনিটও অপেক্ষা করল না। সরাসরি চলে গেল প্রত্যুষের রুমে। প্রত্যুষ তখন ল্যাপটপে কাজ করছে। টেবিলের ওপর রাখা ব্লাক কফি। তৃষা কখনো এর আগে তার রুমে আসে নি। দরজায় নক করতেই তৃষাকে দেখে একটু অবাকই হয়। তারপর সব কাজ ফেলে এগিয়ে যায় প্রত্যুষ তার দিকে। জিজ্ঞেস করে, ‘তুমি এত রাতে।’

‘একটা কথা ছিল আপনার সাথে।’
‘হ্যাঁ এখানে এসে বসো। আর একটা কেন? মৃত্যুর আগ অবধি তোমার এই মুখ থেকে আমি কথা শুনে যেতে চাই।’
তৃষা কিছু বলল না। কেবল পাশে বসে নিচের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘আমি অনেক ভাবলাম বুঝলেন?’
‘তারপর?’
‘তারপর ঠিক করলাম আপনাকেই বিয়ে করব।’

প্রত্যুষ জাস্ট অবাক। সে ভাবতেও পারেনি এমন কোনো কথা সে তৃষার মুখ থেকে শুনতে পাবে। তাও মাত্র পাঁচদিনে এই সিদ্ধান্ত? প্রত্যুষ কিছু বলার আগেই তৃষা পুনরায় বলল, ‘আমার একটা শর্ত আছে?’
‘কি শর্ত বলে ফেলো। তোমায় নিজের করে পেতে হলে আমার যদি হাজারটা শর্ত পালন করতে হয় আমি করব। তবে একটা কথা কি জানো তৃষা? ভালোবাসা না জোর করে হয় না। এই ধরো মনের বিরুদ্ধে গিয়ে তুমি আমায় আজকে বিয়ে করলে কিন্তু আমায় মন থেকে মেনে নিতে পারছো না তাহলে কিন্তু আমার আর তোমার দু’জনের সুন্দর জীবনটা না চাইতেও আফসোস আর বরবাদে ভরে যাবে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ বারবার আসবে না। সত্যি করে বলো তুমি কি মিসেস দেওয়ান হতে প্রস্তুত?’
তৃষা কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। অতঃপর সৎ সাহস নিয়ে প্রত্যুষের চোখ চোখ রেখে বলল, ‘প্রস্তুত।’

প্রেমতৃষা পর্ব ২৮ (২)

‘শর্ত কি?’
‘এই শত্রুবারই আমাকে বিয়ে করতে হবে। কোনো রকম আয়োজন ছাড়া কেবল বাড়িতে কাজী ডেকে। শর্ত মানলে আয়োজন শুরু করতে পারেন।’
প্রত্যুষ প্রথমে একটু ঘাবড়েই গিয়েছিল। না জানি আবার তার হবু মিসেস তাকে কোন মহা শর্ত দেয়। যদি বাংলা সিনেমার মতো শর্ত দিতো, ‘বিয়ের পর ছোঁয়া যাবে না? এক বিছানায় ঘুমানো যাবে না।’ তখন কিন্তু শর্ত মানতে একটু না অনেক কষ্ট হয়ে যেত। কিংবা ওমন শর্ত মানতেই পারত না। তৃষাকে ভালোবাসে সে। ভালোবাসার মানুষকে কাছ থেকে কোন মানুষটা না চায়?

প্রেমতৃষা পর্ব ২৯ (২)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here