ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৫৭

ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৫৭
মাহিরা ইসলাম মাহী

সকাল পর্যন্তও আজকের দিনটা আদ্রিতের কাছে নিষ্ঠুর মনে হলেও এই মুহুর্তে হচ্ছে আজকের এই দিনটি পৃথিবীতে আগমনের পর তার দেখা সেরা একটি দিন।
যেখানে এক সঙ্গে সে পাচ্ছে মাতৃস্নেহের মতন ভরসাস্থল মায়ের আঁচলের নিচে একটুখানি আশ্রয়। একই সঙ্গে ছেলের প্রতি ভালোবাসা বহিঃপ্রকাশের অশ্রুসিক্ত দুটি চোখের পিতৃস্নেহের প্রমান।একসঙ্গে সকল ভাই বোনেদের ভালোবাসার ছোঁয়া।তার সঙ্গে এক্সট্রা পাচ্ছে ভালোবাসি না বলেও স্বামীর অহেতুক সব অত্যাচার সহ্য করে, স্বামীর সাজিয়ে দেওয়া সাজে বোকার মত পেত্নী সেজে বসে থেকে বউয়ের দেওয়া বোকাত্বের প্রমাণ।

“ ডাঃ আদ্রিত শেখ নিভৃতের একমাত্র বোকা বউ।”
এই এত এত কিছু একসঙ্গে পেয়েও সেই দিনটি শ্রেষ্ঠ না হয়ে কি পারে।উপরওয়ালা তার ভাগ্যে এত সুন্দর একটি দিনের কথা লিখে রেখেছিলো কে জানতো।
তবে তো এত বছরের জীবনের কোনো আফসোস’ই মনের মাঝে পোষন করে রাখতো না সে। তার বোকা বউয়ের ন্যায় সেও যে এভাবে সকলের কাছে বোকা বনে যাবে কে জানতো।
“মা আব্বাজান কে বলো আমার বউকে যেন বাড়িতে নেওয়ার ব্যবস্থা করে আজই।”
“ সে কিরে আদু তা কি করে হয়। একমাত্র ছেলের একমাত্র বউমা আমার।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

এমন পানসে ভঙ্গিতে বউ ঘরে তুললে হয়? তোর বাপকে তো সকলে ধিক্কার জানাবে।নিজে বিয়ে করেছিল লুকিয়ে চুরিয়ে। শেষ পর্যন্ত ছেলের বিয়েটাও খরচের ভয়ে লুকিয়ে চুরিয়ে দিয়ে দিলো নিস্তব্ধ।
নিস্তব্ধ জীবনের কাজ তুমি নিস্তব্ধের মতই করলে হাহ।”
ড্রয়িংরুমে হাসির রোল পড়ল।
নিস্তব্ধ তাসফির কানের কাছে ফিসফিস করে বলল,
“ আমায় এভাবে অপমান করতে পারলে বউ?”
তাসফি বিরক্তির স্বরে জোড়েই বলল,
“ এই সরুন তো এভাবে ফিসফিস করবেন না একদম।যা বলবেন ছেলেমেয়ের সামনে চিৎকার করে সোজাসাপ্টা বলবেন।লোকটা আজও শুধরালো না।”
নিস্তব্ধ বিরবির করলো,

“ শেষ ছেলে-মেয়ের সামনে তার ইজ্জত মান সব শেষ।”
ড্রশিংরুমে আরেক জোট হাসির রোল পড়লো।
“ এভাবে আমায় ভরা মজলিসে হাসির পাত্র বানাতে পারলে বউ? দোয়া দিলাম তোমার বর তোমায় শাস্তি হিসাবে আজীবন ভালোবেসে যাবে।”
তাসফি রাগী চোখে চাইলো।
নিস্তব্ধ চুপসে গেল।
ফিসফিস করে বলল,
“ যৌবনে তো ঠিকই চাইতে এই অবলা পুরুষের ভালোবাসা।এই পুরুষকে বাঘে আনতেই কত কল কব্জা খাটালে।কত্ত কল কাঠি নাড়লে,এখন যত দোষ নন্দ ঘোস তাইনা?
মানুষ ভালোবাসা পায় না আর আমার বউ ভালোবাসি শুনলেই চোখ রাঙায় হায়রে কপাল তোর নিস্তব্ধ ।একদম ফাঁটা কপাল।”

তাসফি নিস্তব্ধ’র পায়ে পারা দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল।
“ ছেলে মেয়ের সামনে এসব কি শুরু করেছেন বলুন তো। ডাক্তার সাহেব আপনি আর মানুষ হবেন না আপনি না তাই না?”
“ তবে মানুষ থেকে অন্য প্রাণীতে পরিনত হলাম কবে তাইতো জানলাম না প্রিয়তমা।”
নিস্তব্ধ পায়ের আঘাতে চিৎকার করে উঠতেই তার পানে সকলে অবাক চোখে চাইলো।তাসফি আগুন চোখে চাইলো
ততক্ষণাৎ নিস্তব্ধ ব্যথা পায়ে চিৎকার রেখে মেকি হাসলো।
তাসফির চাউনি দেখে নিস্তব্ধ’র মনে হলো চিৎকারের অপরাধে এই মুহুর্তে বউ তার গলায় বাঁশ ঠেলে দিয়ে বলবে,

“ আপনার গলা বেশি হয়ে গেছে ডাক্তার সাহেব।নিন বাঁশ ঠেলুন গলায়।”
নিস্তব্ধ সঙ্গে সঙ্গে নিজের মুখ চেপে ধরলো একহাত দিয়ে।
আদ্রিত অসহায় মুখ করে চেয়ে রইলো।
সব ঠিক হয়েও এখন তার আবার বউ কাছে পেতে দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হবে।পুনরায় নিদ্রাহীন রজনী পাড় হবে কত শত কে জানে।
আর যে এ প্রাণে সহে না।মনে মানে না।
পরাণ’টা মনে হচ্ছে এবারে তার সত্যি সত্যিই জ্বলে যাবে।
ঠিক করা হলো আজকের রাতটা সকলে এবাড়িতেই কাটিয়ে দেবে।
সকলে যখন একে একে ড্রয়িংরুম ছেড়ে একেক রুমে নিজ ঘাটি গাড়তে শুরু করলো আদ্রিত তখন এগিয়ে গেল একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মাহীনের পানে।
নিঃশ্বাস বন্ধ করে চট শ্বশুর কে জড়িয়ে ধরলো আদ্রিত।ফিসফিস করে বলল,

“ বিশ্বাস করুণ আঙ্কেল আমি সত্যিই চাইনি আপনাদের না জানিয়ে মারুকে বিয়ে করতে।
পরিস্থিতি টা হুট হয়ে এমন হয়ে দাঁড়ালো যে আমি সুযোগ-ই পেলাম না নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হতে।
আমি ভুল করেছি আমায় প্লিজ ক্ষমা করবেন আঙ্কেল। ভুল করলে নিজের ভুল স্বীকারোক্তিতে আমি মোটেও কার্পণ্য করবো না।প্লিজ আঙ্কেল আমাকে জামাই হিসাবে গ্রুহণ করার অনুরোধ রইলো। “
মাহীন আদ্রিতের কাঁধ চাপড়িয়ে বলল,

“ জামাই হিসাবে তো মানবোই তবে এই আঙ্কেল ডাক আব্বাজানে রুপান্তরিত হলে তবেই বুঝলি তো ।আরে জামাই আঙ্কেল আঙ্কেল করলে কি আর শ্বশুর শ্বশুর ফিলিংস আসে নাকি বল? ছোটো বেলায় আমার কোলে উঠে নেংটো হয়ে কত টুকুশ টুকুশ করে হাগু মুতু করেছিস তার খবর আছে নাকি।আব্বাজান না ডাকলে হয় বল?”
আদ্রিত লজ্জা পেল।এই প্রথম পুরুষ জীবনে সে বোধহয় প্রথম লজ্জা পেল তাও শ্বশুরের থেকে।
“আরে বেটা এখনো আঙ্কেল ডাকছিস কি।আমাকে কি তোর আরেক আব্বাজান মনে হয় না নাকি? একমাত্র জামাই আঙ্কেল আঙ্কেল বলে মুখে ফ্যানা তুললে হয়।ফ্যানা তুলবি আব্বাজান, আব্বাজান ডেকে।
আর শোন এসব কোনো বিষয় নয়।আসলে বুঝলি তো আমাদের জীবনের ভালোবাসাটাই এরকম। এই দেখনা একজমন ভালোবেসে দিনকাল পাড় করার পর তোর ফুপি আমার ভাগ্যে জুটলো।
সে জীবনে না আসলে হয়তো আজকের দিনটিই আসতো না।মারুকেও তুই পেতি না বুঝলি।
এই জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে তিনটাই আসলে ওপর ওয়ালার ইচ্ছে। তার লিখন কে পারে খন্ডন করতে বল।তুই, আমি চাইলেও যে পারবো না।
সর্বোচ্চ পারি কঠোর ইবাদত করে সৃষ্টিকর্তার মন জয় করে নিজের চাওয়া পাওয়া গুলো চাইতে।এরবেশি কিছু তো নয়।”

আদ্রিত হাসলো।
এতক্ষণের বিষন্ন মনটা তার অচিরেই মেঘের পালকে ডানা মেলে উড়তে শুরু করলো।
এত ভালো মানুষটা অথচ সে কিনা এতকাল উপহাস করে এসেছে ।আসলেই সে সকলের ধিক্কার পাবার যোগ্য।
আসলে মানুষ একটা পর্যায়ে এসে জীবনের সব ভুল গুলো অবশ্যই বুঝতে পারে।তবে ততদিনে অনেক দেরী না হলেই হয়।
আদ্রিত বোধহয় প্রথম কাতারেই পড়ে।তার বোধহয় নিজের ভুলগুলো বুঝতে ততটাও দেরী হয়নি।
মাহীন আগের চাইতেও আরো ফিসফিস করে বলল,

“ তোর ফুপি রুপি শ্বাশুড়ি আম্মাকে দেখ কেমন ফুঁসছে।রাগ করে আছে বোধহয় বুঝলি।হিংসে হচ্ছে মনেহয়।যাহ বেটা এবারে শ্বাশুড়ি আম্মার রাগ ভাঙা এবার।”
আদ্রিত হেসে দিলো।
মাহীন বাসন্তী কে শুনিয়ে শুনিয়ে বলল,
“ হিংসে বুঝলি করো বোধহয় হিংসে হচ্ছে।এত সুখ কি আর আমার কপালে আছে। “
বাসন্তী স্বামীর দিকে অদৃশ্য ভঙ্গিতে অগ্নি বর্ষন নিক্ষেপ করলো যেন।
আদ্রিত ফিসফিস করে বলল,
“ তবে যাই বলো না কেন তোমার মাথার জঙ্গল গুলো ছাঁটায় আজ কিন্তু তোমায় সত্যিই ভীষণ হ্যান্ডসাম লাগছে।”
আদ্রিত চোখ টিপ দিলো।

“ তবে রে বেটা, শ্বশুরের সঙ্গে ফাজলামি। “
মাহীন হাসতে হাসে তার বাকি তিন বন্ধু’র নিকট হাজিরা দিতে এগুলো।কতগুলো দিন হলো একসঙ্গে আড্ডা দেওয়া হয় না।
আজ সারারাত জমিয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে।
আদ্রিত ফুপির দিকে এগিয়ে গেল।
বাসন্তী কিছু বুঝে উঠার আগেই আদ্রিত তার সামনে কান ধরে বসে পরলো।
সে মনে করে নিজ সম্মান হানি মূলক কোনো কাজ ব্যতীত মাতৃতুল্য নিজ মানুষের সামনে কোনো কাজে লজ্জা করতে নেই।সন্তানদের মায়ের কাছে হতে হবে খোলামেলা খাতার ন্যায়।যেন তারা আমাদের ভেতরটা পড়ে সঠিক-খারাপ পথের দিশা দেখাতে পারে।
সেখানে কান ধরা তো তুচ্ছ একটি ব্যাপার
এখানে ইগো কিংবা সম্মান খুয়ার প্রশ্নই উঠে না।
বাসন্তী অবাক দৃষ্টিতে ভাগিনার রুপী মেয়ে জামাইয়ের দিকে চেয়ে।

“ বিশ্বাস করো ফুপি থুরি আম্মা আর কখনো এরকম ভুল করবো না।
যা করবো তোমায় জানিয়ে করবো।
মানে বলতে চাইছি তোমাদের আড়ালে কিছু করবো না, তুমি বুঝতে পারলে তো আমি কি বুঝাতে চাইছি?”
বাসন্তী অভিমানে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।
তার বিশ্বাস ছিলো তার আদু তার থেকে অন্তত কোনো কিছু লুকাবে না।কিন্তু এত বড় একটি সত্য লুকিয়ে গেল।সে তো নিষেধ করতো না।ভাগিনার মতো এমন সুযোগ্য পাত্র সে আর পেত কোথায়।
কিন্তু তার আদু তাকে হতাশ করেছে।
“ তুই আমার সামনে থেকে যা তো আদু।তুই আমার সামনে আসিস না।একদম আসিস না।”
“ প্লিজ ফুপি এবারের মত মাফ করে দাও।তোমার পায়ে পড়ি।প্লিজ।
এই দেখ তুমি যদি এবারে আমায় ক্ষমা না করো।তবে এই জগে থাকা ফ্রিজের সব টুকু ঠান্ডা পানি আমি খেয়ে নিবো।”

আদ্রিত একঝটকায় কাচের জগটা হাতে নিতেই বাসন্তী চিৎকার করে উঠলো,
“ না আদু একদম না এই কাজ ভুলেও করিস না। বিশ্বাস কর একটা মাইরও তোর মাটিতে পড়বে না কিন্তু বলে রাখলাম।”
বাসন্তীর কন্ঠে চিন্তার উদ্বেগ।
আদ্রিত হাসলো। তার টনসিলের সমস্যা আছে।ঠান্ডা কোনো কিছু পেলোই তার ধরে বসে।
সে ঠিক জানে তার একমাত্র ফুপি তাকে ঠিক কতটা ভালোবাসে। সঠিক সময়ে মানুষের দূর্বলতা কাজে লাগালে দোষের কিছু নেই।
আদ্রিত একগাল হেসে বলল,

“ রিলাক্স এটা গরম-ই ছিল হট ওয়াটার, ঠান্ডা নয় বুঝলে আম্মাজান।”
“ তবে’রে আমার সঙ্গে ফাজলামো। “
“ তবে তুমি কিন্তু মানছো আমায় ক্ষমা করেছ।”
“ হুহ তোকে ক্ষমা করতে আমার বয়েই গেছে।”
ফুপিকে কিশোরীদের মতো মুখ ভেঙাতে দেখে আদ্রিত শব্দ করে হাসলো।
বাসন্তী তার মাথায় চাটি মেরে চলে গেল।
“ আমার মেয়েকে যে তুই কি জাদু টোনা করেছিস কে জানে।পাত্র দেখবে আসবে শুনে তো সে ঠিকঠাক মতো খাওয়া দাওয়াই ছেড়ে দিয়েছে।সারাদিন কেঁদেকেটে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে।ভেবেছে মা কিছু বুঝে না।
যা তো যা আমার মেয়েকে তোর দ্বায়িত্বে দিয়ে গেলাম
তাকে পেট পুরে খাওয়া দাওয়া করিয়ে সুস্থ করার দ্বায়িত্ব এখন তোর।”

বাসন্তী চলে গেল।
আদ্রিতের মনটা ভরে গেল।
ফুপি তাকে নিঃশব্দে প্রণয়ের ইংগিত দিয়ে গেল মেয়ের প্রতি।
অথচ এতদিন সে এদেরকেই নিজ প্রণয়ের বাঁধা ভেবেছে।
সে আলসেই বোকা।মানুষের অগোচরেও যে সুন্দর কোনো কার্য সম্পাদন হতে পারে আজ স্পষ্ট বুঝতে পারলো সে।
সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই আমাদের জন্য আমাদের ভাবনার চাইতেও যে উত্তম পরিকল্পনা করে রেখেছেন তা আবারো প্রমাণিত হলো।

মাহরিসা বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিলো।
খট করে দরজা খোলার শব্দ হলো।
সে মোটেও ঘাবড়ালো না বরং মুচকি হাসলো।
সে ঠিক জানে ওটা তার আদু ভাই ছাড়া আর কেউ নয়।
কারণ রাতের খাবার শেষে সবাই যার যার রুমে অবস্থান করছে।
আর খানিকক্ষণ আগেই মাহরিসা নিজে তার মা-বাবা এবং নিস্তব্ধ -তাসফির কাছে ক্ষমা চেয়ে এসেছে।
সে অশ্রু খানিকটা এখনো চোখে জমা তার।কেউ রাগ করেনি তার ওপর।কারণ তারা সকলেই জানে তাদের ছেলের অযথা জেদ সম্পর্কে।

শ্বাশুড়ি বনাম তাসফি তাকে বুকে জড়িয়ে নিয়েছে, কপালে চুমু খেয়েছে।
নিস্তব্ধ বনাম শ্বশুর তার মাথায় স্নেহময় হাত বুলিয়ে দিয়েছে।
আর তার বাবা হেসে কথা বলে মেয়েকে উল্টো সান্ত্বনা দিয়েছে।বলেছে,
“ আদ্রিত টা একটু ঘাড় ত্যাড়া বুঝলি।শোন একদম ওর কথার অবাধ্য হবি না।ওর মন জুগিয়ে চলবি, দেখবি ছেলেটা তোকে মাথায় তুলে রাখবে।”
আর তার মা বাসন্তী?
সে তো ভাগিনার চিন্তায় মগ্ন। কঠোর স্বরে হুশিয়ারী দিয়ে বলল,
“ আমার আদুকে একদম কষ্ট দেওয়ার চেষ্টা করবি না মারু।তোর বিরুদ্ধে আমার কোনো নালিশ যেন না শুনতে হয়।এই আমি বলে রাখলাম।”

দেখ কান্ড। তার মায়ের এখন মেয়ের চাইতে জামাইয়ের প্রতি দরদ বেশি।হায়রে মাহরিসা সবই তোর এই ফাঁটা কপালের দোষ।
আদ্রিত এসে নিঃশব্দে অনেকটা ক্ষণ বউয়ের পাশে দাঁড়িয়ে রইলো।
মাহরিসা আকাশ পানে দীর্ঘ সময় চেয়ে থেকে মুগ্ধ কন্ঠে সুধালো,
“ আদ্রিত ভাই দেখুন আজকের আকাশটাকে খুব
স্নিগ্ধ লাগছে তাই না বলুন।”
“ হুম ঠিক তোর মতো।”
মাহরিসার মনে হলো তার আদু ভাই তার দিকে চেয়ে আছে দীর্ঘক্ষণ সঙ্গে পড়ছে না তার চোখের পলক এক মুহুর্তের জন্য।
রমণী চট করে চাইলো উক্ত মানবে দিকে।
তার ডাক্তার মহাশয় আসলেই চেয়ে আছে।আদ্রিতের নেশাক্ত ঘোরগোস্থ চোখে চোখ দেখে মাহরিসা ঘাবড়ে গেল।
মাহরিসার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করলো,

“ আদ্রিত ভাই আপনি কি জানেন এই পূর্ণ চাঁদের আলোয় আপনাকে অপরূপ সুদর্শন লাগছে।আর এই যে আমি আপনাকে ভালোবাসছি তাই জন্য আপনার সৌন্দর্য অধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এত্তবড় একখানা কার্য সম্পাদনের জন্য আপনার কি উচিত নয় আমায় উপহার দেওয়া?”
“ যেভাবে মুখ হা তাকিয়ে আছিস মনে হচ্ছে এখুনি লবন মরিচ মাখিয়ে খপাৎ করে গিলে নিবি। কাঁচা চিবিয়ে খাওয়ার প্রয়োজন ও পড়বে না।”
মাহরিসা থতমত খেলো।মনের ভাবনা তার মনেই ফুস হয়ে গেল।
এই লোককে সে বলবে প্রেম কথন? অসম্ভব।
ভালোবাসি সে স্বীকার করবেই না।কখনো না।দেখা যাক না কি হয়।
যথাসম্ভব নিজেকে সামলে নিয়ে চট করে সামনে চাইলো মাহরিসা।পুনরায় দৃষ্টি দিলো ওই আকাশ পানে।
কিন্তু তার সে দৃষ্টি স্থায়ী হতে পারলো না।
বরং নিজ গলায় পুরুষালী উষ্ণ নিঃশ্বাসের তাড়নায় ছটফটিয়ে উঠতে হলো তাকে।
সে তুতলিয়ে বলল,

ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৫৬

“ ঘু….ঘুমাবো আদ্রিত ভাই।”
ওপাশ থেকে প্রত্যুত্তর এলো না বরং তার
শাড়ির উপরে পুরুষালী হাতের গাঢ় স্পর্শে মৃদু কম্পন সৃষ্টি হলো তার সর্বাঙ্গ দেহে।
“ তো ঘুমা নিষেধ করে কে তোকে।”
“কিন্তু…. “

ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৫৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here