নীলের হুরপাখি পর্ব ৪
কারিমা ইসলাম কেয়া
এখন হুরের দুই হাত উপরে তোলা। আর বেচারা নীলের হাত আষ্টপিষ্ঠে টাওয়ালটা জড়িয়ে ধরে আছে।
হুর চোঁখ দুটো ছানাবড়া করে চেয়ে আছে।তার কিহ রিয়েকশন দেয়া উচিত সেটা বুজতে পারছে না কিন্তু সে এতটুকু বুজল তার ভিষণ গরম লাগছে। গাল দুটো থেকে গরম ধোয়া বের হচ্ছে।
নীলের হাত কাপছে। সে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে।
হুররর এই হুররররর,,,,
মায়ের ডাকে হুর আঁতকে উঠল,,,,,
নীল ভাইইই এখন কিহ হবে এখন যদি মা আমাদের এইভাবে দেখে তখন,,,,,(হুর)
আমি কিহ জানি,,,(নীল চোঁখ ঘুরিয়ে গালে জিহ্বা দিয়ে নারাচারা করতে করতে বলল)
আপনি কিহ জানেন মানেহ কুড়ি বছরের একজন যুবতি মেয়ের ঘরে আপনি এভাবে ডুকে পড়েছেন আবার বলছেন আমি কিহ জানি,,,,খুব তহ এমন ভাব নিয়ে থাকেন যেন আমায় চিনেন না আবার তলে তলে,,,,,,,
হুর তেজি গলায় বলতে লাগল মাঝপথে নীল থামিয়ে দিল।হাতটা আর একটু শক্ত হলো।
হুউসসস,,,,,,,, দিন দিন বড্ড অবাধ্য হয়ে যাচ্ছিস। কথা ছিল আজ সকাল থেকে তর সব লিপস্টিক আমার কাছে জমা থাকবে। তুই জানিস আমার
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
Avoidance একদম পছন্দ নাহ,,,(নীল হাল্কা জেদি গলায় বলল)
কিরে হুররর প্রব্লেম কিহ দরজা কেন খুলছিস না কখন থেকে ডাকছি,,,,,
সব লিপস্টিক আমি এখনই আপনার ঘরে দিয়ে আসছি আপনি প্লিজ যান এখান থেকে।(হুর ব্যস্ত গলায় বলল,,,)
সিউর,,,(নীল)
ইমমমম,,,, যাহ চাইবেন তাই দিব এখন যান,,,,।(হুর)
নীল জিহ্বা গালে নারাচারা করতে করতে চতুর ভঙ্গিতে বলল,,,
যাহ চাইব তাই,,,ঠিকআছে এখন আপাদত নিজের ইজ্জত টুকু সাম্লা,,,,
নীল তার একহাত দিয়ে হুরের হাত দুটো টেনে এনে টাওয়ালটা ধরিয়ে দিল।
যাহ ওয়াসরুমে গিয়ে চেঞ্জ করে আয়।(নীল)
হুর তারাতাড়ি করে একটা ব্লু শার্টের সাথে ব্লু – হোয়াইট সার্ট নিয়ে ওয়াস রুমের ভিতরে যাওয়ার সময় নীল ডাকল হুর পিছন ফিরে চাইল,
রিলাক্স পাখি,,,,,,,(নীল)
হুর ভিতরে ডুকে গেল,,,
হুরের জানালার গ্রিল লাগানো নেই নীল সেখান দিয়েই এসেছিল।এখন সেদিক দিয়েই চলে গেল।
হুর চেঞ্জ করে বের হয়ে আসল।
আজব জ্বীন পুরুষ নাকি। যখন মন চায় আসে যখন মন চায় চলে যায়।(হুর)
হুরের কানে মায়ের চিৎকার চেচামেচি পৌঁছতেই হুর দৌঁড়ে গিয়ে দরজা খুলল।
মেয়েকে দেখে লামহা জোরে শ্বাস টানল।
অসভ্য মেয়ে দরজা খুলতে এতক্ষন লাগে।কখন থেকে ডাকছি কানে যায় না।
মা,,,ওই,, আসলে আমি সাওয়ারে ছিলাম আর রুমে তহ গাণ ওহ বাজছে তাই শুনতে পাই নি।(হুর আমতা আমতা করে বলল)
লামহা এক হাত উচিঁয়ে, দিব এক থাপ্পড়।
হুর খানিকটা পিছিয়ে গেল।
এখনি নিচে এসে খেয়ে আমায় উদ্ধার করো।
হুরের মা চলে গেলো। তখনই নিলাসা এলো
কিরে কাকি তখন থেকে চেচাঁচ্ছে,,,কি হয়েছে।(নিলাসা)
কিছু নাহ,,,,(হুর)
হুর নিলাসার মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিল।
আজব তহ,,, আমার লগে ভাব লও দেখে নিব এই নিলাসাকে ছাড়া তুমার চলে নাকি।(নিলাসা)
নিলাসা গাল ফুলিয়ে চলে গেল।
হুর গিয়ে বিছানায় হাত পা ছড়িয়ে শুয়ে পড়ল।
তখনকার ঘটনা গুলো না চাইতেও সৃতিচারণ হলো হুরের।ঘটনা গুলো এখন ওহ উপস্থিত লাগছে।
তখন ঘটনা গুলো অনুভূতি শুন্য লাগলেও এখন
কুড়ি বছরের যুবতি মেয়েটাকে অনুভূতিরা হানা দিচ্ছে।
রিলাক্স পাখি,,,,এই আলতো আদরের শব্দটা তার মাথায় আসতেই তার শরীরে শিহরণ খেলে গেল।
অনুভূতির আকাঙ্গায় বাধাঁ হয়ে ধারাল তার ভাবনার মাঝেই নীল ভাইয়ের বিয়ে।
ছিহহ ছিহহহ তওবা আস্তাকফিরুল্লাহ,, আমি এইসব কিহ ভাবছি।
আজ এইসব কিছু হতোই না যদি লিপস্টিক গুলো আগেই দিয়ে আসতাম। বাল,,,,
তখন হুর হুরমূর করে তার সব লিপস্টিক গুলো একটা স্পার্স এ করে নীলের ঘরে ছুটল।
কিন্তু নীল ঘরে নেই তাই তার আলমারিতে স্পার্সটা রেখে নিচে চলে গেল খেতে।
নিলাসা আর হুর খাচ্ছে। হুর নিলাসার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে কিন্তু নিলাসা কথা বলছে না।
নিলু নিলু নিলু,,,,,(হুর)
তর এটিটিউট তর কাছেই রাখ একদম আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করবি না।(নিলাসা)
রুহানি মাছের মাথাটা হুরের প্লেটে তুলে দিতে দিতে বলল,,,,,এই নিলাসা এইভাবে আমার আম্মার সাথে ঝগড়া কেন করছিস।
মা,,,,সবসময় তুমি শুধু হুরকেই সার্পোট করো আমি যে তুমার মেয়ে,,,
নিলাসা পুরো কথাটা বলতেই পারল না তার আগেই রুহানি থামিয়ে দিল।
চুপচাপ গেলো।
নিলাসা মুখ ফুলিয়ে খেতে লাগল।
3:30 দিকে রক্তিম ভার্সিটি থেকে আসল।এসেই হুরকে ডাকতে লাগল।
হুর, নিলাসা, কলি তদের জন্য শাড়ি কিনে নিয়ে এসেছি দেখ তহ পছন্দ হয়েছে কিনা।
হুর, নিলাসা খুশি হয়ে শাড়ী দেখতে লাগল কলি ওহ চলে এলো এর মাঝে স্কুল থেকে। কলি ওহ ভিষণ খুশি হলো।
শুধু বোনদেরই শাড়ী দিলে একমাত্র হবু ভাবিটার কথা মনে পড়ল না।
তুবা দরজায় দাঁড়িয়ে বলল।
আরে ভাবি যে ওখানে দাঁড়িয়ে কেন ভিতরে আসুন নাকি কোলে করে নিয়ে আসতে হবে।(রক্তিম)
খারাপ হয় না দেবরজি পায়ে বড় ব্যথা,,,,,(তুবা)
তুবাকে দেখে বাড়ির সবাই খুশি হয়ে গেলো সবাই তুবাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।
হবু ছেলের বউকে দেখে খুশিতে অন্ত নেই রুহানির।
রুহানি,লামহা,রুজি তিন গিন্নি ব্যস্ত হয়ে পড়ল।
দাদি কোথায়,,(তুবা)
দেখেছো মেয়ের সব দিকে খেয়াল,,মা হাটঁতে গেছে।(রুহানি)
হুর,নিলাসা, কলি যাহ ভাবিকে বাড়িটা ঘুরিয়ে দেখা।
ঘুরতে ঘুরতে এখন তারা নীলের ঘরে পৌঁছে গেল।
নীলের ঘরে যেতেই যেন তুবার চেহারা পাল্টে গেল। লাজুক লাজুক।
তুবা ঘরটা ঘুরে ঘুরে দেখছিল।বিছানার উপর একটা শার্ট রাখা ছিল নীলের তুবা সেটা হাতে নিয়ে মুচকি হাসঁল।শার্টটা হাত দিয়ে আলতো করে বুলাচ্ছিল।
তুমার ভাইটা বড্ড অগোছালো নিলাসা।(তুবা)
তহ তুমি আসতেছো কিসের জন্য। (নিলাসা)
তুবা লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে শার্টটা গুছিয়ে আলমারিতে রাখতে গেলেই হুর একপ্রকার তুবার হাত থেকে শার্টটা ছিনিয়ে নিল।
আমি রেখে দিচ্ছি ভাবি তুমি এখনো মেহমান আর আমরা মেহমানদের দিয়ে কোন কাজ করায় না।
তুবা স্থিত হাসঁল।কিন্তু তার কাছে হুরের এই ব্যবহার একদম ভালো লাগল না।
হুর আলমারিতে শার্টটা রাখতে রাখতে তার লিপস্টিকের স্পার্স টাও সামনে পড়ল। হুর শার্টটা রেখে মনে মনে বলল।উফফফ বাচাঁ গেল।
অনেক রাত পেরোলো হুর প্রতিদিন রাতে নীলকে কফি দেয় তাই নীলের জন্য অপেক্ষা করা তার অভ্যেসে পরিণত হয়েছে।
রাত 12 টা বেজে গেল নীলের আসার নাম নেই।হুর অপেক্ষার এক পর্যায়ে তার চোঁখে ভেসে উঠল আজকের দৃশ্য তুবা খুব অধিকার বোধ নিয়ে নীলের শার্টটায় আলতো স্পর্শ দিচ্ছিল।
হঠাৎ হুরের মনে একরাশ মন খারাপেরা পাড়ি জমালো।
আর মাত্র কিছু দিন নীল ভাই তখন আর আমায় আপনার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।
না চাইলেও সেই সুযোগ অভ্যেস আমি হারিয়ে ফেলব,তার আগ পর্যন্ত নাহয় এই মিষ্টি যন্ত্রণা সয়ে নিব।
নীলের জন্য অপেক্ষা করতে করতে হুর ঘুমিয়ে পড়েছিল।
হুর ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে আলমারি থেকে কলেজ ড্রেস বের করছিল।তখনই তার খেয়ালে আসল।রক্তিমের দেওয়া শাড়িটা কুচি কুচি করে কেউ কেটে রেখেছে।
হুর ভালোভাবেই জানে এটা নীলের কাজ।তাই হুর রেগে নীলের ঘরে গেল।
নীলকে রুমে না দেখায় ওয়াসরুমে উঁকি দিতেই দেখল নীল অদ্ভুত ভাবে দাঁত ব্রাশ করছে।
হুর ছেড়া শাড়ীটা নীলের পিঠে ছুরে মারলো।
নীলের হুরপাখি পর্ব ৩
নীল পিছন দিক ফিরে হুরের দিকে তাকিয়ে ব্রাশ করতে লাগল,,
এইসব কোন ধরনের অসভ্যতামি নীল ভাইইই,,,,,
হুর বেচারা নিজের কথা শেষ করার আগেই নীল
নিজের মুখের ব্রাশ হুরের মুখে পুরে দিল,,,,,