তোমার ছোঁয়ায় আসক্ত আমি পর্ব ১৪
নীল মণি
“বৃষ্টির রাত কখনো কখনো বড় আবেগের হয় জানালার কাচে ফোঁটা ফোঁটা জল জমে যেমন, তেমনি মনে জমে ওঠে কিছু স্মৃতি, কিছু ফেলে আসা মুহূর্ত; বাইরের পৃথিবী ভিজে যায় অথচ ভেতরের মনটা শুকনোই থেকে যায়, সেখানে শুধু বাজতে থাকে না-বলা ভালোবাসার এক চুপচাপ সুর।
জায়ন এর থেকে ছাড়া পেতেই ছুটে চলে এসেছে তিয়াশা তার রুমে , এসেই দড়জা টা লক করে দরজার দিকে পিঠ ঠেকিয়ে বসে পড়ল । ছোট্ট শরীর টা জড়সড় হয়ে গুটিয়ে নীল নিজেকে । বারবার নিমেষেই আতকে উঠছে হৃদয় টা ।
তিয়াশার মনে নেমে এসেছে এক আবেগের জোয়ায়,আবছায়ার মত বারবার ভেষে উঠছে কিছু সময় আগের ফেলে আসা মুহূর্ত গুলো , রমনীর সহজ সরল মনটায় এখন বসন্তের ছোয়া লেগেছে ।
না পারছে নিজেকে সামলাতে না পারছে বুঝতে ।
এক উত্তেজনার সারা দিয়েছে, হৃদয় তার হয়ে পড়ছে দুর্বল,
বিন্দু বিন্দু নোনাজল দেখা দিচ্ছে পুরো শরীরে , উদরে প্রজাপতি প্রস্ফুটিত হচ্ছে ।
চোঁখ বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে মনে মনে বলল —
” আপনি এটা কি করলেন ভাইয়া আমার সঙ্গে ? আপনার কোন ধারণা আছে , আপনার এই কঠিন পদক্ষেপ আমাকে এখন কতটা জ্বালাচ্ছে , আপনি তো আমার না তাহলে কেন ভাইয়া ?? ”
চোঁখ বেয়ে এবার বয়ে পড়ছে অশ্রুধারা।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এদিকে জায়ন তার কবার্ড থেকে একটা শর্টস পরে শুয়ে পরেছে। কমফোর্টার টা বুক পর্যন্ত জড়িয়ে ও তার বাহু দু খানি মাথার তলায় রেখে একপানে তাকিয়ে আছে সিলিং এর দিকে । সে গভীর এক চিন্তায় মগ্ন —
” রোদ তুই যৌবনপ্রাপ্ত কবে হবি? আমি তো আর পারছিনা নিজেকে কন্ট্রোল করতে , আমি তো কন্ট্রোল লেস হয়ে যাচ্ছি রোদ । ওহ ফ**ক হাউ শূড আই কন্ট্রোল মাই সেল্ফ , ইউ মেক মি ক্রেজি ফর হেল। ”
কেটে গেল কঠিন মুহূর্তের কঠিন এক রাত ।
রাতভর নিরলস টুপটাপ বৃষ্টির পর, যখন ভোরের প্রথম আলো জানালার কাচে কুয়াশার মতো লেগে থাকে, তখন চারপাশটা এমন শান্ত হয়ে যায় যেন এই শহরটা একটানা কান্নার পর গভীর ঘুমে তলিয়ে গিয়ে ঠিক এখনই জেগে উঠেছে ভেজা গাছের পাতা, রাস্তায় জমে থাকা পানির উপর রোদ্দুরের ছোট ছোট ঝিকিমিকি, আর বাতাসে একরকম কাঁচা, ভিজে গন্ধ যা শুধু এক নতুন শুরুর প্রতিশ্রুতি দেয়।
“জায়ন কাল রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে সবাই বের হবো , তাই আজ তোকেও একটু অফিস যেতে হবে । এত দিন সব ছুটিতে থাকবো, প্রচুর কাজ পেন্ডিং পরে যাবে ।”
জায়ন এর উদ্দেশ্যে প্রান্তিক চোধুরী বলে উঠলেন।
আজ সবাই নাস্তার টেবিলে এক সঙ্গে বসেছে , কিছু আলোচনাও আছে আজ এনাদের মধ্যে তাই সবাইকে এক সঙ্গে নাস্তা করার আদেশ দিয়েছিল এই বাড়ির মেইন কর্তা ।
জায়ন তার ডায়েট ফুডস খেতে খেতে বলল –
” জি বাবা।”
এদিকে বার বার রোদ জয়ানের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করছে , কিন্তু জায়ন আরামসে তার নাস্তায় মনোযোগ ডুবিয়ে আছে , এমন ভাব করছে যেন গতকাল রাতে কিছুই হয়নি ।
এদিকে ইউভির নজর রোদ এর দিকে সেদিকে রোদ এর খেয়াল নেই , ইউভি যে তার ছোট বনুর চাল চলনে নজর দিচ্ছে সেটা জায়ন ভালো করেই জানে ।
তিয়াশা মনে মনে ভাবছে —
” বদজাত ব্যাটা কালকে আমার ঘাম ঝরিয়ে , এখন কি সুন্দর গিলে যাচ্ছে । ইগনোর এর ক্লাস নিসে, নেবে নাই বা কেন ঢ্যাং ঢ্যাং করে বিয়ে করতে যেতে হবে না , শা**লা বাঘের বাচ্চা।”
এর মধ্যেই তিয়াশা বৃষ্টির কানের কাছে ফিস ফিস করে বলল —
” এই আপু ”
বৃষ্টি কিছুই খাচ্ছে না শুধু খাবার নাড়িয়ে যাচ্ছে , খাবার নাড়াতে নাড়াতে বলল —
” বল রে বনু”
” তোর মনে হয় না আমার হবু দুলাভাই একটা বাঘের বাচ্চা।”
বৃষ্টির মন এমনিতেই নেতিয়ে আছে , তার এইসব কথা কিছুই ভালো লাগছে না । তিয়াশার প্রতুত্তরে উত্তর দিল —
” আমার কিছুই লাগে না । তোর লগে তাহলে তুই দেখে বোঝ কি লাগে আমাকে বলিস না।”
রোদ কিছু বলল না , মনে মনে বলল –
” উমমম ঢং দুদিন পরে নেচে নেচে বিয়ে করবে যত্তসব।”
এদিকে একজনের যে সেদিকে না তাকিয়েও সব কিছু পরখ করছে সেটা কে বা বুঝতে পারবে ।
এরই মাঝে,
প্রান্তিক চৌধুরী এবার প্রণয় আলী চৌধুরী ও তাহসান চৌধুরীর উদ্দেশ্যে বললেন —
” তোদের শশুড় বাড়ীর লোকেরা কবে পৌঁছাবে? জায়ন এর নানু বাড়ির লোকেরা আজ রাতেই পৌঁছে যাবে । তোরা কি ফোন করে বলেছিস ওনাদের , বিয়ের কার্ড তো পাঠানোই হয়ে গেছে ,তাও একবার ফোন করে বলেছিস কি? ”
প্রণয় সাহেব বললেন —
” জী ভাইয়া , বৃষ্টির নানু বাড়ির লোকেরা কাল সকালেই আসবে ।”
তাহসান বলল —
” ভাইয়া , অনুর নানুর একটু শরীর খারাপ তাই শুধু আমার শালীর ফ্যমিলি আসবে , আমার তো আর তোমাদের মত শালা নেই একটা ।”
প্রান্তিক চৌধুরী একটু হেসে বললেন —
” আচ্ছা ঠিক আছে , রিসেপশন তো ঢাকা তেই হবে তখন না হয় আসবেন উনি সমস্যা নেই , আর তা ছাড়া রিসেপশন তো দেখার মত করতে হবে তাই না ।”
“জী ভাইয়া ” প্রণয় সাহেব বললেন।
এদিকে বৃষ্টি আর রোদ দুজনেই নাস্তা নিয়ে খোটা খুঁটি করছে , তাই দেখে রূহেনা বেগম বললেন –
” এই জে কি হয়েছে দুই জনের খাবার নিয়ে কুট কুট করছিস কেন ? খেয়ে তারাতারি উপরে গিয়ে সব গুছিয়ে নে পরে বলবি এটা রয়ে গেছে ওটা রয়ে গেছে । ”
মেজাবীন বেগম বললেন আকাশের উদ্দেশ্যে —
” বাবা তোরা গিয়ে আজ কেনাকাটা টা করে আসিস । কাল আর সময় হবে না । আর দেখ তোর ভাইয়া কে নিয়ে যেতে পারিস কিনা ? ”
” জী মামি বিকেলের দিকে যাব আমরা।”
এদিকে জায়ন এর নাস্তা শেষ হয়ে টিস্যু দিয়ে হাত হাত মুছতে মুছতে ইউভির উদ্যেশ্যে বলল —
” ইউভি তোকে যে কালকে একটা কাগজ দিয়ে লিস্ট বানাতে বলেছিলাম , লিস্ট টা রেডি রেখেছিস তো ?”
ইউভি জ্যুস খাচ্ছিল হঠাৎ জায়ন এর এরকম একটা প্রশ্ন করায় তাও এই পরিস্থিতি তে সে নিজেকে সামলাতে না পেরে ,মুখ থেকে জ্যুস টা পরে চারিদিকে ছড়িয়ে গেল ।
প্রণয় সাহেব বললেন —
” আরে সাবধানে খাবে তো , হল কি ?”
” কিছু না আব্বু।”
মেহজাবীন বেগম সঙ্গে সঙ্গে জল এনে দিলেন ,আর বললেন —
” এই নে বাবা জল টা খা । ”
জল টা নিয়ে ইউভি নিজেকে একটু সামলে বলল
” জী বড় আম্মু ।”
জায়ন এদিকে ভ্রূ কুচকে ইউভির দিকে তাকিয়ে আছে ।
রুহেনা বেগম প্রণয় সাহেব কে পরোটা দিতে দিতে বললেন —
” হ্যাঁ রে বাবা ইউভির কাছে কিসের লিস্ট চেয়েছিস?”
জায়ন চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে রোদ এর দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলল —
” কিছুনা মেজ মা , আমার হবু বউ কি পছন্দ করে কি করে না তার লিস্ট।”
আবার ও ইউভির কাশী উঠে বুক চাপড়াতে লাগল । বৃষ্টির চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল ।
জায়ন এর এরকম বৌ এর প্রতি লাগামছাড়া কথাবার্তা শুনে —
তিয়াশা তো মনে হয় দাঁতে দাঁত পিষে যত রাজ্যের গালাগালি আছে সব জায়ন এর উদ্দেশ্যে দিয়ে যাচ্ছে ।
জায়ন মুচকি মুচকি হাসছে , কারন সে গতকাল রাতেই বুঝতে পেরেছিল তার পার্সোনাল রমনী যে তার প্রতি একটু হলেও দুর্বল সেটা আর বুঝতে বাকি নেই ।
রূহেনা বেগম বললেন —
” তো আমাদের কাছেই চাইতে পারতি। ”
“তোমারা পারবে না মেজো মা।”
ইউভি এদিকে তার ভাইয়ের লাগামছাড়া কথাবার্তায় কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না ।
সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে জায়ন একবার রোদ এর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো —
” রোদ আমার রুমে আসিস তো , তোকে দিয়ে একটা কাজ আছে ।”
রোদ যে খাবার নিয়ে টুকটুক করছিল , জায়ন এর কথায় সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে ,চোঁখ বড় বড় হয়ে গেল ।
মনে মনে বির বির করল —
” এই ব্যাটা আমায় ডাকে কেন ? এখন কি আপুর পছন্দ অপছন্দ আমায় জিজ্ঞেস করবে । হে আল্লাহ আমি এখন কি করব, শা**লা শয়তান বদজাত বাঘের বাচ্চা। ”
ইউভি মনে মনে বলল —
” ব্যাস এই বাকি ছিল , হয়ে গেল । হে আল্লাহ আমায় কোথায় এনে ফেললে ?”
আকাশ বলল —
“আরে ভাইয়া তুই এত ঘামছিস কেন ?”
ইউভি বলল দাঁতে দাঁত পিষে —
” গরমে ঘামবো না তো কি করব ।”
তাহসান পাশেই বসে ছিলেন ওদের কথা শুনে বলল —
” কি বলিস ইউভি আজ তো কি সুন্দর ওয়েদার ।
এ সি ও চলছে , ইস আমি যদি তোদের মত ইয়াং হতাম তোর চাচীর সঙ্গে টাইম কাটাতাম ।ইস কি মিস মিস ।”
ইউভি মাথা নিচু করে মনে মনে আওরালো,
” হবে হবু শশুড় কোথায় নিজের মেয়ের সঙ্গে আমার বিয়ে টা দেওয়ার কথা ভাববে তা না নিজের রোমাঞ্চ নিয়ে পড়েছে , সব আমার কপালেই জুটেছে । কপাল ও মাইরি উফ ।”
আকাশ একটু ফিস ফিশ করে হেসে বলল —
” ছোট মামু বলো তো ভাইয়া দের সঙ্গে তোমার ও একটা হানিমুন এর প্যাকেজ বানিয়ে দিতে বলি ।”
তাহসান সাহেব একটু লজ্জা পেয়ে বললেন –
” এই চুপ কি যে বলিশ না, আস্তাগফিরুল্লাহ
আস্তাগফিরুল্লাহ”
ইউভি একটু মুখ বাঁকিয়ে বলল –
” স্টার্ট তো করল নিজেই এখন যত ঢং ।”
এদিকে বৃষ্টি উঠে চলে গেলো। রায়ান আর অনু ঝগড়া করেই যাচ্ছে । এর মধ্যেই রূহেনা বেগম চেচিয়ে বললেন —
” এই মেয়ে তোকে জায়ন ডাকলো না । যা তারাতারি ”
রোদ হকচকিয়ে উত্তর দিল —
” জী আম্মু ।”
ইউভি মনে মনে একটু দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল —
” যাও বনু যাও দেখো তোমার জন্য কি ওয়েট করছে , আল্লাহ আমার বোন টারে হেফাজতে রেখো । ”
জায়ন অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল , হঠাৎ দরজায় কেউ নক্ করল — তার জানা ছিল দড়জার ওই পারে কে ।
” দরজা খোলা আছে , ভেতরে আয় ।”
রোদ রুমে ঢুকতেই চোখ মুখ লাল হয়ে গেল —
” ইস কি হ্যান্ডসাম তার আসক্তির পুরুষ টা , মনে হয় যেন টুপ করে গিলে ফেলি।”
জায়ন এর পরনে ধূসর রঙের ট্রাউজার , হোয়াইট শার্ট ও ধূসর রঙের ব্লেজার , হাতে দামী রিস্ট ওয়াচ, চুল গুলো জেল দিয়ে সেট করা , পুরো ঘরে বিদেশী পারফিউম এর ঘ্রাণ এ ভরিয়ে দিয়েছে ।
তিয়াশা যেন পারফিউমের এর ঘ্রাণে এক ঘোরের মধ্যে প্রবেশ করতে চলেছে , ঠিক তখনই কারো কন্ঠ ভেসে আসল
” কি রে ওখানে কেন দাড়িয়ে আছিস ,এদিকে আয় ।”
” জ জ জী ”
জায়ন তার এক্সেসেরিস এর কাচের কেবিনেট থেকে একটা টাই বের করে তিয়াশার দিকে ধীর পায়ে এগিয়ে বলল
” নে এটা বেধে দে।”
রোদ যেন অবাক হয়ে পড়ল জায়ন এর এরকম হঠাৎ করা ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া উক্তিতে ।
জায়ন ভ্রু কুচকে একটু ঝুঁকে বলল —
” কি হলো ধর এটা বেধে দে ।”
চোঁখ মুখ গোল্লা পাকিয়ে রোদ এর মুখ থেকে একটাই কথা বেরোলো —
” অ্যাআ…..”
রোদ এর শরীর যেন পুণরায় গতকালের মত অসর হয়ে আসছে , কম্পিত শরীরের নোনাজল তার শরীর জড়ানো গাউন টায় উপচে পড়ছে । তার এমন কেন হয় এই একটা লোকের কাছে আসলেই , এই সব ভাবনার মধ্যেই রোদ কম্পিত স্বরে বলে উঠলো —
” আমি তো এটা বাঁধতে পারি না ।”
জায়ন আরেকটু কাছে এসে রোদের কানের পাশে মুখের সামনে পরে থাকা চুল গুলো গুঁজে দিয়ে বলল —
” তাহলে শিখে নে। ”
রোদ নিজেকে একটু সামলে প্রস্ন করল –
” কি করে ??”
জায়ন নিজের দুই বাহু রোদের দিকে এগিয়ে , রোদের দুই হাতের কব্জি নিজের অধিকারে নিয়ে নিল —
জায়ন এক পা আগাচ্ছে তো রোদের এক পা পিছলো , এরকম করে দেওয়াল এর সংস্পর্শে এসে রোদ এর পিঠ ঠেকল ।
রোদ এর শরীরের উষ্ণতা ক্রমশ বেড়ে উঠছে , তার ওষ্ঠ যুগল দ্বারা ধিম কন্ঠে বলল —
” কি করছেন আপনি ?”
জায়ন আরো কাছে এসে রোদ এর নাকের সঙ্গে নাক স্পর্শ করে বলল –
” কেন টাই বাধা সেখাচ্ছি তোকে ।”
তৎক্ষনাৎ টাই টা রোদের দুই হাতের মধ্যে নিয়ে জায়ন নিজের ঘাড়ের কাছে নিয়ে গেল , এখন রোদ এর দুই হাত জড়িয়ে আছে জায়ন এর শার্ট এর কলার , তাদের দুজনের মাঝে কিঞ্চিৎ ফাঁকা পর্যন্ত নেই । রোদ এর পা হওয়ায় ভাসছে হঠাৎ করে আবরার জায়ন রোদ এর হাত দুটো ছেড়ে কোমর জড়িয়ে ভারী স্বাস ফেলে বলল —
” বড় হবি কবে তুই রোদ , আমি তো পারছিনা। কন্ট্রোল লেস হলে তোর বয়স দেখব না আমি ।
রোদ ভয়ে ভয়ে বলল —
” মানে ?”
জায়ন ভারী স্বাসপ্রশ্বাস নিতে নিতে রোদ কে ছেড়ে দিল , অমনি নিজেকে উল্টো দিকে ফিরিয়ে বলল —
” বের হ আমার রুম থেকে এক্ষুনি ।”
রোদ জায়ন এর সামনে এসে রেগে বলল —
“” কিসের জন্য আমায় বড় হতে হবে?”
জায়ন এর চোঁখ দুটো রক্ত রাঙ্গা লাল হয়ে উঠেছে —
” তুই এই জে এত উৎসৃঙ্খল, এখন অনেক ছোট মারতে পারব না তোকে , তাই তাড়াতাড়ি বড় হ যাতে তোর মত বদমাইস কে মেরে সাহেস্তা করতে পারি । এখন বের হ
আমার রুম থেকে ।
রোদ এর সব আবেগের জোয়ার যেন কোথায় উল্টো দিকে ভেসে গেলো , চোঁখ থেকে হঠাৎ দু এক ফোঁটা জল পড়তে সুরু করল , মুখ ফুলিয়ে বলল —
“আমি কি আসতে চেয়েছি? আপনিই তো ডাকলেন”
জায়ন কোমরে হাত গুজে রোদ এর থেকে একটু দূরে গিয়ে বলল —
” আমি ডেকেছি তুই এসেছিস , এবার যেতে বলছি বের হ আমার রুম থেকে ।”
রোদ আর এই অপমান সহ্য করতে পারছেনা তাই রুম থেকে তাড়াহুড়ো করে বের হতে লাগল তখনি আবার জায়ন পেছন থেকে বলে উঠল —
” বাড়িতে অনেক মেহমান আসবে , কোন ছেলে পুলের কাছে ঘেঁষতে দেখলে ওখানেই পুঁতে দেব ।”
জায়ন এর এই কথায় রোদ এর আরো রাগ হলো রোদ মুখ বাঁকিয়ে ভেংচি দিয়ে চলে গেল ।
তখনি ইউভি হন হনিয়ে জায়ন এর রুমে আসতে লাগছিল তখন ই দেখল তিয়াশা চোঁখ মুছতে মুছতে নিজের রুমের দিকে দৌড়ে চলে গেল । দৃষ্টি ওর দিকেই নিক্ষেপ করে জায়ন এর রুমে প্রবেশ করল ইউভি ।
জায়ন ইউভি কে দেখে একটু ঠোঁট উল্টে হাসি দিয়ে টাই টা বাঁধতে বাঁধতে বলল —
” চেক করতে এসেছিলি? চিন্তা করিস না তোর বনু কে এখনো খাবো না , সহ্য করতে পারবে না আমায় ।”
এই বলে হেসে উঠল ….
ইউভি মনে মনে ভাবল ” এই লোক বলে কি , মাথা টা কি পুরাই গেছে আমার বোনুর চক্করে । কি যা তা লাগাম হিন
কথা বার্তা শুরু করেছে ।”
ইউভি একটু কেশে সাহস নিয়ে বলেই উঠল —
” মানলাম ভাই তুমি কাউকে পরোয়া করো না, কিন্তু আমি তো ওর ভাই এত লাগামহীন কথা বার্তা শুরু করছো আমার ই লজ্জা লাগে ।”
জায়ন একটু হেসে বলল —
” ওকে আর বলব না।,”
ইউভি বলল –
“আসলে বড় আব্বু বলে গেল , আমরা যেন তারাতারি অফিস যাই। তাই তোমায় ডাকতে আসলাম।”
জায়ন আরেকবার আয়নায় নিজের মুখ টা দেখে বলল —
” হুম চল আমি রেডি ।”
“ভাইয়া আরেকটা কথা, বনু এই ভাবে কাঁদতে কাঁদতে কেন গেল ?”
জায়ন ইউভির কাছে এসে ইউভির বা কাঁধে নিজের ডান হাত দিয়ে চাপড়ে বলল —
” কি করব বল ? একটু রোমান্স করতে যাচ্ছিলাম কিন্তু তোর বোন ভয়ে কাঁপাকাঁপি শুরু করে দিয়েছে আর এইসব দেখে আমি নিজেই আনকন্ট্রোল হয়ে যাচ্ছিলাম । তাই একটু বোকে বলেছি রুম থেকে চলে যেতে নইলে এতক্ষণে কি করতাম নিজের ই ঠিক নেই ।”
এই বলে হেসে বেড়িয়ে গেল ..
ইউভি নিঃশব্দে দাড়িয়ে রইলো স্টার্চু হয়ে। ও ধীর গলায় বলল —
” একটু আগে না বলল আর লাগামহীন কথা বলবে না । কিন্তু আমার ই ভুল ইনি তো শুধরানোর না। ”
এইবার ইউভি জায়ন এর পিছু নিয়ে বলল —
তোমার ছোঁয়ায় আসক্ত আমি পর্ব ১৩
” ভাইয়া তুমি শুধরাবে না।”
জায়ন সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে একটু হেঁসে বলল —
” কি করে সুধরাব আমার কিটি ক্যাট কে দেখলেই ,
মাথা মস্তিষ্ক আমায় শুধরাতে দেয় না।”