আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৭১
ইশিকা ইসলাম ইশা
চৌধুরী বাড়ি আজ রাজকীয় ভাবে সাজানো হয়েছে।চারদিকে বড় বড় লাইটে জ্বলজ্বল করছে।সাথে ছোট ছোট ফেইরি লাইট জ্বলছে।মেহমানে ভর্তি আজ চৌধুরী বাড়ি।চারদিকে রমরমা পরিবেশ হলেও
তীব্র বিরক্তকর মুখে বসে আছে সোফায়।বাগানের দিকে বিশাল স্টেজে রিদিকে বসানো হয়েছে।সেখানেই মহিলারা চারদিকে থেকে রিদিকে ঘিরে রেখেছে।এটাই মূলত তীব্রর বিরক্তির কারন।তার বৌ কে এভাবে ঘিরে রাখার কি আছে বালের এক অনুষ্ঠান ছ্যা……
তীব্রর ভাবনার মাঝেই তীব্রর পাশে ধপ করে বসে পড়ল তীর।মির ও বসল পাশে। মির রিদিকে একপলক দেখে তীব্রর দিকে তাকালো। তীব্র ওএকপলক তাঁদের দিকে তাকিয়ে আবারো দৃষ্টি রাখল রিদির উপর।তীর তীব্রকে খোঁচা মেরে বলল,
আমার বোনডারে এমনে দেখিস কেন?তোর বদ নজর লাগবে!
তীব্র বিরক্তকর মুখে বলল,
তো কাকে দেখব?
আমাকে দেখবি!!
তোর মাঝে দেখার মতো কিছু নাই!
কি বললি?আমার মতো সুন্দর, হ্যান্ডসাম, গর্জিয়াস লুকের এতো সুন্দর পোলা জীবনে দেখেছিস!!!
মীর বিরক্ত হয়ে বলল,
হ্যাঁ ভাই তোকে তো বেস্ট সুন্দর পোলার এওয়ার্ড প্রদান করা উচিত!!
তোমরা সালা ফকির উদ্দিন আহমেদ বাবা ভন্ড পীর চল্লিশ চোরের দু নাম্বার নাতি!আমার কদর বুঝবা না।
মীর কটমট করে বলল,
আপনি নবার ফকির সাহেবের বংশধর একটু চুপ থাকবেন!
তীর জেদি গলায় বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তোরা কি চাস আমি চুপ থাকি।তোরা আমাকে নির্যাতন করে চুপ করিয়ে রাখতে চাস।এটা মানি না মানব না!!আমার বলার অধিকার আছে!
তীব্র বিরক্তকর মুখে চ উচ্চারণ করে কিছু বলল না।আপাতত তার বৌ কে লাগবে।২ ঘন্টা ধরে বৌয়ের থেকে দূরে বসে আছে সে।২ ঘন্টায় না হলেও দুশত বার তীব্র রিদিকে নিয়ে আসতে গেলে নাজমা চৌধুরী বিরক্তি নিয়ে বারবার তাকে একা হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে।এতেই তীব্র ক্ষিপ্ত!!
বালের নাটক শেষ হচ্ছে না।
তীব্র কে এমন পাংশুটে মুখে বসে থাকতে দেখে মীর কিছু না বললেও তীর এটা ওটা বলেই চলছে। তীব্র তীরের কথায় কান না দিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে স্টেজের দিকে তাকিয়ে কিছু ভাবছে।এর মাঝেই রুপ এসে তাদের সামনে দাঁড়ায়!বলতে হবে রুপ নিঃসন্দেহে অধিক সুন্দরী।যেন আল্লাহ নিজ হাতেই তাকে বানিয়েছে।যেমন সুন্দর তেমনি আজকের পরিহিত শাড়িতে বলিউড মুভির হিরোইন লাগছে।বলতে হবে ল্যামলাইট পাওয়ার যোগ্যতা আছে তার।পেয়েছেও বটে।প্রায় সব ছেলেদের নজর তার দিকে।বিয়ের প্রপোজাল তো যেন দিতেই আছে লোকজন। কিন্তু রুপ সে আজ শাড়ির আঁচলটা একদম ইন্ডিয়ান হিরোইনদের মতো নিয়েছে।যা প্রায় শরীর দৃশ্যমান!তীর একপলক রুপ কে দেখে চোখ ফিরিয়ে নিল।রুপ তীব্রর দিকে তাকিয়ে বলল,
তোমার কিছু লাগবে ভাইয়া??
তীব্র ভনিতা ছাড়াই বলল,
লাগবে!!
রুপ খুশি হয়ে বলল,
বল আমি এখুনি…….
বৌ বিরক্তকর মুখে বলল,
বৌ লাগবে!ঐটা আমার বৌ!ঐ বৌ লাগবে!কিন্তু সবাই ওকে ঘিরে আছে !বাল করছে সব…..
রুপ এবার কিছুটা ক্ষিপ্ত মেজাজে বলল,
কি দেখেছ ওর মাঝে?কি আছে ওর মাঝে যা আমার নেই!
তীব্র বিরক্তকর মুখে বলল,
ডিস্টার্ব করিস না রুপালি।পারলে এই গেটআপ চেঞ্জ কর।এখানে বোল্ড মুভি চলছে না।আর আমার বৌয়ের…..আই রিপিট আমার বৌয়ের মাঝে কি আছে সেটা তোকে বলা জরুরি মনে করছি না।ফারদার আমাকে প্রশ্ন করার সাহস দেখাতে আসবি না।
মির,তীর দুইজনেই এতক্ষণ নির্বাক হয়ে শুনল শুধু।রুপ কে রেগে এখনো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তীর উঠে দাঁড়ালো যেত যেতে গুনগুন করে গান ধরল,
“আসল সোনা ছাড়িয়া যে নেই নকল সোনা
সে জন সোনা চেনে না ”
“যে জন প্রেমের ভাব জানে না,
তার সনে নাই লেনাদেনা আহা…..
আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৭০
রুপ ছলছল দৃষ্টিতে তীরের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে হুট করেই ক্ষিপ্ত হয়ে তীরের পিছু ছুটল।
এদিকে স্টেজ এ সবাই রিদিকে ঘিরে রেখেছে।রিদির দুই পাশে দুইজন মহিলা গাড দাঁড়িয়ে আছে। তীব্র রিদির আশেপাশে গাড রাখবে এটা জানার পর রিদি ওঁদের কেও শাড়ি পড়িয়ে রেখেছে।যেন গাড গাড না লাগে।
বেশ কিছুক্ষণ প্রায় আধা ঘন্টা পর সবার আনন্দের মাঝেই তীব্র হুট করে স্টেজ এ উঠে রিদিকে টেনে দাড় করিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরার সাথে সাথেই হাতে থাকা চকচকে চাকুটা পাশে বসা নাজমা চৌধুরীর পেটে ঢুকিয়ে দিতেই তাজা লাল তরল রক্তে রঞ্জিত হয় স্টেজ।আর সাথে সাথেই জোরে জোরে মিউজিক বাজতে শুরু করে।