তোমার ছোঁয়ায় আসক্ত আমি পর্ব ৬০
নীল মণি
ঢাকার রাত মানেই এক অদ্ভুত মিশ্রণ,রাস্তার একপাশে আলো ঝলমলে হেডলাইট গাড়ির স্রোত, অন্যপাশে হঠাৎ নির্জন ফাঁকা গলি, কোথাও চায়ের দোকানের হালকা ধোঁয়া ভেসে বেড়ায়, কোথাও আবার কুকুরের ডাকে কেঁপে ওঠে নীরবতা। দূরে বিলবোর্ডের ঝলমলে আলোয় চকচক করছে শহরের আকাশ, আর মাঝেমধ্যেই কোনো বাইকের হর্ন ভেদ করে রাতের স্তব্ধতা চিরে যায়।
এই শহর রাতেও ঘুমায় না, তবে একধরনের ক্লান্তি ঝুলে থাকে বাতাসে।যেন দিনের ভিড়, কোলাহল সব থেমে গিয়ে রাতের বাতাসে ফিসফিস করে এক অদৃশ্য গল্প।সেই গল্পের ভেতরে দাঁড়িয়ে আছে জায়ান আর তিয়াশার অ্যাপার্টমেন্ট।বনানীর এক প্রান্তে এই দুই তলা বিল্ডিং, বাইরে শহরের আলোছায়া ঢুকে পড়ছে জানলার কাঁচে। ভিতরে কিন্তু একেবারে ভিন্ন ছবি।
জায়ন এক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল। চোখ বড় বড় হয়ে তাকিয়ে আছে তার বউয়ের দিকে। মুহূর্তটা যেন জমে গেল ,কথা বেরোচ্ছে না, হাত পা অবশ হয়ে আসছে। তার মাথায় বজ্রপাতের মতো ঢুকে গেল তিয়াশার কথা ।
তিয়াশার বুক ওঠানামা করছে প্রচণ্ড রাগে। হাতে ধরা ছু*রি কাঁপছে, কিন্তু সেই কাঁপুনি রাগের, ভয়ের নয়। চোখে আগুন, ঠোঁটে কাঁপুনি, গলায় চিৎকারের ঝড়।
জায়ন মুহূর্তের মধ্যেই বুঝে গেল পরিস্থিতির ভয়াবহতা। সে তাড়াহুড়ো করে ছোট্ট ‘পোমেরানিয়ান’ পাপিটাকে বেসিনের পাশের টাব থেকে তুলে নিল, দ্রুত টাওয়ালে পেঁচিয়ে একপাশে রেখে দিল। তারপর ছুটে এসে তিয়াশার সামনে দাঁড়াল। কাঁপতে থাকা সেই ছোট্ট হাত, যার আঙুলে ধরা আছে ধারালো ছু*রি,সেটা শক্ত করে চেপে ধরল। উদ্বিগ্ন, তবুও কোমল কণ্ঠে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
—”জান, পাগল হয়ে গেছিস? কি করছিস এসব?”
কিন্তু তিয়াশার মাথা তখনো রাগে ঘোরের মধ্যে। তার চোখে কান্না আর ক্রোধ মিশে এমন ঝড়, যা থামানো প্রায় অসম্ভব সে বোঝার মত ক্ষমতায় নেই। সে ছটফট করতে করতে, গলা কাঁপিয়ে চিৎকার করে উঠল,
__” বের কর ওই মেয়ে কে কোথায় লুকিয়ে রেখেছিস ? কোথায় সেই শাকচুন্নি? এই শাকচুন্নি বেড়ো বলছি,কু** বাচ্চা আমার জামাই এর সঙ্গে রোমান্স করিস ।বেরো দেখি তোর ওই বা** সস্তার স্কিন ? ”
জায়নের বুকটা কেঁপে উঠল। এই বউকে কীভাবে শান্ত করবে, এক মুহূর্তের জন্যও বুঝে উঠতে পারল না। কিন্তু তার ভেতরে ভয় নেই বরং এক তীব্র তাগিদ, তাকে শান্ত করার, তাকে নিজের আগলে ফেরানোর। তাই এক হাতে ছু*রিধরা আঙুল শক্ত করে চেপে ধরল, যাতে কোনো অনর্থ না ঘটে। আরেক হাত দিয়ে আলতো করে তিয়াশার মাথা টেনে নিল নিজের বুকে।
তারপর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে, মাথায় হাত বুলিয়ে কোমল, দমবন্ধ কণ্ঠে বলতে লাগল,
__”কুল কিটি ক্যাট, কুল..…”
তিয়াশার বুকের ভেতর তখনো ঝড়ের মতো দম বন্ধ করা রাগ জমে আছে। জায়নের শান্ত, অনুরোধমাখা কণ্ঠস্বর শুনেও তার বুকের ঢেউ কমছে না। জায়ন আবারও মাথায় হাত বুলিয়ে নরম গলায় বলল,
__” কেউ নেই জান এই ওয়াশরুমে কোনো শাকচুন্নি নেই আমার সঙ্গে, শুধুমাত্র ও ছাড়া।”
এই বলে জায়ন আলতো করে তিয়াশাকে ঘুরিয়ে আঙুল দিয়ে দেখাল বেসিনের পাশে রাখা সাদা তোয়ালে জড়ানো ছোট্ট ‘পোমেরানিয়ান’পাপ্পিটাকে। চোখ মিটমিট করা সেই তুলোর মতো সাদা পাপ্পিটাকে দেখে মুহূর্তেই তিয়াশার চোখের আগুন যেন নিভে আসতে লাগল। বুকের ভেতরের তীব্র রাগের ঝড় কোথায় যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। তার ঠোঁটে ক্ষণিকের অবাক হাসি ফুটে উঠল।
কিন্তু পরক্ষণেই মনে পড়ল সে যে শব্দগুলো শুনেছিল।সেই “কিউট”, “সফ্ট” বলার শব্দ,আবার চোখে রাগ জমে উঠে জায়নের দিকে বজ্র দৃষ্টি ছুড়ে দিল। তীক্ষ্ণ কণ্ঠে বলে উঠল,
__” তাহলে কাকে কিউট সফ্ট বলছিলে এতক্ষন ?”
জায়ন এবার একরাশ হেসে ফেলল, তিয়াশা অবাক
হয়ে সেই হাসির দিক চেয়ে আছে ,তার ঠোঁটে এমন হাসি, যা পরিস্থিতিকে হালকা করে দিল। খুব ধীরে বউয়ের হাত থেকে ছু*রিটা নিয়ে স্ল্যাবের ওপর রেখে দিল,তারপর তিয়াশাকে আগলে রেখেই পাপিটার কাছে নিয়ে গেল। মুচকি হেসে বলল,
__” এই যে এই মহারানীকে বাথ দিচ্ছিলাম , ওকে ছুঁয়ে দেখ কত সফ্ট। আর ও কত কিউট তা তো তুই নিজে চোখেই দেখেছিস । ”
জায়নের কথায় তিয়াশার চোখ বড় বড় হয়ে গেল। কিছুটা বিশ্বাস, কিছুটা মায়ার ছাপ ফুটে উঠল তার চোখে। তারপর নিঃশ্বাস ছেড়ে পাপ্পির দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,
__” কামড়াবে না তো??”
জায়ন আবারো হেসে তিয়াশার মাথায় হাত বুলিয়ে
বলে উঠল,
__” ওর ওই ছোট্ট মুখ দিয়ে তোকে কি ভাবে কামড়াবে?আর সব টিটি দেওয়া কামড়ালেও সমস্যা নেই ।”
তিয়াশার বুকের ভেতর যেন হঠাৎ করেই জমে থাকা আগুন নিভে গেল। রাগ গলে নরমতায় মিশে গেল। সে আর দেরি করল না, সঙ্গে সঙ্গেই পাপিটাকে কোলে তুলে নিল। বুকের কাছে জড়িয়ে নিল ছোট্ট প্রাণটাকে, যেন এটাও তার শান্তির উপায়। তারপর কোনো কথা না বলেই ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এল,জায়নও চুপচাপ তার পেছন পেছন চলল। কিন্তু বাইরে এসে আবারও সেই রাগী দৃষ্টি নিয়ে জায়নের দিকে ঘুরে দাঁড়াল তিয়াশা। কণ্ঠে কাঁপা, চোখে ঝড়,
___” এগুলো কার জন্য সাজিয়েছ ? কাকে আসতে বলেছিলে ১২ টার আগে ?”
জায়ন এবার গভীর দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলল। তার দুই হাত আলতো করে তিয়াশার কাঁধে রেখে হালকা কষ্টের হাসি দিয়ে বলল,
__” আমার সারপ্রাইজ এর তো পুরো চন্দ্রবিন্দু লাগিয়ে দিলি এবার বল তোকে কি করা উচিৎ?”
তিয়াশার চোখ বিস্ফোরিত হলো অবাক আর অনুশোচনায়। তার ভেতরে এক ঝটকা কাঁপন বয়ে গেল। কণ্ঠে হতাশা মিশিয়ে বলে উঠল,
__” আমি তোমার কি সারপ্রাইজ নষ্ট করলাম? বরং
তুমি আমার মাথা নষ্ট করেছো তার জন্য তোমাকে তো
মনে হচ্ছে বুড়ী গঙ্গায় চুবিয়ে দেই সারা দিন ফোন রিসিভ করোনি উল্টা পাল্টা চিন্তায় মাথা খারাপ করে ফেলেছিলাম ।”
জায়ন মৃদু হেসে তাকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাল। তারপর ড্রইং রুমের এক সাইডওয়ালের দিকে আঙুল তুলে ধরল। তিয়াশার চোখ সেখানে পড়তেই বিস্ময়ে স্থির হয়ে গেল। বড় বড় লাল গোলাপ দিয়ে লেখা,
“Happy Birthday My Universe, My Kitty Cat.
এই লেখা দেখতেই তিয়াশার কোন সন্দেহ রইলো না যে এই সব ডেকোরেশন তার জন্য ।তিয়াশার বুকের ভেতর কেমন শূন্যতা নেমে এলো ,তার চোখ বিস্ফোরিত হলো অবাক আর আবেগে। তারপর জায়ন তার মুখটা আলতো করে উপরে তুলল। উপরের দিকে তাকিয়ে তিয়াশা দেখল সারা সিলিং বেলুনে ভরা, সাদা ফেয়ারী লাইট এর আলোয় ঝিকিমিকি করছে।
এমনকি মেঝেতেও চারপাশ জুড়ে বেলুন ছড়ানো,জায়ন এবার তার রিস্ট ওয়াচ এর দিকে তাকিয়ে চোখের চশমা টা ঠিক করতে করতে হালকা কষ্টের হাসি দিয়ে বলল,
__” এখন বাজে ১০ টা ১৫ , ভেবেছিলাম ১১ টার পরএই মহারানী কে নিয়ে নিজেই আনতে যাব আমার বউ কে । কিন্তু আমার বউ তো ঠিক আমার মতই পাগল , সব ঘুটে ঘোল বানিয়ে দিল। আর ১২ টার আগে কেক দিয়ে যেতে বলেছিলাম ।”
এই বলে জায়নের মুখটা নিস্তেজ, অসহায়ের মতো হয়ে গেল। তিয়াশা নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে রইল। তার চোখ স্থির হয়ে গেল জায়নের দিকে।
সত্যিই সে পাগল নইলে সারাদিন এত উল্টো পাল্টা
কি করে ভাবলো এই লোক টা কে নিয়ে এটা জানা
সত্ত্বেও যে তার বাঘের বাচ্চা তার জন্য সর্ব সুখ পায়ের কাছে এনে দিতেও রাজি । আর সে কি করে ভুলে গেল
আগামীকাল তার জন্মদিন , প্রতিবার পরিবারের বাকি সবাই মনে করায় । এবছর থেকে তার সব থেকে কাছের মানুষটা মনে করবে ।
তার চোখ ভরে উঠল অশ্রুতে। বুকের ভেতর ভালোবাসার ঝড় বয়ে গেল।
জায়ন এর তিয়াশার চোখে পানি দেখার সঙ্গে সঙ্গেই বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠলো। যেন নিজের বুকের ভেতরে ছুরি চালানো হলো। সেই মুহূর্তে সে আর কিছু বুঝল না, শুধু তার বউ আর সেই ছোট্ট মহারাণীকে আঁকড়ে ধরল বুকের ভেতর। এক হাতের বাহুতে আলতো করে তিয়াশাকে জড়িয়ে নিল, কাঁপা গলায় বলল,
__” বেইব আর এক ফোঁটা চোখের পানি ফেলবি তো আমি মহারানী কে রেখে আসব ।”
এই কথা বলতেই তিয়াশা মুহূর্তেই চোখের পানি মুছে জায়ন এর দিকে গট গট করে তাকিয়ে মহারানী কে আরো আগলে বলে উঠলো,
__” তোমার যেখানে যেতে ইচ্ছে হয় সেখানে যাও ,
মহারানী আমার কাছেই থাকবে ।”
জায়ন একটু হেসে সঙ্গে সঙ্গেই সে তিয়াশার কোল থেকে মহারাণীকে আলতো করে নিয়ে পা বাড়ালো সোফার দিকে। তিয়াশা যেন এক পলকে চমকে উঠল,তাড়াতাড়ি ছুটে ছুটে পেছন পেছন গিয়ে পৌঁছল।
__”ওকে নিলে কেন? দাও, বলছি আমাকে।”
এই বলে জায়ন এর পাশে বসে বারবার হাত বাড়াতে লাগল মহারাণীর দিকে। কিন্তু জায়ন এবার একটু বিরক্তির ছাপ নিয়ে তাকাল তার দিকে। চোখে দুষ্টুমির ঝিলিক রেখেও গম্ভীর গলায় বলল,
__” কিটি ১০ মিনিট দারা তারপর ও পুরোই তোর ।”
আর কথা না বাড়িয়ে তিয়াশা ঠোঁট ফুলিয়ে চুপ করে বসে রইল পাশে,আর জায়ন এদিকে মহারাণীর ভেজা ফেদারগুলো যত্ন করে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে শুকিয়ে আদরে মাথার কাছে একটা সুন্দর বো ক্লিপ লাগিয়ে দিল যেন বাচ্চাকে সাজানো হচ্ছে মনোযোগ দিয়ে , এরপর পরল মিষ্টি এক মেয়েদের জামা ,প্রতিটি কাজে যেন ভালোবাসা আর খুঁটিনাটির ছোঁয়া।
তিয়াশা এদিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল তার বাঘের বাচ্চার দিকে। কি যেন ভেবে যাচ্ছিল সে। হয়তো অবিশ্বাস, হয়তো গোপন মায়া। হঠাৎ ঠোঁটের কোণে এক ঝিলিক হাসি ফুটে উঠল।
জায়ন সেই হাসি ধরতে দেরি করল না। মহারাণীকে সাজাতে সাজাতেই হেসে বলে উঠল,
__” হাসতে হবে না বউ আমার ব্লাড লাইন কেও সাজানোর দায়িত্ব আমার থাকবে , তুই শুধু আমায় আমার ব্লাড লাইন গিফট করিস ।”
এই কথায় তিয়াশার বুকের ভেতর কেমন যেন দোলা লাগল। মুখ একেবারে লাল হয়ে উঠল লজ্জায়। কিন্তু মনের ভেতরে হঠাৎই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে লাগল
__’এই লোকটা কীভাবে জানলো, সে যে এতোক্ষণ ধরে তাদের ভবিষ্যতের ছোট ছোট ফুলের কথা ভাবছিল?’
জায়ন তিয়াশার লাল মুখ দেখে একটু বাঁকা হাসি দিল। চোখে দুষ্টুমির ঝিলিক, ঠোঁটে অদ্ভুত স্নিগ্ধতা। গলায় সেই চিরচেনা ভঙ্গি নিয়ে বলল,
__”খুব ইচ্ছে আমার জানিস বউ , আমার ব্লাড লাইন কে খুব তারাতারি আমাদের মাঝে নিয়ে আসার কিন্তু
তুই এত ছোট যে তোকে সামলাতে আমার দিন চলে যায় ব্লাড লাইন কে কখন সামলাবো ।”
এই বলে জায়ন মহারাণীর দিকে তাকিয়ে আবার ও তিয়াশার উদ্যেশ্যে বলে উঠলো
__” শোন বেইব?”
জায়ন এর বলে যাওয়া কথায় তিয়াশা লজ্জায় কুশান দিয়ে মুখ ঢাকা দিয়েছিল , তবে জায়ন এর এই ডাকাতেই মনে মনে ভাবল এই ডাক কি উপেক্ষা করা যায়? আস্তে আস্তে কুশান সরিয়ে, মাথা নিচু করে লাজুক কণ্ঠে বলে উঠল,
__” হুমম বলো ।”
জায়ন ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি রেখে, মহারাণীকে এক সুন্দর ডেকোরেটেড বাস্কেটে রেখে দিয়ে তারপর হাত বাড়িয়ে তিয়াশার চিবুক আলতো করে ছুঁয়ে চোখে চোখ রেখে বলল,
__” আমার কিন্তু প্রতি দুই বছর অন্তর এক একটা তিয়াশা রোদ চাই , আবারর জায়ন হলেও সমস্যা নেই কিন্তু তিয়াশা রোদ হলে ভালো হয়।”
এই শোনামাত্র তিয়াশার বুকের ভেতর ধাক্কা খেলো। মনে হলো কান থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। লজ্জা, ভয়, বিস্ময় সবকিছু মিলেমিশে যেন বুক ফেটে আসছে। কীভাবে সামলাবে এমন মুহূর্ত? এইসব ভাবনার ঝড় ঘোরাতে তাড়াতাড়ি মহারাণীর দিকে তাকিয়ে কথা ঘুরিয়ে দিয়ে বলল
__” ওর নাম কি ?ওকে কোথা দিয়ে আনলে ? আর ওর
চুলের এই ক্লিপ ড্রেস এগুলো কোথা দিয়ে আনলে এত সুন্দর?”
জায়ন এবার বাস্কেটসহ মহারাণীকে তিয়াশার হাতে তুলে দিল। চোখে ভালোবাসা আর স্নেহের আলো নিয়ে বলল,
__”ইটস ইওর বার্থডে গিফট বেইব,আর ওকে জাপান থেকে ইমপোর্ট করিয়েছি।ওকে দেখা মাত্রই মুখ থেকে একটাই শব্দ বেরিয়েছিল ‘মহারানী’ আর আজকে এই জন্যেই ব্যস্ত ছিলাম জান, সরি তোকে কষ্ট দিয়েছি বেইবি। আর এগুলো বউ এর জন্য শপিং করতে গিয়ে ওর জন্য ও কিনে নিয়েছি ।”
তিয়াশার বুকের ভেতর মুহূর্তেই ভালোবাসার ঢেউ বইতে লাগল। মনে হলো, পৃথিবীর সব রাগ, সব অভিমান, সব অশান্তি যেন কোথাও গলে গিয়ে মিলিয়ে গেল। সে মনে মনে আল্লাহর কাছে কতদিন যে এই দোয়া করেছে যেন তার বাঘের বাচ্চা একদিন ফিরে আসে। আজ তার বুক ভরে উঠছে সেই উপলব্ধিতে, আল্লাহ্ তা’আলা সত্যিই তার দোয়া কবুল করেছেন। তিয়াশার মনে হলো, হয়তো আল্লাহ নিজেই তাকে এই দোয়া শিখিয়েছিলেন, এই মানুষটার জন্যই। তার বুক কেঁপে উঠল শুধু এই চিন্তায় সে যেন এই পুরুষের রোদ হয়ে শুধু এই জন্মে নয়, প্রতিটি জন্মে থেকে কি যেতে পারবে।
হঠাৎ এসব ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে মহারাণীকে দুহাতে আগলে ধরে মায়াভরা চোখে একবার তাকাল। তারপর জায়নের দিকে ফিরে মিষ্টি হাসি দিয়ে নরম গলায় বলে উঠলো,
__” আমাদের মহারানী দ্বিতীয় বেস্ট গিফট আমার লাইফে বর।”
জায়ন হালকা ভঙ্গিতে হাতের কনুই সোফার হেডবোর্ডে ঠেকিয়ে মাথা হেলিয়ে দিল। চোখ ভরা দুষ্টুমি, ঠোঁটে নরম হাসি নিয়ে এক হাত বাড়িয়ে আলতো করে তিয়াশার গাল ছুঁয়ে বলল,
__” আর ফাস্ট গিফ্ট টা কি বেইব? ”
তিয়াশা কথাটা শুনে লাজুক মুচকি হাসি দিয়ে হাত থেকে মহারাণীকে নামিয়ে সাবধানে সেন্টার টেবিলে রেখে দিল। তারপর আস্তে জায়নের দিকে আরেকটু এগিয়ে গিয়ে তার কোলের ওপর বসে পড়ল। এরপর গলা জড়িয়ে ধরে চোখে চোখ রেখে এক মায়াবী দৃষ্টি ছুঁড়ে দিয়ে বলল,
__” এই যে এই আমার শখের পুরুষ আমার লাইফের
সব থেকে বেস্ট গিফট যা আমায় আল্লাহ তা আলা নিজে হাতে দিয়েছে ।”
কিন্তু তিয়াশার এই কথা শুনে জায়নের বুকের ভেতর যেন বজ্রপাত শুরু হয়ে গেল তার শরীর কেঁপে উঠল, মনে হয় বোধগম্য হারিয়ে ফেলবে এক্ষনি বউ ছুঁয়ে দিতেই তার শিরদাঁড়া দিয়ে বিদ্যুতের মতো শিহরন ছড়িয়ে যায়। তিয়াশা তখন শাড়ি পরা, কো*মরটা খানিকটা উন্মু*ক্ত, জায়ন সেই কো*মর শক্ত করে আঁকড়ে ধরতেই তিয়াশাও হঠাৎ কেঁপে উঠল।
জায়নের চোখমুখে নে*শার মতো আগুন ছড়িয়ে পড়ছে কাপা গলায়, ঘাড় থেকে তিয়াশার চুল একপাশে সরাতে সরাতে ফিসফিস করে বলল
__” তুই কি রে জান দেখ তুই কাছে আসতেই কেমন
বেসামাল হয়ে উঠছি । কিন্তু আমায় এই মুহুর্তে যে করেই হোক শান্ত থাকতে হবে।”
না চাইতেও জায়ন চোখ মুখ শক্ত করে বন্ধ করে ফেলল এই মুহুর্তের পরিস্থিতির ভয়ে , বুকের ভেতর নিঃশ্বাসের গতি দ্রুত হয়ে উঠল। হাতের মুঠো আরো শক্ত করে ধরে হাহাকার ভরা গলায় আবারও বলে উঠল,
__” জান প্লীজ নাম আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে ।
বাঁ* এত সুন্দর মোমেন্ট এও কন্ট্রোললেস হয়ে যাচ্ছি ,
জান তাড়াতাড়ি নাম নেমে সিধা উপরে আমাদের রুমে যাবি গিয়ে যে বড় বক্স টা আছে ওটা খুলবি , আর ছোট বক্স যেটা ওটা পরে খুলবি , আজ তোর যত সাজতে ইচ্ছে করে সাজবী আমার জন্য ।”
জায়নের কথা শুনে তিয়াশার ঠোঁ*টে মুচকি মুচকি হাসি ফুটল। মনে মনে সে ভাবল এই লোকটা এত উন্মাদ কেন হয়ে যায় আমি ছুঁয়ে দিলেই?
বুকের ভেতর এক অদ্ভুত গর্ব, এক অদ্ভুত ভালবাসার জন্ম নিল। কিন্তু এর মধ্যেই জায়নের গম্ভীর কণ্ঠ ভেসে এলো কানে,চোখ এখনো বন্ধ, কিন্তু গলায় আগুনের মতো কাঁপুনি,
__”বেইব, পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে না নামলে কিন্ত সব আমার প্লানিং শেষ হয়ে যাবে। আর আমি আমার দ্বিতীয় বাসর এখনই শুরু করে দেব ।
জায়নের কথা শুনে তিয়াশা মুহূর্তেই লজ্জায় লাল হয়ে গেল ,এক সেকেন্ডও বসে থাকতে পারল না। দৌড়ে ছুটে গেল সিঁড়ি বেয়ে উপরে।
জায়ন এর কথা শুনতেই তিয়াশা লজ্জায় আর ১ সেকেন্ড ও বসলো না দৌড়ে উপড়ে চলে গেল। এদিকে
জায়ন এই বুঝ উঠতেই এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে নিজের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে ঝরল বিরক্তি আর ভালবাসার মিশ্র এক হাসিতে মাথা নেড়ে নিজেকেই বলে উঠল,
__” একটা বা* আমি , শা* বউ ছু*লেই যেন কারেন্ট লাগে । পুরুষ নামে হুদাই আমি।”
এদিকে তিয়াশা রুমে আসতেই পেছন ফিরে দরজা বন্ধ করতেই বুকটা যেন ধড়ফড় করতে লাগলো। বারবার শ্বাস ফেলছে সে, মনে হচ্ছে বুকের ভেতর বাতাস আটকে যাচ্ছে,এত দ্রুত বেগে দৌড়ে আসা তার জন্য নয়, আসল কারণ তো সেই মানুষটার ছোঁয়া।
তার বাঘের বাচ্চার ছোঁয়া পেলেই যেন শরী*রের প্রতিটি কোষ কেঁপে ওঠে,নেমে আসে অজানা কাঁপুনি , সেই কাঁপুনির স্পর্শে পে*টের ভেতর প্রজাপতির ঝাঁক ডানা মেলে উড়তে থাকে। মনে হয় এই অনুভূতি তাকে পাগল করে তুলবে।
নিজেকে কোনোমতে সামলে নিতে চায়ছিল ঠিক সেই সময় চোখ পড়লো তাদের বিছানায় রাখা দুটো বক্সে। এক ছোট, এক বড় দুটোই রঙিন গিফট রেপারে মোড়ানো। চোখে কৌতূহল জমতেই ছুটে গেল বড় বাক্সটার দিকে। বাঘের বাচ্চা যখন বলেছে বড়টাই খুলতে, তখন তার আর কিছু বলার নেই যেন সে এখন এক বাধ্য স্ত্রীর মতো সেই কথাই মেনে চলছে।
বক্স খোলার সঙ্গে সঙ্গেই তিয়াশার চোখ ধাঁধিয়ে গেল,ভেতর থেকে উঠে এলো বটল-গ্রীন কালারের স্লিভলেস গাউন। কো*মরজুড়ে অজস্র ঝিকিমিকি স্টোন, যেন অন্ধকারেও আলো জ্বালাতে পারে। একে একে বেরিয়ে এলো জুয়েলারির বক্সগুলো। প্রথমটিতে ঝলমল করা ডায়মন্ডের সেট আর ইয়াররিংস, দ্বিতীয়টিতে চিকচিক করা ব্রেসলেট, আরেকটিতে গ্রীন রঙের হাই হিলস।
প্রতিটি জিনিস যেন তিয়াশার নাম ধরে ডাকছিল, প্রতিটি জিনিস যেন শুধু তার জন্যই তার সখের পুরুষ খুঁব সখ করে বাছাই করে এনেছে,
গাল ভরে ফুটে উঠল এক আবেগের হাসি, ভিজে উঠলো চোখ। বুকের ভেতর হঠাৎ এক অদ্ভুত আলোড়ন,এই মানুষটার ভালোবাসা এত নিখুঁত, এত আন্তরিক যেন আল্লাহ তাকে স্বর্গ থেকে পাঠিয়েছেন শুধু তার হাসির জন্য। চোখের কোণে জল টলমল করছে, কিন্তু ঠোঁটে লেগে আছে প্রশান্তির মিষ্টি হাসি। সব গিফটগুলো যত্ন করে বিছানায় সাজিয়ে রেখে ধীরে ধীরে ফ্রেশ হতে গেল ওয়াশরুমে।
অন্যদিকে জায়ন যার প্রতিটি মুহূর্ত শুধু তিয়াশাকে ঘিরেই বাঁচে। মহারানীকে বাথ দেওয়ার আগে সে নিজে হাতে একটা কেক বানিয়ে ওভেনে থেকে বের করে ঠান্ডা করতে রেখেছিল।সময়ের তাড়াহুড়োর মাঝেও ঠিক ভালোবাসার ছোঁয়ায় মিশিয়ে দিয়েছিল স্তর,কেকটা হাতে নিয়ে ধীর পায়ে উপরে উঠে গেল তাদের বাসার খোলা ব্যালকনিতে,
যেখানে ভালোবাসার এক স্বপ্নলোক তৈরি করে রেখেছে জায়ন। চারপাশে ঝুলছে অসংখ্য ফেয়ারি লাইটস, তাদের আলো যেন অন্ধকার আকাশ ছিঁড়ে ছোট ছোট জোনাকির ঝাঁক হয়ে নেচে বেড়াচ্ছে। রঙিন বেলুনগুলো হাওয়ায় দুলে দুলে হাসছে, যেন এই মুহূর্তের আনন্দে তারাও শরিক হয়েছে।
পাশে নীলচে আলোয় ভেসে থাকা সুইমিং পুলের জলে প্রতিফলিত হচ্ছে আলোর রঙিন ঝিকিমিকি, আর সেই জলের উপর ছড়িয়ে আছে অসংখ্য লাল গোলাপের পাপড়ি। মনে হচ্ছে, যেন আকাশের সমস্ত তারা আজ নেমে এসেছে এই পুলের ভেতর, শুধু তিয়াশার জন্য সাজানো এক অলৌকিক দৃশ্য গড়ে তুলতে।
প্রতিটি আলোর ঝলকানি, প্রতিটি ফুলের সুবাস, প্রতিটি সাজসজ্জা যেন এক সুরে বলছে আজকের রাতটা একান্তই কিটি ক্যাট এর জন্য, তার হাসির জন্য, তার চোখের দীপ্তির জন্য।
জায়ন নিখুঁতভাবে প্রতিটি কোণ ঘুরে ঘুরে আবারও চেক করে নিলো, যেন একটুও ত্রুটি না থাকে। তার বুক ভরা উত্তেজনা, চোখ ভরা আকাঙ্ক্ষা প্রিয় মানুষকে খুশি করার আনন্দে তার ভেতরটা কাঁপছে, ঠিক যেমন প্রথম দেখায় কেঁপেছিল। কেকটাকে যত্ন করে ঢেকে রেখে গভীর শ্বাস নিলো, মনে হলো বুক ভরা সব ভালোবাসা এক নিঃশ্বাসে মিশে যাচ্ছে এই রাতের সাজে। চোখের গভীরে ফুটে উঠলো অদ্ভুত এক দীপ্তি, এক অবর্ণনীয় উল্লাস যেন সে পুরো পৃথিবীকে জয় করেছে, শুধু তার প্রিয়তমার হাসি জেতার জন্য।
এর মধ্যে দুজন লোক এসে আরেকটা কেক ও ডেলিভারি দিয়ে গেছে , যার স্তরে স্তরে সাজানো ছিল
জায়ন এর নিখুঁত ভলোবাসা, তারা চলে যেতেই জায়ন ধীরে, অনেকটা নিশ্চুপ ভঙ্গিতে, পায়ের শব্দও যেন বাতাসে মিশিয়ে দিয়ে, নেমে গেল নিচে গেস্ট রুমে। সেখানে গিয়ে ওয়াশ রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়াল নিজেকে সাজাতে, ঠিক করতে। কারণ আজকের রাত শুধু তার রোদের জন্য, আর সে চায় তার সামনে দাঁড়াতে একেবারে নিখুঁত স্বামী হিসেবে, সেই মানুষ হিসেবে যে সারাজীবন তার হাত ধরে রাখবে।
জায়ন নিজের ভেতরের ঝড়টা ঢাকতে গায়ে চাপালো কালো রঙের দামী স্যুট, যার ভেতরে উজ্জ্বল নীলচে আভা ছড়ানো মিডনাইট ব্লু শার্ট। কব্জিতে দামী রিস্টওয়াচ, যা তার সময়ের থেকেও বেশি মূল্যবান মনে হচ্ছিল। চুলগুলো নিখুঁতভাবে জেল দিয়ে সেট করা, যেন প্রতিটি গোছা তার ব্যক্তিত্বের কঠোরতা আর জেদকে প্রকাশ করছে। চোখে পড়লো সাদা চেঞ্জার, যার আড়ালে লুকানো ছিল অস্থিরতা আর একরাশ ভলোবাসা। শেষবারের মতো প্রিয় সেই বিদেশী পারফিউমের স্প্রে ছড়িয়ে নিল সারা শরীরে, সেই পরিচিত গন্ধ, যা তার উপস্থিতির সাথে মিশে এক অদৃশ্য অথচ গভীর ছাপ রেখে যায় চারপাশে, পায়ে পড়ে নিল সেইন্ট লরেন্ট এর লেদার সুজ, তার উপস্থিতি হিরো দের ও হার মানিয়ে দিতে রাজি ।
রেডি হওয়ার শেষে একটু মুচকি হাসি দিয়ে দরজা খুলে চলে গেল তাদের রুমের সামনে যেখানে প্রায় এক ঘণ্টা যাবত তৈরি হচ্ছিল তার বাচ্চা বউ , দরজায় আলতো নক করে কোমল কণ্ঠে ডাক দিল,
__”জান, রেডি হয়ে গেলে বেরিয়ে আয়…..সময় হয়ে গেছে।”
এদিকে তিয়াশা যেন জায়ন এর ই অপেক্ষা করছিল, জায়ন এর নক করার সঙ্গে সঙ্গেই তিয়াশা দরজা খুলে দিল ,আর দরজা খুলতেই তিয়াশা কে দেখে জায়ন এর দমবন্ধ হয়ে গেল , চোখে ধাঁধিয়ে গেল চোখে যেন স্বর্গ থেকে নেমে আসা কোন অপ্সরী কে দেখছে ,চোখ ভিজে গেল এক অচেনা আলোয় ,হাত টা অজান্তেই চলে গেল বুকের উপর, আর মুখ থেকে বেরিয়ে এল একটাই শব্দ
__” হায় আজ আমি শেষ ।”
জায়নের মুখের এই অচেতন উচ্ছ্বাস শুনে তিয়াশা মিষ্টি হেসে তাকে হাত ধরে ভেতরে টেনে নিল,তারপর একটু লাজুক স্বরে বললো,
__”আমি গাউনের চেইন টা আটকাতে পারছি না ,
তুমি লাগিয়ে দেও । ”
এদিকে তিয়াশাকে এভাবে দেখে চোখের দৃষ্টি সরানো অসম্ভব হয়ে গেল তার কাছে। মনে হচ্ছিল আজ যদি সে স্পর্শ না করে, তবে হয়তো বাঁচতেই পারবে না। ধীরে ধীরে তাকে আয়নার সামনে দাঁড় করাল। পিছন থেকে কোমর জড়িয়ে ধরলো,আয়নায় প্রতিফলিত সেই দৃশ্য একজন রূপকথার রাজপুত্র আর এক স্বর্গীয়
পরীর মিলন। তিয়াশাও যেন জায়ন এর এই রূপ দেখে কেমন যেন গর্বে বলে উঠতে চাইল
__” এই সুন্দর পুরুষ একান্তই আমার ।”
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে জায়ন আর তার বুক ঠেকে আছে তিয়াশার পিঠে , তিয়াশা আজ যেন একেবারেই মানুষী নয়, বরং কোন পরীর দেশে থেকে ছুটে আসা এক রূপকথার চরিত্র।
বটলগ্রীন রঙের স্লিভলেস গাউনটায় তার দেহরেখা যেন অদ্ভুত সৌন্দর্যে বাঁধা পড়েছে, কোমর জুড়ে অজস্র ঝিকিমিকি স্টোন, প্রতিটা আলোয় তারা হয়ে ঝলমল করছে। সামনে ডিপ গলা , পেছনটা খোলা যেন নিষিদ্ধ এক স্বপ্নকেই নগ্ন করে দিল বাস্তবের চোখে।
গলায় ডায়মন্ডের সেট, কানে হালকা নড়াচড়ায় কাঁপা ইয়াররিংস, চোঁখে গাঢ় কাজল , ঠোঁটে ডার্ক মেরুন লিপস্টিক, সবকিছু এত নিখুঁত যে তাকে দেখে শ্বাস নিতে ভুলে যায় মানুষ। আর তার চুল ডিসনি প্রিন্সেসদের মতো সাজানো, নরম বেনি করে সাইডে ফেলে রাখা, যেন অল্প বাতাসেও গলে যাবে তার জাদু।
আর সেই ডাগর ডাগর কাজল পড়া চোখের দিকে তাকাতেই যেন জায়ন এর হৃদস্পন্দন ভারী হয়ে উঠছে ,জায়ন তাকে ধরে এক মুহূর্ত স্থির হয়ে তাকিয়ে রইল। মনে হচ্ছিল এ দৃশ্য কোনদিন শেষ না হোক। তার চোখে শুধু বিস্ময় নয়, উন্মাদনা এক অদ্ভুত পাগলামি জমে উঠছে তিয়াশার রূপে। বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠল অজান্তেই।
এক ফোঁটা হাসি নিয়ে তিয়াশা যখন তাকাল আয়নায় তখন জায়নের মাথায় যেন র*ক্ত চড়ে গেল। মনের গভীর থেকে অকারণে জেগে উঠল এক প্রবল আকাঙ্ক্ষা, এক মায়াবী আসক্তি।সে বুঝল, এই মেয়েটা আর কেবল মেয়ে নয় সে যেন জায়নের নিঃশ্বাসের অংশ, তার সমস্ত বোধকে পাগল করে দেওয়া এক দহন। তার ঠোঁট কেঁপে উঠলো, সেই কাপতে থাকা ঠোঁট নিয়ে জায়ন বলে উঠলো,
__” বউ মা*রিস না আমায় এই ভাবে , কি চাস তুই বলতো এমনিতেই তো পাগল হয়ে আছি আর কত
পাগল করবি।”
জায়ন এর কথায় তিয়াশা মৃদু হাসি দিয়ে বলে উঠল,
__” নিজেই তো দিয়েছো ,নিজের হাতে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে আবার নিজেই অভিযোগ করছো?”
এরপর জায়ন কোনো উত্তর দিল না, শুধু তিয়াশার দিকে ঝুঁকে দুই হাত দিয়ে আলতো করে তিয়াশার গাউনের চেইন টেনে দিল। তার ভারী উষ্ণ নিঃশ্বাস পড়ছিল তিয়াশার কাঁধের গায়ে, যেন শরীর জুড়ে বিদ্যুৎ খেলে যাচ্ছে। চেইন আটকানো শেষ হতেই , তার আঙুল স্প*র্শ করল তিয়াশার উন্মু*ক্ত পিঠ ,এরপর নিজেকে আটকাতে পারলো না দুই বাহুতে জড়িয়ে নিল তিয়াশার কো*মর, বু*কের কাছে টেনে এনে ঘাড়ে ঠোঁ*ট ছুঁইয়ে দিল। জায়ন ভি*জিয়ে দিচ্ছে তিয়াশার পিঠ থেকে ঘাড় পর্যন্ত , পাগল হয়ে উঠছে ,উন্মাদ কণ্ঠে তার ঠোঁ*টের ফাঁ*ক দিয়ে বেরিয়ে এলো
__” যদি জানতাম তুই আমায় এইভাবে দহনের আগুনে পুড়িয়ে দিবি, তবে কোনোদিন এই আগুন বয়ে আনতাম না…”
এদিকে জায়ন এর এই ঠোঁ*টের স্প*র্শ তিয়াশার ঘাড়ে পড়ায় চোখ বন্ধ করে নিল । জায়ন এর হাত তিয়াশার কো*মর থেকে ধীরে ধীরে চলে গেলো তিয়াশার গাউনের গ*লার ফাঁ*ক দিয়ে বু*কের ভেতর , সঙ্গে সঙ্গেই
যেন দুজনেই কেঁপে উঠল , তিয়াশার মুখ থেকে
বেরোলো শুধু একটাই বাক্য ,
__” উমমম…… প্লীজ এখন না, ”
আবারো জায়ন এর উন্মদনা কন্ঠ ভেসে এল পেছন
থেকেই ,
__” পারছি না তো ……”
এবার তিয়াশা নিজেকে একটু সামলে জায়ন এর হাত টা ধরে বসল , তারপর জায়ন এর দিকে ফিরে দেখল
চোখ লাল হয়ে উঠেছে যেন মা*দ*কতার নে*শায় , তিয়াশা জায়ন এর গালে হাত দিয়ে বলে উঠলো,
__” আমি চাই না তোমার দেওয়া সারপ্রাইজ বৃথা যাক, প্লীজ এখন না । ”
জায়ন যেন নেতিয়ে গেল তিয়াশার কথায় , তিয়াশা এবার জায়ন এর হাত টানতে টানতে বাইরে যেতে লাগল , তখন জায়ন কেমন টাল খেয়ে বাচ্চাদের মত বলে উঠল,
__” বউ শুধু একবার , পড়ে সারপ্রাইজ দিয়ে দেবো আবার । এখন আয় না ।”
কিন্তু তিয়াশা কোন উত্তর না দিয়ে মুচকি মুচকি হাসি দিয়ে নিচে যেতে লাগল , তখন জায়ন তিয়াশার হাত টেনে বলল ,
__” বউ নিচে না , উপরেই । তুই দারা আমি মহারানী কে নিয়ে আসি ।”
এই বলে জায়ন নিচে নেমে গেল , এদিকে তিয়াশা হতভম্ব হয়ে উঠল ,মনে মনে বলে উঠলো,
__” উপড়ে আবার কি ?”
এর মধ্যেই জায়ন মহারানী কে নিয়ে উপরে আসতেই তারা খোলা ব্যালকনিতে চলে গেল। তখন তার চোখে ভরে উঠল বিস্ময়ের ঝিলিক। নিচের সাজসজ্জা দেখে যেটুকু মুগ্ধতা এসেছিল, উপরের এই স্বপ্নিল রাজ্য দেখে তা গলে গেল অশ্রুর ধারা হয়ে। মনে হলো, তার প্রিয় মানুষটি যেন সত্যিই তার জন্য রূপকথা গড়ে তুলেছে।
জায়নের ঠোঁট থেকে বেরিয়ে এলো নরম প্রশ্ন,
“Did you like it, babe?”
তিয়াশা তার গলা জড়িয়ে শিশির ভেজা হাসিতে জবাব দিল,
“I loved it, বর…”
এই স্বর, এই দৃষ্টি, এই ছোঁয়া জায়নের বুকের ভেতর আগুন ধরিয়ে দিল। সে তাড়াতাড়ি সরে এসে হেসে বলল,
“বউ, আমার ১২টা না বাজিয়ে, এদিকে ১২ টা বেজে যাবে আগে আয় কেক কাটবি।”
তিয়াশা টেবিলের সামনে যেতেই দেখল দুটো কেক
রাখা একটা থ্রী লেয়ারের ডেকরেটেড কেক ,অন্যদিকে একেবারে সাদাসিধে, ঘরের উষ্ণতা মাখা ,তিয়াশা বুঝতে না পেরে বলে উঠলো,
__” বর এইখানে দুটো কেক কেনো ? ”
জায়ন একটু মৃদু হেসে মাথা চুলকাতে চুলকাতে ওই নরমাল কেক টার দিকে দেখিয়ে বলল,
__” ঐ ঐটা আমি বানিয়েছি ।”
তিয়াশা যেন নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছে না , তার শখের পুরুষ তার জন্মদিনে নিজের হাতে কেক টা পর্যন্ত সখ করে বানিয়েছে যা কেউ কখনো
করে নি । গভীর আবেগের স্রোত বুক ভেসে গেল কৃতজ্ঞতায় তার চোখ গড়িয়ে বেয়ে পড়ল পানি সঙ্গে
সঙ্গে হাউ হাউ করে জায়ন কে জড়িয়ে বলে উঠলো
__” তুমি আমার লাইফের বেস্ট ডিসিশন বর , আই লাভ ইউ, আই লাভ ইউ সো মাচ । ”
জায়ন এর হাত পা কাপছে কিন্তু কি করবে সে বুঝতে পারছে না এদিকে বউ এর মুখে এই শব্দ শুনে কাঁপুনি শুরু হয়ে গেছে এদিকে বউ এর চোখের পানি সে সহ্য
করতে পারছে না । জায়ন ধীরে ধীরে তিয়াশাকে নিজের বুকের থেকে উঠিয়ে বলে উঠল,
__” আই লাভ ইউ টু বেইব, আই লাভ ইউ মোর দ্যান ইউ থট কিটি ।আর একবার ও যদি পানি বের করিস আমি এবার সত্যিই সব শেষ করে দেব এইসব , যেই কারনে তোর চোখে পানি আমি সেই কারন ই সরিয়ে দেব।”
তিয়াশা চোঁখ মুছতে মুছতে মুখ বেকিয়ে বলে উঠলো ,
__”তুমি সব সময় কেন ধমকি দাও বলতো, আমি তো খুশিতে কাদছি ।
জায়ন গম্ভীর স্বরে বাকা হাসি দিয়ে জবাব ছুড়ে দিল,
__” কোন কারনেই যেন কাঁদতে না দেখি , কারন চোখের পানি স্টক করে রাখ , এরপরেই কাদাবো তো।”
তিয়াশা জায়ন এর কথার মানে বুঝে, একটু মুখ নিচু করেই লজ্জা নিয়ে বলল,
__” অসভ্য কিসের মধ্যে কি ,পান্তা ভাতে ঘি যা তা?”
১২ টা বাজতেই জায়ন পেছন থেকে তিয়াশার কোমড় জড়িয়ে বলে উঠলো,
__” হ্যাপী বার্থডে মাই লাইফ , হ্যাপী বার্থডে মাই কিটি ক্যাট, হ্যাপী বার্থডে বেইব ।”
এই বলেই পেছন থেকেই গালে চুমু বসিয়ে দিল। সঙ্গে সঙ্গে আকাশে ফায়ার ক্রাকার ফেটে লেখা উঠলো
‘হ্যাপী বার্থডে রোদ’
তিয়াশা সেদিকে তাকাতেই মুগ্ধ হয়ে উঠল মুচকি হাসি দিয়ে খুশিতে তাকাতেই বলে উঠলো,
__” ধন্যবাদ আমার ব্যাকুল প্রণয় এর পুরুষ ।”
তিয়াশার এই কথা শুনতেই জায়ন আবারো তিয়াশার কাঁধে ঠোঁ*ট ঘ*ষতে ঘ*ষতে বলল ,
__” তারাতারি কেক কাট, অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে ।”
জায়ন এর এই উন্মাদনা দেখে তিয়াশা একটু চোখ পাকিয়েই বলে উঠল,
__” এত কেন উন্মাদ তুমি , আর আমি তোমার বানানো
কেক টায় ছুরি বসাতে চাই না । তাই ওই বাইরের কেক টাই কাটছি আর তোমার কেকটা আমি যত্নে রেখে দেবো ফ্রিজে এই নিয়ে কোন যেন কথা না হয়।”
জায়ন তিয়াশার দিকে নেশালো দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলো,
__” যা করবি তাড়াতাড়ী কর , তারপর নিচে গিয়ে ছোট বক্স টা খুলে যা দেখবি তাই পরে উপড়ে আসবি।”
তিয়াশা বুঝতে পারছে না তার এই পাগল কি বলছে ?
তিয়াশা কথা না বাড়িয়ে ক্যান্ডেল নিভিয়ে কেক কেটে জায়ন কে খাইয়ে দিল , জায়ন ও এক টুকরো কেক তিয়াশা কে খাইয়ে দিল। মহারানী ও মিটমিট করে এই জোড়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
এদিকে একটু পর তিয়াশা নিচে গিয়ে ফ্রিজে জায়ন এর বানানো কেক টা রেখে তাদের রুমে গিয়ে ছোট বক্স টা খুলতেই চোখ উঠে গেল চরক গাছে । জিনিস
টা দেখতেই তিয়াশা বিড়বিড় করে বলে উঠল,
__” অসভ্য, একদম অসভ্য লোক এই জিনিস কিনল
কি করে ?”
এদিকে জায়ন অস্থির হয়ে অপেক্ষা করে যাচ্ছে , এদিক ওদিক পায়চারি করছে , ব্যাকুল হয়ে উঠেছে শরীর, মনের চঞ্চলতা থামাতে পারছে না। ঠিককিছুক্ষন পর বেলকনির দরজার কাছে ফিয়ারী লাইটের আলোয় দেখতে পেল তিয়াশাকে গাঢ় নীল বি*কি*নির ফিতেগুলো সূক্ষ্মভাবে তার দেহের সৌন্দর্য আঁকড়ে ধরে আছে, আর উন্মু*ক্ত হয়ে আছে তার বুক , ওপরে হালকা ট্রান্সপারেন্ট নীল কভার আপ, যেটা বাতাসে উড়ে গিয়ে তার সৌন্দর্যকে আরও উন্মোচন করে দিচ্ছে। কোমরে বাঁধা স্লিটেড স্কার্টের ফাঁ*ক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে তার মোলা*য়েম ত্বক।আর তার গলায় ঝরে পড়া , চুল যেন রাতের অন্ধকার নদীর ঢেউ। চোখদুটো অদ্ভুত এক ঝিলিক নিয়ে ঝিকমিক করছে, ঠোঁটে অচেতন হাসির রেশ, যেন সে নিজেও জানে না কীভাবে তার সৌন্দর্য চারপাশের আলোকে গ্রাস করে । তিয়াশা লজ্জায় তাকাতে পারছে না ।
এদিকে তাকে দেখতেই জায়নের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গেল , গলার আডাম আপেলস ওঠা নামা করতে লাগল , বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে উঠলো জায়ন এর কপালে ,
বুক কাপছে ,গলায় যেন শব্দ আটকে গেল,
নিঃশ্বাস ভারি হয়ে উঠলো, জায়নের চোখে ভেসে উঠছিল শুধু তিয়াশার দেহরেখার নে*শা*মা*খা ছায়া। বু*ক থেকে পে*টে, পে*ট থেকে কো*মরের নীচে প্রতিটা বাঁক। কান লাল হতে লাগল , হাতের তালু ঘামে ভিজে উঠছে , মুখ থেকে শুধু একটাই বাক্য বের হলো,
__ ” এবার পুরোপুরি শেষ আমি।”
জায়ন এর শরীর এতই গরম হয়ে উঠেছে যে পরনের সুট এর ব্লেজার টা খুলে ছুড়ে ফেলে দিল , শার্ট এর উপরের বোতাম দুটো খুলে দিল ।
এদিকে তিয়াশা নিচের দিকে তাকিয়ে কানের পাশে চুল গুজতে গুজতে বলে উঠল,
__” এই সুইমিং ড্রেস টা…..”
বলতে পারল না তার আগেই জায়ন এক মুহুর্ত দেরি না করে তিয়াশা কে টেনে নিল নিজের বুকে , তারপর এক ঝটকায় তিয়াশার উন্মুক্ত কো*মড় জড়িয়ে তাকে ঘুরিয়ে ঘা*ড়ে পিঠে আবার উন্মা*দের মত চুম্ব*ন দিতে লাগল , যেন পৃথিবীর আর কিছুই নেই, শুধু ওরা দুজন।
পাগলের মতো বারবার ঠোঁ*ট ছুঁয়ে দিল ঘাড়ে, পিঠে, কাঁধে প্রতিটা ছোঁয়া যেন শি*হ*রণে ভরিয়ে দিচ্ছে তিয়াশাকে, যার কারনে তিয়াশা পাগল হয়ে উঠছে , চোঁখ বন্ধ হয়ে আসছে তিয়াশার মুখ থেকে শুধু বার বার একটি আওয়াজ বেরোচ্ছে,
__” উমমমম….”
জায়নের নিঃশ্বাস গরম হয়ে তিয়াশার ঘাড়ের কাছে গিয়ে আটকে যাচ্ছে , বারবার গরম নিঃশ্বাস ফেলে আরো পাগল করছে তিয়াশা কে জায়ন এর কণ্ঠ কর্কশ, গভীর, উ*ত্তেজনা*য় ভরা,
__”তোর প্রতিটা বাঁ*ক আমার চোখে আগুন ধরাচ্ছে বেইব ,আমি তোকে ছাড়া বাঁচতে পারব না পাগল হয়ে যাব। তোর শ*রী*রটা আমার হাতে বন্দি, আর আমি প্রতিটা ইঞ্চি ছুঁয়ে ছুঁয়ে তোর মধ্যে আমার নাম লিখে দিতে চাই।”
এদিকে এই বলেই জায়ন এর হাতের খেলা উ*দর
থেকে শুরু করে তিয়াশার উন্মুক্ত আধা বু*কে ছড়িয়ে
যাচ্ছে , জায়ন নিজেকে না সামলাতে পেরে পাগল হয়ে ব্যথা মেশানো এক কা*মড় বসাল তিয়াশার ঘাড়ে অথচ সেই ব্যথাতেই যেন এক অদ্ভুত সুখ ছড়িয়ে দিচ্ছে তার ভেতর ,তিয়াশার চোখ বন্ধ, চুলের ফাঁ*ক দিয়ে আঙুল গেঁথে দিল জায়নের মাথায়।
এর মধ্যেই জায়ন এক ঝটকায় তিয়াশা কে কোলে তুলে ওই কেকের টেবিলে রাখা সব কিছু এক হাত দিয়ে ফেলে দিতেই তিয়াশাকে বসিয়ে নিজের ঠোঁ*ট বসিয়ে দিল তিয়াশার ঠোঁ*টে , একবার নিচের ঠোঁ*ট একবার উপরের ঠো*ট যেন লু*ভে নিয়ে ক্ষু*ধার্ত তৃ*ষ্ণা মেটাতে চাইছে, চু*ম্বনের মাঝেই জায়ন নিজের এক পা গু*জে দিল তিয়াশার দুই পা*য়ের মাঝে।
যার কারনে তিয়াশার শরী*র কেঁপে উঠে কান লাল হয়ে যাচ্ছে , জায়ন নিজের হাতের খেলা চালিয়ে দিতে লাগল তিয়াশার উন্মু*ক্ত উরুর অভ্যন্তরীতে , যার ফলে আবারো তিয়াশা জায়ন এর চুল খামচে ধরলো , কা*ম*নার নে*শায় পাগল হয়ে যাচ্ছে দুজনেই , জায়ন নিজের চোখের চশমা টা সাইডে খুলে এক ঝটকায় শুইয়ে দিল তিয়াশা কে ,পাশেই সোফায় রয়েছে মহারানী। তিয়াশা সেদিকে নজর দিতেই কাপা কাপা কন্ঠে বলে উঠলো,
__” ম মহারানী দে দে দেখছে তো ।”
জায়ন শুধু একটাই কথা বলল ,
__” দেখুক ।”
এরপর কেকের ক্রিম আঙুলে করে তুলে দিল তার ত্ব*কে শীতল স্প*র্শে কেঁপে উঠল তিয়াশা, তিয়াশা
এক আলাদা শি*হ*রন অনুভব করছে কিন্তু না বুঝেই
বলে উঠল ,
__” কি কি কি করছো? ”
জায়ন নে*শালো দৃষ্টিতে তিয়াশার দিকে তাকিয়ে ওর ঠোঁ*টে নিজের তর্জনী আঙুল ছুঁইয়ে বলল
___” শ শ শ , ঝাল খাইয়ে ছিলিস এখন তোর শরী*রের
মিষ্ট*তা ভো*গ করব ।”
তিয়াশা এই কথা শুনেই কেঁপে উঠলো এই লোক এখনো ভোলেনি এই কথা । এদিকে তিয়াশার পায়ের
থেকে শুরু করে সারা শরী*র কেকের ক্রিম লাগিয়ে শরী*রের সব মিষ্টতা ভো*গ করে নিচ্ছে জায়ন নিজের ঠোঁ*ট দিয়ে
জার কারনে তিয়াশা পাগল হয়ে যাচ্ছে কা*ম*নার জোয়ারে।
__” উমমম প্লীজ আ আর না আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি তোমার ছোঁ**য়ায় ।”
জায়ন তিয়াশার গলার কাছে কেকের ক্রিম লাগিয়ে আবারো তার ঠোঁ*ট দিয়ে ক্রিম চে*টে নিজের হাস্কি কন্ঠে বলে উঠলো ,
__” আজকে তোকে দেখাবো আমিও ঠিক কতটা পাগল করতে পারি।”
এই বলেই জায়ন নিজের হাত থেকে ঘড়িটা খুলে ছুড়ে
মারল , ছিঁড়ে ফেলল নিজের শার্ট এর বোতাম , এখন উন্মু*ক্ত শরী*রে শুধু ট্রাউ*জারে দাড়ানো জায়ন।
তারপর তিয়াশার দিকে ঝুঁকে নেশা*র কন্ঠে বলে উঠলো ,
__” ডিড ইউ লাইক ইউর বার্থডে সারপ্রাইজ বেইব?”
তিয়াশা একটু মৃদু হেসে বলল উঠল ,
__” অনেক পছন্দ হয়েছে। ”
জায়ন বাকা হাসি দিয়ে বলে উঠল,
__” ওকে দেন গিভ মি মাই রিওয়ার্ড।”
তিয়াশা বুঝে উঠতে পারছে না উনিএই মুহূর্তে হঠাৎ
এই কথা কেন বলছে? এখন এই মুহূর্তে আমার রিওয়ার্ড কোথা দিয়ে আসছে ? তিয়াশা আমতা আমতা করে বলল,
__” আমি আবার এখন কি রিওয়ার্ড দেব ?তোমার কাছে তো সবই আছে।”
জায়ন তিয়াশার কোমড়ে হাত দিয়ে স্পর্শ করতে করতে বলল ,
__” বেইব ওপেন মাই বে*ল্ট এন্ড সিট ফ্র*ন্ট অফ মা*ই নি*স।”
জায়ন হাত জড়িয়ে আরও কাছে টেনে নিল, নেশায় ভরা কণ্ঠে ফিসফিস করে বলল,
__”তুই ই আমার সবচেয়ে বড় রিওয়ার্ড, বেব।,”
তিয়াশা হতবম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো , কি বলছে তার বাঘের বাচ্চা কিছুই বুঝতে পারছে না, তাই কাপা কাপা গলায় বলে উঠলো,
__” মা মানে?”
জায়ন এক ঝটকায় তিয়াশাকে টেবিল থেকে উঠিয়ে তার হাঁটুর সামনে বসিয়ে দিল , তারপর তিয়াশার চুল ধরে হাসকি সুরে নেশার দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলো,
__” ও*পেন মাই বে*ল্ট , আই উইল টীচ ইউ ,হাউ টু ফিল ইওর হাসবেন্ড হেভেনলি ।”
তিয়াশা কিছু বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে ,?কিন্তু কোথায় যেন ভয় পাচ্ছে, শরী*র ভেতরে ভেতরে কা*পছে । এই দেখে জায়ন আবার গম্ভির কর্কশ স্বরে বলে উঠলো,
__” বেইব জাষ্ট ওপেন মাই বে*ল্ট ফাস্ট ,আই ওয়ান্ট
টু ফিল মাই হে*ভেন । ”
তিয়াশা ভয়ে তাড়াতাড়ী জায়ন এর ট্রাউ*জার এর বে*ল্ট
খুলে দিল , এরপর জায়ন এক ঝটকায় তিয়াশাকে নিজের কাছে টেনে নিল,
এরপর শুধু সোনা গেল তিয়াশার বারবার নিষেধ যুক্ত কন্ঠস্বর,
___” না না প্লীজ ,”
___” প্লীজ না আমি পারবো না।”
কিন্তু জায়ন এর গম্ভির উন্মা*দ মাখা কণ্ঠে ভেসে আসলো একটাই শব্দ,
__” শাট আপ বেইব, জাস্ট ডু ইট”
তোমার ছোঁয়ায় আসক্ত আমি পর্ব ৫৯
কিছুক্ষন এই মানা না মানার খেলার পর
শোনা গেল কেবল নিঃশ্বাসের ঝড়, দে*হের উ**ত্তাপ আর কা**মনার শিহ**রণে ভরে উঠল চারপাশ।
সোনা যাচ্ছে তিয়াশার ভারী কান্না ভেজা নিশ্বাস আর জায়ন এর গো*ঙানি , প্রায় ৫,৬ মিনিট পর জায়ন তিয়াশাকে উঠিয়ে সুইমিং পুলের ভেতরে চলে গেল , যেখানে একটা বাস্কেট এ ভাসছিল দুই গ্লাস জুইস, জায়ন দুই গ্লাস জুইস ই ঢেলে দিল তিয়াশার গা*য়ে ।
