সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৪

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৪
neelarahman

বাবার সাথে কথা শেষ করে সাদা হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে খাওয়ার জন্য আসলো যদিও সবার খাওয়া শেষ কিন্তু সবাই আগে থেকে ড্রয়িং রুমে ছিল নুরও গেল না নুরু চুপচাপ ড্রয়িং রুমে বসে রইল।
রিমা সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে উপরে চলে গেল ওর প্রজেক্টে কিছু কাজ আছে সেটা শেষ করতে হবে।
সাইমন মনে মনে প্ল্যান করতে তুই প্রোজেক্টের কাজ শেষ কর কাজ শেষ হলে আমি তোকে ধরছি ।তুই অনেক বার বেড়েছিস আজকে এটা কমাতে হবে। ফোন দিলে কথা বলে না সামনে গেল কথা বলে না ঠিকমত কি পেয়েছে মেয়েটা সাইমনের কি কোন দাম নেই আজকে হাড়ে হাড়ে টের পাবে সাইমন কতদামি।

সাদাফ টেবিলে বসে খাচ্ছে পাশে বসে আছে নওরিন আফরোজ ।সামিহা বেগম রান্নাঘরে সবকিছু গুছিয়ে রাখছে ।নুর এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করছে আর চোখে সাদাফকে কিন্তু সাদাফ কোন পাত্তাই দিচ্ছেন না আজকে।
নুরের ভীষণ মন খারাপ করছে ।এমন করছে কেন সাদাফ ভাই?না হলে রাগের বসে একটু আচ*ড়ি কে*টেছে কি এমন হয়ে গিয়েছে ?এই বড় দেহটা নিয়ে ছোট্ট নূরের একটু আঁচ*ড়কে সহ্য করতে পারে না? নীলা রহমান
বুকে এক পাহাড় সমান অভিমান জড়ো হতে থাকলো নূরের।ঠিক এমন সময় ডাক এল নওরিন আফরোজ এর ডেকে বলে ,”নূর একটু এদিক আয় তো মা ।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নুর যেন এই ডাকের অপেক্ষায ছিল সাথে সাথে ধূপদাপ পা ফেলে টেবিলের সামনে এসে পড়ল।
এসে বললো,”বড় আম্মু ডেকেছো? কিছু বলবে ?
নওরিন আফরোজ বলল ,”হ্যাঁ এই দিকে আয় একটু। রান্নাঘর থেকে গিয়ে একটু মাং*সের তরকারিটা নিয়ে আয় গরম করে রেখেছি।”
নূর সাথে সাথে দৌড়ে গেল রান্নাঘরে ।সামিহা বেগম তরকারি বেড়ে দিতেই নুর মাং*সের বাটি নিয়ে এসে টেবিলে রাখল ।
নওরিন আফরোজ বললো,”একটু বেড়ে দে তো মা।ওতো আবার একা একা বেড়ে খায় না।”
নূর মনে মনে খুশি হলো ।আজ জীবনে প্রথম সাদাফ কে নিজের হাতে বেড়ে খাওয়াবে নুর।ভিতরে কেমন যেন একটা খুশি খুশি সুখ সুখ অনুভূতি হতে লাগলো নুরের।

সাদাফ চুপচাপ খাচ্ছে মাথা তুলে তাকাচ্ছে না ।কিন্তু সাদাফ মনে মনে খুশি নূর আজকে ওকে প্রথমবার খাবার বেড়ে দেবে ওর পাশে দাঁড়িয়ে থাকবে ।সাদাফের ও খুব ভালো লাগছে কিন্তু প্রকাশ করছে না।
নওরিন আফরোজ বলল ,”সব টুকরো কিন্তু দিস না ও কিন্তু বেছে বেছে খায় ।জানিস তো কেমন মাং*স খায় ?”
নুর সাথে সাথে বললো ,”হ্যাঁ জানি হাড় সহ মাং*সগুলো খায় আমি দেখেছি।”
নূর বেছে বেছে দুই পিস হাড় সহ মাংস তুলে দিল সাদাফের প্লেটে ।তারপর সাদাফ পানির গ্লাস খালি দেখে সাথে সাথে পানির জগ থেকে পানি ঢেলে দিল।
দিয়ে সাদাফের পিছনে দাঁড়িয়ে রইলো গেল না ।নওরিন আফরোজ বলল ,”কিরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন ?চেয়ারে বস ।”

নুর বলল ,”না না উনার যদি আরো কিছু লাগে সেজন্য দাঁড়িয়ে আছি।”
“উনার” নূরের মুখ থেকে এই কথাটি শুনেই সাথে সাথে সাদাফের খাবার মনে হয় গলায় আটকে গেল ।কাশি উঠে ।
গেল সাথে সাথে নুর পানির গ্লাসটি এগিয়ে দিল সাদাফের দিকে ।সাদাফ নুরের দিকে এক পলক তাকিয়ে ডক ডক করে পানি গুলো গিলে ফেলল।
এদিকে নওরিন আফরোজ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল নূরের দিকে ।এতদিন ভাইয়া বলে ডেকেছে আজ হঠাৎ কি হল উনার কেন বলল ?বিষয়টা খটকা লাগলো নওরিন আফরোজ এর।
রাত বারোটা ।বারোটা বাজার অপেক্ষায় ছিল সাইমন ।এতক্ষণে রিমার প্রজেক্ট এর কাজ শেষ ।সায়মন ধীরে ধীরে নিজের রুম থেকে বের হয়ে এগিয়ে গেল রুমের দিকে রুমে দরজা চাপানো ছিল টেবিলে বসে কিছু একটা আঁকাউকি করছিল রিমা।

সাইমন রুমে ঢুকেই দরজা লাগিয়ে দিল সাথে সাথে ।পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলো সাইমনকে দরজা লাগাচ্ছে ।রিমা উঠে এসে বলে ,”দরজা লাগালি কেন?”
সীয়মন বলল চুপ এত জোরে কথা বলিস কেন আর তুই এত বে*য়াদব হচ্ছিস কেন দিন আমাকে তুই করে বলিস কেন?
শোন একটা চু*মু থুক্কু দুইটা চু*মু দিয়ে যদি তুই তুমি থেকে তুইতে নেমে আসিস তাহলে এই তুই থেকে আপনি করার জন্য প্রয়োজনে চারটা চু*মু দেবো আমি।”
রিমা রাগে ফুঁসছে।মুখটা খুলেই বাজে কথা বলছে ছেলেটা ।বলল ,”তুই কি এখন বের হবি রুম থেকে নাকি আমি হাতে যা আছে তাই তো মাথার মধ্যে ফিকে মা*রবো?”

সাইমনেরও মাথা হঠাৎ গরম হয়ে গেল ।ধুপ ধাপ পা ফেলে টেবিলের সামনে এসে রিমার সামনে দাঁড়িয়ে রিমাকে পাশ কাটিয়ে দুই হাত দিয়ে টেবিলের উপর ভর দিয়ে দাড়ালো।
হঠাৎ এত কাছে চলে আশায় সায়মন রিমা ভয় পেয়ে গেল ।একটু ঝুঁকে পিছনের দিকে টেবিলের উপরে পড়ল রিমা।
সাইমন ঘনঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে খুব কাছে চলে এসেছে রিমার ।সায়মনের ঘনঘন উ*ত্তপ্ত নিঃশ্বাস রিমা যেন দ*গ্ধ হয়ে যাচ্ছে ।মুখ ঘুরিয়ে নিলো রিমা।

“কেন বারবার রা*গিয়ে দিস আমাকে কি প্রমাণ করতে চাইছিস?”জানতে চাইলে সাইমন ।
রিমা অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে রেখে বলল ,”আমার ঘরে যখন তখন কেন চলে আসো? জানো না একটা মেয়ের রুমে যখন তখন আসতে হয় না ?আমি যেকোনো সময় যে কোন অবস্থায় থাকতে পারি কেন আসো?”
সাইমন কিছুক্ষণ রিমার দিকে অপলক চেয়ে রইল ।তারপর রিমার মুখটা নিজের হাতের আঙ্গুল দিয়ে একটু ঘুরিয়ে নিজের রিমার চোখে চোখ রেখে বলল ,”জানিনা কেন আসি কিন্তু এটা জানি আসতেই হত না হলে যে আর চলছে না। আগেও তো আসতাম যখন তখন আসতাম তখন তো সমস্যা হয়নি এখন কি সমস্যা?”
“তখনকার কথা আর এখনকার কথা এক নয় ।এখন সিচুয়েশন চেঞ্জ হয়ে গেছে ।”আমতা আমতা করে বলল রিমা। লেখিকা নীলা রহমান।

সাইমন রিমার চোখে চোখ রেখে ঘোর লাগা কন্ঠে বলল ,”তাই সিচুয়েশন চেঞ্জ হয়ে গেছে ?শুধু তো দুটো চু*মু খেয়েছি ।চু*মুতে সিচুয়েশন চেঞ্জ তাহলে আরেকটা খাই সিচুয়েশন আরো একটু ই*ন্টেন্স করি।”
রিমা চোখ বন্ধ করে ফেললো সায়মনের কথায়।
নুর ধীরে ধীরে এক পা দু পা করে বিছানার কাছে এসে দাঁড়িয়ে ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে দিল সাদাফের টি-শার্টের গলার কাছটায়। টি-শার্টের গলা একটু টেনে ধরে উঁকি দিয়ে দেখতে লাগলো কোথায় কোথায় আ*চর কে*টেছিল নুর নিজের নখ দিয়ে।

হঠাৎ সাদাফ নুরের হাত চে*পে ধরলো বুকের সাথে।
তারপর কিছুক্ষণ নূরের দিকে তাকিয়ে থেকে একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলল ।ফেলে নূরকে হ্যাচকা টানে বিছানায় ফেলে নূরের উপরে ঝুঁকে এসে নুরে দুই হাত বিছানায় চে*পে ধরে বলল ,”এখন এটার প্রতি*শোধ নেব ।বলেছিলাম না হিসাবটা তোলা রইল সুদ সহ ফেরত দিবো।”
নুর ভয় পেয়ে বললো,”তাহলে কি আপনি নখ দিয়ে আমাকে আঁ*চড় কা*টবেন?”

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৩

সাদাফ: না।আমার নখ নেই।
নুর খুশি হলো।
সাদাফ: কিন্ত দাঁত আছে।
নুর: মানে??
সাদাফ:😘😘😘😘
এত মানে বুঝতে হবে না ।বলেই সাদাফ সাথে সাথে মুখ গুঁজে দিল নুরের গলায়।

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৫

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here