প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৩৮
অনন্যা
-‘তুমি আজ এখানেই থাকো না, বাবা…
সাখাওয়াত আলম হাসলেন।মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে রেখেই বললেন
-‘তুমি বলেছো এতেই বাবা খুশি।
কুহু মাথা তুললো।
-‘মেয়ের বিয়েতে থাকবে না?
-‘থাকবো তো মা…আগামীকাল আবার আসবো।
-‘হলুদ লাগাবে না আমাকে তুমি?
সাখাওয়াত আলম হেসে বললেন
-‘তুমি চাও আমি হলুদ লাগাই তোমাকে?
কুহু উপর নিচ মাথা নাড়ালো।সাখাওয়াত আলম কি একটা ভাবলেন।
হারুন রহমান মিউজিকের তালে তালে শরীর দুলিয়ে নাচছিলেন।মূলত আনোয়ারা বেগমকে দেখিয়ে দেখিয়ে নাচছিলেন ভদ্রলোক।আনোয়ারা বেগম ড্রয়িংরুমে অতিথিদের আপ্যায়নে ব্যস্ত ছিলেন।হারুন রহমানের দিকে নজর আসছিল তাও।ভদ্রলোক তো সেই মুড নিয়ে শরীর দুলাচ্ছে।গান চলছিল..”Shaka laka boom boom”।ভদ্রলোক এই লাইনটা আসলেই পেছন দুলিয়ে দেখাচ্ছিলেন আনোয়ারা বেগমকে।আনোয়ারা বেগম পারছিলেন না উঠে এসে একটা লাথি দিতে।অতিথিদের অনেকে হারুন রহমানকে খেয়াল করলেন।একজন বললেন
-‘আপনাকে দেখিয়ে নাচছে বলে মনে হচ্ছে।আপনার পরিচিত নাকি?
আনোয়ারা বেগম বড্ড বিরক্ত হলেন মনে মনে।কিন্তু কিছু তো বলাই লাগবে.. তাই তিনি বললেন
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-‘ভ’ভাই..আমার ছোট ভাই।বড্ড ফাজিল।
-‘হ্যাঁ সে দেখেই বুঝা যাচ্ছে হাহা হাহা…
সবাই হাসলেন এক চোট।হারুন রহমান এখনো নেচে চলেছেন।হঠাৎ হারুন রহমানকে সাখাওয়াত আলম ডাকলেন,
-‘হারুন!
হারুন রহমান নাচ থামিয়ে সোজা হলেন।একটু নিজেকে ঠিকঠাক করে একগাল হেসে ভেতরে প্রবেশ করলেন।
-‘জ্বী স্যার!
সাখাওয়াত আলম তাকালেন তার দিকে।এরপর বললেন
-‘হলুদ নিয়ে আসো…
-‘এখানে নয়,..
সাখাওয়াত আলম কপাল কুচকালেন মেয়ের কথায়।
-‘তাহলে?
কুহু তার হাতটা নিজের হাতের মুঠোতে নিয়ে বললো
-‘স্টেজে…সবার সামনে।
সাখাওয়াত আলম অবাক চোখে মেয়েকে দেখছেন।এরপর হেসে ফেললেন।মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন
-‘আমার রাজকন্যা যা বলবে তাই হবে।
কুহু দাঁত বের করে হাসলো।সাখাওয়াত আলমও হাসলেন।এরপর বললেন
-‘কেঁদে চেহারার কি অবস্থা করলে বলোতো! ইশ!
সাখাওয়াত আলম রোমাল বের করে মেয়ের চোখের পানি আলতো করে মুছে দিতে লাগলেন।হারুন রহমান এখনো গানের তালে হালকা করে শরীর দোলাচ্ছেন।কুহু হঠাৎ’ই তার দিকে তাকালো।হারুন রহমান খানিকটা লজ্জায় পড়ে গেলেন।কুহু বললো
-‘আরে লজ্জা পাচ্ছেন কেন? ভালো করে নাচুন…আসুন নাচতে নাচতে যাই…
কুহু হঠাৎ দাঁড়িয়ে হাত ঘুরিয়ে নাচতে লাগলো।হারুন রহমানের হাত ধরে নাচতে নাচতে বের হলো ঘর থেকে।হারুন রহমান তো সেই খুশি।ব্যস্ততার কারণে খুব একটা অনুষ্ঠান এটেন্ড করতে পারে না।আজকে কত বছর এমন এক হলুদের প্রোগ্রামে এলো তার মনেও নেই।তাই মনে রং লেগে গেছে আজ ভদ্রলোকের।হলরুমে বসে থাকা অতিথিরাও দাঁড়িয়ে গেল কনের নাচ দেখে।আনোয়ারা বেগম হাসতে চেয়েও পারলেন না।নাচবি ভালো কথা এই লোকের হাত ধরে নাচার কি দরকার! হারুন রহমান দাঁত কেলিয়ে নাচছেন। একজন আবার বলে উঠলো
-‘কুহুর তো আপনার ভাইয়ের সাথে ভালো মিল..
আনোয়ারা বেগম জোরপূর্বক হাসলেন।সবাই হাত তালি দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে।কুহু চলে গেল নাচতে নাচতে।সাখাওয়াত আলম শুধু হাসছেন।
-‘লেডিস এন্ড জেন্টেলম্যান…প্লিজ অ্যানেটশন..
রাহুলের কথা শুনে সবাই স্টেজের দিকে তাকালো।সে বলে উঠলো
-‘আপনাদের উপস্থিতিতে সত্যিই খুব খুশি হয়েছি আমরা।আপনা..
হঠাৎ আলো নিভে গেল।অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় হৈচৈ পড়ে গেল।রাহুল বিরক্ত হলো বড্ড।কথাগুলো বলতেই পারলো না সে।হঠাৎ এমন হলো কেন?রাহুল রেগে স্টেজ থেকে নেমে গেল।হঠাৎ’ই মিউজিক বেজে উঠলো।সবাই থেমে গেল।রাহুলকে ধাক্কা দিয়ে পরপর কতগুলো ছেলে উঠে গেল স্টেজে।বেচারা ধাক্কা সামলাতে না পেরে নিচে পড়ে যায়।তার শরীরে পা দিয়েই আরোকিছু ছেলে উঠে গেল।রাহুল আর্তনাদ করে উঠলো।শেষে মনে হলো কেউ ইচ্ছে করেই তার হাতে জোরে একটা লাথি মারলো।রাহুল রেগে গেল।হঠাৎ তার মুখের উপর কিছু পড়লো।না কেউ ইচ্ছে করে ফেললো।কি বিশ্রি গন্ধ! রাহুলের নাকের উপর পড়ে তা চারদিকে ছড়িয়ে গেছে।রাহুল ওয়াক করে উঠলো
স্টেজের মাঝে লাইট ফোকাস করা হয়েছে।নিলচে আলোয় আহনাফের চেহারা ফুটে উঠলো।পড়ণে কালো শার্ট আর সাদা লুঙ্গি। বরকে লুঙ্গিতে দেখে সবাই অবাক।তবে গান শুনে ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন অনেকে।
Moonchon ko thoda round ghumake
Anna ke jaise chasma laga ke
Coconut mein Lassi mila ke
Aa jao saare mood banake
আলো জ্বলে উঠলো। সবাই হোওওও বলে চেঁচিয়ে উঠলো।আহনাফ সানগ্লাস পড়েছে। সাথে আরো কিছু ছেলে রয়েছে।তাদের পড়ণে সাদা শার্ট আর কালো লুঙ্গি। এর মধ্যে নজর কাড়লেন আহান শাহরিয়ার।আহান শাহরিয়ারও আছেন স্টেজে।ছেলের বিয়েতে ভদ্রলোক নিজেও নাচছেন।সবাই তা দেখে আরো চমকেছে।হাত তালি দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে ওদের।অনেকে বসে বসেই নাচছেন।
Moonchon ko thoda round ghumake
Anna ke jaise chasma laga ke
Coconut mein Lassi mila ke
Aa jao saare mood banake
All the Rajni fans..
Don’t miss the chance..
All the Rajni fans..
Don’t miss the chance..
Lungi dance Lungi dance
Lungi dance Lungi dance
আহনাফ লুঙ্গি অল্প উঠিয়ে নাচের স্টেপ করছে।বাকিরা তালে তাল মিলিয়ে নাচছে।সবাই চেঁচিয়ে উঠলো।এদিকে রাফি ভিডিও করে কুহুকে পাঠিয়ে দিল।এরপর নিজেও স্টেজে উঠে নাচতে লাগলো।
এদিকে রাহুল দৌঁড়াচ্ছে।বমি করে অবস্থা খারাপ তার।কিন্তু কারোর সেদিকে হুশ নেই।রাহুল এক হাত দিয়ে মুখের উপর লেগে থাকা জিনিসটা ধরলো।যা ভেবেছিল তাই…গোবর! রাহুল উঠেই এক দৌঁড় লাগালো।কেউ সেদিকে পাত্তা দিল না।রাহুল এক দৌড়ে বাড়ির ভেতরে আসলো।দু হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছে সে।পেছন থেকে কত মানুষ ডাকলো তাকে! সে রুমে যেতে নিলে রোদেলার সাথে ধাক্কা খেল।রোদেলা যেন ইচ্ছা করেই মারলো।
-‘একি! কি হয়েছে আপনার?
-‘সরো..
রোদেলা রাহুলের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে।সে বলে উঠলো
-‘ইস ইয়াক! গরুর গোবরকে কি চকলেট কেক মনে করছিলেন নাকি! ওয়াক!
রাহুল রেগে রোদেলাকে ধাক্কা মারতে নিলে রোদেলা নিজেই দুই লাফ দিয়ে পিছিয়ে গেল। রাহুল রাগে গজগজ করতে করতে রুমে গেল।ওয়াসরুমে গিয়ে নিজেকে দেখে নিজের’ই ব’মি চলে আসলো আবার।দ্রুত মুখে পানি ছেটালো সে।ফেইস ওয়াস হাতে নিয়ে মুখ ওয়াস করে বের হলো সে।হঠাৎ’ই মুখ জ্বলতে লাগলো তার।জ্বালার পরিমাণ এতো বাড়লো যে রাহুলের চোখ বেয়ে পানি পড়তে লাগলো।
-‘আহ্!! ও আল্লাহ! আহ্! আমার মুখ…
রোদেলা উঁকি দিল।এরপর রাহুলের অবস্থা দেখে মনে মনে বলে উঠলো
-‘এই ফেইস দেখিয়ে মেয়েদের নিজের ফাঁদে ফেলতি না! এবার ঠেলা সামলা।
রোদেলা বাঁকা হাসলো।ফেইসওয়াসে লাল মরিচের গুড়ো মিশিয়ে দিয়েছিল। সে চলে গেল ওখান থেকে।রাহুল চেঁচাচ্ছে।গানের শব্দের কারণে তার চেঁচানো শোনা যাচ্ছে না।রাহুল ওয়াসরুমে দৌঁড় দেয় আবার।অনবরত পানি ছেটায় মুখে।সময় পেরোয়।প্রায় অনেক্ষণ পরে জ্বালাপোড়া কমে।রাহুল চমকে যায় নিজের চেহারা দেখে।ফর্সা চেহারা লাল হয়ে টমেটো হয়ে গেছে।এগুলো কি হচ্ছে তার সাথে? রাহুল ভাবতে ভাবতেই রুমে আসে।
হঠাৎ একটা মেয়েলি স্বরে থমকে গেল সে।
-‘হাই রেনান বেইবি!
রাহুলের চক্ষু চড়কগাছ।হতবিহ্বল হয়ে আওড়ালো
-‘তিতলি!
তিতলি পায়ের উপর পা তুলে বসে রয়েছে।পড়ণে সর্ট একটা টপস্।রাহুল একটা শুকনো ঢোক গিললো।এর সাথে ম্যাসেঞ্জারে কথা হয়েছিল তার।রোদ তার জীবনে না এলে এই নেক্সট টার্গেট হতো।সে বলে উঠলো
-‘তুমি এখানে কি করছো?
তিতলি উঠে দাঁড়ালো এবার।মুখে হাসি ফুটিয়ে বললো
-‘তুমি বাবা হতে চলেছো।আই’ম প্রেগনেন্ট।
রেনান খেকিয়ে উঠলো
-‘এই কিইই!!!
মেয়েটা উপর নিচ মাথা নাড়ালো।রাহুল ভড়কে গেল।এই মেয়ের সাথে তো তার তেমন কিছু হয়নি।হবে হবে ভাব ছিল শুধু।সে বলে উঠলো
-‘তোমার সাথে তো আমি কিছুই করিনি।
-‘ঐ যে ম্যাসেঞ্জারে বলেছিলে না কি কি করবে….তা শুনেই প্রেগনেন্ট হয়ে গেছি।
-‘অ্যাঁ!!
-‘হ্যাঁ।
-‘দেখো একদম ঝামেলা করবে না।তোমার সাথে কথা হয় না কতদিন আজ? অনেক মাস প্রায়! আজ আমার বিয়ে।একদম ঝামেলা পাকাবে না।
-‘বিয়ে!
রাহুল একটা শুকনো ঢোক গিলে বললো
-‘হ্যাঁ।
-‘কোনো বিয়ে হচ্ছে না।তুমি আমা বাচ্চার বাবা।
-‘চুপপপ..
রাহুল ধমকে উঠলো।তিতলি মোটেও ভয় পেল না।
-‘তোমার বিয়ে হচ্ছে না।তুমি আমার।
রাহুল বাঁকা হেসে বললো
-‘তাই?
-‘হ্যাঁ..
-‘বাঁচতে চাইলে চলে যাও।বিয়ে ভাঙ্গার কথা মাথায়ও এনো না।
রাহুল দাঁতে দাঁত চেপে বললো।তিতলি হেসে বললো
-‘আমি কোথাও যাবো না।তুমি আমার বাচ্চার বাবা.. তুমি আমার বাচ্চার বাবা.. তুমি আমার বাচ্চার বাবা..
-‘চুপ করো.. চুপ করোওও..
তিতলি তো থামলো না বরং বেশি করে বলতে লাগলো।রাহুল রাখে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে পাশ থেকে পিতলের ফুলদানি তুলে তিতলির মাথায় মারলো।সাথে সাথে মেয়েটা একটা আর্তনাদ করে পড়ে গেল।রাহুল জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।তিতলির বডির দিকে একবার তাকালো।রুমের দরজা বন্ধ করে দিল সে। এরপর কাউকে একটা কল করলো।
কুহুকে একেকজন এসে হলুদ দিয়ে যাচ্ছে।সাখাওয়াত আলম উঠে এলেন এবার।স্টেজে উঠে মেয়ের পাশে বসলেন।কুহুর ঠোঁটের কোণে হাসি।সাখাওয়াত আলম হলুদ নিয়ে মেয়ের গালে আলতো করে ছোঁয়ালেন।কুহু মুচকি হাসলো।সাখাওয়াত আলম পকেট থেকে তিনটা এক হাজার বান্ডিল বের করলেন।সবাই হা হয়ে দেখছে।এমপি মানুষ এমন অনুষ্ঠানে এসেছে।কত বড় বড় লোকের সাথে উঠা-বসা আয়ানদের! কুহু মজা করে বললো
-‘মাত্র এই তিনটা বান্ডিল দিলেন! হতাশ হলাম।
সাখাওয়াত আলম বলে উঠলেন
-‘ওয়েট..হারুন..
-‘আরে..
সাখাওয়াত আলম কুহুকে বলতে দিলেন না কিছু।হারুন রহমান একটা বক্স দিলেন তার হাতে।সাখাওয়াত আলম কুহুর হাতে দিয়ে বললেন
-‘খুলো বক্সটা…
-‘আরে আমি তো মজা করে…
-‘আহা! খুলোই না!
কুহু দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে খুললো।অবাক হয়ে গেল সে।সাখাওয়াত আলম ঘড়িটা বের করে ওর হাতে পড়িয়ে দিতে দিতে বললেন
-‘ডায়মন্ডের ওয়াচ এটা।তোমার মা পড়তো।মায়ের স্মৃতি হিসেবে রেখে দাও এটা।
কুহু বিড়বিড় করে বললো
-‘মা!
এই শব্দটা বড্ড অপরিচিত।কখনো বলা হয়নি।আহনাফেরও মা নেই যে বলবে।মা জিনিসটা তার কপালেই নেই।চোখের কোণে পানি জমে।সাখাওয়াত আলম বললেন
-‘আর ব্রেসলাইটটা নতুন।ডায়মন্ডের সেটাও।বিয়েতে পড়ো বরং।
কুহু কিছু বললো না।সাখাওয়াত আলম মেয়ের মাথায় হাত রেখে বললেন
-‘সুখী হও।তোমার কারণে আহনাফকে আমি ক্ষমা করে দিলাম।এতটা পাষাণও হইনি যে মেয়ের স্বামীকে মারবো।
কুহু ভড়কে তাকালো তার পানে।সাখাওয়াত আলম উঠে চলে গেলেন।হারুন রহমান পেছন পেছন গেলেন।
কুহু ফোন ওপেন করতেই দেখলো রাফি ভিডিও পাঠিয়েছে।মুচকি হেসে ওপেন করতেই হতভম্ব হয়ে গেল।আহনাফের নাচ দেখে হা করে তাকিয়ে রইলো।বিশেষ করে শ্বশুরকে দেখে।আল্লাহ! কুহু ফিক করে হেসে ফেলে।
মধ্যরাত,
কুহু মাত্র ফ্রেশ হয়ে বিছানার দিকে অগ্রসর হয়।বিছানা রাইফা আর নাতাশা আগেই দখল করে ফেলেছে।নিধি আবার রোদেলার ওখানে গিয়েছিল।এরপর হয়তো বাড়ি গেছে।হঠাৎ কুহুর ফোনটা বেজে উঠলো।কুহু ‘চ’ সূচক শব্দ করলো।আহনাফের নাম দেখতেই সে বিরক্ত হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।ফোন রিসিভ করতে আহনাফ বললো
-‘বেলকনাতে এসো..
এরপরেই কেটে দিল।কুহু ভড়কে গেল।রাইফা আর নাতাশার দিকে তাকালো একবার।ঘুমিয়ে গেছে বোধহয়।সে বেলকনির দরজা খুলতেই চমকে গেল।আহনাফ আগে থেকেই দাঁড়িয়ে।আহনাফ কুহুকে এক টানে নিজের কাছে এনে পা দিয়ে দরজা ঠেলে দিল।
-‘চেঞ্জ করে ফেলছো!! এটা কোনো কথা!
কুহু ভয়মিশ্রিত স্বরে বললো
-‘আপনি কি করছেন এখানে?
-‘তোমাকে দেখতে এলাম।তুমি তো চেইঞ্জ’ই করে ফেলছো।
আহনাফ মুখ গোমড়া করে বললো।কুহু বললো
-‘আমি জানতাম নাকি যে আপনি আসবেন?
আহনাফ বললো
-‘জানলে চেইঞ্জ করতে না?
-‘না।
-‘আচ্ছা তাহলে ঠিকাছে।এখন ঝটপট একটা চুমু দাও তো।
কুহু বললো
-‘অ্যাঁ!
-‘জলদি করো…আমি দিলে একটা জায়গাও বাদ পড়বে না।
-‘বাঙ্গির পোলা অশ্লীল কথা বললে এমন জায়গায় মারবো না…
আহনাফের মুখটা ছোট হয়ে গেল।কুহু বললো
-‘বাসায় যান।কেউ দেখলে সমস্যা হবে।
-‘সেটা যে দেখবে তার সমস্যা আমাদের না।আমরা তো বিবাহিত’ই।
কুহু ফোঁস করে শ্বাস ছাড়লো।আহনাফকে জড়িয়ে ধরলো।
-‘এবার যান…
-‘চুমু চেয়েছিলাম…
-‘আশ্চর্য তো!
আহনাফ কুহুর কোমড়ের বাঁধন দৃঢ় করে হাস্কিস্বরে বলে
-‘উমম..তিলোত্তমা..একটা প্লিজ…
কুহু হাই দিয়ে বললো
-‘ঘুম পাচ্ছে।কাল দিব বরং যান এখন।
-‘আমাকে নিয়ে নিতে বলছো? ওকে ফাইন।
আহনাফ কুহুর ওষ্ঠের দিকে এগিয়ে গেল।দুজনে ওষ্ঠ যখন ছুইছুই তখন হঠাৎ..
-‘আউজুবিল্লা হি মিনাশ শায়তানির রাজিম…ওমা গোওও!! দুইটা জ্বীন কুহুর বেলকনিতে কি যেন করছে…আল্লাহ গোওও…
আয়ান চিৎকার করে রুমে দৌঁড় লাগায়। দুজন চমকে গেল।ওদের জ্বীন বললো কেন? পরক্ষণেই কুহু নিজের চুলের দিকে তাকালো।জট খুলতে গিয়ে চুল অদ্ভুদ হয়ে গেছে।দুই পাশে এনে রাখায় কি ভয় পেল?বেলকনি তো আবার অন্ধকার।আহনাফ বলে উঠলো
-‘শালা আমি রোমান্স করতে গেলেই গজব পড়ে।ধুর! কালকে তোমাকে ছাড়ছি না।রেডি থেকো..
আহনাফ কথাগুলো বলেই লাফ দিয়ে নিচে নেমে দৌঁড় দিতে গিয়েও থেমে গেল।একটা ছোট ইটের টুকরো হাতে তুলে আয়ানের বেলকনিতে ছুঁড়ে মারলো।আয়ান চেঁচিয়ে উঠলো।আহনাফ হাসতে হাসতে চলে গেল।আয়ান ভয়ে ভয়ে বেলকনিতে এলো।আয়ানকে দেখতেই কুহু চোখ ট্যারা করে মুখটা বিকৃত করে বলে উঠলো
প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৩৭
-‘টুকিইইই..
আয়ান ভয়ে লাফিয়ে উঠলো।ওমা বলে চেঁচাচ্ছে।কুহু বললো
-‘শালা ভাদাইম্মা! এ আবার আমারে পছন্দ করে! আসল চেহারা দেখেই ভয়ে কেমন করছে দেখো! শালা!
