সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৬

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৬
neelarahman

পরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবাই একসাথে খেতে বসেছে সবার শেষে নেমেছে নূর ।রাতে ঘুমাতে দেরি হয়ে গিয়েছে ।ইদানিং নূরের ঘুমাতে দেরি হয় নওরিন আফরোজ নূরের দিকে তাকিয়ে বললেন ,”কিরে নূর তোর এত উঠতে দেরি হয় কেন রে আজকাল ?স্কুল আছে কই তাড়াতাড়ি উঠবি তা না সবার পরে তুই উঠিস।
হঠাৎ নওরিন আফরোজ বললেন কিরে এই গরমের মধ্যে তুই এত ঘোমটা দিয়ে এসেছিস কেন? নীলা রহমান
নুর চুপচাপ আমতা আমতা করতে করতে বলল ,”আমার গরম লাগছে না একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে তাই ।”
সাদাফ জানে কেনো নুর ঘোমটা দিয়ে এসেছে ।কাল যে দুষ্টুমির ছলে ভুল করে ফেলেছে সাদাফ।এমন একটা জায়গায় কা*মড় দিয়েছে যেখানে নূরের দাগ হয়ে গিয়েছে এখন সর্ব*নাশ যদি কেউ ঘুমটা সরিয়ে ফেলে তাহলে তো দেখে ফেলবে ।সাদাফ আর চোখে দেখতে লাগল নূরকে।

নওরিন আফরোজ বলল ,”২ দিন হল মাত্র জ্বর গিয়েছে আবার ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে জ্বর আসবে না তো আবার ?”
বলেই কপালে হাত দিলেন দেখলেন না তাপমাত্রা ঠিক আছে।
সামিহা বেগম নুরের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ করে তাকালেন সাদাফের দিকে ।ওনার এমনি খুব পছন্দ সাদাফ আর উনি তো আজকে থেকে ঠিক করে রেখেছেন সাদাফ কে নিজের মেয়ের জামাইয়ের মত ট্রিট করবে তাই নূরের দিকে মনোযোগ না দিয়ে চুপচাপ চলে গেল সাদাফের কাছে।
গিয়ে সাদাফ কে মাছের বড় মাথাটা দিলেন যেটা সব সময় সাদাফের বাবা অর্থাৎ হুমায়ণ রহমানকে দিতেন ।উনার খুব পছন্দ ছিল কিন্তু আজকে সবাই অবাক হয়ে গেল মাথাটা সাদাফের প্লেটে দেওয়ায়। নীলা রহমান
ফজলুর রহমান অবাক হয়ে তাকালেন সামিহা বেগমের দিকে ।চোখ রাঙালেন ।মনে মনে বললেন ,”কি করছে মাথা মোটা মহিলা কাল শুধু বলেছিল সাদাফ আর নুরের কথা উনি তো আজকে থেকে সাদাফ কে মেয়ের জামাই বানিয়ে বসে আছে।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সামিহা বেগম চোখ রাঙানো দেখলেও বিশেষ পাত্তা দিলেন না ।মাথাটা তুলে দিয়ে সাদাফের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল ,”খা বাবা সুন্দর করে মাথাটা খা।
সারাদিন কত প্রেসার তোর উপরে? বাড়িতে ঝামেলা অফিসের ঝামেলা সব তোকে দেখতে হয় তোর মাথাটা খাওয়া দরকার বাবা খা।”
হুমায়ূন রহমান বুঝতে পারলেন সামিহা বেগমের মতলব তবে বাবা হিসেবে উনি খুশি হলেন নিজের কাছে খুব ভালো লাগছে যাক কেউ তো আছে বলার আগে সবকিছু বুঝে গিয়েছে।
এদিকে সাদাফের সামিহা বেগমের ব্যবহার দেখে কাশি উঠে গেল ।সামিহা বেগম তাড়াতাড়ি পানি এগিয়ে দিয়ে বললেন ,”খা মনোযোগ দিয়ে খা খাওয়ার সময় এদিক-ওদিক এত তাকাতে হয় না।
আর কি খাবি বাবা তোর তো গুড়ের পায়েস অনেক পছন্দ আজকে তোর জন্য আমি গুড়ের পায়েস রান্না করবো ।ঠিক আছে ?”

কথাটা শুনেই নওরিন আফরোজ সাথে সাথে তাকালো সামিহা বেগমের দিকে।
বুঝতে পারছে না সামি হাবিবের আজকে কি হলো সমস্ত মনোযোগ যেন শুধু সাদাফের দিকে টেবিলে যে আরো কেউ আছে ওনার নিজের ছেলে মেয়ে আছে সেটাও ভুলে গিয়েছে সামিহা বেগম।
সাদা চুপচাপ খাওয়া মনোযোগী হল সামিহা বেগমের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হেসে বলল ধন্যবাদ আম্মু বলেই খেতে শুরু করল।
এদিকে সাইমন আর রিমা একজন আরেকজনের দিকে তাকাতে পারছে না গতকাল রাতে কি এমন হয়েছিল সেটা এখনো জানা যায়নি ।পরে জানা যাবে আপাতত দুজন দুজনের দিকে তাকাচ্ছে না ।মনোযোগ দিয়েছে শুধু খাওয়ার দিকে।

সাদাফের খাওয়া শেষ হয়ে গেলে বেসিনে হাত ধুয়ে মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি চাপল ।যাওয়ার সময় সামিহা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলল আম্মু এক কাপ কফি হলে ভালো হয় ।পাঠাবে একটু উপরে।”
সামিহা বেগম সাথে সাথে নূরের দিকে তাকিয়ে বলো ,”এই নূর তাড়াতাড়ি যা উপরে সাদাফের জন্য কফি নিয়ে যা।”নুর অবাক হয়ে গেল নুর কেন নিয়ে যাবে।
সাদাফ সিড়ির কাছে এলো ।উপরে যাবে ঠিক এমন সময় নওরিন আফরোজ বলে বসলো ,”কিরে গতকাল না বিয়ের কথা বলেছিলি ?”সাদাফের পা থেমে গেল।
হুমায়ন রহমানের দিকে তাকিয়ে নওরিন আফরোজ বলল ,”শুনছেন ছেলে যে বিয়ের কথা বলল কিছু কি চিন্তা ভাবনা করেছেন ?কোন মেয়ে ছেলেকে জিজ্ঞেস করেন সবাই মিলে দেখি।”
বলেই নরিন আফরোজ সাথে সাথে নূরের দিকে তাকালো।দেখতে চাইলো নূরের কি রিঅ্যাকশন ।
নূর সাথে সাথে চট করে বলল ,”কি দরকার শুধু শুধু একজন মানুষের খরচ বাড়ানোর বলতো আম্মু ?তাকে নতুন করে আলাদা করে কাপড় দিতে হবে তাকে নতুন করে খাওয়াতে হবে কত করতে হবে কি দরকার শুধু শুধু খরচ বানানোর ?

উনি তো মাত্র অফিসে জয়েন করেছে কয় টাকা আর বেতন পাবে বল?”
নওরিন আফরোজ নুরের যুক্তি শুনে..
বোকা হয়ে গেলেন।
নওরিন আফরোজ নূরের দিকে তাকিয়ে বললেন ,”তুই কবে বড় হবি রে সাদাফ কি ওই অফিসের চাকরি করে যে বেতন পাবে ও ওই অফিসের মালিকের ছেলে ও লাভের অংশ পাবে যেমন ওর বাপ চাচারা পায়।
আর একটা বউ পালার মত যোগ্যতা আমার ছেলের আছে ।কিরে সাদাফ কথা বলছিস না কেন?”বললো নওরিন আফরোজ।

হুমায়ূন রহমান ফজলুর রহমানের দিকে তাকালেন ।ফজলুর রহমান সাদাফের দিকে তাকিয়ে বললেন ,”আচ্ছা সাদাফ তুইতো দুইদিন আগে বললি একটি মেয়ে তোর পছন্দ আমরা সবাই চিনি কে মেয়েটি ।নাম তো বললি না ।”
ফজলুর রহমান ও মনে মনে জানতে চায় সাদাফ আসলে নূরের কথা ভাবছে কিনা।
সাদাফ নুরের দিকে তাকাল ।তাকিয়ে বলল ,”যাকে আমি বিয়ে করতে চাই সে মেয়ে নিজে তোমাদের কাছে বিয়ে প্রস্তাব দেবে আমার জন্য ।আমি বলবো না ।”
বলেই হনহনে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে গেল।

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৫

নুর অবাক হয়ে গেল এ কি ঝামেলায় ফেলে গেল সাদাফ ভাই ।নুর কি করে বলবে ও সাদাফ ভাইকে বিয়ে করতে চায় ?নূরের বুঝি লজ্জা লাগে না ?এমন অসভ্য নির্লজ্জ কেন লোকটা ?রাতে তো ঠিকই আমাকে………. ছিঃ মনে মনে কি ভাবছে নূর ।
রাতের কথা ভাবতেই নূরের গায়ে লোমকূপ সব দাঁড়িয়ে গেল ।কিভাবে সবার সামনে বলবে নুর সাদাফ ভাইকে বিয়ে করতে চায় ?এটা কি কখনো সম্ভব নুর যে ছোট ।ছোট একটা মেয়ে হয়ে কিভাবে বিয়ের কথা বলবে?

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৭

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here