সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৭

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৭
neelarahman

নূর কফি নিয়ে ঢুকলো সাদাফের রুমে ।সাদাফ মাত্র প্যান্টের বেল্ট লাগাচ্ছে নূর ইতস্তত বোধ করছিল সাদাফের সামনে যেতে।প্যান্টের বেল্ট লাগাচ্ছে এমন অবস্থায় নূরের ঢুকতে কেমন যেন লাগছে নুর দাঁড়িয়ে রইল দরজায় ।সাদাফ নুরের দিকে তাকালো তাকিয়ে নূরের হেজিটেশন বুঝতে পেরে বলল ,”সমস্যা নেই ভিতরে আয় টেবিলে এসে কফি রাখ।”

নুর এক পা দু পা করে টেবিলের কাছে গিয়ে কফি রেখে দাঁড়িয়ে রইলো ।সাদাফ নুরের দিকে তাকালো কিছু বলল না ।রেডি হয়ে হাতে ঘড়ি পড়তে পড়তে বলল ,”কিছু বলবি ?এখনো দাঁড়িয়ে আছিস যে?”
নুর টেবিলের এর কাছ থেকে হেঁটে হেঁটে সাদাফ এর কাছে এসে দাঁড়িয়ে বলল ,”আপনি কেন বললেন যে আপনাকে বিয়ে করবে সে নিজে প্রস্তাব দিবে?”
সাদাব বলল নূরের দিকে তাকিয়ে ,”ঠিকই তো বলেছি যে আমাকে বিয়ে করতে চায় যে আমাকে ভালবাসবে তার অবশ্যই মুখ ফুটে বলতে হবে ।আমি কি এত সস্তা নাকি চুপচাপ চাইলো আর পেয়ে গেল ।আমার জন্য তো লড়তে হবে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

যে আমাকে চায় আমাকে ভালবাসে বিয়ে করতে চায় তাকেও তো পরীক্ষা দিতে হবে সে আমাকে আসলে ভালোবাসে কিনা ?যদি কারো সামনে সাহস করে বলতেই না পারে তাহলে আর কি ভালবাসে। নীলা রহমান লেখিকা
মনে মনে তো সবাই ভালোবাসতে পারে যে ভালোবাসা প্রকাশ করতে জানে সেটাই ভালোবাসা।”
আর যদি যে ভালোবাসে সে সাহস করে বলতে না পারে তখন? জানতে চাইলো বোকা নুর।
সাদাফ নূরের দিকে তাকিয়ে বলল ,”তাহলে আর কি করবো ?সাবাকে বিয়ে করে ফেলব।”
“আর তুই কেন চাস না আমার বিয়ে হোক আমি বিয়ে করি তুই কি মনে করিস আমার টাকা নেই বিয়ে করে আমি বউকে খাওয়াতে পারব না তাই?”বললো সাদাফ।

নূর বলল ,”না না তা কেন হবে ?আমি হঠাৎ আপনার বিয়ের কথা শুনে তাড়াহুড়ো করে এ কথা বলে ফেলেছি আমি মোটেও আপনাকে ফকির মনে করি না। বিশ্বাস করুন।”
“মেয়ে তা যদি আমার মত লাজুক হয় আর ভীতু হয় তাহলে বাপ চাচাদের সামনে কিভাবে যে বলবে আপনাকে বিয়ে করতে চায়?”বললো নুর।
“তুই লাজুক তুই ভীতু ?তাহলে তোর বাপ চাচাদের যেয়ে বল রাতের আঁধারে তুই আমার রুমে আসিস আর কি কি সব করিস ।দেখি তোর ল*জ্জা আর ভ*য় কোথায় থাকে?”
“না না এটা যেয়ে বলবেন না ।আচ্ছা আর কোন উপায় নেই আপনি কাকে বিয়ে করতে চান সেটা বোঝানোর?”
বললো নুর।

“এই মুহূর্তে আর কোন উপায় দেখছি না ।পরে যদি মনে পড়ে তাহলে তোকে জানাবো ।বলেই সাদাফ রুম থেকে বের হবে হঠাৎ মনে পড়ল রাতে নূরকে গলার কাছে একটা কা*মড় দিয়েছিল সেটার দাগ কতটা হয়েছে একটু দেখতে। নূরের কাছে এসে ঘুমটা টা হঠাৎ ফেলে দিল সাদাফ।নুর ভাবাচ্যাকা খেয়ে গেল হঠাৎ ঘুমটা ফেলে দেওয়ায় ।ঝরঝরিয়ে নূরের সামনে চুলগুলো মুখের উপর এসে পড়ল।
সাদাস মুগ্ধ হয়ে দেখল দৃশ্যটি তারপর গলার কাছে চুল গুলো একটু সরিয়ে দেখল স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে মানুষের কা*মড়ের দাগের মতো ।সাদাফ মুচকি হাসলো। তারপর বলল ,”এখনো জ্বা*লা করছে ?ব্যাথা করে ?করলে একটি মলম লাগিয়ে নিস আমার আলমারিতে মলম আছে।”
নুর মাথা নেড়ে সায় জানালো।

সাদাফ কথাটি বলেই বের হয়ে গেল ।মনে মনে ভাবলো ,”পা*গল নুর সারাদিন এখন পা*গলামি করবে আর উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে ।তারপরও সাদাফ খুশি সারাদিন সাদাফকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে।”
বিকাল ৫:০০ টা বাজে নূর ঘুম থেকে উঠে বিকালে ড্রয়িং রুমে এসে বসেছে ।আজ হুমায়ূন রহমান ও ফজলুর রহমান কেউ অফিসে যায়নি তারাও চা খাওয়ার জন্য নিচে এসে বসেছে ।নূর আমতা আমতা করছে হুমায়ুন রহমান ফজলুর রহমানের সাথে কথা বলার জন্য কিন্তু কোন ভাবে সুযোগ খুঁজে পাচ্ছে না।
হুমায়ূন রহমান নুরকে ডেকে বলল ,”এদিকে আয় তো মা কি হয়েছে ?কিছু বলবি ?”
নুর উঠে গিয়ে হুমায়ন রহমানের সাথে বসে বলল ,”না বড় আব্বু কিছু বলবো না।”

তারপর হঠাৎ বলে উঠলো আচ্ছা বড় আব্বু সাদাব ভাইয়া কাকে বিয়ে করতে চায় যদি মেয়েটি ভালো না হয় যদি মেয়েটি অনেক ঝগড়াটে হয় যদি আমাকে রিমাকে সহ্য করতে না পারে তুমি এমন মেয়েকে বিয়ে করিও না প্লিজ।
ফজলুর রহমান অবাক হয়ে গেল মেয়ের কথা শুনে হুমায়ুন রহমান মুচকি হাসলেন হেসে বললেন তুই কি করে জানলি মেয়েটা ঝগড়াটে হবে ভালো তো হতে পারে তোর মত লক্ষ্মী হতো হতে পারে।
নুর বলল ,”মোটেও না আমার মত কোনদিন হবে না আমি তো শুধু একটাই ।তোমার আদরের নূর অন্য কেও কি আমার মত হতে পারবে? এই বিয়েটা ক্যান্সেল করে দেওয়া যায় না ?সাদাফ ভাইয়ার কি এমন বয়স হয়েছে পাশের বাড়ির একটা ছেলে তো 30 বছর হয়ে গেছে এখনো বিয়ে করেনি।

আর সামনে তো আমার এসএসসি পরীক্ষা তাহলে এই সময় যদি বিয়ে করে আমরা কি আনন্দ করতে পারব বলো ?এর থেকে ভালো সাদাফ ভাইয়াকে বলে দাও এ বিয়ে হবে না।”
ফজলুর রহমান অবাক হয়ে গেলেন মেয়ের কথা শুনে ।এটা স্পষ্ট নুর চাইছে না সাদাফের বিয়ে হোক ।তবে কি সাদাফের আগে নুর ই সাদাফকে চেয়ে বসবে ?”
মনে মনে ভাবতে লাগলো ফজলুর রহমান
এদিকে সাইমন রুমে গিয়ে ভাবতে লাগলো রিমার কথা রিমা কলেজে চলে গিয়েছে সাইমন আজকে ভার্সিটি যাবে না বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবছে গতকাল রাতের কথা……..
সায়মনের কলার ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে সাইমন কে বলল ,”বিয়ে করবি প্রেম করবি তাহলে ওকে দিয়ে কাজ করাস না কেন ?”

সায়মন বললো ,”ছেলে যেহেতু হয়েছি একদিন না একদিন তো বিয়ে করতেই হবে ।”কথাটি বলার সাথে সাথে রিমা শায়মনের কলার ধরে নিয়ে সাইমনকে বিছানায় ধা*ক্কা মে*রে ফেলে দিল।
তারপর সাইমনের উপর চ*ড়ে বসে বলল এবার বল কি করবি ?বিয়ে করবি প্রে*ম করবি ?আর তোর ঘরে গিয়ে ঘর গুছাবো আমি তোর কাপড়চোপড় ধোবো আমি আয়রন করবো আমি তাই তো ?এটা বলতে চাচ্ছিস?”
সাইমন ভ্যাবা চাকা খেয়ে গেল কি বলবে বুঝতে পারছে না ।এদিকে অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে রিমা ওর উপরে বসে আছে কেমন যেন একটা ফিলিংস হচ্ছে ।ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বললো ,”হ্যাঁ বিয়েতে এক সময় করবই।”

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৬

রিমা যেন রা*গে সেই হারিয়ে ফেলল আর কিছু বলতে পারছে না ।হঠাৎ করেই আঁকড়ে ধরল সাইমন এর
ঠোঁট । না এটা কোন চু*মু না রা*গে ক্ষোবে সাইমনের ঠোটে কা*মড় দিয়ে বসেছে রিমা।এমন কা*মড় দিয়েছে শায়মন ব্যাথায় রিমার কোমরে দুহাত দিয়ে চে*পে ধরল।চোখ বন্ধ করে ফেললো সায়মন।
কিছুক্ষণ পর সায়মনে ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে রিমা সায়মনের উপর থেকে উঠে বসে বলল ,”এবার যা বিয়ে কর বিয়ে করে বউকে দিয়ে কাজকর্ম করা ।আর যদি আমার রুমে দেখি তাহলে জেনে রাখ তোর কপালে অনেক দুর্গতি আছে।”

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here