বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৫১

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৫১
shanta moni

‘‘শুভ্র রোদকে নিজে বাহু ডোরে আগলে নেয়। রোদের বুকে মুখ লুকিয়ে জোরে শ্বাস টানে, তাঁরপর ফিসফিস করে বলে-”
-“তুমি জানো’না বউ তোমার এই শরীরের গন্ধ আমায় তোমার কাছে আফিমের মতো করে টানে..!”
‘‘শুভ্রের কথায় রোদের শরীরে কাঁপুনি দিয়ে ওঠে, শক্ত হাতে শুভ্রের চুল টেনে ধরে, রোদকে এমন করতে দেখে শুভ্র দুষ্ট হাঁসে, মাথা তুলে রোদের দিকে তাকিয়ে বলে..!

-“এই টুকুতেই এমন কাঁপাকাঁপি করলে তো চলবে না’ বউ! আরো অনেক কিছু তোমায় সহ্য করতে হবে তো।
‘‘রোদের চোখ বন্ধ এক হাত দিয়ে বিছানার চাঁদর খামচে ধরে জোরে জোরে শ্বাস ফেলে। বলে…!
-“প্লিজ আমি সহ্য করতে পারছি না’ ছেড়ে দিন না আমায়..!”
‘‘শুভ্র রোদের দিকে এগিয়ে গালে টুপ করে চুমু খেয়ে রোদের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে…!
-“সরি ম্যাডাম আমি আজ আর আপনার কোনো বারন শুনছি না!
‘‘শুভ্র রোদকে আর কোনো কিছু না বলতে দিয়ে, ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। রোদের অধঁরে, শুভ্রের প্রতিটা স্পর্শ রোদ কেঁপে কেঁপে উঠছে! নিঃশ্বাসের শব্দ ক্রামাগত ভারি হচ্ছে৷ শুভ্রের ২৭ বছরের ধৈয্য বাধ আজকে ভেঙে, নিজের পুড়োটা দিয়ে ভালোবাসছে তার ছোট্ট ফুলকে। মিলিত হচ্ছে দুটি রিদয় দুটি সত্তা ।
‘‘আজকে রাতে সাক্ষি থাকবে দুটি রিদয় দুটি সত্তার ছন্নছাড়া প্রেমে!
“রাত প্রায় ৪ টার কাছাকাছি ক্লান্ত শরীর এলিয়ে দেয়। রোদের খালি বুকে, জোরে জোরে শ্বাস ফেলে। শব্দ করে চুমু খায়।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রোদের বুকে, তাঁরপর ফিসফিস করে বলে উঠে…!””
–“ভালোবাসি বউ, ভালোবাসি আমার ছোট্ট ফুলকে। ভালোবাসি আমার বেঁচে থাকার এক মাত্র কারনকে। কথা দিচ্ছি জান আর কখনো তোর চোখের পানি কারন আমি হবো নাহ!
-‘‘রোদের কোনো সারা শব্দ না পেয়ে মাথা তুলে তাকায় শুভ্র, রোদের চোখ বন্ধ, চোখের পানি গালে শুকিয়ে আছে।
ডিম লাইটের মৃদু আলোয় রোদকে দেখে আতকে উঠে..! সাথে সাথে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায়। কোমরে তোয়ালে পেঁচিয়ে রুমের লাইট ওন করে। বেডের দিকে তাকাতেই শুভ্র আতকে উঠে..! বিড়বিড় করে বলে…!
–“ ওহহ শিট কি করে ফেললাম!”
-“শুভ্র রোদের কাছে গিয়ে চাঁদর দিয়ে রোদের শরীর ডেকে দেয়। রোদের মাথা নিজের কোলে নিয়ে গালে হাত দিয়ে বলে..!

—“বউ খুব বেশি করে ফেলেছি সরি, নিজের মধ্যে ছিলাম না। প্লিজ বউ উঠে যাহ..!”
—“রোদের কোনো সারা শব্দ নেই! শুভ্র বিচিলিত হয়ে আবার ডাকতে থাকে।
‘কিন্তু রোদ কোনো রেসপন্স করছে না!
—“শুভ্র রোদকে ছেড়ে ফোন হাতে নিয়ে কল করে, তার একজন ডক্টর বন্ধুকে, এতো রাতে ফোন দেওয়াতে ফোন তুলে নাহ। একবার একবার করে দশ বারের বার ফোন তুলে…!
“অপর পাশ থেকে ফোন তুলতেই শুভ্র কর্কশ কন্ঠে বলে উঠে…!
—“শা*লা কতো বার তোকে ফোন দিয়েছি হ্যা! কি করিস তুই?”
—“শুভ্রের কন্ঠস্বর পেয়েই ঘুম ছুঁটে যায় আতিকের। কান থেকে ফোন সরিয়ে শুভ্রের নাম্বার দেখে, নিজেকে স্বাভাবিক করে বলে..!”

—“কি আর করবো বন্ধু, আমার তো আর বউ নেই! যে এতো রাত জেগে বউয়ের সাথে রোমাঞ্চ করবো। ঘুমাচ্ছিলাম আমি! এখস বল কি জন্য এতো রাতে বন্ধু কথা মনে পড়লো?”
—আতিকের কথায় নিজেকে স্বাভাবিক করে শুভ্র বলে উঠে..!”
—“আমার বউ উঠছে না দোস্ত!
—“আতিক আবাক হয়ে বলে, উঠছে না মানে?
—“শুভ্র আতিক কে সব কিছু খুলে বলে,
আতিক শুভ্রকে ব্যঙ্গ করে বলে..!
—“বাহ দোস্ত বাহ প্রথম রাউন্ডে ছক্কা..!
“শুভ্র রেগে গিয়ে রাগে দাঁতে দাঁত পিষে বলে..!
—“শা*লা তুই ছক্কা মারাচ্ছিস হ্যা’ এখানে আমার বউ উঠছে না। আর তুই ছক্কা মারাচ্ছিস!
—‘আতিক শুভ্রকে রাগতে দেখে আমতা আমতা করে বলে…!
—‘‘বাসায় পেইন কিলার থাকলে ভাবিকে খায়িয়ে দে! সকাল হোক আমি তারপর আসছি। ততক্ষণ আমি একটু ঘুমিয়ে নেই।

—“আতিকের কথায় শুভ্র তেতে উঠে দাঁতে দাঁত চেঁপে বলে..!
—‘“আবে শা*লা আমার বউ অসুস্থ আর তুই ঘুমাবি, তোকে তো আমি আজকে লাশ বানিয়ে হসপিটালে ভর্তি করবো।
—“শুভ্রের কথায় আতিক ভয়ে ভয়ে আমতা আমতা করে বলে..!
—“তুই যে কি বলিস না দোস্ত, আমি তো অর্ধেক পথ এসেও গেছি। তুই দশ মিনিট ওয়েট কর আমি আসছি।
‘বলেই ফোন কেটে দেয় আতিক। বিছানা থেকে উঠে গাড়ির চাবি নিয়ে, বাড়ির পড়া পোশাকে বেড়িয়ে যায়।
“শুভ্র ফোন রেখে রোদের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলে উঠে..!
—“বা*লের বাসর করতে এসেছি ছেহহ!
বউ যে আমার পুটি মাছের থেকেও দুর্বল। হারবাল খায়িয়ে আশা উচিত ছিলো!
-“আতিকের আসতে আসতে ২০ মিনিটের মতো হয়ে যায়। বাড়ির সামনে এসে শুভ্রকে কল দেয়। শুভ্র কল ধরতেই বলে…!

—“ব্রো কই তুই দরজা খোল?
-“শুভ্র কল কেটে নিচে যায়! নিচে যায়! বাড়ির সবাই এখনো ঘুমে, শুভ্র আতিকে নিয়ে রুমে আসে। রোদের গায়ে শুভ্রের একটা শার্ট পড়ানো, শুভ্রকেও অনেক’টা অগোছালো দেখাচ্ছে! আতিক রোদকে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে শুভ্রের দিকে তীক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে..!
—‘আরে ভাই মেয়েটা তো বাচ্চা, এই টুকু মেয়ের সাথে একটু ভেবে চিন্তে কিছু করবি তো!
—“তুই ডাক্তার ডাক্তারি কর! আমার বউ ঠিক করে দে! তোকে আমি জ্ঞান দিতে বলেনি!
-“আতিক আর কোনো কিছু বলেনা।
—‘‘রোদকে ইনজেকশন দিয়ে! আর কিছু মেডিসিন দিয়ে শুভ্রকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে..!
-“সকাল হলেই সেন্স ফিরে আসবে। টেনশন নিস না।
-“বেডের পাশ থেকে উঠে মেডিশন গুলো দিয়ে বলে..!
-“শোন শা*লা বউ তো আর পালিয়ে যাচ্ছে না। তাই যা করার রয়ে সয়ে করিস কেমন।
—আতিক কথা শেষ করেই রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। শুভ্র রোদের দিকে তাকিয়ে নিজেকেই ধিক্কার জানায়, তার বউটা যে এখনো বাচ্চা, সেটা তার মাথা থেকেই বেড়িয়ে গেলো কিভাবে। এই পুটি মাছের সাথে সে কেনোই ভাবে বা*সর করতে গেলো।

—আতিক শুভ্রের রুম থেকে বেড়িয়ে করিডোর দিয়ে হাঁটছে, তখনি একটা চাঁদর পড়ে আতিকের গায়ে আর আতিকে পেঁচিয়ে ধরে বলে উঠে..!
—“কে কোথায় আছো? বাসায় চোর আসছে চোর!
-‘‘নিলয়ের এমন চিৎকারে সবাই রুম থেকে বেড়িয়ে আসে। সবাই চোর চোর বলে চিৎকার করছে, আর এদিক ওদিক দৌঁড়াচ্ছে। আর আতিক কম্বলের মধ্যে বসে মোচড়ামুচড়ি করছে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য! বাহিরের চেচামেচি শব্দ শুভ্র বেড়িয়ে আসে নিজের রুম থেকে!
সবাই করিডোরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুচকে তাকায়। নিলয় শুভ্রকে দেখে বলে উঠে..!
—“ব্রো বাসায় চোর আসছে, প্লিজ তুমি চোর টাকে ধর তা না হলে পালিয়ে যাবে।
-“শুভ্র সন্দেহ জনক ভাবে তাকায়, এই শেষ রাতে চোর আসবে কোথা থেকে, আর এই বাড়িতে চোর আসার কোনো চাঞ্জ নেই!

-“কিছু একটা মনে আসতেই বলে উঠে
—“নিলয় ছেড়ে দে?
—“ব্রো তুমি কি পাগল হয়ে গেছো! চোর’টাকে ছাড়তে কেনো বলছো!
“শুভ্র রেগে গিয়ে চেচিয়ে বলে উঠে..”
-“আরে গাঁধা ওইটা চোর না আতিক!
—“সাথে সাথে ছেড়ে দেয় নিলয়! শুভ্র রাগি চোখে তাকিয়ে আছে নিলয়ের দিকে, নিলয় ভয়ে ভয়ে হাঁসে…!
—“আতিক কম্বল থেকে বেড় হয়ে, জোরে জোরে শ্বাস ফেলে বুকে হাত দিয়ে, শুভ্রের দিকে তাকিয়ে করুন স্বরে বলে উঠে..!

-“আরে ভাই পেশেন্ট দেখতে এসে চোর হয়ে গেলাম! মানবতা আজ কোথায়?
—“নিলয় মিনমিন করে বলে”
-‘সরি আতিক ভাই! আমি আসলে বুঝতে পারিনি!
—“ইটস ওকে!” যাই হোক আমি গেলাম!
—“আতিকে যেতে দেখে নিলয় বলে উঠে.!
-“ভাইয়া তুমি এতো রাতে কোন পেশেন্ট দেখতে এসেছিলে!
“আতিক যেতে যেতে বলে..!
-“সিংহ বিড়াল মেরে আহত করছে! সেই বিড়ালের চিৎসাহ করতে আসছি৷ এই শেষ রাতে!
-” আতিকের কথার কোনো আগা মাথা কেউ বুঝতে পারে না। যে যার রুমে চলে যায়। নিলয় ভাবলেশিন ভাবে মাথায় হাত দিয়ে গভীর চিন্তা করছে! একে একে দুই মিটাচ্ছে।
“কিছু একটা মনে আসতেই দৌড়ে শুভ্রের রুমে দিকে যায়।

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৫০

“দরজা হালকা চাঁপানো, দরজা দিয়ে উকি মেরে দেখে শুভ্র বেডের পাশে রোদের মাথায় হাত ভুলিয়ে দিচ্ছে।
‘নিলয়ের যা বোঝার বোঝা শেষ। রুমে ভিতরে না ডুকেই সেই অবস্থায় দাড়িয়ে থেকে বলে উঠে..!”
—“বাহ ব্রো আমি ভেবেছিলাম, তোমার সিন্সেম খারাপ এখন দেখছি, খুব চালু তো। এক রাতেই বউকে অজ্ঞান করে ফেললে। ইসসস আফসোস আমার ব্লগ ভিডিও বানানো হলো না।
—‘শুভ্র রেগে ফ্লোর থেকে জুতা তুলতে নিলয় দেয় দৌড়…!

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৫২

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here