বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৫২

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৫২
shanta moni

“সকাল ১০ টা সূর্যের আলো চোখে পড়তেই,চোখ মুখ কুচকে ফেলে রোদ!
‘পিটপিট করে চোখ খুলে তাকায়, নিজেকে শুভ্রের শক্ত বাঁধনে আবদ্ধ দেখে, ছাড়ানোর চেষ্টা করে।
‘রোদের নড়াচড়া শুভ্রের ঘুম ভেঙে যায়।
রোদকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে, মুখে পড়ে থাকা চুল গুলো সরিয়ে বলে..!
—“এতো ছটফট করছো কেনো? শান্ত হয়ে এখানে শুয়ে থাকো!
“রোদ শুভ্রের দিকে তাকিয়ে, দেয়ালে ঘড়ির দিকে চোখ যায়! ১০ টা বেজে গেছে! রোদ নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলে…!

—“ছাড়ুন আমায় অনেকটা বেলা হয়ে গেছে। ফ্রেশ হবো?
“শুভ্র রোদকে ছেড়ে দিয়ে বলে…!
—“একা পারবেনা! আমি তোমাকে ফ্রেশ হতে হেল্প করছি!
‘‘রোদ আমতা আমতা করে বলে..!
—“আমি একাই পারবো! আপনার হেল্প লাগবেনা।
“রোদ কথা গুলো বলেই বেড থেকে উঠে ফ্লোরে পা রাখতেই পেটে ব্যথায় কুকিয়ে ওঠে” পেট ধরে পুনরায় আবার বেডে উপর বসে পড়ে!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“শুভ্র বেড থেকে উঠে, রোদকে কোলে নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে যেতে যেতে বলে..!
—“যে কাজ’টা পারবে না! তার জন্য শুধু শুধু নিজের শরীরের শক্তি অপচয় কেনো করো বউ!
—“শুভ্রের কথায় রোদ কোনো উত্তর দেয়,না। শরীর তার এখন সায় দিচ্ছে না, কোনো উত্তর দিতে।
—“শুভ্র ওয়াশরুমে ডুকেই ঝড়না ছেড়ে দেয়। গায়ে ঠান্ডা পানি পড়তেই পুড়ো শরীর জ্বলে উঠে রোদের।
—শরীরের ব্যথায় শুভ্রের শার্ট খামচে ধরে ফুপিয়ে ওঠে..!
“শুভ্র আস্তে করে নিচে দাঁড় করায় রোদকে! নিজের বুকের সাথে রোদের মাথা চেঁপে ধরে বলে উঠে..!
—“কান্না করেনা বউ, এই গোসল করা শেষ হয়ে গেলেই মেডিসিন খায়িয়ে দিলে সব ব্যথা ঠিক হয়ে যাবে।
‘‘রোদ শরীর সব ছেড়ে দেয়। শুভ্রের বুকের সাথে মাথা রাখে।
“আধাঘন্টা পর গোসল শেষ করে, ওয়াশরুম থেকে বেড় হয়! শুভ্র আর রোদ।
—“রোদকে ড্রেস চেঞ্জ করতে দিয়ে! শুভ্র যায় নিজের রুমে চেঞ্জ করতে।

“রোদের চেঞ্জ করার আগেই, আবার রোদের রুমে আসে। রোদ ওয়াশরুম থেকে চেঞ্জ করে বেড় হতেই, শুভ্র সাথে সাথে কোলে তুলে নেয়। কোলে নিয়ে নিজের রুমে দিকে হাঁটা দেয়। রোদ শুধু চুপচাপ দেখা যাচ্ছে। শুভ্র কি করছে!
শুভ্র রোদকে রুমে আনতেই একজন সার্ভেন্ট এসে নাস্তা দিয়ে যায়। রোদ চুপচাপ বেডের উপর আধ শোয়া হয়ে বসে আছে।
“শুভ্র রোদের কাছে এসে নিজ হাতে রোদকে খায়িয়ে দেয়। রোদও কিছু বলেনা, চুপচাপ শুভ্রের হাতে খেয়ে নেয়।
খাবার শেষ করে রোদকে মেডিসিন খায়িয়ে দিয়ে, রোদের পাশে শুভ্র বসে রোদের হাত ধরে আস্তে করে বলে..!
—“এখনো কি খারাপ লাগছে?
‘রোদ দুই দিকে মাথা নাড়ায় তার মানে না..!
“শুভ্র রোদকে কোনো কিছু না বলতে দেখে, রোদের দুই হাত শক্ত করে ধরে, চুমু খেয়ে রোদের দিকে তাকিয়ে বলে..!

—“সরি বউ অনেক গুলো সরি?
“রোদ শুভ্রের মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। এই লোক তাকে সরি বলছে! ওহ মাই গট বিশ্বাস হচ্ছে না।
‘রোদ শুভ্রের থেকে নিজের হাত সরিয়ে নিয়ে, নিজের হাতে নিজেই চিমটি কাঁটে, ব্যথা পেয়ে হাত ডলতে ডলতে শুভ্রের দিকে তাকায়! শুভ্রও রোদের দিকে তাকানো! রোদ কি করছে সেই সব দেখছে! রোদ শুভ্রের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বলে..!
-‘আপনি সরি বলছেন?”
—শুভ্র ভ্রু কুচকে তাকায়, রোদ পুনরায় আবার বলে উঠে..!
—“না মানে কিছু নাহ!
-“শুভ্র আর কিছু বলে নাহ! রোদও চুপ হয়ে যায়। প্রথমে মনে করেছিলো! সে হয়তো কোনো স্বপ্ন দেখছে! কিন্তু না সত্যি তার বদ মেজাজি রাগী জামাই তাকে সরি বলছে! ওহ গট এই কথা যদি বাড়ি কেউ জানে তো সবাই হার্ট অ্যাটাক করবে নিশ্চিত।

—“তিনদিন পর”
“এই তিনদিন শুভ্র বাড়িতেই ছিল! সারাদিন রোদের পাশে ছিল। অফিসের যত কাজ সব বাড়িতে বসেই করেছে!
এক সেকেন্ড জন্য রোদকে ছেড়ে দূরে যায়নি! রোদ এখন পুড়োপুড়ি সুস্থ,
‘শুভ্রের রুমেই থাকছে, নিজের রুমে অনেক বার যেতে চেয়েছে কিন্তু শুভ্র যেতে দেইনি। রোদ এই কয়দিনে শুভ্রকে যতবার দেখছে অবাক হচ্ছে! রোদের প্রতি যত্ন, রোদের খেয়াল রাখা সব কিছুতেই বোঝা যাচ্ছে! ঠিক কতোটা ভালোবাসে শুভ্র! রোদ রুহি কাছ থেকে সব কিছু শুনেছে রোদের এক্সিডেন্ট , রোদের হারিয়ে যাওয়া, শুভ্র ঠিক কতটা পাগলামি করেছে! পাগলের মতো কান্না করেছে। রোদ প্রথমে সব কিছু শুনে অবিশ্বাস মনে হলেও, রুহির কথা সব কিছুই যুক্তি সম্মত, আর সত্যি সেটা রোদকেও মানতে হয়। নীলাও ছিলো, নীলা নিজেও বলেছে শুভ্র কি রকম বাচ্চাদের মতো কেঁদেছিলো। আর এই তিন দিন রোদ শুভ্রকে দেখেছে, পুড়ো পুড়ি আলাদা এক শুভ্রের সাথে পরিচিত হয়েছে রোদ।

“এই তিনদিন নিজ হাতে খাওয়ানো থেকে গোসল করানো, সব কিছু শুভ্র করেছে! প্রথমে রোদ অস্বস্তি পড়লেও পরে শুভ্রের রাগ ধমকের কাছে হাড় মানতে হয়েছে!
“এতো দরদ দেখালো, রাগ দেখানো ধমক দেওয়া সে সব থামেনি। কথায় কথায় থাপ্পড় দিবে, সেই সব পাল্টায়নি।
“রাত এগারো টা কি সাড়ে এগারো’টা শুভ্রের রুমের এপাশ থেকে ওপাশে হাঁটছে রোদ।
গ্রামের বাড়ি যাবে,কিন্তু রোদকে শুভ্র যেতে দিবে না বলে, কেউ যাবে না। যার জন্য সবাই দায়িত্ব দিয়েছে যে, রোদ শুভ্রকে রাজি করাবে, আর শুভ্রকেও সাথে করে গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাবে!
যার জন্য শুভ্রের জন্য অপেক্ষা করছে রোদ। আর রুহি, নীলা, জুঁইয়ের শিখিয়ে দেওয়া বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে শুভ্রকে রাজি করাবে।

“হেনা বেগম বলেছিল, শুভ্র, কিন্তু শুভ্র সাথে সাথে না করে দিছে, যাওয়ার হলে, বাড়ির সবাই যাক, কিন্ত শুভ্র আর রোদ কোথাও যাবে না। আর রোদ না গেলে রুহি নীলা কেউ, বাকিরা কেউ জাবেনা।তাই মূলত রোদ এখন অপেক্ষা করছে শুভ্রের জন্য।
এইদিকে রোমান ছাদে দাড়িয়ে আছে, সেই কখন থেকে কিন্তু রুহির আসার কোনো নাম গন্ধ নেই! রোমান রাগ বিরক্তি নিয়ে নিজের চুল গুলো শক্ত করে চেঁপে ধরে, হটাৎ পিছন থেকে কারো আসার শব্দ পেয়ে তাকায়, রুহি দাঁড়িয়ে আছে। রোমান রেগে গিয়ে রুহির বাহু ধরে ছাদের দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরে দাঁত কটমট করে বলে..!
—“এই তোর সমস্যা কি হ্যা?
“আমাকে কি তোর মানুষ মনে হয় না!
‘এই রকম আমার কাছ থেকে পালাই পালাই করছিস কেনো?

—“রোমানের কথা রুহি ঠোঁট উল্টে ফেলে! সেদিন রোমানের বাসা থেকে আসার পর থেকে রুহি রোমানের সামনে যায় না। মাজে মধ্যে ফোনে কথা বললেও ,তাও দুই/এক মিনিট বেশি না।
‘রুহি কেমন জানি লজ্জা ভয় চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে, যার জন্য রোমানের সামনে যাচ্ছে না। রুহিকে চুপ করে থাকতে দেখে, রোমান রুহিকে আরো শক্ত করে চেঁপে ধরে বলে..!
—“কি হচ্ছে কি রুহি, কথা কেনো বলছিস না তুই? সমস্যা কি তোর?
আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছিস কেনো?
“রুহি কোনো কিছু না বলেই রোমানকে জাপ্টে ধরে, রোমানের বুকে মুখ লুকিয়ে মিনমিনিয়ে বলে…!
—“আমি তো আপনাকে এড়িয়ে চলছি না গায়ক সাহেব। আমার লজ্জা লাগে খুব তাই আপনার সামনে আসিনা!
—“রোমান রুহিকে জড়িয়ে ধরে বিড়বিড় করে বলে..
-“ওহহ গট এই বোকা মেয়েকে নিয়ে আমি কই যাবো। আমি তার দহনে পুড়ে মরছি,আর উনি লজ্জা পেয়ে লুকিয়ে আছে!
“রোমান রুহিকে উদ্দেশ্য করে বলে..!

—“ম্যাডাম আমাকে লজ্জা পাওয়ার মতো তো কিছু দেখছি না। এতো লজ্জা পাচ্ছেন কেনো শুনি?
“রুহি আস্তে করে বলে….!
—“অনেক কিছুই আছে লজ্জা পাওয়ার মতো!
“রোমান দুষ্ট হাঁসে ঠোঁট কামড়ে রুহিকে বলে..
—“তার মানে ম্যাডাম আপনি আমাকে নিয়ে অনেক কিছু ভাবেন!
“রুহি আমতা আমতা করে বলে…
—“মানে?”
—“মানে টা হলো, আপনি আমাকে নিয়ে লজ্জা পাওয়ার মতো কিছু ভাবেন ওই সব আরকি!..
“রোমানের কথা বুঝে রুহি রোমানের কাছ থেকে সরে যেতে নিয়ে বলে..!
—”ছিহহ একদম না!”
“রোমান রুহির কথায় হাঁসে…তাঁরপর বলে..!
—“এই নাহ আপনি কেনো এই সব ভাবতে যাবেন। আপনি তো এর থেকেও গভীর কিছু ভাবেন। আর একা একা লজ্জা পান।

“রোমানের কথায় রুহি কান দিয়ে গরম ধোঁয়া বেড়েচ্ছে। রুহি রোমানের কাছ থেকে সরে একটু দূরে গিয়ে বলে…!
—“আর একবার এই সব বললে কিন্তু আমি চলে যাবো এক্ষুনি।
-“রুহির কথায় রোমান রুহির হাত ধরে টেনে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে
—“ইসস রাগ করে না” আমার বোকানারী।
“রোমানের কথায় রুহি চুপ হয়ে যায়।
রোমান রুহিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে…!
-“রুহি তোমাকে নিয়ে আমি একটা ছোট্ট সংসার সাজাতে চাই! যেখানে তোমার আর আমার টোনা টুনির সংসার হবে। “চলোনা রুহি আমরা একটা ছোট্ট সংসার সাজাই?

—রুহি রোমানের প্রতিটা কথা মুগ্ধ হয়ে শুনছে, রোমান পুনরায় বলে উঠে
-“আমি তোমাকে বড্ড বেশি ভালোবাসি।
তুমি ছাড়া আমার বেঁচে থাকা সম্ভব না।
প্লিজ আমায় কখনো ছেড়ে যেও না!
‘“রুহি আস্তে করে বলে…!
“আপনি যদি আমায় আগলে রাখতে পারেন, তো আমি আপনার কাছে থাকতে বাধ্য গায়ক সাহেব।
“রোমান হাঁসে রুহিকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে নেয়। তাঁরপর বলে…!
—“আমার সব’টা দিয়ে আগলে রাখবো আমার বোকাফুল’কে। তুমি শুধু আমার হয়ে থেকে যেও।
“রোমান কিছুক্ষণ থেমে আবার বলে উঠে…!
-“আমার সাথে টোনা টুনির সংসার সাজাবে রুহি। ছোট্ট একটা বাবুই পাখির বাসা বানাবো। সেখানে তুমি আর আমি থাকবো। আর আমাদের ভালোবাসা।
-‘রুহি রোমানকে কিছু বলেনা। রোমানের দিকে ঘুরে রোমানকে জড়িয়ে ধরে…!
রোমানও আগলে নেয়, রুহিকে নিজের বুকে…!
রাত ১২:০০

“রোদ বেডের উপর কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে আছে। শুভ্র কিছুক্ষণ আগেই এসেছে। রুমে ডুকে বেডের উপর তাকায় রোদকে এক নজর দেখে ওয়াশরুমে ডুকে যায়। প্রায় আধা ঘণ্টা পর শুভ্র ওয়াশরুম থেকে বেড় হয়। রোদ শুভ্রকে দেখে সাথে সাথে কম্বলের নিচে ডুকে যায়। শুভ্র প্রথমে ভেবেছিল রোদ ঘুমিয়ে গেছে, কিন্তু রোদ এখনো ঘুমাইনি।
‘শুভ্র কোনো শব্দ না করে, রোদের সামনে এসে দাঁড়ায়। রোদ শুভ্রের কোনো সারা শব্দ না পেয়ে আস্তে করে কম্বল জাগিয়ে দেখতে যায়। এমন সময় শুভ্রকে সামনে রাগী চোখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে। ভয়ে ভয়ে হাঁসার চেষ্টা করে বলে…!

-‘‘না মানে আমি তো…….”
“আর কিছু বলতে পারে না! শুভ্র রাগী কন্ঠে বলে উঠে…!
-“এই বিয়াদব রাত কয়’টা বাজে তুই এখনো ঘুমাসনি কেনো?
“রোদ মনে মনে বলে…!
-“ভয় পেলে চলবে না রোদ! তোকে তোর মিশন সাকসেসফুল করতেই হবে!
“রোদ হাঁসার চেষ্টা করে বলে
-“কি যে বলো না তুমি! জামাই রেখে কি কেউ ঘুমায়..!
রোদের কথায় শুভ্র ভ্রু কুচকে তাকায়,
“রোদ মনে মনে সাহস নিয়ে বেড থেকে উঠে দাঁড়ায়। শুভ্র বেডের পাশে দাঁড়ানো।
রোদ শুভ্রের দিকে এক পা এগিয়ে লাফ দিয়ে শুভ্রের গলা জড়িয়ে ধরে। শুভ্র রোদের লাফ দেওয়াতে দু কদম পিছিয়ে যায়। রোদের কোমর শক্ত করে ধরে, ঠিক হয়ে দাঁড়ায়!

—রোদ শুভ্রের গলা জড়িয়ে ধরে শুভ্রের গাড়ে কামর বসায়, শুভ্র কোনো কিছু বলে না। দাঁত চেঁপে সহ্য করে নেয়।
“রোদ মুখ তুলে শুভ্রের দিকে ভয়ে ভয়ে তাকায়, কি করে ফেললো, এখন যদি এই লোক তাকে আছার মারে, তাহলে কি হবে। রোদ শুভ্রকে ভয়ে ভয়ে বলে…!
—“আমি আসলে স….
“আর কিছু বলতে পারে না, শুভ্র রোদের গলায় কামড় বসায় রোদ ভয়ে চিৎকার করে উঠে…!
-“শুভ্র এতোটা জোরে দেয়ওনি যে রোদ ব্যথ্যা পাবে। রোদ ভয়ে চিৎকার করছে!
-‘রোদ শুভ্রের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট উল্টে বলে…!
-“অসভ্য লোক আপনি আমাকে কামড় দিছেন কেনো? আপনি আসলেই একটা অসভ্য!
-“আমি অসভ্যই থাকতে চাই! বউয়ের কাছে এতো সভ্য হয়ে লাভ নাই!
-“ছিহ সেদিন রাতেও আপনি আমাকে
‘‘রোদ থেমে যায়! রোদকে থেমে যেতে দেখে শুভ্র দুষ্ট হেঁসে বলে….
–“হুম বলো! সেদিন রাতে আমি তোমাকে কি?
“রোদ আমতা আমতা করে বলে…!
–‘কি আবার আপনি আমাকে কামড় দিয়েছেন।”

“শুভ্র রোদকে কোল থেকে নামিয়ে সামনে দাঁড় করিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে…!
–“বউ ওটাকে কামড় বলে না! জামাইয়ের আদর বলে বুচ্ছো! আমার দেওয়া ভালোবাসার চিহ্ন, লাভ বাইট
তোমার শরীরে সব যায়গায় ।
-“অসভ্য লোক কামড় দিয়ে বলছে লাভ বাইট, বা*ল বাইট, ছাড়ুন আমাকে আমার কোনো লাভ বাইট বা*ল বাইট লাগবেনা৷
-“শুভ্র রোদের কথায় হাঁসে, রোদকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে রোদের নাক টেনে বলে…!
-“এতো নরম কেনো গো?
-রোদ শুভ্রের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে তোতলানোর মতো করে বলে..!
-“মা…নে কি বলছেন আপনি….?

“শুভ্র রোদের কথায় পুনরায় হাঁসে রোদের কোমর জড়িয়ে ধরে রোদের দিকে তাকিয়ে বলে…!
–“তোমার শরীর এতো নরম কেনো? তাই বলছি! আমার আসলে সন্দেহ হয়েছিলো। তোমার গায়ে কোনো হাড় নেই। তাই তোমাকে ওই ভাবে কামড় দিয়ে দিয়ে চেক করছিলাম হাড় আছে কিনা!
“শুভ্রের কথায় রোদ রাগে তেতে উঠে বলে…!
-“বাজে লোক আপনি, হাড় চেক করার জন্য আপনি আমাকে ওই ভাবে কামড় দিয়েছেন। কেমন পাষান লোক ছিহহহ!
শুভ্র-“হুম দিয়েছি, এটা তো আমার দায়িত্ব। “আমার বউয়ের শরীরের সব হাড় গোড় ঠিক আছে কিনা। সব কিছু তো আমাকেই দেখতে হবে।

“রোদ চোখ গোল গোল করে শুভ্রের দিকে তাকায়!
‘‘শুভ্র রোদের ঠোঁটে টুপ করে চুমু খায়! ঘটনা এতো দ্রুত ঘটে যে, রোদের বুঝতে কয় এক সেকেন্ড লাগে।
“রোদ নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বলে
-“ছেড়ে দিন আমাকে? আমি ঘুমাবো!
“শুভ্র ঘড়ির দিকে তাকিয়ে তারপর রোদকে ছেড়ে দেয়। রোদ বিছানার দিকে এগিয়ে আসতে, কিছু মনে পড়তে পা থেমে যায়। শুভ্রের সাথে ঝগড়া করতে করতে আসল কথা বলতে ভুলে গেছে।
“রোদ পিছন ফিরে তাকাতেই শুভ্র রোদকে নিয়ে বেডের উপর শুয়ে পড়ে রোদ জড়িয়ে ধরে।
-রোদ কিছু সময় চুপচাপ থেকে, আস্তে করে মাথা তুলে, শুভ্রের চোখ বন্ধ, রোদ
শুভ্রের মুখে দিকে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ, শুভ্র ঘুমাচ্ছে কিনা চেক করতে, হাত দিয়ে চেক করে, এর মধ্যে শুভ্র চোখ বন্ধ থাকায় গম্ভীর কন্ঠে বলে

-“অনেক রাত হয়েছে রোদ! ঘুমিয়ে যাহ! আর ডিস্টার্ব করিস না!
‘রোদ তাড়াতাড়ি নিজের হাত ঘুটিয়ে নেয়। তারপর আস্তে করে বলে উঠে।
-“আমি একটা কথা বলতে চাই..?
-“শুভ্র চোখ খুলে তাকায় রোদের দিকে তারপর বলে
-“অনেক রাত হয়েছে! এখন ঘুমাও কালকে সব কথা শুনবো!
“রোদ ঠোঁট ফুলিয়ে বলে…!
-“আমি এখন বলতে চাই! আর আপনি এখন শুনবেন ব্যাস!
‘‘শুভ্র রোদকে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে, বলে…!
-‘‘জ্বী বলুন ম্যাম কি বলবেন? আমি শুনছি!
“রোদ উপর হয়ে শুভ্রের দিকে কিছুটা ঝুঁকে আছে। রোদ আমতা আমতা করে বলে…!
-“সত্যি বলবো?
“হুম বলো?”
-“শোনো না..!

“রোদের কথা শুনে শুভ্র সাথে সাথে চোখ খুলে তাকায়’ রোদ চোখ বন্ধ করে আছে।রোদ পুনরায় আবার বলে উঠে..!
-“শোনা না প্লিজ?
-“বলো না গো বউ প্লিজ? এতো রাতে এতো পিরিত দেখাচ্ছো। মতলব কি?
-“শুভ্রের কথায় রোদ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। হাঁসার চেষ্টা করে বলে..!
-“কি যে বলোনা! কিসের মতলব থাকবে। আর তোমাকে আমি পিরিত দেখাবো না, কাকে দেখাবো বলো?
-শুভ্র: এমনিতে তো হাজার বার ডাকলেও কাছে আসো না। সব সময় পালাই পালাই করো। তো হটাৎ এমন করলে, সেটা আগলা পিরিত ছাড়া কিছু না।

“রোদ শুভ্রকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে…!
-“এক কথা বলো না গো স্বামী! আমি তোমাকে আগলা পিরিত দেখাই না। আমি তোমাকে গভীর পিরিত দেখাই।
শুভ্র: “এটাকে গভীর পিরিত বলে না গো বউ।
গভীর পিরিত অন্য কিছু, আর সেটা খুব গভীর ভাবেই হয়!
রোদ: “সেটা কিভাবে? আর কিভাবে গভীর পিরিত করে, আমি তোমার সাথে গভীর পিরিত করতে চাই…?

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৫১

—“রোদের কথা শেষ হওয়ার আগেই, শুভ্র ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়, রোদের ঠোঁটে
রোদের পুড়ো শরীর কেঁপে ওঠে, রোদের বুঝতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে…!
“পাঁচ মিনিট পর শুভ্র রোদকে ছেড়ে দুষ্ট হেঁসে রোদের উদ্দেশ্য বলে…!
শুভ্র: “এটাকে গভীর পিরিত বলে বউ! এর থেকে গভীর পিরিত আছে, তুমি যদি চাও, তো আমি তোমাকে দেখাতে পারি!

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৫৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here