তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ২৬

তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ২৬
ভূমিকা তালুকদার

ফ্রান্সের দক্ষিণে, আল্পস পর্বতমালার গহীনে দাঁড়িয়ে আছে রহস্যে মোড়া এক পাহাড়,Mont de Lune Noire। বাংলায় যাকে বলে অন্ধকার চাঁদের পাহাড়।
উচ্চতা প্রায় দু’হাজার আটশত পঞ্চাশ মিটার (নয় হাজার তিনশত পঞ্চাশ ফুট)। কিন্তু এই পাহাড়ের আসল আকর্ষণ তার ভয়ানক উচ্চতা নয়,বরং তার চূড়ার দৃশ্য। ওপরে উঠে গেলে মনে হয়, আকাশ হাতের নাগালেই নেমে এসেছে। পূর্ণিমার রাতে পাহাড়ের চূড়া থেকে আকাশের চাঁদ এত কাছে দেখা যায় যে মনে হয় হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে ফেলা যাবে। সেই কালচে আলোর আভা আর চারপাশের নিস্তব্ধতা পাহাড়টিকে দিয়েছে এক অন্য রকম ভৌতিক সৌন্দর্য।

স্থানীয় লোকেরা বিশ্বাস করে,এই পাহাড় কোনো সাধারণ পাহাড় নয়। তারা বলে,যে রাতে কালো(অমাবস্যার) চাঁদ আকাশে ওঠে, আর কেউ অন্ধকার চাঁদের পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়ায়, তখন চাঁদের ছায়ায় তার জীবনে অমোঘ আশীর্বাদ নেমে আসে। অনেকে এটাকে অলৌকিক শক্তির পাহাড় বলে মনে করে। আবার কেউ কেউ বলে, পাহাড়ের ভেতরে লুকানো আছে প্রাচীন যুগের কোনো গোপন রহস্য।তবে পাহাড়কে ঘিরে আছে ঘন জঙ্গল যেখানে সবসময় কুয়াশা জমে থাকে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

গ্রামবাসীরা একে অভিশপ্ত পাহাড়ও বলে, কারণ পূর্ণিমার রাতে এখানে নাকি অদ্ভুত আলো দেখা যায়।তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস যে এই পাহাড় একসময় চন্দ্রদেবীর অভিশাপে সৃষ্টি হয়েছিলো।লোকজনদের মুখে মুখে এমন কথাই রটে বেরায়।সাধারণ মানুষদের ধারা এ পাহাড় ডিঙিয়ে তার চূড়ায় উঠা ততোটাও সহজ না,তাই যতই এর চূড়ায় চাঁদ দেখার ইচ্ছা থাকুক না কেনো কেউ এখানে আসার সাহস করে না।শুনা গেছে অনেকেই পাহাড়ের চূড়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে সাহস করে চলে এলেও বাড়ি ফিরতে পারেনি।সম্পূর্ন পাহাড়টিকে ঘিরে রয়েছে ঘন জঙ্গল, কুয়াশায় আচ্ছন্ন অন্ধকার পথ, আর গভীর রাতে ভেসে আসে অচেনা পশুপাখির ডাক। দিনের বেলায়ও আলো এখানে কিছুটা মলিন, আর রাত হলে তো একেবারে অন্য জগতে চলে যাওয়া। যেখানে দাঁড়িয়ে মনে হয় পৃথিবী থেকে নয়, বরং আকাশ থেকে দেখা যাচ্ছে পৃথিবীকে।

লিয়ানা সেই কখন থেকে মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।যেই মেয়ে একটুনি অন্ধকারে রাতে ওয়াশরুমের যেতেও ভয় পায়।কখনো কখোনো তো খুব বেশি ইমার্জেন্সি না হলে মাঝ রাতে উঠে ওয়াশরুমে যায় না সে ।শেষে কিনা তার এই মানুষরুপী এনাকন্ডা জামাই তাকে এত আশা দেখিয়ে চাঁদের কথা বলে, অন্ধকার আস্তানায় নিয়ে এলো। আবার বলে কিনা এইটা চাঁদের পাহাড়। এইটাই চাঁদ। সাদা কালার হলেও মানা যেতো।বাট কালার বুঝবে কি করে অন্ধকার এ তো শুধু তার সুদর্শন জামাইর ফর্সা মুখ খানাই দেখতে পাচ্ছে সে।কিছুক্ষণ এপাশ ওপাশ ঘুরে ঘুরে দেখে নেয়।

“এই যে মহাশয়!উকিল সাহেব,সবি বুঝলাম অনেক সুন্দর একদম রোমান্টিক পরিবেশ নিয়ে এসেছেন, আপনি আমায়।আমি খবুই কৃতজ্ঞ আপনার কাছে।আপনার চরণ দূখানা দিন সালাম করে নিই।আমার সাত কপালের ভাগ্যে আপনি আমায় জেলে না নিয়ে এখানে এনেছেন,এখন তো ভয় হচ্ছে কবে না জানি জেলেই পুড়ে দেন।”
“তুই তো সারাক্ষণ তোর পার্সোনাল জেলেই বন্ধী হয়ে আছিস।আই মিন্ আমার হৃদয়, মন,হার্ট কে কোনো অংশে জেল থেকে কম মনে হয় নাকি তোর?? সারাক্ষণ তো সেখানেই বিচরণ করে বেড়াস তখন ভয় হয় না?? ”

জায়ানের কথায় লিয়ানা কিছুটা লজ্জা পেলেও একটুখানি বাজিয়ে দেখতে চাইলো জায়ানকে।আড় চোখে জায়ানের দিকে তাকিয়ে,
“মানে আপনি ইনডিরেক্টলি বুঝাতে চাচ্ছেন,আপনার মনে শুধু আমার বসবাস?? মানে মিস্টার উকিল সাহেব আপনি আমায় ভালোবেসেন।”
কথাটা বলেই উচ্চস্বরে হেসে ফেলে লিয়ানা, হাত মাছি তারানোর মতো নাড়িয়ে জায়ান এর দিকে তাকায়,আর দেখে জায়ান প্যান্টের পকেটে হাত গুটিয়ে বড় বড় চোখে তার দিকেই তাকিয়ে আছে।জায়ানের নিকশ কালো মণি অন্ধকারে বুঝা না গেলেও লিয়ানার বাদামী মণি জোড়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে।শীতল কন্ঠে বলে,

“কতবার বলবো আই ডুন্ট ফা*কিং লাভ ইউ। ভালোবাসা নামটাই এক প্রকার বিষ, এমন বিষ যা একবার পান করলে একটা মানুষের দেহ মন দুটোকেই বিষে বিষাক্ত করে তুলে।”
“মুটেও না ভালোবাসা খুবই পবিত্র জিনিস। যদি অপর প্রান্তের মানুষটা সঠিক হয় তাহলে ভালোবাসা বিষাক্ত কেন হবে?? ”
জায়ান দু পা এগিয়ে লিয়ানার মুখোমুখি দাড়ালো। লিয়ানার কোমড় এ হাত রেখে হেঁচকা টানে নিজের কাছে নিয়ে এলো।

“কোনো পুরুষ যদি ভালো না বেসেই তোর মতো বেসামাল নারীর আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনতে পারে। তোকে ছিনিয়ে নিজের করে নিতে পারে।তারপরেও তুই বারবার সেই পুরুষের মুখ থেকে সামান্য তিনটে শব্দ শুনতে মরিয়া হয়ে আছিস।কেন??এত তৃষ্ণা কেন মনে?? ”
লিয়ানা কোনো প্রতিউত্তর করলো না।শুধু জায়ানের দিকে তাকলো।লিয়ানাকে চুপ থাকতে দেখে জায়ান মাথাটা একটু নুইয়ে, লিয়ানার কানের কাছে মুখ নিলো আর বললো।
“আমায় তোর জীবনের ফুল ভাবিস না স্লিপিং বিউটি। বরং তোর মতো পবিত্র ফুলের জীবনে আমি এক বিষাক্ত কাঁটা,যে কাঁটা একবার তোর গায়ে বিঁধলে রক্ত ঝরা থামবে না, তুই শুধু আমার নাম ধরে কাঁদবি।যদি তুই সুগন্ধি হোস, আমি সেই ধোঁয়া,যা তোর নিশ্বাস কেড়ে নেবে। তোর বেঁচে থাকার মানে হবে শুধু আমার অন্ধকারে ডুবে থাকা।”

জয়ানের ঠোঁট থেকে প্রতিটা শব্দ যেনো ছুরি হয়ে বিধঁছিলো লিয়ানার কান জুড়ে। বুকটা কেমন মুচড়ে উঠলো। মনে হচ্ছিল এ মানুষটা প্রেমের কথা বলতে না পারলেও সজ্ঞানে অভিশাপ শোনাচ্ছে।তার চোখে অদ্ভুত ভয় মনে হচ্ছিলো এখনই তার দম বন্ধ হয়ে আসবে পালাতে ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু একই সাথে বুকের গভীরে একটা অচেনা শিহরণ খেলে গেলো। এই ভয়ই যেন তাকে জায়ানের কাছ থেকে দূরে সরতে দিচ্ছিলো দেয় না।লোকটা তার গলায় যদি ছুরিও ধরে তাও সে তাকে ছেড়ে যেতে পারবে না এমন মনে হচ্ছিলো।
লিয়ানার ঠোঁট শুকিয়ে এলো, সে ঠোঁট কামড়ে ফিসফিস করে বলল।

“আপনি কি আমায় নিঃশেষ করতে চান?”
“ইয়েসসস আবার নো।”বলেই জায়ান একটুও সময় নষ্ট না করে লিয়ানাকে তুলে নিল নিজের দু’হাতে। লিয়ানা এখন জায়ানের কোলে।এভাবে জায়ান তাকে কোলে নেওয়ায় লিয়ানার মুখে প্রথমে চমকে ওঠা আর্তনাদ চাপা পড়লো।
উফ!নামান!আমি নিজেই হাঁটতে পারবো।
লিয়ানার যেনো ওজন বলে কিছুই নেই। জায়ান তার কথায় পাত্তা না দিয়ে চোখের দিকে একবার গাঢ় দৃষ্টি ছুড়ে দিয়ে ঠাণ্ডা স্বরে বললো।

“ঘাস খেয়ে বড় হয়েছিস নাকি। এত পাতলা কেন তুই?? ”
লিয়ানা জায়ানের বুকে একটা ধাক্কা মারলো।সে নাকি ঘাস খেয়ে বড় হয়েছে! কি ইন্সাল্ট। কি ইন্সাল্ট।
শুনুন আমি মুটেও ঘাস লতাপাতা খাইনি।আপনি জানেন আমি এক সাথে তিন প্লেট খাসির কাচ্চি খেতে পারি? ডুন্ট আন্ডারেস্টিমেট মি ওকে??
জায়ান ধীরে ধীরে লিয়ানাকে কোলে নিয়েই আবার কোথাও কোথাও পাথর বেয়ে লাফিয়ে। একেবারে পাহাড়ের চূড়ার দিকে উঠতে লাগলো।
“সিরিয়াসলি??তুই যে শুধু আমার মাথা না সাথে খাসির মাথাও চিবিয়ে খেতে পারিস আই নো।কিন্তুু তারপরেও এ-ই জিরো ফিগার কেনো বেবি।
লিয়ানা এক হাত দিয়ে জায়ানের গলা আকঁড়ে ধরলো।আরেক হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে জায়াকে বুঝাতে লাগলো।

“দেখুন।খেয়েও যদি মটু গুলোমুলো না হতে পারি আমার কি দোষ? ”
একটু থেমে দুষ্ট হাসলো লিয়ানা।
“জানেন দাদিমণি কি বলছে?? ”
“ঐ সুন্দরী বুড়িটা আবার কি বলছে?? ”
“বলছে যে যতদিন না নাগরের কুদরতি পানি শরীরের না পরবে মোটা হওয়ার কোনো চান্স নেই।এখন বলুন আমি এত কুদরত কই পামু??আমার নাগরের শরীর এ আগুনই দেখি পানি আর দেখি না।তাই আর কি!….এখন বুঝলেন আমার চিকন হওয়ার রহস্য??
লিয়ানার কথা শুনে জায়ান রীতিমতো কাঁশতে শুরু করে।
জাস্ট, শাট আপ্।পাজি বুড়ির পাজি নাতনী।
চারদিকে শুধু ঘন কালো বন, নিচে অন্ধকার অতল গহ্বর,আর উপরে এক টুকরো আকাশ, যেখানে দেখা যায় পূর্ণিমার গোল চাঁদ।

আশে পাশে চোখ বুলালেই লিয়ানার বুক ধড়ফড় করে উঠছে। সে জয়ানের গলার কাছে মাথা গুঁজে রেখেছে। একবার চোখ মেললেই নিচের গহ্বর দেখা যায়, মনে হয় পড়ে যাবে। কিন্তু জায়ানের বাহুর দৃঢ়তা, বুকের তীব্র উষ্ণতা তাকে আবার অদ্ভুত নিরাপত্তাও দিচ্ছে।
জায়ানের নিঃশ্বাস ভারি হয়ে উঠেছে, তবুও সে থামে না। প্রতি পা ফেলায় তার দৃঢ়তা যেন বলে দিচ্ছে।
“কিছু জিনিস না বলার মাঝেও তার মধ্যে থাকা অধিকারবোধ প্রকাশ পায়।”

জায়ান আর লিয়ানা অনেকটা পথ উঠতে উঠতে এসে পড়েছে পাহাড়টার গভীর জঙ্গলের মধ্যে। কিন্তু এখানে গাছগুলো এত ঘন যে আলোও প্রায় হারিয়ে গেছে,চারপাশে এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতা। হালকা কুয়াশা ভেসে বেড়াচ্ছে গাছের গোড়ায়, যেনো মাটির বুক থেকে নিঃশ্বাস বের হচ্ছে। পাখিদের ডাক নেই, কেবল দূরে কোথাও অচেনা কোনো প্রাণীদের হালকা গর্জন শোনা যাচ্ছে।
পথটা আঁকাবাঁকা, পিচ্ছিল পাথরে ভরা। লিয়ানা মাঝে মাঝে থেমে শ্বাস নিচ্ছে, কিন্তু জায়ানের চোখে কোনো ক্লান্তি নেই,তার দৃষ্টি সোজা।গাছের ডালপালা একে অপরকে আঁকড়ে ধরেছে, আকাশ দেখা যায় না,মনে হয় তারা দুজন এক বিশাল সবুজ অন্ধকার এর মধ্যে আটকে গেছে।

একটা জায়গায় এসে তারা দাঁড়ায়। নিচে অনেক দূরে, পাহাড়ি নদী সাপের মতো কিলবিল করে বয়ে যাচ্ছে, কুয়াশার আড়ালে অর্ধেক দেখা যায়, অর্ধেক অদৃশ্য। বাতাসে এক অদ্ভুত গন্ধ,আর্দ্র মাটি আর শুকনো পাতার সঙ্গে যেন কিছু অচেনা, ভয়ের গন্ধ মিশে আছে।
লিয়ানা ফিসফিস করে বলে ওঠে।
“আপনি সাথে আছেন বলে ভয় কে জয় করে এগিয়ে যাচ্ছি।নাহলে এতক্ষণে আমি ভয়ে মরেই যেতাম। না মানে,,,যদি,

কিচ্ছু হবে না।আমি সাথে আছি তো নাকি।ভয় পাস না।আমার সাথে তো বন্দুক আছেই।এন্ড তোর হাসবেন্ডের ফাইটিং স্কিল এতোটাও দূর্বল না যে তোকে প্রটেক্ট করতে পারবে না সুইটহার্ট।
লিয়ানা জায়ানের শার্টের উপরেই তার ফুলা ফুলা মাশেল এ হাত রাখে।
“উহুু!জিম্ করে করে এগুলো কে একদম সেই বানিয়েছেন।জাস্ট ওয়াও।”
“হট লাগে তাই না??”
“ইশ!নিজের ঢোল নিজে পিটান। শুনুন,আপনি কিন্তুু মেয়েদের থেকে একশো হাত দূরে থাকবেন।মেয়েদের নজর অনেক খারাপ।আর এই শার্টের উপরের দুটো বোতোম যেভাবে খুলে রেখেছেন না।এভাবে যাবেন না বলছি।পরে মেয়েরা কু নজর দিবে। তা আমার সহ্য হবে না।”
“যদি দেয় কি করবি।”

“একদম চুল টেনে ছিড়ে ফেলবো।দরকার পরলে মেরে দিবো।আসছে আমার জামাইর দিকে নজর দিতে।”
জায়ান লিয়ানার নাকে নাক ঘষলো।
“মাই ওয়াইফি।একা পারবি নাকি আমার হেল্প লাগবে?? ”
“একাই একশো আমি।”
জায়ান সেই লিয়ানাকে কোলে তুলেই উপরে উঠে চলেছে।লিয়ানা ভাবছে এভাবে পুরোটা পথ তাকে কোলে তুলে নিয়ে গেলে জায়ানের অনেক কষ্ট হবে তো।এভাবে এত দূর যাওয়া যায় নাকি আজব।
“বলছি কি এইবার আমাকে একটু নামিয়ে দিন না।আমি একটু হাঁটি। ”
“পারবি না।নিচে তাকা, পাথর গুলো দেখছিস অনেক পিচ্ছিল।সামলাতে পারবি না পড়ে যাবি।পড়লে কিন্তুু বাঁচার চান্স নেই। আর আমি সেই রিস্ক নিতে পারবো না।নেভার।

সত্যিই তো লিয়ানা নিচে তাকালো জায়গাটা মোটেও সমতল না, কেমন পাথর কণা দিয়ে উচু নিচু। লিয়ানা পিছনে তাকালো উপর থেকে নিচে আসলেই বিশাল খাঁদ মনে হয়।একবার পা পিছলে পড়লে খেল খাতাম।লিয়ানা আরো জোড়ে শক্ত করে ধরে জায়ানকে।বাতাসের শব্দ, পাতার কাঁপন সব মিলিয়ে এমন এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যেখানে মনে হয় এই পাহাড় কেবল একটা জায়গা নয়, বরং অন্ধকারে ঢাকা এক রহস্যময় অস্তিত্ব, যা কেবল দুজন মানুষকে নিজের গভীরে টেনে নিতে চাইছে।ঘন্টার পর ঘন্টা হাঁটার পর অবশেষে যখন তারা দুজন পাহাড়ের প্রায় শীর্ষে পৌঁছায়, তখন চারপাশের বাতাস বদলে যেতে শুরু করে। কুয়াশা ক্রমশ পাতলা হয়ে আসে, কিন্তু তার জায়গায় আসে তীব্র ঠান্ডা হাওয়া।

চূড়ার কাছে এসে গাছপালা কমে যায়। শুধু পাথরের দেয়াল আর খাড়া ঢালু পথ।জায়ান এবার লিয়ানাকে নামিয়ে দিয়েছে, লিয়ানা দু,হাত দিয়ে পাথরের গায়ে ভর দিয়ে উপরে উঠছে।এখনের পরিবেশটা তার ভালো লাগতে শুরু করেছে। মুখে এক প্রকার হাসি নিয়েই এপাশে ওপাশে তাকাচ্ছে। জায়ান এক ধাপ উপরে দাঁড়িয়ে, হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, চোখে সেই অনড় দৃষ্টি,যেন সে জানে, এই পাহাড় এখন তার দখলেই, এই ভয়ঙ্কর যাত্রা তার কাছে খেলার মতোই।লিয়ানার হাত যখন জায়ানের হাতে এসে মিশলো, তখন এক মুহূর্তের জন্য মনে হলো পাহাড়ের সব অন্ধকার, সব শীতলতা মিলেমিশে ওদের হাত দুটোকে শক্ত করে বাঁধতে চাইছে। জায়ান টেনে তুলতেই তারা দুজন একসাথে দাঁড়িয়ে পড়ে চূড়ায়।

সামনের দৃশ্য দেখে লিয়ানার চোখ স্থির হয়ে যায়।কি অপূর্ব দৃশ্যের!এমন জায়গার কথা সে আগে জানলো না কেন তা নিয়ে আফসোস হচ্ছে।কিন্তুু নিচ থেকে কেউই বিলিভ করবে না এই পাহাড়ের চূড়ার দৃশ্যে যে এত সুন্দর।উঁচু থেকে নিচে তাকালে মনে হয় পৃথিবীটাই যেন পায়ের নিচে পড়ে আছে। মেঘেরা হাতের নাগালে ভেসে বেড়াচ্ছে, তাদের ফাঁক গলে রুপালি চাঁদের আলো সোজা এসে পড়ছে তাদের মুখে। এমন মনে হচ্ছে যেন চাঁদটা একদম কাছে, হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে ফেলা যাবে। আর চাঁদের চারপাশে গাঢ় অন্ধকার।লিয়ানা সামনে এগিয়ে দু হাত বাড়িয়ে চোখ বন্ধ করে শীতল বাতাস অনুভব করতে লাগলো। খুশিতে তার নাচতে মন চাচ্ছে জায়ানকে সাথে নিয়ে।লিয়ানা কিছুটা ইমোশনালও হয়ে গেলো,চোখের কোণায় জল জমে উঠেছে।জায়ান পকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে লাইটার দিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে মুখে পুরে নেয়।লিয়ানা হাত বাড়িয়ে রুপোলী গোল চাঁদ এর দিকে হাত বাড়ালো, দূর থেকেই মনে হলো তা সে ধরে ফেলেছে।আকাশের মেঘগুলোও পাহাড়ের গায়ে ভেসে বেরাচ্ছে।জায়ান লিয়ানার একটু সামনে দাড়িনো, সিগারেট টানছে আর আকাশের দিকেই এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। লিয়ানা সামনে এগিয়েই জায়ানকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ফেলে।জায়ানের পিঠে মুখ গুজে,

ভালোবাসি। ভালোবাসি।আমি আপনাকে অনেক বেশি ভালোবাসি মিস্টার জায়ান খান।কখন, কবে কীভাবে এর উত্তর চাইবেন না দয়া করে। শুধু জানি ভালোবাসি।
জায়ান নিরুত্তর। একটা বড় ঢুক গিলে নিলো।এক হাত প্যান্টের পকেটে।আরেক হাতে সিগারেট। সিগারেট টা মুখে নিয়ে আরেকটা টান দিয়ে নিচে ফেলে পা দিয়ে পিষে ফেলে।
আমার উত্তর চাই, চুপ থাকবেন না।আচ্ছা মন রক্ষার্থেও কি বলা যায় না??আমার কিন্তুু খুব কষ্ট হবে চুপ থাকলে এভাবে।কি হলো বলুন।
জায়ান পিছন দিকে হাত বাড়িয়ে লিয়ানাকে ধরে হেঁচকা টানে পিছন থেকে সামনে নিয়ে নিজের বুকে জড়িয়ে নিলো।লিয়ানার পিঠ জায়ানের বুক স্পর্শ করে রেখেছে। জায়ান দু’হাতে লিয়ানাকে জড়িয়ে ধরে। লিয়ানার শরীর হালকা কেঁপে উঠে।তারপর জায়ান একটু নুয়ে লিয়ানার দিকে ঝুকে,
আজ একটা সত্যি কথা বলি??

বলুন না।
জানতে চেয়েছিলিনা কেন তোকে বিয়ে করলাম!এর উত্তরও আমার কাছে নেই। শুধু তোকে নিজের করে পেতে চেয়েছিলাম।কেন চেয়েছি তার ব্যাখাও আমার কাছে নেই।তোকে অন্য কারোর সাথে সহ্য করার ক্ষমতাও খোদা আমায় দেয় নি।শুধু এই টুকু জানি তোকে ছাড়া এই দুনিয়াতে কেউ আমাকে সামলাতে পারবে না।তাই তোকে বেছে নেওয়া।আমার কাছে ভালোবাসা নিতান্তই একটা তিন শব্দের ক্ষুদ্র বাক্যে।
লিয়ানা জায়ানের হাত নিজের থেকে ছারিয়ে সরে যেতে নেয়।কিন্তুু জায়ান আরও শক্ত করে লিয়ানাকে ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়।এক হাতে লিয়ানার গাল চেপে ধরে আরেক হাত নিজেত বুকে বা পাশে আঙুল ঠিকিয়ে,

রাগ করছিস??কোথায় যাবি?? তুই তো আমার এখানে বাস করিস।তোকে আমার হৃদয় থেকে বের করার অধিকার কাউকে দেই না আমি,এমকি নিজেকেও না।
জায়ান আরও শক্ত করে লিয়ানাকে চেপে ধরলো।
তোকে কোনোদিনও নিজের থেকে আলাদা হতে দিবো না। অনেক দেরিতে পেয়েছি তোকে, এইটুকু ক্ষতিই আমার জীবনের জন্যে যথেষ্ট ছিলো।
তুই আমার জীবনের শেষ ইচ্ছে ছিলি।ইয়েস ইউ আর মাই লাস্ট উইশ। সায়রি তে আলাদিন এর একটা কথা আছে,

হাসিল তো বহত কুছ কারনা থা,
মুঝে জিন্দেগী মে,
মাগার যাব তুম আয়ে তো,
হাজরাত তুম তাক ই মেহবুব রেহ গায়ি।
হয়েছে আর আলাদিনের সায়রি শুনাতে হবে না।ছাড়ুন আমায়।

লিয়ানার এমন মুচড়ামুচড়িতে জায়ান কিছুটা বিরক্তই হলো,সে লিয়ানার কোমর আরও শক্ত ধরে ফেলে নিজের বুকের সাথে, এমন শক্তভাবে যেন হাড় ভেঙে যাবে। লিয়ানার নিঃশ্বাস আটকে গেলো, সে ঠোঁট কাঁপিয়ে প্রতিবাদ করতে চাইলো, কিন্তু তার ঠোঁটেই হঠাৎ ঝরে পড়ল জায়ানের ঠাণ্ডা অথচ আগুনে ভরা চুমু। তার ঠোঁটের ওপর দিয়ে জায়ান নিজের তীব্র আগ্রাসী অপ্রকাশিত ভালোবাসা ছড়িয়ে দিচ্ছিলো,
লিয়ানা প্রথমে মাথা এড়িয়ে নিতে চাইলো, কিন্তু পরের মুহূর্তেই জায়ানের ঠোঁট তার ঠোঁটে জড়িয়ে গেলো। প্রথমে চুম্বনটা ছিল দাবিদার, কঠিন, যেন জায়ান শুধু নিজের দাগ বসাতে চাইছে। কিন্তু কয়েক সেকেন্ড পরেই চুম্বনের ভেতর ঢুকে গেলো এক অদ্ভুত গভীরতা।অদ্ভুত ফিলিংস।

তার ঠোঁটের ফাঁক ভেঙে জায়ানের ঠোঁট আরও ভেতরে সরে এলো, জিভের ছোঁয়া মিশে গেলো লিয়ানার নিঃশ্বাসে। সে হাঁফাতে লাগলো, বুক ধড়ফড় করছে, কিন্তু তবুও প্রতিরোধ করতে পারলো না। বরং শরীরটা কেমন যেনো দুর্বল হয়ে এলো, হাত দুটো নিজে থেকেই গিয়ে ঠেকলো জায়ানের কাঁধে।
চুম্বনটা দীর্ঘ হলো প্রায় বেশ কিছুক্ষণ, কখনো ধীরে, কখনো আগ্রাসীভাবে।
চাঁদের আলোয় তাদের ছায়া পাহাড়চূড়ার পাথরে কাঁপছিলো, যেন রাত নিজেও এই নিষিদ্ধ, উন্মাদ ফ্রেঞ্চ কিস্ এর সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
জায়ান হঠাৎই নিজের ফর্মাল প্যান্টের পকেট থেকে এক টুকরো কালো কাপড় বের করে লিয়ানার চোখ বেঁধে দিলো।

আরে, এ কী করছেন??
হিসসসস,কোনো কথা না!
লিয়ানার বুকের ভেতর ধড়ফড়ানি শুরু হলো।কি ক করছে জায়ান ভাবতে ভাবতে। চারপাশে শুধু অন্ধকার,কোথায় যাচ্ছে, কী ঘটতে চলেছে, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। তার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে উঠছে। ভেতরে ভেতরে এক অজানা ভয় আর উত্তেজনা মিশে গিয়ে শরীর কাঁপিয়ে তুলছে।জায়ান কোনো কথা না বলে তাকে শক্ত করে নিজের বাহুতে তুলে নিলো। লিয়ানার মনে হলো যেন দুনিয়ার নিয়ন্ত্রণটা পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেছে সে, সবকিছু এখন জায়ানের হাতে। ভারী পদক্ষেপে, ধাতব টকটক শব্দ তুলতে তুলতে জায়ান তাকে নিয়ে নামতে লাগল পাহাড়ি পথ ধরে। বাতাসের ভেতর শীতল কুয়াশার গন্ধ, দূরে কোথাও অচেনা পাখির ডাক, বনভূমির নিস্তব্ধতা তাদের পায়ের শব্দে কেঁপে উঠছে।

অবশেষে, লিয়ানার কানে এলো জলের গুঞ্জন। তারপর।জায়ান ধীরে ধীরে তার চোখের বাঁধন খুলে দিলো।চোখ খোলার সাথে সাথেই লিয়ানা স্তব্ধ হয়ে গেলো।তার সামনে এক অপূর্ব দৃশ্য।
“চাঁদের আলো হ্রদ”
গভীর হ্রদের মাঝখানে পূর্ণিমার চাঁদ নিস্তব্ধ জলের বুক ভরিয়ে তুলেছে রুপালি আলোয়। চারপাশে পাহাড়ের কালো ছায়া, আর হ্রদের তীরে শত শত জোনাকি পোকা আলোর ঝিলিক ছড়িয়ে নাচছে। তারা যেনো মাটিতে তারার মতো চারপাশে ভেসে আছে, আলো-অন্ধকারে মিলেমিশে গেছে।

কাঠের ছোট্ট এক ঘাটে নৌকা বাঁধা।কেউ কখনো ব্যবহার করেছে কিনা তাও জানা নেই।জলপদ্মের গোলাপি,সাদা ফুল হাওয়ার দোলায় নাড়ছে। বাতাসে শীতল কুয়াশা মিশে রয়েছে, সব মিলিয়ে যেন কোনো পরীর দেশের দৃশ্য।আর লিয়ানা সেখানকার রানী।তবে তার পরনে লেডিস শার্ট আর নিচে লং স্কার্ট।সেই স্কার্টটা হালকা উপরে উঠিয়ে দৌড়ে কাঠের সরু ঘাটের দিকে ছুটে গেলো। একেবারে কিনারায় গিয়ে দাঁড়ালো, যেন পৃথিবীর শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছে সে। চারপাশের জলের বুক জুড়ে ছড়িয়ে আছে শত শত জোনাকি আলোছায়ার খেলা।সে দু’হাত মেলে ধরলো, তারপর পাক খেতে খেতে ঘুরতে শুরু করলো আকাশের দিকে তাকিয়ে।

চারপাশে ভেসে আসা জোনাকিদের ধরতে গিয়ে তার হাসির শব্দ ছড়িয়ে পড়ল পুরো হ্রদে, যেন নিস্তব্ধ রাত ভেঙে উঠে সুর তুলেছে।জায়ান সেদিকেই এক দৃষ্টিতে মনোযোগ সহকারে তাকিয়ে আছে।তীব্র হাওয়ায় লিয়ানার চুলগুলো এলোমেলো হয়ে উড়ে উঠছে, চোখের সামনে বারবার এসে পড়ছে।পড়নের স্কার্টটাও তীব্র বাতাসে বার বার উড়ে উড়ে তার পা উন্মুক্ত করে দিচ্ছে।লিয়ানা হাত দিয়ে চুল সরাচ্ছে, তার মুখের কোণে অদ্ভুত এক আনন্দের আভা।এভাবে হাত নাড়ানাড়ির ফলে তার পড়নের শার্টা উপরে উঠতেই জায়ানের চোখে লিয়ানার ফর্সা উদর ভাসমান হয়ে উঠে।জায়ান দৃষ্টি সরাতে গিয়েও পারছে না।ঠান্ডা বাতাসের মাঝে থেকেও কপালে ঘাম জমে উঠে।জায়ানের দেহে আগুনের ঝড়।জায়ান দু পকেটে দু’হাতে রেখে ধীরে ধীরে সামনে এগুতে থাকে, র তার মুখে থেকে সুর ভেসে আসে।

হালকা হাওয়ার মতোন,চাইছি এসো এখন।,,
করছে তোমায় দেখে অল্প বেইমানি মন।,,
বাধঁবো তোমার সাথে আমি আমার জীবন।,,,
জায়ান গিয়েই এক হাতে লিয়ানার কোমড় জড়িয়ে ধরে আরেক হাতে চুল চেপে ধরে ফেলে।
এত ছটফট কেন করছিস??
আহহহ!ব্যথা পাচ্ছি।কি করলাম আবার??রাগ করলেল নাকি? রাগ ভাঙানোর ওষুধ কিন্তুু জানি আমি।
বলেই লিয়ানা জায়ানের পায়ের উপর দাঁড়িয়ে টুপ করে চুমু খেয়ে নেয়।তবে সরে যেতে নিলেই জায়ান ওষ্ঠাধর লড়াইয়ে নেমে পড়ে লিয়ানার সাথে।লিয়ানাও আর বাঁধা দেয় না।নিজেকে ডুবিয়ে দেয় জায়ানের কাছে।জায়ান প্রায় পাগল পায়।অনেক কষ্টে নিজেকে লিয়ানার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে তবে আজ আর পারছে না।দু’হাতে নিজের শার্ট খোলে ছুড়ে ফেলে দেয়।

কি করছেন?
গরম বেড়েছে, আই দিংক্ মাই বডি টেম্পারেচার ইজ রাইজিং।
লিয়ানা জায়ানের কপালে হাত রাখে।
এভাবে শ্বাস নিচ্ছেন কেন?
শরীর খারাপ লাগছে।আই কান্ট কন্ট্রোল মাই সেল্ফ।
জায়ানকে মাঝে এমন উন্মাদনা দেখে লিয়ানা এক পা পিছাতে গেলেই জায়ান ধরে তার বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।জায়ান পাগলের মতো লিয়ানার ঠোঁটে,গালে,গলায় ওষ্ঠাধর ঠেকাতে থাকে।গলায় জোরে কামুড় বসাতেই লিয়ানা চিৎকার দিয়ে উঠে।জায়ান লিয়ানার অধরে আঙুল ঠেকিয়ে।
প্লিজ! আজ রাতটা আমায় দে প্লিজ জান।

জায়ানের উন্মুক্ত দেহে তীব্র ঘ্রাণে আর তার এভাবে নেশালো কন্ঠের আকুতি যেনো সে সবে মাত্রই নেশা করে এসেছে। এসব কিছুই লিয়ানার পুরো সমস্ত শরীর কাঁপিয়ে তুলছে।
বাড়ি চলুন না আগে।খোলা আকাশ।
সো হুয়াট?? আই ডু্ন্ট কেয়ার।আজকের পর থেকে প্রতি রাতে আমায় সহ্য করার জন্যে রেডি হয়ে যাও মিসেস জায়ান খান।
জায়ান লিয়ানার উদরে চুমু দিয়ে বলে,
“লিখবো তোমার হাতে আমি আমার মরণ”

তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ২৫

লেকের জলে তাদের ছায়ামূ্তি ভাসমান।কাঠের সরু ঘাটের উপর জায়ানের কোলে উপর বসিয়ে রেখেছে লিয়ানাকে।লিয়ানা দু পা দিয়ে জায়ানের কোমর আঁকড়ে ধরে আছে,দু-হাত গলায়।লিয়ানার শার্টের বোতাম খোলেই ঝাপিয়ে পড়ে লিয়ানাকে নিজের করে নিয়ে নেয়।জায়ানের দাবিটা ছিলো তীব্র, প্রায় নিষ্ঠুর।ঝুনাকি পোকাগুলো উড়ে যাচ্ছিলো চারপাশে, কিন্তু তাদের দু’জনের ছায়া মিলেমিশে একাকার হয়ে গেলো।একমোহনীয় মিলনে। একরাশ অন্ধকার দখলদারি, একরাশ নিষিদ্ধ মোহ।
জায়ান লিয়ানার কানে ফিসফিস করে বলে উঠে,
“কেমন ফিল হচ্ছে, জান??”

তোকে ছুয়েছি আঁধারে পর্ব ২৭

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here