কালকুঠুরি পর্ব ৭

কালকুঠুরি পর্ব ৭
sumona khatun mollika

রুহানকে মারধর করার অভিযোগে সামিরের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেছে তিহান। সাফিন তার খোজ করতে করতে দেখে সে কোথাও যায়নি বাড়িতে পরে ঘুমাচ্ছে। তার মানে নিশ্চয়ই গত রাতে ইচ্ছে মতো নেশা করে এসেছে।
হুড়মুড় করে গরে ঢুকতেই সামির দুম করে উঠে বসে লুঙ্গি পেচাতে পেচাতে বলল,,
– দড়জাটা নক করা যায়না। আরে রাইতে বেলা, ফ্যানের বাতাসে লুঙ্গি আকাশে। বউকে খেদিয়ে এখন আমার ইজ্জত ধরে টানা হিচড়া করার এতো শখ কেন তোমার,,

সাফিন বলল,
– আমি তোর ইজ্জত ধরে টেনেছি ?
– না টানোনি। নজর দিয়েছ। কি বলচ বল?
– তোরা রুহান কে কেন কেলিয়েছিস?
– ওই সোডিয়াম ক্লোরাইড রে প্রোপোজ ওই দিছিল।
– তাতে তোর কি?
– আরে আজব! তুমিইতো বলেছিলে ছেলেটাকে সরিয়ে দিতে,, ওটাই এই মাল।
– ওটা রুহান ছিল! যাইহোক চ নিচে চ,, আমি দেখছি!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সামির ওভাবেই নিচে যেতে লাগলে সাফিন বলল,,
– জেন্দর! নিচে বিশাল জনতা,, কুচামুচা লুঙ্গি পরেই জাবিগা?
সামির সিকান্দার গেঞ্জি পরতে পরতে বলল,,
– লুঙ্গি কি বস্ত্রের আন্ডারে পরেনা? আরে শর্তমতে,, বস্ত্র দিয়ে অস্ত্র ঢাকলেইতো চলল না?
সাফিন বলদের মতো চেয়ে রইল। সামির নিচে নামতে নামতে দেখল বাড়িতে এতগুলো পুলিশ!! সে সোজা তুহিনের কাছে গিয়ে কানে কানে বলল,,
– বুইঝেন তুহিন ভাই, সামনে ইলেকশন, আপনার কতগুলা ভোট যাইবো গা জানেন?

তুহিন বলল,,
– তার জন্য তুই আমার ভাইকে মেরে ভর্তা বানাবি নাকি!
– চেটকাইয়া দিতাম। একটা কারণে ছেড়ে দিছি। আপনি যদি নিজে না যান,, আমি সাহায্য করি?
– তুহিন লম্বা ভূমিকা শেষে ঠাস করে রুহান এর গালে চড় বসিয়ে বলল,,
– দোষ তো তোরি। হারামজাদা, অফিসার ফেরত চলেন।
কাশেম সামিরের কাছে গিয়ে বলল,,
– কি জাদু করলেন ভাই!! এক্কের সুপারডুপার।
– হ তোর কাইলানীর মতো,,
– ভাই,, কাইলা বইলেন না ভাই, শ্যামলা। আপনেওতো শ্যামলা।
– একটা প্রশ্নের জবাব দিতে পারলে আর কমুনা যা। ক লুঙ্গি কোন ভাষা?
– বাংলা!
– হয়নাই, বাঙ্গি লুঙ্গি বর্মি ভাষা। তুই ফেল।

কাশেম তব্দা খেয়ে চুপ করে রইল। রনি বলল,,
– ভাই,, এবার কারে ভোট দিবেন?
– এতদিন ছাত্রলিগের ছিলাম ভোট ভাঙা টিন রেই দিতাম। কিন্তু আমিতো একটা ফুটো মস্তান বে,,, যারে ইচ্ছে দিমু মাইরা৷ দুটাতো একি মাল। ভাঙা টিন আর সাদা টিন। (তুহিন, সাফিনের কথা বলছে)
সিভান এসে বলল,
– আমিও ভোট দিব।
সামির বলল,
– কারে দিবি?
– বাবাকে,,
– দিস,,,

কাশেম আর রনি একে অপরের দিকে তাকিয়ে বলল,,
– আব সিভান কি করে ভোট দেবে ভাই?
– যেভাবে বাকিরা দেয়।
– মানে ওরতো বয়স,,,,
– সমস্যা কি? অর চাচা আছেনা!
কাশেম আর রনি মাথা নেড়ে চলে যায়। জানে সামিরের কোনো কথার যুক্তি চাওয়া আর কুয়োয় ঝাপ দেওয়া এক ব্যাপার।
আজ ভার্সিটি যাবার পর কাশেম, সামির সব আবার একি জায়গায় বসে আড্ডা মারছে। মাহা আর মেধাকে এক সাথে যেতে দেখে সামির কাশেমের দিকে তাকিয়ে বলল,,

– ওভাবে চেয়ে আছিস কেন? বুঝিনা তুই এতসুন্দর দেখতে,, এক্কের ঝাক্কাস, কাইলানীর প্রেমে পরচস ক্যান, সৃতি তরে কত পছন্দ করে একদম খাসা জিনিস,,, ওটারে পটিয়ে নে। একে পাইলি কোথায়?
– কাইলানী বইলেন না। পাপ হবে। আপনেও তো কালো।
– ওরে শাল্লা,, কাইশসার ঘরে কাইশসা বাঙ্গি, তোর এত সাহস!
– সরি ভাই।
-আগে ক তুই মেধারে পাইলি কই?
– চুরি করতে যায়া।
– কিই!!
– মেধাতো কনস্টেবল চাচার মেয়ে। মনে নাই, বেশ কিছুদিন আগে আপনার সাথে তুহিন দের বাড়িতে ফাইল চুরি করতে গেছিলাম, কনস্টেবল যে আমাকে ধরে নিয়ে গেল,, তার মেয়ে।
– সব ঠিকাছে কিন্তু তাই বলে কালো!!
– ভাই! কালোই ভালো। আচ্ছা ভাই,, আপনি কি কোনোভাবে মাহাদিবা রে,,,
– বাঙ্গির নাতির বাঙ্গির মতই কথা! আমি আর, ওরে!! তাছাড়া ভাঙা টিনের মতিগতি ভালো ঠেকেনা। আমিতো ওর থেকে দুই চড়ের শোধ তুলবোই তুলবো। সময়ের অপেক্ষা।

কালকুঠুরি পর্ব ৬

রাফি অর্থাৎ যে লোকটার সাথে মাহার বিয়ে ঠিক হয়েছে সে আজকে আবার এসেছিল দেখা করতে। কি দুর্ভাগ্য মাহা কাওকে বলতে পারেনা, লোকটার আচরণ একদম পছন্দ নয়। চাচিকে বলে দেখেছে। চাচি যা নয় তা শুনিয়েছে। তবে আর যাই হোক পড়াশোনা তে কোনো আপোষ করেনা৷ কাজের বািরে সবসময় বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকে। বিসিএস দেয়া মুখের কথা নয়৷ তাছাড়া তখনকার সময় মেয়েদের পড়াশোনায় অতো জোড় কেও দিতনা।

কালকুঠুরি পর্ব ৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here