মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ১১
ইশরাত জাহান
গাড়ি থামলো মায়ার ফ্যাশন হাউজের সামনে।গাড়ি থামতেই মায়ার হাতের বাঁধন খুলে দেয় রাজ।রাজের রুমাল দিয়ে এতক্ষণ মায়ার মুখ বেঁধে রাখা ছিল।যার কারণে মায়ার যত তিক্ত কথা একটাও রাজ শ্রবণ করতে পারেনি।এরজন্য নিজেকে পারফেক্ট স্বামী বলে নিজেই সম্বোধন করলো রাজ।মায়ার মুখটা খুলেই ভাবের সাথে বলে ওঠে,”বউয়ের গালি থেকে বাঁচতে হলে তাকে মুখ বেঁধে দিতে হয়।তাহলে বউ যা গালি দিবে তা সব স্বামীর কানের ওপর দিয়ে চলে যাবে।”
“ফর ইওর কাইন্ড ইনফর্মেশন আমি গালি দেইনা।”
“কড়া কথা তো ঠিকই শুনিয়ে দেও।”
ড্রাইভার বাইরে চলে গেলো।সে তার কাজে ব্যাস্ত।রাজ মায়ার কানের কাছে এসে বলে,”মন দিয়ে কাজ করে বাড়িতে চলে যাবে।কাল রাতের অর্ধেক বাসর এখনও যে বাকি আছে।প্রস্তুত থেকো মায়াবতী।ফর আওয়ার স্পেশিয়াল বাথরুম বিলাস।”
“বাসর করার খুব শখ তাই না?”
“স্বামী হয়েছি তো বাসর করার জন্য।”
“ওই বাসর আজ আপনার জেলে হবে।”
“তাহলে কমিশনারকে কল দিয়ে বলি ফুলটুল নিয়ে থানায় যেতে।যদিও সবাই অবাক হবে কিন্তু বউ তো আমার ঘর ছাড়া সব জায়গায় বাসর করাতে চায়।”
“মুখে লাগাম দিন আপনি।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“বউয়ের সামনে মুখে লাগাম আসেনা মায়াবতী।”
“আপনার সাথে কথা বলাটাই আমার বোকামি।”
মায় গাড়ির দরজাটা খুলতে নিলে রাজ মায়ার হাত ধরে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে নেয়।মায়ার ঠোঁটের উপর হাত বুলিয়ে বলে,”বেধে রাখার জন্য ঠোঁটে খুব ব্যাথা করছে তাই না?”
“ব্যাথা দিয়ে আবার দরদ দেখানো হচ্ছে?”
“ব্যাথা দিয়েছিলাম তোমার কারণেই আর দরদ দেখাচ্ছি আমার কারণে”
“মানে?”
“তুমি এত দুষ্টু যে তোমার মুখটা বেঁধে রাখতে হয় ফলস্বরূপ তোমার ঠোঁটে ব্যাথা পেতে হয়।আর এই ঠোঁটে রাজত্ব করার মালিক যেহেতু আমি তাই দরদ আমার হবেই।”
বলেই রাজ মায়ার ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়ে দেরি না করেই ছেড়ে দেয়।মায়া চুপ করে আছে।শত্রু হলেও স্বামী তো!বেশি কিছু করলে স্বামীর অধিকার নিয়ে যে প্রশ্ন উঠবে এটা সে খুব ভালো করেই জানে।রাজ মায়ার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে,”তোমার মাঝে যত ব্যাথা বিরাজ করে সব আমি সাড়িয়ে দিবো।”
“আমার এই ব্যাথার একমাত্র কারণ তো আপনি।”
“তাহলে আমিই সেই ব্যাথা কমানোর দায়িত্ব মাথা পেতে নিবো।”
মায়া কোনো কথা না বলে গাড়ির দরজা খুলে চলে যায়।মায়া পিছনে না ঘুরে সোজা হাঁটতে থাকে।রাজ সিটে মাথা এলিয়ে রেখেছে।মায়া কিছুটা দূরে যেতেই রাজ চোখে সানগ্লাস দিয়ে গলা উঁচিয়ে বলে,”আব্বে এই মায়াবতী।”
মায়ার পা থেমে গেলো।মনের মধ্যে শীতল হাওয়া বয়ে গেলো।তবুও মুখে কাঠিন্য প্রকাশ করে পিছু ফিরলো।রাজ ঠোঁটে দুষ্টু হাসি রেখেই বলে,”আমার বক্ষে তোমাকে স্বাগতম মায়াবতী।”
বলেই বক্ষতে আঙুল দিয়ে ইশারা করল রাজ।মায়া কোনো উত্তর না দিয়ে চলে গেলো।মায়া চলে যেতেই ড্রাইভার এসে গাড়িতে বসলো।রাজ ড্রাইভারের মাথায় টোকা দিয়ে বলে,”নিজে একা একা সিগারেট খেয়ে আসলে আমারটা কোথায়?”
ড্রাইভার দিলো সিগারেট।গাড়ির গ্লাস উচু করে লাগিয়ে ভিতরে বসে সিগারেট এর সাথে কোথাও মগ্ন হয়ে আছে রাজ।ড্রাইভার গাড়ি চালাতে ব্যাস্ত।ড্রাইভার এবার রাজের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়,”আপনাকে চিন্তিত লাগছে স্যার।”
“ওই একটু আছি চিন্তায়।”
“কেন?”
“পিঠপিছে নিজের লোকেরাই যে আমাকে আঘাত করতে ব্যাস্ত।বাইরের লোকের কথা আলাদা কিন্তু নিজের লোক যদি আঘাত করতে আসে এটা যেনো মৃত্যুর যন্ত্রণা দিয়ে যায়।”
রাজ সিগারেট শেষ করে কাচ নামিয়ে সিগারেট ফেলে দিলো।অতঃপর আবারও কাচ উঠালো।মুখে কিছু স্প্রে করলো যেটা গন্ধ নিবারণ করে।ড্রাইভার এটা দেখে বলে,”ম্যাডাম যেগুলো পছন্দ করেনা আপনি ওগুলো ত্যাগ করলেই তো পারেন।”
“তোমার ম্যাডাম আস্ত আমিটাকেই তো পছন্দ করেনা।নিজেকেও কি তাহলে ত্যাগ করে দিবো পৃথিবী থেকে?”
ড্রাইভার কিছু বলতে পারলো না।এমন কথার মাঝে কি উত্তর আসে তাও আবার এক মন্ত্রীর সাথে।এটাই তার জানা নেই।আবার অনেক সময় উত্তর জানা থাকলেও উচ্চবিত্ত পদবীর জন্য অনেকে চুপ থাকে।রাজ জানে সে তার ভারত্ব বজায় রাখছে।তাই নিজে থেকেই বলে,”যেদিন থেকে মায়াবতী আমাকে তার জীবনে নির্দ্বিধায় গ্রহণ করে নিবে সেদিন থেকেই তার অপছন্দের সকল জিনিস বর্জন করে দিবো।কারণ বর্তমানে তার অপছন্দের তালিকায় আমি নামক ব্যক্তিটা গেঁথে আছি। আর সকল কিছু বর্জন করতে হলে আমাকেও তার থেকে সরে আসতে হবে।যেটা আমি কিছুতেই পারব না।”
“খুব ভালোবাসেন আপনি তাকে?”
“নিজের সর্বস্ব দিয়েই ভালোবাসি আমি আমার মায়াবতীকে।যে ভালোবাসায় নেই কোনো চাওয়া পাওয়া আছে শুধু তাকে নিজের বক্ষে আগলে রাখার আকাঙ্ক্ষা।”
ড্রাইভার হাসলো শুধু।মন্ত্রীর আসন পাওয়ার পরেও এতগুলো বছর একা জীবন পার করেছে।কত কত প্রপোজাল এসেছিলো কিন্তু গ্রহণ করেনি রাজ।সে তো অনেক পুরোনো ড্রাইভার।তাই প্রায় খোঁজ খবর সেও রাখে।এতগুলো বছর সে শুধু দেখেছে রাজকে সৎ হয়ে সকলের পাশে দাঁড়াতে।যখন দেখেছে উপর থেকে তার প্রতি চাপ এসেছে তখন সে থেমে থাকেনি বরং লুকিয়ে হলেও সবাইকে আড়ালে সহায়তা করেছে।
নিজের অফিসে এসে বসলো মাত্র রাজ।এর মাঝেই পিয়াশ কিছু ফাইল দিলো।ওগুলো দিয়ে বলে,”আপনার নামে এই অবজেকশন এসেছে স্যার।শুধু তাই না ঘটনাচক্রে আপনার উপর দোষ চাপানো হয়েছে আপনি নাকি গার্মেন্টস থেকে মেয়েদের কিডন্যাপ করিয়ে বিদেশে পাচার করে দেন।”
রাজ ভ্রু কুঁচকে তাকালো।পিয়াশ শুকনো ঢোক গিলে বলল,”না মানে আমাদের দলের একটি ছেলে নাম রকি।ও এতদিন আমাদের দলে ছিলো।বাজারে আর যানবাহন এলাকায় লুটপাট করে বেড়ায় দিনকে দিন।যেহেতু ও আপনার দলের তাই আপনাকেই এসবের দায়ভার নিতে বলা।আর এই কেসে যদি আপনি চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে কোনো সমাধান দিতে না পারেন তাহলে আপনাকে অ্যারেস্ট করা হবে।সকল প্রমাণ আপনার বিরুদ্ধে।”
রাজ চুপ করে শুনছে।পিয়াশ একটু ঘাবড়ে আছে।এটা দেখে রাজ বলে,”আরও কিছু কি বলতে চাও?”
“আপনার কথামত তদন্ত করেছি।”
“কি জানতে পারলে?”
“আপনার নামে এই এলিগেশন অন্য কেউ না মায়া ম্যাম দিয়েছেন।”
রাজ চোখটা বন্ধ করে চেয়ারে মাথা এলিয়ে দেয়।মনের মধ্যে কষ্টের গভীরতা সেই বুঝতে পারছে শুধু।বউয়ের সাথেই তার যুদ্ধ।হয়তো এখনই একটু চোখ ভিজতে পারে কিন্তু পুরুষ মানুষের মনটা খুবই শক্ত।তাই তো রাজ কান্না করবে না।পিয়াশ শান্তনা দিতে বলে,”আমার মনে হয় ম্যাম ভুল বুঝেছে আপনাকে।কারণ ম্যাম তো তার গার্মেন্টস থেকে মেয়েদের কিডন্যাপ হওয়ার জন্য প্রেশারে আছে।হয়তো যে তিনজন মেয়েকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না তাদের পরিবার চাপ দিচ্ছে তাকে। তাই এমন করেছে।”
“রকির সাথে আমাদের দলের আর কে কে ছিলো?”
“আমাদের দলের কেউ ছিল না কিন্তু অন্য দলের কিছু চেলাপেলা ছিলো।এটা আমরা চিনেছি কারণ এর আগে মন্দির ভাঙায় ওরা যুক্ত ছিলো।”
রাজ কিছু ভেবে মৃদু হেসে বলে,”আজকে তোমাকে একটা নতুন চাকরি দিবো।”
“কি স্যার?”
“মাছ বিক্রেতা হবে তুমি।”
পিয়াশ অবাক হয়ে বলে,”কেনো স্যার?”
রাজ ঠোঁটে দুষ্টু হাসি রেখে বলে,”পিয়ু বেবী কি আমার জন্য একটু মাছ বিক্রেতা হতে পারবে না?”
“সেইদিনই তো আপনার জন্য আমাকে বিখারি সাজতে হলো আজ আবার মাছ বিক্রেতা কেন?”
“আমার শত্রু খুঁজে বের করার জন্য তোমাকে একটু ছদ্মবেশ নিতে তো হবেই পিয়ু বেবী।”
“আপনি এসবের জন্য আমাকেই খুঁজে পেলেন?”
“তুমি একমাত্র আমার আশা ভরসা।যাকে আমি চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারি।”
“এতটাই বিশ্বাস যে একবার ভিখারী তো আরেকবার মাছ বিক্রেতা সাজাবেন!”
“আমি আমার বউকেও এত বিশ্বাস করিনা যতটা তোমাকে বিশ্বাস করি পিয়ু বেবী।তাই তো ভালোবেসে সকল সহজ কাজ তোমাকে দেই।”
পিয়াশ জানে এই লোকের সাথে কথায় সে পারবে না।তাই হার মেনে বলে,”আচ্ছা আমাকে কি কি করতে হবে বলুন।”
রাজ সব বুঝিয়ে দিলো।পিয়ু সম্মতি দিয়ে চলে গেলো।রাজ মাথাটা চেয়ারে আবারও এলিয়ে দিয়ে ভাবছে কীভাবে কী ঠিক করবে।সবথেকে বড় কথা সে আজও জানতে পারল না মায়ার সাথে সেদিন কি এমন হয়েছিলো, যে মায়া তাকে ঘৃণা করে?কার থেকে জানতে পারবে সে?মাহমুদ সরদার তো তখন গ্রামে ছিলেন।তাই সেও কিছু জানেন না।রাজের দুশ্চিন্তার মাঝে মাহমুদ সরদারের কন্ঠ কানে ভেসে আসে।শুনতে পায়,”আমার ছেলেকে এতটা দুর্বল আমি কখনও হতে দেখিনি।”
রাজ চোখটা মেলে সামনে তাকাতেই বাবাকে দেখে হাফ ছাড়ল।মাহমুদ সরদার এসে সামনের চেয়ারে বসলেন।পিছন থেকে একজন এসে চা দিয়ে গেলো।মাহমুদ সরদার অর্ডার করে এসেছিলেন।লোকটা চলে যেতেই রাজ চায়ে চুমুক দিয়ে বলে,”তোমার বউমার হয়ে এত যুদ্ধ করলে আর তোমার সেই বউমা আমাকে আজ শাসিয়ে গেছে।”
“কি বলেছে সে?”
“বলল আজকে বাসর নাকি আমাকে জেলে বসে করতে হবে।”
“বাসর তো কাল হলো।আজ আবার বাসরের কথা উঠলো কেন?”
“বাসর হয়নি বাবা।”
দরজার কাছে কেউ চুচু করে উঠলো।রাজ তাকিয়ে দেখলো রুদ্র দাড়িয়ে আছে।সাদা রঙের ফরমাল ড্রেস আর দুইপাশে চিকুন কাল বেল্ট সেট করা।দেখতে একদম সিআইডি অফিসারের মত লাগছে।আসলেই তো সে এই প্রফেশনের।রাজ রুদ্রকে দেখে বলে,”এসেছে আরেকজন আমার সংসার নিয়ে খোচা দিতে।”
“বাসরটাও ঠিকমত করতে পারল না মন্ত্রী মশাই।আফসোস তো হবেই।”
“দোয়া করি আমার বউয়ের মত তোমার বউয়ের যেনো হাঁপানির রোগ হয়।তখন বুঝবে কষ্ট।”
“আমি হাঁপানির ঔষধ নিয়েই যাব বাসরে।শুধু হাঁপানি না যত প্রকার রোগ আছে সবগুলোর ঔষধ রেডি করে রাখব।জাতে বাসরটা ইনকমপ্লিট না হয়।”
“ওটা বাসরঘর হবে নাকি ফার্মেসি?”
“দুটোই।”
মাহমুদ সরদার দুজনের কথা থামিয়ে বলেন,”তোমাদের মাঝে যে আমি আছি এটা দেখতে পাচ্ছো?”
রুদ্র মাহমুদ সরদারের কাধে হাত রেখে একটু আদুরে কণ্ঠে বলে,”তুমি তো আমাদের বন্ধু হও।বন্ধুর সামনে এগুলো বলাই যায়।”
বলেই রাজ আর রুদ্র হেসে দেয়।মাহমুদ সরদার রুদ্রকে ভয় দেখাতে বলে,”এই জন্যই আমার মেয়েটা তোমাকে ভালোবাসেনা।শুধু কি তোমার কথা?আমার এই ছেলেটাকেও তার বউ ভালোবাসবে না।”
“ভালোবাসে না কে বলল?তোমার মেয়ের ফেচফেচ কান্না আমি দেখিনি মনে হয়?কবে যে এসব ঝামেলা মিটবে কে জানে!”
“আসল শত্রুর খোঁজ না পেলে কিছুই সমাধান হবে না।আমার বউ যেমন আমাকে ভুল বুঝে তোকেও তোর হবু বউ ভুল বুঝবে।”
রুদ্র রাজের থেকে ফাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে আর বলে,”ওই গুন্ডাগুলোকে প্রশ্ন করা হচ্ছে।জানতে পারলাম কোনো মহিলা তাদেরকে পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে এই কাজ করতে বলেছে।ফোন কেড়ে নিয়েছি।কল হিস্টোরির একটা লিস্ট করা হবে।এরপর বাকি তথ্য দেওয়া যাবে।ভাবা যায়!প্ল্যান করে সামনে পিছনে গুন্ডা রেখেছিল জাতে শেষ করে দিতে পারে।”
রাজ কিছু ভেবে মাহমুদ সরদারের উদ্দেশ্যে বলে,”আমার মাঝে মাঝে আফসোস হয় বাবা।”
“কেন?”
“তোমাদের জেনারেশনে কেন বাড়িতে সিসি ক্যামেরা ছিলো না।থাকলে বাসায় কে কি করেছে জানা যেতো।”
“এমনভাবে বলছো যেনো ওই সময় তুমি পৃথিবীতে আসোনি!”
“পৃথিবীতে ঠিকই এসেছিলাম কিন্তু কোনো কাজের ছিলাম না।তুমি কাজের হয়েও আজও আমার উপকারে আসলে না।”
“শুধুমাত্র তোমার বউয়ের ঘটনার জন্য আমাকে অকাজের বানিয়ে দিলে তুমি?”
“বউয়ের জন্য আমি সব পারি বাবা।”
“আর এই বৃদ্ধ বাবার জন্য কি করতে পারো তুমি?”
“বৃদ্ধ বাবার জন্য নিজেকে বাবা বানিয়ে তোমাকে দাদু ডাক শোনার অধিকার করে দিতে পারি।”
রুদ্র ফাইলগুলো দেখতে দেখতেই হেসে দেয়।রাজ আর রুদ্র মিলে হাই ফাইভ করে নিলো।মাহমুদ সরদার রুদ্রকে কাছে পেয়েছিল তাই রুদ্রের মাথায় আলতো চাপড় মেরে চলে গেলেন।
শপিংমলে এসেছে বীর জারা ও মৌ।একেকটা পোশাক দেখছে আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছে জারা।কোন জায়গা দিয়ে সে পালাতে পারবে তাই খুঁজছে।অনেক খোজার পর পেয়েও গেলো।চেঞ্জিং রুমের পাশে ফাঁকা জায়গায় একটি জানালা আছে।ওখান থেকেই সবার চোখ আড়াল করে পালাবে।জারা একটি পোশাক নিয়ে বলে,”আমি এটা ট্রাই করি।তোমরা ওদিকটায় বসো।আমি আসছি।”
মৌ সম্মতি দিয়ে বলে,”আচ্ছা।”
মায়াবতীর ইচ্ছা সিজন ২ পর্ব ১০
বীর ওর ফোনে ব্যাস্ত।জারা প্রথমে চেঞ্জিং রুমে চলে যায়।তারপর দরজা হালকা খুলে দেখলো সবার মনোযোগ কোনদিকে।কেউ তার দিকে তাকিয়ে নেই।বীর তো ওখানেই নেই।তাই জারা দুটো জুতা নিজের হাতে নিয়ে পাশের সেই ফাঁকা জানালা দিয়ে নিচে নামতে থাকে।পিছনের দিকে হওয়ায় পাইপ থাকে সেখানে।কষ্ট করে পাইপ বেয়ে নিচে নেমে জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে।তবে একটু হেসে বলে,”অবশেষে ওই খুনির থেকে পালাতে পেরেছি।”
“কিন্তু খুনিটা তো তোমার পিছনে জানেমান।”
বীরের কন্ঠ ঠিক তার কান বরাবর গরম নিঃশ্বাসের সাথে।জারার চোখদুটো আপনাআপনি বড় হয়ে যায়। এত কষ্ট করে পাইপ বেয়ে নামলো সব বৃথা।বীর ঠোঁট প্রসারিত করে বলে,”ইউ ক্যান্ট এস্কেপ ফ্রম মি জানেমান।”
