কালকুঠুরি পর্ব ১৫

কালকুঠুরি পর্ব ১৫
sumona khatun mollika

মুহিব পরেরদিন সিকান্দার বাড়ি গিয়ে অপেক্ষা করছিল সামির কখন নিচে আসবে। তবে সামির সবসময়ই উল্টা ছুড়া !! পেছন থেকে এসে বলল,
– কি চাই?
মুহিব হুট করে সরে দাড়িয়ে বলল,
– ভাই আপনে বাহির থেকে আসতেছেন?
– কেন তুই জানিস না, আমি উল্টা বাঙ্গালী,, সবাই সকালে ঘর থেকে বেরোয় আর আমি ঢুকি।
– ভাই,,, আপনি মাহার বিরুদ্ধে স্টেটমেন্ট দিছিলেন শুনলাম
– হ দিছি তো?
– কেন ভাই? মাহারে কি জেলে রাখতে চান?
– উহু,, তোর মনে হয় বিরোধী রে হারানোর জন্য হেরে জেলে ঢুকাইয়া দল শক্ত করা লোক আমি??
– তাইলে??
– তুই বুঝবিনা। পার্সোনাল ম্যাটার। যা বাড়িযা।

কথাগুলো বলতে বলতেই সামির ভেতরে চলে গেল। মুহিব বুঝলো জিজ্ঞেস করতে আসাটাও বেকার। উল্টো আরো কড়া করে যদি মাহার পিছে লেগে যায়! এমনিতেও সামির সম্পর্কে মুহিবের বেশ ভালো ধারণা আছে। মুহিব সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। সামির এক্কা দুক্কা করতে করতে হাতে বাইকের চাবি ঘুরাতে ঘুরাতে ওপরে উঠে যায়। মাঝ সিড়ি তে ইনায়া জিজ্ঞেস করল,,
– রাত বিরাতে কোথায় পালিয়ে যান সামির ভাই?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

– শান্তিরে খুজতে। শান্তির মা মরছে রে ইনু,, শান্তির খোঁজে গেছিলাম।
ইনায়া আস্তে করে গাল টেনে হেসে বলে,,
– সামির ভাই একটা কথা বলব,,
– ঠুসে ফেল,,
– না থাক পরেই বলব,,
– না বলাই ভালো। আমার রহস্যহীন কিছুই ভাল্লাগে না।
সামির আর কিছু না বলে সোজা উপরে চলে যায়। ইনায়া দম ফেলে বলে,,
– আর রহস্য,, আপনার চে বড় রহস্য আমি এ দরিয়ায় দেখিনি সামির সিকান্দার!

ঘরে পৌছুতেই দেখল, সালার সিকান্দার তার জন্য অপেক্ষা করছিল। সামির কোনো পাত্তাই দিলনা যেন সামনে কেও নেইই। সালার সিকান্দার ৩ মিনিট ধৈর্য রেখে নিজেই বললেন,,
– তোর সাথে আমার কথা আছে।
– আমার নেই। আমি খুব বিজি। আপনার ছেলেকে গিয়ে সময় দিন। সে হবু মেয়র বলে কথা।
সালার সিকান্দার মিটি করে হেসে বললেন,,
– তোর কি সাফিনের সাথে হিংসে হচ্ছে?
– অমাবস্যা আর পূর্ণিমার কোনোদিন তুলনা হয়না।

সালার সিকান্দার উঠে দাড়িয়ে বললেন,,
– হওয়া উচিৎও না। তোকে আমি কোলে নিয়ে দোল দিতে আসিনি। নির্বাচনের কয়টা দিন তুই আর রাগিবের সাথে দেখা করবিনা। ভোটের দিনের কাজ তোকে সাফিন বুঝিয়ে দেবে।
সামির বাকা হেসে আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল ঠিক করতে করতে ভেংচি কাটা স্বরে বলল,,
– কামলার কামই তো কাম করা। যেচে বলতে আসার প্রয়োজন ছিলনা।
সালার সিকান্দার কোনো কথা না বলে বেরিয়ে গেলেন। তারপর সামির গোসল সেরে এসে টেবিলে বসে মাহার নিয়ে যাওয়া খাতাটা বের করল,,

সেদিন খেয়াল করেনি তবে আজ দেখছে মাহা খাতার ওপরের নামটা চেঞ্জ করে সামির বাঙ্গি থেকে সামির সিকান্দার লিখেছে,,
সামির ভ্রু কুচকে ভাবল, ভালোই সাহস, শিক্ষা হাইজ্যাক করে আবার চেঞ্জ করার চেষ্টা! সামির আবারো সিকান্দার লেখাটা কেটে বাঙ্গি লিখে রাখল।
খতার ভেতরে ঢুকে চোখের ছবিদুটো মেলে এটাও বুঝলো মাহা বড্ড মনযোগ দিয়ে ছবিদুটো দেখেছে। ২বি পেন্সিল দিয়ে আঁকানো ছবিতে হাত দেয়ার কারণে একজায়গায় ঘষা খেয়ে ব্লার হয়ে গেছে।
সামির রাবার দিয়ে সেটুকু ঠিক করতে করতে ভ্রু নাচিয়ে বলল,,
– চোরের মতো আসার কি আছে? আমারতো আর বউ নাই যে চুরি করার লোভে আইছো।

পেছন থেকে সাফিন বলল,
‎- তুমি শালা পড়া বাদ দিয়ে আঁকাআকি মারাচ্ছো!
আর্টিস্ট হওয়ার এত শখ তো আগে বললে চারুকলা প্রদর্শনীতে নাম লেখিয়ে আসতাম।
– তুমি কেন আসছো সেডা বুলো।
– তোর সাথে কন্ট্র্যাক্ট করতে, তোর মতো ভিলেনের সাথে আর কিইবা কথা থাকতে পারে বল,,
– সেটাই। কাগজ দিয়ে চলে যাও।
– আরেকটা কথা,, তোর বিয়ে,, ইনায়ার সাথে।
– আমি বিয়া করতে পাইরবোনা। ইনায়ারেতো আরোইনা।
– কেন?
– শুভাকাঙ্ক্ষীদের জীবন বরবাদের ইচ্ছে আমার নাই। আর নাই ইনায়ার সাথে শত্রুতা আছে। তাহলে কেন বিয়ে করব।
– এজ ইওর উইশ,, আমি তোকে কোনোদিন বাধা দিনাই। ফোর্সও করিনাই। তবে ইনায়া তোরে ভালোবাসে। লেনাদেনা ঠিকঠাক,, তোকে পুরার পুরা চেনে। আমার হিসাবে তোর জন্য পার্ফেক্ট।

সামির বাকা হেসে আবারো নিজের কাজে মন দিলে সাফিন খাতাটা টেনে নিয়ে বলল,,
– রেজাল্ট খারাপ হলে আঁকাআকি ভরে দেব।
সামির খাতাটা ছো মেরে নিয়ে বলল,,
– আমার ব্যাপার।
সাফিন চলে গেলে সামির টের পায় বারান্দা টপকে কেও আসছে। উঠে গিয়ে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে বলে,,
– কিরে বাঙ্গির নাতি,, এদিক দিয়ে ক্যান?
– নিচে মেয়র সাব ঘাড়ানি দিছে ভাই। কইছে ইলেকশনের কয়দিন আপনারে দুর থেকে চোখে চোখে রাখতে।
সামির তার কাজে ব্যাস্ত। কাশেম পাশে বসে জিজ্ঞেস করল,,
– ছবিডি সুন্দে হইছে। কি ভাবতাছেন ভাই?
সামির উল্টোঘুরে ফ্যানের দিকে তাকিয়ে রসিক কণ্ঠে গেয়ে উঠলো,,

~~ একজনে ছবি আঁকে একমনে
ও ওমন
আরেকজনে বসে বসে রঙ মাখে
ও আমার সেই ছবিখান
নষ্ট করে কোনজনা কোনজনা
তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা
বাঙ্গি জানোনা
তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা।

কাশেম বলল,,
– ভইকি কোনো ফ্যাসাদে পরছেন? আপনারতো পরার কথা না।
– তোকে বুলা লাইগবে ? কি কামে আইছোস?
– একটা খবর দিতে,, ওইযে হিরোডার নাম কি,, পুলিশ হিরো,,
– মোল্লা উদ্দিন।
– মাহবুব উদ্দিন হয় হয়,, হের মায়ে মইরেছে ভাই।

সামির ঘাড় তুলে বলল,,
– মরছে মানে? খুন নাকি?
-না ভাই, স্ট্রোক কইরা মইরেছে।
– ইশশহ,, ইনশাআল্লাহ।

কাশেম বুজতে না পেরে জিজ্ঞেস করল,
– ভাই আপনি মরার পরে হের লগেও দেহা করবেন? কিন্তু কেন?
– কেন নয়,, সালাম ঠুকে আসবো,, বলব,, আপনার মেযেকে ডেলিভার করা সামির বাঙ্গির প্রণাম ।

কাশেম আবারো দেয়াল টপকে বেরিয়ে যায়। সামির খাতাটা পাশে রেখে চোখ বোজে। তলিয়ে যায় গভীর নিদ্রায়।
মাহা আবারো মাহবুব উদ্দিন এর বাড়ি গেছে৷ সাথে আছে মুহিব। মুহিবের আচরণে সে কিছুটা ধাচ করতে পারলেও স্পষ্ট বোঝেনা। মুহিব কখনো মাহাকে বলেইনি সে মাহাকে ভালোবাসে।
মাহবুব উদ্দিন সাসপেন্ডেড। মা মরে যাওয়ায় সে আরো ভেঙে পরেছে।
মাহা তাকে শান্তনা দিয়ে ভাগ্যের লেখা মেনে নিতে বলল। সত্যি এটাই যার যতটুকু হায়াত সৃষ্টিকর্তা লিখে রেখেছেন।

এই ঘটনার বেরিয়ে যায় কিছুদিন। আগামী পরশুদিন ভোট। সবাই জানে বিরুদ্ধে দাড়িয়েও লাভ নেই বিজয়ী হবে আবু সালার সিকান্দার এর ছেলে সাফিন সিকান্দার। এতদিন বাপকে কেও নামাতে পারেনি। আর এখন ছেলে,, সেত এক ধাপ এগিয়ে।

মাহবুব উদ্দিন মা মরার পর থেকে নাখেয়ে। পুরো বাড়িতে ৪ জন থাকত। মা দুই ভাই আর বোনটা। ভাই মুগ্ধ উদ্দিন সেও কাঁদতে কাঁদতে অস্হির। মা বোনকে পরপর হারিয়ে শোকাবহ দুজনেই। মাহা এসেছিল রান্না করে দিয়ে গেছে। চাচি আটকেছিল। তবে চাচা বলেছেন,
” যেতে দাও। দুদিন পর তো আর অনুমতি চাইবেনা ”

মাহা একা আসেনি সাথে করে মধুকেও নিয়েসেছে
। নির্লজ্জ মধু বাকি কিছু দেখছেনা। দেখছে মাহবুব উদ্দিন কে। বলা যায় প্রথম দর্শনে প্রেমে পড়ে গেছে।
মাহা সবকিছুর পরেও নিজের পড়ার দিকে বড্ড মনোযোগী। বাড়ি ফিরে ঠিক সময়মতো পড়তে বসে যায়। সামনের মাসে তারো পরীক্ষা। সামিরদের পরীক্ষার ৪ দিন পর থেকে মাহাদের পরীক্ষা। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে মাহার যখন রুমাশার কথা মনে হয় গা কাটা দিয়ে ওঠে।
বড্ড করুণ মৃত্যু হয়েছে তার৷ কতই আর বযস হবে ১৬ কি ১৭!
সামির সিকান্দার যদি নাই মারে তাহলে মারলোটা কে। সাফিন সিকান্দার? শুধু রাজনীতি করলেইকি তাকে দোষ দেয়া যায়!

মুহিব দড়জায় টোকা দিতেই মাহা ওড়না ঠিক করে বলল,,
– দড়জা খোলা আছে।
মুহিব বলল,,
– রাফির বাড়ির লোকজন ফোন করেছিল। তোকে কেন জেলে নিল? কি করেছিস এ সমন্ধে জানতে। আচ্ছা মেহু,, তোর মনে হয় ওরা তোকে পড়তে দেবে? ওখানে থেকে পারবি পড়াশোনা কন্টিনিউ করতে? বিসিএস কিন্তু মুড়ির মোয়া নয়।

‎মাহা বাকা হেসে বই গোছাতে গোছাতে অকপট স্বরে জবাব দেয়,,
– এখানে থেকে পারলে, ওখানেও পারবো মুহিব ভাই।
– যদি খরচ করতে না চায়?
– আমার বাপ মা ঠিকি মরেছে কিন্তু নিঃস্ব করে যায়নি মুহিব ভাই। আল্লাহ দুনিয়ায় যখন পাঠিয়েছেন নিশ্চয়ই রিজিকের ব্যাবস্হা করেই পাঠিয়েছেন।

মুহিব ঘাড় নাড়ায়। মাহা কিছু একটা মনে করার মতো করে বলে,,
– মুহিব ভাই? যখন আমি আর আপনি মাহবুব উদ্দিন এর বাড়িতে গিয়েছিলাম তার ক’দিন আগে আপনি কি কারণে ওনার বাড়িতে গেছিলেন? মানে বাড়ির বাইরে দাড়িয়ে ছিলেন।

মাহা আন্দাজে ঢিলটা মারলেও ঠিক জায়গায় নিশানা লেগেছে। এমনভাবে জিজ্ঞেস করেছে যেন সে আগে থেকে নিশ্চিত যে মুহিব সেদিন সেখানে ছিল। মুহিব নিজের দোষ ঢাকতে জবাব দেয়,
– সামির ভাইয়ের সাথে কথা ছিল। ওখানে দেখা হয়ে গেল, দাড়িয়ে কথা বললাম এইই৷

মাহার ভ্রু কুঞ্চিত হলে আরো কাঠ কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,,
– সামির?? সামির সিকান্দার? সে ওই পথে কেন গিয়েছিল? তার বাড়িতো উল্টো পাশে।
মুহিব এবার থতমত খেয়ে যায়। আমতা আমতা করে বলে,,
– ও হ্যাএ,,, রাগিব দেওয়ানের বাড়ি গেছিল। চিনবি?? নির্বাচন সভাপতি রাগিব দেওয়ান তার বাড়ি। ইলেকশনএর ব্যাপারে কথা বলতে।

– কিন্তু আমার যতদূর জানা,, সামির সিকান্দার কে তো ইরেকশন ম্যাটার থেকে দুরে রাখা হয়। তার জানের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে,,, ??
মুহির চুল নেড়ে বলল,
– সেটা আমি কি করে জানবো বল? খেয়েছিস রাতে?
– রুমাশাকে তাহলে কে মারলো?? কেনইবা মারলো,, ওইটুকু বাচ্চার কি দোষ।

মুহিব উঠে দাড়িয়ে মাজায় হাত দিয়ে বলে,
– দেখ মেহু,, তোর এতসব জানার প্রয়োজন নাই। তুই নিজের পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার চেষ্টা কর। এসবের জন্য প্রশাসন আছে। শুধু শুধু বিপদ বারাস না।

বলেই মুহিব সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। মাহারো এবার কেমন মুহিবের গা থেকে সন্দেহের গন্ধ লাগে। এত তোতলানোর কি ছিল।
পরেরদিন ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে সামির আর কাশেম সোজা উত্তর পাড়া চলে যায়। এতখন ভীর ঠান্ডাই ছিল সামিরকে দেখে যুকদল হুড়োহুড়ি করে চিৎকার শুরু করলে এমপি তামিম খন্দকার সালার সিকান্দার এর কানে কানে বললেন,,
– আপনার মনে হয়না যদি সামিররে ভোটে দাড়া করাইতেন তাইলে,,,
– ভোটেরি প্রয়োজন হতো না।

এমপি সাহেব মুচকি করে হাসলেন । সামির উঠে সোজা মাইকের সামনে। তবে জনগন উত্তাল করা ভাষণ দিতে মাঝখান দিয়ে বলে উঠলো,,
– শালার বাঙ্গির গরম!!
সবাই হোহো করে হেসে উঠল। সামির লুঙ্গি উচিয়ে মাজায় বেধে বলল,,
– ভোটের দিন কেও গোলমাল করবিনা। তরা গোলমাল করলে আমি কি বাল ছিড়মু!

যখন প্রশ্ন উঠলো,, সামির ভাই কোন দলের সাপোর্টার? কারে ভোট দেবেন?
সামির কোনো জবাব দেয়ার আগেই নিচে গোলযোগ শুরু হয়ে গেল। তাদেরকে কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। সামির একবার ভালো করেই বলল,,
– চুপ কর বলচি,,,
তাও কেও থামছেনা একেই গরম তারওপর জনতার গরম! সামিরের মাথা পুরো হিটলার হয়ে গেল। । মাইকটা মুখ বরাবর ঘুরিয়ে বাহাত উচিয়ে একটা চিৎকার দিয়ে বলল,,

– মাইগার নাতিরা মাগি মাইনষের মতো কুদাকুদি বন্দ কর নাইলে এক্কেরে বোম মাইরা ভোট পেছনে ভইরে দিম । ধের বারা* ভোটের গুষ্টি মারি।
ব্যাস শুধু ৩ সেকেন্ড, চারপাশে খাখা নিস্তব্ধতা,,,,, সামিরযে রগচটা এটা সবাই জানে, কিন্তু পেছনে বসে থাকা বাপ চাচা, এমপি মন্ত্রীর সামনে এভাবে গাল দেবে জানা নেই।
সামির কপালের ঘাম মুছে আবার জবাব দিল,

কালকুঠুরি পর্ব ১৪

– আমি কাওরে ভোট দিম না। যে জিতবো আমি হের দলে। বাপ, চাচা ঠাপাইনা। তগো যার যা আছে তাই নিয়া ভোট দে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু,
সামির মাঠ ছাড়ার আগ পর্যন্ত কেও আর কোনো আওয়াজ করে নি। সামির কাশেম আর রনি মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যেতেই সালার সিকান্দার বাকি কাজে মন দেন।

কালকুঠুরি পর্ব ১৬

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here