সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৪৯
neelarahman
নুর: এই শাড়িটা তো খুব সুন্দর বড় আম্মু?
নওরিন আফরোজ: তোর পছন্দ হয়েছে ?ঠিক আছে তাহলে তুই নিয়ে যা ।আয় তোকে শাড়িটা সুন্দর করে পরিয়ে দেই।
সামিহা বেগম অবাক হয়ে তাকালেন নওরিন আফরোজ এর দিকে কারণ গতকালকেই কথা হচ্ছিল শাড়িটা নরিন আফরোজ তার ছেলের বউ অর্থাৎ সাদাফের বউ এর জন্য রেখেছে ।
তাহলে নূরকে পরিয়ে দিতে চাইলো কেন ?তার মানে কি নওরিন আফরোজ মনে মনে নূরকে পছন্দ করে?
যদি এমন হয় তাহলে সামিহা বেগমের থেকে খুশি যে আর কেউ হবে না উনি এটাই চেয়েছিলেন সবাই খুশি খুশি নুরকে যদি সাদাবের বউ হিসেবে মেনে নেয় তাহলে উনি অনেক খুশি হবে। নুর সারাক্ষণ ওনার চোখের সামনে থাকবে নূরের শ্বশুরবাড়ি বাবার বাড়ি একটাই হবে কেউ ওকে কিছু বলতে পারবেনা ।কোন ভুল ত্রুটি হলে কিছু খারাপ বলতে পারবে না এর চেয়ে আর বেশি ভালো কি হতে পারে।নুর কে শাশুড়ি হয়ে নয় মা হয়ে সবকিছু বুঝিয়ে দিবে এইরকম একটা পরিবার পেলে ওনার তো আর কোন টেনশনই থাকবে না।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আর সাদাফের মত একটা জামাই পাওয়া যে ভাগ্যের ব্যাপার ।সাদাফকে ওনার খুবই পছন্দ যেমন দেখতে শুনতে ভালো সেরকম আচার ব্যবহার ব্যক্তিত্ব সব দিক থেকে সাদা যেন ১০০ তে ১০০।
নূর খুশি খুশি নওরিন আফরোজ এর কাছে শাড়ি পড়তে লাগলো ।শাড়ি পরানো শেষ হলে নওরিন আফরোজ নুরকে ছোট্ট একটি ঘোমটা দিয়ে আয়নার সামনে নিয়ে দাঁড় করালো ।দাঁড় করিয়ে সামিহা বেগমের দিকে তাকিয়ে বললেন ,”দেখ সামিহা পুরো একটা পরী বউয়ের মত লাগছে।”
সামিহা বেগমের মেয়ে তাই ওনার চোখে ভালো লাগবেই কিন্তু নওরিন আফরোজ যে এই শাড়িটা পরিয়ে নূরকে পরি বউ বলছে সামিহা বেগম মনে হয় বুঝতে পারলেন উনি সাদাফের জন্যই বলছে ।খুশি খুশি এসে সামিহা বেগম নওরিন আফরোজ এর কাছে বললেন ,”ভাবি এই শাড়িটা তুমি নূরকে দিলে?”
নওরিন আফরোজ সামিহা বেগমের প্রশ্ন বুঝতে পেরেছে ।নূর যেন কিছু বুঝতে না পারে তাই উত্তর দিল ,”হ্যাঁ ।দিলাম তোর কোন সমস্যা আছে ?আপত্তি আছে যদি আমি নূরকে শাড়ি টা দেই?”
সামিহা বেগম সাথে সাথে খুশি হয়ে জড়িয়ে ধরলেন নওরিন আফরোজকে ।তারপর বললেন ,”আমি রাজি আমার কোন আপত্তি নেই ।আপনার মেয়েকে আপনি শাড়ি দিয়েছেন আমার কোন আপত্তি নেই ভাবী।”
দুই ঠিকই বুঝতে পারলেন ওদের মধ্যে আসলে কিসের আদান-প্রদান হলো বা কি কথা হলো।
নুর বোকার মত মা ও বড় আম্মুর কথা শুনতে লাগল ।একটা শাড়ি নিয়ে দুজনের কথোপকথন ও কিছুই বুঝতে পারছে না ।শুধু আয়নায় নিজেকে দেখতে লাগলো।এভাবে ওইভাবে ঘোমটা দিয়ে আসলে নূরকে ছোট্ট একটা বউয়ের মত লাগছে।
আচ্ছা সাদাব ভাই যখন দেখতে পারবে নুরকে এই শাড়িটা পড়ায় সাদাব ভাইয়ের রিএকশন কেমন হবে ?ওর খুব আনন্দ হচ্ছে আজকে সাদাফের সামনে এই শাড়িটা পরেই যাবে।
সাদাবের আজ ফিরতে রাত হয়ে গেছে রাত বাজে দশটা সবার অলরেডি ডিনার শেষ ।প্রত্যেকে যার যার রুমে চলে গেছে ।সাদাফ একটা পার্টিতে গিয়েছিল সেখান থেকে ডিনার করে এসেছে যার জন্য ওর জন্য কেও অপেক্ষা করেনি।
সাদাফ রুমে ঢুকেই দরজা খুলে লাইট অন করে যেন টাস্কি খেলো ।সামনে খাটে বসে আছে নূর শাড়ি পরে।
শাড়িটা যে ওর মায়ের এবং খুব পছন্দের তা চিনতে অসুবিধা হলো না সাদাফের ।লাল একটি বেনারসি শাড়ি দেখতে নুরকে ঠিক বউয়ের মত লাগছে ।সাদাফ বুকে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো ।নিঃশ্বাসটা ভারী হয়ে গেল ।যেন নিঃশ্বাসটা নিতে কষ্ট হচ্ছে সাদাফের।
নুর ধীরে পায়ে হেঁটে এসে সাদীফের সামনে দাঁড়ালো ।
দাঁড়িয়ে বলল ,”সাদাফ ভাই আমাকে কেমন লাগছে এই শাড়িতে দেখুন তো?”নীলা রহমান
সাদাফ : শাড়ি পরেছিস কেন ?তোকে শাড়ি পড়তে নিষেধ করেছিলাম না?
নুর: বড়মা পরিয়ে দিয়েছে আর বলেছে আমাকে পরি বউয়ের মত লাগছে।
সাদাফ: শাড়ি পরে বউ সেজে আমার খাটে বসে থাকতেও কি তোর বড়মা শিখিয়ে দিয়েছে?
নুর: না।
সাদাফ: তাহলে?
নুর মুচকি হেসে ,”আমি নিজে নিজেই বসেছি।”
সাদাফ: বাসর রাত প্র্যাকটিস করতে বসেছিস? আমি রেডি।
নুর: 🫣🫣🫣 কিসের জন্য?
সাদাফ: বাসরের প্র্যাকটিস করার জন্য ।শুধু প্র্যাকটিস করবার কিছু না।
নুর আমতা আমতা করে বলল ,”কি বাজে কথা বলছেন?”
সাদাফ বললো ,”ওমা শাড়ি পড়ে বিছানায় বউ সেজে বসে আছিস আর আমি জামাই হতে চাইলেই দোষ?”
আমি কখন বললাম আমি বউ সেজে বসেছি বড়মা শাড়িটা পরিয়ে দিয়েছে আমি এসে মাত্র খাটে বসেছি আর অমনি আপনি রুমে ঢুকেছেন ।
সাদাফ বললো ,”ওমা তাই এত ইনোসেন্ট তুই তাহলে লাইট জ্বালিয়ে বসিস নি কেন?”
লাইট জ্বালাতাম এমন সময় আমি টের পেয়েছি আপনি আসছেন তাই চুপচাপ খাটে বসে ছিলাম শাড়ি পড়েছি ভেবেছি আপনাকে সারপ্রাইজ দিব তাই।
“তাই সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য বসেছিস ?সারপ্রাইজ পেয়েছি এখন আমার অন্য কিছু মন চাইছে এটাও দিয়ে দে?”বললো সাদাফ।
“অন্য কিছু মানে ?অন্য কিছু কি ?” বললো নুর।
সাদাফ আড় চোখে তাকালো নুরের দিকে ।তাকিয়ে চোখ দিয়ে ইশারা করল ।নুর বুঝতে পারছে না ।বলল ,”ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি ।”
বলে যে রুম থেকে বের হয়ে যাবে ওমনি সাদাফ ভালো হাত দিয়ে নূরের শাড়ির আঁচল টেনে ধরল।
নূর সেফটিপিন লাগিয়ে শাড়ির আঁচল আটকে রাখেনি তাই সাদাফ ধরার সাথে সাথে শাড়ির আঁচল বুকে থেকে খসে নীচে পড়ে গেল ।আচলের একটা অংশ সাদাফের হাতে আর শাড়ির কয়েকটা কুচি খুলে নিচে অলরেডি পড়ে গিয়েছে।
নূর সাথে সাথে শাড়ির কুচি আটকানোর জন্য একটু নিচে ঝুঁকে বসলো ।সাদাফ নুরের দিকে তাকিয়ে যেন বরফের নেয় জমে গেল শরীরের প্রত্যেকটি রক্ত কণা মনে হয় হিম বরফের মত জমে গিয়েছে ।নুরের শাড়ির আঁচলের একটা অংশ এখনো সাদাফের হাতে অথচ নূরের বুকে শাড়ির আঁচল নেই।
নূরের গায়ে ব্লাউজ টি ও নওরিন আফরোজ এর বিয়ের সময়কার ।তখন নওরিন আফরোজ ও বয়স ১৫ বছরই ছিল তাই নূরের গায়ে সুন্দর ফিটিং হয়েছে ।নূরের স্পষ্ট বক্ষ ভাজ দেখে সাদাফ শুকনো ঢোক গিলছে । নূর এখনো কিশোরী একটা মেয়ে ।যুবতী হয়ে ওঠেনি অথচ শরীরের অবয়ব দেখে এখনই যেন সাদা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে পারছে না ।
এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে কিন্তু নূর এতটাই বেসামাল নূর জানেও না কিভাবে নিজেকে সামলাতে হবে ।বোকা নুর শাড়ির কুচি সামলানোতে ব্যস্ত অথচ যেটা সামলানো প্রয়োজন ছিল সেটা যে সাদাফের হাতে নূরের যেন সেই খেয়ালই নেই ।নূর শাড়ি কোনমতে গুছিয়ে উঠে দাঁড়ালো দাঁড়িয়ে সাদাফের দিকে তাকিয়ে নূর বুঝতে পারল নূরের বুকে কোন শাড়ির আঁচল নেই।
নূর যেন বোকা হয়ে গেল অমনি কতক্ষণ তাকিয়ে থাকলো ।তারপর নিজের বোকামি বুঝতে পেরেই সাথে সাথে উল্টোদিকে ঘুরে গেল ।ঘুরতে গিয়ে শাড়ীর আরো কয়েকটা কুচি খসে পড়ল।
সাদাফ উপরের দিকে তাকিয়ে একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
তারপর ধীরে ধীরে হেটে এসে শাড়ির আঁচলটি দিয়ে নূরের পিছন দিক থেকে নূরকে জড়িয়ে ধরে নূরকে ঢেকে দিল। নুরের জোরে জোরে শ্বাস ওঠানামা করছে ।যার সাথে উঠানামা করছে নূরের বুক ।
সাদাফ নিজের হাতে তাই স্পষ্ট অনুভব করছে নূরের বুকের ওঠা নামা ।সাদাফের যেন প্রত্যেকটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে শিহরণ বইতে শুরু করলো ।লোমগুলো দাঁড়িয়ে গেল।
সাদাফের উষ্ণ নিঃশ্বাস আছড়ে পড়ছে নূরের কাধে ।নূরের দেহ মন যেন শিহরিত হতে লাগলো সাদাফের প্রতিটি স্পর্শে ।সাদাফের হাতের উষ্ণ স্পর্শে নূর যেন মোমের মত গলে যাচ্ছে ।সাদাফের স্পর্শ যেন এখন নূরের কাছে আগুনের মত মনে হচ্ছে।
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৪৭+৪৮
নূর ছটফট করে উঠল যেন একবার ।সাদাফের হাত থেকে ছাড়া পেতে চাইলেও সাদাব ধীরে ধীরে নূরের কানে কাছে নাক ঘষতে ঘষতে বলল ,”এভাবেই থাক নড়াচড়া করিস না ।আমার বুকে থাক। তোকে অনুভব করতে দে আজ মন ভরে তোকে অনুভব করতে চাই।”
