কালকুঠুরি পর্ব ২৯
sumona khatun mollika
মাহা বিনা নোটিশে ভেতরে ঢুকল ।৷ ধির পায়ে এগিয়ে গিয়ে সিভানের পাশে বসল। সিভান চোখের পানি মুছে মাহার দিকে তাকালো। মাহা সিভানের হাতের ছবিটা দেখতে চাইলো,,
– এটা তোমার মা??
– হুমমম
– তোমার মায়ের কি নাম ছিল ?
– ইন্দিরা সাহা।
– সুন্দর নাম ছিল। দেখতেও কিন্তু অনেক সুন্দর ছিল। একদম তোমার মতো।
– কাকা কি ঠিক বলেছে কাকি সুন্দরী?? আসলেই কি মায়ের প্রয়োজন নেই?? কিন্তু আমার তো একটা মায়ের বড্ড অভাব কাকি সুন্দরী ।
– মা এমন একটা জিনিস,, যার অভাব কেও পূরণ করতে পারেনা । মা হলো গরম ভাতের ভাপ,, নরম ফুলের ঘ্রাণ,, মিষ্টি বাশুরির সুর,, আল্লাহ তায়ালার দান করা সবচে বড় নেয়ামত,, কেয়ামত পর্যন্ত যার সমতূল্য কেও হয়না।
– আমার কোন দোষ এ আমার মাকে কেড়ে নেয়া হয়েছে? আমি কেন ভুল ,, সঠিক কেন নয়??
– তোমাকে আল্লাহ বানিয়েছেন। তুমি কি করে ভুল হতে পারো!!
– তাহলে বাবা কেন আমাকে ভালোবাসেন না। মা কেন ছেড়ে চলে গেছে?? বাবা বিয়ে করেছে তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্ত শুনলেনা,, সে আমার জন্য মা নিয়ে আসেনি। তাছাড়া সে মা হওয়ার যোগ্য নয়।
– আর আমি?? বাবার বউকেই কেন মা হতে হবে? শুধু জন্ম দিলেই কি মা হয়ে যায়? আমাকে ভালো লাগে না তোমার?
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-খুব ভালো লাগে।
পেছন থেকে নুসরাত বলে,,
– আর আমাকে?
– তোমাকেও খুব ভালোবাসি।
– খবরদার কাঁদ বিনা , চল রেডি হ,, আমরা ঘুরতে যাবো,,, চল চল চল,, মাহা যাও তুমিও রেডি হয়ে এসো।
ক্যাম্পাসে আজ কেমন অদ্ভুত নিরবতা। পরীক্ষা চলমান, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কোনো ঝামেলা করা নিষিদ্ধ । মারপিট লাগলেও পরে এসে পিটিয়ে যাবে। সামির সিকান্দার চুপচাপ বসে পরীক্ষা দিচ্ছে দেখে লাইব্রেরি ম্যাম চশমাটা টেনে তাকে একবার দেখলেন। যথারীতি সামিরের যতটুকু ইচ্ছে হয়েছে লিখে খাতা জমা দিয়ে দিয়েছে লাইব্রেরি ম্যাম বাঁধা দিয়ে মাহার কথা জিনিস করলেন,,,
– মাহা কেমন আছে?
– আমার কাছে আছে মানে ভালোই আছে। ঋতু কেমন আছে? বাচ্চা কাচ্চা হয়েছে? কটা হলো? ৪ টা ৫ টা? যদি ৪ টা হয়,, ২টা নিশ্চয়ই সিকান্দার দের বংশীয়। ওহহো মরেইতো গেছে।
– সব দোষ তোমাদের।
– এহ্যা,, আমার কোনো দোষ নাই। আমিতো শুধুই একটু,, আগুনে তেল ঢেলেছি,, এইসব ছোটখাটো অপরাধ আমি করিনা।
– নিশ্চয়ই! খুব ভালো করে জানি। সেজন্যেই মাহার মতো একটা নিষ্পাপ ফুলকে ছিঁড়ে পুঁতে ফেলেছ!
– ঋতুর তুলনায় কিছুই হয়নি।
– ঋতুর কথা বাদ দাও। ওকে তোমরা মেরে ফেলেছ কিন্তু মাহাতো জিবীত আছে৷ ওকে ছেড়ে দাও।
– এহ,, আইছছেহ!! আমি ছেড়ে দিই তুমি তুলে নিয়ে নিজের ছুড়ার সাথে বিয়ে দাও। চিন্তা কইরেননা। দুদিন পরে মাহার বাচ্চার গ্রানী হবেন। খ্যাতা সেলাই ধরেন ম্যাডাম।
কথাটা বলেই হাই তুলতে তুলতে বেরিয়ে গেল সামির! লাইব্রেরি ম্যাডাম সেদিকেই তাকিয়ে রইলেন। ঋতু, লাইব্রেরি ম্যামের বোনের মেয়ে।
কিছু বছর আগে, মাহা যখন কলেজ স্টুডেন্ট ছিল,, ঋতু সাফিনের গার্লফ্রেন্ড ছিল । ঋতু মেয়ে টাকে সাফিনের মোটামুটি পছন্দ ছিল। তবে একদিন সাফিন যখন ঋতুতে ক্লাবে নিয়ে যায়,, ঋতু রাগিব দেওয়ান এর নজরে পরে যায়। সে তখন নববিবাহিত৷ রাগিবের দ্বারা ঋতু ধর্ষণ হয়। শুধু সে একা নয় এর সঙ্গে আরো দুইজন মিলে মোটে তিনজন ঋতুর স্বতিত্ব হরণ করেছিল । বাকিদুজন এর পরিচিতি ধিরে সুস্থে দেয়া যাবে।
হ্যা সাফিনের এতে কোনো হাত ছিলনা।
মাহা আর নুসরাত, ইতি আর সিভানকে সাথে করে বেরিয়েছে। সাথি আসেনি।। টি-বাঁধের মাথায় দাড়ানো শিমুল গাছটার ছায়ায় বসে পেয়ারা মাখা খাচ্ছে ৩ জন। মাহা সোমবারের রোজা রেখেছে। সিভান বলল,,
– কাকি সুন্দরী?? মুখটা একটু খুলে দাও। গরম কম লাগবে।
– আমার গরম লাগছেনা সিভান তুমি খাও। আরেকটু নেবে?
সিভান মাথা নেড়ে না জানায়। ইতি একটা করে খাচ্ছে আর শুষাচ্ছে। তার বেশ ঝাল লেগেছে। ইতি বলল,,
– ধাল,, ধা,, ধাল!! মামিমা ধাল,,, মাম দাও মাম।
নুসরাত বলল,,
– পানিতো শেষ হয়ে গেছে। মাহা তুমি নিয়েস।
- ঠিকাছে । এখানেই বোসো। আমি আনছি
। মাহা দোকানের কাছে দাড়িয়ে পানির বোতল নেয়ার সময় কোথা থেকে তিহানের ছোট ভাই বিহান চলে আসে। ৭ বছর পর পরশু বিদেশ থেকে এসেছে। নিঃসন্দেহে সে জানতোনা মাহা সামির সিকান্দার এর বউ। জবরদস্তি মাহাকে নিকাব নামাতে বলেছে। রোদের ঝলক পড়া মাহার চোখের দিকে তাকিয়ে পুরো চেহারা দেখার আগ্রহ বেরে গেছে।
– তোমার মুখোশ টা খোলো জান ,, । থোবড়াডা একটু দেখি,, বেশিনা, এক ঝলক।।
– সরে দাড়ান,, আমায় যেতেদিন।
– দেব তো,, শুধু টুক করে চেহারাটা একটু দেখাও।
পেছন থেকে তিহানের এক চেলা বলল,,
– এডি ডেঞ্জার এর ডেঞ্জারাস ছুড়ি ভাই। চলেন যাইগা।
– এই চোপপ!! কেও কোনো কথা বলবিনা। দেখছিসনা সিক্রেট কনভার্সেশন চলছে,,
কথাটা বলেই বিহান মাহার মুখের দিকে হাত বারাতেই মাহার কপাল জড়িয়ে এলো। হাত ওঠানোর আগেই লক্ষ্য করল বিহানের হাত সে পর্যন্ত পৌছায়নি। একটা শক্ত পোক্ত শ্যামলা হাত তার হাত ধরে ফেলেছে। রুষ্ট কণ্ঠে আওয়াজ এলো,,
– টাইম আপ। ব্যাপারটা এখন আমি বাঙ্গিমারা সিক্রেটলি দেখব।
বিহান ভ্রু কুটিয়ে বলল,,
– সামির সিকান্দার !! হায় হায় বন্ধু কতবছর পরে দেখা,, হ্যান্ডসাম হয়েছিস আগের চেয়ে ।
– কিন্তু একদম বস্তিমার্কা হয়েছিস! শাউয়ার মতো লাগছে দেখতে।
– মাশাল্লাহ! তোর ভাষা এখন এক লেবেল আপডেট হয়েছে দেখছি। ।
– আমার সবসময় উন্নতিই হয় অবনতি কখনোই হয়না। । তোর চে বেটার কোনো বাঙ্গির নাতি জানে বলে মনে হয়না। দিবা,, তুমি যাও, ।
– একদম,, তবে,, এটা কে? বোন?
– উ… বউ!
– কেমন বউ পাতানি?
– উহু এটা আমার পার্সোনাল সাইলেন্ট বোম, এক লাখ ট্যাকা দেন মোহরপাইছি।
– আচ্ছা ?
– হুমম,, একদম আমার বিয়ে করা বউ, হেরিটেজ অব মাই ব্লাড!
– বাহ! ভাবি লাগে তাইতো? একটুর জন্য চেহারা টা মিস হয়ে গেল।
– কার দিকে হাত বারিয়েছিস জানিস? এটা একমাত্র সেই ইনসান যে সামির সিকান্দার রে থাবড়া মারার সাহস রাখে।
বিহানের দিকে রহস্যময় নজর দিয়ে তাকালো সামির। কাশেম চুপচাপ তার দিকে তাকিয়ে। বিহান বাঁকা হেসে বলল,,
– দিয়ে দে আমায়,, তুইতো টাকা ভালোবাসিস তাইনা, বদলে কত চাই, কি চাই তুই শুধু বলে দে আমায়,।
কাশেম কিিছু বলতেই যাবে সামির ইশারা করে থামিয়ে দিল। তারপর বিহানের কলার ঠিক করতে করতে বলল,,
– এমাউন্ট! রাতে ক্লাবে চলে আয় এমাউন্টও বলা হবে আড্ডাও মারা হবে। ল্যাঙটা কালের বন্ধু বলে কথা !
– শিওর! এই চল সব,, ।
বিহান চেলাপেলা নিয়ে চলে গেল। সামির এগিয়ে যেতেই মাহা বলল,,
– ভেবেছিলাম আপনার আরেকটু দেরি হবে,,
– তুমি কি করে জানতে আমি আসবো?
– সিভান, ইতি চলো,,
– উমমম ম-ম বউ মন পড়তে শিখে যাচ্ছে । সামথিং সামথিং!
গাড়িতে ওঠার আগে সিভান বলল,,
– এ কাকা, জানো ওরা কাকি সুন্দরী কে মেলা বাজে কথা বলেছে।
– জান বলেছে । মাল বলেছে আবার বলেছে হেব্বি জিনিস !
সামির ঘাড় কাত করে সামান্য একটু হাসলো। সিভান তার পায়ে খোঁচা মেরে বলল,,
– এ কাকা কি ভাবছো?
-হুমমমম অতিথি আপ্যায়নের কথা। চল বাড়ি চল।
বাড়ি ফিরে সিবানের ফুরফুরে মনটা আবারো বিরক্তি তে ভরে ওঠে কারণটা নিঃসন্দেহে রাহা।
রাহা তাকে বলছে,,
– এই ছেলে এত বেয়াদব কেন তুই বড়দের সাথে ভালো ব্যাবহার করতে শিখিস নাই?
– আপনিওতো বাচ্চাদের সাথে ভালো ব্যাবহার করতে শিখেন নি।
– কানের গোড়ায় দেব একদম,,
সিভান দুরে দাড়িয়ে বলল,,
– আপনি আমার থেকে দুরে থাকবেন। নাহলে ফল খারাপ হবে। আমিও কিন্তু সিকান্দার দের রক্ত ।
– অবৈধ রক্তের এত দাপট!!
মাহা পেচন থেকে বলে ওঠে,,,
– ও অবৈধ নয়। ওর বাবা মায়ের যথাযথ নিযম মেনে বিয়ে হয়েছিল। সুতরাং সে বৈধ সন্তান। ার যাই হোক না কেন ওর বাবাযে সাফিন সিকান্দার এতে কোনো সন্দেহ আছে??
রাহা কোনো জবাব দিলনা। সাফিন কড়া নিষেধ করেছে মাহার সাথে বেশি কথা না বলতে। নুসরাত মাহাকে টেনে ওপরে নিয়ে যায়। ইনায়া ইতি কে নিয়ে ছাদে বসে আছে।
বেলা গাড়িয়ে গোধূলিতে রুপান্তরিত হলো। রাঙা আলোয় চারপাশ রঙিন হয়ে উঠেছে। মাহা ওপর থেকে চারপাশে চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখতে থাকে। তারপর বলে,
– আচ্ছা আপু, এই বাগানগুলোর এই অবস্থা কেন? কতশত ফুল ফলের গাছ পরিচর্যা করলে দারুণ ফলাফল হতো।
– আরে যার বিয়ে তার খবরনাই। বলেচিলাম কেও পাত্তাই দেয় নাই। আব্বাও শোনে নাই।
– আপু,, আপনার মনে হয়না বাগানটা কেমন রহস্যময় ! না মানে ভালো করে দেখুন ,, দেখে মনে হচ্ছে ইচ্ছে করে এমন সাজিয়ে রেখেছে।
– আরে নারে বাবা, বাড়িটাইতো আদম নবীর যুগের, জঙ্গল আর কিইবা হবে। । চলো নিচে যাই। সন্ধ্যা হয়ে গেছে।
– হ্যা।
মাহার কেন জানিনা মনে হচ্ছে এই বাগানটা পরিচর্যা না করার পেছনে কোনোতো রহস্য আছে! এখানে আবার পুরোনো আমলের পাতালঘর টর নেই তো,, একবার সাহস করে গিয়ে দেখতে হবে।
রাতের বেলা চারদিকে পিনপতন নিরবতা। ক্লাবে আজ তেমন ছেলেপেলে নেই। রাগিব দেওয়ান ও আসেনি । সামির পুরো ক্লাব খালি করিয়েছে। শুধুমাত্র বিহানকে খাতিরদারি করতে।
এদিকে তিহান বিহানকে হাজারবার মানা করেছে সামিরের কাছাকাছি না যেতে। কিন্তু বিহান শোনেনি। তার বিশ্বাস সামির তার সাথে কিছু করবেনা।
বিহান চলে এলে সামির সরল চেহারায় কিছুখন কথা বলে। কাশেম চুপচাপ সামিরের পাশে দাড়িয়ে । বিহানের সাথে আরো ৩জন ছেলে। তাদের মধ্যে একজন খুব সম্ভব পুলিশ কমিশনারের ছেলে। বাপ সৎ কিন্তু ছেলে পাক্কা জানোয়ার!
– তো আসল কথায় আসি কি বল সামির?
– নিশ্চয়ই !
– বল তোর কত টাকা চাই বদলে তোর বউ আমার।
– হুমমম খুবি ক্রিটিকাল বিষয়!
– সামির সিকান্দারের কাছে ক্রিটিকাল টপিক!
– নয়ত কি? অমূল্য জিনিসের দাম ফিক্সড করাকি ক্রিটিক্যাল নয়?
বিহান বাকা করে হেসে বলল,
– ভন্ডামি করচিস? তোর কাছে মেয়ে ছুড়ির দাম অমূল্য?
– তুই বুঝবিনারে শুয়োরের বাচ্চা , কাইশসা ধর বাঙ্গির নাতিরে,,
সামিরের বলতে যতটুকু দেরি কাশেম প্যান্টের পকেট থেকে ছুড়ি বের করে ২ জনের ওপর হামলা করে। ব্যাস ২ মিনিটে দুজন শেষ। কমিশনারের ছেলে টা দৌড়াতে গেলে সামির তার পিছু করতেই বিহান পেছন থেকে একটা ছুড়ি দিয়ে সামিরের পিঠে াক্রমণ করে। সাদা শার্ট রক্তে লাল হয়ে যায়। বিহান তাকে ল্যাং মেরে ফেলে বাইরের দিকে দৌড় মারে। কাশেম সামিরের দিকে এগিয়ে যায়।
বাহিরে একটা কুকুর বিহানকে দেখে চিল্লাতে থাকে। বিহান হাঁটুতে ভর দিয়ে শ্বাস নিচ্ছে। কমিশনারের ছেলেটা চিৎকার দিয়ে ওঠে,,
– ভাই পালান এডি ওই শুয়োরের পালা কুত্তা । টাইন্যা ছিড়া ফালাইবো।
বিহান উল্টো দৌড়াতে লাগলে সামির চেচিয়ে উঠে,
– রিটো ধর শালাকে!
কাশেম ততখনে কমিশনারের ছেলেটাকে ধরে ফেলেছে ।
ছুড়ির আগাতে ৬ আঘাতে মেরে ফেলেছে ছেলেটাকে। রিটো ছুটে গিয়ে বিহানের পা কামড়ে পায়ের গোশত ছিড়ে ফেলেছে ! ততকনে সামির আবারো বিহানকে ধরে ফেলেছে। । কাশেম বিহানের পা ধরে টানতে টানতে আবারো ক্লাবের ভেতরে নিয়ে যায়। অতি সহজেই চেয়ারের সাথে বেঁধে ফেলে।
বিহান চেঁচাতে লাগে,,
– ছেড়ে দে বাপ আর এমন হবেনা। ক্ষমা করে দে।
সামির টেবিল থেকে স্টিলের কাঁটাচামচ তুলে বলে,,
– ছেড়ে দেওয়া পুণ্যের কাজ! আমি পাপি! পাপি কোনোদিনও পূণ্য করেনা। এই চোখ,, এই চোখ দিয়ে তুই আমার বউকে বাজে নজরে দেখেচিস তািনা? ওর চেহারা দেখার জন্য এি চোখদুটো বড্ড ছটফটাচ্ছিলো তাইতো,, আমি শান্ত করে দিচ্ছি ।
পরমুহূর্তে লোমহর্ষক ভাবে বিহানের চোখ কাঁটাচামচ দিয়ে তুলে ফেলল সামির সেই কাঁটাচামচই বিহানের গলায় গেঁথে দিল! রক্তের ছিটায় পুরো দেহ ভিজে একাকার হয়ে গেল !! সাদা শার্ট আর লুঙ্গি লাল রঙে রঞ্জিত হযে গেল৷
কাশেরে দিকে তাকিয়ে বলল,,
– এটাকে পুরান বাড়ি ফেলে আসবি। আর শোন,, আমার কিউট বেবি খুবি ক্ষুধার্ত ,,, বুঝেছিস?
কাশেম মাথা নাড়াতেই সামির ক্লাব থেকে বেরিয়ে যায় । কাশেম বিহানের চোখদুটো রিটোর দিকে ছুড়ে দিয়ে বলে,,
– তুই কিউট হলে আমি কি বলত ? যাহ বাড়ি যা।
রিটো নিজের ভয়াবহ দাঁত চেটে খাওয়া শেষে বাড়ির দিকে রওনা হলো। সামির বারান্দায় দাড়িয়ে ভাবল,,৷ এভাবে ওপরে গেলে যদি চেঁচায়! কিছুসময় ভেবে পরে বারান্দা টপকে ভেতরে ঢুকে দেখে মাহা ঘুমিয়ে গেছে । শব্দ না করে জামাকাপড় বদলে এসে চুপচাপ শুয়ে পরে। হঠাৎই মাহা ভুতের মতো বলে ওঠে,,
– আপনার লুঙ্গি ধুয়েছেন তো? আমি আপনার দাসী বান্দী নই কিন্তু ।
সামির বামগাল টেনে হেসে মাহাকে টেনে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো। সামিরের তপ্ত নিঃশ্বাস মাহার ঘাড়ে পরতেই মাহা বলে,,
– ছেড়ে দিন ব্যাথা লাগছে।
– ধরিইতো নাই ছাড়বো কি?
মাহা হাত ঝাড়া দিয়ে উঠে পরে। সোজা বারান্দায় চলে যায় । সামিরও তার পিছে পিছে যায় । তারপর ধীর কণ্ঠে বলে,,
-তুমি যেহেতু সময় দিতে পারছোনা,, অন্য কোথাও চলে যাই সময় দিতে কি বলো? তোমার আল্লাহরে তুমি পরে নিকিশ দিও,, যহন জিগাইবো তুই থাকতেও অরে বাইরে যাওয়া লাগছে কেন!
মহা নিরুত্তর । সামির ভেতরে গিয়ে বিছানার ওপর বসে। মিনিট দুয়েক পর মাহা ভেতরে ঢুকে কেমন অদ্ভুত কণ্ঠে বললো,
কালকুঠুরি পর্ব ২৮
– প্রয়োজন নেই। আপনার যখন দরকার আপনি আমাকে ব্যাবহার করতে পারেন। আমি বাঁধা দেব না। কারণ আমি বাধা দেয়ার ক্ষমতা রাখিনা।
সামির হালকা শব্দ করে মিচকি হাসলো। মাহার দিকে ঘুরে বামহাতে থুতনি চেপে ধরল। মাহা সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেলল,, সামিরের মুখের হাসি মিইয়ে যায় এই মেয়েটা এমন অদ্ভুত কেন! চাইলেই চুটকি মেরে একে মেরে দিতে পারি কিন্তু মন চায়না । একে জ্বালিয়ে বড্ড মজা পাওযা যায় । সামির মাহার ঠোঁটে আলতো করে নিজের অধর ছুইয়ে দেয়। তারপর আর জোর করেনি। করবে কিবাবে মাহা বাঁধাই দেয়নি।
রাতের প্রহর ঘড়ির কাটার টিক টিক শব্দের সাথে ঢলে যেতে থাকে।
