বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৫৫
shanta moni
“কারো পায়ের শব্দ পেয়ে ভয়ে সিঁটিয়ে যায় রোদ। সেদিন রাতে জঙ্গলে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা মনে পড়ে। রোদের নিশ্বাস আটকে আসে। মুখ দিয়ে শুধু গোঙ্গানি শব্দ আসছে। অন্ধকারে একটা অবায়ক রোদের সামনে এসে দাঁড়ায়। রোদের শরীর তীর তীর করে কাঁপছে।
সামনে থাকা লোকটা রোদের চোখের বাঁধন ও মুখের বাঁধন খুলে দেয়। রোদ চোখ খুলেই সামনে সব কিছু ঝাঁপসা দেখতে পায়। সাথে সাথে আবার চোখ বন্ধ করে ফেলে। পুনরায় আবার চোখ খুলে সামনে অপ্রকাশিত কাউকে দেখে রোদ অবাক হয়ে তাকায়, চার পাশ’টা কেমন অন্ধকারে আচ্ছন্ন, রোদ কাঁপা স্বরে বলে উঠে..!
“রোদ:- “অয়ন ভাই আপনি এখানে..?
“অয়ন মুচকি হাঁসে রোদের দিকে তাকিয়ে..!
“রোদ ভ্রু কুচকে তাকায় তাঁরপর বলে..
“রোদ:- আপনি আমাকে এখানে কেনো নিয়ে এসেছেন অয়ন ভাই..?
“অয়নের চেহারা করুন, চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে। অয়ন করুন স্বরে বলে উঠে..!
অয়ন:- “কেনো ভালোবাসলে আমায় রোদ..?
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রোদ:- আপনি এই সব কি বলছেন ভাইয়া। আপনি আমাকে এখানে কেনো নিয়ে এসেছেন?
‘অয়ন রোদের দিকে এগিয়ে এসে রোদের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে করুন কন্ঠে বলে..!
অয়ন:- আমার ভালোবাসা এই ভাবে প্রত্যাখান করো না রোদ! প্লিজ রোদ তুমি আমার কাছে চলে আসো।
“রোদ ছিটকে দূরে সরে যায়। রোদ অয়নের ঘৃনা ভরা দৃষ্টিতে বলে উঠে..!
রোদ:- আমার যতদিন নিশ্বাস আছে। আমি কোনো দিন। আমার স্বামী ছাড়া অন্য পুরুষের কাছে যাব না।
অয়ন:- আমি তোমাকে সত্যি ভালোবাসি রোদ! প্লিজ আমাকে এই ভাবে ফিরিয়ে দিও না।
রোদ:- “আমাকে ছেড়ে দিন অয়ন ভাই প্লিজ। যেতে দিন আমায়!
“অয়ন রোদের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে..!
অয়ন:- “তুমি যতক্ষণ না আমার ভালোবাসা শিকার করছো। ততক্ষণে আমি তোমাকে ছাড়বো না।
রোদ:- আমি মরে যাব! তাঁরপর আপনার ভালোবাসা শিকার করবো না। চাই না আপনার ভালোবাসা। প্লিজ ছেড়ে দিন আমায়!
“অয়ন রোদের কাছে এগিয়ে এনে রোদের দুই বাহু ধরে ঝাঁকিয়ে বলে উঠে..!
অয়ন:- কেনো এমন করছো রোদ? আমার ভালোবাসা দেখেও কেনো দেখছো না!
রোদ:- আমি আপনাকে ভালোবাসি না।
প্লিজ আমাকে যেতে দিন। জোর করে কারো ভালোবাসা পাওয়া যায় না। প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন।
অয়ন:- কেনো ছেড়ে দিব। আমি তো তোমাকে শুভ্রের মতো কষ্ট দেইনি, কখনো। সব সময় ভালোবেসে গেছি। তাহলে কেনো আমাকে মানছো না রোদ।
“রোদ ডুকরে কেঁদে উঠে..!
“কান্না ভেজা কন্ঠে বলে উঠে..!
রোদ:- “আমার সব কিছু আমার শুভ্র ভাই। আমি আমার শুভ্রকে ভালোবাসি। তাকে ছাড়া অন্য কারো কাছে যাওয়া তো দূরের কথা। তার কথা ভাবতেও পারি নাহ।
“অয়ন রোদের বাহু ছেড়ে, রোদের দুই পা জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠে বলে…!
অয়ন:- আমি তোমার পায়ে ধরি রোদ। প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না। আমি তোমাকে শুভ্রের সাথে ওই ভাবে দেখতে পারছি না। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। প্লিজ তুমি আমার কাছে চলে আসো। আমি শুধু তোমাকে চাই।
“রোদ নিজের পা সরানোর চেষ্টা করে কাঁদতে কাঁদতে বলে..!
রোদ:- “অয়ন ভাই প্লিজ পা ছাড়ুন। এমন পাগলামো করবেন না প্লিজ।
অয়ন:- “প্লিজ রোদ এমন ভাবে বলো না।
আমি সত্যি মরে যাবো প্লিজ!
রোদ:- “আমি আপনাকে ভালোবাসি না। আর কতো বার বলবো। কেনো জোর করছেন আমায়। প্লিজ যেতে দিন।
কথা গুলো বলেই রোদ চিৎকার করে, সবাইকে ডাকতে থাকে। অয়ন রোদের পা ছেড়ে। রাগে চুলে মুঠি ধরে নিজের মুখ বরাবর এনে। রাগী কন্ঠে বলে উঠে..!
অয়ন:- “কেনো আমার ভালোবাসা তুই চাস না। চেয়েছিলাম তোকে রাজি করিয়ে তাঁরপর তোকে নিজের করে নিব।
কিন্তু তুই তো দেখছিস, এতোই স্বামী ভক্ত যে তোকে সারাক্ষণ মার ধর করে। তার জন্যই তোর এতো পুড়ছে। তাকে ছাড়তে পারছিস না।
“রোদ ব্যথা ফুঁপিয়ে উঠে, অয়নের চোখ দুটো অসম্ভব লাল। অয়ন রাগে দাঁত কটমট করে বলে..!
অয়ন:- জোর করে হলেও, আমার তোকে চাই৷ মানে চাই!
“বলেই রোদকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।
রোদ মুখ থুবড়ে ফ্লোরে পড়ে যায়। অয়ন একটা কাগজ নিয়ে রোদের সামনে আসে। রোদের বাহু ধরে টেনে বসায়।
তাঁরপর রোদের হাত খুলে দিয়ে, কাগজ আর কলম দেয়। রাগী কন্ঠে রোদকে বলে উঠে..!
অয়ন:- “এই কাগজে একটা সাইন করে দে।
“আপছা আলোয় কাড়জের দিকে তাকিয়ে কাঁপা স্বরে বলে উঠে..!
রোদ:- “কি কিসের কাগজ এ..এটা..?
“অয়ন রোদের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাঁসে
তাঁরপর বলে..!
অয়ন:- “ডিভোর্স পেপার..!”
রোদ:- “মা…মানে…?
অয়ন:- “মানে হলো এটা তোমার আর শুভ্রের ডিভোর্স পেপার। সাইন করো তাড়াতাড়ি।
রোদ:- “কি…কি বলছেন, আমাদের ডিভোর্স পেপার মানে?
অয়ন:- “হুম তোমাদের ডিভোর্স, তুমি শুভ্র আজ এই মূহুর্তে ডিভোর্স দিবে। তাঁরপর তোমাকে নিয়ে আমি এখান থেকে দূড়ে কোথাও চলে যাবো।
রোদ:- “কি সব বলছেন আপনি! আমি সাইন করবো না,
“রোদ বসা থেকে উঠে, দাঁড়িয়ে যেতে নেয়। এমন সময় অয়ন রোদের হাত টেনে ধরে। রোদ হাত ছাড়ানোর জন্য ছোটাছুটি করতে থাকে। অয়ন রোদের হাত টেনে ধরে কিছুটা দূরে ছুড়ে মারে।
রোদ মুখ থুবড়ে ফ্লোরে পড়ে যায়। অয়ন রোদের দিকে এগিয়ে এসে, চুলের মুঠি ধরে রাগে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে..!
অয়ন:- তোকে তো আমি ভালোবাসছি।
শুভ্রের মতো কখনো আঘাত করেনি। সব সময় চেয়েছি ভালোবেসে আগলে রাখতে। তাহলে কেনো তুই আমার ভালোবাসা বুঝলি না। উত্তর দে! কেনো আমায় ভালোবাসলি না। কেনো তুই শুভ্রকে ভালোবাসলি উত্তর দে।
“রোদ অয়নকে ধাক্কা দিয়ে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিয়ে, হাতের উল্টো পিঠে চোখের পানি মুছে, অয়নের দিকে তাকিয়ে বলে..!
রোদ:- ভালোবেসেছি কারন সে আমার স্বামী, আমার জীবনের সব কিছু, আমার ভালোবাসা, আমার ভালো থাকার কারন। আর আমি তো কোনো পরপুরুষকে ভালোবাসিনি, আমার স্বামীকে ভালোবেসেছি।
“রোদ একটু থেমে আবার বলে উঠে..!
রোদ:- “দরকার হলে মরে যাবো। তাঁরপরও আপনার মতো নিকৃষ্ট মানুষকে কখনোই ভালোবাসবো না।
‘‘আরে আমি তো আপনাকে নিজের বড় ভাইয়ের চোখে দেখেছি সব সময়, আর আপনি কি’ না ছিহহহ। লজ্জা করলো না, এই রকম একটা নোংরা কাজ করতে। একবারও বুক কাঁপলো না।
অয়ন:- “না লজ্জা করেনি, বুক কাঁপেনি,
আমি আমার ভালোবাসা জোর করে হলেও আমার করে নিব।
রোদ:- “জোর করে আর যাই হোক, কারো ভালোবাসা পাওয়া যায়’না।
অয়ন:- আমি তোমাকে চাই রোদ। শুভ্রের সাথে আমি তোমাকে সহ্য করতে পারছিনা। প্লিজ তুমি শুভ্রকে ভুলে আমার কাছে চলে আসো।
বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৫৪
“রোদ অয়নের দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য হাঁসে, তাঁরপর বলে..!
রোদ:- “কি করে ভুলে যাবো তাকে, রক্তে মিশে যাওয়া মানুষকে কি কখনো ভুলা যায়।
অয়ন রোদের কাছে এগিয়ে রোদকে ধরতে যায়। অয়ন রোদের গায়ে ওড়না টেনে ধরে, রোদ দুহাতে নিজের শরীর ডাকার চেষ্টা করে।
এমন সময় কারো শক্ত হাতের থাপ্পড় পড়ে, অয়নের গালে। অয়ন সামনে তাকাতেই অবাক হয়ে বলে….!
অয়ন:- “তুমি…..?
