বুনো ওল বাঘা তেঁতুল পর্ব ৭৫+৭৬
রোজা রহমান
প্রথম বাবা হবার আনন্দ এবং সুন্দর একটা অনুভূতিতে শিশির ডুবে আছে। অনাগত সন্তানের জন্য যত্ন কোনো অংশে কম রাখছে না। কুয়াশার দিন মাফিক নিয়মিত খাওয়া, ঘুম সহ সকল প্রকার যত্ন সে নিজে দায়িত্ব নিয়ে পালন করছে৷ বাহিরের কাজ সামলে ঘরে বউ, অনাগত সন্তানের দায়িত্ব পালন করছে। দিন গুণছে কবে সে ছোট্ট ছোট্ট হাত, পা ওয়ালা জান্নাতি সুখের মুখটা দেখবে৷
চলে গেল সপ্তাহের বেশি। ইন্ডিয়া থেকে আসার পরেরদিন কুয়াশাকে নিয়ে সে হসপিটালে যায়। সেখানে কুয়াশার শারীরিক অবস্থার টেস্ট করিয়ে ডক্টরের থেকে গর্ভবতী মায়েদের জন্য নিয়ম মাফিক সব চলার জন্য রুটিন নিয়ে এসেছে। সেই চার্ট অনুযায়ী কুয়াশার দিনের রুটিন চলছে সপ্তাহ জুরে। কুয়াশা এত এত খাবার খেতে পারে না হাঁপিয়ে উঠে৷ ওর খাবারের প্রতি একটুও রুচি নেই। শিশির এতটাই কড়া হয়েছে সন্তানের জন্য যে কুয়াশা আগে একচুল পরিমাণ শিশিরকে ভয় কেন? ছাড় দিত না সে কুয়াশা এখন শিশিরকে ভয় পাওয়া শুরু করেছে৷
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
ধমক খেয়ে গাল ফুলিয়ে বাবুর সাথে একা একাই বকবক করে। শিশির দেখে আড়ালে হাসে তবুও ছাড় দেয় না। তার এককথা সন্তান সুস্থ এবং সবল চায় তার৷ কোনো হেলাফেলা সে সহ্যকরবে না৷ খেতে মন চাইল না আর খাবে না এটা তো হবে না!
শিশির ধৈর্য সহকারে বউ, বাচ্চার খেয়াল রাখছে৷ তারমধ্যে একটুও বিরক্ত বা অধৈর্যর ভাব নেই।
গত শুক্রবারে ফকির, এতিমদের খাবার আয়োজনও করেছিল। আত্নীয়দের বাড়িতে মিষ্টিও বিলিয়েছে। রিজভী, স্মৃতি এসেছিল শুনে। এসে শিশিরকে অভিনন্দন জানিয়ে দেখা করে গেছে।
সকালের খাবার পর বসার ঘরে বসে আছে সব। দশটার দিকে নীহার ফোন দিল। নীহারের ফোন পেয়ে সকলের মাঝে আনন্দ দেখা গেল। শশী শুনে আগ্রহ নিয়ে চেয়ে রইল। শিশিরের ফোনে কল করেছে। ভিডিয়ো কল দিয়েছে। শিশির ফোন ধরেই আগে পিছে কিছু না বলেই সর্বপ্রথম বলে উঠল,
” কংগ্রেস ভাই তুই মামা হচ্ছিস। ”
যেন কথাটা নীহারকে না জানাতে পেরে তার পেট ফুলেফেঁপে ফেটেফুটে যাচ্ছিল। ওপাশ থেকে নীহারের কিছুক্ষণ কোনো কথা পাওয়া গেল না। এরপর চিল্লানোর শব্দ এলো। শিশির হেসে উঠল। বৃষ্টিরাও হাসল। কুয়াশা ভড়কে চেয়ে রইল। শশী মলিন হাসল। উঠে শিশিরের পাশে দাঁড়াল। পাশে থেকে নীহারকে দেখার চেষ্টা করল। দেখলও কিন্তু নীহার দেখল না তাকে। নীহার বলল,
” এ আমার ভাই, তুই সিরিয়াসলি বাবা হচ্ছিস? ”
” হুঁ, একদম খাঁটি সোনার মতো ঝকঝকা কথা।”
শিশির হেসে হেসে উত্তর করল। সকলে হেসে ফেলল শিশিরের কথায়। নীহার হেসে বলল,
” তাহলে আমি খাঁটি সোনার মতো ঝকঝকা মামা হচ্ছি? ”
আবার একদফা হাসির রোল পড়ল। কুয়াশার লজ্জায় মুখ লুকানোর মতো অবস্থা। উত্তরে শিশির বলল,
” হ্যাঁ, যখন মামা ডাক শুনবি তখন হিরার মতো ঝকঝকা হাসি দিবি। ”
আবার হাসল সকলে। নীহার হেসে নিয়ে বলল,
” ফাজিল একটা। ”
থেমে বলল,
” অভিনন্দন আমার ভাই। ”
” থ্যাঙ্ক ইউ ভাই। ”
” ফাইনালি মামা হতে যাচ্ছি তাহলে? ”
উত্তরে শিশির হাসল। কুয়াশা এগিয়ে গেল। পাশে থেকে ফোন নিয়ে বলল,
” ভাইয়া, কেমন আছো তুমি? ”
” আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি। তোরা কেমন আছিস? ”
” আমরাও ভালো আছি। ”
” কুশু…! আমার বাচ্চা বোনটা কত বড় হয়ে গেল! ”
কুয়াশা লজ্জা পেয়ে হাসল। নীহার আবার বলল,
” আমার বউটা কই রে? ”
কুয়াশা মুচকি হেসে শশীর দিকে ফোন ধরল। শশী ফোনের দিকেই চেয়ে ছিল। নীহার দেখল শশীকে৷ ইশশ কতদিন পর দেখল দু’জন দু’জনকে। শশীর চোখ টলমল করছে। নীহার বলল,
” ফোন হাতে ধরো আর ঘরে যাও।”
কুয়াশা তা শুনে শশীর কাছে ফোন এগিয়ে দিল। বলল,
” ধর, ঘরে যা। ”
শশী নিল ফোন। চলে গেল নীরবে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে। এই দূর থেকে বহুদূরের দেখায় কি শান্তি মেলে? ”
শশী যেতেই সকলে দীর্ঘ শ্বাস ফেলল।
ঘরে এসে শশী বিছানায় বসল। নীহার অপলক দেখল বউকে। চোখের তৃপ্তি মিটিয়ে জিজ্ঞেস করল,
” কেমন আছে আমার পাখিটা? ”
শশী এবার ঝরঝর করে কেঁদে দিল। নীহার কিছুক্ষণ দেখল৷ বলল,
” এ্যাই বউপাখি? ”
শশী চোখ তুলে ছলছল করে তাকাল। বলল,
” একটুও ভালো নেই আমি আপনাকে ছাড়া। ”
নীহার মুচকি হাসল। বলল,
” উহু আমার বউটা ভালো আছে আমি জানি। আমি জলদি আসব পাখি। কেঁদো না ”
” সেই জলদি কবে হবে?”
” খুব জলদিই হবে ইনশাআল্লাহ। ”
” ইনশাআল্লাহ।”
হাসল নীহার। বলল,
” এবার চোখের পানি মুছো। আমি কাঁদতে মানা করি নি? ”
” এসে যায়, আমি কি করব?”
আবার কিঞ্চিৎ হাসল সে। বলল,
” আমার বাচ্চা পাখিটা এখনো বাচ্চাই রয়ে গেল। ”
” আপনি কেমন আছেন?”
” আমার পাখির মুখ দেখে ভালো হয়ে গেছি ”
শশী ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল৷ নীহার বলল,
” খেয়েছে আমার বউপাখিটা? ”
” হুঁ, আপনি? ”
” হ্যাঁ, খেয়েই ফোন দিয়েছি। নিচে যাও ফোন নিয়ে। ”
তা শুনে শশী নিচে চলে এলো৷ নিচে এসে শিশিরের কাছে ফোন দিল৷ শিশির ফোন নিয়ে বলল,
” কবে আসবি ভাই? ”
” জলদিই যাওয়ার চেষ্টা করব। প্রথম বারের মতো মামা হব জলদিই তো যেতেই হবে!”
” হুঁ জলদি চলে আয়। ”
” বর্ষণ, বড় আম্মু, ছোট আম্মু, ভাবিরা কই?”
” আম্মুরা রান্নাঘরে। ভাবিরা এই তো পাশে। বর্ষণ খেলছে”
বলে শিশির ঘুরাল বৃষ্টিদের দিকে ফোন। বৃষ্টি, ইয়াসমিন ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করল। বর্ষণকে ডাকাল। বর্ষণ আসলেই নীহারকে ফোনের স্কিনে দেখে বলে উঠল,
” তাচু…!”
” কেমন আছে আমার চাচুটা?”
” বালো আতি। তুমি বালো আত?”
” আমিও ভালো আছি। খেয়েছে আমার চাচুটা? ”
” খেয়েতি। তুমি খেয়েত?
নীহার হাসল বর্ষণের পাকা পাকা কথা শুনে। অবশ্য বৃষ্টি শিখিয়ে দিচ্ছে তবুও এত সুন্দর করে উত্তর আর প্রশ্ন করছে যে আদর লাগছে। কবে যে এই আদরগুলোর কাছে যেতে পারবে!! এরপর জাকির মালিথার সাথে, জাকিয়াদের ডাকিয়ে ভালো মন্দ কথা বলে আরো কিছুক্ষণ সকলের সাথে আড্ডা দিয়ে সকলের থেকে বিদায় নিয়ে ফোন রাখল সে। শশী দীর্ঘ শ্বাসের সাথে বিষাদ উড়াল৷
পাঁচদিন পর বিকেলের দিকে শিশির বাহির থেকে আসল। কুয়াশা বসে ছিল নিচে। বাড়িতে ঢুকেই কুয়াশাকে বৃষ্টিদের সাথে গল্প করতে দেখে ঘরে যেতে যেতে বলল,
” ঘরে আয়। ”
কুয়াশা শুনে উঠে এলো। শিশির ঘরে এসে হাত মুখ ধুয়ে নিল৷ কুয়াশা এলে জিজ্ঞেস করল,
” দুপুরে খেয়েছিস? ”
” হুঁ।”
” সত্যি তো? ”
” তো মিথ্যা বলছি আমি? ”
” কতটুকু খেয়েছিস?”
” দেখো বেশি বেশি করছ কিন্তু! ”
শিশির জানে এ খেয়েছে কিন্তু না খাবার মতোই। সে কুয়াশার কাছে গিয়ে দাঁড়াল। পেটের উপর হাত রাখল। বলল,
” কই খেয়েছিস বেয়াদব? আমার বাবা বলছে তুই খেতে দিস নি? ”
কুয়াশা চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল,
” এ্যাই দেখো এখন লাগতে এসো না তোহ্! ”
বলে সরে যেতে নিল শিশির হাত পেড়ে ধরল। বলল,
” চুপচাপ এখানে বোস। ”
বলে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে সে বেরিয়ে গেল। কুয়াশা নাক মুখ ছিটকিয়ে বসে রইল। এখন আনবে ফলফলাদির পাহাড়!
কিছুক্ষণের মাঝে শিশির আপেল, কমলা, বেদানা, কলার ফলের ঝুড়ি নিয়ে এলো৷ এক হাতে ওটা ধরে কুয়াশাকে নিয়ে বেলকনিতে চলে গেল৷ বেলকনিতে বসার জন্য বিন ব্যাগ আছে। শীতের এই ঠান্ডা মৌসুমে বিকেলটা তারা বেলকনিতে কাটাতে এলো। সেখানে শিশির বসে ফলের ঝুড়ি রেখে কুয়াশাকে নিজের কোলের উপর বসিয়ে নিতে নিতে বলল,
” সাবধানে বোস।”
বলে সাহায্য করল কুয়াশাকে। কুয়াশার ইদানীং মুড সুইং বেড়েছে। যে কোনো কিছু বললেই বিরক্তি প্রকাশ করে। খিটমিটিয়ে ওঠে। যেমন এখন এই ভালোবাসাটা কুয়াশার পছন্দ হচ্ছে না। বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে রেখেছে৷ আগের অন্য কোনো দিন হলে বোধহয় আনন্দে এক লাফে বসত৷ শিশির চোখ রাঙিয়ে তাকালে সে চুপচাপ বসল৷ দুই পা একদিকে দিয়ে স্বামীর কোলের উপর বসল৷ শিশির কুয়াশাকে বুকের সাথে নিয়ে ফলের ঝুড়ি থেকে একটা কমলা হাতে নিল। সেটা ছিলতে ছিলতে বলল,
” তুই যদি এমন খাবারে অনিহা প্রকাশ করিস তো কি করে হবে বলত? ওঁ যে অপুষ্ট হবে তখন? খেতে না মন চাইলেও তোর জোর করেই খেতে হবে। ও’র জন্য খেতে হবে তোকে।”
কুয়াশা কিছু বলতে যাবে তখনই আবার সে বলল,
” এরপর ও চলে এলে হয় তুই খা নয়তো না খা আমার দেখার নেই। কিন্তু মনে রাখ, আমার বাবা পরিপুষ্ট না হলে তোর খবর করব আমি! ”
কুয়াশার প্রথম কথাগুলোতে মনটা ফুরফুরে হয়ে গেছিল কিন্তু পরের কথাগুলোই রাগ উঠল আবার। শিশিরে চুলগুলো সুন্দর করে ধরে টেনে ঘুরিয়ে দিতে দিতে বলল,
” খারাপ লোক, আমাকে তখন আর প্রয়োজন হবেনা নাহ্? ওর জন্যই তোর এত ভাবনা? সর লাগবে না তোর আগলা পিরিত ”
শিশির চোখ পাকিয়ে তাকাল। কুয়াশা পাত্তা দিল না। পেটের উপর হাত রেখে বাবুকে বলল,
” দেখছিস বাবু, তোর বাবা একটুও আমায় ভালোবাসে না। আর আদর করে নাহ্। একদম পঁচা হয়ে গেছে। আমাকে শুধু ধমকায় সেই আগের মতো। ”
শিশির মিটমিট করে হাসল। এক কোয়া কমলা কুয়াশার মুখের সামনে ধরল। কুয়াশা বিনা বাক্যে নিল৷ সে বলল,
” দেখো বাবা তোমার এই আম্মুটাকে কেন গোবর ঠাসা বলি। তোমাকে খেতে দেয় না তাহলে বাবা বকবে না বলো? ঠিক করেছি না বাবা? ”
বলে কুয়াশাকে বলল,
” দেখ আমার বাবাও বলছে ঠিক করেছি। ওর খাবার লাগবে। খেতে দিস তুই ওকে যে ও তোর কথা শুনবে?”
কুয়াশা তা শুনে মুখের কমলাটা খেয়ে নিয়ে শিশিরের গালে কামড় বসাল৷ কামড় দিয়ে কিছুক্ষণ ধরে রাখল। শিশির নির্বিকার৷ অবশ্য খুব বেশি জোরেও ধরেনি কুয়াশা৷ ছেড়ে দিয়ে তাকাল শিশিরের দিকে। শিশিরও তাকাল বলল,
” ফল খেতে বলেছি আমাকে খেতে বলি নি! ”
” পুরোটাই খেয়ে নেব তোকে। ”
শিশির কুয়াশার গলার পাশে ঘাড়ের কাছে ছোট্ট একটা কামড় দিল। এরপর কুয়াশার মুখে কমলা দিয়ে বলল,
” আচ্ছা খাস আগে যা খেতে বলছি সেগুলো খা ।”
কুয়াশা কমলা চিবাতে চিবাতে স্বামীর কাঁধের উপর মাথা এলিয়ে দিল শিশির আবার কমলা দিয়ে বলল,
” এ্যাই বউ !”
” হুঁ? ”
” ওঁ কি হয়ে আসবে রে? ”
” ছেলে। ”
” উহু, আমার মন বলে ও বাবার প্রিন্সেস হয়ে আসবে। ”
” দেখা যাবে আলট্রাসোনো করে জানা যাবে। বাই দ্যা ওয়ে, যদি ও ছেলে হয়? ”
” তো আর কি? ও যা-ই হোক আমারই। আমার সন্তান হবে। প্রথম বাবা হব সেই অনুভূতির মাঝেই ডুবে আছি”
কুয়াশা মুচকি হাসল। বলল,
” জানো আমার কতটা সুখ সুখ লাগে? আমাদেরও ফ্যামিলি হতে চলেছে? ”
” আমারও সুখ লাগে৷ চাচতো বোন ছিলি তুই তাও আবার অপছন্দের। এখন আমার সন্তানের মা তুই! ভাবা যায়!! ”
কুয়াশা হাসল৷ শিশিরের গালে চুমু দিল। টিপ্পনী কেটে বলল,
” ভাইয়া থেকে সাইয়া হয়েছ। ”
শিশির তা শুনে চোখ মুখ কুঁচকে তাকাল। বলল,
” এ্যাই, এই থার্ড ক্লাস কথা বার্তা বলবি না তোহ্! এই কথাটা জাস্ট অসহ্য লাগে৷ কেমন যেন শুনতে লাগে। ভাইয়া থেকে সাইয়া! লাইক ফিলিংস, বউ ছিল আগে দূরসম্পর্কের বোন। রোমান্সের ফিলিংসের স্বাদ তখন অন্যরকম হয়ে যায়।”
” তোহ্, আমিও তো সেটাই বলছি তুমি আমার বাবুর দূরসম্পর্কের মামা! ”
শিশির ফুঁসে উঠল। কিড়মিড়িয়ে কটমট করতে করতে কুয়াশাকে ধমক দিল। বলল,
” আরেকবার এটা মুখ থেকে বের করবি তো এখান থেকে আওড়িয়ে ফেলব! ”
” হুহ্, পারবে যে কত! ”
শিশির গল্পে গল্পে পুরো কমলাটা খাইয়ে একটা বেদানা তুলে নিল। সেটা ছিলতে ছিলতে বলল,
” এই জন্য স্পর্ধা বেড়েছে তোর! সকাল, বিকাল পিঠে তিন বেলা তিন প্রকার ঘাঁ পড়লে এমন সুযোগের সৎ ব্যাবহার করতে পারতি না ”
কুয়াশা ফুঁসে উঠে শিশিরের ঠোঁটে দিল কামড়৷ শিশির ভ্রু কুঁচকে তাকাল বিরক্ত নিয়ে।
” ফাজিল একটা! কামড়ানি কবে ছাড়বি তুই? ”
” ইহজীবনেও ছাড়ব নাহ্। আজীবন আমার কামড়ে রাখব তোমায়। এটা স্বামী কন্ট্রোলে রাখা মন্ত্র। ”
শিশির চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল,
” আচ্ছা? ”
” হুঁ।”
দাপটের সাথে উত্তর করল সে৷ তা শুনে শিশিরও কামড় বসাল কুয়াশার গলার হাড়ের উপর বরাবর। কুয়াশা আহ্ করে উঠলে সে ছেড়ে দিয়ে বলল,
” এটা বউ কন্ট্রোলে রাখা মন্ত্র। ”
বলে বেদানার দানা গুলো হাতের উপর ধরে রেখে বলল,
বুনো ওল বাঘা তেঁতুল পর্ব ৭৩+৭৪
” খা। ”
কুয়াশা বিরক্তি নিয়ে শিশিরের হাতের উপর থেকে একটা একটা করে দানা মুখে পুরতে লাগল৷
পুরো বিকেলটা তারা খুঁনসুটিতে মত্ত হয়ে কাটাল। আহ্ কী সুন্দর মুহূর্ত এবং দৃশ্য!!
