কালকুঠুরি পর্ব ৩৯

কালকুঠুরি পর্ব ৩৯
sumona khatun mollika

সকাল সকাল চারিদিকে কোলাহল! সবাই ছোটাছুটি করছে কারণ সবার রেজাল্ট বেরিয়েছে। মাহা ভিরের ভেতরে যায় নি। তার হয়ে মেধা রেজাল্ট দেখে এসে বলে,,
– বাহ সিজিপিএ ৩.৯৬। শুভেচ্ছা মাহা।
– ধন্যবাদ মেধা।
তখনি দেখা মেলে কাশেমের কাশেম মাহাকে একটা মিষ্টি ধরিয়ে দিয়ে বলে,,
– ওহ আপনেতো এনে খাইতে পারবেন না। বাড়ি যায়া খাইয়েন।
– কিসের মিষ্টি কাশেম ভাই?

সামির পেছন থেকে এসে বলে,,
– কাইশসা এবারে পাশ করছে,, সেই মিষ্টি। আগেরবার ফেল মারছিল এবার মারলে রাস্টিগেট করে দিত,,
মাহা একবার সামিরের দিকে তাকালো। আজ কেমন তাকে সুন্দর দেখতে লাগছে। ভন্ড মার্কা লুকটা নেই। কি এক কারণে স্যুট বুট টাই পরে ফর্মাল ডণেসাপে এসেছে৷ মেধা জিজ্ঞেস করে,,
– এবার কি করে পাশ করলেন কাশেম ভাই?
– অয় কাইলানী, তুই আমার কাইশসারে কি ভাবছস? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া কোনো আউল ফাউলের কাজ নয়।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মাহা জিজ্ঞেস করল,,
– ভদ্র ভাবে কথা বলুন। নিজে কি করেছেন? পাশও তো করার কথা না।
সামির বাকা করে হাসে। কাশেম বলে,,
– আরে ভাবি,, কি যে কন! ভাইতো একদম পুরা ভার্সিটি স্ট্যান্ড রেজাল্ট করছে। সিজিপিএ ৪ ।
মেধা আর মাহা একে অপরের দিকে তাকিয়ে প্রকাশ করে দুজনের মাথাতেই বাজ পরেছে। সামির বিগত রাতে রাগারাগি করে বাইরে কাশেমের বাড়িতে ছিল। তাই আজ দুজন একসাথে বের হয়নি।
মাহা ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে ক্যান্টিনের দিকে গিয়েছিল । তারপর সামির চেলাপেলা লাগিয়ে অনেক খোজ নেয়ার চেষ্টা করেছে কিন্তু মাহা ততখনেও বাড়ি ফিরে আসেনি। সিয়াম আর নুসরাত ও তার জন্য অপেক্ষায় ছিল কিন্তু আর দেরি করলে ট্রেন মিস হতো তাই তারাও চলে গেছে
প্রায় বিকেল নাগাদ,,
সামির ঘরে বসে ছিল, সিভান বিছানায় শুয়ে। সেই সময়ে ইনায়ার আগমন। সে খবর দিয়ে যায়,, ইতিকে নিয়ে সাথি আর সুফি বেগম হাসপাতালে গেছে। ইতির নাকি ভিষণ জ্বর। ইনায়া চলে যাবার পর সিভান বলে,,
– এ কাকা,
– উমমম??
– এই ইনুর মতিগতি আমার ঠিক মাথায় ঢোকেনা। এ নিশ্চয়ই কোনো খিচুড়ি পাকাচ্ছে।

সামির সিভানের পাশে বসে। দুমিনিট কিছু একটা ভেবে ভুরু কুঁচকে আস্তে করে শুধালো,
– এমনা কেন মনে হচ্ছে?
– কারণ খিচুড়ির মধ্যে আমি এলাচের গন্ধ পাচ্ছি। । সে কাওকে কিছু না জানিয়ে যখনতখন বেরিয়ে যায়। মাঝেমধ্যে রাতেও বের হয়। গভীর হয়ে কি যেন ভাবে। আর কাকি সুন্দরীরে কেমন চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখে। দেখতে চাও?
– হুমম ।
– এই দেখ,,
– ভিডিও ? সাবাশ! বাঙ্গি।। যেমনি বাপ তেমনি ব্যাটা। তবে নজর একদম এই কাকার মতো! কই দেখি?

সিভান ভিডিও চালু করতেই দেখা যায় ইনায়া আর মাহা রান্নাঘরে ছিল । সবজি কাটার সময় ইনায়া বারবার মাহার দিকে তাকাচ্ছে ভাবভঙ্গী এমন যে এখনি ছুড়িটা দিয়ে মাহাকে মেরে দেয় । বেশ কিছুসময় পর,, মাহা বের হওয়ার সময় ইনায়া ইচ্ছে করে তাকে ধাক্কা দেয়। মাহা তার দিকে তাকাতেই ইনায়া তাকে সরি বলতে থাকে৷ মাহা চলে গেলে ইনায়া মুক ভেংচি কাটে।

– দেখেছ? ইনু সচরাচর এমন আচরণ করেনা।
– মুরগী থেকে শেয়ালে রূপান্তরের কারণ? এতো জৈব যৌগের কঠিন বিক্রিয়া!
– কাকি সুন্দরী এখনো বাড়ি ফিরলোনা, বিকেল পেরিয়ে যাচ্ছে! নামাজের আগেইতো ফিরে াসার কথা।

সেইমুহূর্তে কাশেমের কল ঢোকে,,
– ভাই,, ভাবিরে তামিম খন্দকার এর লোক উঠায় নিয়া গেছে।
– কি?
– হ ভাই। তবে আশ্চর্য সব নতুন ছুড়া। ওইযে একটা কাইলা ছিলনা? পাতিলের মতো কাইলা,, বডিগার্ড! অরে দেইখা চিনছি। তাততাড়ি আসেন ভাই। নাকি আমরা যামু?
– আমি একা যাব।
– কিন্তু ভা……

কথা শেষ না হতেই কল কেটে সামির সিলিং ফ্যানটার দিকে তাকিয়ে আপনমনেই হেসে বলে,,
– হায় রে কপাল! ফুটো মস্তানের বউ নিয়াও কত টানাটানি !
– কি হয়েছে কাকা?
– বুঝবিনা রে সিভু! দুনিয়ায় সব জ্বালা একদিকে আর বউ ঝাক্কাস হওয়ার জ্বালা অন্য দিকে। পাল্লায় দিলে ওজনে এটাই বেশি ভারি হবে। যা গিয়ে ঘুমা।
আমি বউ আনতে যাচ্ছি।
– যাও।
সিভান বেরিয়ে গেলে সামির আবারো নীলরঙা লুঙ্গি পড়ে সাদা শার্ট পরে মুখে কালো রুমাল বেধে বেরিয়ে যায়। সে বেশ ভালোই জানে এখন আর তাকে এমপির বাড়ির গেট মারাতে দেওয়া হবে না।
সুতরাং বৃথা চেষ্টাও করেনি। সোজা দেয়াল টপকে বাড়ির ভেতর। দেয়াল টপকাতে একটু বেগ পেতে হয়েছে কারণ ওই ওয়ালের পেছনে ড্রেন। আরো অদ্ভুত বিষয় সে সাথে করে রিটো কে নিয়ে এসেছে। রিটোকে প্রথমে ছুড়ে মারলে সে রোবটের মতো নিঃশব্দে ল্যান্ড করেছে৷ তারপর সামির। রিটো নিজের জীভ বের করে সামিরের হুকুমের অপেক্ষা করছিল। অতপর সামির ঘাড় দোলাতেই রিটো মাটি শুঁকে ভেতরে ঢুকে যায়৷ পাহারাদারেরা সব বাহিরে ব্যাস্ত।

মাহাকে চেয়ারের সাথে বেধে রাখা হয়েছে। এবং নিঃসন্দেহে তারা তার নিকাব টেনে খুলে ফেলেছে। মাহা চুপচাপ বসে আছে। এমপি তামিম খন্দকার কমিশনারের দিকে তাকিয়ে বলল,,
– নেন নিয়ে আসা হয়েছে অনেকক্ষণ এখনো বসে বসে কি সামিরের আসার অপেক্ষা করছেন?
– চ্যাহ। না না নাআ এমপি সাব! দেকেনেন চোখ জুড়িয়ে এরকম বিদেশির চেয়ে সুন্দরী এ জীবনে দেখেছেন কোনোদিনও?
– দেখেছি।
– এ্যা? কোথায় দেখেছেন?
– সেও এই শালার সাথে যুক্ত। শালার জিন্দেগী কি দেখছেন! পরীর মতো মা ছিল হুর পরীর মতো বউও জুটছে৷
– মাও কি সুন্দর ছিল?
– এই মাগির চেয়ে এক লেবেল বেশি হইব কম হইব না।

এমপি মাহার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,,
– কেমন লাগছে এখানে? চুপ করে বসে আছিস কেনরে ছুড়ি? অপেক্ষা ছেড়ে দে তোর আর বাড়ি ফেরা হবেনা।
– দূরে সরে দাড়ান গন্ধ আসছে।

এমপি তামিম খন্দকার তার মুখ চেপে ধরে বলল,,
– তেজ কতো শালির!
– তেজ থাকা তো মাস্ট এমপি সাহেব। এখনো বলছি সরে দাড়ান নাহলে আমি কিন্তু সামির সিকান্দার কে থামাবো না।
– শখ কতো শালির , তোর মনে হয় অয় তরে বাচাইতে আইবো? আসুক মেরে দেব কয লাখ টাকা কোনো ব্যাপার না ।
– আসবে। সে আমাকে বাঁচাতে আসবে। আমি যতদুর জানি সিকান্দার রা নিজের শিকার অন্য কাওকে ছিনিয়ে নিতে দেয় না।
– দেবে।
– এ্যাহা দেবেনা। বরং আপনাকে এমনভাবে যত্ন করবে কালকে আপনার দেহ শনাক্তকরণ ভয়ানক হতে পারে। আমি নিজ চোখে তার হাতের দক্ষতা দেখেছি।

এমপি আর কিছু বলার আগেই পেছন থেকে সামির সিকান্দার এর কণ্ঠ ভেসে আসে,,
– ঠিক বলেছ পানি সুন্দরী! হাত আমার বড্ড দক্ষ। এমপি সাবরে বোঝানোর দরকার নেই। সে তোমার চে ভালোই জানে।
এমপি তখন সামিরকে বলে,,
– তোরি অপেক্ষায় ছিলাম, আয় বস। দু এক সিপ নে, ার বল,, তোর কত টাকা চাই। তুই নির্ধারণ কর।
– আরে এমপি সাব! অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্করী! অমূল্য জিনিসের মূল্য নির্ধারণ করা যে ভয়ানক ব্যাপার।
আমারতো খুশিতে মাথায় বাঙ্গি ভাঙতে মন চাইছে! ইশশ আমার ম্যাডাম জানতো আমি আসবো,, আয় হায়,, সামথিং সামথিং!

এবারে এমপি আর কমিশনারের একটু নায় একটু বেশিই ভয় হতে লাগল। ততখনে রিটো এসে দড়জার কাছে দাড়িয়ে আছে।
সামির লুঙ্গির খুট থেকে সচরাচর এর মতো একটা ধারালো ছুরি বের করে তা দেখতে দেকতে বলর,
– নট ফেয়ার , বেচারা চাক্কু অনেক পরিশ্রম করেছে আজ এ রেস্টে থাক।
পেছনে ছুড়ে মারলে, রিটো তা শুঁকতে থাকে। সামির একপা দুপা করে এগিয়ে কমিশনারের কাছে গিয়ে দাড়িয়ে বলে,,

– যান আপনারা গুরুজন আমিই সুযোগ দিরাম যে আগে মরবে সে মরলো আর যে পরে মরবে সে আমার হাতে। এখন দেকেন আপনারা যা ভালো বোঝেন সময় কিন্তু ৫ মিনিট।
তামিম আর কমিশনার দুজনেই ভরকে যায় ! একজন আরেকজনকে বলে আমাকে মেরে দে,, আমাকে মেরে দে। এটা ভুলে যায় নিজে নিজে আত্মহত্যা করলেও কিন্তু সামিরের থেকে বাচা যেত।

সামির হাই তুলে বলে,,
– আহহ,, আম নাম,, টাইম আপ! নাও ইটস মাই টার্ন।
কমিশনার দৌড়ে পালাতে গেলে রিটো তাকে কামড়ে ধরে। সে সেখানেই পরে যায় । সামির ধিরে ধিরে তামিমের গাল চেপে ধরে বলে,,
– তোর সাহস কত তুই আমার বউকে তুলে এনে তার চেহারা দেখেচিস! হিজাব ছিড়ে দিয়েছিস হাত টা খুব শক্ত না তোর! রস খুব বেশি! রস শুকিয়ে এবার মরুভূমিতে চলে যা।

মাহার হাতের বাঁধন সামির খোলেনি। খুন করাটা তার খুবই দরকারি আর প্রয়োজনীয় এক কাজ। মাহা বাধা দিলে তার খুবই বিরক্তি হবে।
তাই মাহা সেভাবেই বসে রইল। সামির পাশের টেবিল থেকে কাঁটাচামচ তুলে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাতে দেখাতে বলল,,
– ব্র্যান্ডেড নাকি? ওয়াহ কি দাররুণ মাইরি! কালারটা পছন্দ হয় নাই। লাল হলে সুন্দর লাগবে।

তামিম চিৎকার করার আগেই সামির তার গলা টিপে ধরে দাঁত কেলিয়ে হাসলো! কাঁটাচামচ টা দেখিয়ে বলল,,
– বেডি মাইনষের দিকে নজর দিলে এমনেই নাকি ওপর ওয়ালা আইক্কা আলা শিক দেয় একটু ট্রায়াল দিয়ে যা।
বলেই ঠিক শায়েখকে যেভাবে মেরেছিল সেভাবেই তামিমের দুই চোখে দুই কাঁটাচামচ গেঁথে দিল। একমিনিটে চারপাশ রক্তে রক্তাক্ত হয়ে গেল। মাহা একদম চুপচাপ বসে রইল।

কমিশনারের গলা কামড়ে ধরেছে রিটো। তার সাথে ধস্তাধস্তি জাবরদস্তি করেও নিজেকে ছাড়াতে পারেনি। সামির তার কাছে যাওয়ার আগে টেবিলের কাছে যায়। বেশ বড়সড় দামি একটা চিনামাটির ফুলের টব। সেটা তুলে এনে ধাম করে কমিশনারের মাথায় মেরে দিয়েছে। ব্যাস! ভবলীলা সাঙ্গ। টবটা যেহেতু যথেষ্ট ভারী ছিল তাই ওইপরিমাণের আঘাতেই মারা গেছে কমিশনার। ২, ৩ মিনিট পিনপতন নিরবতা। বাহিরের কেও টের পেলনা। পাবে কি করে! বাহিরে কাশেমেরা আরো কযেকজনকে নিয়ে মিউজিক প্লেয়ারে লাউডে গান বাজিয়ে চলেছে। ।

সামির ধীর পায়ে মাহার দিকে এগিয়ে গিয়ে তার হাতের বাঁধন খুলে দিলে সে উঠে দাড়ায়,, সামির মাহার বেনি করা চুলে হাত বুলিয়ে, হুট করে তাকে জড়িয়ে ধরে উবু হয়ে ফর্সা গালে একটা চুমু দিয়ে বলে,,
– দয়া করে এখন বোলোনা যে গন্ধ লাগছে সরে যান! তোমার জন্য টেনশন মারাতে মারাতে আজ এক বিন্দু ও গিলিনি।

মাহা কিছুই বললনা। সামির বলে,
-তবে একটা কথা বলো দিবা,, তুমি কিভাবে শিওর যে আমি আসতাম?
– কারণ,,
– হুমম… সিকান্দার রা নিজেদের শিকার কাওকে দেয়না।
-ঠিক ধরেছেন

সামির বাঁকা করে হাসে। মাহার মাথা ঘুরছে। চোখমুখ গুলিয়ে যাচ্ছে । এখনি মনে হয় বমি করে ফেলবে। সামির সিকান্দার জিজ্ঞেস করে,,
– চলো, নীড়ে ফিরে যাই। তোমাকে দুর্বল দেখাচ্ছে। হাঁটতে পারবে?
– উহু।
-তো আমি কি করব! হেলিকপ্টার আনবো?
-তাহলে জিজ্ঞেস করলেন কেন? আজব!
-মন চাইছে। তোমার হিজাব কোথায়?
-ওরা ছিড়ে দিয়েছে।
-মুখ ঢাকবে কি দিয়ে ?
– কিছুইনাই। সমস্যা নাই। ক্ষেত্র বিশেষে সৃষ্টিকর্তা ছাড় দেন। তিনি তো আপনার মতো নির্দয় না।

সমির কি একটা ভেবে নিজের লুঙ্গির নিচের একাংশ লম্বা করে ছিড়ে পেচন থেকে মাহার মুখ বেধে দিতে দিতে বলে,,
-আমি ওসব দয়া ফয়া দেখাতে পারবোনা। আমার যা ইচ্ছে আমি তাই করি এবং করব।
– উমম,, লুঙ্গি চিড়ার কি দরকার ছিল! আপনার মুখেওতো রুমাল ছিল।
-এটা ডাকাতের রুমাল প্লাস রক্ত ভরে আছে। আমি শিকারে বেরোই মুখ বেঁধে ।

আর কোনো কথা না বলে সামির সোজা মাহাকে পাজা কোলে তুলে বলল,,
– কি ব্যাপার বলোতো ভারী হয়েছ মনে হচ্ছে ।
– নিচে নামান পরে যাব ।
– বেশি কথা বললে ফেলে দেব।
মাহা আর কোনো কথা বললনা। সামির তাকে নিয়ে সোজা দড়জা দিয়ে বেরিয়ে যায়। রিটো পিছনে পিছনে দৌড়াতে থাকে। সামির বেরিয়ে দেখে ঘুমের অষুধ মেরে কাশেম আর লেমন মিলে সবগুলো কে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে ।

কাশেম মাহার মুখে লুঙ্গির ছেড়া অংশ দেখে বলে,,
– ওরে বাপ! এত ভালোবাসা! ব্রেকিং খবর! ইসতিরির পর্দা রক্ষার্থে সোয়ামীর লুঙ্গি নিবেদন! দেখ সবাই শিখে রাখ।
– সর বাল, জায়গা দে!
– কিন্তু ভাই এই কুত্তা কেমনে যাইবো?
-তোর কোলে চইড়া।
– ইহহ,
-নাক শিটকোস না। তোর কাইলানীর চে অয় সুন্দর ।
– নিজের ঘটে পরীর লাকান বউ আছে জন্য আপনে আমার শ্যামারে অপমান করেন, এডি কিন্তু কষ্টদায়ক ভাই।
– খুব ভালো, এবারে চুপ কর। আমার বউ ঘুমিয়ে গেছে। জাগলে তরে পুইত্তালামু ।
– এহহ ঢং দেখলে বাচি না।
– কিছু কইলি?
-কই নাতো।
– গাড়ি আস্তে চালা।
-আচ্ছা৷

ধিরে দিরে গাড়ি সিকান্দার বাড়ি পৌঁছে যায়। মাহার গুম ভেঙে গেলে মে নিজেই ওপরে চলে যায়৷ তবে সিভানের কথা মতো সামির খেয়াল করে,, ইনায়া এখনো ঘুমায়নি। আর সে মনে হচ্ছে বাহির থেকে এসেছে। কারণ পরনে বাইরে যাওয়ার পোশাক৷ এ বিষয়ে তৎখনাৎ কিছু বলেনা সামির।
নিজেও ঘরে চলে যায়।

মাহা গোসল সেরে এসে নিজ জায়গায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরে। সামির জামাকাপড় ছেড়ে চুল মুছতে মুছতে খেয়াল করে,,, মাহার হাতে কিছুটা কেটে গেছে। গালেও। নখের দাগ বসে গেছে নিজ উদ্যোগে মলম নিয়ে এসে নিজেই আলতো করে লাগিয়ে দেয় ।

বুঝতে পারে মাহার জ্বলে যাচ্ছে কিন্তু ক্লান্তিতে এমন ঘুম এসেছে যে চোখ খোলেনি। হঠাৎই মাহার পেটের ওপর থেকে কামিজ সরে যায় । সামির দুষ্ট করে একটু হাসলো। হাঁটু ভেঙে বসে ধিরে ধিরে পেটের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বলে,,

– বিশ্বাস হয়না এর ভেতর আরেকটা আমি আছি দেখেছিস বাঙ্গি তোর মা কতো বেয়ারা! নিজেই আমাকে ঠিক হতে বলে আবার নিজেই বিশ্বাস করে আমি নাকি খুন করতে যাব। এতদিন দ্বিধায় ছিলাম তবে এখন শিওর তোর মায়ের জন্য আমার মনে সামথিং সামথিং কাজ করে।

একবার ঘুরে মাহার দিকে তাকায় সামির।
ঠোট টেনে হাসে আবারো মাহার নাভির কাছে মুখ নিয়ে বলে,,,
– অনুভূতি টা কিন্তু ভালোই। তোর মা কতো জাইরা দেখেছিস, সেত তোর বাপ শিক্ষিত না হলে জানতেই পারতাম না তুই চলে এসেছিস। কতটুকু হয়েছিস? এটুকু, এইটুকু না বীজের সমান এতুটুকু। কার মতো দেখতে হবি? মায়ের মতো হোস । বাপ তো একটু কাইলা।

সামির মাহার পেটের ওপর একটা চুমু দিয়ে কামিজ টেনে ঢেকে দিল। তারপর সোজা গিয়ে মাহার মুখ বরাবর শুয়ে পড়ল। মাহার কপালে একটা মিষ্টি চুমু দিয়ে ধীর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল,,
– দিবা??
– উউউ….
– তুমি আমায় এতটাই ঘৃণা করো যে আমি বাবা হবো আমাকে জানালেওনা। তুমি কিন্তু অন্যায় করেছ। ।
– উউউ…

কালকুঠুরি পর্ব ৩৮

সামির কোনো কথা বললনা । মাহার গায়ে লেপ ঠিক করে তুলে দিয়ে নিজেও ঘুমিয়ে পরল।
শীত পরেছে বেশ কিছুদিন । মাহা যখন গাড়ির মধ্যে ঘুমিয়ে গিয়েছিল, তখন সামির খেযাল করেছে। অনেকদিন হয়েগেছে মাহার শারীরিক অবস্থা কেমন অস্বাভাবিক। সাথেই সামির এখন বেশিরবাগ সময় বাড়িতে থাকে। মাহারতো অনেকদিন যাবত নরমাল সাইকেলও হয়না। যতই হোক সে স্বামী অবশ্যই বুঝতে পারে। মাহা সামিরের কাছেও যায়না। সামির কাছে এলেই উসখুস করে আর ঝগড়া বাধিয়ে দেয় । সেই কারণেই সামির নিজ উদ্যোগে মাহার নার্ভ চেক করলে তার লোম দাড়িয়ে যায়। একবার দুবার না। পুরো পথে অনেক বার সামির তার নার্ভ চেক দিয়েছে। সাইন্সের স্টুডেন্ট হযে আর কিছু না হোক এটাতে বড্ড লাভ হয়েছে। সামির নিশ্চিত । মাহা অন্তঃ সত্বা। ।

কালকুঠুরি পর্ব ৪০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here