বাদশাহ নামা তৃতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ৭

বাদশাহ নামা তৃতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ৭
রানী আমিনা

প্রাসাদের রয়্যাল ফ্লোরের বিরাট বারান্দায় ভারী কদম ফেলে রাজকীয় ভঙ্গিতে হেটে করে চলেছে আনাবিয়া। তার পায়ের প্রতিটি স্পর্শে প্রাসাদের পাথরের মেঝেতে ফুটে উঠছে কিঞ্চিৎ সোনালী আলো, তৈরি হচ্ছে রিনরিনে এক মৃদু মধুর শব্দ!
শ্বেত পাথরের রাজ প্রাসাদের ভেতর টকটকে লালে আবৃত ঝলমলে আনাবিয়ার হঠাৎ উপস্থিতিতে সকলের চোখ ঝলসানোর উপক্রম! রূপকথার মায়াজাল ভেঙে হঠাৎ বেরিয়ে আসা কোনো পরীর মতোনই প্রকট তার অস্তিত্ব! চলনে এক তুখোড় শাসন, এক অমোঘ ক্ষমতা ফুটিয়ে সদর্পে হেটে চলেছে সে রয়্যাল ফ্লোরের বারান্দা দিয়ে। উদ্দ্যেশ্য তার মীরের কামরা।

প্রাসাদের দাসী, বাদী, রাজকর্মচারীরা আশ্চর্য চোখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে, এই অনাকাঙ্ক্ষিত মোহনীয়াকে দেখে এই মুহুর্তে তারা হারিয়ে ফেলেছে ভাষা!
চিরতরে হারিয়ে যাওয়া মেয়েটি কিভাবে ফিরে আসলো আবার, ওই সর্বভুক লাইফট্রির ভেতর এতগুলো দিন সে কিভাবে সার্ভাইভ করলো সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খেতে লাগলো তাদের মস্তিষ্কে!
আনাবিয়ার রক্তলাল পোশাক, ঝলমলে সফেদ চুল, মোলায়েম শরীরের নিগূঢ় মহিমা, সবকিছুতেই প্রকট হয়ে রইলো এক দুর্দমনীয় শক্তি, যে শক্তির সামনে সকলে নতি স্বীকার করতে বাধ্য।
দাসী বাদীরা নিজেদের বিস্ময়কে এক পাশে রেখে দ্রুত পায়ে, সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে বিরাট বারান্দার দু ধার ঘেঁষে দাঁড়িয়ে গেলো সারিবদ্ধ ভাবে, নুইয়ে ফেললো মস্তক! আনাবিয়া দেখলো না কিছুই, নির্বিকার চিত্তে বড় বড় পা ফেলে হেটে এগোলো মীরের কামরার উদ্দ্যেশ্যে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ইলহান কামরাতে বসে সাম্রাজ্যের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পত্র দেখছিলো। এই যুগে এসেও কাগজপত্র উল্টাতে হচ্ছে বলে সে ভীষণ বিরক্ত। তার দু মিনিটের ছোট ভাই কেন এত আধুনিক যুগে এসেও কাগজপত্র বেছে নিয়েছিলো সেটা ওর মাথায় ঢোকেনা। অতিসত্বর সমস্ত জরুরি তথ্যাদি সহ সকল কিছু ডিজিটাল ডকুমেন্টস করে নেওয়ার ব্যাবস্থা করবে সে।
বাইরেটা হঠাৎ নিরব হয়ে যাওয়ায় কাগজের ওপর থেকে চোখ তুলে কান খাড়া করে ভ্রু কুচকে সে বোঝার চেষ্টা করলো কি হচ্ছে আসলে, আর সেই মুহুর্তেই কামরার চওড়া নকশাদার দরজাটা শব্দ করে খুলে সরে গেলো দুদিকে। ভেতরে প্রবেশ করলো লালে ছেয়ে যাওয়া আনাবিয়া৷
ইলহাম আগেই খবর পেয়েছে আনাবিয়ার আগমনের, কনস্ট্রাকশন সাইট থেকে ফিরে আসা গার্ডটি রাজকর্মচারীর মাধমে ইতোমধ্যে জানিয়েছে ইযাজ কে।

কিন্তু আনাবিয়াকে এই মুহুর্তে নিজের চোখের সামনে দেখে তব্দা খেয়ে গেলো ইলহান, এই আগুন সুন্দরী ওর সামনে এলেই যে ও জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যায়!
সেখানে দাঁড়িয়েই আনাবিয়া ঘাড় কাত করে চোখ রাখলো ইলহানের বসে থাকা দেমিয়ান সিংহাসনের ওপর। কালো রঙা পাথর খোদাই করে গড়া এই দেমিয়ান সিংহাসনটি ঠিক কতশত বছর পূর্বে তৈরি সেটা জানেনা আনাবিয়া, আর না জানতো মীর।

পাথরের সমস্ত শরীরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে খোদাইকৃত সুক্ষ্ম সোনার রেখা, হাতলের ওপর সূক্ষ্ম লতানো অলংকরণ। বসার অংশটা মখমলের গভীর বেগুনি বর্ণের যার উপর খচিত সূক্ষ্ম রূপার জরির কাজ।
আনাবিয়ার মনে পড়ে গেলো ওর ছোট বেলার কথা, মাঝে মাঝেই মীর কামরায় না থাকলে, মিটিং রুমে গেলে ও এখানে এসে বসতো। ছোট ছোট পা দিয়ে উঁচু সিংহাসনে উঠতে পারতোনা, তাই আশেপাশের সমস্ত জিনিস একত্রিত করে একটার ওপর আর একটা রেখে তার ওপর উঠে সিংহাসনে চড়তো৷
ওই বিশাল সিংহাসনের ভেতর ও যেন হারিয়ে যেতো! কখনো কখনো মীরের জিনিসপত্র নিয়ে খেলতে খেলতে সিংহাসনের ওপরেই ঘুমিয়ে পড়তো।

বাদশাহর সিংহাসনে বসার অনুমতি কারো নেই, স্বয়ং বাদশাহর শেহজাদাদেরও নয়। সেখানে আনাবিয়া রাত দিন কারণে অকারণে এখানে এসে হুটোপুটি করতো। অথচ মীর ওকে কখনো বারণটুকু পর্যন্ত করেনি!
পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে আনাবিয়ার টেরাকোটা রঙা ঠোঁটে ফুটে উঠলো কিঞ্চিৎ হাসির রেশ। পরক্ষণেই সেটুকু মিলিয়ে গিয়ে হয়ে উঠলো শক্ত!
ধীর পায়ে এগিয়ে এসে ও দাড়ালো ইলহানের টেবিলের সম্মুখে। তারপর ওর দিকে মুগ্ধ চোখে চেয়ে থাকা ইলহানকে উদ্দ্যেশ্য করে শক্ত কন্ঠে বলে উঠলো,
“দেমিয়ান রুল নাম্বর থ্রি সিক্সটি ওয়ান, নিজের সহদোরের রক্তে হাত রাঙানো গুরুতর অপরাধ, শাস্তি ডার্ক প্যালেসের লোয়েস্ট গ্রাউন্ডে আজীবন বন্দি, অতঃপর মৃত্যু৷
তবে আপনাকে এখন কি করা উচিত, শেহজাদা জাজিব ইলহান দেমিয়ান?”
ইলহান ভ্রু উঁচিয়ে সাবাসির ভঙ্গিতে তাকালো আনাবিয়ার দিকে, তারপর সিংহাসন ছেড়ে উঠতে উঠতে ঠোঁটের কোণে বাকা হাসি ফুটিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

“শাস্তিটা কে দিবে আমাকে? তুমি?”
আনাবিয়া উত্তর দিলোনা কোনো, চোখ ঘুরিয়ে একবার পরখ করে নিলো সম্পুর্ন কামরাটা।
কামরাটা বদলে গেছে সম্পুর্ন! মীরের কোনো জিনিসপত্রই আর এখানে নেই, একমাত্র সিংহাসনটা ছাড়া৷ ভিন্ন রুপে সেজেছে এখন এ কামরা, আসবাবপত্রের স্থানগুলো বদলেছে, নতুন নতুন আসবাব পত্রের ঠাঁই হয়েছে কামরায়।
ওকে এভাবে কামরার দিকে নজর বুলোতে দেখে এগিয়ে এলো ইলহান, আনাবিয়ার কাছাকাছি, টেবিলের পাশে এসে দাঁড়িয়ে নিজেও একবার কামরার চারপাশে চোখ বুলিয়ে নিয়ে চাপা সুরে জিজ্ঞেস করলো,

“সুন্দর, না?”
তারপর আনাবিয়ার উত্তরের অপেক্ষা না করেই বলে উঠলো,
“শুনলাম… অত্যন্ত সুশ্রী, পতিব্রতা রমণীটি নাকি আমাকে বাদশাহ হিসেবে মানেন না!”
“জ্বী, ঠিক শুনেছেন।”
ইলহানের দিকে সরাসরি তাকিয়ে উত্তর করলো আনাবিয়া, ইলহান নিজেও আনাবিয়ার দিক্ব সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলল,
“ওহ আচ্ছা! তবে আমার এখন কি করা উচিত বলে আপনি মনে করেন শেহজাদী? আপনাকে প্রিজনার বানিয়ে ফেলি?”
এক পা এগোলো আনাবিয়া, ঠান্ডা চোখে চেয়ে দৃঢ় কন্ঠে বলে উঠলো,

“আপনি দেমিয়ান রুলস ভঙ্গ করেছেন, নিজের সহোদরের রক্তে হাত রাঙিয়েছেন। কীভাবে রোজ এই সিংহাসনে বসে শ্বাস নিতে পারেন, যেখানে এখনো আমার স্বামীর রক্তের গন্ধ লেগে আছে?”
ইলহান ঠোঁট বাকালো, আনাবিয়ার দিকে ভ্রু উচিয়ে তাকিয়ে দম্ভভরে বলল,
“রক্ত শুকিয়ে গেলে সিংহাসন নিজেই নতুন শরীর খোঁজে শেহজাদী, আমি তার আহ্বান শুনেছি মাত্র, নাথিং এলস্‌। ইতিহাস সর্বদা বিজয়ীকে মনে রাখে, তাকে নয় যে হেরে গেছে।”

“আপনি ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় শেহজাদা ইলহান, যা আমি একদিন আগুনে পুড়িয়ে ফেলবো।
আর হ্যাঁ, আমার নীরবতা বা শান্ত ব্যাবহার, কোনোটাকেই দুর্বলতা ভেবে নিবেন না। আপনাকে শুধু এটুকুই বলতে চাই, আপনার এই কেড়ে নেওয়া রাজ্যকে সামলে রাখবেন। নইলে কবে দেখবেন সবকিছু তছনছ হয়ে গেছে!”
ভীষণ ঠান্ডা স্বরে বলল আনাবিয়া। আনাবিয়ার কথায় নিঃশব্দ হাসলো ইলহান, ঠোঁট জোড়া প্রসারিত হলো ওর দারুণ ভাবে। টেবিলের ওপর হাত ঠেকিয়ে শরীরটা কিঞ্চিৎ বেকিয়ে টেবিলের সাথে ঠেস দিয়ে দাড়ালো সে,ঝাড়বাতির আলোয় তার দীর্ঘ শরীরের ছায়া পড়লো আনাবিয়ার ওপর, কৌতুকপূর্ণ কন্ঠে বলল,

“তবে এসো শেহজাদী। খেলা তো শুরুই হয়নি এখনো, তোমার আগমনে মাত্রই জমে উঠেছে। আমিও দেখবো কে কাকে পোড়ায়— তোমার রূপ আর ক্রোধের আগুনে আমি, নাকি আমার ক্ষমতায় তুমি।”
ঠোঁটের কোণা বেকিয়ে অবজ্ঞার হাসি হাসলো আনাবিয়া, ডান ভ্রু টা সামান্য উঁচু করে বলে উঠলো,
“আপনি আগুনে শুধু পুড়বেননা শেহজাদা ইলহান, আপনি ছাই হয়ে যাবেন। আর আমি আনাবিয়া ফারহা দেমিয়ান…আমি সেই ছাইয়ের উপরেই হাঁটবো।”

কথা শেষ করে ইলহানের দিকে নিজের শীতল দৃষ্টি রেখেই সিংহাসনের দিকে বিশেষ ভঙ্গিতে নিজের ডান হাতটা বাড়িয়ে মুষ্টিবদ্ধ করে উঁচুতে উঠালো আনাবিয়া, মুহুর্তেই কামরার জানালা বেয়ে হুড়মুড়িয়ে সেখানে এসে উপস্থিত হলো এক ঝাঁক কাটা যুক্ত বিশালাকার লতাপাতার গুচ্ছ, সেগুলো তৎক্ষনাৎ আষ্ঠেপৃষ্ঠে মুড়িয়ে ফেললো সমস্ত সিংহাসনটুকু। শক্ত কাঁটাগুলোর তীক্ষ্ণ অগ্রভাগের কিছু অংশ গেথে গেলো দেয়ালের সাথে।
আনাবিয়াকে হঠাৎ এমন কাজ করতে দেখে হতচকিত হয়ে গেলো ইলহান, আনাবিয়ার দিকে ফিরে চোখ জোড়ায় ক্রোধ আর তীক্ষ্ণতা ফুটিয়ে ও কড়া গলায় জিজ্ঞেস করলো,

“এ কাজ কেন করলে?”
সিংহাসনের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে ঘাড় কাত করে ইলহানের দিকে তাকালো আনাবিয়া, ঠোঁটে ফুটে উঠলো এক দুর্বোধ্য হাসি, উত্তরে বলল,
“আমি একজন অত্যন্ত দায়িত্ববান দেমিয়ান শেহিজাদী। আমি বেঁচে থাকতে আমার স্বামীর সিংহাসনে কোনো নালায়েক শেহজাদাকে আমি বসতে দিতে পারি না। তাতে আমার পাপ হবে। ওই সিংহাসনে আপনি সেদিনই বসতে পারবেন যেদিন আমি এই পৃথিবী ত্যাগ করবো, তার আগে নয়।”
দাঁতে দাঁত পিষলো ইলহান, হাতজোড়া মুঠো হয়ে গেলো নিজের অজান্তেই। তীক্ষ্ণ চোখে আনাবিয়ার হাসি হাসি মুখের দিকে তাকিয়ে সে গমগমে গলায় বলে উঠলো,

“তুমি কিন্তু তোমার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছো আনাবিয়া, তোমার সামনে শেহজাদা ইলহান নয়, বাদশাহ ইলহান দাঁড়িয়ে আছে! ভুলে যেওনা।”
“আপনিও ভুলে যাবেন না আপনি কার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি শেহজাদী আনাবিয়া ফারহা দেমিয়ান। আমার বাবা সালিম আরাবি দেমিয়ান, স্বামী নামীর আসওয়াদ দেমিয়ান! ওহ্‌, আর আমার নালায়েক চাচাজান, জাজীব ইলহান দেমিয়ান।
আপনি দেমিয়ান বংশের রুলস ব্রেক করেছেন! নিজের সহোদরের রক্তে হাত রাঙিয়েছেন, পঞ্চদ্বীপের বাদশাহ, পঞ্চদ্বীপের একমাত্র শেহজাদীর স্বামীকে হত্যা করেছেন! এতকিছুর পরও যে আমি আপনার সাথে এখনো ভদ্রভাবে কথা বলছি এটাই আপনার জন্য রাজকপাল।

আমি আনাবিয়া ফারহা দেমিয়ান আপনাকে বাদশাহ মানিনা, এবং আগামীতেও কখনো মানবোনা৷ পঞ্চদ্বীপের বাদশাহ শুধু এবং শুধুমাত্র আমার স্বামী নামীর আসওয়াদ দেমিয়ান! অন্য কেউ নয়, কোনোদিনও নয়, কথাটা ভালোভাবে মাথায় ঢুকিয়ে নিবেন শেহজাদা জাজিব ইলহান!”
ইলহান দাঁতে দাঁত চাপলো, চোখ জোড়া বন্ধ করে নিজের ক্রোধ সংবরন করার প্রাণপণ চেষ্টা করতে থাকলো ও। ইচ্ছে করছে এই মেয়েটিকে ঠাঠিয়ে একটা থাপ্পড় মারতে, কিন্তু ধৈর্য হারা হলে হবেনা, একে ধীরে ধীরে বাগে আনতে হবে, নইলে শিরো মিদোরি পুরোপুরি ওর হবেনা৷ লাইফট্রিকে নিজের রাস্তায় নিয়ে আসার একটাই পথ, সেটা হলো আনাবিয়া।

আনাবিয়া ইলহানের ক্রোধের তোয়াক্কা না করে তাকালো ওর আর মীরের কামরার সংযোগস্থলের দরজাটির দিকে, তারপর কিছু একটা ভেবে নিয়েই নিজের ডান হাতটা বিশেষ ভঙ্গিতে উঁচু করলো ও। মুহুর্তেই দুই কামরার সংযোগ স্থলের দরজাটা পরিপূর্ণ হয়ে গেলো কাঁটাযুক্ত ডালপালাতে। একিয়ে বেকিয়ে সেগুলো গিয়ে পেচিয়ে নিলো সমস্ত প্রবেশপথ৷

কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ রেখে, চুপ থেকে ক্রোধ সংবরন করতে সক্ষম হলো ইলহান, লম্বা শ্বাস নিয়ে চোখ মেলে আনাবিয়ার দিকে সরাসরি তাকিয়ে অসাধ্য সাধন করার ন্যায় হাসলো ও। পেছনে ফিরে কণ্টকাকীর্ণ সিংহাসনের দিকে একবার তাকিয়ে অতঃপর এগিয়ে গেলো সিংহাসনের পেছনে থাকা ওয়াল আলমিরার দিকে।
আলমিরার একটা কম্পার্টমেন্ট খুলে সেখান থেকে বের করলো একটা কালো মলাটের ভীষণ মোটা ডায়েরি।
ডায়েরীটা হাতে নিয়ে ধীর পায়ে আনাবিয়ার কাছে এগিয়ে এসে বলে উঠলো,
“মাথা ঠান্ডা করো আনাবিয়া, অনেক কষ্ট করেছো। তোমার মতো সুইট অ্যান্ড কিউট মেয়েকে এত রাগ মানায় না।“
অতঃপর স্নিগ্ধ হেসে হাতের ডায়েরি খানা আনাবিয়ার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে উঠলো,

“তোমার শ্রদ্ধেয় স্বামীর জিনিস। প্রেমের ব্যাপার স্যাপার, এসব আমি বুঝিনা।”
আনাবিয়া ভ্রু কুচকে তাকালো ইলহানের দিকে, ইলহান ওর এমন দৃষ্টি দেখে বলল,
“চিন্তা করোনা, এটা পড়ে ফেলিনি আমি। মানুষের ব্যাক্তিগত লেখা পড়া উচিত নয় তবুও দুপাতা পড়ার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু মজা পাইনি তাই রেখে দিয়েছি। তবে তুমি অবশ্যই মজা পাবে।”
আনাবিয়া শাণিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো ইলহানের দিকে, এই লোকটা এত কথা শোনার পরও এত ভালো ব্যাবহার কেন করছে সেটাই ভাবতে লাগলো ও৷
ইলহানের হাতে থাকা ডায়েরির দিকে একপলক তাকিয়ে আবার দৃষ্টি স্থাপন করলো ইলহানের মুখাবয়বে। তারপর দৃষ্টি না সরিয়েই হাত বাড়িয়ে ডায়েরিটা নিলো।
ইলহান মিষ্টি করে হাসলো তাতে। ঠোঁট কামড়ে পরখ করলো আনাবিয়ার শুভ্র মুখখানা, এই মেয়েটিকে এমন চোখ ধাধানো সুন্দরী হতে কে বলেছিলো?

ইলহানের দৃষ্টি উপেক্ষা করে ডায়েরি হাতে নিয়ে কামরা থেকে বেরিয়ে যেতে নিলো আনাবিয়া, কাজ ওর শেষ। এইখানে দাঁড়িয়ে এই অসভ্যটার মুখ দেখলে ওর মেজাজ ক্রমশ খারাপ হবে। শরীর টার ভীষণ বিশ্রাম প্রয়োজন।
কিন্তু তখনি পেছন থেকে ইলহান বলে উঠলো,
“শীঘ্রই আবার দেখা হবে আমাদের, সেদিন এই সিংহাসনের কন্টক তুমি নিজেই সরিয়ে দিবে শেহজাদী আনাবিয়া ফারহা দেমিয়ান। এবং তখন আমার বিছানায় ঘুমোবে তুমি, আমার সাথে।”
আনাবিয়া এগোতে এগোতে বিদ্রুপের হাসি হাসলো, পেছনে না তাকিয়েই কামরা থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে উচ্চস্বরে বলে উঠলো,
“ইন ইয়োর ড্রিমস্‌, অ্যাসহোল!”

শিরো মিদোরির জঙ্গলে রাত নেমেছে। অন্ধকারের মাঝে গাছপালাগুলো একে অপরকে বুকে জড়িয়ে নিয়েছে যেন, তাদের দীর্ঘ শাখাপ্রশাখা গুলো আকাশের দিকে হাত তুলে প্রার্থনা করতে ব্যাস্ত কোনো গভীর রহস্যের।
বাতাসে ভেসে আসছে মাটির তাজা গন্ধ, নতুন পত্রপল্লবের উপর চাঁদের নরম আলো প্রতিফলিত হয়ে চকচক করছে।
সদ্য তৈরি হওয়া গাছপালা লতাপাতা দিয়ে তৈরি মহলটির সবচেয়ে নান্দনিক আর আভিজাত্যপূর্ণ কামরাটার ভেতর কাঠের ওপর নকশা খোদাই করে বাধানো বিশাল আয়নার সম্মুখে দাঁড়িয়ে নিজের সফেদ চুলগুলোতে চিরুনী চালাচ্ছে আনাবিয়া৷

কিছুক্ষণ আগেই রান্না শেষ হয়েছে ওর। বাচ্চা গুলোর ক্ষিধে পেয়েছিলো ভীষণ, এতদিন ধরে আধপেটা খাওয়া বাচ্চাগুলো আজ পেট পুরে গান্ডেপিন্ডে খেয়ে দেয়ে এখন আড্ডা দিচ্ছে একত্রে। লতাপাতার নকশা খোদাই করা পুরু শক্ত কাঠের দেয়ালের ওপাশের বিরাট হলরুম থেকে ভেসে আসছে কোকো ফ্যালকনদের হুড়োহুড়ি আর হাসাহাসির শব্দ।
অনেক দিন পর অত্যাচারী গার্ডগুলোর হাত থেকে মুক্তি পেয়ে মায়ের সান্নিধ্যে এসে বেশ আনন্দে আছে ওরা। দিনভর ঝুলিয়ে রাখার কারণে ফ্যালকনের পায়ে লোহার বেড়ির ঘর্ষণের কারণে ক্ষত হয়ে গেছিলো, কিছুক্ষণ আগেই আনাবিয়া সারিয়ে দিয়েছে সেহুলো। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে সে খুব মস্তিতে আছে, তার উচ্ছ্বসিত কন্ঠস্বরই বেশি কানে আসছে।

চিরুনীটা আয়নার সম্মুখের ডেস্কে রেখে বুক ভরে দম নিলো আনাবিয়া, কাঠের তাজা গন্ধ হাওয়ায় মিশে পাগল করে তুলছে ওকে। গায়ে ওর একটা টি শার্ট আর ট্রাউজার। ফেরার সময়ে সেইফজোনের ভেতরে ঢুকে নিজের মাঞ্জার থেকে সেখানে রয়ে যাওয়া পোশাকগুলো নিয়ে এসেছে ও।
আনাবিয়া হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে ওর মাঞ্জারে অন্য কাউকে রাখা হয়নি, মাঞ্জারটা যেভাবে ছিলো সেভাবেই আছে এখনো। জিনিসপত্র গুলো সুন্দরভাবে গুছিয়ে রেখেছিলো কেউ, আনাবিয়া জানেনা কে রেখেছিলো। হয়তো শার্লট হবে, ও ছাড়া এমন কাজ আর কে করবে?

আয়নার সামনে থেকে ঘুরে ফিরে নিজের কামরাটা এবার ভালোভাবে দেখলো আনাবিয়া।
সিলিং থেকে কয়েক ঝাঁক রঙবেরঙের লতাপাতা অভিকর্ষজ টানে ঝুলে আছে নিচের দিকে, বাতাসে দুলছে সেগুলো মাঝে মাঝেই। সিলিং এর মাঝ বরাবর ঝুলছে একটা বেতের তৈরি অনিন্দ্য সুন্দর ঝাড়বাতি, ভেতরের কৃত্রিম হলুদাভ আলোতে আলোকিত হয়ে আছে সম্পুর্ন কামরা৷ জানালায় বাধানো শক্ত লতাপাতার তৈরি গ্রিলের ছোট ছোট ফাঁক ফোকোড় দিয়ে ভেতরে উড়ে আসছে ঝলমলে জোনাকি আর শীতল বাতাস।
দম ছেড়ে দিয়ে আনাবিয়া এগোলো কামরার এক কোণে থাকা, পুরু কাঠের তৈরি বিশাল বিছানার দিকে। মোলায়েম, আসমানি রঙের ওপর সাদার মিশেলের ফুলের বিছানার ওপর গিয়ে বস্লো। বেড সাইড টেবিলের ওপর একটা ছোট ল্যাম্প জ্বলছে টিমটিম করে।

কামরার অন্য কোণায় বাঁশের তৈরি সোফাসেটে রাখা সাদা রঙা কোমল বালিশগুলো উজ্জ্বলতা ছড়াচ্ছে, সেখানে গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে লিন্ডা।
ওপাশের কামরার বিছানা তৈরি হয়নি এখনো, শার্লট আর ফাতমা মিলে গোছগাছ করছে। সময় লাগছে বেশি তাই মেয়েটা এখানে এসেই ঘুমিয়ে পড়েছে।
ছেলেগুলোকে এক কামরায় দিয়েছে ও, ওদের সবার একসাথেই থাকা অভ্যাস। খাওয়া, ঘুম, আড্ডাবাজি, পড়াশোনা সব ওরা একসাথেই করেছে সারাজীবন, তাই এখানেও ওদেরকে একটা বিরাট হলরুম দিয়ে দিয়েছে আনাবিয়া। ব্রায়ানকেও ওদের সাথেই ভিড়িয়ে দিয়েছে।
বাচ্চা গুলো অবশ্য প্রথমে খুশি ছিলোনা, ওদের সবার ভেতরে ব্রায়ানকে বিরিয়ানির এলাচির মতো করেই দেখছিলো ওরা। কিন্তু এখন মোটামুটি মেনে নিতে শুরু করেছে। ব্রায়ান ছেলেটা ভালোই, আস্তে আস্তে মিশে যেতে পারবে ওদের সবার সাথে৷

লিন্ডা গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে দেখে ওর কাছে এগিয়ে গেলো আনাবিয়া, ঠান্ডা বাতাসের কারণে শীত লাগছে মেয়েটার। বিছানা থেকে একটা পাতলা চাদর এনে জড়িয়ে দিলো ও লিন্ডার গায়ে। ওম ওম চাঁদর পেয়ে সেটাকে ঘুমের ঘোরেই লুফে নিলো লিন্ডা, তারপর আবার স্থীর হয়ে গেলো।
ওর ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে স্নিগ্ধ হাসলো আনাবিয়া, এই মেয়েটা বাচ্চা থাকাকালীন ওর একদম বুকের ওপর উঠে ঘুমোতো। আর মীরকে পেলে তো পাগল করে তুলতো, লাফিয়ে উঠে যেতো ঘাড়ে, মীরের চওড়া কাঁধের ওপর আরামসে শুয়ে থাকতো৷

মাঝে মাঝে মীর বিরক্ত হয়ে কামরার বাইরে ফেলে দিয়ে আসতো ওকে।
বজ্জাত লোকটার ওই এক স্বভাব! বাচ্চাগুলোকে দুচোখে দেখতে পারতোনা। কোকো টাকেও বাচ্চাকালে কতবার যে নোমানের গায়ে ছুড়ে মেরে দিয়ে এসেছে তার ইয়ত্তা নেই। ছুড়ে ফেলে দিয়ে এসে আবার বিজয়ীর হাসি হাসতো সে, যেন কত বড় পুণ্যের কাজ করে ফেলেছে!
লিন্ডাকে আরও কিছুক্ষণ দেখে একটা শ্বাস ছেড়ে আনাবিয়া চলে এলো নিজের বিছানায়, শরীরটা বড্ড ক্লান্ত ওর। তার চাইতে বেশি ক্লান্ত ওর মন!

অবাধ্য মনটা এখনো বিশ্বাস করেনি মীরি নেই, তাই শোকতাপটা কেন যেন খুব বেশি স্পর্শ করছেনা ওকে। মনে হচ্ছে মীর হয়তো সাম্রাজ্যের কাজে কোথাও ব্যাস্ত আছে, আনাবিয়াকে হয়তো রেখে গেছে বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানোর জন্য, যেন আনাবিয়া মন খারাপ করার সুযোগ না পায়!

যেদিন ওর মন সত্যি সত্যিই উপলব্ধি করবে ওর মীর আর এই পৃথিবীতে নেই, সেদিন হয়তো প্রতিক্রিয়া জানাবে ভীষণ! হাহাকার দিয়ে উঠে এই শরীর ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চাইবে হয়তো! কিন্তু সেদিন কি করবে আনাবিয়া? কিভাবে থামাবে সেই হাহাকার? যে মানুষটার ছায়াতলে জীবনের এতগুলো বছর কাটিয়েছে, জন্মের পর থেকে যার প্রেমময় চেহারা দেখে ও বড় হয়েছে, সে নেই এই কথা ওর মনকে ও কিভাবে বুঝাবে?
কাঠের তৈরি সিলিংয়ের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো আনাবিয়া, আর তারপর মীরের হাসোজ্জল চেহারাটা মনে করতে করতে ঘুমিয়ে গেলো কোনো এক সময়!

নিজের কামরায় বিছানার ওপর বসে বসে বাহারের চুল বেণী করে দিতে দিতে বাহারের সাথে গল্প করছে ইয়াসমিন। গল্পের বিষয়বস্তু শেহজাদী।
সেই ছোট বেলা থেকে প্রয়াত বাদশাহ তাকে কিভাবে বড় করে তুলেছেন, কিভাবে তাকে নিজের সন্তানের মতো করে সারাক্ষণ আগলে রেখেছেন, বাবা মায়ের অভাব কখনো বুঝতে দেননি, কিভাবে তাদের বিয়ে হলো, এসব কিভাবে হলো; সবকিছু আজ কয়েকদিন ধরে বাহারকে শুনিয়ে চলেছে সে৷
ইয়াসমিনের কথা শুনতে শুনতে এক ফাঁকে বাহার বলে উঠলো,
“আমার না শেহজাদীকে দেখার খুব শখ কালবী। আমি এই প্রাসাদে পা রাখার পর থেকে শুধু তাঁর কথাই শুনেছি, দিন রাতের চব্বিশ ঘন্টার ভেতর বিশ ঘন্টা হয়তো আমি শুধু তাঁর কথাই শুনেছি কারো না কারো থেকে।
এমনকি আমাকে হিজ ম্যাজেস্টি যেদিন নিয়ে এসেছিলেন সেদিন জাহাজেও আমি তাঁর কথাই শুনেছি, সেটাও হিজ ম্যাজেস্টিরই মুখে থেকেই।

কারো একজনের সাথে উনি শেহজাদীকে নিয়েই কথা বলছিলেন, কেবিনে বসে বসে আমি শুনেছিলাম তাঁর কথা।
কিন্তু তখন আমি জানতামনা এই শিনজো নামক মেয়েটা কে, তাই তখন তাঁর কোনো কথাই আমি বুঝিনি, আমার মনেও নেই। কিন্তু এখন বুঝতে পারি সব!”
বাহারের কথাতে আস্তে করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো ইয়াসমিন। নেমে যাওয়া গলায় বলল,
“আমি আমার পাঁচ বছর বয়স থেকে এখানে আছি, আমি দেখেছি তাঁদের ভালোবাসা, বিচ্ছেদ সবটা। বলতে গেলে আমার চোখের সামনেই হয়েছে। এই দুজনকে আমি হয়তো ভুলে যেতে পারবোনা কোনোদিন, তাঁদের স্মৃতি কুরে কুরে খাবে আমাকে প্রতিটা মুহুর্তে!

এই প্রাসাদ একসময় আমার কাছে ছিলো নিজের বাড়ি, নিজের একমাত্র আশ্রয়স্থল! এখানেই আমি শান্তি পেতাম, শেহজাদীর ছায়াতলেই আমি স্বস্তি পেতাম। কিন্তু এখন এই প্রাসাদ আমার কাছে জাহান্নামের মতোন বাহার!
আমার মনে হয় আমি যদি আবার সেই পাঁচ বছর বয়সে ফিরে যেতে পারতাম! আবার যদি শেহজাদী আমাকে কাছে ডেকে কোলে তুলে নিতেন, চুল বেধে দিতেন, ছোট্ট করে একটা চুমু খেতেন মুখে! কিন্তু সেসব দিন আর কখনো ফিরে আসবে না।

সেদিন শেহজাদী আসলেন কিন্তু আমি তাঁর ছায়াটুকুও দেখতে পেলাম না, তিনি আমাকে দেখা দিলেন না, আমার খোঁজও নিলেন না, চলে গেলেন!
তিনিও বা আর কত খোঁজ নিবেন? যেখানে তার হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছি আমরা সকলে মিলে, তাঁর প্রাণের চেয়েও প্রিয় স্বামীকে তিনি হারিয়ে ফেলেছেন নিজেরই বংশের কারো হাতে, অথচ জানতেও পারেননি, শোক করার অবকাশ টুকুও পাননি!”
ইয়াসমিনের চোখ ভিজে এলো, তার দিকে পেছন ফিরে বসে থাকা বাহার বুঝলো সেটা। চুপচাপ বসে রইলো সেও। কি বলে স্বান্তনা দিবে বুঝতে পারলোনা।

এমন সময় করাঘাত পড়লো ইয়াসমিনের কামরার দরজায়, ইয়াসমিন চমকে একবার দরজার দিকে তাকিয়ে উঠলো বিছানা থেকে। তর্জনী দিয়ে চোখের কোন জোড়া মুছে নিয়ে গায়ের ওপর একটা বড় পাতলা চাদর দিয়ে ঢেকে সে এগিয়ে গেলো দরজার নিকট, দরজা খুলতেই চোখে পড়লো মুহসিনকে, সে বলল,
“ইয়াসমিন কালবী, হিজ ম্যাজেস্টি আপনাকে এখনি তার কামরায় ডেকেছেন৷”
“এত রাতে? কোনো অসুবিধা হয়েছে মুহসিন?”
“সেটা জানিনা কালবী, হিজ ম্যাজেস্টি ডেকেছেন এতটুকুই জানি।”
“ঠিক আছে, তুমি যাও আমি আসছি।”
মুহসিন মাথা নাড়িয়ে চলে গেলো, ইয়াসমিন দরজা বন্ধ করে দিলো। রাতের পোশাক ছেড়ে বাইরের পোশাক পরতে পরতে বাহার কে বলল,

“তোমার ঘুম পেলে তুমি হেরেমে চলে যাও বাহার, আমার ফিরতে দেরি হতে পারে৷”
“আজ আমি আপনার কাছে ঘুমোবো কালবী, হেরেমে আমার ভালো লাগেনা। অতো হাসাহাসির ভেতর আমার থাকতে একদমই ইচ্ছে করেনা কালবী৷”

বাদশাহ নামা তৃতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ৬

মুখ ভার করে বলল বাহার। ইয়াসমিন আলতো হাসলো, বলল,
“ঠিক আছে, থাকো এখানেই। ঘুম আসলে ঘুমিয়ে যেও, আমার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না৷”
বাহার মাথা নাড়ালো খুশি মনে, ইয়াসমিন তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেলো কামরা থেকে তখনি৷

বাদশাহ নামা তৃতীয় পরিচ্ছেদ পর্ব ৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here