এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২০
Chadny islam
আদিল ভেতর থেকে বার বার ডাকছে ইরা কে। ইরার কোনো হেল দোল নেই সে বিছানার এক পাশে গিয়ে সুয়ে পরলো। আদিল ওয়াশরুমের দরজার সামনে গিয়ে বেশি বেশি লাথী আর চিৎকার করে ডাকতে শুরু করলো ইরা কে।ইরা বেশ কিছুটা ঘাবড়ে গেলো আদিল এত ডাকাডাকিতে। এত রাতে এই ভাবে চিৎকার চেচামেচি করে ডাকলে সবাই তাকে ভুল বুঝবে। আর আদিল যদি একবার বের হতে পারে। তাহলে আজকে রাতের বারো টা বাজিয়ে দিবে। ইরা বিছানা থেকে ওঠে এগিয়ে গেলো ওয়াশরুমের দিকে। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আদিল কে উদ্দেশ্য করে বললো!!!
__যদি আরেক বার এমন করে চেচামেচি করেন! তাহলে সাত দিন এই ওয়াশরুমের ভেতরে থাকার জন্য প্রস্তুতি নিন!
ইরার কথাই আদিল চুপসে গেলো। সে চিনে ইরা কে তার সাহস আর রাগ সম্পর্কে বেশ ধারনা আছে আদিলের। তবে এতো টা সাহসী সেটা বুঝতে পারে নি।আদিল মুখটা কে গোমরা করে বললো!!
__তুমি এক মাএ মেয়ে যে কিনা বাসর করার ভয়ে স্বামী কে ওয়াশরুমে রেখেছো। তোমার কোনো তুলনা হয় না।
বা কি কপাল আমার।
ইরা হিহি করে হাসতে শুরু করে। মানুষ বলে বিয়ের পর নাকি বাঘ ও বিড়াল হয়ে যাই। তার প্রমাণ আজ নিজের চোখে দেখে নিলো। ইরা কে এমন ভাবে হাসতে দেখে আদিল রাগে ফুসফুস করতে লাগলো আর বললো!!!
__তোমাকে বাচ্চা মেয়ে ভাবা টাই ছিলো আমার জীবনের সব থেকে বড় ভুল । এখনো সময় আছে খোলে দাও। নয়তো পায়ে দরে মাফ চাইলে ও ক্ষমা পাবে না।
ইরা মুখ বাঁকিয়ে বলল!!
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
__কে ক্ষমা চাইবে আপনার কাছে।আমার দিন এত টাও খারাপ আসে নি! যে আপনার কাছে আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে! আপনার আমার সম্পর্কে তেমন কোনো ধারনা নেই সিকদার সাহেব।এবার থেকে নিজের বউয়ের সম্পর্কে একটু ধারণা রাখবেন।
আদিল গম্ভীর গলাই বললো!!
__ঠিক আছে সব ধারণাই রাখবো।আজকের জন্য একটু মায়া করো আর দরজাটা খোলো! আমাকে একটু বাসর করার সুযোগ করে দাও। প্লিজ জান বাচ্চা!
চুপচাপ সুয়ে থাকুন। নয়তো ওয়াশরুমের এসি টাও বন্ধ করে দিবো। দিবো নাকি!
আদিল কাঁদো কাঁদো গলায় বললো!!!
__সত্যি এখানেই থাকবো বউ।
হ্যা।
আদিল শান্ত গলাই বললো!
__একটু দয়া মায়া করো বউ!
ওই সব ফালতু জিনিস আমার ড্রিকশোনারী তে নেই সিকদার সাহেব।চুপচাপ ঘুমাবেন নাকি এসি টা বন্ধ করে দিবো।
কি ডেনজার বউ আমার! আমার ঘরে থেকে কি না আমাকেই ব্লাকমেইল করে। ওপপপপ প্রেমে পরে যাচ্ছি বড্ড বেশি।
__নাটক বাজ একটা।
__আমাকে ড্যাড কে ডাকো??
__কেনো।
আমি আরেক টা বিয়ে করবো! তোমাকে বিয়ে করে আমার জীবনটা শেষ। পান্তা ভাতের থেকেও খারাপ করে দিছো আমার জীবন কে। আমি সাহাবাগে চলে যাবো। এমন বউ লাগবে না আমার। এই মেয়ে জাহান্নামি। স্বামীর মন বুঝতে শিখে নাই। নিজের মন টা কে নরম করে স্বামীর কাছে আসতে শিখো এখনো সময় আছে।
ইরা শব্দ করে হাসতে থাকে। আদিল কিছু টা অসহায় হয়ে বললো!!
__বাসর বাসর ফিল পাচ্ছি জান। খোলো না।
ইরা আর কথা বাড়ালো না। বিছানাই গিয়ে রুমের লাইট ওফ করে সুয়ে পরলো। আদিল বুজতে পারলো ইরা সুয়ে পরেছে। এখন আবার বেশি ডাকাডাকি করলে সত্যি সত্যি এসি টা বন্ধ করে দিবে। না আছে দয়া না আছে মায়া। অন্তত একটা বালিশ তো দিতে পারতো। এই মেয়ে মেন্যার্রাস বলতেও কিছু শিখে নি। আমার কুওা কপাল। হাই আল্লাহ হয় বউ কে কাছে এনে দাও। নয়তো নতুন বিয়ে করার সাহস দাও!!!
প্রিয়াশ রাতের খাবার শেষ করে বাগানের এক পাশে দাড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে। ঘড়ীর কাটা রাত দশটার কাটাই। সিগারেট শেষ করে রুমে চলে যাবে ঠিক তখনি গাড়ির শব্দ পেয়ে পেছনে তাকাতেই দেখে এক অল্পবয়সী নারী সুট বুট পরে ভেতরের দিকে আসতেছে। প্রিয়াশ মেয়ে টিকে চেনে না এর আগে কখনো দেখে নি । তবে তার মনে হলো এ যেনো কোনো এক রাত পরী কে দেখছে। কি তার দৃষ্টি তার হাসি উজ্জ্বল মুখ ওপপপসসস হাই আল্লাহ একি নারী নাকি পরী। প্রিয়াশ চোখের পলক ফেলছে না মেয়ে টি আস্তে আস্তে বাড়ীর দিকে এগোতে থাকে আর প্রিয়াশ এর কাছে সব টা স্বপ্নের মতোন লাগতে থাকে। কিছু সেকেন্ড এর ভেতরে মেয়ে টি চলে আসে রুমের ভেতরে। প্রিয়াশ নিজে শক্ত ডোক গুলে মেয়ে টির দিকে এগিয়ে গিয়ে মেয়ে টিকে উদ্দেশ্য বললো!!
__ এই তুমি নারী নাকি রাত পরী??
আইরা বেশ অভাক হলো। না এই ছেলে টা কে চেনে না আগে কখনো দেখেছে।তবে মধ্যে রাতে কি বলে এসব পিনিকে আছে নাকি।। তাই আইরা নিজের হাতের তুরি মেরে প্রিয়াশ কে বললো!!
__হেই ইউ আপনি কি পিনিকে আছেন???
প্রিয়াশ এর শান্ত গলাই উওর!!
__এত সুন্দর রাত পরী দেখলে আমার মনে হয় কখনো আমার পিকিন এর প্রয়োজন পরবে না!!
আইরার খুব একটা খারাপ লাগলো না। পৃথিবীতে এমন কোন মেয়ে আছে যার সৌন্দর্যের প্রশংসা করলে খুশি হবে না। আইরাও তার ব্যাতিক্রম নয়। তার বেশ ভালোই লাগলো। সামনে থাকা পুরুষটি বেশ লম্বা চওড়া। গায়ের রং হালকা শামলা। তবে দেখতে মন্দ নয়।
প্রিয়াশ বুকে হাত আইরার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো!!
__ওপপপপপসসসসস ! লাভ এট ফ্যাস সাইড!!!
__হোয়াট??
প্রিয়াশ আইরা কে বেশ ভালো করে নজর গুরিয়ে দেখলো। দেখতে মন্দ হয় এক দম ওয়াও! তবে এত রাতে কোথা থেকে আসলো বুঝতে পারছে না। তাই আইরা কে উদ্দেশ্য বললো!!
__এত রাতে কোথা থেকে আসা হলো রাত পরী??
আইরা শান্ত ভাবে উওর দিলো!!
__অফিস থেকে। আইরা বেশ ক্লান্ত সারাদিন বেশ অনেক খানি পরিশ্রম করা হয়েছে।নতুন কোম্পানি দাড় করানোর চারটে খানে কথা নয়। আইরা আর দাড়ালো না সোজা নিজের রুমে চলে গেলো।
প্রিয়াশ ঠায় হয়ে দাড়িয়ে কিছুখন দেখলো আইরা কে। এমন একটা রাত পরী তো প্রিয়াশ সিকদার ও ডির্জাব করে। আই লাইক ইউ রাত পরী!
আজাকাল আশরাফ সিকদার নির্বাচন নিয়ে বেশ ব্যাস্ত থাকেন! আর অহনা সিকদার কোম্পানি নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। তারা ঠিক মতোন কথা বলার জন্য সময় টা পযন্ত পাই না। অহনা সিকদার কোম্পানির কাজ করেছেন। প্রায় দেখা যায় অহনা সিকদার যত টুকু সময় বাড়িতে থাকেন তত খনি কম্পিউটার নিয়ে বসে থাকেন কাজ করেন। আর আশরাফ সিকদার সামনেই নির্বাচন এর জন্য প্রচুর ব্যাস্ত থাকেন। সারা খন ফোনের পর ফোন লেগেই থাকে। অহনা সিকদার ফরমাল ড্রেস চেন্স করে নাইট ড্রেস পরে এলো! হালকা করে হাত মুখ ধূরে ফ্রেশ হয়ে বডি ক্রিম লাগাতে শুরু করলেন। আশরাফ সিকদার বেশ সময় নিয়ে খেয়াল করে দেখলেন পুরো টা বিষয় টা। আশরাফ সিকদার বেশ গম্ভীর গলাই বললেন!!
__কি দরকার এই বয়সে এত সাজুগুজু করার!এই দামী ক্রিম কিনতে কিনতে আমি গরীব হয়ে গেলাম। তুমি ন্যাচারলি অনেক সুন্দর রাগিনি।
অহনা সিকদার চোখে মুখ খিচে বন্ধ করে নিলেন। রাগে ফুসফুস করতে করতে বললেন!!
__আমার কি বয়স বেশি হয়ে গেছে। আই মিন আমি কি বুড়ি হয়ে যাচ্ছি। নাকি তুমি আমাকে কোনে ভাবে টাকার খোটা দিলা??
আরে না রাগিনী! তুমি এখনো কচিই আছো?? টাকার খোটা দিবো কেনো।এত টাকা পয়সা কার বলো শুধুই তোমার।
অহনা সিকদার আর কিছু বললেন না বিছানাই গিয়ে সুয়ে পরলেন লাইট ওফ করে। আশরাফ সিকদার ও সুয়ে পরলেন। এবং অহনা সিকদার এর উপর হাত তুলে দিতে চাইলেই অহনা সিকদার খীপ্ত মেজাজে বললেন!!
__ভুল করেও হাত দিবা না! কেবল ক্রিম গুলো দিয়ে আসলাম। বুড়ো হয়ে যাচ্ছো নিজের প্রতি একটু গুরুত্ব দাও।
অহনা সিকদার এর খোচা মারা কথা আশরাফ সিকদার বেশ ভালোই বুঝতে পারলেন।আর রাগে কটমটিয়ে পাশ ফিরে সুয়ে পরলেন!! মনে মনে ভিরভির করে বললেন!আমাকে না করে সম্মান আর না একটু ভালোবাসে। আমি এক জন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এরা ভুলে যায় কিভাবে।
পরের দিন সকাল বেলা :
ইরা সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে আলতো করে ওয়াশরুমের দরজাটা খোলে দিয়ে বাইরে চলে আসে।অহনা সিকদার এবং মাইমুনা সিকদার এর কাছে যারা এই মূহুর্তে কিচেনে কাজে ব্যাস্ত। সকালের খাওয়ার সময় হয়ে গেছে। অহনা সিকদার এক কাপ করা করে কফি করে দিলেন আশরাফ সিকদার এর জন্য।ইরার হাতে দিয়ে বললো কফি টা দিয়ে আসো তোমার আব্বু কে। আশরাফ সিকদার খবরের কাগজ পর ছিলেন। ইরা কে কফি নিয়ে আসতে দেখে হাত থেকে কফি টা নিয়ে পাশে বসতে বললেন। ইরাও শান্ত মেয়ের মতোন গিয়ে বসলো আশরাফ সিকদার এর পাশে। আশরাফ সিকদার ইরা কে উদ্দেশ্য করে বললেন!!
__এই সিকদার মহলে তোমার কোনো সমস্যা হয় না তো আম্মু!!
ইরা মাথা নত করে শান্ত গলাই বলে!!
__না আব্বু।
তোমার বাবার নাম্বার টা আমাকে দাও আম্মু! তোমার বাবার রাজকন্যা তুমি গত তিন দিন দরে তুমি আমাদের বাড়িতে আছো। তাদের সাথে আমাদের কথা এবং দেখা করা টা জরুরি।
“”আশরাফ সিকদার এর কথা শুনে ইরার মনে এক আনন্দের বন্যা বয়ে গেলো। সত্যি কি শশুর বলতে কেউ বাবার মতোন হয়। আজ মনে হচ্চে হয়তো সত্যি বাবার মতোন হয়!
আশরাফ সিকদার ইরার দিকে ফোন টা এগিয়ে দিলে ইরা ফোন টা হাতে নিয়ে আজাদ চৌধুরীর নাম্বার টা তুলে দেই। আশরাফ সিকদার কল করে কথা বললেন আজাদ চৌধুরীর সাথে। ইরা সেখানে দাড়ালো না বেশ দূরে চলে গেলো।কিচেন এর দিকে পা বাড়াতেই বেসে আসে আদিল এর হুংকার।
__বেবিবল জান বাচ্চা ইরার বাচ্চা হারামির বাচ্চা এত জুরে জুরে ডাকছে এগুলা বাজে নাম! মনে হচ্ছে পাশে বিল্ডিং এর সব লোক এসে জড়ো হয়ে যাবে। ইরা এক দৌড়ে ছুটে চলে গেলো রুমে।
ইরা দৌড়ে গিয়ে দাড়ালো আদিল বরাবর।আর আদিল কে উদ্দেশ্য করে বেশ রাগান্বিত হয়ে বললো ইরা!!!
__ হেই ইস্টুপিট এই ভাবে কেউ কাউকে ডাকে। কি বাজে নামে ডাকতেছেন আমাকে!
আদিল ইরার বাহু দরে হিচকা টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে।আর দাঁতে দাঁত পিসে বলে!!
__স্বামীকে ওয়াশরুমের ভেতরে আটকে রাখিস! তোর সাহস তো কম নই।
আদিল এর শক্ত পোক্ত থাবাই ইরা চমকে উঠে। তার ভিষণ অসস্তী হচ্ছে। ইরা আদিল থেকে নিজে কে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো! ইরা কে এমন ছটপট করতে দেখে আদিল আরো রাগে খীপ্ত হয়ে দাঁতে দাঁত পিসে বলে!!
__হারামির বাচ্চা! ভালোবাসবি কিনা বল??তোকে আঘাত করতে ভিষণ কষ্ট হয় আমার। স্বামীর মন বুঝতে শিখিস নি কেমন নারী তুই।
একটা পযার্য়ে ইরার ও বেশ রাগ হলো আদিলের উপর।সে তো একবার নই হাজার বার বলেছে চাই না স্বামী হিসাবে। তাহলে অধিকার এর কথা কোথা থেকে আসে। আদিল নিজের মেজাজ এত খনে পুরো টাই হারিয়ে ফেললো!!
__হারামির বাচ্চা! তোর আমাকে দেখে মনে হচ্ছে তোর সাথে আমি ফাজলামো করছি। আমার কথার অবাধ্য হোস কেন এত সাহস কই থেকে আসে! আর যদি কখনো হয়েছিস আমার কথার অবাধ্য তাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে বলে দিলাম। তোর জন্য আজকেই লাস্ট ওয়ার্নিং।
আদিল হাতের সাথে থাকা ইরার হাত গুলো কে ছেড়ে দেয়। নিজের রাগ কে কন্ট্রোল করে নিচে যায় এবং ইরা কে আসতে বলে। ইরা না এসে বরং দাড়িয়ে থাকে। আদিল আরও রেগে ইরা কে বলে!!
__এক মিনিট তো দূরে থাক এক সেকেন্ড ও দেরি হলে তোর খবর আছে। কুইক..!
ইরা আদিল এর পেছন পেছন নিচে ড্রয়িংরুমে গিয়ে বসলো যেখানে খাবার খাওয়ার জন্য সবাই আগে থেকেই বসে আছে।আজকে আইরা সহ সবাই বসেছে। আইরা বেশ কয়েক বার আদিল কে দেখলো৷ আদিল বিষয় টা বুঝেও বেশ ইগনোর করলো আইরা কে। অন্য দিকে প্রিয়াশ রাতের রাত পরি ভেবে দেখছে আইরা কে। এক দেখাতেই আইরার প্রতি বেশ ভালো লাগা কাজ করতে শুরু করেছে। সবার খাওয়া শেষ এর দিকে তখন জুথী আর ঈশান হাজির হয় সিকদার মহলে। এই সকালে জুথী কে কখনো দেখবে তা স্বপ্নে ও আশা করেনি ইরা। জুথী কে দেখে ইরা সামনের দিকে এগিয়ে যায় গিয়ে জুথী কে জড়িয়ে দরে।
জুথীর পাশে থাকা ঈশান কে উদ্দেশ্য করে ইরা বললো!!
__কেমন আছো ভাইয়া..!
__ভালো আছি বুনু। তুই কেমন আছিস!
__আমি ও ভালো আছি ভাইয়া!
ঈশান কথা শেষ করে এগিয়ে গেলো ড্রয়িং রুমের দিকে। ঈশান কে উদ্দেশ্য করে আশরাফ সিকদার বললেন!!
__কেমন আছো ইয়াং ম্যান!!
__ভালো আছি আংকেল আপনি কেমন আছেন।
আশরাফ সিকদার সহ পরিবারের সবাই বুঝতে পারলো না ইরা এবং ঈশান কি সম্পর্ক।তবে তাদের কথা শুনে মনে হলো তারা বেশ পূব পরিচিত! আদিল ঈশান ওরা দুইজন উপরে নিজের রুমে চলে গেলো। ইরা জুথী গিয়ে বসলো সোফায়। জুথীর বেশ মন খারাপ দেখে ইরা জিজ্ঞেস করলো!!
__কি হয়েছে জুথী! তোর কি মন খারাপ??
জুথী রেগে গিয়ে ইরা কে বললো!!
__তুই কেনো আমাকে বলিস নি।তোর ভাই ঈশান বিবাহিত!
ইরার কাছে সব টাই অদ্ভুত লাগলো ঈশান ভাইয়া বিয়ে করলো কবে।ভাইয়া বিয়ে করলে তো অবশ্যই সবাই জানতো। তাহলে কি ভাইয়া ও কাউকে কিডনাপ করে বিয়ে করেছে। ইরার ভাবনার মাঝে জুথী বললো!!
__তোর ভাইয়ের একটা ৪ বছরের বাচ্চাও আছে আরেক টা নাকি হবে কিছু দিন পর।
ইরা শব্দ করে হেসে ফেললো জুথীর কথাই আর বললো!!!
__আরে পাগলি ভাইয়া তাহলো তোকে মিথ্যা কথা বলেছে। ভাইয়া তো বিয়ে করেনি। আমি ১০০% সিউর ভাইয়া তো ইউএস থেকেই পড়াশোনা শেষ করে এসেছে তিন বছর আগে। তাহলে চার বছরের একটা বাচ্চা কিভাবে থাকবে।
“”কিন্তু তোর ভাইয়া যে বললো??
“”ভাইয়া! মিথ্যা বলেছে তোকে!!
আদিব জুথী আর ইরা কে কথা বলতে দেখে এগিয়ে আসলো ওদের কাছে। ইরার এক পাশে বসে ইরা কে জিজ্ঞেস করলো!!
__ভাবী এনি কে??
ইরা শান্ত গলাই বললো!!
__আমার বেষ্ট ফেন্ড
আদিব দুষ্টমির ছলে বললো!!
__ওহহহ! তাহলে তো আমাদের বেয়াইন!! আদিব ওঠে এগিয়ে গিয়ে জুথীর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো! হাই আমি আদিব! নাইস টু মিট ইউ!!
জুথীও হাত মিলিয়ে বললো!! হাই আমি জুথী!!
আদিব বলে!
__ভালোই হলো আমার তো বাংলাদেশে কোনো গালফেন্ড বা বেষ্ট ফেন্ড নেই। অনন্ত একটা বেয়াইন তো হলো।
আদিব এর কথাই জুথীর মাথাই বেশ দুষ্ট একটা আইডিয়া চলে আসে। ঈশান কে রাগানোর এই টাই বেষ্ট অপশন!তাই জুথী ও আদিব এর সাথে তাল মিলিয়ে বলে সেম আমার জন্য ও অনেক টাই ভালো হলো অনন্ত একটা ছেলে বেয়াই তো হলো।
বাড়িতে থাকা একজন কাজে লোক এসে কিছু হালকা নাস্তা দিয়ে গেলো। ইরা জুথীর সামনে নিয়ে খাবার গুলো এগিয়ে দিলো। আর খাবার খাওয়ার জন্য বললো।খাওয়া শেষ করে ইরা জুথী উপরে যেতে থাকে আদিব যাবে না বলে ফোন দেখ ছিলো! তখনি জুথী কিছুটা এগিয়ে গিয়ে আদিব কে বললো তাদের সাথে উপরের রুমে আসতে।বেয়াইন বলেছে তার মানে যেতে হবে। তাই আদিব ও মানা করলো না! বরং ওদের সাথে উপরে গেলো।
প্রিয়াশ বাগানের একপাশে দাঁড়িয়ে আছে। আইরার ডাইভার গাড়ি বের করছে।আইরা রেডি হয়ে নিচে গাড়ির কাছে এসেছে তখনি ডাইভার বলে!!ম্যাম আমার খুব পেটে ব্যাথা করছে। অসুস্থতা ফিল করছি। আমি মনে হয়ে আজকে যেতে পারবো না বলে ওয়াশরুমের দিকে দৌড় লাগায়! ডাইভার এর এমন কান্ড দেখে প্রিয়াশ হাসতে শুরু করলো। আইরার বেশ বিরক্ত লাগছে কিভাবে যাবে সে। প্রিয়াশ এগিয়ে আসলো আইরার দিকে। আর আইরা কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
___কি হয়েছে রাত পরী! আ্যনি প্রবলেম!!
আইরা রাগে ফুসফুস করতে করতে বলে!
__হ্যা! আসলে ডাইভার এর একটু সমস্যা হয়েছে তো।
প্রিয়াশ বললো!!
__তাহলে কি! আমি আপনাকে অফিসে পৌঁছে দিয়ে আসবো নাকি রাত পরী!!।
আজকে অফিসে যাওয়াটা বেশ জুরুরি! আইরা এই মূহুর্তে কোনো উপায় না পেয়ে সম্মতি জানিয়ে বললো!! __ওকে!!
প্রিয়াশ গিয়ে বসলো গাড়িতে ডাইব করবে বলে তার পাশে গিয়ে বসলো আইরা। প্রিয়াশ অতিদূত গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলো অফিসের উদ্দেশ্য !
আদিল আর ঈশান সুয়ে আছে৷ইশান দুষ্টমি করে আদিল কে বললো!!
__কিরে সালা বাসর কেমন করলি??
“”ওপপপপসসস! সেই পুরা পান্তা ভাতের মতোন!! কোনো টেষ্ট নাই।
“”মানে?? বাসর আবার পান্তা ভাতের মতোন হয় কেমনে??
বউ যদি বাসর করার ভয়ে স্বামী কে ওয়াশরুমের ভেতরে রাখতে পারে। তবে বাসর কেনো পান্তা ভাত এর মতোন হতে পারে না।
হোয়াট!! তুই কালে রাতে ওয়াশরুমে ভেতরে ছিলি। ওপপস কি বোন আমার! প্রাইড ফিল হচ্ছে বোনের জন্য!
সালা তোরা দুইটাই এক। আমার জীবন টা কিনা বরবাদ করে দিলি!
ইরা আগে আগে রুমের ভেতরে প্রবেশ করলো।তার পেছনে জুথী আর আদিব কথা বলছে আর হাসতে হাসতে রুমের ভেতরে প্রবেশ করলো! জুথী কে আদিব এর সাথে এমন ভাবে কথা বলতে দেখে ঈশান রেগে যায়। তার সাথে তো জুথী এমন ভাবে কথা বলে না। তাহলে কি ওরা…!
এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ১৯
ঈশান কপাল কুঁচকে ফেললো!! অসম্ভব এটা হতেই পারে না!
জুথী ঈশান কে রাগানোর জন্য আদিব এর বেশ কাছাকাছি গিয়ে বসে। ঈশান এর চোখ মুখে রাগ স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। তাতেই কি জুথী পাওা দিলে না। ঈশান জুথী কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
__আমাকে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি এনে দাও।
__সরি! আমি অন্য কারোর স্বামী কে পানি দিতে পারবো না! আপনার বউ কে বলুন আপনাকে পানি এনে দেয়ার জন্য।
