তোকে চাই সিজন ২ পর্ব ৩৫+৩৬

তোকে চাই সিজন ২ পর্ব ৩৫+৩৬
নৌশিন আহমেদ রোদেলা

দুপুরের খাবার পর শুভ্র ভাইয়ার দরজায় উঁকিঝুঁকি দিচ্ছি।ভেতরে ঢুকবো কি না বুঝতে পারছি না। উনি নিশ্চয় ঘুমিয়ে গেছেন এতোক্ষণে… ভেতরে গিয়ে রুমটা কি দেখে আসবো?আগে কখনো দেখা হয় নি রুমটা।।তুমুল অস্বস্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছি ঠিক তখনই চায়ের ট্রে হাতে নিয়ে ছাদে যেতে যেতে মাধবী বলে উঠলো-
ছোট ভাবি আপনে ভেতরে যাইতে পারেন।।ছোট ভাইজান আপনারে কিছু কইতো না…আপনি ছাড়া কারো ঘরে ঢুকার পারমিশন নাই।

আমি ওর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসেই দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে গেলাম।এই মেয়ের সামনে দাঁড়িয়ে এসব কথা শুনার চেয়ে ভেতরে ঢুকে যাওয়ায় উত্তম বলে মনে হয়েছে আমার।ভেতরে ঢুকেই অবাক হলাম আমি…. কি সুন্দর গোছানো চারপাশ!!ছেলেদের ঘর এতো গোছানো থাকে বুঝি??ঘরের দেওয়াল টা পিংক এন্ড ব্লু রঙে সাজানো।।বিশাল জানালায় সাদা পর্দা টানায় রুমের মধ্যে একটা শীতল শীতল ভাব।।ঘরের সোফা..আলামারি,,বিছানার চাঁদর -কুশন,, এমনকি বুক সেল্ফটাও সাদা রঙের।।বেড সাইড টেবিলে রাখা সাদা ফুলদানিতে শুধু টকটকে লাল ফুল!!ডানপাশের দেয়ালে উনার বিভিন্ন বয়সের ছবি।।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

তারমধ্যে থেকে ব্লু শার্ট পড়া ছবিটিতে চোখ আটকে গেলো আমার।।ইশশ!! মানুষ এতো সুন্দর হয় কি করে??দাঁতগুলোও কেমন ঝকঝকে…. বিছানার উপরের দেয়ালে চোখ যেতেই অবাক হলাম আমি….সেখানে টানানো আমার সেই ঘুমন্ত ছবিটি…. আরেকটু কাছে গিয়ে চোখদুটো ছোট ছোট করে অসীম কৌতূহল নিয়ে পর্যবেক্ষন করেই মুগ্ধ হলাম আমি….অসাধারণ একটা ছবি!!সাহেল ভাইয়ার ছবির হাত যে অসাধারণ তা মানতেই হবে!!ছবির নিচের ফ্রেমটাতে সোনালি রঙে গুটি গুটি অক্ষরে লেখা “ঘুমন্তপরী!!…From sahel❤” লেখাটা পড়েই বিস্মিত হলাম আমি।।ছবিটা সাহেল ভাইয়া দিয়েছে?

ছবিটির আশেপাশে আরো কিছু ছবি লাগানো…সবকটায় আপুর এনগেজমেন্টের পার্টির বা লুকিয়ে তোলা।।সবগুলো ছবিতেই আমি শুভ্র পাশাপাশি!! সাজানোর স্টাইলটার জন্যই ছবিগুলো আরো প্রাণোবন্ত হয়ে উঠেছে যেনো।ইশশ!! আমার এতো ছবি টানিয়েছেন উনি??বাড়ির সবাই দেখেছে নিশ্চয় !! কি লজ্জা…হঠাৎ করেই হাতে খুব জোড়ে টান পড়ায় বিছানায় গিয়ে পড়লাম আমি….বিছানায় পড়তেই আমায় কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে নিজের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে নিলেন শুভ্র!!মুখে বললেন-” চলো ঘুমাই” ঘটনার আকস্মিকতায় আমি স্তব্ধ…আমার গলায় শুভ্র মুখ ঢুবিয়ে দিতেই ঘোর কাটলো আমার।।নিজেকে ছাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি কিন্তু ফলাফল শূন্য!!উনি আমায় আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলেন-
এতো নরম কেন তুমি…উফফ…মনে তো হচ্ছে…শরীরের মধ্যে ঢুকে যাবে।আচ্ছা তুলো টুলো খাও নাকি??তুমি তো দেখি তুলোর থেকেও নরম !!

আমি কিছু বললাম না…এক্চুয়েলি কিছু বলতে পারছি না…উনার প্রতিটি নিশ্বাস পড়ছে আমার গলায়…আর সাথে সাথেই ফ্রিজড হয়ে যাচ্ছি আমি।।কথাগুলো যেনো গলার ভেতর আটকে যাচ্ছে কি নিষ্ঠুরভাবে।।আমাকে চুপ থাকতে দেখে বাম সাইডের গলায় ঠোঁট দিয়ে স্লাইড করতে করতে বলে উঠলেন-
তোমার এই তিলটা সবসময় ঢেকে রাখবে বুঝলে?এটা খুবই বিরক্ত করে আমায়।।খুইবব!!

কথাটা বলে নিয়েই গলার বাম সাইডটায় কামড়ে দিলেন উনি।আমি “আহ্” করে উঠতেই মুখ চেপে ধরলেন আমার।।ফিসফিস করে বলে উঠলেন-
এই এসব উহ আহ শব্দ করো না তো।।বাড়ি ভর্তি মানুষ…ছি ছি কি ভাববে আমায়!!
তো এভাবে কামড়াচ্ছেন কেন শুনি?ছাড়ুন আমায়…(কাঁদো কাঁদো কন্ঠে)
কি করবো বলো?তোমার শরীর এতো নরম যে মাঝে মাঝেই আমি কনফিউজড হয়ে পড়ি এক্চুয়েলি এটা শরীর নাকি কোনো সফ্ট কেক।।তাই মাঝে মাঝে কামড় দিয়ে চেইক করে নিই ইজ ইট ইউ অর নট!!..টেইক ইট ইজি রোদপাখি…বেশি ব্যাথা লেগেছে??দেখি!

উনার কথায় মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো আমার।ব্যাটায় বলে কি?আমি আর কেক??উফফ অসহ্য…এই খাটাসটাকে এই মুহূর্তে খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে আমার…এই মুহূর্তে!!একরাশ রাগ নিয়ে আবারও নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম আমি।কিন্তু তাতে বিপত্তি বাড়লো বয় কমলো না।। উনি আমায় আরো শক্ত করে নিজের সাথে চেপে ধরলেন।।আমার হারগুর ভেঙে যাওয়ার উপক্রম।এই এখনই বুঝি মট করে ভেঙে যাবে সব!!উনি গলায় মুখ ডুবিয়ে বিরক্ত কন্ঠে বলে উঠলেন-
ইশশ এতো নড়াচড়া করছো কেনো রোদপাখি?একটু ঘুমাতে দাও না প্লিজ।।ইউ নো রোদু?কাল রাত ১২ টা থেকে আজ দুপুর ১ টা পর্যন্ত কন্টিনিউয়াসলি পড়াশোনা করছি৷। মাথাটা একদম ধপধপ করছে বুঝলে?আই নিড আ সাউন্ড স্লিপ…সো নো নড়াচড়া.. লেট মি স্লিপ।

আপনি ঘুমোন না।। আমি কি ধরে রেখেছি আপনাকে??দরকার হলে ঘুমোতে ঘুমোতে শহীদ হয়ে যান বাট আমাকে যেতে দিন।।ছাঁড়ুন প্লিজ!!(করুণ কন্ঠে) মা নির্ঘাত খুঁজছে আমায়।
উহুম.. খুঁজলো খুঁজুক… খুঁজতে দাও…ছাড়ছি না এখন।আমি ঘুমিয়ে গেলে চলে যেও এর আগে নয়।
আপনি আসলেই একটা পাগল।ছাড়ুন তো! রাগ লাগছে আমার।উফফ!!(দাঁতে দাঁত চেপে)
পাগল?পাগল হতে কিন্তু দোষের কিছু নেই রোদপাখি।শেক্সপিয়ারের মতে পাগল,প্রেমিক আর কবি একসূত্রে গাঁথা।। তিনি বলেছেন কি জানো??তিনি বলেছেন- “The lunatic, the lover and the poet/ are the imagination all compact.”
সেই হিসেবে পাগল হতে আমার তেমন একটা আপত্তি নেই।।আমি তো তোমাকে দেখার সাথে সাথেই পাগল থেকে শুরু করে কবি পর্যন্ত সবই হয়ে গেছি রোদপাখি।(চোখ টিপে)

আমি রাগ কন্ট্রোল করে চুপচাপ শুয়ে আছি।।ইচ্ছে করছে এটাকে এক লাথি দিয়ে খাট থেকে ফেলে দিই।।যে শয়তানের বদবুদ্ধিতে এই রুমে ঢুকেছিলাম আমি…আই সয়ার তাকে পেলে ঢাকার নিকৃষ্টতম ড্রেনটাতে গুণে গুণে ২০ বার চুবাবো।।শয়তানের শয়তানীগিরি ছুটিয়ে ছাড়বো আমি…. তার জন্যই তো ফেঁসে গেলাম ।।ও মোর খোদা!!প্লিজ এবারের মতো রক্ষা করো আমায়…এই খচ্চরটার আশেপাশেই আসবো না আমি আর…প্লিজ!!””

ড্রয়িংরুমে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।সবাই ছাদে তারমানে এখনো খুঁজ পড়ে নি আমার।।একটা ছোট শ্বাস নিয়ে সোফার দিকে তাকাতেই দেখি সাহেল ভাইয়া গালে হাত দিয়ে বসে আছেন।।আমাকে দেখেই মিষ্টি হেসে…সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে বলে উঠলেন-
কেমন আছো সানশাইন??
উনাকে দেখে কিছুটা অস্বস্তি হলেও মুখে হাসি টেনে উনার পাশের সোফায় বসতে বসতে বললাম-
আলহামদুলিল্লাহ ভালো ভাইয়া আপনি??
ভালো নেই গো।।খুবই করুণ অবস্থা আমার!!
কেনো কি হয়েছে ভাইয়া?

সারারাত পড়াশোনা করার পর দুপুরে এই বাড়ির সোফায় বসে ঝিমুতে হলে কিভাবে ভালো থাকি বলো??বুঝলা সানশাইন?? এরা না অলওয়েজ আমায় ফাঁসিয়ে দেয়।।এই দেখো,, শালা হারামি শুভ্রটা আমাকে ফোন দিয়ে জোর করে ঢেকে এনে এখন নিজেই নাক ডেকে ঘুমুচ্ছে।। ইচ্ছে করছে শালাকে এক ঘুষিতে নাক ফাটিয়ে দিই।
ফাটিয়ে দিন না মানা করেছে কে?উনার নাক ফাটানোই উচিত।।কিন্তু আপনাকে ডেকে পাঠানোর কারন?

তোমাদের বাসায় যাওয়ার জন্য।নতুন জামাইয়ের সাথে নাকি যেতে হয়??সেই নিয়ম রক্ষার্থে আমি আর শুভ্র যাচ্ছি অভ্র ভাইয়ের পিছু পিছু।।এই শোন না?বউয়ের বাড়ি যাওয়ার পর নাকি….বরের সঙ্গীদের উদ্ভট আর ভয়ঙ্কর সব জিনিস খেতে দেওয়া হয়??লাইক.. মরিচের জোস??(ভয়ার্ত দৃষ্টিতে)

উনার এমন ভয় পাওয়া দৃষ্টিতে অবাক হলাম আমি।।একটু সিরিয়াস ফেইস নিয়ে বলে উঠলাম-
হ্যা তা তো খেতে দেওয়া হয়ই….
ও মাই গড!! সানশাইন?? লুক আমায় এসব খেতে দিও না…শুনেছি ভাইয়ের শালীরাই এমন করে…সেই হিসেবে তুমিই তো হবে তার লিডার…তাই তোমাকেই বলছি যা খাওয়ানোর তোমার জামাইকেই খাইয়েও আমাকে নয়…আমি কিন্তু সম্পর্কে তোমার ভাসুর হই…শুভ্র থেকে ১ দিনের বড় আমি।।(বাচ্চাদের মতো মুখ করে)
উনার কথায় হুহা করে হেসে উঠলাম আমি।উনি কয়েক সেকেন্ড আমার দিকে তাকিয়ে থেকেই হুট করে উঠে দাঁড়িয়েই হাঁটা দিলেন সিঁড়ির দিকে।।আমি উনার যাওয়ার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আবারও হেসে উঠলাম-“এরা সবাই ই পাগল নাকি??”

সন্ধ্যা ৭ টা।।আমি,শুভ্র ভাইয়া আর সাহেল ভাইয়া বসে আছি আমাদের ছাদে।।উনাদের দুজনের গায়েই বেগুনি রঙের পাঞ্জাবী।দুজন ক্রমাগত বাদাম চিবোচ্ছেন আর আমি খুব মনোযোগ দিয়ে উনাদের কথা শুনছি।শুভ্র ভাইয়ার ব্যাপক আফসেস হচ্ছে।উনাকে দেখে মনে হচ্ছে উনি রীতিমতো আফসোসের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন –
দেখলি তো সাহেল??ভাই জাতি এমনই হয়…আমদের এক্সামের পড়া বাদ দিয়ে আমাদের সাথে এনে এখন হাওয়া!!বউ নিয়ে দরজা লাগিয়ে খোলার নামই নেই।।বলি আমাদেরও তো কিছু হক আছে নাকি??এতো তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে আমাদের??

এতো ঢং মাইরো না মামা!!আজকে তোমার বিয়ে মেনে নিলে তুমিও আমায় একা ফেলে ওই দরজায় লাগাইতা।
ছিহ সাহেল!!তুই আমাকে এমন ভাবিস?দেখ…আমার বউ যে আমার সামনে বসে আছে আমি কি একবারও তাকিয়েছি??সেই কখন থেকে তো তোকেই দেখে যাচ্ছি!!(কাঁধে হাত রেখে)
আগলা পিরিত চুরের লক্ষ্মণ। শালা হাত সরা…..
এমন করিস কেন দোস্ত….
শুভ্র ভাইয়ার কথার মাঝপথেই চিত্রা ছাদে এসে মুখ ফুলিয়ে বলে উঠলো –
আমি মেয়ে হিসেবে কেমন??
চিত্রার হঠাৎ এমন কথায় আমরা তিনজনই অবাক।।হঠাৎ ও কোথা থেকে টপকালো তাও বুঝতে পারছি না আমি।।ব্যাপারটা বুঝে নিয়ে কিছু একটা বলতে যাবো ঠিক তখনই শুভ্র আর সাহেল ভাইয়া একসাথেই বলে উঠলেন-
গোলাপের মতো….

কথাটা বলে দুজন একসাথেই হুহা করে হেসে উঠলেন। আমি ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই নিজেদের সামলে নিয়ে মুখ চেপে হাসতে লাগলেন।।চিত্রা এবার আমার পাশের চেয়ারটাতে বসে চোখ থেকে চশমা খুলে নিয়ে মুখ ফুলিয়ে বলে উঠলো-
দেখ তো…আমার চোখ কি ট্যারা??
চিত্রার কথায় আবারও অবাক হলাম আমি এমন একটা টপিক কোথা থেকে এলো বুঝতে পারছি না।ভ্রু কুচঁকে কিছু একটা বলতে যাবো ঠিক তখনই আবারও দু’জনে একসাথে বলে উঠলেন-
না বইন! তোমার চোখ দুটি অতিব স্বচ্ছ!!
কথাটা বলে খিলখিল করে হেসে উঠলেন দু’জনে।একদম প্রাণবন্ত হাসি।।চাঁদের আলোই দু’জনকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে,,,এরা যেন কোন স্বর্গীয়দূত!!ওদের হাসিতে রেগেমেগে উঠে দাঁড়ালো চিত্রা।।কান্না কান্না ভাব নিয়ে বলে উঠলো-

দেখেছিস রোদ?উনারা কেমন মজা করছে আমায় নিয়ে….থাকবো না আমি,,এক্ষনি চলে যাবো।।
কথাটা বলেই চিত্রা হাঁটা দিলো সিড়ি ঘরের দিকে।আমি উঠে দাঁড়িয়ে বার কয়েক চিত্রাকে ডেকেই কোমরে হাত রেখে রাগী চোখে উনাদের দিকে তাকালাম। দুজনেই হাসি চেপে চুপ করে বসলেন।।শুভ্র ভাইয়া ভ্রু নাচিয়ে বলে উঠলেন-
কি??
চিত্রাকে ওভাবে বললেন কেন??
কি বললাম??(অবাক হয়ে)সাহেল??আমরা কি খারাপ কিছু বলেছি??
নাহ,,একদম না(মাথা নেড়ে)
দেখলে তো,, সাহেলও বলছে,,খারাপ কিছু বলি নি।।
আমি রাগী চোখে তাকাতেই সাহেল ভাইয়া বলে উঠলেন-
বুঝলি শুভ্র?আজকালকার জেনারেশনে ভালোর কোনো খাওয়া নেই।।এইযে সাধু ভাষায় কতো সুন্দর একটা প্রসংশা করলাম… বুঝলো?বুঝলো না…উল্টো দেখ কেমন রেগে রেগে তাকায়…

বোথ অফ ইউ আর জাস্ট ইম্পসিবল!!
কথাটা বলেই ঘুরে দাঁড়িয়ে হাঁটা দিলাম সিঁড়ির দিকে।।চিত্রাকে আটকাতে তো হবে!!আমি ঘুরে দাঁড়াতেই দু’জন আবারও খিলখিল করে হেসে উঠলেন।। আমি ভ্রু কুঁচকে ফিরে তাকাতেই ঠোঁটে আঙ্গুল চেপে চুপ হয়ে গেলেন দুজনই।।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবারও হাঁটা দিলাম আমি।।সিঁড়ির দু’ধাপ পেড়োতেই আবারও কানে এলো তাদের প্রাণ খোলা হাসি।।দুটো আলাদা মানুষের মধ্যে এতো মিল কি করে হয় কে জানে??দুজনেই আস্ত শয়তান….একজন একটু চুপচাপ হলেও আরেকজন পুরাই রাক্ষস।। নিজের কষ্টকে এতো সহজে ভুলে গিয়ে কি বন্ধুর সাথে এভাবে গলা মিলিয়ে হাসা যায়??এই বন্ধুত্বটা যেনো অটুট থাকে সারাটা জীবন।।

শুভ্র ভাইয়ার মেজাজ ভীষন রকম গরম।।উনি একবার চেয়ারে বসছেন তো একবার হাঁটাহাঁটি করছেন…কিছুতেই নিজেকে শান্ত করতে পারছেন না ।।সাহেল ভাইয়া ক্রমাগত হেসে চলেছেন…. আমি আর চিত্রা মুখ গোমরা করে দাঁড়িয়ে আছি।।আজকের প্ল্যান ছিলো সবাই মিলে ঘুরতে যাবো আর অভ্র ভাইয়া দিবেন ট্রিট।। আমরা সবাই তো মহা খুশি…চিত্রাও রেডি হয়ে চলে এসেছে ঝটপট কিন্তু লাস্ট মোমেন্টে কি হলো??অভ্র ভাইয়া আপুকে নিয়ে হাওয়া!! শুভ্র ভাইয়ার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না যে,,তার মায়ের পেটের ভাই তাকে এভাবে ধোঁকা দিলো??তার মাসুম ভাইটা মিরজাফর হয়ে গেলো আর উনি টেরই পেলেন না.???আফসোস!!বহুত আফসোস!!

সাহেল তুই হাসছিস?ভাই আমাদের এভাবে ধোঁকা দিয়ে দিলো আর তুই হাসছিস??
সাহেল ভাইয়া চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে বলে উঠলেন-
তো কি করবো বল?তুই ভাবতে পারছিস?আমরা ভাইয়ের এমন অবস্থা করেছি যে তাকে রোমাঞ্চ করার জন্য বউ নিয়ে পালাতে হয়েছে…ভাবা যায়??তুই যে রাতে..
সাহেল ভাইয়ার কথার মধ্যেই ফট করে বলে উঠলো চিত্রা-
কি করেছেন আপনারা?(এক্সাইটেড হয়ে)
চিত্রার কথায় সাহেল ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে তাকালেন…বাঁকা হেসে বলে উঠলেন-

বাহ,,তোমার তো দেখি খুব ইন্টারেস্ট!!এতো ইন্টারেস্ট ভালো না বাচ্চারা…..তোমাদের ইন্টারেস্ট থাকবে রান্না ঘরে…যাও যাও আমাদের জন্য চা নিয়ে আসো..
আমরা কেন চা আনবো??নিজেরে নিয়ে খান যান…
ওহ মাই গড…শুভ্র দেখ দেখ…তোর শশুড়বাড়ি তোর কোনো ইজ্জত নাই।এক কাপ চায়ের জন্য এতো খোটা??এতো??
সাহেল ভাইয়ার কথায় হাসলেন শুভ্র।আমিও মুচকি হাসলাম এদিকে চিত্রা রেগে ফায়ার-
এই এই?আপনাকে বেইজ্জত করার মতো কি কথা বললাম শুনি??আ…
চিত্রাকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়েই বলে উঠলাম আমি-
আমরা চা আনছি ভাইয়া। আপনারা গল্প করুন।
আমার কথা শেষ হতেই মুখ ফুলালো চিত্রা…যার অর্থ সে যাবে না।আমি ওর দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়েই বলে উঠলাম-
তাহলে কি তুই উনাদের সাথে থাকতে চাস??তুই..

আমার কথা শেষ না হতেই ধুপধাপ করে নিচে নেমে গেলো সে।।শুভ্র আর সাহেল ভাইয়া হেসে ওঠে একসাথেই বলে উঠলেন- “চা নয় কফি প্লিজ” আমি হালকা হেসে মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়েই নিচে নেমে এলাম। কিচেনে এসেই আমি অবাক…আমাদের চিতা বাঘ কফি বানাচ্ছে আর গুন গুন করে গান গাইছে…”প্রেমে পড়েছে মন..প্রেমে পড়ছে/অচেনা এক মানুষ আমায় পাগল করেছে।” ওর এমন নেচে নেচে গান গাওয়া দেখেই আমার ভেতরেও কৌতূহলগুলো নেচে উঠলো…মাইয়া এতো প্রেম পায় কই??আমি আস্তে করে ওর পেছনে দাঁড়িয়ে কফি কাপ রেডি করতে করতে বললাম-” তো?কার প্রেমে পড়লি?কে সে অচেনা মানুষ যে বনের চিতা বাঘকেও পাগল করে ফেললো??” চিত্রা মনের আনন্দে অন্যমনস্ক হয়ে “ওই তো ম..” এইটুকু বলেই থেমে গেলো।।আমাকে দেখে অপ্রস্তুত হাসি দিয়ে বলে উঠলো সে-
এমা…রোদ??আমি তো চায়ের জায়গায় কফি বানিয়ে ফেলেছি রে..এবার কি হবে?(অসহায় চোখে)

এতো প্রেম প্রেম পেলে তো তাই করবে সোনা!বাট এতো প্রেম প্রেম পায় কার উপর সেটা তো বল…(ভ্রু নাচিঁয়ে)
চিত্রা কিছু একটা বলতে যাবে তখনই ভাইয়া এসে হাজির।।আমার মাথায় টোকা দিয়ে বলে উঠলো -“বুড়ি!!” আমি রেগে তাকাতেই দাঁত কেলিয়ে হেসে উঠলো ভাইয়া…চিত্রার দিকে তাকিয়ে বললো-
কফি বানাচ্ছো চিত্রা?
জি ভাইয়া!!
আমার জন্যও এক কাপ প্লিজ…হবে তো?(মুচকি হেসে)

চিত্রা ঝটপট জবাব দিলো-” একদম” ভাইয়া আবারও আমার মাথায় একটা চাটি মেরে মুচকি হেসে বেরিয়ে গেলো।।চিত্রা এখনো অন্যমনস্ক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে…এই মেয়ের আগামাথা কিছুই বুঝতে পারছি না আমি…সামথিং ইজ ফিসি হেয়ার।।কার প্রেমে পড়লো সে??আমি কি তাকে চিনি??চিত্রার হাতে ভাইয়ার কফি কাপটা ধরিয়ে দিয়ে আমি হাঁটা দিলাম ছাঁদের দিকে…. মনে মনে চিত্রার কথায় ভাবছি…সত্যি প্রেমে পড়লো বুঝি??ছাদের দরজার কাছে এসে শুভ্র ভাইয়ার মুখে চিত্রার নাম শুনেই থমকে দাঁড়ালাম।।সাহেল ভাইয়া আর শুভ্র ছাদের রেলিং এ হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।।শুভ্র ভাইয়া মুচকি হেসে বললেন-

চিত্রাকে বিয়ে করে নে সাহেল।রোদের ধারণা ব্যাপারটা দারুন জমবে।
শুভ্র ভাইয়ার কথায় বিষম খেলেন সাহেল ভাই।। কাশতে কাশতে বললেন-
চিত্রা!লাইক সিরিয়াসলি?
শুভ্র ভাইয়া মুহূর্তেই হুহা করে হেসে উঠলেন।। নিজেকে সামলে নিয়ে বলে উঠলেন-
তো?সমস্যা কি?আরে চিত্রা নাকি ভার্সিটির বেস্ট সুন্দরীদের মধ্যে একজন…তোর তো ফাঁটা কপাল হবে রে…সুন্দরী বউ!!(চোখ টিপে)
তাই বুঝি?তো এক কাজ কর না…তুই-ই বিয়ে করে ফেল ওকে…সুন্দরী বউ হবে…(দাঁতে দাঁত চেপে)
নাউজুবিল্লাহ!!কি সব বলিস দোস্ত….রোদময় জীবন আমার…এ জীবনে অন্য কাউকে নিয়ে ভাবা মানেই মরণ…ওকে ছাড়া অন্য কিছু চোখেই পড়ে না আমার।।বাট তোর ব্যাপার তো আলাদা…
হুহ…তাই বলে আমার গলায় ঝুলাবি?এতো সুন্দরী মেয়ে আমার লাগবে না….আমার তো মায়াপরী চাই…(অন্যমনস্ক হয়ে)

শুভ্র ভাইয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অন্যদিকে তাকিয়েই হঠাৎ বলে উঠলেন-
রোদকে ভালোবাসিস সাহেল??
শুভ্র ভাইয়ার করা এমন প্রশ্নে সাহেল ভাইয়া যেনো চমকে উঠলেন…সাথে আমিও।।আমার হাত কাঁপছে…সাহেল ভাইয়া কি বলবেন এবার?উনাদের মধ্যে আমার জন্য প্রবলেম ক্রিয়েট হবে না তো??মনে মনে দোয়া দুরুদ পড়ছি আর সাহেল ভাইয়ার জবাবের অপেক্ষা করছি।সাহেল ভাইয়া একবার শুভ্রর দিকে তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে আকাশের নীলে দৃষ্ট নিবদ্ধ করে চুপ করে রইলেন।।শুভ্র ভাইয়া আবারও প্রশ্ন করলেন-
ভালোবাসিস তাই না?নিশ্চুপ কেন তুই?কিছু তো বল সাহেল!!
সাহেল ভাইয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শুভ্র ভাইয়ার দিকে তাকালেন…..একটা মুচকি হাসি দিয়ে চোখে চোখ রেখে বলে উঠলেন-

আমি নিশ্চুপ কোথায়?নিশ্চুপতা মানে কি শুধুই চুপ থাকা শুভ্র??নিশ্চুপতা মানে অসংখ্য অভিযোগ যা আমি মুখে বলতে চাই না।নিশ্চুপতা মানে একবুক কষ্ট যা আমি তোকে দেখাতে চাই না।নিশ্চুপতা মানে অসংখ্য ভুলের ছড়াছড়ি যা আমি ধরিয়ে দিতে চাই না।আমি নিশ্চুপ নই শুভ্র….এই নিশ্চুপতার পেছনে আমার অনেক কথা… অনেক!!
সাহেল ভাইয়ার কথায় চোখ ফিরিয়ে নিলেন শুভ্র।হঠাৎই ধুম করে বসে পড়লেন নিচে।কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলেন-

কষ্ট হয় না তোর?কিভাবে পারিস সাহেল?আমি হলে তো মরে যেতাম রে!!
শুভ্র ভাইয়ার কথায় মুচকি হাসলেন উনি।শুভ্র ভাইয়ার পাশে রেলিং এ ঠেস দিয়ে বসে ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলে উঠলেন-
এইজন্যই সে এখন তোর…আর কষ্ট?সে তো কাউকেই ছাড় দেয় না শুভ্র….এই বাম পাশটায় এতো ব্যাথা করে যেন কেউ ক্রমাগত ছুড়ি চালিয়ে চলেছে…মাঝে মাঝে মনে হয় মরে যাই কষ্ট কমে যাবে…কিন্তু আমি তো তোর মতো সাহসী না রে একদম ভীতু তাই ওসব পারি না….আমি জানি তুই পারতি…এতোদিনে শেষ হয়ে যেতি….তাই ও তোর…শুধুই তোর!!

কথাটা বলতেই দু’ফোটা মোটা মোটা জলের বিন্দু পড়লো তার গালে।শুভ্র ভাইয়া মাথা নিচু করে চুপ করে আছেন…সাহেল ভাইয়া পানিটুকু বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে সাবধানে মুছে নিয়ে সহাস্যে বললেন-
তোকে আর সানসাইশনকে খুব মানিয়েছে রে।।সানশাইন যখন তোর আশেপাশে থাকে ওর মধ্যে অন্যরকম একটা খুশির ঝিলিক থাকে….ও ভালো থাকে।।এটাই তো বড় পাওনা রে।আমি কষ্টে নেই বরং ভালো আছি।তোর সাথে আমার পছন্দের মিল থাকলেও স্বভাব কিন্তু মেলে না…সানশাইন আমার হলে তুই কখনো অন্যকাউকে নিজের সাথে জড়াতে পারতি না…কিন্তু আমি পারবো।।আর যাকে জড়াবো তাকে সর্বোচ্চ ভালোবাসবো দেখে নিস…তাই সেদিক থেকে সানশাইন তোর হয়েই ভালো হয়েছে তিনটা জীবন বেঁচে গেছে।।

কথাটা বলেই মুচকি হাসলেন উনি।।শুভ্র ভাইয়া হুট করেই জড়িয়ে ধরলেন উনাকে…সাথে সাথে সাহেল ভাইয়াও আগলে নিলেন তাকে।।শুভ্র ভাইয়া টলমলে চোখে বলে উঠলেন-
এই প্রথম হেরে গেলাম তোর কাছে….খুব বাজে ভাবে হেরে গেলাম রে!!
সাহেল ভাইয়া হাসলেন…শুভ্র ভাইয়ার পেটে গুঁতো দিয়ে বলে উঠলেন-
“বলেছিলাম তোকে একদিন জিতটা আমারই হবে। দেখ..বন্ধুত্বের যুদ্ধে তোকে হারিয়ে দিয়েছি আমি…আহ্ কি আরাম!!ছোট থেকে জ্বালাচ্ছিস শালা…”

কথাটা বলেই হেসে উঠলেন দু’জনে।সাহেল ভাইয়া হাসতে হাসতেই বললেন- “তোর ভাবি দেখিস তোর বউয়ের মতোই হবে…একদম কার্বন কপি আনবো…আমাদের দু’জনের মতো অদৃশ্য বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে তারা…দেখে নিস!!”
আমি সাথেসাথেই মনে মনে বলে উঠলাম -“আমিন” বন্ধুত্ব এতোটা সুন্দর হতে পারে জানা ছিলো না।।ইতিহাস,উপন্যাস বা মহাগ্রন্থ সব জায়গায় মেয়েরা দোষী তাদের জন্যই পাপের শুরু…কিন্তু যেখানে এমন মনের মানুষ আছে…এমন বন্ধুত্ব আছে সেখানে কি নারীরা দোষী হবে?চাইলেও হয়তো পারবে না…..কখনোই না!!!আমি আর দাঁড়ালাম না….কফির ট্রে টা হাতে নিয়েই নিচে নেমে এলাম।।চিত্রাকে সামনে পেয়ে ওর হাতে ট্রে টা দিয়েই রুমে ঢুকে দরজা দিলাম।।কেন জানি খুব ক্লান্ত লাগছে নিজেকে….একটু জিরিয়ে নিই এবার…

রাত প্রায় তিনটা।হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ!এতে রাতে কে হতে পারে ভাবতে ভাবতে দরজা খুলেই আমি অবাক…শুভ্র!! আমাকে ঠেলে সরিয়ে ভেতরে ঢুকেই তাড়াহুড়ো করে দরজা বন্ধ করলেন উনি।।আমি কিছুক্ষন বিস্ময়মাখা চোখে তাকিয়ে থেকে….নিজেকে কোনো রকম সামলে নিয়ে ফিসফিস করে বললাম-
আপনি??
উনি আমার থেকেও দ্বিগুণ ফিসফিসিয়ে বললেন-
হুম ঘুমোবো…
তো ঘুমান…এখানে কেন?
তোমার সাথে ঘুমাবো…(আমি ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই)আই মিন এ ঘরে ঘুমাবো…ও ঘরে অনেক মশা!!!(হাত বাড়িয়ে দিয়ে) দেখো তোমার বরের রক্ত অর্ধেক খেয়ে ফেলছে…মায়া লাগে না?(মুখ ফুলিয়ে)

আমি কিছু বলতে যাবো ঠিক তখনই পেছন থেকে ঘুমু ঘুমু গলায় বলে উঠলো চিত্রা-
একটা পাপ্পি দিয়ে দে রোদু…ভাইয়ার রক্ত যা গিয়েছে তার দ্বিগুণ চলে আসবে,, তাই না ভাইয়া??
চিত্রার কন্ঠে চমকে উঠলেন শুভ্র ভাইয়া।।বিস্ফারিত চোখে বললেন-
ও এখানে কি করছে??
আমি স্বাভাবিক কন্ঠে বললাম-“ঘুমোচ্ছে!!”
ওর ঘুমানোর জন্য কি পৃথিবীতে দ্বিতীয় কোনো জায়গা নেই??সোজা আমার বউয়ের বিছানায়??(অসহায় মুখে)
আপনি যাবেন??(রাগী গলায়)
না গিয়ে উপায় কি?আচ্ছা?ওকে সাহেলের রুমে পাঠিয়ে দিলে কেমন হয়??(আমি রেগে তাকাতেই) আব আব তাহলে তোমার ভাইয়ার রুমে??

তোকে চাই সিজন ২ পর্ব ৩৩+৩৪

এবার আমি কোমরে হাত রেখে ভ্রু কুঁচকে তাকালাম…ভেতরটা হাসিতে ফেটে যাচ্ছিলো আমার…তবু নিজেকে শক্ত রেখে রাগী চোখে তাকাতেই আবারও বলে উঠলেন উনি-
তাহলে ফুপা-ফুপ্পির রুমে??
আপনি যাবেনননন???
ওকে বাবা যাচ্ছি তো…ওমন করো কেন??ভালোবাসা তো নাই-ই। একটু মায়া দয়াও তো দেখাতে পারো নাকি??(করুণ কন্ঠে)
উনি পেঁচার মতো মুখ করে রুম থেকে বেরুতে বেরুতে চিত্রাকে উদ্দেশ্য করে বললেন-
শালিসাহেবা??আমারও সময় আসবে…তোমার বাসর ঘরে আমাদের বাচ্চাদেরকে শুইয়ে দিয়ে আসবো হুহ…
উনি আবারও আমার দিকে অসহায় দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বেরিয়ে গেলেন।।উনি বেরিয়ে যেতেই দরজাটা আটকিয়েই দুজনে হাসিতে ফেটে পড়লাম।।শুধু হাসি নয় একে বলে বিছানায় গড়াগড়ি খাওয়া টাইপ হাসি!!

তোকে চাই সিজন ২ পর্ব ৩৭+৩৮

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here