এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২৪

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২৪
Chadny islam

আশরাফ সিকদার গম্ভীর মুখে বসেন আছেন। আজ কাল কি জেনো হয়েই চলেছে এই বাড়িতে। মাইমুনা সিকদার এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে বললেন!!
__ভাইজান আপনি ঠিক আছেন!!
“”হ্যা আমি ঠিক আছি! আদিস কে বলো একটু আমার রুমে আসতে।
“”আচ্ছা ভাইজান!!
আশরাফ সিকদার ওঠে নিজের রুমের দিকে এগুতে লাগলেন। শরীর টা বেশ ক্লান্ত!
“”রাত পরী তোমার কি কাউকে ভালো লাগে??

“”হঠাৎ করে এই প্রশ্ন টা কেনো??
“”এমনি. তুমি বাংলাদেশে কোম্পানি ওপেন করেছো কেনো! তুমি কি তাহলে আর ইউএসএ যাবে না।
“”জানি না! আপাতত এই কাজ টাকেই প্রোফেশনাল ভাবে নিতে চাইছি!
“”ওহহহ! তোমার আজকে রাতে একটু সময় হবে??
“”কেনো??
“”আসলে আমার একটা বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে একটা নাইট ক্লাবে প্রোগ্রামের আয়োজন করেছে। তুমি চাইলে তোমাকে আমার সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারি!
আইরা গম্ভীর গলাই বলে!!
__নো থ্যাক্স! আমি ড্রিং করি না।ওই সব নাইট ক্লাবে যাওয়ার মতোন মেয়ে আমি নয়।
প্রিয়াশ শান্ত গলাই বললো!!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“”হেই তুমি কি মাইন্ড করলা! আমি তো মজা করে বলেছি তোমাকে! আই নো তুমি ওই রকম মেয়ে নও। ব্যাট আই লাইক ইউ??
“হোয়াটস??
“ন্যাথিং!
আফামনি আপনি অসময়ে এই বাড়িতে কেন।স্যার জানে আপনার এখানে আসার কথাটা। পারুল এর এমন কথাই ইরা কিছুটা হাইপার হয়ে বললো!!
__কেনো এই বাড়িতে আমি আসতে পারি না!!
পারুল আমতা আমতা করে বললো!!
__কেনো আসতে পারবেন না ম্যাডাম! এটা তো আপনারি বাড়ি! আহেন বহেন।

ইরা আর জুথী গিয়ে বসলো সোফায়। পারুল গিয়ে দুই কাফ কফি বানিয়ে নিয়ে আসলো দুইজনের জন্য।ভয়ে হাত পা কাঁপছে ঠকঠক করে। ইরার এই অসময়ে আশাটা পারুল কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছে না। পারুল এর মনে হচ্ছে না এরা গেট দিয়ে বাড়িতে এসেছে। গেট দিয়ে আসলে তো রতন বাড়ির ভেতরে ডুকতেই দিতো না। ইরা কফি খেতে খেতে পারুল কে বেশ ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলো। যে এই মূহুর্তে ভয়ে নেতিয়ে আছে। ইরা কে পারুল ডেকে পাশে বসিয়ে জিজ্ঞেস করলো!!

__তুমি কি সত্যি দশ বছর দরে এই বাড়িতে আছো! নাকি মিথ্যা বলেছিলে আমাকে।
পারুল ভয়ে ভর্রকে গিয়ে জড়সড় হয়ে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বললো!!
__ম্যাডাম আমি কিছুই জানি না বিশ্বাস করেন।
পারুল অতিরিক্ত ভয় পেয়ে মুখ ফসকে কথাটা বলে দিয়েছে! পারুল কথাটা ঘুরানোর আগেই ইরা জিজ্ঞেস করলো!!
__কি জানো না তুমি পারুল??
“”ম্যাডাম আমি সত্যি কিছু জানি না!! বিশ্বাস না হইলে রতন মিয়ারে জিগান!!
“”রতন কি তাহলে সব কিছুই জানে পারুল!!

অহনা সিকদার কল করলেন আশরাফ সিকদার কে অতিরিক্ত রাগে রাগান্বিত হয়ে কটমট করতে করতে বললেন!!
__ইরা কে বাইরে যেতে এলাউ করেছো কেনো তুমি??
আশরাফ সিকদার যথেষ্ট রাগী এবং গম্ভীর গলাই বললেন!!
__মানুষ মনে হয় না আমাকে!! তোমাদের মা ছেলের মতোন পাষান্ড নই আমি! মেয়েটার বোনের মতোন বন্ধু অসুস্থ তাই তার সাথে হসপিটালে গিয়েছে তাতে কার কি এমন সমস্যা হয়েছে।
“”হাউ ডেয়ার ইউ! তোমার সাহস হয় কিভাবে আমার সাথে চোখ গরম করে কথা বলার! মেয়ে টা যদি হসপিটাল যাই তাহলে তো সব চুকেই গেলো।আর যদি হসপিটাল বাদ দিয়ে ছুটে গোয়েন্দা গিরি করতে তখন কি হবে।
“”এই সব গুনে আমার কি লাভ। যে ভুল করে ছিলো তাকে বুঝাও। ভুল করেছে শাস্তি তো তাকে পেতেই হবে আগে কিংবা পরে। সব ভুলের ক্ষমা হয় না অহনা!

“”চুপ করো তুমি আমি ছেলে না কোনো ভুল করেছে আর না করবে। অতীতের সব ভুলে যাও।
“”সেই অতীত ভুলার নয় অহনা!! আশরাফ সিকদার কল টা মুখের উপর কেটে দিলেন! কিছু সময় চুপ করে বসে ছিলেন। তার পর আস্তে আস্তে নিচে চলে যান।
রিফাত সিকদার মহলে এসেছে আশরাফ সিকদার এর সাথে দেখা করতে। এর মাঝে কলি পেছন থেকে ডেকে বললো!!
__এই যে দিন কানা মানে রিফাত!! কোথায় যাওয়া হচ্ছে ??
রিফাত গম্ভীর গলাই বললো!!
__উপরে স্যারের রুমে!!
কলি রিফাত কে উপর থেকে নিজ পর্যন্ত ভালো ভাবে দেখে নিলো। আর মজার ছলে বললো!!

__আচ্ছা রিফাত কানা আপনি কি রিলেশন করেন??
“”না। রিলেশন করি না আর করবো ও না! ডিরেক্ট বিয়ে করবো!!
“”কাকে বিয়ে করবেন বড় আব্বুর পছন্দ করা মেয়ে টি কে??
“””হ্যা!
“”কেনো??
“”কারন সে রাত কানা আর আমি দিন কানা পারফেক্ট ম্যাচিং! বিয়ে করলে আমি ওই মেয়ে কেই করবো!!
“”কোনো প্রয়োজন নেই! ওই মেয়ে দেখতে ভালো না দেখতে বাজে সুন্দর না !! বাই দ্যা ওয়ে আপনার আমাকে কেমন লাগে!!
রিফাত অভাক নয়নে কলির দিকে তাকিয়ে সঙ্গে আসতাগফিরুল্লাহ পরে নিলো।আর বললো!!

__একদম বাজে লাগে!!
কলি বিরক্ত চোখে রিফাত এর দিকে তাকিয়ে বললো!! __তার মানে আপনি বলতে বা বুঝাতে চাইছেন যে আমি দেখতে যথেষ্ট সুন্দরী নয়!!
রিফাত আমতা আমতা করে বললো!

__ওই রকম কিছুই নয়! আপনার সাথে কি আমাকে যাই! একটি বার ভেবে দেখুন। কই আসমানের চাঁদ আর ওই বালুর কণা। আমাদের দূরত্ব টা আকাশ ছোঁয়া! এই দূরত্ব কাটিয়ে কখনো পূনতা পাওয়া সম্ভব নই।
কলি স্বাভাবিক ন্যায় বললো!!
__ভালোবাসা এত কিছু জেনে বুঝে হয় না। ভালোবাসা থাকলে দূরত্ব টা কিছুই নয়। প্লিজ আমাকে একটি বার ভালোবাসোন আমাকে ফিরিয়ে দিবেন না।
আশরাফ সিকদার আস্তে ধীরে এগোলেন ড্রয়িং রুমের দিকে! কারোর উপস্থিত বুঝতে পেরে কলি আর রিফাত বেশ কিছু টা দূরত্ব নিয়ে দূরে চলে গেলো।আশরাফ সিকদার এগিয়ে এসে বসলেন সোফায়।আর কলি কে বললেন!!
__আম্মু আমাকে এক গ্লাস পানি দাও তো!!
“”হ্যা বড় আব্বু আনতেছি বলে কলি ছুটে গেলো পানি আনতে। আশরাফ সিকদার কিছুটা সংকোচ নিয়ে রিফাত কে বললেন!!

__একটা অনুরোধ করবো বাবা!!
“”এ কিসব বলছেন স্যার। অনুরোধ কেনো আপনি আদেশ করেন আমাকে!!
“”খুবি জুরুরি একটি বিষয়। আমাদের পুরনো যে Black Rose বাড়িটা আছে। ওই খানে কিছু বডিগার্ড পাঠাও। বাড়ীর চারপাশে নজর রাখার জন্য।কেউ যাতে ভুল করেও বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে।
ঠিক আছে স্যার! আপনি একদম টেনশন করবেন না।আমি সব কিছুর ব্যবস্থা করছি।কথা শেষ করে রিফাত উঠে চলে গেলো। কলি যে তার পাশে ছিলো সে দেখেও না দেখার মতোন চলে যাওয়াতে কলি বেশ দুঃখ পেলো।
আশরাফ সিকদার উচ্চ সুরে ডাকলেন আদিছ সিকদার এবং ওনার ওয়াইফ মাইমুনা সিকদার কে ডাকার সাথে সাথে তারা হাজির হলো আশরাফ সিকদার এর সামনে। আশরাফ সিকদার গম্ভীর গলাই বললেন!!

__প্রিয়াশ কোথাই!!
আদিছ সিকদার হয়তো জানেন না। কোম্পানির কাজের জন্য বেশ ছুটাছুটি করতে গিয়ে বাড়ীর তেমন খোঁজ খবর নিতে পারেন না ছেলে মেয়েদের।আদিছ সিকদার মাইমুনা সিকদার কে উদ্দেশ্য কর জানতে চাইলেন!!
__কি হলো কিছু বলছো না কেনো! প্রিয়াশ কোথাই??
মাইমুনা সিকদার মাথা নত করে বললেন!!
__প্রিয়াশ তো আইরা কে অফিসে নামিয়ে দিতে গিয়েছে!
আশরাফ সিকদার গম্ভীর গলাই বললেন!!
__প্রিয়াশ ফিরলে আমার রুমে অবশ্যই পাঠিয়ে দিবে মনে করে!
“”আচ্ছা ভাইজান!!

অহনা সিকদার ঘন্টা খানেক এর মধ্যে সমস্ত মিটিং এর কাজ ইমিডেটলি শেষ করলেন। সাথে আদিব তো আছেই।আদিল কোনো রকম কনফারেন্স রুমেের মিটিং টা শেষ করছে। অহনা সিকদার এর জোড়া জুড়িতে। আদিল মিটিং শেষ করে আর দেরি করলো না। সোজা এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্য বের হয়ে গেলো! ইতিমধ্যে অহনা সিকদার সবার টিকিট এর ব্যবস্থা করে রেখেছেন৷ আদিল একমনে বসে বসে ভাবতে শুরু করছে ইরা কে নিয়ে!!
যেই চোখে আমার জন্য ভালোবাসার সৃষ্টি হয়নি!!!!
“””সে চোখে আমাকে ঘিরে ঘৃণা আমি সহ্য করতে পারবো না!!
বিশাল এই ভয়ংকর রুমের ভেতরে চারটি মানুষের নিশ্বাস ছাড়া কোনো শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না।ইরা চারপাশ টা ভালোভাবে দেখে নিলো! সামনেই রতন মিয়া দাড়িয়ে যার এই মূহুর্তে ভয়ে হাত পা কাঁপছে। মাথা নয়ে দেখেছে চোখে চোখ ফেলে তাকাতে পারছে না! হয়তো এখানে ইরার আসার কারন টা আন্দাজ করে ফেলেছে। ইরা রতন কে শান্ত গলাই জিজ্ঞেস করলো!!

__আচ্ছা রতন মিয়া আপনাকে আমি কি বলে সম্মোধন করলো!!
রতন ভয়ে ভয়ে বললো!!
_–ম্যাডাম আপনে এডা কি কন। আপনারা আমার মালিক আর আমি চাকর! আপনি আমার নাম দরেই ডাকেন৷
“”এটা কিভাবে সম্ভব আপনি তো আমার থেকে বয়সে অনেক বড়। চাচা বলে ডাকি বরং আপনাকে!!
“”রতন মাথা নেরে সম্মতি দিলো।
“”এই বাড়িতে তো তেমন কিছু নেই তাই না চাচা মিয়া??
“”হ ম্যাডাম!!
“”তাহলে আপনি পঁচিশ বছর দরে কেনো এই বাড়ি টাকে পাহারা দেন??
“”না না ম্যাডাম আমি তো বাড়ী পাহারা দেই না। আমি তো একজন দারোয়ান!! সামান্য একজন কর্মচারী! এই বাড়ীতে তো তেমন কোনো কিছু নাই! যে পাহারা দিতে হবে। শুধু মাএ বাড়িটা দেখতে একটু ভূতুরে ট্রাইপের আরকি!!
হুম হতে পারে! বিশ্বাস করে নিবো আপনার কথাটা?? ইরার এমন চতুরতা দেখে রতন মিয়ার ভয় টা জেনো বেড়ে দ্বিগুণ হতে শুরু করলো। রতন মিয়া আমতা আমতা করে বললো!!!

__হ ম্যাডাম আপনি বিশ্বাস করতে পারেন।
“”ঠিক বলেছেন আপনি। অবিশ্বাস করে ঠকার থেকে বিশ্বাস করে মরা ভালো তাই না!!
ইয়ে মানে

প্রিয়াশ আইরার পাশ দিয়ে গুর গুর করছে। প্রিয়াশ কি বলতে চাইছে ইরা বেশ বেশ ভালো ভাবে বুঝতে পারছে। কিন্তু আইরা তো নাইট ক্লাবে যাই না। তাছাড়া প্রিয়াশ ছেলে টা তো খারাপ নয়। খারাপ হলে নিশ্চয় এত গুলা দিনে ঠিক বুঝতে পেরে যেতো। প্রিয়াশ হয়তো বন্ধুত্ব ভেবেই বলেছিলো নাইট ক্লাবে যাওয়ার জন্য। কিন্তু আইরা শুধু শুধু মাইন্ড করলো। তাহলে কি তার উচিত প্রিয়াশ এর সাথে যাওয়া। আইরা বেশ কিছু খন চিন্তা ভাবনা করে বললো!!
__কই টাই যাবো তোমার সাথে তোমার বন্ধুর বার্থডে পার্টিতে??
প্রিয়াশ জেনো নিজের কান কে এত সহজে বিশ্বাস করতে পারছে না। প্রিয়াশ খুশিতে গদগদ হয়ে বললো!!
__রাত নয় টার পরে!
“”ওকে।

আদিল প্লেনের মাঝেও ছটপট করছে। সে অনেক টাই উওেজিত তার এই মুহুর্তে মনে হচ্ছে! ইরা কে মাথার উপর তুলে একটা আচার মারতে। তার কথা অমান্য করার সাহস পেলো কোথা থেকে ওই মেয়ে। ফোন টা পর্যন্ত ফেলে গেছে। হারামির বাচ্চা টাকে কাছে পেয়ে নেই একবারে কাচা চিবিয়ে খেয়ে ফেলবো ওরে। জানের মায়া নাই অসভ্য মেয়ে। তোর যদি কিছু হয়ে যায় আমি শেষ হয়ে যাবো তুমি বুঝতে কেনো পারিস না প্লিজ অনন্ত আমার জন্য নিজের খেয়াল টা রাখ। আদিল কে এমন হাইপার হতে দেখে আদিব আদিল এর হাতের উপর হাত রেখে শান্ত গলাই বললো!!

__ভাই তুমি টেনশন করো না! ভাবী ঠিক আছে।
আদিব আরও কিছুটা অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আদিল কে শান্তনা দেয়ার জন্য বললো!!!!!!
__ভাই তুমি ভাবী কে অনেক বেশি ভালোবাসো তাই না??ভাই তোমাকে আগে কখনো এতটা পাগলামি করতে দেখি নি।
আদিল অসহায় দৃষ্টিতে বাইরে দিকে বেশ কিছুখন তাকিয়ে রইলো তারপর আদিব এর কথার উওর করে বললো!!
__আমার জীবনে আসা প্রথম নারী ইরা! আমার ভালোবাসার মানুষটি ইরা।কখনো ভাবেনি এমন অদ্ভুত ভয়ংকর ভাবে ওই মেয়ের প্রেমে পড়ে যাবো। এই প্রেমের শেষ কি আমার জানা নেই।তবে আশা রাখছি ইনশাআল্লাহ সুন্দর হবে।

আশরাফ সিকদার বিকেলে বসে বসে কফি খাচ্ছেন। আর আদিস সিকদার খবরের কাগজ পরছেন আর কফি খাচ্ছেন। এর মাঝে আইরা এবং প্রিয়াশ বাড়ীর ভেতরে প্রবেশ করে! আইরা ওনাদের কে দেখে ও না দেখার মতোন করে ওপরে চলে যায়৷ প্রিয়াশ উপরে চলে যেতে চাইলে আদিস সিকদার ডেকে বলেন!!
__এই ছেলে এই খানে আসো।
প্রিয়াশ আদিস সিকদার এর ডাকে এগিয়ে গিয়ে আশরাফ সিকদার এর পাশে গিয়ে বসলো। তার আদিস সিকদার কে উদ্দেশ্য করে বললো!!
__কিছু বলবা ড্যাড??
আদিস সিকদার গম্ভীর গলাই বললেন!!

__কই থাকো সারা দিন তোমার দেখাই পাওয়া যাই না। লাফাঙ্গা দের মতোন সারাদিন গুরা ফেরা করো নাকি। কোম্পানির কাজ গুলা করলেও তো পারো। তোমাকে কি আমি এমনি এমনি পড়াশোনা করেছি। বেকার দের মতোন চলাফেরা তোমার।
প্রিয়াশ বিরক্তি নিয়ে কপাল কুঁচকে বললো!!
__এই গুলা বলার জন্য ডাকছো্।জ্ঞান না দিয়ে অন্য কিছু বলার থাকলে বলো নয়তো আল্লাহ হাফেজ!
প্রিয়াশ ওঠে চলে যেতে চাইলে আশরাফ সিকদার এক উচ্চ দমকে পুরো সিকদার মহল কম্পিত হয়ে উঠলো। প্রিয়াশ আশরাফ সিকদার এর রাগের গতিবেগ বুঝতে পেরে কথা না বাড়িয়ে চুপ করে গিরে বসে পরলো আশরাফ সিকদার এর পাশে!হয়তো এখানে অহনা সিকদার থাকলে প্রিয়াশ এর গালে পরপর কয়েকটা থাপ্পড় বসিয়ে দিতো বাবার মুখের উপর কথা বলার জন্য!আশরাফ সিকদার রাগী গম্ভীর গলাই বললেন!!!

__আমি তো তোমার পরিবর্তন টা চেয়ে ছিলাম!!
‘”আমি তো পরিবর্তন হয়েছি বড় আব্বু!! আমি অনেক টাই ভালো হয়ে গেছি।
“”চুপ করো বেয়াদব ছেলে!তুমি এখনো ওই বাড়িতে কেনো যাও ?? কি এমন কারন যে তোমাকে বাড়িতে যেতেই হয়।
প্রিয়াশ আমতা আমতা করে বললো!!
__আরে বড় আব্বু তুমি ভুল বুঝতেছো! আমি এখন তো ওই বাড়িতে যাই না।
আদিছ সিকদার উঠে দাড়ালেন! দাড়িয়ে প্রিয়াশ এর শার্টের কলার টেনে দরে রাগী গলাই গর্জন করে বললেন!!
__এক ভুলের ক্ষমা বার বার হয় না তুমি জানো না। লাস্ট ওয়ার্নিং দিচ্ছি তোমাকে। এরপর যদি কোনো ভুল করো তেমাকে ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিবো ।
প্রিয়াশ রাগে কটমট করতে করতে বললো!!
__এটাই বলা বাকি ছিলো ড্যাড। আমি তো তোমার নিজের ছেলে নই থাকলে এই কথাটা বলার সাহস দেখাতে না।
আদিছ সিকদার রেগে গিয়ে বললেন!!

__তুমি আমার নিজের ছেলে হলে এত দিনে তোমাকে কয়েক শো টুকরো করে আমি নদীতে ফেলে দিয়ে আসতাম।
মাইমুনা সিকদার সিড়ির একপাশে দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগলেন! তার এত টাও সাহস হয় নি যে বড় ভাসুর এর সামনে গিয়ে দুই চারটা রেগে কথা বলবেন। প্রিয়াশ এর পাশে থাকা একটি চেয়ারে লাথি মেরে রেগে সিড়ি দিয়ে উপরে নিজের রুমে চলে গেলেন।কান্নারত মাইমুনা সিকদার চুপ করে সব টাই দেখলেন৷
রাত আট টার পর :

ঈশান কাউকে কিছু না বলে হসপিটালে জুথী আর ইরার জন্য খাবার নিয়ে এসেছে।আশ্চর্য ভাবে ঘন্টা খানেক দরে তাদের কে খুজতেছে!কোথাও না পেয়ে সোজা কাউন্টারে গিয়ে সিট নাম্বার বললে তারা জানাই। তারা তো ভর্তি করার দশ মিনিট পররি বের হয়ে গেছে। আর আসে নি। ঈশান রাগে কটমট করতে লাগলো। ফোন টা বের করে জুথী কে কল করলো। অবাধ্য মেয়ের মতোন যদি কল টা রিং হলো কিন্তু কেউ রিসিভ করলো না। তাই বাধ্য হয়ে ইরার নাম্বারে কল করলো ঈশান! ইরার নাম্বারে কল করতেই কল টা রিসিভ হলো ঈশান বেশ কিছু টা রাগী মেজাজ দেখিয়ে বললো!!

__বুনু কোথাই তুই।
অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসলো পুরুষালী শক্ত পোক্ত কন্ঠের মানব কে! যে এই মূহুর্তে রাগে রিরিরি করে বলছে!!!
__ঈশান এর বাচ্চা আমার বউ কই??
ইরার ফোন টা তাহলে কি বাসাই! ফোন টা কে রিসিভ করলো আদিল নয়তো! আদিল তো আমেরিকা কালকে আসবে আমি কি ভুল শুনলাম তাহলে।ঈশান এর ভাবনার মাঝেই আদিল আবারও চিৎকার করে বলে উঠলো !!
__কুওার বাচ্চা আমার বউ কই??
“”না না এটা তো সত্যি আদিল! এখন কি বলবো আমি যে আমার বউ অসুস্থ!আমি তাকে নিয়ে হসপিটালে এসেছি। এখন তাদের দুইজন কেই খুঁজে পাচ্ছি না। এরকম বললে আদিল যে খবর করে ছারবে!ঈশান স্বাভাবিক ভাবে বললো!!

__আমি কিভাবে জানবো তোর বউ কোথাই??
“”ঈশান এর বাচ্চা মিথ্যা কথা বলিস আমাকে। তোরে এক লাথী মেরে ছাদে থেকে ফেলে দিবো।
“”আই আমি ও তোর জন্য ছাঁদেই অপেক্ষা করছি!
“”আমি কিন্তু ভিষণ রেগে আছি! সত্যি করে বল আমার বউ কই??
“”মনে হয় জাহান্নামে আছে! তুই গিয়ে বরং একটু খুঁজে দেখে আই!
“”সালা ইয়াকি মারছিস তবে রে। আমি আসতেছি দ্বারা!
আদিল এর রাগের গতিবেগ টা বুঝতে পেরে ইশান শান্ত গলাই বললো!!
__আরে ভাই আমি সত্যিই জানি না তোর বউ কোথাই! আমি তো আমার বউ কেও খুঁজে পাচ্ছি না!
“”তুই কোথাই এখন সত্যি করে বল!!
“”আমি হসপিটাল দাঁড়িয়ে আছি!!
“”তুই জুথীর নাম্বার টা আমাকে সেন্ট কর আমি লোকেশন খুজে বের করছি।
ওকে বলেই ঈশান জুথীর নাম্বার টা আদিল কে সেন্ট করলো। আদিল সাথে সাথে লোকেশন ট্যাগ করে দেখতে পারে। তারা সেই ভয়ংকর বাড়ীর আশেপাশে আছে।আদিল আর এক মিনিট ও দ্বারাই না ঈশান কে লোকশন টা পাঠিয়ে দিয়ে এবং আসতে বলে।

“”প্লিজ এক বার খাও। এইগুলা খেলে নেশা হয় না টাস্ট মি.
“”না আমি ড্রিংক করি না আপনি খান!
“”আরে বেবি কিছুই হবে না প্লিজ একবার ট্রাই তো করে দেখো।
“”নো থ্যাংস্ক! আপনি ওই খান থেকে একটা জুস নিয়ে আসেন!
আইরার বলার সাথে সাথে প্রিয়াশ গিয়ে একটা স্পাইছি জুস নিয়ে আসে। এনে আইরার হাতে দিতেই আইরা জুস টা হাতে নিলো একটু একটু করে খাওয়া শুরু করলো! প্রিয়াশ বার বার আইরা কে দেখছে। প্রতিবারের তুলনায় ড্রেস টা বেশ ছোট। শরীরের কিছু জায়গা স্পষ্ট ভাবে বুঝা যাচ্ছে। প্রিয়াশ বার বার আইরা কে বাজে নজরে দেখে উপভোগ করছে। আইরার মাথা ঘুরছে। আস্তে আস্তে চেয়ারের পাশে মাথা রেখে গা এলিয়ে দিলো। মূহুর্তেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে গেলো।

প্রিয়াশ মনে মনে দুষ্ট হাসি হেসে নিলো! কারন জুসের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মেশানো ছিলো। প্রিয়াশ কয়েক টা বন্ধু এগিয়ে আসলো আইরার দিকে বাজে ভাবে স্পর্শ করতে গেলে প্রিয়াশ এক ঝটকাই সবাই কে দূরে ফেলে দেয়। দাঁতে দাঁত পিসে বলে!!
__এইটা আমার পাখি। হাত লাগালে জানে মেরে দিবো।
দূরে থাক।।
প্রিয়াশ এক লাখ টাকার একটা বান্ডিল হাতে দরিয়ে দিয়ে বললো!!
__জন্মদিন এর নাটক করার জন্য ধন্যবাদ! কিন্তু ভুল করে ও এই মেয়ের দিকে তাকালে শেষ করে দিবো।
প্রিয়াশ এর পাশে থাকা একটা ছেলে বাঁকা হাসি হেসে বললো!!
__আরে বন্ধু রেগে যাচ্ছিস কেনো! তুই তো একটু পর থেকে মজা নিবি চল আজকে এক সাথে নেই।সি ইজ বেরি হটস। আন্ড সেক্সি।
ছেলে টার কথা শেষ হওয়ার আগেই প্রিয়াশ ছেলেটার নাক বরাবর একটা খুশি মারে। সাথে সাথে ছেলেটা ফ্লোরে গরিয়ে পরে। নাক ফেটে রক্ত পরতে শুরু করে। প্রিয়াশ চিৎকার করে বলে!!

__খা…নির পোলা তোর সাহস কেমনে! এত বড় কথা বলার তোর জানের মায়া নাই। প্রিয়াশ আবার ও ছুটে ছেলে টাকে মারতে! কিন্তু আশেপাশে সবাই থাকাই প্রিয়াশ কে কোনো ভাবে আটকে দেয় আর বলে । থাক বন্ধু ও ভুল করে ফেলছে তুই এখন মেয়ে টা কে নিয়ে এখান থেকে। প্রিয়াশ ছেলে টাকে ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে দিয়ে। আইরা কে কোলে তুলে নিয়ে বের হয়ে যায় নাইট ক্লাব থেকে। বাইরে রাখা গাড়ির ভেতরে আইরা কে সুয়ে দিয়ে প্রিয়াশ গাড়ি ডাইভ করে! এখন উদ্দেশ্য হচৃছে নিলি বিলি কোনো জায়গা যেখানে প্যারসোনাল মোমেন্ট ইনজয় করা যায়।
ইরা আর জুথী মিলে পুরো বাড়ী সহ আশপাশের সব কিছু ভালো ভাবে খুজে দেখেছে তেমন কিছু চোখে পরে নি । রতন মিয়া গেটের সামনে দাঁড়িয়ে সব টাই দেখছে। তার মুখে ছিলো এক অদ্ভুত হাসি।যে হাসি তে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। তাহলে কি কোনো কিছুই নেই বাড়িতে। ইরা চুপ করে বসে আছে। জুথী ইরা কে উদ্দেশ্য করে বললো!!

__আমরা তো পুরো বাড়ীর সব কিছুই দেখলাম কিন্তু রতন মিয়ার ঘর টা তো দেখলাম না এমন ও তো হতে পারে ওনার মুখের হাসি আর ঘরের ভেতরে কোনো রহস্য আছে।
ইরা অদ্ভুত হাসি হেসে বললো!!.
ঠিক বলেছিস আমার খেয়ালি ছিলো না তাহলে চল।কথা শেষ করে জুথী আর ইরা রুম থেকে বের হবে তখন দেখতে পাই বাইরের দিকে আলো জানালা দিয়ে তাকাতেই দেখে বড় একটি গাড়ি। ভেতরে কে আছে দেখা যাচ্ছে না দারোয়ান হাত দিয়ে বার বার ইশারা করছে ভেতরে আসতে নিষেধ করছে। দারোয়ান এর কথা শেষ হতে না হতেই আরেকটি গাড়ি আসে। সেই গাড়ি টাকে ইরা বেশ ভালো ভাবে চিনে।এটা তো আদিল এর গাড়ি সবাই এক সাথে এই বাড়িতে কি করছে।দারোয়ান গেট খুলে দিলে দুইটি গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করে। প্রিয়াশ ইতি মধ্যে ভয়ে নেতিয়ে গেছে। আদিল গাড়ি থেকে আগে বের হয়ে প্রিয়াশ গাড়ির সামনে গিয়ে দাড়ায় এবং বের হতে বলে।আদিল খুব ভালো করে জানে প্রিয়াশ এর বাড়িতে আসার উদ্ধেশ্য বালো নই! তাই আদিল প্রিয়াশ কে গাড়ি থেকে নামতে বলে! তাি প্রিয়াশ আদিল এর সামন গিয়ে দাড়িয়ে বলে!!

__আরে তুই এমন করসিস কেন শান্ত হও।
আদিল রাগে রিরিরি করতে করতে বললো!!
__এত রাতে তুই এখানে আসছিস কার পারমিশন নিয়ে। গাড়িতে কে আছে কাকে নিয়ে এসেছিস। এই বাড়িতে।
আদিল এক টানে গাড়ির দরজা খোলে ফেলে গাড়ির ব্যাক সিটে তাকাতেই আইরা কে দেখে এই মূহুর্তে আদিল এর ইচ্ছে করছিলো প্রিয়াশ কে কুপিয়ে হত্যা করতে । কিন্তু আদিল নিজের রাগ কে কন্ট্রোল করে আইরা কে কোলে তুলে নিয়ে বাড়ীর দিকে হাটলো।প্রিয়াশ কে তো ছাড়া যাবেই না কোনো ভাবে তাই সাথে করে বাড়ীর ভেতরে নিয়ে আসলো।সব কিছুর আগে আইরা কে তো ঠিক হতে হবে।
এত খনের সব কিছু ইরা আর জুথী দেখলো।তার মানে তিন পশু মিলে একটি মেয়ে ছি ইরার গা গুলিয়ে এলো ঘৃণায়।ইরা শক্ত করে জানালার গ্রিল দরে দাড়িয়ে আছে।শুধু যে ইরার রাগ হচ্ছে এমন টা নয় জুথীর ও বেশ রাগ হচ্ছে।প্রায় দশ মিনিট পর প্রিয়াশ ঈশান আদিল উপরের রুমে আসলো। আইরা কে বিছানাই সুয়ে দিয়ে প্রিয়াশ কে হুংকার দিয়ে বললো আদিল!!

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২৩

__এই যাএাই তোর আর বাঁচা হলো না।আজরাইল সামনে পরে গেছিস ভুল করে। জান কবজ না করে কিন্তু আমি যাচ্ছি না তোকে। ভয়ংকর ভাবে হাসি হেসে বললো আদিল!
আদিল রুমের এই সেদিন খুজলো ইরা কে। ইরা কে না পেরে বেলকনির দিকে এগোলো। আদিল কে দেখে জুথী আর দাঁড়ালো না চলে আসলো ইরার পাশে থেকে । ইরা কে আদিল পেছন থেকে কয়েক বার ডাকলো। কিন্তু ইরা কোনো উওর করল না দেখে আদিল ইরার হাত দরে নিজের দিকে গুরাতেই দেখে ইরা কাঁদছে। কেনো কাঁদছে জিজ্ঞেস করলে ইরা কিছুু বলে না। আদিল ইরার চোখের পানি মুছে দিতে গেলেই। ইরা শক্ত পোক্ত গলাই চোখের পানি ছেড়ে বলে উঠলো!!
__এখনো সময় আছে সিকদার সাহেব। নিজের ভুল গুলো কে স্বীকার করুন । নয়তো আপনার বুকে ছুরি চালাতে আমার কিন্তু বিন্ধু পরিমান ও হাত কাঁপবে না!

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ২৫

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here