mad for you part 11

mad for you part 11
তানিয়া খাতুন

চারদিকে অন্ধকার, দূরে দূরে স্ট্রিটলাইটের ম্লান আলো।
সেই অন্ধকার চিরে ফুল স্পিডে ছুটে চলছে এক Marcedes।
ইঞ্জিনের গর্জন বাতাসকে ছিঁড়ে দিচ্ছে।
ক্ৰিশেৱ হাত স্টিয়ারিংয়ে , চোখ সামনের রাস্তায়, মুখে একরকম তীব্রতা।
ক্রিশ এর কানে ব্লুটুথ লাগানো, সে আমানের সাথে কথা বলছে।
পাশে রুহি, সিটে বসে ক্ৰিশেৱ কাধে হেলান দিয়ে বসে আছে, এখনো জ্ঞান ফেৱেনি।
ক্রিশ হঠাৎ গলার স্বর উঁচু করে বলে ওঠে—

“স্টুপিড! তোকে তো সেই কখন বলেছি পুরো বাড়িটা পরিষ্কার করে রাখ।
এখনো হয়নি মানে কী? আমি দশ মিনিটে সব ক্লিন চাই!
আমি বাটারফ্লাইকে নিয়ে এখনই পৌঁছাবো!”
তার কণ্ঠে রাগের সঙ্গে অদ্ভুত এক তাড়াহুড়ো, গাড়ির ভেতর প্রতিধ্বনির মতো কাঁপে সেই আওয়াজ।
ক্রিশের এত জোরে গলার আওয়াজ শুনে রুহি ধড়ফড়িয়ে ওঠে, ক্রিশ রুহির দিকে ভুরু কুঁচকে তাকায়।
রুহি কাঁপা গলায় বলে—
“আমি কোথায়? আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? আমি তো বাড়িতে ছিলাম?”
ক্রিশ ব্লুটুথ খুলে ড্যাশবোর্ডে ছুঁড়ে ফেলে, চোখ রাস্তায় রেখে বলে—

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ ড্রাইভ করতে করতে বলে, তোমার আব্বু তোমাকে আমার হাতে তুলে দিয়েছেন।”
রুহির চোখ বড় হয়ে যায়, গলাটা শুকিয়ে আসে—
“মানে কী! আমার আব্বু মোটেই এরকম না!
নিশ্চয়ই আপনি আব্বুকে কিছু বলেছেন!
বলুন, কী বলেছেন?”
ক্রিশ গাড়ি চালাতে চালাতে এক হাত দিয়ে রুহির কোমর ধরে টেনে নিজের কাছে আনে, ঠান্ডা নিঃশ্বাস ফেলে বলে—
“এটাই যে , আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে।”
রুহির চোখ বিস্ফারিত, গলা ভারী হয়ে যায়—
“কীইই! আবার সেই মিথ্যা কথা?
আমাদের বিয়ে কীভাবে হলো? আমি আপনাকে কোনোদিন বিয়ে করিনি!”
ক্রিশ এক চিলতে বাঁকা হাসি দিয়ে বলে—

“আসলে আমার শ্বশুরমশাই টা বড়ই বোকা, নকল রেজিস্ট্রি পেপার দেখেই বিশ্বাস করে নিয়েছেন।
তবে নো টেনশন বাটারফ্লাই, আজকেই আমরা বিয়ে করব, আমাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পাবে।”
রুহির ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় এবাৱ , চোখ লাল হয়ে ওঠে—
“আমি আপনাকে ভালোবাসি না! আর না, আপনাকে বিয়ে করব না!
সবটা একটা নাটক ছিল, বুঝতে পেরেছেন?”
আমি আপনাৱ সাসে নাটক কৱেছি ভালোবাসাৱ, আৱ ওই চিঠি টাও আমি দিনি।
হঠাৎ “স্ক্রিচ” করে ব্রেক মারে গাড়ি, টায়ারের ঘর্ষণে ধোঁয়া উঠে যায়।
রুহি আরো কিছু বলতে যাবে, তার আগেই ক্রিশ রুহিকে আকস্মিকভাবে নিজের কাছে টেনে আনে আর তার ঠোঁটে কামড়ে ধরে।
ক্ৰিশ এত জোরে রুহির ঠোঁট কামড়ে ধরে যে রুহির ঠোঁট থেকে রক্ত বের হতে শুরু করে।
ক্ৰিশ রুহির কপালে কপাল ঠেকিয়ে তার ঠোঁটের দিকে তাকায়, তারপর জিভ দিয়ে সেই বেরিয়ে আসা রক্তটুকু শুষে নেয়।

রুহি যেন পাথর হয়ে গেছে — তার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।
ক্ৰিশ ধীরে ধীরে, রুহির চোখের সব জল শুষে নিয়ে মৃদু স্বরে বলে—
“বাটারফ্লাই তোৱ এই নাটক আমি আগেই থেকেই জানতাম সব।
ক্ৰিশ খান কে তোৱ এতটা বোকা মনে হয়?”
রুহি কাঁপা গলায় বলে,
“তাহলে এত কিছু করছেন কেন?”
সব টাই তো নাটক ভালোবাসা তো নেই্।
ক্ৰিশ গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে রুহির চোখের দিকে তাকিয়ে বলে—
“কারণ আমি তোকে চাই, butterfly… শুধু তোকে।”
রুহি বুঝতে পারছে না কী করবে।
এভাবে ও কিছুই করতে পারবে না—তাকে যেভাবেই হোক পালাতে হবে।
বাড়ি ফিরে গিয়ে আব্বু-আম্মুকে বোঝাতে হবে যে সে এই মানুষটার সঙ্গে কোনও বিয়ে করেনি।
ক্রিশ হালকা হেসে বলল,

“কি হলো, বাটারফ্লাই? আবাৱ মাথায় কী প্যাচ পাকাচ্ছিস?”
রুহি কাঁপা গলায় বলল,
“না… মানে… আমার খুব তেষ্টা পেয়েছে।
দয়া করে একটু পানি দেবেন?”
ক্রিশ ঠোঁটের কোণে ব্যঙ্গের হাসি টেনে নিল।
গাড়ির সিটের নিচ থেকে একটা বোতল তুলে ওর দিকে ছুঁড়ে দিয়ে বলল,
“এই নাও, মিনারেল ওয়াটার। যত খুশি খাও, বাটারফ্লাই।”
রুহি বোতলটা হাতে নিয়ে মুখ কুঁচকে বলে,
“আপনার পানি আপনার কাছেই রাখুন।”

ক্রিশ চোখ কুঁচকে তাকায়, ঠোঁটের কোণে সেই একই কৌতুক মেশানো হাসি।
“আর কত নাটক করবি, বাটারফ্লাই? আমি পানি আনতে গেলে তুই হুশ করে পালিয়ে যাবি, তাই না?”
তাৱপৱ গম্ভীর গলায় বলে ওঠে,
“চল, একটা গেম খেলি—তোর জন্য আমি একটা সুযোগ রাখছি।
এখন সময় শুরু হলো… ঠিক ১০ মিনিট।
যদি এই ১০ মিনিটের মধ্যে তুই আমার কাছ থেকে পালাতে পারিস, আমি তোর জীবনে আর আসব না। কিন্তু যদি না পারিস…”

সে থেমে রুহির চোখে তাকাল, চোখে একরকম দহন জ্বলে উঠল—
“তাহলে আজ রাতেই আমাদের বিয়ে আৱ বাসৱ দুটোই হবে, বাটারফ্লাই।”
রুহির গলা শুকিয়ে গেছে, বুকের ভেতর ধকধক করছে।
তবুও মনে মনে দোয়া করে উঠল—
“আল্লাহ, আমাকে সাহায্য করুন…”
গাড়ির দরজা খুলে রুহি নামল।
হাওয়া গায়ে লাগতেই মনে হলো যেন স্বাধীনতার গন্ধ পেয়েছে।
পেছনে ক্রিশ গাড়ির ভেতর বসে হালকা হেসে তাকিয়ে রইল,
চোখে সেই আগুনের মতো দৃষ্টি—
যেন বলছে, “দেখি বাটারফ্লাই, কতোদূর উড়তে পারিস।”
রুহি গাড়ি থেকে নামতেই চারপাশে তাকাল—একটা ফাঁকা রাস্তা, বাতাসে ধুলো উড়ছে।
তার পা যেন নিজের অজান্তেই ছুটতে শুরু করল।
দৌড়… দৌড়… দৌড়…

ওর নিঃশ্বাস ভারি হয়ে আসছে, চুল মুখের ওপর ঝুলে পড়ছে, গলার তৃষ্ণা আরও বেড়ে যাচ্ছে।
মাথার ভেতর শুধু একটাই কথা ঘুরছে—
“পালাতে হবে… যেভাবেই হোক পালাতে হবে…”
হঠাৎ রাস্তায় একদম সামনে একটা গাড়ি ধাক্কা খাওয়ার মতো করে থেমে গেল—
ক্রিশের গাড়ি।
ক্ৰিশ জানালাটা নামিয়ে হালকা হেসে বলল,
“দৌড়াও, বাটারফ্লাই… এখনো সময় শেষ হয়নি।”
রুহি ঘুরে আবার অন্য দিক দিয়ে দৌড় দিল।

তার গায়ের শাড়ি ঘামে ভিজে গেছে, নিঃশ্বাস কাঁপছে, শাড়ি বাৱ বাৱ পায়ে আটকে যাচ্ছে।
আরেকটা মোড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৱুহি, ঠিক সামনে আবার সেই কালো গাড়ি এসে চিড়চিড় শব্দে থেমে গেল।
ক্রিশ দরজার ওপর ভর দিয়ে তাকিয়ে আছে, ঠোঁটে সেই ভয়ংকর হাসি—
“আর মাত্র পাঁচ মিনিট।”
রুহির বুকের ভেতর কাঁপুনি ধরে গেছে।
সে রাস্তা বদল করে, এবার এক গলির মধ্যে ছুটে যায়।
পিছনে গাড়ির ইঞ্জিনের গর্জন—
“ব্র্র্রুম…!”
তৃতীয়বার, একটা ছোট দোকানের পাশে গিয়ে হাপাতে হাপাতে থামে।
চোখ তুলে দেখে—সামনেই আবার ক্রিশ দাঁড়িয়ে আছে, হাত গুটিয়ে, ঠাণ্ডা চোখে বলছে,

“দুই মিনিট, বাটারফ্লাই… দুই মিনিট।”
রুহির চোখে জল এসে যায়, ও হাল ছাড়ে না।
শেষবারের মতো শক্তি জোগাড় করে আবার ছুটে যায়।
দূর থেকে দেখা যায়—
গাড়িটা ধীরে ধীরে পাশে পাশে এগোচ্ছে,
আর ক্রিশ ভেতর থেকে তাকিয়ে বলছে,
“দেখি শেষ মিনিটে কি সত্যিই উড়তে পারে কিনা আমার বাটারফ্লাই…”
রুহি দৌড়াচ্ছে—

শরীরের প্রতিটা শিরা যেন জ্বলে উঠেছে, নিঃশ্বাস ভারি হয়ে গেছে,
চুল উড়ছে বাতাসে, চোখে ভয়ের ছায়া।
ওর মুখে কেবল একটাই শব্দ ফিসফিস করছে—
“আল্লাহ, আমাকে বাঁচান…”
দূরে নদীর ধারে ঝলমল করা আলো দেখে রুহির চোখে আশার ঝিলিক।
সে আরও জোরে দৌড়ায়, পায়ের জুতো একপাশে খুলে পড়ে যায়,
তবুও ও থামে না, থামলে শেষ।
একটু পরই নদীর ধারে এসে পা পিছলে যায়—
“আহ্!”
চিৎকার করে পড়ে যায় ও, হাঁটুতে ঘষা লাগে, মাটি লেগে যায় মুখে।
ওর নিঃশ্বাস ভেঙে আসে, শরীর কাঁপছে, চোখে পানি ভরে গেছে।
পেছন থেকে গাড়ির শব্দ,

“ব্র্র্রুম…!”
ধীরে ধীরে থামে, ইঞ্জিন নিস্তব্ধ হয়।
ক্রিশ গাড়ি দিয়ে নেমে এগিয়ে আসে।
তার পায়ের ছাপ একে একে রুহির পাশে এসে থামে।
ৱুহি মাটি থেকে মুখ তুলে তাকায়—চোখের সামনে দাঁড়িয়ে ক্রিশ।
সে নিচু হয়ে রুহিকে ধীরে ধীরে নিজের কোলে তুলে নেয়।
রুহির নিঃশ্বাস কাঁপছে, সে বলার চেষ্টা করে—

“ছাড়ুন… দয়া করে…”
ক্রিশ নিচু স্বরে বলে,
“টাইম আপ, বাটারফ্লাই।”
তার কণ্ঠে যেন বরফ গলানো আগুনের সুর।
ওর মুখের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি টেনে নেয়,
চোখে একরকম দহন—
“এখন যা হবে, তা আমার ইচ্ছে মতোই হবে।”
রুহি চুপ, চোখের কোণে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।

গাড়িটা ধীরে ধীরে একটা বিশাল লোহার গেটের সামনে এসে থামে।
গেটটা কালো রঙের, তাতে খোদাই করা আছে নকশা করা সিংহের মুখ।
গেটের দুই পাশে দুইজন প্রহরী, কালো পোশাকে, মুখে কড়া দৃষ্টি।
গাড়ি থামতেই দুজন দৌড়ে এসে গেট খুলে দেয়।
ধীরে ধীরে গেট খুলে যাওয়ার শব্দে চারপাশের বাতাস কেঁপে ওঠে—
“ক্র্রররর…”
গাড়িটা গেট পেরিয়ে ঢুকে যায় ভেতরে।
রুহি জানালা দিয়ে তাকায়—

চারদিকে বিশাল সবুজ লন, ফোয়ারা থেকে পানি ছিটকে ছড়িয়ে পড়ছে।
আর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে সেই প্রাসাদটা—
একটা সাদা মার্বেল দিয়ে তৈরি বিশাল বাড়ি।
প্রাসাদের সামনের সিঁড়ি বিশাল, প্রতিটা ধাপে সাদা মার্বেলের ঘষা আলো,
পাশে দু’পাশে সোনালী রেলিং, আর দেয়ালে নকশা করা ফুলের প্যাটার্ন।
দরজার উপরে বড় করে লেখা “khan Mansion”।
গাড়ি এসে থামে সেই সিঁড়ির নিচে।
ক্ৰিশ নেমেই হাত বাড়িয়ে বলে,
“চল, বাটারফ্লাই।”

রুহি কিছু বলে না, শুধু ধীরে ধীরে পা বাড়ায়,
মনে মনে ভাবে—“এই বাড়ি যত সুন্দর, ততটাই ভয়ানক মনে হচ্ছে…”
ভেতরে ঢুকতেই বিশাল হলঘর।
মেঝেতে সাদা মার্বেলের উপর সোনালী ফুলের নকশা,
ছাদের মাঝখানে ঝুলছে এক বিশাল ক্রিস্টাল ঝাড়বাতি,
যেখান থেকে আলো পড়ে মেঝেতে রঙিন ছায়া তৈরি করে।
রুহি থমকে দাঁড়ায়,
ওর নিঃশ্বাস ভারি হয়ে আসে, মনে হয় যেন এই বাড়ির দেয়ালগুলো পর্যন্ত ওকে দেখছে।
ক্রিশ ঠাণ্ডা গলায় বলে—
“স্বাগতম, বাটারফ্লাই… আমার দুনিয়ায়।”
তারপর ওর হাত ধরে টেনে নেয় সিঁড়ির দিকে।
রুহির মনে হয়,

“এই বাড়িতে একবার ঢোকা মানে হয়তো আর ফেরা যাবে না…”
ওরা একটা লম্বা করিডোরে পৌঁছে যায়,
মেঝেতে লাল কার্পেট বিছানো, পাশে সারি সারি সোনালী দরজা,
যেন প্রতিটা ঘরেই কোনো না কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে।
ক্রিশ থেমে যায় একটা বিশাল দরজার সামনে।
ধীরে ধীরে দরজাটা ঠেলে খুলে ভেতরে ঢোকে,
রুহিকে হাত ধরে টেনে নেয় ভিতরে।
ভেতরে ঢুকতেই রুহির চোখ বিস্ময়ে বড় হয়ে যায়—
ঘরের ভেতরে বসে আছে তিনজন ।

একজন সোফার ওপর পা তুলে আরাম করে বসে সিগার টানছে—রুদ্র।
আরেকজন ল্যাপটপে কিছু দেখছে, ঠোঁটে ঠাণ্ডা হাঁসি—আমান।
আর তৃতীয়জন দরজার পাশে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে, চোখে সানগ্লাস—ৱহিম।
ওরা সবাই একসাথে ঘুরে তাকায় রুহির দিকে।
তাদের দৃষ্টিতে যেন এক ধরনের অজানা কৌতূহল—
যেন জানে, ৱুহি আজকেৱ গল্পের কেন্দ্রবিন্দু।
ক্রিশ গম্ভীর গলায় বলে,
“সবাইকে চিনে নে, বাটারফ্লাই।”
এৱা সবাই তোৱ ভাইয়া।

রুহি কিছু বলার আগেই হঠাৎ ওর চোখ পড়ে কোণের দিকে—
সেখানে দাঁড়িয়ে আছে একটা মেয়ে, হালকা নীল চুড়িদার পরা, চোখে ভয়।
রুহি এক মুহূর্ত তাকিয়ে থাকে, তারপর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে…
ওর ঠোঁট কাঁপে, গলায় আটকে আসা স্বরে বলে—
“সিমরান…?!”
সিমৱান ধীরে মাথা তোলে।
পানি টলমল করছে, ঠোঁট কাঁপছে—
“রুহি…”
রুহির মুখে অবিশ্বাস।
ক্রিশ পেছন থেকে এগিয়ে আসে, মুখে সেই চেনা হাসি।
“চেনা মুখে অবাক হচ্ছ বাটারফ্লাই?”
রুহি ধীরে পেছনে সরে যায়,
“আপনি… ওকে এখানে এনেছেন?”
ক্রিশ মাথা কাত করে বলে,

“হ্যাঁ। আজকে আমাদের বিয়ের জন্যই ওকে এনেছি।
আমাৱ এক মাএ সালী বলে কথা।
রুহি হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকে।
“মানে… আজ?”
ক্রিশ ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি টেনে নেয়।
“হ্যাঁ বাটারফ্লাই, আজ রাতেই আমাদেৱ বিয়ে।
রুদ্র পাশে দাঁড়িয়ে বলে ওঠে,
“‌ওফফ বৱ — কনে এসে গেছে এবাৱ শান্তি।”
আমান হেঁসে বলে,
“বলছি কি তোৱ সালি টা কে আমাৱ খুব পছন্দ হয়েছে, এ্কটু আমাৱ সেটিং কৱিয়ে দে।”
ৱহিমঃ হহহ বাঁদৱেৱ গলায় মুক্তোৱ মালা।
ক্ৰিশ এগিয়ে এসে রুহির কানের পাশে ঝুঁকে বলে,
“আজ থেকে তুই আমার, বাটারফ্লাই।

তোর সাজ হবে, বিয়ে হবে, সব — সব কিছু আমার ইচ্ছেমতো।”
রুহির বুকের ভেতরটা কেঁপে ওঠে ক্ৰিশেৱ কথায়।
সিমরান মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে।
চোখে অপরাধবোধ—
কিন্তু মুখে কিছুই বলতে পারে না।
রুহি আয়নার সামনে বসে আছে—
তার সামনে সাজানো আছে এক রাজকীয় বিয়ের লেহেঙ্গা।
রক্তলাল রঙের সেই লেহেঙ্গার ওপর ভারী সোনালি জরি কাজ,
প্রতিটি ফুল, প্রতিটি বর্ডারে ছোট ছোট ঝলমলে পাথর বসানো।
ঘাঘরার কিনার ঘিরে সূক্ষ্ম সোনালি কাজ আছে—
মনে হয় যেন আগুনের শিখার ভেতর থেকে এই পোশাকটা তৈরি করা হয়েছে।
সিমরান ধীরে ধীরে রুহির কাছে আসে।
সে নরম গলায় বলে,

“চল, সাজানো শুরু করি, রুহি…”
রুহি কিছু বলে না।
তার চোখে ভয়, ক্লান্তি আর নিঃশব্দ বিদ্রোহ মিশে আছে।
তবু সিমরান যত্নে একে একে সাজাতে শুরু করে।
প্রথমে লেহেঙ্গার স্কার্টটা কোমরে পরায় — ভারী, কিন্তু অপূর্ব।
প্রতিটি ভাঁজে ঝলমলে সোনালি কাজ যেন রুহির দেহে আগুনের মতো নেচে উঠছে।
তারপর ব্লাউজ—লাল ও সোনালি মিশ্রণে তৈরি, গলার পাশে হালকা নকশা,
আর কাঁধে মুক্তোর ঝালর।
সিমরান পেছন থেকে ঘোমটা তুলে দেয়—
পুরোপুরি সোনালি নেটের, যার কিনারা জুড়ে ছোট ছোট লাল পাথর বসানো।
যখন আলো পড়ে, মনে হয় পুরো ঘোমটাই যেন তারার আলোয় ভরা।
তারপর আসে গয়না।

সোনার ভারী হার, কানে বড় দুল, দুল,
হাতে একাধিক চুড়ি—সোনালি, লাল, আর মাঝে মাঝে ছোট পাথর বসানো।
প্রতিটি চুড়ির টুংটাং শব্দে ঘরের নীরবতা কেঁপে ওঠে।
সিমরান এরপর কপালে টিকলি পরায় —
একটা লম্বা সোনার চেইনে ছোট লাল পাথর,
যা রুহির কপালেৱ মাঝখানে পড়ে।
তারপর মেকআপ—

সিমরান যত্নে রুহির মুখে ফাউন্ডেশনের হালকা ছোঁয়া দেয়,
চোখে কালো kajal টেনে দেয় একদম নিখুঁতভাবে,
চোখের কোণে একটু গোলাপি শেড,
যেন কান্না লুকিয়ে আছে কিন্তু তবু চোখটা সুন্দর।
ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপস্টিক, গালে হালকা ব্লাশাৱ।
সিমৱান আয়নার দিকে তাকায়।
তার সামনে এখন আর শুধু একটা মেয়ে না—
এক রাজকন্যা দাঁড়িয়ে আছে,
যে নিজের ভাগ্যের সামনে বন্দী হয়ে বসে আছে।
আয়নার প্রতিফলনে সিমরান তাকিয়ে থাকে,
চোখে জল চিকচিক করছে।
“তোকে সত্যি খুব সুন্দর লাগছে, রুহি পুৱো ৱাছকীয়…”

mad for you part 10

রুহি হালকা হাসে, খুব আস্তে বলে,
“সাজটা রাজকীয়…
কিন্তু আমি আজ রাজকন্যা না সিমরান,
আমি বন্দীনি।”
সিমরান কিছু বলতে পারে না,
শুধু মাথা নিচু করে ঘোমটা নামিয়ে দেয় ৱুহিৱ মুখের ওপর।

mad for you part 12

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here