এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৩৮

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৩৮
Chadny islam

নতুন ভোরের সকাল হয়েছে! পাখির কোলাহলের ডাক মিষ্টি রোদের অল্প আলো বড় জানালা ছেদ করে আলতো করে ছোয়ে দিচ্ছে ইরার মুখ। অল্প মিষ্টি রোদ মুখে পরতেই ইরা কপাল কুঁচকে ফেললো!গায়ের উপর জড়ানো কম্ফোর্ট টেনে মুখ ডেকে নিলো!। ঘুম জড়ানো কন্ঠে পেটের উপর অল্প হাতের স্পর্শ পেতেই ইরা তৎক্ষনাৎ চোখ মেলে তাকালো! আদিল ইরার খুব কাছে নিঃশ্বাস এর প্রতিটি হৃদস্পন্দন ভেসে আসছে। ইরা ধীরে ধীরে আদিল এর হাত টাকে পেটের উপর থেকে ছাড়ানোর ব্যাথ চেষ্টা করতে লাগলো।ইরার এমন ছটপটানি দেখে আদিল দু’হাতে আরও শক্ত টানে নিজের বুকে কাছে টেনে নিয়ে বলল!!

____পাগলামো করতে ব্যার্থ করিস না জান!
ইরা আদিল এর বুকে নখ ডাবিয়ে দিলো বলল!!
____আপনি ছা্রুন আমাকে?
“আমাকে সবসময় শুধু ছাড়তে বলিস কেনো! সমস্যা কি তোর! আমার ছোঁয়া ভালো লাগে না তোর!
ইরা হাতের নখ আদিল এর বুকে থেকে তুলে আদিল এর আরেকটু কাছে বুকের সাথে মিশে গিয়ে বলল!!
____আমাদের কবে একটা বাবু হবে!
আদিল যেনো কানে ভুল শুনল! সকাল সকাল তার ছোট বউ টা কি বলছে এসব। বিয়ের মাস খানেক হয়নি এখনো। বাসর তো দূরের কথা ডিরেক্ট বাচ্চা নেয়ার বাইনা করছে।সত্যি জীবন টা পুরাই পান্তা ভাত! আদিল বুকের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ইরার মুখ টাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল!!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

____আজকাল কানে একটু কম শুনি! কি বললা আবার বলো!
আদিল এর বলা কথা ইরার কানে যেতেই ইরা চোখ ছোট ছোট করে বললো!!
____আমার শশুর মানে আশরাফ সিকদার আমাকে একদম ঠকিয়ে দিলো!
আদিল কপাল কুঁচকে বললো!!
____মানে!
“”আমার বয়স কেবল ১৮+ আমাকে কিনা একটা বইরা ছেলে দিলো। এক দম ঠকিয়ে দিলো আমাকে আশরাফ সিকদার !
আদিল মুচকি হেসে বললো!!

____আহারে দুঃখ হচ্ছে তোমার জন্য!
“”হুম দুঃখ হলে একটু কান্না করতে হয়। আপনি একটু কান্না করেন আমি দেখবো!
“”তোমার শখ দেখে আমি শিহরিত! স্বামী কে কাঁদানোর জন্য পায়তারা করছো তাই না ! সালি তুমি বিশ্ব জাহান্নামি!
ইরা মুখ বাঁকিয়ে বলল!!
____ছাড়ুন! আমাকে যেতে দিন
“কোথায় যাবা?
“জাহান্নামে!
“”ঠিকি আছে! স্বামীর মন বুঝতে না শিখলে তো জাহান্নামে যেতে হবে তাই না!
“”আপনার মন তো আছে! তাহলে আমাকে দেখান দেখি কত বড়!
“”মন তো দেখানো যাবে না। তুমি চাইলে অন্য কিছু দেখতে পারো মন এর থেকেও বড়। আই মিন আমার টুনটুনি!
ইরা কপাল কুঁচকে ফেললো!!

____ছি কি বাজে!
তৎক্ষনাৎ আদিল ইরা উপরে উঠে সুয়ে পরে! ইরা কানের কাছে গিয়ে ভিরভির করে বলে!!
____আজ একটু দেখো না বউ!তোমার স্বামী ঠিক কতটা বাজে!
ইরা চোখ মুখ এতখনে বন্ধ করে ফেলেছে। রাগে কটমট করে বললো!!
____বেডা মানুষ মানেই খারাপ! সময়ের সাথে সাথে তাদের অসতৎ ব্যাবহার আরও বৃদ্ধি পাই!ছি ছাড়ুন!
আদিল ইরার গাড়ে মুখ ডোবাতে ডোবাতে বলল!!
____আই নিড ইউ! বাট নট নাউ!ইন ইক্সজাটলি 48 আওয়াস্!
আদিল দীর্ঘ শ্বাস টেনে বললো!!

____ঠিক ৪৮ ঘন্টা পর আমি তোমাকে চাই! এক দিকে আমার নির্বাচন অন্য দিকে তুমি দুইটাই আমার চাই! আমার জন্য দুই টাই সুখের তাই আমি দুইটাই এক সাথে চাই।রেডি হয়ে যাও মনের সাথে সাথে দেহের মিলনের! কোনো এক্সকিউজ চলবে না বউ।ছোট বলে তুমি আর আর ছাড়টা পাবে না।
ইরা অল্প ডোক গিলে বললো!!
____মানে???
“”আদিল সিকদার এর ছাড় দেয়া দেখলা এতগুলা দিন! এবার থেকে আদিল সিকদার এর ভালোবাসা দেখবা!আদিল সিকদার যেইটা চাই সেই টাই পায়।হয়তো ইচ্ছাকৃত নয়তো অনিইচ্ছা কৃত!চাই মানে চাইয়ি!
ইরা শুকনো ডোক গিলে বললো!!

____আপনি কি কোনো ভাবে আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন
“”আমার বউ আমাকে ভয় পাবে! আচ্ছা এই টাও কি সম্ভব !
“”আপনি কি কোনো ভাবে আমাকে ইমপ্রেস করতে চাইছেন!
“”এক দম না আদিল সিকদার এত টাও ভন্ড নয়! যে দিন শেষে ঘরের বউ কে ইমপ্রেস করবে! দরকার পরলে বাইরের শিলা মিলা টিলা ওদের কে ইমপ্রেস করবো তাও তোমাকে নয়!
ইরা গাল ফুলিয়ে বললো!!
____ঘরের বউ হলে কি ইমপ্রেস করা যায় না??

“”না!
“”কেনো!
“”তাহলে দাম বেড়ে যায়!
ইরা মুখ বাঁকিয়ে বললো‌!!
___কিছুদিন পর এমপির বউ হয়ে যাবো! এতটুকু দাম না থাকলে কি আর হবে!
“”তাহলে কি আপনি আদিল সিকদার এর বউ এর পরিচয়ে বাঁচতে চাইছেন??
“”হ্যা! মেয়েরা তো স্বামীর পরিচয় নিয়েই বাঁচে!
“”আমি তো এমন মেয়ে বিয়ে করি নি! আমি চাই তুমি তোমার পরিচয় নিয়ে বাঁচো! কাল যদি আমি বেঁচে না থাকি মরে যাই তখন…..???
আদিল এর কথা শেষ করার আগেই ইরা আদিল এর মুখ চেপে বললো‌

____উল্টা পাল্টা কথা বলবেন না একদম!! মরে গেলেই তো জীবন শেষ! এই অল্পকালিন বিচ্ছেদ আমি চাই না। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত এক সাথে থাকার চিন্তা করেন!
আদিল ইরার ছোট ছোট বলা প্রতিটি কথা কে বেশ গুরুত্ব দিয়ে বললো!!
____তুমি থাকবে তো জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আমার সাথে!
“”ইনশাআল্লাহ!
আদিল কিছু মিনিট চুপ থেকে বলল!!
___তোমার স্বামীর পাপের খাতা টা বেশ ভারী! সেই পাপ দেখার পর তোমার না আবার ঘৃণা চলে আসে!
ইরা বলল!!
____কি সেই পাপ আমি জানতে চাই??
আদিল বলল!!
___সময়ের সাথে সাথে সব জেনে যাবে বউ।তুমি তো এখনো বাচ্চা মেয়ে আরেক টু বড় হয়ে নাও তারপর না হয়…
আদিল এর বাক্য শেষ করার আগেই ইরা বলে উঠলো!!

____বড় হলে তারপর বাসর করবেন তাই তো??
আদিল দাঁতে দাঁত পিসে বললো!!
____১৮+ হয়ে গেছে এর থেকে বড় বউ আমি ডিজার্ভ করি না!তুমি তো বললা তোমার একটা বাচ্চা লাগবে! তাই ভবিষ্যতে এমপি হওয়ার পূর্ব পরিকল্পনা করে তোমাকে আমি সেচ্ছায় একটি বাচ্চা দান করবো।আদিল সিকদার কখনো কাউকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেয় না।
ইরা কপাল কুঁচকে ফেললো!!তাই দেখে আদিল অল্প হেসে বললো!!

____ইতিহাসে তুমিই প্রথম বউ! যে কিনা বাসর করার আগেই বাচ্চার আবদার করছে। অতিরিক্ত খুশিতে আমি গর্বে গর্ভবতী হয়ে যাচ্ছি!
ইরা আদিল এর কথা শুনে ফিক করে হেসে ফেললো!কিছু খন আগে অল্প ভালোবাসায় নিজের মনের কথাটা চট করে বলে দিলো। আর এখন কিনা সেই কথা নিয়ে তাকে খোঁটা দেয়া হচ্ছে। আর কখনো বলবো না আপনাকে মনের কথা! ইরা রাগে ফুসফাস করে বিছানা থেকে ওঠে যেতে চাইলে! আদিল ইরার হাত টেনে রাতের সেই টাওয়াল টা হাতে দিয়ে বললো!

____আমার ইজ্জত হরন করলা তুমি! আমি তোমার নামে উচ্চ আদালতে মামলা করবো! শেষ মেশ কিনা স্বামীর ইজ্জত ছি…. মুখে বলতেও লজ্জা লাগছে!
ইরা মেজাজ ঝাঁঝিয়ে উঠে বললো!!
____বেহারা লোক বাজে লোক! ছি রাতে কি কেউ টাওয়াল পরে সুয়ে পরে! আমি আপনার নামে বিচার দিবো!
আদিল অল্প হেসে খুব সিরিয়াস হয়ে বললো!!
____কি বিচার দিবা??
আপনি রাতে… ছ্যা!! “”কথা বলতেই ইচ্ছে করছে না আপনার সাথে। কালকে থেকে আপনি যদি আমার পাশে ঘুমান তাহলে আমি আপনাকে তুলে ফেলে দিবো।

আদিল সিরিয়াস হয়ে বললো!!
“”আমার ওজন কত জানো তুমি! এই মেয়ে??
“””না আর জানতে চাই ও না।যদি আমি একা তুলে ফেলতে না পারি আপনাকে! তাহলে ডজন খানেক কামলা ভাড়া করে নিয়ে আসবো। আপনাকে নিচে ফেলে দেয়ার জন্য!
“”আমি কি আর এমনি এমনি বলি! সালি তুমি বিশ্ব জাহান্নামি!
“”ইরা মুখ বাঁকিয়ে নিচে চলে গেলো।

আশরাফ সিকদার নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন! সাথে আদিস সিকদার নিজেদের পূর্ব পরিচিত মানুষ দের সাথে আলাপ আলোচনায় বেশ ব্যাস্ত! আজকে অহনা সিকদার অফিসে যান নি। অহনা সিকদার অফিসে যেতে চাইলে আশরাফ সিকদার কড়া ভাবে নিষেধ করেন। বাইরে বেশ রিক্স একা একা বাড়ির বাইরে যাওয়া টা কারোর জন্যই সেভ নয়।রিফাত অফিসের ফাইল চেক করে নিয়ে এসেছে অহনা সিকদার এর কাছে সিগনেচার করাবে বলে। রিফাত সমস্ত পেপার অহনা সিকদার এর রুমে রেখে নিচে চলে আসছে। বাড়ির ভেতরে দশ থেকে বারো জন লোক বসে আছে। তাদের মধ্যে পুলিশ এর সংখ্যায় বেশি। আরও বেশ কিছু লোক আসবে কিছু খন পর। তখন আশরাফ সিকদার সবাাই কে নিয়ে বাইরের বাগান বাড়ির ছোট রুম টাই চলে যাবেন! রিফাত গিয়ে বসলো সোফায় আশরাফ সিকদার এর পাশে!বাড়ির কিছু সারবেন্ট এসে সবাই কে চা নাস্তা দিয়ে গেলো।আশরাফ সিকদার চা নাস্তা শেষ করে নিজের ছোট ভাই আদিস সিকদার এর সাথে সবাই কে বাগানের বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন! তিনি সকালের মেডেসিন নেন নি।অতিরিক্ত টেনশন এবং ছুটাছুটি লেগে আছে কিছু দিন যাবত! হয়তো নির্বাচন শেষ হয়ে গেলেই তারপর থেকে আর হিম শিম খেতে হবে না। হার্টের ব্যার্থা টা আজকাল একটু বেশি অনুভব করেন আশরাফ সিকদার! আশরাফ সিকদার এবং রিফাত মিলে নির্বাচন নিয়ে বেশ কিছু কথা বললেন!

____নির্বাচনের জন্য যতলোক প্রয়োজন নিয়ে নাও। পুলিশ কমিশনার দের লাইন লাগিয়ে দাও! তারপরে ও আমি সুষ্ঠ স্বাভাবিক নির্বাচন চাই ঝামেলা মুক্ত নির্বাচন। যাদের কে দেখলে সন্দেহ হবে তাদের কে নির্বাচন কেন্দ্রের আশে পাশে আসতে দিবা না।যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করবে।
রিফাত বেশ স্বাভাবিক ভাবে বললো!!
°___আবশই স্যার! আপনি একদম টেনশন করবেন না!

আশরাফ সিকদার এর ফোনে হঠাৎ ফোন আসাই তিনি কথা বলতে ব্যাস্ত হয়ে পরেন। রিফাত বসে বসে চা খাচ্ছে। কলি একদম কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি সেটি হয়ে নিচে চলে এসেছে। কলি এদিক সেদিক না তাকিয়ে বরং রিফাত যেখানে বসে আসে সেদিকে এগিয়ে গেলো !রিফাত কলি কে প্রথমে খেয়াল না করলেও কলি যখন রিফাত এর সামনে এসে দাড়িয়ে ছিলো তখন দেখে অনেক টাই অবাক হয়।কলি রিফাত এর উদ্দেশ্য বলে উঠলো !!
_____চলুন আমাকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে আসবেন!
রিফাত হাত ঘড়িতে সময় টা এক বার দেখে নিলো কেবল আট টা বেজে বিশ মিনিট! এত আগে কিসের কলেজ রিফাত সোজা কলির মুখের উপর বলে দেয়!!!!

____সরি মেডাম! এই চাকরি টা আমার নই!আর না আমি আপনাদের বাড়ির ডাইভার । আপনি বাড়ির ডাইডার এর সাথে চলে যান কলেজে।
কলি কপাল কুঁচকে ডাকলো আশরাফ সিকদার কে! কলি প্রথম ডাকেই আশরাফ সিকদার কলির কাছে চলে আসলেন! কলি হঠাৎ আশরাফ সিকদার কে ডাকতে দেখে রিফাত থমথমে হয়ে গেলো।কলি আশরাফ সিকদার কে বললো!!

____বউ আব্বু তোমার পি.এ কে বলো আমাকে কলেজে দিয়ে আসতে।তোমাদের বাড়ির যে ডাইভার আমাকে কোনো বিপদ থেকে কোনো ভাবে সেভ করতে পারবে না।ভাইয়ার নির্বাচন এর জন্য এখন আমাদের কত শএু তুমি বলো বড় আব্বু । এখন কি আমার ডাইভার এর সাথে যাওয়া ঠিক হবে।
কলি এক দমে কথা শেষ করে বড় এক দীর্ঘ শ্বাস টেনে নিলো!আশরাফ সিকদার অবাক হয়ে মেয়ের বুদ্ধি দেখলেন!এত ছোট বয়সেও কত টেনশন!আশরাফ সিকদার অল্প হেসে বললেন!!
____কলি কে কলেজে নামিয়ে দিয়ে আসো রিফাত!
রিফাত হ্যা বলবে নাকি না বুঝতে পারছে না।তারপর ও না বলার রাইট তো তার নেই।কলি মিটমিট করে হাসছে তাই দেখে রিফাত বেশ বিরক্ত বোধ করলো৷ কলির ছলানো বোলানো কথাই কিভাবে আশরাফ সিকদার এর মতোন স্ট্রং মানুষ কে পেচিয়ে নিলো।রিফাত আশরাফ সিকদার কে সম্মতি জানিয়ে বললো!!

____জ্বি স্যার নিয়ে যাচ্ছি!
বলেই রিফাত দূত পায়ে বেরিয়ে গেলো বাড়ির ভেতর থেকে! কলি ও রিফাত এর পেছন পেছন হেঁটে চলে গেলো।
আশরাফ সিকদার কথা শেষ করে গিয়ে বসলেন টেবিলে! অহনা সিকদার এর বানানো সুপ আশরাফ সিকদার এর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন!!
____সুপ টা খেয়ে নাও!
আশরাফ সিকদার কপাল কুঁচকে ফেললেন!!
___রেগুলার কি সব হেলদি খাবার খাওয়াও আমাকে! ছ্যা বিরক্ত লাগে! আমি আর এই হেলদি সুপ টা খাবো না।আমাকে বিরিয়ানি দাও।
অহনা সিকদার গম্ভীর চোখে তাকিয়ে বললেন!!

____মাথা ঠিক আছে তোমার! শরীরের কথা চিন্তা করে সুপ টা খাও। আর সকাল সকাল কিসের বিরিয়ানি??
“”হ্যা! আমাকে বিরিয়ানি দাও!
“”আমার ঝাড়ু কোথাই!.
আশরাফ সিকদার চোখ নামিয়ে বললেন!
___আমি কখন বলেছি আমি সুপ খাবো না,আমি তো খাবোই সুপ একশো বার খাবো! তুমি সুপ বানিয়েছো বলে কথা!!আমাকে খেতেই হবে!!
আশরাফ সিকদার ফের অহনা সিকদার এর দিকে আঙুল তাক করে বললেন!!

___কথায় কথায় আমাদের মাঝে হুটহাট ঝাড়ুকে টেনে আনো কেনো ! তুমি জানো না আমাদের মাঝে 3rd প্যারসোন কাউকে আমি একদম এল্যাউ করবো না!
“”ঝাড়ু আবার 3rd parson হয় কিভাবে? ঝাড়ু কি মানুষ??
“”চুপ করো রাগিনি! বিয়ের পর থেকেই তুমি সাথে করেই 3rd parson নিয়ে আসছো। সেজন্য তো কথায় কথায় আমাকে ঝাড়ু দেখিয়ে দাও। মনে হয় বাপের বাড়ির ওয়ারিশ!
অহনা সিকদার নিজের রাগ সংযোগ করে বললেন!!
____বিয়ে পর সাথে করে ঝাড়ু নয়! আমার বাবা ডজন খানেক গরু মহিষ দিয়েছিলো।এখন আমাকে সেই গুলা সুদে আসলে ফেরত দাও??
আশরাফ সিকদার এর চোখে কালো দুয়াশার মতোন লাগলো সব কিছু! আগেও বেশ কয়েক বার খোঁটা দিয়ে ছিলো আজকে আবার!তাই আশরাফ সিকদার বিরক্তি টেনে বললেন!!

____তুমি ভুলে যেও না অহনা! আমি একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওই সব ডজন খানেক গরু মহিষ আমি তুরি মেরে নিয়ে আসতে পারি!
অহনা সিকদার চেয়ার টেনে বেশ স্বাভাবিক ভাবে বললেন!!
____ঠিক আছে! আমি ও দেখি একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিভাবে হাতে তুরি মেরে ডজন খানেক গরু মহিষ আনে!
সাথে সাথে আশরাফ সিকদার ফোন টা বের করে কাউকে কল দিবে তার আগেই অহনা সিকদার আশরাফ সিকদার এর কাছ থেকে ফোন টা কেড়ে বিরক্তি টেনে বললেন!!
___একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে বলেছে! তিনি হাতের তুরি মেরে ডজন খানেক গরু মহিষ উপস্থিত করবেন! তাহলে তার হাতে ফোন কেনো?
আশরাফ সিকদার গলা খাঁকারি দিয়ে গলা পরিষ্কার করে বললেন!!
____আমার মাইন্ডে আঘাত করো না অহনা! আমি একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী!
আপনি আমার মাইন্ডে আঘাত করবেন না আশরাফ সিকদার! আমি একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এর ওয়াইফ!

মাইমুনা সিকদার প্রিয়াশ এর রুম থেকে বের হয়ে সোজা চলে আসেন খাওয়ার টেবিলে।তার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম এর রেখা দেখে অহনা সিকদার জিজ্ঞেস করলেন!!
____প্রিয়াশ এর কি অবস্থা!
মাইমুনা সিকদার কিছু সময় চুপ থেকে পরে বললেন!
____আমার ছেলে কে দেশের বাইরে পাঠানোর ব্যাবস্থা করেন ভাই জান!
আশরাফ সিকদার খুব স্বাভাবিক ভাবে বললেন!!
____আগে আদিল এর নির্বাচন শেষ হোক তারপর! এই মূহুর্তে আমি কোনো রিক্স নিতে চাইছি না!
আদিল ইরা আদিব সহ সবাই খাবার টেবিলে খেতে বসেছে! আজকে আপাতত তারা কেউ বাড়ির বাইরে বের হবেন না!

__আপনি আমাকে ইগনোর করছেন কেনো?
কোনো উওর নেই! বরং কথাটিকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে! তাই ভেবে কলি চিৎকার করে বললো!!
____একটা প্রশ্ন মানুষ কে মানুষ কইবার করতে পারে??
রিফাত এর কোনো প্রতিক্রিয়া নেই! কলি বিরক্তি সহ আরও মেজাজ হারিয়ে জুড়ে চেঁচিয়ে উঠলো!!
____আপনি আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন না!
এবার যেনো কথা টা ডুকে পরলো রিফাত এর শান্ত মস্তিষ্কে! রিফাত গাড়ি চালানো বন্ধ করে তাকালো কলির দিকে। আশ পাশ টা কেমন যেনো জনশূন্য মনে হচ্ছে। রিফাত শুষ্ক ঢুক গিলে বললো!!!
____হ্যা বলেন!!
কলি রিফাত এর দিকে দৃষ্টি অনুপাত করে খুব স্বাভাবিক গলায় বললো!!
_____ডো ইউ লাভ মি??
রিফাত এক উওরে খুব স্বাভাবিক ভাবে জানিয়ে বললো!__নো..!
“”কেনো! ভালোবাসেন না আমাকে??
“”না!!
কলি রেগে গিয়ে রিফাত এর শার্ট এর কলার দরে নিজের কাছে টেনে নিয়ে বললো!!

____আমি সত্যিই আপনাকে ভালোবাসি। প্লিজ টাস্ট মি. আমি কখনো ছেড়ে যাবো না আপনাকে!
রিফাত কলির হাত টা কে ছাড়ানোর ব্যার্থ চেষ্টা করে বললো!!
___কখনো দেখেছেন আপনি! বড়লোক ফ্যামিলির মেয়ে হয়ে ছোট ফ্যামিলিতে সংসার করতে!এই ভেদাভেদ নিয়ে ভালোবাসা সম্ভব শুধু নাটক সিনেমা তেই । এখনো সময় আছে নিজের ভুল শুধরে নেন! আবেগ বাদ দিয়ে বিবেকে ফিরে আসেন!
কলি ভয়ংকর ভাবে হেসে বললো!!

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৩৭

____ভালোবাসাই ছোট লোক বড় লোক ওই সব কিছু মেটার করে না। আমি আপনাকে ভালোবাসি ব্যাস! এখন আপনাকে ও ভালোবাসতে হবে!
“””জোড় করছেন আমাকে??
“””যদি বলি হ্যা জোড় করছি! তাহলেও কি ভালোবাসবেন না??
“””ভালোবাসা জোড় করে হয় না! পাগলামি করা বন্ধ করেন! আপনার বয়স কম আবেগ থেকে বলছেন এসব কথা!
“””আমি সত্যি আপনাকে ভালোবাসি! টাস্ট মি.
“”বড়লোক দের আবার বিশ্বাস! হু!

এক রহস্যময় ভালোবাসা পর্ব ৩৯

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here