mad for you part 20

mad for you part 20
তানিয়া খাতুন

রুহি আর সিমৱান বাইক থেকে নামতেই রণক এগিয়ে এসে রুহির দিকে হাত বাড়িয়ে দিল।
রণক হেসে বলল, “নাইস টু মিট ইউ, রুহি।”
রুহি একটু দ্বিধায় পড়ে সিমৱানের দিকে তাকাল।
সিমৱান হালকা ইশারায় বলল, “হাত মেলা, ভদ্রতার খাতিরে।”
রুহি চুপচাপ, সৌজন্যের জায়গা থেকে হাত বাড়িয়ে দিল।
রণক রুহির হাতটা একটু চেপে ধরল, ঠোঁটে হালকা হাঁসি নিয়ে তাকিয়ে রইল।
রুহির বুকের ভেতরটা হঠাৎ কেমন কেঁপে উঠল,
সে অস্বস্তিতে হাতটা টেনে নিল, মুখে কোনো কথা নেই—চোখে অস্বস্তি।
রণক মিষ্টি হেসে বলল, “বাই, পৱে দেখা হবে।”
তারপর বাইক স্টার্ট করে ধুলো উড়িয়ে চলে গেল
দূরে।

আর ঠিক সেই মুহূর্তেই—দূর থেকে কেউ পুরো ঘটনাটা দেখছিল।
সে আর কেউ নয়, ক্রিশ।
তার চোখের ভেতর হঠাৎ আগুনের মতো কিছু জ্বলে উঠল।
তার বাটারফ্লাই অন্য কারও সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে—এক মুহূর্তে শরীর শক্ত হয়ে গেল রাগে, অবিশ্বাসে।
তার মনে একটাই প্রশ্ন ধোঁয়ার মতো ঘুরতে থাকল—
“আমার বাটারফ্লাই কি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে?”
প্রশ্নটা যেন আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ল তার ভেতর।
চোখের সামনে অন্ধকার নেমে এল,
আর ক্রিশের অন্তরে সেই প্রশ্নটা—দাউ দাউ করে জ্বলতে লাগল।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রুহি গেটের সামনে এসে দাঁড়াল।
হাতে ফোন নিয়ে ক্রিশকে কল করল, কিন্তু ওপাশে কোনো সাড়া নেই। কলটা রিসিভই হচ্ছে না।
হঠাৎ পেছন থেকে বাইকের আওয়াজ শোনা গেল।
রুহি ঘুরে তাকাতেই দেখে—ক্রিশ বাইক নিয়ে ঠিক তার দিকেই আসছে।
বাইকটা এসে তার সামনে থামল।
রুহি হেঁসে কিছু না বলে চুপচাপ উঠে বসল পিছনে।
ক্রিশকে জড়িয়ে ধরল, গায়ে গায়ে মিশে রইল।
রুহির হাতে এতগুলো শপিং ব্যাগ দেখে
ক্রিশের ভুরু কুঁচকে গেল—চোখেমুখে যেন লুকোনো ঝড়ের ছাপ।
ক্রিশ: “এতসব জিনিস? এত কিছু কেনা হলো কাকে নিয়ে?”
রুহি হালকা হেসে বলল, “সারপ্রাইজ… বাড়ি গিয়ে দেখবেন।”
ক্রিশ গভীর একটা নিঃশ্বাস ফেলল,

নিজের রাগটা চেপে রাখার চেষ্টা করল,
তারপর গম্ভীর গলায় বলল, “নামো।”
রুহি অবাক হয়ে বলে “কি? নামব মানে? কেন?”
ক্রিশ ঠান্ডা গলায় বলে, “আমি বলেছি নামো, মানে নামো। কথা বাড়িও না।”
রুহি হতভম্ব হয়ে বাইক থেকে নেমে দাঁড়াল।
তার চোখে একরাশ প্রশ্ন—ক্রিশের এই আচরণের কারণটা সে কিছুতেই বুঝতে পারছে না।
ভয়ে, কষ্টে, বুকটা ভার হয়ে উঠল।
ঠিক তখনই আমান সামনে এগিয়ে এল।
আমান: “রুহি বোনু, ওর মাথা এখন গরম। কিছু মনে করো না।
চলো, আমি তোমায় পৌঁছে দিই।”
রুহির চোখে পানি চলে এলো।
সে ক্রিশের দিকে তাকিয়ে রইল—চুপচাপ, নিঃশব্দে,
আর ক্রিশ কোনো কথা না বলে বাইক স্টার্ট দিয়ে সোজা চলে গেল …
শুধু পেছনে থেকে গেল বাতাসে উড়ে যাওয়া রুহির চুল আর তার নিঃশব্দ কান্না।

জঙ্গলের ধারে বিকেলের দিকে ক্রিশ বাইকটা থামিয়ে দিল।
চারপাশে নিস্তব্ধতা, শুধু দূরে পাখির ডাক শোনা যায়।
সে ফোন বের করে একটা নাম্বারে কল করল।
“কোন দিকে আছিস?”—গম্ভীর গলায় বলল ক্রিশ।
ওপাশ থেকে কিছু শব্দ এল।
“ঠিক আছে, আসছি। ওখানেই থাক।”
ক্রিশ ফোন কেটে দিল, বাইক স্টার্ট করল, আর জঙ্গলের ভেতরের রাস্তায় ঢুকে গেল।
ঘন গাছপালা, নিচে শুকনো পাতা, বাইকের আওয়াজ ছাড়া আর কিছু নেই।
কিছুটা এগিয়ে একটা পুরনো বাড়ি দেখা গেল—চারদিকে ঘাসে ঢাকা, জানালা ভাঙা, রঙ উঠে গেছে।
বাইকটা থামিয়ে সে দরজার সামনে দাঁড়াল।
বাইরে রোদ থাকলেও ঘরের ভেতর প্রায় অন্ধকার।
ভাঙা জানলা দিয়ে একটু আলো ঢুকছে।
ধুলোয় মোড়া পুরনো আসবাবপত্র, একটা স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ।

ক্রিশ এগিয়ে গেল একদম ভেতরের ঘরে।
ওখানে যা দেখল, তাতে মুখে এক বাঁকা হাসি ফুটে উঠল—
চেয়ারে বাঁধা রণক, হাত-পা দড়িতে বাঁধা, মুখেও কাপড় গুঁজে রাখা।
পাশে দাঁড়িয়ে আছে রুদ্র আর রোহিম, দুজনে।
ক্রিশ ধীরে ধীরে রণকের সামনে গিয়ে দাঁড়াল।
ঠোঁটে ব্যঙ্গ হাসি এনে বলল,

“বাহ, রুদ্র! দারুন জায়গা খুঁজে বের করেছিস। এখনে এই কুকুরটা চিৎকার করলেও কেউ শুনতে পাবে না।”
রুদ্র হেঁসে বলল, “সবই আপনার আশীর্বাদ, গুরু। আপনি না শিখালে এসব করতে পারতাম না।”
রোহিমও হেসে ফেলল, কিন্তু রণক ততক্ষণে ভয়ে ঘামছে।
ক্ৰিশ হাত দিয়ে ৱনকেৱ মুখ দিয়ে কাপড় টা সৱিয়ে দেয়।
রণক কাঁপা গলায় বলে, “তোমরা কারা? আমায় এভাবে বেঁধে রেখেছো কেন? আমি কিন্তু পুলিশে খবর দেব!”
ক্রিশ কিছু বলল না, শুধু একদৃষ্টে তাকিয়ে রইল।
চোখে তার আগুনের মতো রাগ।
মাথার মধ্যে তখন ঘুরছে সেই দৃশ্য—যেদিন রণক রুহির হাত ধরে হাসছিল।
ওই ছবিটাই এখন ক্রিশের চোখে আগুন জ্বালিয়ে দিল।
হঠাৎ সে পাশে তাকিয়ে একটা লাঠি দেখতে পেল।
সেটা তুলে নিয়ে এক ঝটকায় মুঠিতে শক্ত করে ধরল।
রুদ্র একটু পিছিয়ে গেল, বোঝা যাচ্ছিল এবার ঝড় নামবে।
ক্রিশ জোৱ গলায় বলল,

“যে হাত আমার বাটারফ্লাই এৱ হাত ধরেছে… আজ সেই হাত থাকবে না।”
রোহিমঃ গেলো ৱে, আজ এৱ শেষ দিন।
ক্রিশ ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে গেল, লাঠিটা হাতে শক্ত করে ধরে।
রণকের চোখে তখন ভয় — চোখ-মুখে ঘাম, দড়ির বাঁধনে নড়ারও উপায় নেই।
ক্রিশ দাঁত চেপে বলল,
“ওৱ হাত ধরার সাহস কিভাবে হলো তোর?”
এই কথাটা বলেই সে লাঠিটা ঘুরিয়ে এক ঝটকায় রণকের গায়ে মারল।
চাপা গোঙানির শব্দ ঘরের ভেতর প্রতিধ্বনি হয়ে বাজল।
রুদ্র আর রোহিম দুজনেই পিছিয়ে গেল, কেউ কিছু বলতে পারল না।
ক্রিশ একের পর এক আঘাত করতে লাগল—পিঠে, কাঁধে, হাতে, পায়ে।
রণক চিংকাৱ কৱে ছট্ফট্ কৱতে লাগলো, দড়ির বাঁধন ছিঁড়ে ফেলতে চাচ্ছে, কিন্তু পারছে না।
লাঠির আঘাতে কাঠের শব্দে ঘরটা ভরে গেল।
একবার, দু’বার, তিনবার… তারপর একটা ভাঙার শব্দ।
ঠাস!

লাঠিটা মাঝখান থেকে ভেঙে গেল।
ক্রিশ হাঁপাতে হাঁপাতে দাঁড়িয়ে রইল, চোখ লাল, শরীর কাঁপছে রাগে।
ভাঙা লাঠির টুকরোটা মাটিতে ফেলে দিল সে।
রোহিম আস্তে বলল “ভাই, লাঠি ভেঙে গেছে এবাৱ ছেড়ে দে…”
ক্রিশ গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে বলল,
“লাঠি ভাঙলে কী হয়েছে রোহিম, আমি তো এখনো ভাঙিনি।”
ওর গলায় ছিল বরফ ঠান্ডা হুমকি।
রুদ্র নিচু গলায় বলল,
“এখন ছেড়ে দে, না হলে মারা পড়বে ছেলেটা।”
ক্রিশ রণকের দিকে তাকাল—রক্তমাখা মুখ, আধমরা দৃষ্টি।
কিন্তু ক্রিশের চোখে তখনও আগুন জ্বলছে, যেন ওর ভিতরের ঝড় এখনো থামেনি।
ক্রিশের চোখে তখন শুধু আগুন।
রাগে তার নিঃশ্বাস ভারি হয়ে গেছে।
সে চিৎকার করে উঠল—

“ও আমাৱ বাটারফ্লাই কে ছুঁয়েছে , আমার বাটারফ্লাই–এর দিকে তাকিয়েছে আৱ আমি ওকে ছেড়ে দেবো।
বলার সঙ্গে সঙ্গে সে বাইৱে বাইকের কাছে ছুটে গেল।
পকেট থেকে ৱুমাল বাৱ কৱে হাতে জৱিয়ে নিয়ে
সে গরম সাইলেন্সারটা খুলে নিয়ে ভেতৱে চলে গেল।
আর কিছু না ভেবে সেটা রণকের হাতে চেপে ধরল।
গরম ধাতু রণকের ত্বকে লাগতেই সে চিৎকার করে উঠল—
“আআআহ্‌! ছাড়ো! দয়া করো!”
আহহহহহহহহহহ হুহহহ।
কিন্তু ক্রিশ থামল না। তার মুখে একটাও অনুতাপ নেই, শুধু চোখে রক্ত চড়া রাগ।
ক্ৰিশ চেঁচিয়ে বলল—
“তুই আমার বাটারফ্লাই এৱ হাত ধরেছিলি, তাই না? এখন বুঝবি, কাৱ জিনিষে হাত দিয়েছিস তুই!”
রণক কাঁপছে, ছটফট করছে, গলার স্বর কেঁপে যাচ্ছে, কিন্তু ক্রিশ যেন কিছুই শুনছে না।
রুদ্র আর রোহিম তখন ভয়ে এগিয়ে আসে।
রুদ্র চিৎকার করে বলে—

“ভাই ! আর না! ছাড় মরে যাবে!”
রোহিম দ্রুত এসে ক্রিশের হাত ধরে টানতে থাকে—
“ছাড়, চল এখান থেকে বের হই!”
কিন্তু ক্রিশের চোখ তখনও রণকের দিকে স্থির।
মুখে কঠিন স্বর—
“এটা আমার সতর্কবার্তা, আমার রুহির দিকে আর তাকালে খুন কৱে দেবো তোকে।”
রুদ্র আর রোহিম জোর করে ক্রিশকে ধরে বাইরে নিয়ে যায়।
ক্রিশের নিঃশ্বাস ভারি, গলার রগ ফুলে আছে, চোখ এখনো লাল।
পেছনে রণকের কাঁদার শব্দ, আর ঘরের বাতাসে পুড়ন্ত ধাতুর গন্ধ।

রুহিকে আমান নিজেৱ বাড়িতে নিয়ে আসে। বিশাল এক বাড়ি — সাদা রঙের মার্বেল দেওয়া ফ্লোর, সামনে বড়ো গেট, দুই পাশে সারি সারি ফুলের গাছ, আর ভেতরে ঢুকতেই যেন এক রাজকীয় শান্তি।
রুহি চারদিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়।
রুহি: ভাইয়া, এটা কোথায়?
আমান: এটা আমার বাড়ি, আম্মু-আব্বু গ্ৰামে গেছেন, তাই আজ তোমায় আর ক্রিশকে ইনভাইট করেছিলাম।
রুহি: ধন্যবাদ ভাইয়া। কিন্তু উনি, কখন আসবেন?
আমান: ও একটু কাজে গেছে। তুমি বরং পুরো বাড়িটা ঘুরে দেখো, ততক্ষণে ও চলে আসবে।
আমি খাবারের ব্যবস্থা করি, কেমন?
রুহি: আচ্ছা ভাইয়া।

রুহি ধীরে ধীরে বারান্দা পেরিয়ে ঘুরে দেখতে শুরু করে।
দেয়াল জুড়ে বড়ো বড়ো পেইন্টিং, প্রতিটা রুমে সাজানো সুন্দৱ কৱে।
ধীরে ধীরে রুহি পেছনের দিকের দরজার কাছে গিয়ে পৌঁছায়।
দরজা ঠেলতেই সামনে খুলে যায় এক দারুণ সুন্দর দৃশ্য—
একটা বড়ো সুইমিং পুল চারপাশে কাঁচের ঘেরা বারান্দা।
রুহি সেখানে গিয়ে থেমে যায়, জলের দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ হয়ে বলে,
“বাহ্… খুব সুন্দর জায়গা!”
ক্রিশঃ “Butterfly…”
ক্রিশের গম্ভীর আওয়াজে রুহি পিছন ফিরে তাকায়।

ক্রিশ দাঁড়িয়ে আছে—শার্ট ঘামে ভিজে গেছে, মুখে ক্লান্তির ছাপ, চোখে হালকা লাল ভাব।
তবু সেই চোখে একটা অদ্ভুত টান, যেন হাজার কথা জমে আছে ওখানে।
রুহি মুখ ঘুরিয়ে নেয়। ওর মনে পড়ে যায় তখন কৱা ক্ৰিশেৱ ব্যাবহাৱ টা।
মনে মনে ভাবে, না, আজ আর এই মানুষটার সঙ্গে কোনো কথা বলব না।
ৱুহি দাঁড়িয়ে থাকে নীরবে, চোখ নামানো, ঠোঁটে অভিমান জমে আছে।
ক্রিশের ভেতরে কী চলছে, সেটা বোঝা যায় না।
ধীরে ধীরে সে এগিয়ে আসে রুহির পিছনে, পায়ের শব্দটুকুও যেন বাতাসে হারিয়ে যায়।
ক্ৰিশেৱ উপস্থিতি অনুভব করেই রুহির শরীর জমে যায়, তবু সে পা নড়াতে পারে না।
হঠাৎ, কোনো কথা না বলে ক্রিশ ওর হাতটা ধরে টান দেয় নিজের দিকে।
রুহি এক মুহূর্তে ক্রিশের বুকের ওপর ধাক্কা খেয়ে পড়ে।
ওর নিঃশ্বাস ক্রিশের বুকের ঘামে মিশে যায়, এক অদ্ভুত নীরবতা নেমে আসে।
ক্রিশ (নিচু স্বরে):

“বলো তো, আমি বেশি হ্যান্ডসাম, না রনক?”
রুহি অবাক হয়ে তাকায়—প্রশ্নটায় যেন সে আকাশ থেকে পড়েছে।
ওর চোখে অবিশ্বাসের ছায়া, ক্রিশ রনককে চিনল কিভাবে?
ক্রিশ (আরও কাছে ঝুঁকে):
“তাড়াতাড়ি বলো, বাটারফ্লাই… কে বেশি হ্যান্ডসাম?”
রুহির মনে একরাশ শয়তানি জেগে ওঠে।
হঠাৎ ক্রিশের হাতে জোরে কামড় বসায়।
ক্রিশ দাঁত চেপে সহ্য করে, চোখে হালকা আগুন, তবু ওর মুখে সেই পরিচিত হাসি।
রুহি নিজেকে ছাড়িয়ে একটু দূরে সরে গিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে বলে,
“রনক খুব ভালো… আপনার মতো না। আর আপনার মতো খাৱাপ দেখতেও না।”
ক্রিশের চোয়াল শক্ত হয়ে যায়, মুঠি আঁটে—চোখে রাগ, হিংসা আর ব্যথার মিশ্র আগুন জ্বলে ওঠে।
ধীরে ধীরে সে এক পা এগোয়…
ক্ৰিশ ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছিল রুহির দিকে।
তার চোখে যেন এক অদ্ভুত ঝড় বয়ে যাচ্ছিল।
রুহির গলা শুকিয়ে যায়।

– “হুস… হুস.. দূরে যান…” রুহি কাঁপা গলায় বলে উঠে।
কিন্তু ক্ৰিশ যেন শুনছেই না, পা ফেলে আরও কাছে আসে।
রুহি ভয় পেয়ে পিছু হটতে থাকে, পুলের ধারে এসে দাঁড়ায়। আর এক পা পেছালে পড়ে যাবে পানিতে।
ঠিক তখনই ক্ৰিশ হাত বাড়িয়ে রুহির চুল শক্ত করে ধরে টেনে আনে নিজের মুখের সামনে।
রুহি অবাক হয়ে তাকায়, কিছু বলার আগেই ক্ৰিশ হঠাৎ রুহির বুকের ওপর মুখ রেখে জামাৱ ওপৱ থেকে জোরে কামড়ে দেয়।
রুহি ব্যথায় চিৎকার করে ওঠে—

– “আহ্‌হহহহহ! ক্ৰিশ, ছাড়ুন!”
কিন্তু ক্ৰিশেৱ কামড় আৱো জোৱে হয় হাত আরও শক্ত হয়।
রুহি বুঝে যায়, এখন যদি একটু নড়ে যায়, তবে সরাসরি পড়ে যাবে পুলে।
তাই সে বাধ্য হয়ে ক্ৰিশকে শক্ত করে ধরে থাকে।
দুই মিনিট পর ক্ৰিশ মুখ তুলে তাকায়। রুহির চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।
ক্ৰিশ কঠিন স্বরে বলে—
– “বল, কে বেশি হ্যান্ডসাম, বাটারফ্লাই?”
রুহি মুখ ঘুরিয়ে ফিসফিস করে বলে—
– “জানি না…”

এই উত্তরটা যেন ক্ৰিশেৱ মনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মুহূর্তেই সে জোরে থাপ্পড় মারে রুহির গালে।
শব্দটা এত তীব্র যে চারপাশ নিস্তব্ধ হয়ে যায়।
রুহি কাঁপতে কাঁপতে ক্ৰিশেৱ দিকে তাঁকায়।
গালটা লাল হয়ে গেছে, চোখে অশ্রু জমে উঠেছে।
– “আপনি এমন কেন করছেন…” ফুঁপিয়ে বলে রুহি।
ক্ৰিশের মুখে তখনো রাগের ছাপ।
সে আবার রুহির চুল মুঠো করে ধরে টেনে বলে—
– “বল! কে বেশি হ্যান্ডসাম, বাটারফ্লাই?”
রুহির শরীর কাঁপছে, গলায় কথা আটকে আসছে।
সে কাঁপা কাঁপা গলায় আবার বলে—

– “জানি না…”
এইবার ক্ৰিশের ঠোঁটে এক বাঁকা হাঁসি খেলে যায়।
সে ধীরে ধীরে বলে—
– “তাহলে এখন জানবি…”
এ কথা বলেই সে রুহিকে ঠেলে ফেলে দেয় পুলের মধ্যে।
জলের ছিটা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
ক্ৰিশ দাঁড়িয়ে থাকে পুলের ধারে, ঠান্ডা মুখে তাকিয়ে থাকে।
রুহি জলে পড়তেই ছিটে ওঠা পানির শব্দে চারদিক নিস্তব্ধ হয়ে যায়।
ঠান্ডা পানিতে পড়ে ওর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে থাকে।
আতঙ্কে রুহি হাত-পা ছুঁড়তে থাকে, কিন্তু ডুবে যাওয়া শরীর বারবার নিচে টেনে নিয়ে যায়।
রুহি কাঁপা কাঁপা গলায় চিৎকার করে ওঠে—

– “ক্ৰিশ! আমায় বাঁচান! আমি সাঁতার জানি না! পানি… পানি আমার খুব ভয় লাগে! দয়া করে আমায় বাঁচান!”
পুলের ধারে দাঁড়িয়ে ক্ৰিশ নিচু হয়ে তাকায়।
মুখে হালকা হাঁসি ফুটে ওঠে।
মনে মনে ভাবে— “এতটুকু পানিতে কেউ ডুবে যায় এমনি এমনি কি আৱ লেদা মাৱকা বলি।…”
রুহির গলাটা আরও করুণ হয়ে ওঠে—
– “ক্ৰিশ! দয়া করুন! প্লিজ, বাঁচান!”
ক্ৰিশ এবার হেঁসে চেঁচিয়ে বলে—
– “বলো, বাটারফ্লাই, কে বেশি হ্যান্ডসাম?”
রুহি চোখ খুলে কাঁপতে কাঁপতে বলে—
– “আপনি! আপনি-ই সবচেয়ে হ্যান্ডসাম! আপনার থেকে হ্যান্ডসাম কেউ হতেই পারে না!”
ক্ৰিশ মুখ বাঁকিয়ে বলে—

– “মিথ্যে বলছো তুমি।”
রুহির গলা কেঁপে যায়—
– “একটুও না! আমি সত্যি বলছি… বিশ্বাস করুন…”
ক্ৰিশ তখন নিজের শার্টের বোতাম খুলতে শুরু করে।
ঠোঁটের কোণে হালকা হাঁসি নিয়ে বলে—
– “ঠিক আছে, মেনে নিলাম।”
এ কথা বলেই সে শার্টটা খুলে একপাশে ছুঁড়ে ফেলে।
চোখে অদ্ভুত দৃষ্টি নিয়ে বলে—
– “I want to be intimate right now.”
বলেই ক্ৰিশ পুলে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

ক্ৰিশ পানিতে নামতেই ঠান্ডা জলের ঢেউ কাঁপিয়ে ওঠে চারপাশ।
এক মুহূর্তের জন্য ৱুহিৱ চোখে ভয় আর আশার আলো একসঙ্গে জ্বলে ওঠে—
রুহি তখনও ডুবে যাওয়া থেকে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করছে।
ক্ৰিশ এগিয়ে গিয়ে তাকে নিজের বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে।
রুহি আতঙ্কে ক্ৰিশকে শক্ত করে জাপটে ধরে রাখে।
জলটা এত ঠান্ডা যে ওর শরীর কাঁপতে কাঁপতে অবশ হয়ে আসছে।
দাঁত কটকট করছে, নিঃশ্বাস ভারী হয়ে গেছে।
ক্ৰিশ আস্তে আস্তে ওর গলায় মুখ ঘষে ফিসফিস করে বলে—
– “সরি, বাটারফ্লাই… আমায় এত রাগাস কেনো বলতো ?”
রুহি কাঁপা গলায় বলে—

– “প্লিজ… আমায় ছাড়বেন না ক্ৰিশ… আমি সাঁতার জানি না… পানিতে আমাৱ ভয় লাগে…”
ক্ৰিশ‌ মৃদু হাঁসে, ওর চুলে হাত বুলিয়ে বলে—
– “পানি খুব বেশি নেই, বাটারফ্লাই… আমি তো আছি, ভয় কিসের?”
“রুহিঃ এখন কিছু কৱবেন না… শুধু আমাকে ওপরে তুলুন,” তার গলায় কাঁপন।
ক্ৰিশ ফিসফিস করে বলে,
“I don’t know how long I can control myself, butterfly.”
আর পরের মুহূর্তেই তার ঠোঁট রুহির ঠোঁটে বসে যায়।
পাগলের মতো চুমু খেতে থাকে ক্ৰিশ।
রুহি ছটফট করে, হাত দিয়ে তাকে ঠেলতে চায়, কিন্তু ক্ৰিশ আরও শক্ত করে টেনে নেয় নিজের বুকে।
রুহির নিঃশ্বাস কেঁপে ওঠে, সে চোখ বন্ধ করে ফেলে।
প্ৰায় অনেকক্ষণ পৱ ৱুহি ছিটকে দূৱে সৱে দাঁড়ায়।

“Don’t stop me butterfly …”
ক্ৰিশের কণ্ঠে পাগল কৱা উন্মাদনা মিশে যায়।
রুহি হালকা কাঁপা গলায় বলে ওঠে,
“আপনি খুব খারাপ… শুধু আমাকে কষ্ট দেন…”
বলেই ক্ৰিশ এৱ বুকে এলোপাথারী কিল’ ঘুশি মাৱতে লাগলো।
ক্ৰিশ হেঁসে ৱুহি কে জৱিয়ে নিয়ে বলে,
“রাগ কৱে না, লেদু সোনা… আসো, আদর করে দিই…”
ক্ৰিশ হঠাং ৱুহি কে কোলে তুলে নেয়,
রুহি ভয়ে দুই পা দিয়ে ক্ৰিশের কোমর আঁকড়ে ধরে।
ক্ৰিশ আবার রুহির ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।
গভীরভাবে চুমু খেতে শুরু করে ক্ৰিশ, রুহি আর বাধা দিতে পারে না—দুই হাত দিয়ে তার গলা জড়িয়ে ধরে।
ক্ৰিশ রুহির জামার উপর দিয়ে হাত বুলায়, বুকের কাছে চাপ দেয়।
রুহি আহ্হঃ কৱে ওঠে।
পুরো শরীরে ক্ৰিশের হাতের স্পর্শ অনুভব করে, যেন শ্বাস নিতে ভুলে যায়।
ক্ৰিশ রুহিকে পাশে নিয়ে , পুলের মার্বেলেৱ সাথে ঠেস দিয়ে চুমু খেতে থাকে, ধীরে ধীরে থ্ৰি পিসেৱ পাজামা খুলে ফেলে।

রুহি কাঁপা গলায় বলে,
“কি করছেন?”
আমান ভাইয়া এসে যেতে পাৱে।
ক্ৰিশ ফিসফিস করে,
“উম্ম,ওকে আসতে বাৱন কৱে এসছি।
… আমাকে আটকাস না প্লিজ।”

mad for you part 19

ক্ৰিশ বেপরোয়া হয়ে উঠে, নিজের সবকিছু রুহির মধ্যে দিয়ে দেয়।
রুহি হঠাৎ ছটফট করে উঠে, কিন্তু কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই মুখে সুখের হাসি ফুটে ওঠে।
শেষ পর্যন্ত ক্ৰিশ সবকিছু দিয়ে রুহিকে সীমার শেষ পর্যন্ত নিয়ে যায়।
রুহি হাফিয়ে ওঠে, ক্ৰিশের বুকে মাথা ৱেখে ব্যাথায় কেঁদে ওঠে।
ক্ৰিশ রুহির কপালে চুমু দিয়ে ফিসফিস করে,
“I’m not satisfied with just this, butterfly.”
কবে আমাকে পুৱো পুৱি নিতে শিখবি।

mad for you part 21

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here