আমার ক্রাশ পর্ব ১০ || valobashar Golpo

আমার ক্রাশ পর্ব ১০
Tanisha Sultana (Writer)

খুব সকালে মনার ফোনে সায়ানের ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ঘুম কন্ঠে সায়ান বলে
“হুম জান বলো
” তুমি এখুনি আমার বাসায় চলে আসো
“কিন্তু কেনো?
” প্লিজ জান আসো
“মনা এখন কি করে যাবো
” আমি কিছু শুনতে চায় না
“কোনো কি পবলেম হইছে
” নাহহ
“তাহলে
” আসবা ব্যাছ
“ওকে আসতেছি
সায়ান উঠে ফ্রেশ হতে যায়। তুলি সোফায় ঘুমিয়েছিলো। মনার ফোনের শব্দে তুলিরও ঘুম ভাঙে যায়।
” ওহহহ তো এবার সায়ান মনার কাছে যাবে। গুডডড। যাও সোনা গার্লফ্রেন্ডের বাড়ি থেকে ঘুরে এসো। আর আমি তোমাকে উগান্ডা থেকে ঘুরিয়ে আনবো। কুকুরের লেজ সোফা হবে আর ইতিহাসের পাতায় আমার নাম লেখা থাকবে। উফফফ
কি আনন্দ আকাশে বাতাসে
তুলি সয়তানির হাসি দেয়।
সায়ান রেডি হয়ে বের হয়ে দেখে তুলি সোফায় পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছে। সায়ান আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে
“আমি এখন বেরবো
তুলি একটু নরেচরে বসে। সায়ান পার্স নিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে বলে
” আসছি
এ্যাঁ এ্যাঁ?????

তুলি কান্না শুরু করে দেয়। সায়ান থেমে যায়। তুলির দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে
“সমস্যা কি?
তুলি কান্না থামায়
” আপনার ফোনটা একটু দেন
“কেনো?
” মায়ের সাথে কথা বলবো????
“ধরো
” ???
“এইতো কাঁদছিলে
” এখন হাসতেছি?
“পারোও তুমি
” হুমমম?
তুলি সায়ানের ফোনটা নিয়ে সায়ানের ফেসবুক পাসওয়ার্ড টা দেখে দিয়ে দেয়
“তুমি না মায়ের সাথে কথা বলবা
” কথা বলার জন্য আমার ফোন আছে যতসব
তুলি ভেংচি কেটে চলে যায়
“এই পাগলের মতিগতি কিছুই বুঝতে পারি না। কখন কি চলে এর মনে আল্লাহই জানে
সায়ানও চলে যায়।
তুলি সায়ানের আইডিটা নিজের ফোনে লগইন করে। তার একটা পোষ্ট দেয়।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

“একটা এড্রেস” এখানে সানি লিওন আসছে আজ সকাল দশটায়। আর তাকে ওয়েলকাম করবো আমি সায়ান মাহবুব ????
পোষ্ট টা করে তুলি আইডি ডিলিট করে দেয় তুলির ফোন থেকে
” কাজ হয়ে গেছে এবার আমিও যাই একটু মজা নিয়ে আসি? জামাই তুমি আজ বুঝবা তুলি কি চিজ?। তোমারে সানি লিওনের শহর ঘুরিয়ে দেখাইবো তোমার বউ
তুলি টপ জিন্স পড়ে। চুল গুলো উচু করে ঝুটি করে বাঁধে, ঠোঁটে কড়া লাল লিপস্টিক । জিসান আসে
“কি রে কই যাবি?
“সানি লিওনকে দেখতে
” কস কি?
“হ যাবি না কি
” চল দেখে আসি সানি বেবিকে। কিন্তু কোথায় আসবো?
“মনা খালাম্মার বাড়িতে?
” কস কি
“হ। এখন ক আমারে কেমন লাগতেছে
” সানাই মাহবুব ?
“হনুমান?
” হাছা কইলাম
“কথা কবি না
তুলি আর জিসান বেরিয়ে পরে।

সায়ান মনা যে হোটেলে থাকে সেখানে যায়। পরিবেশটা কেমন কেমন লাগছে। মনা আবার সায়ানকে ইমপ্রেস করার জন্য আরও ছোট জামা পরেছে। সায়ান দুবার কলিং বেল বাজায় মনা দরজা খুলে
“হেলো জান
সায়ান একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয়। সায়ান ভেতরে ঢুকে
“বাড়িতে কেউ নেই
” নাহহহ আমি আর তুমি আছি
“ওহহ
সায়ান সোফায় বসে। মনা সায়ানের গা ঘেসে বসে পরে
” আমাকে কেমন লাগছে
“তোমাকে তো সব সময় ই সুন্দর লাগে। তো এতো সকালে আসতে বললে
” তোমায় দেখতে ইচ্ছে করছিলো
সায়ানের ফোন বেজে ওঠে। সায়ান রিসিভ করে
“ভাই সানি লিওন কখন আসবে
” কিহহহহহ
“কখন আসবে। আমাকে একটু কথা বলিয়ে দিয়েন প্লিজ
সায়ান ফোন কেটে দেয়
” কি হয়েছে?
“কে যেনো ফোন করে বলছে সানি লিওন কখন আসবে
” কিহহহ
“মানুষ জন পাগল হইছে

আবার ফোন বেজে ওঠে। সায়ান রিসিভ করে সেম কথা। এভাবে ফোন বাজতেই থাকে। সায়ানের মাথাটা সেই লেভেলের গরম হয়ে গেছে। মনা রুম ডেট করার জন্য সায়ানকে ডেকছিলো। এখন নিজেই বিরক্ত হচ্ছে।
সায়ান ফোন ছুড়ে মারে। এবার মনার বাড়ির
কলিং বেল বাজে।
” এখন আবার কে এলো?
“দরজা খুলে তো দেখতে পারো কে এলো
” হুমমম যাচ্ছি
মনা বিরক্তি নিয়ে দরজা খুলে দেখে জিসান আর তুলি দাঁড়িয়ে আছে
“তোমরা এখানে?
” সায়ান মাহবুব আছে? ওনার সাথে দেখা করতে এসেছি আসলে সানি লিওন কে দেখার খুব শক আমার।
সায়ান এগিয়ে এসে বলে
“তুমি
তুলি এক দৌড়ে সায়ানের কাছে গিয়ে বলে

” সানি লিওন কোথায়? ওনার থেকে কতো টিপস নেওয়ার আছে আমার। আমার তো ইচ্ছে ওনার মতো হওয়ার। আপনার সাথে সানি আপুর এফেয়ার আছে আগে কইবেন না
সায়ান চুল টেনে নিজের রাগ কমানোর চেষ্টা করছে। নাহলে আবার তুলিকে চর মেরে দেবে। তুলি এবার মনার সামনে যায়
“ওহহহ মাই গড আপনি সানি বলতে আপনার প্রেমিকাকে বুঝিয়ে। তাহলে তো মেনশন করে দেওয়া উচিৎ ছিলো দেশী সানি লিওন। কোনো বেপার না এখনি এডিট করে মেনশন করে দেন। না পারলে আমি হেল্প করছি। তবে খালাম্মার মধ্যে একটা সানি সানি ভাব আছে।
” জাস্ট সাট আপ তুলি
সায়ান গর্জে উঠে বলে। মনা বিজয়ীর হাসি দেয়
“গলা নামিয়ে কথা বল ব্রো
” জিসান কুল ডাইন। উনি তো দুটো ওয়ার্ড ই পারে কোনো বেপার না। (মনাকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে করতে বলে) আর একটু ছোট জামা পাও নাই বোধহয়

“মানে
” তোমার ড্রেসটা আসাম। তোমাকে যা মানিয়েছে না জাস্ট ছোট সানি
সায়ান মাথায় হাত দিয়ে বলে
“সানি সানি বলে সবাই আমাকে পাগল করে দিলো। কে সানি আর কোথায় থাকে
তখন আবার আরেক সিন শুরু হয়।
” মনা জান আমি চলে এসেছি
জিসান সায়ান তুলি তিনজন দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে। তারপর দৌড়ে এসে মনাকে জড়িয়ে ধরে
“সো সরি বেবি তোমাকে না জানিয়ে চলে এলাম। খুব মিছ করছিলাম তো তাই চলে এলাম।
মনার মুখটা দেখার মতো। তুলি হো হো করে হেসে ওঠে। সায়ান বোঝার চেষ্টা করছে একচুয়েলি কি হচ্ছে
” ভাইয়া আপনি নিশ্চয় মনা খালাম্মা থুক্কু আপুর বফ
ছেলেটা একগাল হেসে বলে
“শুধু বফ না লাইফ পাটনার। আমার ভালোবাসা
সায়ানের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়।
” মনা তুমি
তুলি সায়ানকে থামিয়ে দেয়

“কংগ্রাচুলেশনস ভাইয়া এন্ড আপু। ভালো থাকবেন
তুলি সায়ানের হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়।
” আমাকে এখানে নিয়ে এলে কেনো?
“খালাম্মাকে ভালোবাসলে তার সুখে বাধা হয়ে দাঁড়াবেন না। জিসান চল
তুলি আর জিসান গাড়িতে বসে।
” কেউ চাইলে আমাদের সাথে যেতে পারে
জিসান বলে
সায়ান গাড়িতে উঠে বসে। সব কিছু মিলিয়ে সায়ানের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। জিসান ডাইভ করছে তুলি আর সায়ান পেছনে বসেছে
“জিসান একটা গান ধর তো
আমার গানের প্রতিটা সুরে তোমায় আমি খুঁজে যায়
তুমি ছাড়া শুন্য লাগে হৃদয়ের আঙিনায়
কার চোখে চোখ রেখে অভিমান বলে যাও
ভালোবাসি বলে আজ কার বুকেতে মাথা দাও
তোমায় কেনো পায় না খুঁজে আমার শহরটায়
কার শহরে আলো মাখো আধার দিয়ে আমায়
সায়ান জোরে গাড়ির কাঁচে ঘুরি মারে। জিসান তুলি ভয়ে চুপ হয়ে যায়
” আর একটা সাউন্ড হলে সব ভেঙে গুরিয়ে দেবো। মজা হচ্ছে খুব মজা হচ্ছে তাই না।

আমার ক্রাশ পর্ব ৯

সায়ানের চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছে। নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছে না। তুলি জিসান চুপ হয়ে যায়।
“এতোটা রেগে গেলেন কেনো? মনাকে অন্য একটা ছেলের সাথে দেখে না কি মনা আপনাকে ঠকিয়েছে এটা ভেবে? মনা আপনাকে কোনোদিনও ভালোবাসে নি। এটা আমি আগেও বলেছিলাম। আমাদের কপালে যেটা লিখা থাকবো সেটা হবেই। আমি আপনার ওপর ক্রাশ খেয়েছিলাম। ভালো লাগতো আপনাকে। কিন্তু আপনাকে ছাড়া বাঁচবো না এরকম কোনো আসক্তি ছিলো না। আমি মনকে আগে থেকেি চিনতাম জানতাম ও ফ্রট। মনা আমাকে চেলেন্জ দিয়েছিলো আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না। তাই এতো জোর জবরদস্তি করে বিয়ে করেছি। জাস্ট হারবো না বলে। আমি কখনো হারতে শিখিনি।

বুঝলেন মামু
আমি কিন্তু আপনাকে লাইক করি আর এখন ভালোও বাসি। তাও আবার মারাক্তক।
তবে হ্যাঁ আপনি আমাকে চর মেরেছিলেন এটা নিয়ে চমি ভীষণ রেগে আছি।
তুলি গাল ফুলিয়ে বসে থাকে

আমার ক্রাশ পর্ব ১১