আমার ক্রাশ পর্ব ৮ || Tanisha Sultana

আমার ক্রাশ পর্ব ৮
Tanisha Sultana (Writer)

তুলি সায়ানকে পানি এগিয়ে দেয়
“বেবি পানিটা খাও
” ততততুমমি
“জান তোতলাও কেনো? আমি তো এখনো কিছুই করলাম না
” কি করবা? সায়ান ভয়ার্তক ভঙ্গিতে প্রশ্ন করে। তুলি সায়ানের পেটের দিক থেকে হাত আস্তে আস্তে উপরে উঠাতে থাকে। তারপর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে
“তুমি জানো না আমি কি করবো?
সায়ান জীভ দিয়ে ঠোঁট ভেজায়। দরদর করে ঘামছে।
” প্লিজ হাত সরাও
“কেনো?
” সুরসুরি লাগে
“তাই না কি গো
মনা এতোখন এখানে ছিলো না। মনা তুলিকে পেছন থেকে দেখে চিনতে পারে নি
” হু আর ইউ? সায়ানের সাথে কি করছো?
তুলি পেছনে তাকায়। তুলিকে দেখে টাসকি খায়
তুলি মিষ্টি করে হেসে বলে
খালাম্মা আমি আপনার বফের বউ সুইট তুলি?
“এখানে কি করছো তুমি? ?

” জামাই রে নিতে আসছি। একা একা কি আর ভালো লাগে বলেন? আমি আবার জামাইরে ছাড়া বেশিখন থাকতে পারি না। জামাইও পারে না। এখানে বোধ হয় কেউ জোর করে আটকে রাখছে। তাই না জান
কি মেয়েরে বাবা। কিসব কথা বলছে। চারপাশে এতো লোকজন। এর কি কোনো লজ্জা বোধ নেই। পাগল করে দেবে আমাকে।
সায়ান বিরবির করে বলছে।
“সায়ান এসব কি? মনা রেগে বলে
” কিসব খালাম্মা? তুলি ভ্রু কুচকে বলে।
“আমি সায়ানের সাথে কথা বলছি।
” সায়ান এখন আমাকে দেখাই ব্যস্ত সো আমার সাথে কথা বলতে হবে
“ইডিয়েট
” এই ওয়ার্ড টা নিশ্চয় আমার ক্রাশ জামাইয়ের কাছ থেকে শিখেছেন?
“কি জামাই জামাই করো
” আমার জামাই আছে তাই জামাই জামাই করি তাতে তোমার কি?
“সায়ান এই মেয়েটাকে আমার জাস্ট সয্য হয় না
” জামাই এই খালাম্মা টাকে আমার জাস্ট সয্য হয় না
“বেয়াদব
” সেম টু ইউ
“ডিজগাস্টিং
মনা রেগেমেগে চলে যায়। তুলি সায়ানের হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে যায়।
??
” কেমন লাগছে আমাকে?
সায়ান দেয়ালের দিকে ফিরে বলে
“ভভালো
তুলি সায়ানকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলে
” ভালো করে দেখে বলেন
সায়ান একটু তাকিয়ে বলে
“নাইস

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

তুলি সায়ানকে বিছানায় বসিয়ে দেয় তারপর সায়ানের কোলে বসে পরে
” নাইস সুইট কিউট এগুলো সবাই বলে। আমি অন্য কিছু বলবেন
“কককি বলবো
” যার জন্য আপনি তোতলাচ্ছেন তাই বলবেন।
“…..
” বলেন
সায়ান ঢোক গিলে
“না বললে কিন্তু
তুলি সায়ানের দিকে মুখটা এগিয়ে নেয়
” হহহহহহহহহটটটটটটটটট
“সো সুইট। এবার না তুতলিয়ে বলুন
” পানি খাবো
“কিহহহহহ?
” পানি খামু
তুলি ঠুস করে কোল থেকে নেমে ঠাস করে পানি নিয়ে আসে।
“খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন
সায়ান এক ঢোকে পুরো পানিটা শেষ করে। তুলি বোতলটা রেখে আবার কোলে এসে বসে
” এবার বলুন
“কি বলবো?
” ভুলে গেলেন?
“হুমমম
” কোনো বেপার না আমি মনে করিয়ে দিচ্ছি। আমাকে কেমন লাগছে
“বললাম
” না তুতলিয়ে আবার
“হট
” ???
“???
” এমন করে তাকিও না হার্ট অ্যাটাক করবো
“করো
” আপনি কিন্তু বিধবা হবেন
“বেঁচে যাবো
” হুমম খালাম্মাকে বিয়ে করতে পারবেন
“হুমমমম
” এরকম স্বপ্ন দেখা বন্ধ করুন
“আমার স্বপ্ন তো পূরণ হবেই
” এতো কনফিডেন্স
“ভালোবাসি তো
“মনা আপনাকে ভালোবাসে না
” আমি তো বাসি
“আমিও বাসি। আমার ক্রাশরে প্রচুর ভালোবাসি
তুলি ঠাস করে একটা পাপ্পি দেয়
” কথায় কথায় গালি চুমা দেও কেন
“তুলার মতো নরম গাল থাকলে তো চুমু দিমুই
” ইডিয়েট
“লাভ ইউ
” হেট
তুলি সায়ানের ঠোঁটে আঙুল রাখে
“লাভ ইউ টু হবে
” হেট ইউ হবে

সায়ান তুলিকে কোল থেকে নামিয়ে বেরিয়ে যায়।
সকালে তুলি ঘুম থেকে উঠে দেখে সায়ান রুমে নেই। তুলি ফ্রেশ হয়ে হোটেলের বাইরে যায়। দেখে মনা কারো সাথে ফোনে কথা বলছে
” হেলো খালাম্মা
“পরে কথা বলছি
মনা ফোন কেটে দেয়।
” তুমি এখানে
“তো কোথায় যাবো?
” তুলি বড় বোনের মতো একটা এডভাইস দেই। আমাদের লাইফ থেকে সরে যাও
“ছোট বোনের মতো আমি একটা রিকোয়েস্ট করছি। আমাদের লাইফ থেকে চলে যাও
” মনা কখনো নিজের অধিকার ছাড়ে না। তাছাড়া সায়ান আমাকে অসম্ভব ভালোবাসে
“রিয়েলি
” সন্দেহ আছে
“টেস্ট হয়ে যাও
” ওকে
তুলি দুটো ছুরি আনে। একটা মনার হাতে দেয়। আর একটা তুলির হাতে
“ওই যে সায়ান আসছে। তুমিও ছুড়ি দিয়ে নিজেকে আঘাত করবে আমি করবো দেখি সায়ান কার কাছে আগে ছুটে আসে।
” আমার কাছেই আসবে
“দেখা যাক
” ওকে
দুজনেই চিৎকার দেয়। সায়ান দৌড়ে তুলির কাছে যায়। তুলির হাত থেকে রক্ত ঝড়ছে।
“পাগল তুমি? এভাবে হাত কাটলে কেনো?
তুলি বিশ্ব জয়ের হাসি দেয়। মনা চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে। আসলে মনা হাত কাটেই নি আর তুলি সত্যি সত্যি হাতে ছুড়ি বসিয়ে দিয়েছে। তুলি মনার কানে ফিসফিস করে বলে
” সায়ান আমার কাছে ছুটে এসেছে। আমি কখনো অভিনয় করি না। সত্যি ভালোবাসি সায়ানকে। যেমন সত্যি হাত কাটলাম। আর তুমি অভিনয় করো। ভালোবাসো না তার প্রুফ এখন দিলা। জয় কিন্তু ভালোবাসার ই হয়।

“কি বলছো ওর কানে কানে? তোমার হাত কেটে গেছে বুঝছো?
সায়ান বলে।
তুলি সায়ানের গালে হাত দিয়ে বলে
” হাত কেটে ছিলো কিন্তু ডুমি ছোঁয়াতে সেরে গেছে
“পাগল তুমি
” আপনারই বউ
“মনা মুখটা কালো করে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?
সায়ানের কথায় মনা একটু হকচকিয়ে যায়। মিথ্যে একটু হাসি দিয়ে বলে
” সায়ান তোমার সাথে কথা আছে
“তুলি রুমে চলে যাও। মনা চলো
সায়ান মনার হাত ধরে হাটা ধরে। মনা পেছনে তাকিয়ে তুলিকে চোখ মারে
” সায়ান আপনি খুব খারাপ। খুব খারাপ আপনি
তুলি কাঁদতে কাঁদতে রুমে চলে যায়।
কিছুখন পরে সায়ান আসে।
“তুমি এভাবে ফ্লোরে বসে আছো কেনো?
তুলি উঠে চোখের পানি মুছে সায়ানের সামনে দাঁড়ায়।
” তাহলে কি করবো? স্বামী অন্য মেয়ের সাথে ফুর্তি করতে গেছে সেই আনন্দে নাচবো? কয়ডা লাগে আপনার? এতো বাজে কেনো আপনি?
“আমি তোমাকে ইচ্ছে করে বিয়ে করি নি

” পেয়েছেন এই এক কথা। এই কথাটা বাদ রাখুন। আপনার মনা একটা ফর্ট খারাপ বেহায়য়া প্লেগার্ল একটা মেয়ে। কতো ছেলের সাথে রিলেশন আছে এটা ও নিজেও জানে না। তোমার টাকাপয়সার জন্য তোমার সাথে আছে
তুলির কথা শেষ হওয়ার আগেই সায়ান ঠাস করে তুলির গালে একটা চর মেরে দেয়। তুলি ছিটকে পরে যায়
“মনাকে নিয়ে আর একটাও বাজে কথা না
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সায়ান।
তুলির নাক দিয়ে রক্ত পরছে। রাগে হাত পা কাঁপছে তুলির। উঠে দাঁড়ানোর শক্তি নেই। তবুও কষ্ট মষ্ট করে উঠে দাঁড়ায়।
” ভেরি গুড সায়ান মাহবুব ভেরি গুড।
“তুলি আমি
তুলি ঝাড়ি মেরে বলে
” একদম সিমপেথি দেখাতে আসবেন না। একটু ভালোবাসি বলেই তো এতো অবহেলা তাই না। ঠিক আছে মুক্ত করে দিলাম
রুমে থেকে বেরিয়ে যায় তুলি। সায়ান দেয়ালে ঘুসি মারে
” এটা কি করলাম আমি? এখন না জানি তুলি কি করে বসে
তুলি জিসানের রুমে নক করে জিসান দরজা খুলে দেয়।
“তুলি কি হয়েছে তোর?
তুলি কাঁদতে কাঁদতে রুমে ঢুকে।
” আমি বাড়ি যাবে
“হুমম যাবি কিন্তু তোর এই অবস্থা কেনো?
জিসান তুলিকে বসায়। পানি দেয়। তুলি খায় না। হাত থেকে রক্ত ঝড়ছে। নাক থেকে রক্ত পরছে।
“বল আমায় কি হইছে
” সায়ান আমাকে মারছে
“কিহহহহহ
তুলি খুলে বললো।
” খুব খারাপ করছে সায়ান।
“আমি বাড়ি যাবো
” ব্যবস্থা করছি

আমার ক্রাশ পর্ব ৭

সায়ান পুরো হোটেল তন্নতন্ন করে খুঁজছে। কোথাও তুলিকে পাচ্ছে না। পাগল পাগল অবস্থা সায়ানের। কোথায় খুঁজবো তোমায়? এতোটুকু সময়ের মতো কোথায় গেলো? জিসানও রুমে নেই। এই মেয়েটা সত্যি আমাকে পাগল করে দেবে।
সায়ানের ফোনে ফোন আসে
“হেলো
” আমরা বাংলাদেশ ফিরে যাচ্ছি।
“জিসান
জিসান ফোন কেটে দেয়। সায়ান স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে।

” আমি খুব খারাপ করছি তুলির সাথে। এটা করা একদম ঠিক হয় নাই। বাংলাদেশ গিয়ে হ্মমা চেয়ে নেবো।
পুরো রাস্তা তুলি কান্না করছে। জ্বরে গা পুরে যাচ্ছে। জিসান এক হাতে তুলিকে জড়িয়ে ধরেছে।
তুলি তুলিদের বাড়িতে যায়। নক করে তুলির মা দরজা খুলে দেয়
“তুলি তোর এই অবস্থা কেনো? কি হয়েছে
জিসান তুলিকে ধরে রেখেছে।
” আন্টি হেল্প করো
মা আর জিসান মিলে তুলিকে রুমে নিয়ে আসে।

আমার ক্রাশ পর্ব ৯