আমার ক্রাশ পর্ব ১৮ || Romantic Golpo

আমার ক্রাশ পর্ব ১৮
Tanisha Sultana (Writer)

অনেক খন হলো জিসান আসছে না। তুলি জিসানকে ফোন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন হুরমুরিয়ে সায়ান গাড়িতে ওঠে। তুলি সায়ানকে দেখা মাএই নেমে যেতে নেয় সায়ান হাত ধরে
“গাড়ি থেকে নামলে তোমার কি হাল করবো তুমি নিজেও যানো না।
সায়ান হাত ছেড়ে দেয়। তুলি শান্ত ভাবে বসে। সায়ান মুচকি হেসে গাড়ি স্টার্ট দেয়।
তুলি গাড়ির কাঁচের দিকে তাকিয়ে আছে। কেনো জানি খুব কান্না পাচ্ছে। গালে এখনো ব্যথা করছে। কিন্তু সায়ানকে চোখের পানি দেখাতে চায় না তুলি। হতে পারে পাগল দুষ্টু কিন্তু নিলজ্জ আর ছোটলোক না। ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকাচ্ছে।
সায়ান তুলির হাতের ওপর হাত রাখে। তুলি সরিয়ে নেয়
” তুলি কেনো এমন করছো? আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি।
তুলি হো হো করে হেসে ওঠে। সায়ান ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। ভালোবাসি বলাতে এতো হাসির কি হলো সায়ান বুঝতে পারছে।
“হাসির কি হলো??
তুলি হাসি থামিয়ে গম্ভীর হয়ে বলে

” ভালোবাসি শব্দটা বলতে টাকা লাগে না তাই যাকে তাকেই বলা যায় তাই না মিস্টার সায়ান মাহবুব। এই তো কদিন আগে মনাকে ভীষণ ভালোবাসু বলতেন এখন আবার তুলি। পবলেম কি আপনার? কয়টা লাগে আপনার? মানে তুলিকেও চায় আবার মনাকেও চায়। তাই না।
“তুলি মনাকে ভালোবাসতাম আর তোমাকে এখন ভালোবাসি
” তাহলে ফিউচারে নতুন কেউ আসলে তাকেও ভালোবাসবেন
“সব সময় উল্টো মানে বের করো কেন?
” ভালোবাসার মানেই বুঝেন না আপনি। আমি উল্টো মানে বের করছি না। আপনি তো একটা ছেড়ে আর একটার সাথে মানিয়ে নিতে পারেন ভালোবাসলে পারতেন না।
“আমি মনাকে সত্যি ভালোবাসতাম। কিন্তু তুমি আমার লাইফে আসার পর সব গন্ডগোল হয়ে গেলো। মনার জায়গাটা তুমি নিয়ে গেলে
” এখন আবার অন্য কেউ আসলে আমার জায়গাটা নিতে পারবে
“সত্যি ইডিয়েট তুমি

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

” হুম আমি ইডিয়েট কিন্তু আপনার মতো চার পাঁচটা মনের অধিকারী না
“আমার একটাই মন
” একটা মন হলে মনাকে আর আমাকে দিলেন কি করে?
সায়ান এবার কি বলবে বুঝতে পারছে না
“মন দিয়ে ভালোবাসার চেষ্টা করুন। ভালোবাসার মানে না বুঝুন তারপর ভালোবাসি বলে আমার সামনে আইসেন তার আগে না
সায়ান গাড়ি থামায়।
” আমি তোমাকে ভালোবাসি ব্যাস
“আমি বাসি কিন্তু আপনার কাছে ফিরবো না
” ফিরতে তোমাকে হবেই
“জোর খাটাবেন না
” অধিকার আছে
“ডিভোর্স দিলে তো আর থাকবে না
” আমাকে রাগীও না তুলি
“বাসায় পৌঁছে দিতে চাইলে দেন নয়ত আমি একাই যাচ্ছি
” এতো ত্যারা তো তুমি ছিলে না
সায়ান

সায়ান তুলি দুজনই বাইরে তাকিয়ে দেখে মনা দাঁড়িয়ে আছে। সায়ান গাড়ি থেকে নেমে মনার কাছে যায়। মনা হাউমাউ করে কেঁদে সায়ানকে জড়িয়ে ধরে। তুলি গাড়ি থেকে নেমে চলে একটা অটোতে উঠে।
এবার আর তুলি কান্না আটকাতে পারলো না। কেঁদেই দিলো
“আপনি কখনো বদলাবেন না সায়ান। এতো বাজে কেনো আপনি? যখনি ভাবি সব ঠিক করে নেবো তখনই আপনি মনার কাছে ছুটে যান। আই হেট ইউ সায়ান। আর কখনো ফিরবো না আপনার কাছে কখনো না।
ভাড়া মিটিয়ে তুলি বাড়ি যায়। আদর দরজা খুলে। যদিও তুলি চোখ মুখ মুছে একটু স্বাভাবিক হয়ে হাসার চেষ্টা করে বাড়িতে ঢুকে। যাতে কেউ কিছু বুঝতে না পারে। তারপরও আদর বুঝে যায়।
” বোন কি হয়েছে তোর?
আদরের প্রশ্নে তুলি হকচকিয়ে যায়। আমতা আমতা করে বলে
“কই কিছু না তো?
আদর হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে বলে
” তাহলে তোর গালে থাপ্পড়ের দাগ কেনো?
তুলি গালে হাত দিয়ে একটু হাসার চেষ্টা করে বলে
“কিছু না

” ভাইয়ের কাছ থেকে লুকাচ্ছিস
“সত্যি দাভাই তেমন কিছু না। সিরিয়াস কিছু হলে তো তোমাকে আমি বলতামই তাই না
” বিশ্বাস করবো আমি?
“চেঞ্জ করবো
” এখন তো ওই বাড়ি থেকে লোক আসবে তুই চেঞ্জ করবি কেন
“বোরিং লাগছে
তুলি রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।
” সরি দাভাই মিথ্যা বললাম। সত্যি বললে তোমার আর সায়ানের ঝগড়া হবে যেটা আমি চায় না।
তুলি চেঞ্জ করে বেলকনিতে বসে কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনছে।
“তুই তো বন্ধু মানুষ ভালা না”
বাড়ির সবাইকে ডাকতে না করেছে তুলি। বলেছে আমি এখন ঘুমাবো। আসলে তুলি সবার থেকে নিজেকে আড়াল করছে। তুলির মুড অফ দেখলে বাবা মা ভাই ওদের খারাপ লাগবে। তুলি চায় না ওর জন্য ওর ভাইয়ের বিয়ের কোনো হ্মতি হোক।

হঠাৎ কেউ তুলির কান থেকে হেডফোন টান দিয়ে নিয়ে যায়। তুলি হকচকিয়ে তার দিকে তাকায়। দেখে সায়ান। তুলি সায়ানকে দেখে অনেকটা অবাক হয়। কারণ দরজা বন্ধ ও এখানে আসলো কি করে? সায়ান হেডফোন গলায় পেচিয়ে বেডে বসতে বসতে বলে
“আমি এখানে কি করে এলাম এটাই ভাবছো?
তুলি মাথা নারায়। মানে হ্যাঁ
” তোমার জানালা দিয়ে ঢুকেছি
তুলি কিছু বলে না। আবার বেলকনিতে যেতে নেয় সায়ান হাত টান দিয়ে কোলে বসিয়ে দেয়।
“আমাকে না বলে চলে আসলে কেনো?
তুলি কোল থেকে নামার চেষ্টা করছে। সায়ান শক্ত করে জড়িয়ে ধরে
” ছুঁটে দেখাও
তুলি শান্ত হয়ে যায়।
“পারলে না তো
“…….
” আমি না ছাড়া পর্যন্ত তুমি আমার কাছ থেকে যেতে পারবে না। তাহলে চেষ্টা কেনো করছো?
“……..
” কথা বন্ধ হয়ে গেলো না কি?

“প্লিজ এমন করো না তুলি। আই নিড ইউ
তুলি আবার মোচড়ামুচড়ি শুরু করে। সায়ানকে চড় থাপ্পড় মারতে থাকে। নামার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছে।
” সাপের মতো করছো কেন?
সায়ান তুলির ঠোঁটে কিস করে। তুলি শান্ত হয়ে যায়। সাথে চোখ বড়বড় করে ফেলে

” এক মিনিট কিস করলাম। তোমার থেকে বেশি। অবশ্য আরও করতে পারতাম কিন্তু বউ তো রাগ করেছে তাই ছেড়ে দিলাম
তুলি উঠে বেলকনিতে চলে যায়। সায়ানের বেশ রাগ লাগছে। এতো এটিটিউট কিসের ওর। এতো করে সরি বলা হচ্ছে তারপরও মন গলছে না।
সায়ান গিয়ে তুলির পাশে বসে।
“কি করতে হবে বলো?
” আমি মুক্তি চায়। সাগরের পারে ঘড় বাঁধার স্বপ্ন আমার শেষ। এবার একটু শান্তি চায়
সায়ান তুলির চুল মুঠ করে ধরে
“এসেছিলি কেনো আমার জীবনে? এখন আবার এতো মেলোড্রামা করছিস কেন? তোর পেছনে ঘুরছি বলে বেশি উড়ছিস তাই না। হাত পা বেধে নিয়ে যাবো তোকে।
তুলির চুলে টান লাগছে ব্যাথা করছে। তবুও কিছু বলছে না। মনের ব্যাথার কাছে শরীরের ব্যাথা কিছুই না। তুলির চোখ থেকে পানি পরছে।
সায়ান চুল ছেড়ে দেয়। তুলিকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে
” আমাকে একটু একা থাকতে দিবেন প্লিজ

আমার ক্রাশ পর্ব ১৭

তুলি কান্না মাখা কন্ঠে বলে। সায়ান তুলিকে ছেড়ে হনহনিয়ে চলে যায়।
“আপনি কখনো আমার মন বুঝেনই নাই সায়ান। #আমার ক্রাশ কখনো আমাকে তার মনেই জায়গা দিতে পারলো না। আমি আপনার মোহ হয়ে গেছি যা কিছু দিন পরেই কেটে যাবে। কিন্তু আমি আপনার ভালোবাসা হতে চায় মোহ না। আপনার ভালোবাসা তো মনা। আমি অনেক দুরে চলে যাবো?
সায়ান বাড়ি ফিরে ভাংচুর শুরু করে দিছে। দরজা বন্ধ করে ভাংচুর করছে। কিছুতেই রাগ কমছে না। তুলি ইগনোর করছে। কিন্তু কেনো? এতো কিসের জেদ ওর। ভুল করেছে হ্মমা চেয়েছে। ঝামেলা মিটে গেছে। এখন এসব কিছুর কি প্রয়োজন।

সায়ান এসব ভাবছে। অবশেষে মদ অর্ডার করে সায়ান। কখনো মদ খাই নি সায়ান তবে আর খাবে। কেনো না আজ খুব কষ্ট হচ্ছে।
” আমি খারাপ হলে তার জন্য দায়ী তুমি তুলি। তোমার জন্য সব হচ্ছে। সব তোমার জন্য হচ্ছে। থাকো তুমি তোমার এটিটিউট নিয়ে। আর ফেরাতে যাবো না তোমায়। ভালো থাকো। আমিও ভালো থাকবো।

আমার ক্রাশ পর্ব ১৯