flesh part 23+24
Papilion skyscraper
হঠাৎ ওয়াটসনের ফোনে কল বাজলো,
“হ্যালো ওয়াটসন,উইলহেম আমেরিকায় আসার জন্যে সুইজারল্যান্ড থেকে ফ্লাইটে চড়েছে।”
তারপর খবর পেয়েই -ওয়াটসন এখন উইলহেমের বাসায় বসে আছে।
উইলহেম আর ওয়াটসন মুখোমুখি বসে আছে।
– “আচ্ছা,ওয়াটসন,তুমি আমার নতুন বাসা চিনলে কিভাবে?”
-“যেভাবে আপনি এন্ড্রিউকে মারার জন্যে তার বাসা চিনেছেন,সেভাবেই।”
ওয়াটসনের কথা শুনে আমি হেসে দিলাম।
– “কিন্তু ওয়াটসন তুমি এখানে কেন এসেছো?”
– “অনেক দিন দেখা হয় না,তাই এসেছি”
আমি হাসলাম, “ওয়াটসন সিনেমায় অভিনয় করছো নাকি?”
– “জ্বি,আপনার সাথে পরিচয় হবার পর থেকেই”,
এই বলে ওয়াটসন বসা থাকা থেকে দাঁড়িয়ে চলে যাচ্ছে…..।
আমি তাকিয়ে তাকিয়ে ওয়াটসনের চলে যাওয়া দেখছিলাম…।
ওয়াটসন জানে আমার সাথে এখানে ঝামেলা করে কোনো কিছুই হবে না,কারণ আমার নামে সব অভিযোগ তুলে নেয়া হয়েছে,তাছাড়া আমি স্বনামধন্য একজন ব্যক্তি,অভিযোগ ছাড়া ওয়াটসন কোনো ভাবে কিছু করতে পারবে না।
এরপর বক্স থেকে এন্ড্রিউ এর মাংস গুলো বের করে ল্যাবে নিয়ে রাখলাম।
অনেক দিন ল্যাবে কাজ করা হয়নি, উইলহেমের হাতে উইলহেমের সৃষ্টি। মাং’স গুলো একটা মিশ্রণ করা মেশিনে দিয়ে ময়দার ডো এর মতো বানিয়ে রাখলাম।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আমি বিলাসিতা জীবনযাপন করি না,আমেরিকা সহ কয়েকটা দেশে আমার ছোট ছোট ডুপ্লেক্স বাড়ি আছে।
নিরাপত্তা বলতে, বাড়ি দেখা-শোনা করতে কয়েকজন কর্মচারী মাত্র।
আমি একাই চলাফেরা করি,মাঝে মাঝে নিজেই রান্না করে খাই।
মূলত আমার কর্মের নিরাপত্তার স্বার্থেই এভাবে চলাফেরা করি।
ক্ষুধা লেগে যাওয়ায়,ভাবলাম আজ নিজেই নিজের ডিনার তৈরি করবো।
কিচেনে খাবারের কিছুই পেলাম না। বাসা থেকে নেমে- নিচে এসে দেখি আশে পাশে সব শপ বন্ধ।
হঠাৎ মনে হলো,পাশেই কোথাও গবাদি পশুর ফার্ম আছে।
পেয়েও গেলাম,গেইটে সিকিউরিটি গার্ড বসে আছে।
বললাম,আমাকে একটা পশু সেখান থেকে দিতে,বেশ কিছু অর্থও দিতে চাইলাম কিন্তু লোকটা
মুখের ওপর না বলে দিলো,যদিও আমি চাইলে – এমন ফার্ম পুরোটাই আমাকে দিয়ে দেয়া হবে।
কিন্তু এভাবে রাতে একা একা পরিচয়হীনভাবে কিছু করার অন্যরকম অনুভূতি আছে।
কিন্তু আমার এখন খেতে মন চাইছে,এখনি লাগবে আমার।
লোকটা আমাকে চিনতে পারছে না,তাই হয়তো এভাবে ‘না’ বলে দিচ্ছে।
যাই হোক, সেখান থেকে একটা ছাগল বের করে নিয়ে আসা আমার জন্যে আহামরি কিছুই না।
একটু পর লোকটা নিজেই একটা সুন্দর মোটা তাজা ছাগল আমাকে দিয়ে দিলো।
ওর হাতে কিছু অর্থ ধরিয়ে দিয়ে চলে এলাম।
আমার বাসার লোক জনেরা দেখে অবাক।
যদিও ওরা সবাই আমার ইউনিভার্সিটি গুলোর শিক্ষার্থী, বলতে গেলে এরা সবাই আমার স্বভাবের।
আমি আমার আশে পাশে কোনো অচেনা লোক রাখি না।
মানুষের মাং’স খাও’য়ার মতো-
উন্মাদ তরুণরাই আমার নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত।
এরপর ছা’গলটা নিয়ে সোজা ওপরে চলে এলাম।
তারপর কা’টাকা’টি করে মাংস গুলো প্রস্তুত করলাম, রান্না শেষ হয়ে গেলো।
খেতে বসেছি, খাবার টেবিলে খেয়াল করে দেখি একটা চিঠি, হাতে নিয়ে পড়তেই হেসে দিলাম ,
“রান্নায় দুধের পরিমাণ বেশি হয়ে গিয়েছে” –
খাবারের ঘ্রাণে উপাদানের পরিমাণ শেইফ এলিসের চেয়ে ভালো আর কে বলতে পারে।
ড্রয়িং রুমে এসে দেখি এলিস বসে আছে।
আমি এলিসকে জড়িয়ে ধরলাম।
অনেকদিন পর দেখা। ওয়াটসনের পালটে যাওয়ার বিষয়টি এলিস জানতে পেরেছে।
কিন্তু অদ্ভুত হলেও সত্যি ওয়াটসন -এলিসকে কোনো
প্রশাসনিক চাপও দেয়নি। যেন ওয়াটসন সব জেনেও না জানার ভান করে আছে।
এলিস আমার দিকে তাকিয়ে বললো, “কাল
আমেরিকান প্রেসিডেন্ট আলবার্ট এর মেয়ের বিয়ে৷
যতদূর শুনেছি তার মেয়ের বিয়েতে বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্ট সহ ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশান প্রধান কর্মকর্তারাও আসবে।
আমি সেখানে প্রধান শেইফ হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছি।।”
একটু হেসে এলিসের দিকে একটা খাম এগিয়ে দিলাম। এলিস খাম খুলে অবাক, আমিও এই বিয়েতে আমন্ত্রণ পেয়েছি।
এলিস আমার দিকে তাকিয়ে আছে,আমি পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরালাম,তারপর এলিসের দিকে তাকিয়ে বললাম, “উইলহেমরা সবকিছুতেই থাকে।”
এরপর সেখান থেকে উঠে হেটে চলে এলাম,রুমে এসেই ঘুমিয়ে পড়লাম,সকাল হতেই প্রেসিডেন্ট আলবার্ট এর কল,
“সবাই আসার আগেই যেন আমি পৌছে যাই।”
কড়া নিরাপত্তা, নিরাপত্তা কর্মীরা আমাকে দেখে হাসলো,আমিও তাদের দিকে তাকিয়ে হাসলাম।
আলবার্ট আমাকে দেখে হেটে এদিকেই আসছে,
” উইলহেম যেভাবে চেয়েছো,সেভাবেই সব আছে।”
আমি ভেতরে প্রবেশ করতেই এলিস সম্ভোধন জানালো।
একটু পর সবাই আসতে লাগলো,
সাথে – ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ইনভেস্টিগেট ব্যুরো চিফ অফিসার রাদান এবং আমেরিকান চিফ জাস্টিস ড. চার্লসও এসেছেন।
তারা সবাই সবার সাথে হাসা হাসি করছিলো,সবাই সবাইকে একসাথে পেয়ে যেন প্রচুর উল্লাসে কাটাচ্ছে।
এক হাতে ড্রিংক্স,অন্য হাত পকেটে ঢুকিয়ে হাসতে হাসতে – মাঝে মাঝে পেছনে দিকে মেরুদন্ড ঝুকিয়ে দিয়ে- একসাথে গোল হয়ে কয়েজন দল বেধে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছে।
হঠাৎ আমি প্রবেশ করতেই অনেকের হাত থেকে গ্লাস পড়ে গেলো। ভয় নাকি অপ্রত্যাশিত ঘটনার প্রেক্ষিতেই একটা হৈচৈ পড়ে গিয়েছে বুঝতে পারছি না,তবে এটা সত্যি, এখানে কেউ ভয় পাওয়ার মতো লোক না।
কেউ কেউ আমাকে দেখে দৌড়ে এসে বুকে জড়িয়ে নিচ্ছে।
কয়েকজন তাড়াতাড়ি প্রেসিডেন্ট আলবার্ট এর কাছে গেলেন, “আলবার্ট, উইলহেম এখানে কিভাবে?”
আলবার্ট হেসেই বললো, সেও আমার বন্ধু। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে তো এখন আর কোনো অভিযোগ নেই।”-
আলবার্ট আর কথা বাড়াতে দিলেন না।
আমি একটু হেটে বাহিরের দিকে গেলাম।
এরপর প্রায় ৩ ঘন্টা চলে যায়।
খাওয়া দাওয়া শেষ।।
সবাই চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
হঠাৎ হট্টগোল শুরু হয়ে যায়।
মুখে মুখে ঘটনা রটাতে থাকে।।
ব্যুরো অফিসার রাদান এবং চিফ জাস্টিস চার্লস দুজনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
আমি ড্রয়িং রুমে বসে বসে ড্রিংক্স করছিলাম।।আমার দিকে সন্দেহ করার প্রশ্নই আসে না,প্রশ্ন আসলেও উত্তর না পেয়ে ফিরে যেতে হবে।
এরপর পুরোপুরি নিশ্চিত করা হলো,তারা দুজন নিখোঁজ।
পুরো আমেরিকায় হুল্লোড়।
গোয়েন্দা বিভাগ, সহ অন্যান্য প্রশাসনের সব সিনিয়র অফিসাররা এসেছে।
কোথাও কোনো সুত্র মিলছে না।
সিসি ফুটেজ দেখা হলো।
তারা দুজনেই বাসায় এসেছে,বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছে। বেশ কয়েকবার ওয়াশ রুমেও গিয়েছিলো।
হঠাৎ ৩ ঘন্টা আগের একটা ফুটেজে দেখা যায়
তারা একসাথে বাড়ির অন্য আরেকটি গেইট দিয়ে বের হয়ে চলে যায়।
একটি স্বাভাবিক উচ্চতা থেকে সিসি ফুটেজ দেখে পোশাক এবং চেহারার শেইপ দেখে এতটুকুই আপাতত আন্দাজ করা গিয়েছে।
এছাড়া বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে –
মোড়ে সিসি ফুটেজেও তাদের দেখা গিয়েছে,কাছেই সমুদ্রের সি বিচ,
সি বিচের আগে চার রাস্তার মোড়ের ক্যামেরা থেকে অনুমান করা যায় তারা সি বিচের দিকেই গিয়েছে।
অতএব,আলবার্ট এর বাসায় আসা মেহমানদের কারোর হাত নেই তাদের দুজনের নিখোঁজ হবার বিষয়ে। তদন্ত চলমান রেখে,প্রেসিডেন্ট আলবার্ট এর বাড়ির সবাইকে চলে যেতে দেয়া হয়।
সবশেষে নিরাপত্তা কর্মীদের খেতে দেয়া হয়।
কর্মীরা খাচ্ছে,বুঝতে পারছি ওদের ক্ষুধা যেন কয়েক বছরের। নয়তো এভাবে কেউ খায় নাকি!
আমি আবার একটা সিগারেট ধরালাম,
আসলে সিগারেটের আগুন দিয়ে সম্ভবত অনুভুতির কেনা বেচা করা যায়,তাই সব কাজের শেষে আমার সিগারেট ধরাতেই হয়।
যদি কেমিক্যাল দিয়ে সিগারেট বানানো যেত,তাহলে হয়তো আমার সিগারেট এর ফ্যাক্টরিও থাকতো।।
অফিসার রাদানও লম্বা সময় সিগারেট টানে।
ওয়াশ রুমে গিয়েও টানে।
তখন ওয়াশরুমে অফিসার রাদান সিগারেট খেতেই গিয়েছিলো,কিন্তু আর ফেরেনি।
নিরাপত্তা কর্মীর কেউ একজন তাকে সেখানেই মে*রে ফেলে।
এরপর রাদানের লা*শ সোজা কিচেন রুমে এলিসের কাছে।
রাদানের পুরো দেহ থেকে হাড় আর মাংস আলাদা করা হলো,মেরুদণ্ডটি আমিই নিবো,এলিস কে বলা আছে।
আর মাংস? সেটা আজ নিরাপত্তা কর্মীদের খাবার হবে।
আর চার্লস?
লোকটা বিশ্রামের জন্যে গেস্ট রুমে ছিলো।
আর সেই রুমেই আমার কোনো এক কর্মী চার্লসকে শেষ করে দেয়।
রুম থেকে খানিকটা দূরে এক সিসি ক্যামেরায় চার্লসকে রুমে আসতে দেখা যায়, আবার বের হতেও দেখা যায়।
তাই রুমের মধ্যে কিছু হয়েছে কিনা বোঝার কোনো উপায় নেই।
চার্লসের দেহ রুমের ভেতরেই কা*টাকা*টি করে ব্যাগে ঢুকিয়ে শেইফ এলিসের কিচেনে পাঠানো হয়েছিলো।
“আমরা যেমন,ঠিক তেমন মানুষের সাথেই দেখা হবে,এটিই চুড়ান্ত।”
প্রেসিডেন্ট আলবার্ট এর ব্যক্তিগত কর্মী এরা।এদেরকে আমিই পাঠিয়েছি আলবার্ট এর নিরাপত্তার জন্যে।
যাই হোক, সবশেষে প্রেসিডেন্ট আলবার্ট এবং নিরাপত্তা কর্মীরা একসাথে ডিনার করতে বসেছে।
সবাই খাচ্ছে….।
হঠাৎ একজন কর্মীর গলায় খাবার আটকে যায়।
ছটফট করতে করতে মুহূর্তেই এখানে মারা গেলো।
সবাই অবাক হয়ে গেলাম।
এরপর এম্বুলেন্স এসে লোকটিকে নিয়ে গেলো।
নিজের একজন কর্মীকে এভাবে হারিয়ে আমার একটু খারাপই লাগছিলো।
আলবার্ট আমার থেকে বয়সে বড় হলেও,আমার ভালো একজন বন্ধু।
আলবার্ট এর মানুষের মাংস খাওয়ার শুরুটা আমার অজানা থাকলেও,
শেইফ এলিসের মাধ্যমেই আলবার্ট এর এই উন্মাদনা চলে আসছে বহুদিন ধরেই।
আলবার্ট প্রেসিডেন্ট হবার আগে থেকেই আমার সাথে তার ভালো বন্ধুত্ব।
অফিসার রাদান এবং জাস্টিস চার্লস নিখোঁজ হওয়া নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। সি বিচ থেকে উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা কোনো ভাবেই মিলছে না।
আমেরিকার উচ্চ পদস্থ গোয়েন্দা বিভাগকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।।
এরপর প্রায় দশ দিন কেটে যায়-
আমি আজ নিজের প্রতিমূর্তি বানানো শুরু করবো।
আমার প্রচণ্ড অপছন্দের মানুষ গুলোর অংশবিশেষ দিয়ে এই মূর্তি আমি বানাবো।
পিজ্জা বা রুটি বানাতে যেমন ময়দার ডো বানাতে হয় আগে,মাটির পুতুল বানাতে যেমন মাটির ডো বানাতে হয় আগে,তেমনি মাংসের ডো বানাতে হয়ছে সুন্দর প্রলেপের জন্যে।
চার্লস এর মাথার খুলিটাই বাছাই করেছি৷
এরপর একটু একটু করে মাংস এটে দিয়ে মাথার অংশটা বানিয়ে ফেলছি।
হঠাৎ আমার ফোনে কল বাজছিলো,এলিসের কল,
” হ্যালো,উইলহেম,সেদিন আলবার্ট এর বাড়িতে যে নিরাপত্তা কর্মী খেতে বসে মা*রা গিয়েছিলো,পোস্টমর্টেমে তার পেটে মানুষের মাংস পাওয়া গিয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা আমাকে ডেকেছে।”
আমি শুনে কিছুটা হোচট খেলাম।
পেছন থেকে কেউ একজন বললো, “অফিসার রাদান এর নিখোঁজ হওয়ার পেছনে আপনার হাত নেই তো?”
বুঝতে বাকি নেই,ওয়াটসন কথা বলছে।
ওয়াটসন আবার আমাকে বলতে লাগলো, ” পুরো গল্পটা শুনতেই আমি এসেছি।”
– “কিসের গল্প ওয়াটসন?”
– “এইযে চার্লস এবং রাদান এর মাংস রান্নার গল্প,কারণ আপনার কর্মীরা আপনার মতো বুদ্ধিমান না,তারা ভুল করে বসে আছে।
চার্লস যে পোশাক পড়ে বিশ্রামের জন্যে তার রুমে ঢুকেছিলো,চার্লস রুম থেকে বের হওয়ার পর থেকেই তার পোশাক কেমন ঢিলে হয়ে গিয়েছিলো। ”
চমকে উঠলাম আমি-
ওয়াটসনের পর্যবেক্ষণের প্রশংসা করতেই হবে।
– “ওয়াটসন তুমি তো জানোই আমি কেমিস্ট এক্সপার্ট, এত এত পুতুলের চেহারা বানাতে পেরেছি,আর সামান্য রাদান এবং চার্লস এর মুখোশ বানাতে পারবো না, এটা হয় নাকি।”
“রাদানকে ওয়াশরুমেই মা*রা হয়েছিলো,তারপর আমার কর্মী সিলিকন কেমিক্যালে বানানো রাদানের চেহারার কপি মুখোশ পড়ে বের হয়েছিলো।
তাই সিসি ফুটেজে সবাই রাদানকেই দেখেছে,
একই ভাবে, চার্লস এর সিলিকন মুখোশ পড়েছিলো আমার কর্মী।
ব্যাস,কেউ ধরতেই পারেনি।
এরপর কর্মীরা সিসি ফুটেজে চেহারা দেখিয়ে দেখিয়ে সি বিচে চলে যায়।
সেখানে গিয়ে মুখোশ পুড়িয়ে চলে আসে।”
” ওয়াটসন তোমার এই বুদ্ধি আমার সাথে থাকতে থাকতেই হয়েছে,হা হা হা,কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় তুমি কিছুই প্রমাণ করতে পারবে না।
কারণ খেতে গিয়ে যে কর্মী মা’রা গিয়েছিলো,তাকে তো মানুষের মাং’স খে’তে দেয়াই হয়নি,পেটে পাবে কিভাবে?”
নিজের ব্যক্তিগত ধারণা দিয়ে উইলহেমের সাথে পাল্লা দেয়াটা উচিৎ হবে?
নাহ,ওয়াটসন তুমি বোকাই থেকে গেলে,তুমি পূরো গল্পটা জানতে না,তাই আমিই জানালাম।”
ওয়াটসন হতাশ হয়ে অনেক আক্ষেপ নিয়েই বের হয়ে চলে গেলো।
একটুপর বাহির থেকে একজন কর্মী আমার রুমের বাইরে থেকে আমাকে ডাকলো,
” স্যার, কেউ একজন আপনাকে এই পার্সেল টা দিয়েছে, বলেছে আপনার দুপুরের খাবার।”
আমি পার্সেল খুলে দেখি, এক বক্স রান্না করা মাংস।
বুঝতে বাকি নেই,এটা মানুষেরই মাংস।
আমার কু*কুরকে খেতে দিলাম,কু*কুর খেলো।
খাবার বিশুদ্ধ,কোনো সমস্যা নেই। ”
কে দিতে পারে ভাবছিলাম,
বক্স থেকে মাংস প্লেটে নিতেই দেখি,বক্সের নিচে লেখা,আপনার প্রিয়জনের মাংস, খেতে কেমন জানাবেন। আরেকটা ছোট প্যাকেট খুলে দেখি,কাটা আঙুল, আঙুলে একটা রিং, বুঝতে বাকি নেই,এটা এলিসের আঙুল।
আমার শরীর শিউরে উঠলো।
কেউ এক জন এলিসের মাংস রান্না করে পাঠিয়েছে।
ফিলা বসে আছে,কোনো ঝর্ণার পাড়ে।
পূর্ণিমার আলোয় চারপাশ জেগে উঠেছে।
ফিলা সব সময় পূর্ণিমার আলোর রঙের চেয়ে নিজের গায়ের রঙকে বেশি সুন্দর মনে করতো।
সাধারণত মানুষের গায়ে রঙ হলদে সাদা হয়ে থাকে,নয়তো ফ্যাকাশে সাদা।
কিন্তু ফিলার গায়ের রঙ অনেকটা নীলচে সাদা ছিলো।
অদ্ভুত এই সুন্দর গায়ের রঙ ফিলা জন্মসুত্রেই পেয়েছে। যেন সৃষ্টি কর্তা কিছুই কমতি রাখেনি।
ফিলা একবার এক খরগোশকে -গাজরের ক্ষেতে গাজর খেতে দেখে। কয়েকদিন পর দেখে সেই জমিতে গাজর নেই,খরগোশ গুলো জমির এক পাশে ক্ষুধায় ঝিমাচ্ছিলো,পরে ফিলা নিকট বাজার থেকে প্রতিদিন গাজর কিনে জমিতে রেখে আসতো।
কিছুদিন ফিলা লোক দিয়ে সেই জমিতে গাজর চাষ করালো,খরগোশ গুলো যেন খেতে পারে।
প্রায় বিকেলে দেখা যায়,খুরগোশ গুলো চার/পাঁচটা বাচ্চা নিয়ে পুরো জমিতে দৌড়াদৌড়ি করছে।
এত কোমল মনের মেয়ে ফিলা-
যেন রুক্ষতার তীব্রতায় পৌছে গিয়েছে।
ফিলা প্রায় রাতে এক ঘুম দিয়ে হঠাৎ জেগে যেত-
যে হাতে কোনো ময়লা পড়লো না তো!
কোনো ময়লা পেলেই- আবার হাত মুখ ধুয়ে ঘুমাতে যেতো।
ফিলার রুমে ধুলো-বালির কোনো বালাই ছিলো না। পুরো রুম কাচের দেয়ালের ছিলো।
বিশেষ ফিলার রুমের ছাদ।
ফিলাদের বাড়ি দ্বিতল বিশিষ্ট ছিলো।
দ্বিতীয় তলায় ফিলার রুম ছিলো,
রাতের চাঁদের আলো মুছে দেয়া ঝাপসা কুয়াশা,
আর দুপুরের তীক্ষ্ণ রোদকে আটকে দেয়া বৃষ্টির ফোঁটা –
কাচের প্রাচীর দিয়ে বানানো ছাদের ওপর – টুপ টুপ করতে পড়লেও সে পানি ফিলার গায়ে লাগতো না।
এই সুন্দর দৃশ্য বিছানায় শুয়ে শুয়ে উইলহেমের সাথে দেখার শখ ফিলার অনেকবার হয়েছিলো হয়তো!
ফিলার চুল তার নিজের অনেক বেশি পছন্দের ছিলো। কিছুক্ষণ আগেই ফিলা নিজের চুল ব্লেড দিয়ে চেছে ফেলে দিয়েছে।
ফিলা কান্না করছিলো,ফুসিয়ে ফুসিয়ে কান্না করছিলো।
একা থাকলে মানুষ তার অতীতের আনন্দ দায়ক কাজ বা ঘটনা গুলোকে অতিমাত্রায় মনে করতে থাকে!
চুল ছাড়া কাউকে রমণী বলা ই যায় না,
কিন্তু চুল ছাড়াই ফিলার চেহারা যেন আরো
বেশি সুন্দর হয়ে ফুটে উঠেছে।
যেন মনে হচ্ছে সুন্দর এক দেহে- আকাশ থেকে গোল চাঁদটাকে ধরে এনে- ফিলার গলার ওপর বসিয়ে দেয়া হয়েছে।
ফিলার চোখের বাঁকানো দুই ধার প্রান্তের সীমানা-দেখলে মনে হবে যেন কাঠের নৌকার সাজানো আকৃতি।
কেউ ফিলার চোখে ভাসতে আসলেই –
প্রেমের ঢেউয়ে তার মায়ার সমুদ্র ফিলার জন্যে উতলে উঠবেই।
ফিলা যেন একই মুদ্রার দুটো পিঠ,কখনো রুক্ষ আবার কখনো কোমল।
কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত হয়ে ফিলা এখানে বসে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পড়েছে।
সকালে উঠেই ফিলা সোজা এয়ারপোর্টে, থাইল্যান্ড এর উদ্দ্যেশ্যে ফ্লাইটে উঠেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যবসায়ী দ্বে-ই হিউন,
যিনি উইলহেমের সহকারী।
ওয়াটসনকে তিনিই উইলহেমের কাছে পাঠিয়েছিলেন।
দ্বে-ই হিউন থাইল্যান্ডে ঘুরতে এসেছেন।
ফিলা এখানে একটি আবাসিক হোটেলে সেবিকা হিসেবে নিয়োগ নিয়েছেন,কারন এখানে দ্বে-ই হিউন প্রায় আসে সময় কাটাতে।
গতকাল দ্বে-ই হিউন এসেছে। রাত গভীর হতেই ফিলা দ্বে-ই হিউন এর রুমে আসে।
হিউন শুয়ে আছে। ফিলা মেসেজ অয়েল নিয়ে হিউন এর পাশে বসলো, হিউন চোখ বুঝে ছিলো।
ফিলা হিউন এর পোশাক খুলে হিউন এর পা থেকে মাথা পর্যন্ত মেসেজ করে দিচ্ছে অয়েল দিয়ে।
এরপর ফিলা হিউন এর পুরুষা’ঙ্গ এক হাত দিয়ে ধরে অন্য হাত দিয়ে পুরুষাঙ্গে*র
ছিদ্রের ওপর অয়েল ঢালছিলো।
হিউন জিজ্ঞেস করতেই ফিলা বললো,”আদর করছি।”
কিছুক্ষণ এভাবে চলার পর,ফিলা হঠাৎ ব্লেড বের করেই হিউন এর পুরুষা’ঙ্গ গোড়া থেকে কে’টে ফেললো।
হিউন ধড়ফড়িয়ে উঠে চিৎকার।
ফিলা বিছানা থেকে নেমে পাশে দাঁড়িয়ে হাসছে।
এরপর ফিলা নিজের পোশাক খুলে ফেললো।
অদ্ভুত ভয়ংকর দেখতে ফিলার সেই নগ্ন রুপ।
হিউন উঠে আসতে চাইলো,কিন্তু হিউন নড়তে চড়তে
পারছিলো না।
ফিলা অয়েলের সাথে একধরণের রাসায়নিক বিষ মিশিয়ে দিয়েছিলো। হিউন বিছানা থেকে আর উঠতেই পারেনি।
ফিলা হাসছে চিৎকার করে হাসছে।
অন্যদিকে হঠাৎ মাঝ রাতে ঘুম থেকে উইলহেম ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে, “এলিসকে কে মারতে পারে!”
ওয়াটসন ছাড়া এলিসের এই রুপ কেউ জানার কথাই না।।
ফোনটা হাতে নিয়ে ওয়াটসনকে দেখা করতে বললাম।
প্রায় মাঝরাতে শহরের নিকটতম এক শেষ প্রান্তে উচু একটা পাহাড়ের চুড়ায় আমি ওয়াটসন দাঁড়িয়ে আছি।
– “ওয়াটসন, এলিসকে এভাবে মা*রার কারণ?”
ওয়াটসন চুপ করে আছে,
আমি একটু আশ্চার্য হলাম, ওয়াটসন আমাকে বলতে লাগলো, “এলিসকে আমি সব সময় পছন্দ করতাম,কিন্তু যেদিন জানতে পারলাম,এলিসের মানুষের মাং’সের প্রতি মোহ আছে, সেদিন থেকে এলিসকে আমি আর আমার কাছের কেউ ভাবতেই পারিনি।”
“অনেক বার এলিসকে মে*রে ফেলার প্লান হয়েছিলো,কিন্তু এলিসের কাছে আসলেই,সেটা আমি করতে পারিনি।
এলিসকে কখনো বলাই হয়নি,সে আমার পছন্দের কেউ। ওর পথ আমার থেকে অনেক দূরে।”
– “তাহলে এলিসকে কে মেরেছে?”
আমি ওয়াটসনের দিকে তাকালাম, “সাও-জুন কিছু করেনি তো?”
ওয়াটসন হাসছে, “উইলহেম তোমার মনে আছে? কোনো এক বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে-
তুমি বিয়ের কনে কে- বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলে, সেদিন তুমি জানতে না যে কার হবু স্ত্রীকে তুমি বিয়ের আসর থেকে তুলে নিয়েছিলে।”
– “অফিসার সাও-জুন এর বিয়ে ছিলো সেদিন?”
– “হ্যা,সেদিন অফিসার সাও-জুন এর বিয়ে ছিলো,আর তুমি তার হবু স্ত্রীকে উঠিয়ে নিয়েছিলেন,সাও-জুন ব্যক্তিগত রাগ থেকেই তোমার ধ্বংসের উদ্দ্যেশ্যে তোমার পেছনে লেগে আছে।”
হঠাৎ কেউ একজন আমার মাথায় রিভলবার ধরেছে,
ওয়াটসন সামনে দাঁড়িয়ে আছে,আমি পেছনে না ঘুরেও বুঝতে পারছিলাম,পেছনে সাও-জুন দাড়িয়ে আছে।
সাও-জুন পেছন থেকে বলছে, “উইলহেম শেষ বারের মতো পুরো দুনিয়া একবার দেখে নাও।”
আমি হাসছিলাম, “কি অদ্ভুত যোজন বিয়োজন চলছে পৃথিবীতে। ”
হঠাৎ বিকট গুলি ছোড়ার শব্দ।।
অন্ধকারে শব্দ শুনতেই ওয়াটসন চোখ বুজে ফেললো।
উইলহেম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে!
অন্ধকার আর নি:শব্দের মাঝে একটা যোগসুত্র আছে, এরা একে অন্যের কাছাকাছি বা একে অন্যের মধ্যেই বাস করে।
আর এই যোগ সুত্রের পাশ কাটিয়ে গুলির ভয়ংকর আওয়াজ খানিকের জন্যে হলেও এখনকার পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে।
ওয়াটসন চোখ বুঝে ভেবেছিলো -উইলহেম মাটিতে পড়ে আছে।
চোখ খুলতেই দেখে উইলহেম দাঁড়িয়েই আছে,
ওয়াটসন চমকে যায়,তাহলে সাও-জুন পড়ে আছে?
নাহ! সাও-জুন ও উইলহেম এর পেছনে দাঁড়িয়ে আছে, এরপর ওয়াটসন নিচে তাকিয়ে দেখে,সাও-জুন এর রিভলবার নিচে পড়ে আছে,সাও-জুন এর হাতে কেউ গুলি করেছে।
ওয়াটসন ডান দিকে তাকাতে হোচট খায়,
নাজিম শেইখ এখানে কি করছে?
তার মানে নাজিম শেইখ সাও-জুন এর হাতে গুলি করেছে।
ওয়াটসন তাড়াতাড়ি রিভলবার হাতে নিয়ে নাজিম শেইখের দিকে তাক করলো।
সাও-জুন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,নাজিম শেইখ এখানে কি করে এলো।
নাজিম শেইখ হাসছে, “দেখেছো,উইলহেম,আমি বলেছিলাম না? আমি তোমার জন্যে আমেরিকায় আসছি,এবার মিললো তো?”
নাজিমকে দেখে আমি নিজেও অবাক, সে এখানে কিভাবে,
আমি নাজিমের দিকে তাকিয়ে আছি,
– ” তোমার আমেরিকার আসার খবর তোমার শত্রুদের কাছে পৌছাতে পারলে,তোমার বন্ধুদের কাছেও পৌছে যায় উইলহেম।”
“সাও-জুন তোমার জন্যে আবার আমেরিকায় এসেছে,এখানেও এসে গিয়েছে আমি তো আর চুপ করে বসে থাকতে পারি না বলো”
আমি হাসছিলাম, এরপর সাও-জুন এর অন্য হাতে রিভলভারটা তুলে দিয়ে আমি নাজিমের গাড়িতে বসলাম……..।
থাইল্যান্ডের কোনো এক ঘণ জঙ্গলের মাঝ দিয়ে দাপট নিয়ে বয়ে চলা রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে তিনি যাচ্ছিলেন,
হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করে থামালেন,রাস্তার ওপরে দুটো হরিণ দুর্ঘটনাজনিত কারনে পড়ে আছে।।
একটি হরিণ ম*রেই গিয়েছে,অন্যটি পাশে পা ভেঙ্গে বসে আছে।
লোকটি গাড়ি থেকে নেমে,ম*রে যাওয়া হরিণের একটা পা কে*টে বেচে যাওয়া হরিণের পায়ে লাগিয়ে দিলেন। লোকটার হাতেই যেন দক্ষতার যাদু।
যেন ইশ্বর প্রাপ্ত অস্বাভাবিক জ্ঞানী চিকিৎসাবিদ তিনি।
মানব দেহের সব কিছুই যেন তার মুখস্থ।।
প্রাণ দেয়া-নেয়া ছাড়া যেন সব কিছুই তিনি পারেন।
একবার তলোয়ার যুদ্ধ প্রশিক্ষণ এক কেন্দ্রে- ভুলবশত এক ছেলের গলায় তলোয়ারের আঘাতে গলার দুই-তৃতীয়াংশ ভাগের বেশি কে*টে যায়।
তিনি এমন অবস্থাতেও ছেলেটিকে বাচিয়ে তুলেছিলেন নিজের দক্ষতা দিয়ে।
মাংস বা অঙ্গের সংযোজন, সংস্থাপন,প্রতিস্থাপন, বিয়োজন সব কিছুতেই লোকটির অসীম ক্ষমতা।
তার অপারেশন কেবিন থেকে কোনো দিনও কোনো রোগী মৃত বের হয়নি।
এক ক্রিমিনালের মাথায় গুলি লেগে ভেতরে মস্তিষ্কের কিছু অংশ থেতলে যায়, লোকটি সেই ক্রিমিনালকেও বাচিয়ে তুলেছিলো।
flesh part 21+22
হয়তো এই জন্যেই তিনি সব সময় বলেন “যদিও দ্বিতীয়ও ইশ্বর বলে কিছু নেই,এবং আমি ইশ্বরের ছায়া।”
থাইল্যান্ডের কোনো এক সমুদ্রের বিচে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখছিলেন তিনি,
একই বিচে পাশেই-একটু দূরে উদাস মনে ফিলা দাঁড়িয়ে ছিলো….।
ক্ষ্যান্তহীন অবাধ ক্লান্তি চলাকালীন সময়ে-
মাঝে মাঝে কেউ একজন চলে আসে,
আর তাতেই যেন-
অব্যক্ত নিরাশ যুক্তি গুলোর পথ চলা –
থেমে গিয়ে নতুন উল্লাসের হাসি ফুটে উঠে!