Love Triangle part 17

Love Triangle part 17
তাসনিয়া রহমান স্নিগ্ধা

চোখমুখে হঠাৎ প্রবল পানির ঝাপটায় লাগলো।চোখ খুলতে ও কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এই ঠান্ডার মধ্যে পানি! আস্তে আস্তে চোখ খুললাম। ঝাপসা সব। দুহাতে চোখ মুছবার চেষ্টা করে বুঝলাম হাত আটকে আসছে। আমাকে চোখ খুলতে দেখে কেউ একজন চোখ মুছে দিল।
‘ দেখে যাও, আহির জ্ঞান ফিরেছে!’
চাপা উত্তেজনা মিশ্রিত গলা। চোখের সামনে সবকিছুই ক্লিয়ার এখন। মায়ের গলা ছিল। আমি চারপাশে চোখ বুলিয়ে নিতে আমার পাশেই মা’কে বসে থাকতে দেখলাম।উঠে বসতে চাইলাম।মা থামিয়ে দিলো।

‘ উঠতে হবে না। শুয়ে থাক এখন।’
তারপরও জোর করায় আমাকে পিছনে বালিশ দিয়ে আধশোয়া করে বসিয়ে দিলো মা। আমার রুমে ই শুয়ে আছি। আমার বেডে। মাথাটা এত ভার ভার লাগছে! মায়ের ডাক শুনে একে একে আরিফিন ভাইয়া,বাবা আর নানু ঘরে ঢুকলো। আমি ওদের দিকে তাকালাম।নানু আমার পাশে এসে বসলেন। আলতোভাবে মাথায় ডান হাত রেখে বললেন,
‘ এখন কেমন লাগছে আহি?একটু ঠিক লাগছে?’
আমি মাথা নাড়লাম।হাতে স্যালাইন লাগানো।নানু ফের বললেন,
‘ এভাবে হুট করে পরে গেলি।আমরা সবাই কি পরিমাণ ভয় পেয়েছিলাম জানিস? ফাইয়াজ সাথে সাথে চেক করে ইনজেকশন দিলো। স্যালাইন এনে লাগালো। পাক্কা দুই ঘন্টা পর তোর জ্ঞান ফিরেছে।’

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আমি চুপ করে রইলাম। বাড়ির পরিবেশ এত শান্ত? ক্যাপ্টেন সাহেব রা কি চলে গেছে? জিজ্ঞেস করতেও সাহস হচ্ছে না। আরিফিন ভাইয়া আমার বেডের পাশে ই দাঁড়ানো।সে নানু আর সবাইকে তাড়া দিলো,
‘ তোমরা একটু যাবে এখন? আহি কে রেস্ট করতে দাও।তার শরীর দুর্বল এখন।বাকি কথা পরে বললেও চলবে।’
নানু তাড়া পেয়ে একবার আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে উঠে চলে গেলেন। নানুর সাথে বাবা-মা ও বেরিয়ে গেল। আরিফিন ভাইয়া গেল না।ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো।সবাই চলে গেলে কিছুক্ষণ পর আস্তে আস্তে আমার হাতের কাছে বেডে বসলো। আমি তাকেই দেখছি। কেন জানি না এই মুহূর্তে আমার আরিফিন ভাইয়া কে অকারণেই সহ্য হচ্ছে না।এই মুহূর্তে আমি ক্যাপ্টেন সাহেব কে এখানে আশা করেছিলাম। আরিফিন ভাইয়া কে দেখে আশা ভঙ্গ হলো।তার দিকে তাকিয়ে রইলাম আমি।

আরিফিন ভাইয়া আমার পাশে চুপ করে বসে আছে।তার চোখের দৃষ্টি ফ্লোরের উপর।এক ধ্যানে তাকিয়ে আসে সেদিকে। চোখের পলক অব্দি পরছে না। অনেক্ষণ চুপ করে থাকার পর আরিফিন ভাইয়া সেদিকে তাকিয়েই বললো,
‘ তুমি তৌকির হাসান কে বিয়ে করতে রাজি হলে কেন?’
আমি ভাইয়ার থেকে দৃষ্টি নামিয়ে নিয়েছিলাম, প্রশ্ন শুনে ফের তাকালাম।ভাইয়ার গলার হালকা স্বর কাঁপছে। আমি কিছুক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে থেকেই বললাম,
‘ উনাকে পছন্দ হয়েছে তাই।’
আমার উত্তর টা ভাইয়া আশা করেনি হয়ত। আমার দিকে তৎক্ষণাৎ তাকালো।তখনই খেয়াল করলাম সেদিনের মত আজও ভাইয়ার চোখ লাল।মৃদু স্বরে বললো,

‘ কি বললে?’
আমি কিছু বললাম না। তাকিয়ে রইলাম। আমার থেকে আর রেসপন্স না পেয়ে আরিফিন ভাইয়া নিজেই বললো,
‘ তুমি তুমি ডিফেন্স লাইফস্টাইল সম্পর্কে কিছু জানো আহি? ওদের লাইফস্টাইল তোমার লাইফস্টাইল সম্পূর্ণ আলাদা।ওরা আলাদা একটা সমাজে বসবাস করে। কোয়ালিফিকেশন টাই মেইন ওদের কাছে।ওরা অফিসার আহি।এখন যতই দয়া দেখিয়ে,তোমার সম্মান বাঁচাতে বিয়ে করতে চায় এসব বলুক না কেন! কিছুদিন পর ওর ঘোর এমনিতেই কেটে যাবে যখন দেখবে তার বন্ধু জুনিয়র সবার বউ ওদের সমান তালে কোয়ালিফাইড কিন্তু তুমি না। দেখলে না ওর ফ্যামিলির বিহেভিয়ার?কি বলছিল ওরা?শুনো নি? তারপরও ওর প্রতি ভালো লাগা থাকে?এমন ও তো না যে সে শুধু তোমাকেই বিয়ে করতে চেয়েছে।সে রিমিকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছিল।রিমি পালিয়েছে দেখে নিজের সম্মান বাঁচাতে বিয়ে করতে চাচ্ছে এখন।মিহি আর মৌ এর সাথে দাদু বিয়ে দিতে চাইছিল কারণ ওরা তোমার মত আলাভোলা না। স্ট্রং পার্সোনালিটি আছে ওদের। ওদের সাথে ভুল কিছু করার আগে ওকে দশবার ভাবতে হবে। কিন্তু তুমি! তুমি তো এমন যে না ভেবেই তোমাকে বিপদে ফেলা যায়।’

ভাইয়া এই পর্যায়ে চুপ করে গেল। আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলাম এতক্ষণ ধরে। দৃষ্টি নামিয়ে নিলাম। কিছুক্ষণ সময় নিয়ে ভাইয়া আবার বললো,
‘ বিয়ে না জীবনের অনেক বড় একটা সিদ্ধান্ত আহি।হুট করে ভালো লাগলেই বিয়ে করব এরকমটা হয় না কখনো।আগে পিছে, বর্তমান ভবিষ্যৎ সবকিছু ভেবে এরপর আগাতে হয়। তুমি যার সাথে ভালো থাকবে ভাবছো তাকে বিয়ে করার থেকে,যে আদতে ই তোমাকে ভালো রাখবে তাকে বিয়ে করো না!’
শেষের কথায় ভাইয়ার গলার স্বরে অনুনয় ঝরে পড়লো। আমি ওর দিকে তাকালাম আবার। আমার এসব কিছু শুনতে ইচ্ছে করছে না। বিয়ে নিয়ে জ্ঞান আমি ওর থেকে শুনতে চাই না।ওর দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বললাম,
‘ কি বলতে চাচ্ছো তার সামারি করে দাও।এত লম্বা রচনা শুনলে আমি যাও একটু রিকোভার করছিলাম আবার জ্ঞান হারাব।’

ভাইয়া অপ্রস্তুত হয়ে গেল।চোখে পানি চলে এসেছে তার বলতে বলতে।চোখ বাম হাতের আঙ্গুলে মুছে নিলো। এরপর স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করে বললো,
‘ সামারি আর কিছু না। তুমি অসুস্থ হবার পর দাদু ওদের সবাইকে বিদেয় করেছে।এই অবস্থায় কোনো বিয়ে টিয়ে হবে না। বলে দিয়েছে তুমি সুস্থ হলে বিয়ের কথা ভাববে।সেটা কবে হয় হোক।অবশ্য তৌকির হাসান বলে গেছে সে রাতে আসবে তোমাকে দেখতে।তার নাকি হবু বউ আছে এই বাড়িতে!’
দাঁত কিড়মিড় করতে করতে বললো ভাইয়া। আমি বুঝতে পারলাম না ওর এত রাগ কেন ক্যাপ্টেন সাহেবের প্রতি!উনারা চলে গেলেন!রাতে আসবেন?এখন কটা বাজে?দুপুর না বিকেল?ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
‘ কয়টা বাজে এখন?’
‘ দুটো বাজছে।কেন?’

আমি মাথা নেড়ে না করলাম। কিছু না। আরিফিন ভাইয়া চুপচাপ বসে আছে।তার গায়ে পাতলা ফুল হাতা গেঞ্জি।ভাইয়া এমনিতেই ফর্সা।তার উপর কালো গেঞ্জি পরেছে। আমার বিরক্ত লাগছে ভাইয়া কে।মুখে চলে যেতেও বলতে পারছি না।আবার সহ্য ও করতে পারছি না। কোনোরকমে বললাম,
‘ এখন তুমি একটু যাবা?আমি ঘুমাবো।’
‘ এতক্ষণ অনেক ঘুমিয়েছো।এখন লাঞ্চ টাইম।আমি খাবার নিয়ে আসছি।খেয়ে রেস্ট করবা।আর হ্যা,বেশি বুঝার চেষ্টা করবে না একদম।যা বলেছি চুপচাপ শুনবে।’
শেষের কথাগুলো কেমন যেন অধিকার বোধ নিয়ে বললো। এরপর উঠে চলে গেল। আমি বিরক্ত হয়ে বসে রইলাম। আমার আসলেও ক্ষিদে পেয়েছে। স্যালাইন চলছে। এখন ও আমাকে ভারী কিছু খাওয়াতে তো পারবে না।খাওয়াবে টা কি?ইফাদ ভাইয়া আসলো না একটা বার।আমি তখন হ্যা বলেছিলাম বলে ভাইয়া কি আমার উপর রেগে আছে?ধুর! বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে বসে রইলাম।

সন্ধ্যা‌ পার হয়েছে।আমি আমার বেডে গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছি। কিছুক্ষণ আগেই স্যালাইন শেষ হয়েছে। খুলে নেওয়ার পর পর মা আমাকে শুইয়ে দিলো।গায়ের উপর এমনভাবে কম্বল মুড়ি দিলো বাইরে শুধু আমার মুখ আর মাথা খানি।পুতুলের মত চারদিকে টুক টুক করে দেখতে লাগলাম।দুই মিনিট পর আরিফিন ভাইয়া আমার রুমে ঢুকলো।তার ল্যাপটপ টা হাতে। আমি প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে তার দিকে তাকালাম।সে এক পলক আমার দিকে তাকিয়ে আবার আমার পাশে বসে ল্যাপটপে কি যেন করতে লাগলো। আমার বিরক্তিতে কোন হেলদোল নেই ওর।মানে এমন কেন ও?দুপুর থেকে এক সেকেন্ডের জন্য ও একা ছাড়ছে না।খাবার খাওয়ানো, খাওয়া পরবর্তী সময়ে ওর মোবাইল দিয়েছে কার্টুন দেখতে। আমি কার্টুন দেখেছি আর বসে ছিল জানালার পাশে।

সন্ধ্যা মিলাবার পর দুই মিনিটের জন্য গিয়ে আবার এসেছে। এখন আবার ল্যাপটপ বইয়ে এনেছে। এদিকে বাড়ির পরিবেশ অস্বাভাবিক রকমের শান্ত। কোনো হৈচৈ নেই,হাকডাক নেই। কাউকে এদিকে আসতেও দেখছি না। এমন কেন তা-ও কেউ বলছে না।খালা, তাদের বাচ্চা রা সব চলে গেছে কি-না কে জানে। কিছুই জানতে পারছি না।নানা কে একবারও আসতে দেখলাম না। ইফাদ ভাইয়া ও এলো না। শুধু সাথে এই সুপার গ্লু র মত আরিফিন ভাইয়া লেগে আছে। আমি সামনের দিকে তাকিয়ে রইলাম।ভাইয়া ল্যাপটপে একটা মুভি বের করলো। বাংলা মুভি।সাকিব খান বা এরকম কারোর হবে। আমাকে একটু উঠিয়ে শুতে বললো। এখন আমি নিরুপায়।উঠে শুইলাম। এরপর ভাইয়া আমার সামনে ল্যাপটপ রেখে মুভি প্লে করলো। আমি স্টার্টিং দেখে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে ভাইয়ার দিকে তাকালাম।মানে আমি অসুস্থ দেখে সে এখন আমাকে এইরকম অত্যাচার করবে? আমার রাগ দেখে ভাইয়া কোনোরকমে হাসি চেপে রেখে জিজ্ঞেস করলো,

‘ মুভিটা কিন্তু অনেক সুন্দর।’
‘ তোমার এই সুন্দর মুভি এখন তুমি বন্ধ করবা নাকি আমি তোমাকে খু/ন করবো?’
‘ এত রাগের কি আছে?ভিলেন গুলো হ্যান্ডসাম।দেখতে একদম তৌকির হাসানের মত।’
আমি ভ্রু কুঁচকে তাকালাম ওর দিকে।কম্বলের নিচ থেকে হাত বের করে মা/র দেওয়ার প্রিপারেশন নিতে দেখে ভাইয়া থেমে গেল।হাসতে হাসতে মুভি চেঞ্জ করলো। শাহরুখ খানের হ্যাপি নিউ ইয়ার মুভি বের করে প্লে করলো।নিচে সাবটাইটেল এড করা আছে।বের করে দিয়ে বললো,
‘ এটা দেখো। আমি একটু বাইরে যাচ্ছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবো।’
‘ প্লিজ তাড়াতাড়ি গিয়ে আমাকে উদ্ধার করো।’
‘ কি বললে?’
আমার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো ভাইয়া। আমি মাথা নেড়ে বললাম কিছু না। যাও।ভাইয়া ইশারায় আরেকবার দেখার কথা বলে রুম থেকে বের হয়ে গেল। যাওয়ার সময় দরজা আটকে দিয়ে গেল। আমি স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে রইলাম।

মুভি শেষ হলো আটটা পঞ্চান্ন তে।এই পুরো সময়টা একা একাই আমি।মা,নানু কেউই আসেনি আমার রুমে। এতক্ষণ মুভি চলেছে, সেজন্য কিছু টের না পেলেও এখন ভয় করতে লাগলো।আমি দোতলার সর্বশেষ রুমটায় এখন।মনে হচ্ছে কেউ দোতলায় নেই এখন। আমি একা।এটা মনে হতেই ভীষণভাবে ভয় করতে লাগলো। ল্যাপটপ চালাতে জানিনা তেমন একটা তাই ভাইয়ার টা ধরছি না। কোল থেকে সাইডে নামিয়ে রেখেছি শুধু।এটা ভাইয়ার অফিসিয়াল ল্যাপটপ।সব কাজ এটা দিয়েই করে। আমি ভয় নিয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে রইলাম।নেমে যাব এমন সাহস ও হচ্ছে না। অবচেতন মন কিসের ভয় পাচ্ছে আমার কে জানে! এমন সময় দরজায় টোকা পড়লো। আমি চমকে উঠলাম একরকম। কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম,

‘ কে কে এখানে?’
দরজা খুলে গেল।মুন আর ক্যাপ্টেন সাহেব দাঁড়িয়ে আছেন। আমি তাকিয়ে রইলাম ওদের দিকে।মুন প্রায় ছুটে এলো আমার কাছে।এসেই জড়িয়ে ধরলো। এরপর চুপ করে রইলো। আমাকে ছাড়লো না। ক্যাপ্টেন সাহেব আমাকে শুধোলেন,
‘ আসবো?’
আমি মাথা নেড়ে সম্মতি দিলাম।উনি রুমে ঢুকলেন। আমার পাশে বসলেন।চুপ করে বসে রইলেন। ল্যাপটপ আমার ডান পাশে।উনি বসেছেন বাম পাশে।রুমের চারদিকে দেখছেন।দেখতে দেখতে বললেন,
‘ এখন কিটা ঠিক আছো?’
‘ হু।’

‘ কি পরিমাণ ভয় পেয়েছিলাম আমি জানো?এত দুর্বল হলে কিভাবে?’
আমি দুহাতের নখ খুঁটতে খুঁটতে বললাম,
‘ এতকিছু সহ্য হচ্ছিল না আর।তার উপর খাইনি। সেজন্য ই হয়ত!’
ক্যাপ্টেন সাহেব আমার দিকে তাকালেন। এরপর জবাবদিহিতার সুরে বললেন,
‘ আমার ছুটি আর এক দিন।দশ দিনের ছুটি ছিল কিন্তু এমার্জেন্সি তে কালকের পরদিন ই ব্যাক করতে হবে। বিয়ে করতে ছুটি নিয়েছিলাম।বিয়ে টা কি করা হবে না?’
আমি উনার দিকে তাকালাম। আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি চোখ নামিয়ে ফেললাম।উনি ফের জিজ্ঞেস করলেন,

‘ তুমি কি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফেলেছো?’
আমি চুপ।উনি কথা বললেন না কিছুক্ষণ। আমি কিছুক্ষণ পর নিজে নিজেই বললাম,
‘ বিয়ের পর কি হবে? আপনি কি আমাকে মন থেকে মানতে পারবেন? নাকি শুধু আমাকে সাহায্য করার জন্য ই বিয়ে করছেন?’
ক্যাপ্টেন সাহেব আমার প্রশ্নে আমার দিকে তাকালেন।তার মধ্যে কোনো ভাবান্তর হলো না।যেন এই প্রশ্ন আমি করব জানতেন। বললেন,

‘ মানতে না পারলে তোমাকে বউ হিসেবে স্বীকৃতি দিবো কেন? ইউনিট,ফর্ম,ম্যারিড স্ট্যাটাস,কাকে বিয়ে করেছি সব জায়গাতেই তুমি আমার বউয়ের পরিচয়ে থাকবে।এটা কি শুধু শুধুই সাহায্য করা?আহি! আমার প্রফেশন টা অন্যরকম। বিয়ে যতটা সহজ ততটাই কঠিন। আমি চাইলেই তোমাকে অকারণে বিয়ে করতে পারব না। সংসার করার উদ্দেশ্যে ই বিয়ে করব। তুমি কি আমাকে নিয়ে সন্দিহান?’
আমি মাথা নাড়লাম। মিথ্যা বললাম। আমি উনাকে নিয়ে এখন কিছুটা সন্দিহান। আরিফিন ভাইয়ার কথাগুলো মাথাচাড়া দিচ্ছে। কোয়ালিফিকেশন!এখানে এসেই হোঁচট খাচ্ছে মস্তিষ্ক। আমি থেমে থেমে জিজ্ঞেস করলাম,
‘ আমার কোয়ালিফিকেশন ভালো না।এই বউ নিয়ে সমাজে চলতে পারবেন?’
ক্যাপ্টেন সাহেব কিছু বললেন না।উঠে দাঁড়ালেন। দাঁড়িয়ে বললেন,
‘ যদি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করো কালকে বিয়ের প্রিপারেশন নিয়ে রেখো।আমি যাওয়ার আগে বিয়ে করে যেতে চাচ্ছি।আর হ্যা, আরিফিনের থেকে দূরে থাকবে।ও সুবিধার না।’

Love Triangle part 16

ক্যাপ্টেন সাহেব বের হয়ে গেলেন রুম থেকে।শেষে কি বললেন মাথার উপর দিয়ে গেল আমার। সুবিধার হবে না কেন?মুন আমার পাশে শুয়ে পূর্বের মতই জড়িয়ে ধরে রেখেছে। আমি ওকে এক দিয়ে জড়িয়ে ধরে রইলাম।
আরিফিন ভাইয়া আর ক্যাপ্টেন সাহেব!দুজন দুজনকে পছন্দ করছেন না। কেন?মাথা ফাঁকা লাগছে আবারও।তখন আরিফিন ভাইয়া যেগুলো বললো সেগুলো এখন ভাবাচ্ছে আমাকে।আবার ক্যাপ্টেন সাহেব ও!দ্বিধায় পড়ে গেছি বিয়ে করব কি করব না।উনি তো আমাকে বিয়ে করেই ক্যান্টনমেন্টে ব্যাক করবেন।তখন আমি কি করবো?ওই বাড়িতে ই রেখে যাবেন আমি খুব ভুল না হলে। উনার বাবা-মা তো আমাকে পছন্দ ই করেন না।বিয়ের পর আমি ওদের সাথে থাকব কিভাবে?কথা শোনাবে।সহ্য করতে পারব?

Love Triangle part 18