love with a slap part 2

love with a slap part 2
আশু

অরশী সোজা স্কুটি নিয়ে একটা স্কুটির শো-রুমে চলে আসে। অরশী নিজের স্কুটির চাবি ঘোরাতে ঘোরাতে ভেতর গিয়ে বলে,,”আমার স্কুটিটা আপনাদের এখান থেকে একমাস হয় নিয়েছি, বিক্রি করে দেব। যা দাম দিয়ে নিয়েছি আশি পার্সেন্ট আমাকে দিয়ে ব্যাক করে নিতে পারবেন প্লিজ।”
ম্যানেজার বলে,,”ম্যাম এটা কি করে সম্ভব আমরা ফেরত নিই না”
অরশী এবার বলে,,”অন্তত সত্তর পার্সেন্ট তো দিন”

__এত সুন্দর মেয়েটার রিকোয়েস্ট ম্যানেজারও ফেলতে হিমসিম তবে শেষমেষ অরশী নিজের স্কুটি টা সেল দিয়েই ফেলে।
এরপর টাকা গুনতে গুনতে বেচারি রাস্তায় আসতেই ছিনতাইকারী একটানে টাকা নিয়ে দৌড়।
অরশী ছিনতাইকারী দিকে তাকিয়ে বলে,,”ওরে শালা মাত্র সেল দিলাম দু’পয়সা আমিই খেলাম না তুই কাক হয়ে কই থেকে আসলি?”
অরশী দৌড় লাগায় একটু সামনে হাতে একটা বেশ বড়সড় সাইজে পাথর তুলে নিয়ে এক ঢিল ছুড়ে। বেচারা ডাকাতের কপাল খারাপ ঢিলটা সোজা ঘাড় বরাবর লাগায় রাস্তায় হুড়মুড়িয়ে পরে।
এরপর অরশী ডাকাতটির কাছে গিয়ে নিজের পা ডাকাতটির পিঠে রেখে। টাকাগুলো তুলে গুণতে গুণতে বলে,,,”চুরি করাও শিখিসনি, বাড়ি থেকে পালিয়েছি টাকা নেই। শখের স্কুটি মাত্র বিক্রি করে বেরুলোম আর তুই শালা চন্ডীদাশ আমার টাকা নিয়ে পালাবি হাহ্”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

__তখনই অরশী খেয়াল করে সামনে থেকে কিছু গাড়ি আসছে, সেগুলো যে আশিসের গাড়ি তা বুঝতে অরশীর সময় লাগে না অরশী পালানোর সময় গাড়িগুলোকে দেখেছিলো।
__অরশীকে আর না থেমে সোজা সামনের একটি বাসে উঠে বসে। তারপর নিজের ব্যাগ থেকে কিছু মেকআপ বের করে নিজের চেহারার ধরনই পাল্টে ফেলে৷
__অরশীর যে ভয়ে ছিল তাই হয় বাসে লোকগুলো উঠে অরশীকে খুঁজতে শুরু করে। অরশী ভয়ে মাথায় বিশাল ঘোমটা টেনে ঘুমের ভান ধরে আছে। তবে লোকগুলোর মধ্যে একজন একটানে অরশীর ঘোমটা খুলে ফেলে আর অরশীর বিদঘুটে সাজ দেখে সাথে সাথে তারা বাস থেকে নেমে যায়। অরশী জোরে একটা নিঃশ্বাস ছাড়ে।
__এরপর অরশী তার ব্যাগ থেকে পার্সোনাল ডায়েরিটি বের করে বাংলাদেশের মানচিত্রের পঞ্চগড় জেলাটিকে ব্লু মার্কার দিয়ে চিহ্নিত করে। দুপুরে ঢাকা থেকে যে বাসটিতে অরশী উঠেছে তা যাবে সোজা পঞ্চগড়। টানা ১৪ ঘন্টার জার্নি শেষে অরশী পঞ্চগড় পৌঁছায়।

__তারপর নিজের ক্রেডিট কার্ডের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,”তোকে সেই পাঁচবছর যাবৎ তিলে তিলে গড়েছি অরশীর ট্রাভেলের জন্য। এবার অরশী ঘুরবে তুই ফুরিয়ে যাস না প্লিজ।”
অরশী হোটেল রুমে রিলাক্স করে ঘুমাচ্ছে।
__আশিস পাগলের মতো খুঁজছে অরশীকে তার ধারনাও হয় না অরশী এত দূর যাবে। ঢাকা শহর পেরিয়ে আশেপাশের প্রায় অনকে জায়গায় অরশী পরিচিত ফ্রেন্ড সার্কেলসহ সব খোঁজা শেষ। নিজের রুমে মাথায় হাত দিয়ে নিচু হয়ে বসে আছে আশিস।

___আশিস বিরবির করছে,,
“পুরো পৃথিবীর আনাচে কানাচে খুঁজবো তোমায়”
” মৃত হৃদয়কে পুনঃজীবী করার দাম মিটাতে হবে তোমায়”।
__হাতে ক্যামেরা কাঁধে ব্যাগ নিয়ে তেতুলিয়ায় দাঁড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ দেখছে অরশী। এরপর হাতে ক্যামেরা দিয়ে ফটাফট কিছু ছবি তুলে ফেলে।
__ এরপর অরশী বেরিয়ে যায় চা-বাগানের উদ্দেশ্য প্রায় ২৪ টি চা বাগান বেশ কয়েকটি ঘুরেফিরে দেখতে থাকে অরশী কি সুন্দর হিমেল হাওয়ার সাথে দুলছে। অরশী অনকেদিনের স্বপ্ন এক এক করে পূরণ হচ্ছে।
__অরশী চা বাগান পেরিয়ে চলে আসে ভজনপুর সীমান্তে বাংলাদেশ আর ভারতের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্দরে। অরশীর কাছে সব স্বপ্নের মতো লাগছিল।
____দুপুরে গড়িয়ে বিকেলবেলা,,ঘুরে ঘুরে অরশী গিয়ে পৌঁছায় চন্দ্রাবতী বা করতোয়া নদীর পাশে। সন্ধ্যা নেমে যায়, সূর্যাস্ত উপভোগ করছে অরশী। বেশ খানিকক্ষণ বাদে অরশী নিজের ফোনের ইন্সটাগ্রামে সব পিক আপলোড করে৷ তারপর পঞ্চগড়ের সীমানা অরশী পেরিয়ে যেতে থাকে।

____আশিসের কাছে খবর আসে অরশী পঞ্চগড়ে আশিস তখনই রওনা দিয়ে ফেলে আর পঞ্চগড়ে নিজের কিছু চামচাকেও কাজে লাগায় অরশীকে খুঁজতে।
___অরশী আবারও নিজের ফোন বন্ধ রাখে।
অরশী এসে পৌঁছায় নীলফামারীতে। আর আশিস গিয়ে পৌঁছায় পঞ্চগড়ে,,
____চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশনের সামনে দাঁড়িয়ে অরশী। অরশী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্যালকুলেট করে আজকে ব্রিটিশ আমল থাকলে সে এই রেলওয়ে দিয়ে কলকাতা যেতে পারতো তবে আফসোস সে ২০২৫ আছে।
__অরশী কতক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে রওনা দেয় ডোমার জমিদার বাড়ি। এর মধ্যে কিছু খাওয়া দাওয়া করে নেয় রেস্তোরাঁ থেকে। জমিদার বাড়িটির কারুকাজ দেখে অরশী জাস্ট ফিদা এতসুন্দর নকশা যদিও ফোনে দেখা হয়েছিল। তবে সামনসামনি যেন কারুকাজগুলো আরও ফুটে ওঠেছে অরশী হাত বুলায় নকশাগুলো তে।

__দিনের ভাগ শেষ হয়ে বিকেল নামে ধরনীতে। অরশী চলে বসে নীলসাগর দীঘতে। প্রায় ৫৩ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত দীঘিটি আশেপাশে বেশ মানুষজন। অরশী একজনের সাহায্যে নিজের কিছু ছবি তুলে নেয়।
___অরশী রাস্তায় হাঁটছে আর ছবিগুলো দেখে মিটিমিটও হাসছে। তবে তার হাসি বেশিক্ষণ আর থাকে না। সামনে বাসের জন্য দাঁড়াতে দেখা মিলে কিছু বখাটের। তবে অরশী তেমন পাত্তা না দিয়ে বাসের টিকেট কেটে দাঁড়ায় বিশমিনিট লাগবে বাস আসতে। ছেলেগুলো অরশীর সামনে দাঁড়াতেই।
অরশী বলে,,”কি চাই? ”
ছেলেগুলো একটু বাঁকা হেসে একে অপরের দিকে তাকিয়ে বলে,,,”পরী চাই সুন্দরী পরী”
অরশী বেশ বিরক্ত হয়ে বলে,,”ভাই ক্লান্ত লাগছে সর তোহ্,,, মারামারির মুড নেই আমার”

___অরশীর কথায় ছেলেগুলোর হাসির তোপ বেড়ে যায়। অরশী বিরক্ত হয়ে সামনে এগোবে পেছন থেকে একটি ছেলে অরশীর হাত ধরে। অরশী থেমে যায়। ছেলেটা অরশীর হাত টান দিতেই। অরশী পিছিয়ে গিয়ে সোজা ছেলেটির প্রাইভেট পার্টে লাথি মেরে বসিয়ে দেয়।
____বাকিগুলো অরশী দিকে তাকাতেই অরশী একদৌড়ে বাসে উঠে,,চেঁচাতে চেঁচাতে বলে,,”ওকে হসপিটালে নিয়ে যা নয়ত বংশের বাতি ফিউজ হওয়া দায় আমাকে দিতে থাকবে সারাজীবন”।
____এরপর অরশী হাসতে হাসতে নিজের সিটে বসে পড়ে। তারপর ব্যাগ থেকে ডায়েরি খুলে বের নীলফামারী জেলাকেও ব্লু মার্ক করে।

__পাশে তাকাতেই অরশী চোখ যায় এলোমেলো চুলের মুখে ক্যাপ রাখা লোকটির দিকে। দেখে মনে হচ্ছে অনেকক্ষণ যাবৎ জার্নিতে ক্লান্ত। অরশী বেশি পাত্তা না দিয়ে বাসের সিটে হেলান দিয়ে ফোন বের করে নীলফামারীতে তোলা ছবি গুলো আপলোড দিয়ে আবারও ফোন অফ করে রাখল।
__আস্তে ধীরে বাস খালি হতে লাগলো। এবার অরশী হালকা ভয় চাপল। পাশের লোকটি তখনো স্থির হয়ে বসে। হঠাৎ বাস থামায় অরশী ভয়টা এবার সম্পূর্ণ চেপে ধরে।
___বাসের সামনে থেকে তিনজন এগিয়ে এসে বলে,,”কি মেডাম কতদূর যাবেন আর?”
অরশী সাহস নিয়ে বলে,,”ঠাকুরগাঁও যাবো এখানে গাড়ি থামালেন কেন?”
“আরে আস্তে পাখি। যাবেই তো ফুর্তি করতে করতে তোমায় নিয়ে যাবো। ”
তারপর অরশীর পাশের লোকটিকে তিনজনের একজন ধাক্কা দিয়ে বলে,,”শালা উঠ ”
__লোকটি সেভাবেই বলল,,”ঘুমাতে দে নয়ত একদম জানে মেরে দেব।”
ঠান্ডা হুমকিতে লোকগুলোর একটু ভড়কালেও থেমে রইল না।

____অরশী নিজের ফোন বের করে লাইভ শুরু করে কিছু বলবে তার আগেই একজন ফোনটা কেড়ে নিয়ে বলে,,,,”শালী ভিডিও করছিস? ” এবার দেখ কি করি” বলে লোকটি অরশীকে টানতে যাবে।
তখনই ক্যাপ সরিয়ে লোকটি অরশীর সামনে দাঁড়িয়ে যায়।
অরশী লোকটির পিঠের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে,,”বডি ফিটনেস ভালো কয়েকটা লোককে কেলানোর মতো শক্তি তোহ্ আছেই।”
___অরশী লোকটাকে পর্যবেক্ষণ করতে করতে। লোকটি সামনের তিনজনের একজন এক ধাক্কায় ছুঁড়ে মেরে শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে অরশীর দিকে ঘুরে। অরশী অবাক তার সামনে স্বয়ং আশিস খান দাঁড়িয়ে।
অরশী বলে,,”আরে ভাই তুই?”

____অরশী আর কিছু বলার আগেই আশিস অরশীর হাত ধরে বাস থেকে নামতে থাকে। তিনজনকে একটু আগেই উত্তমমাধ্যম কেলিয়েছে আশিস। সবগুলো বাসের একেক কোণায় পড়ে আছে।
বাস থেকে নেমে। অরশী বলে,,”মাত্র দুইটা জেলা ঘুরেছি ভাই”।
____আশিস রেগে তাকিয়ে অরশীর দিকে। এরপর তৎক্ষনাৎ অরশীর গাল চেপে দরে বলে,,”এতদূর পালালি কেন সুইটি”?
অরশী আশিসকে একথাপ্পড় মেরে বলে,,”তোহ্ কি করবো তকে বিয়ে করার আমার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই ভাই। আমাকে ট্রাভেল করতে দে।”

_____আশিস নিজের গালে হাত বুলাতে বুলাতে বলে,,,”আমি না থাকলে বাসেই মরতি আজকে”
অরশী হেসে বলে,,,”পাগল নাকি আমি ফাইটিং জানি মি.আশিস খান। ”
আশিস ভ্রুকুচকে বলে,,”ওহ তাই অশী সুইটি!!!”
অরশী বলে,,”হ্যাঁ”
আশিস বলে,,'”বিয়ে করে নাও আমায়, পুরা দেশ ঘুরাবো”
অরশী নাক সিটিয়ে বলে,,”প্রয়োজন নেই একাই যথেষ্ট আমি”
আশিস দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,”I need you sweetie”
অরশী বাঁকা হেসে বলে,,,”খুঁজতে থাকো আমায় দেখি আবার কবে দেখা পাই তোমায়।”
আশিস অরশীর হাত চেপে ধরে বলে,,”আর হারাতে দিচ্ছি না তোমায়। ”

love with a slap part 1

____অরশী নিছক হেসে ব্যাগের পকেট থেকে হাতে রাখা স্প্রেটি হুট করে আশিসের চোখে স্প্রে করে দেয়৷
আশিসের চোখ জ্বালা বেড়ে যায় অরশীর হাত ছাড়তে বাধ্য হয়। সেই সুযোগেই অরশী আবার পালায়।
___খানিকবাদে আশিসের গার্ডসহ গারি আসলে। আশিস চোখেমুকে পানি দিয়ে একটু কন্ট্রোলে আসামাত্রই গর্জে বলে,,,,,,
“অশী সুইটি তকে আমি জ্যান্ত কাবাব বানিয়ে গিলব, আমার থেকে পালানো শালী তকে তোহ্!!!!’

love with a slap part 3