love with a slap part 6

love with a slap part 6
আশু

রাজশাহীতে নামকরা খান বাড়ির একমাত্র ছেলে আশিস খান বিয়ে করে ফেলেছে তাও আবার নিজের চাচাতো বোনের বিয়ের মধ্যে ব্যাপারটা রীতিমতো আলোচনায় তোলপাড়৷
বাসার হলরুমে অরশী মাথা নিচু করে বসে পাশে দীপার মা আর আত্নীয়রা ঘিরে,, তখনই লাঠি ভর দিয়ে নিচে নেমে আসে আশিসের দাদী। মানুষের ঝাঁক দেখে। আশিসের দাদী বলে,,”তরা সরবি নাতবউয়ের মুখ দেখমু না তগো ঢং দেহুম যত্তসব কাকপক্ষীর দল।”

আশিসের দাদীর বয়ান শুনে সবাই দুভাগ হয়ে রাস্তা বানিয়ে ফেলল। অরশী সেই যে মাথা নিচু করে আছে আর তাকাচ্ছে না। আশিসের দাদী নিজের লাঠির ঢগা দিয়ে অরশীর মুখ তুলে বলে,,”ওরে খোদা এতো দেহি দীপার বান্ধর ডা ।”
সবাই হেসে ফেলে তখন দীপার মা বলে,,”বান্ধর না আম্মা বান্ধবী”।
“তুমি চুপ থাহো বউমা ঐ একই। আর তরা এমন দাঁত কেলাইয়া হাসতাছোত ক্যা কাম নাই নাকি সর সব সর”
একে একে সব কেটে পড়ে লাগামহীন কথা কখন কাকে শুনিয়ে দেয় এই ভয়ে।
তারপর অরশী পাশে আশিসের দাদী বইসা বলে,,”রুপ তো নায়কা সাবানা তাহ্ আমার নাতনীর গলায় ঝুললি ক্যামনে রে বগী? ”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

অরশী আর চুপ থাকতে পারে না এমনি ছটফট মেয়ে সে আর কত চুপ থাকবে অরশী বলেই উঠে,,”তোমার ঐ গাম্বুস নাতী যখন আমারে জোর কইরা বিয়া করলো তুমি কই ছিলা বুড়ী দেখলে বুঝতা কে কার গলায় ঝুলে পড়েছে? ”
আশিসের দাদী বিরক্ত হয়ে বলে,,”দূরু বগী হুনছি নাতী বিয়া করব কোমড়ের ব্যার্থায় নামি নাই বংশের বাতি লিগা বিয়া করা লাগবো না? ”
অরশী বলে,,,,”বংশের বাতি জ্বালাইবা লিগা আমারে পাইছে তোমার নাতী তারে যদি আমি গরুর দড়ি দিয়া না ঘুরাইছি”””
“ঐ বগী কি কইলি আমার সোনার চাঁন নাতিরে কি করবি?”

অরশী মুখ ভেঙিয়ে বলে,,”ঐ শালারে তোহ্ আমি একদম তুড়ি মাইরা উড়াইয়া দিমু”
“ও মাগো এ দেহি নাতি আমার ডাকাইত আনছে। কই তোরা প্রেসারের ঔষধ আন দম গেল রে!!”
অরশী পাশ থেকে ঔষধ দিয়ে বলল,,”এটা খাও তোমার বুড়োর কাছে যাওয়ার টিকেট এখনো আহে নাই বুড়ি”
আশিসের দাদী ঔষধ খেয়ে বলে,,”চ্যাং চ্যাং কথা কছ বালাই, আমার নাতীর কিছু হলে চ্যাং চ্যাং কিন্তু ছুডাইয়া দিমু”
অরশী একলাফে দাঁড়িয়ে বলে,,”রাখো তোমার চ্যাং চ্যাং তোমার নাতীর বংশ নির্বংশ যদি না করছি আমিও অরশী না”
“ও মোর খোদা কিল্লাই বাইচ্চা আছি উডাই নাও আমারে “,,এই দিনও মোর দেহা লাগলো”,,
সোনার চাঁন নাতী ডার কপাল পুড়লো বুঝি”
অরশী নিসপিশ করছে বিরক্তিতে, এমনিতেই বিয়েটা মানতে পারছে না তার উপর বুড়ির নাতী নিয়া আহ্লাদ আরে গা জ্বালা দিতাছে।

আশিসের দাদী বলে উঠে,,”বেডা মানুষ আদর সোহাগ মারাইলেই তেজ নিভা যাইবো বগী”
অরশী বলে,,,”ইশশশশ্ তোমারটাই তো কমাইতে পারলো না তোমার বুইড়ায় আর আমি তো তোমার থেকে এক ক্লাস উপরের বুড়ি”
আশিসের দাদী এবার মারাত্মক রেগে বলে,,”তবে রে বগী আজকে তর একদিন কি আমার একদিন।”
এই বলে লাঠি নিয়ে অরশী পিছে আশিসের দাদী।
অরশী সোফার এ মাথা তো আরেকবার ওই মাথায় গিয়ে বলে,,”বুড়ি ভালো হইবো না কিন্তু দূরে যাহ্ বুড়ি”
“বগীর বাচ্চা আমার স্বাদের সোয়ামী নিয়া কথা তরে যদি না পিডাইছি আমি তাইলে আমি কুবা সামসুর বউ না।”
“এ বুড়ি কুবা কি?”

আশিসের দাদী মাঝা ধরে বলে,,”কুবা বুঝোছ না মাতারী। কুবা মানে কোপাকোপি”
অরশী দম ছেরে বলে,,”যা ভাবছিলাম জল্লাদের বংশে আইছি ঠিক মিললো”বুড়া এক জল্লাদ আছিল তার বউ জল্লাদের রানী”
আশিসের দাদী আরো রেগে বলে,,,”খাড়া তুই বগীর বাচ্চা আমার সোয়ামীর দেমাগ নিয়া তর চ্যাং চ্যাং কথা ছুডাইতাছি ”
তখনই আশিস এসে বলে,,”দাদী ওরে দৌড়াও ক্যা??”
আশিসের দাদী এবার মরা কান্না জুড়ে নাতিরে ধরে বলে,,”কি রে ভাই ডাকাইত আনলি ঘরে, কি মুখের ছিরি বগীর।” এ বউ পাল্টা নতুন বিয়া করামু তোরে এডারে আমি মানুম না”
আশিস ভ্রকুচকে বলে,,,”কও কি দাদী কত বিয়া করমু? একটা বিয়া করলাম বাসরে আগেই বউ পাল্টাইতে কও?”
আশিসের দাদী চেঁচিয়ে বলে,,”রাখ তর বাসর । ঘরে গেলে তোর গলাও কাটবার পারে এডা ডাকাইতা ছেমরি বুঝোস না ক্যা?”

আশিস নিজের জামার কলার টেনে ভাব নিয়ে বলে,,”দাদী তোমার নাতী কি কম নাকি? ”
অরশী মুখ ভেঙিয়ে বলে,,”এহহ্ জল্লাদকুমার আইছে আইছে শালা গাম্বুসের বাচ্চা”
আশিস অরশীর দিকে তাকিয়ে বলে,,”এই শালী চুপ থাক, আমারে দাদীরে কি বলছত?”
অরশী বিরক্ত হয়ে বলে,,”এ বুড়ি আমারে কি বলছে জিগা ভাই। বুড়ি তো না একেবারে ডাইনী বুড়ি!!””
আশিস ক্ষেপে বলে,,” শালী মুখ সামলা, আমার দাদী কি চিজ্ জানোস তুই? পুরা এলাকার দাদী”
আশিসের দাদী অরশীর দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ মেরে শয়তানি হাসি হাসছিল।
অরশী রেগে মনে মনে বলে,,”কি শেয়ানা রে বুড়ি দেখাচ্ছি মজা”
অরশী কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে,,”দাদী সরি দাদী বড় অন্যায় করে ফেলেছি ক্ষ্যামা দেন গো দাদী”
তারপর আশিসের দিকে তাকিয়ে অরশী আবারও বলে উঠে,,”আর শুনো এখন তোহ্ বিয়ে হয়ে গেছে তাই না আমারই ভুল দাদীদের একটু বলো যেন কিছু মনে না করে”

আশিসের দাদী তো ক্ষেপে যায় সে তো ঝগড়া চায় এই বউ রাখবে না সে।
আশিসের দাদী বলে,,,”এখন নাটক মারাও আমার নাতীর সামনে যতই বাহানা কর তরে আমি বউ মানি না”
অরশী একলাফে আশিসকে সালাম করে বলে,,”শুনেন না দাদীরে একটু বুঝান রাত হচ্ছে রুমে যেতে হবে তোহ্”
আশিসের মনে লাড্ডু ফুটে কি বলছে কি তার কিউটিপাই। আশিস খুশিতে লাফিয়ে বলে,,”ইয়ে দাদী বলছি”
আশিসের দাদী চোখ উল্টে তাকায় তখন অরশীও চোখ টিপ মারে। আশিসের দাদী রেগে বলে,,”কালকা তুই এই বগীরে তালাক দিবি । আমি তর সাথে ঘুমামো আজকা। এই বগীর লগে তুই থাকবি না”
আশিস মুখ কুচকে বলে,,”দাদী কি কও এগুলা এই শালীরে আমি ভালোবাসি এর তেই তোমার পুতিন আইবো যাইবার দাও আমারে”

আশিসের দাদী আশিসকে চোখ রাঙিয়ে বলে,,”খবরদার আশিস আমার পুতিনের খেতা মারি তুই যাবি না”
অরশী তখন আশিসের দিকে তাকিয়ে বলে,,”সোয়ামী আমরা কি বাসর করবো না?”
আশিস পরে যায় মাইনকা চিপায়। তখন আশিসের দাদী বলে,,”এই মাতারী সর আমার ভেলাভালা নাদান নাতী ডারে কাইরা নিবার চাস?”
অরশী নিজের ওরনা পেঁচাতে পেঁচাতে বলে,,”কাইরা নিমু ক্যা দাদী নতুন আরো একটা আনবার লিগা তোহ্ ডাকতাছি।”
আশিসের আর তর সয় না অরশীর এমন ভঙিমা দেখে বেচারা পারলে একলাফে বাসর করতে দৌড় মারে৷
আশিসের দাদী আশিসের হাত আরে শক্ত করে ধরে বলে,,”ছিহ্ ছিহ্ এমন বেহায়া বিয়া করছত ভাই এই বগীরে আমি জীবনেও মানমো না”
অরশী এবার আশিসের দাদীর হাত ধরে বলে,,”আরে দাদী ছাড়েন নাহ্ আমার মতো বয়স তোহ্ পার হইয়া আইছেন বুঝেনই তোহ্”

আশিসের দাদী নিজের লাঠি উঠিয়ে বলে,,,”হতচ্ছাড়ি ছাড় আমারে নির্লজ্জ বগী”
অরশী মুখ টিপে হাসছিল।এটাই তোহ্ চাইছিল। তখন আশিস বলে,,,,”একটা রাত থাকবার দেও দাদী এমন কইরো না আমি মইরাই যামু”
আশিসের দাদী বিরক্ত হয়ে বলে,,”না করছি মানে না এই মাইয়া লগে তুই থাকবি না।”
অরশী এবার একটু ন্যাকা কান্না করে বলে,,”হাই খোদা কি কপাল,, স্বামী দিলা, সংসার দিলা আর বাসর দিলা না এ দুঃখ আমি কোনো গাঙ্গে বাসামু মাবুদ।”

অরশী কান্ডে আশিসের দাদী আরো রেগে বলে,,”বগীর বাচ্চা যাই করোছ আমার নাতী দিমু না”
অরশী এবার পাশ থেকে আশিসের হাত ধরে বলে,,”বুড়ি আমার সোয়ামী লাগবো ছাড়ো তুমি”
আশিসের দাদী বলে,,”ছাড় ছাড় আমি নাতী ছুবি না”।
অরশী আশিসের দাদীর দিকে তাকিয়ে বলে,,”কেন দাদী তুমি বুঝি তোমার সোয়ামীরে ছুইয়া দেহো নায়? ”
আশিসের দাদীর রাগ বাড়তে থাকে এদিকে বেচারা আশিস মুখটা ভোতা করে রাখছে না পারছে কিছু বলতে না পারছে সহ্য করতে বেচারা।

একটুপর আশিসের দাদী বিস্ফোরিত হয়ে বলে ,,,,”আশিস তুই থাকবি ওর লগে তয় আমার শর্ত আছে”।
অরশী এবার একটু ঘাবড়ায় সে কি বেশি নাটক করলো এখন যদি গাম্বুসটা তার সাথে থাকে কি হবে। অরশী ডোক গিলে তাকায় আশিসের দাদীর পাণে। আশিস বলে,,”বলো বলো দাদী তুমি যা বলবাই তাই করমু”
আশিসের দাদী বলে,, “কসম কিন্তু ভাই কথার নড়চড় মুই পছন্দ করি না।”
“আচ্ছা দাদী কও তুমি আমি রাজি ”
আশিসের দাদী এবার হাফ ছেড়ে বলে,,”হোন তাইলে তগো বাসর ঘরে আমিও থাকমো”
আশিস চিল্লায়ে বলে,,”কিইইইইইইই,,,,,,,”

অরশী তোহ্ ফ্লোরে বসে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আশিসের দাদী অরশী দিকে তাকাইয়া বলে,,”কি হইলো মাতারীর জিন ভুতে ধরলো নাকি সুন্দরী আছে ধরাও পারে। ”
আশিস বলে,,”দাদী এডা ঠিক না বাসর হয় জামাই বউ তুমি মাঝখান থেইকা এডা কেমন কথা?”
আশিসের দাদী মুখে পান চিবাতে চিবাতে বলে,,”এডাই শেষ কথা যতদিন এই মাইয়ারে তালাক না দিবি তগো দুইডার মাঝখানে মুই থাকমো”
দাদীীীীীীীীীীীীীীীীীীীীীীীীীীীীীীী!!!!!!!!!!
কিইইইইইইই!!!””””!!!!!!
আশিস আর কিছু বলার ভাষা পায় না।বেচারা মুখটা শুকনা পাতার মতো হয়ে যায় যেন ধরলেই মজমজ করে গুড়ো হয়ে যাবে।

একপাশে অরশী আরেকপাশে আশিস মাঝখানে আশিসের দাদী মিনারী খাতুন। ঘুমের মাঝে হঠাৎ করেই আশিসের দাদী নাক ডাকা শুরু করে। অরশী তোহ্ বিরক্ত হয়ে উঠে নিজের কান চেপে ধরে বলে,,,,”বুড়ি তো জ্যান্ত মাইরাই ফেলব কি করি এখন?”
অরশী আশেপাশে তাকিয়ে দেখল আশিস বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। অরশী দুষ্টু হেসে একটু এগিয়ে গিয়ে আশিসের হাত টেনে আশিসসের দাদী মুখের উপর রেখে দেয়। তারপর তাড়াতাড়ি ঘুরে শুয়ে পরে।
আশিসের দাদী নিঃশ্বাস আটকানোতে হুড়মুড়িয়ে উঠে দেখে আশিস তার মুখে হাত দিয়ে রেখেছে।
আশিসের দাদী বিরক্ত হয়ে বলে,, “হতচ্ছাড়া কুবার গোষ্ঠী তর দাদায় দিত ঠ্যাং তুই মারোস হাত শালার জিন্দেগী মোর ত্যানাফ্যানা।”

অরশী এসব শুনে মুখ টিপে হাসছিল।
আশিসের দাদী আবারও অরশীর দিকে ঘুরে শুয়ে পড়ে। আবারো খানিকবাদে আশিসের দাদী নাক ডাকা শুরু অরশী তোহ্ এবার বিরক্ত হয়ে আশিসের দাদী গলা আলতো করে ধরে বলে,,”বুড়ি বাচ্চা মন চাই গলা টিপে দেই,, শালার কপাল পুড়া কই ফাসলাম ধ্যাৎ।”

এরপর অরশী আবার বাকা হেসে আশিসের দাদীকে একটু খোঁচা মারে যার ফলে আশিসের দাদী আশিসের দিকে ঘুরে যায়। অরশী উঠে আশিসের দাদীর পা আশিসের দিক তাক করে রাখে। তারপর অরশী নিজের হাত পা একটু ঝাড়া মেরে আশিসকে দেয় একলাথি। তারপর সাথে সাথে শুয়ে পড়ে।
আশিস তোহ্ নিচে পড়ে চিল্লিয়ে উঠে,,”দাদীীীীীীীীীী গো”!!!!

love with a slap part 4+5

আশিসের দাদীও নাকডাকা বাদ দিয়ে ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে বলে,,”কি রে ভাই নিচে ক্যা তুই?”
আশিস চোখমুখ খিঁচে বলে,,”দাদী তোমার উপরে দাদায় ভর করছে নাকি এত জোরে লাথি মারলা?”
“ও মোর খোদা কস কি এইল্লা? মুই লাথি মারোম কোন দুঃখে?”
“দুঃখে মারছো না সুখে কে জানে মারছো তো”।
“আচ্ছা ভাই উঠ উঠ আর মারমু না আয় আয় ঘুমা।”
অরশী হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ তবুও এপাশে ফিরছে না। কারন দাদী নাতিরে দেখলেই বত্রিশ পার্টি দাঁত বেরিয়ে যাবে সে সিওর।

love with a slap part 7