love with a slap part 7
আশু
সকালের দিকে অরশী ঘুম থেকে উঠে দেখে ওর পাশে কেউ নেই। কাল রাতের কথা ভেবে অজান্তেই অরশীর ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি ফুঁটে উঠে। তখনই শাওয়ার নিয়ে শুধু হাফ প্যান্ট পড়ে চুল মুছতে মুছতে বেরিয়ে আসে আশিস। আশিসকে দেখে অরশী নাক মুখ ছিটকে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ায়।
আশিস অরশীকে উঠতে দেখে বলে,,”কিউটিপাই ঘুম কেমন হলো?”
অরশী মোচড়াতে মোচড়াতে বলে,,”আর ঘুম আপনার মহামান্য ডাইনী দাদীর নাক ডাকা শুনে ঘুম আমার আসমানে।”
আশিস ঘুরে অরশীর পাণে তাকিয়ে বলে,,”আমি একটা বিষয় চিন্তা করলাম বুঝেছো?”
অরশী ভ্রুকুচকে তাকায় আশিসের পাণে। আশিস বলে,,”রাতে তোহ্ বাসর করা পারবোই না। দিনে তো করা যাই কি বলো। আশিস খান মানেই ডিফারেন্ট খান”
অরশী বলে,,”ইসস্ শখ কত শালার, বাসরের নাম নিলে তর গলা কেটে ফ্যানে ঝুলাবো সর শালা”
“এই শালী এখন বিয়ে হয়ে গিয়েছে শালা শালা করলে কিন্তু,,,”
অরশী আশিসকে ধাক্কা দিয়ে বলে,,”সরেন কুবা বংশের সোয়ামী কুবা আশিস খান”
আশিস অরশী কথায় হকচকিয়ে সরে দাঁড়ায়।
অরশী ফ্রেস হয়ে এসে দেখে আশিস একদম ব্ল্যাক সুট পড়ে ক্লাসিক লুক নিয়ে দাঁড়িয়ে চোখ ধাঁধানো লাগছিল।অরশী এক ঢোক গিলে বলে,,,,”কি চিজ্ মাইরী এত হ্যান্ডসাম কি বডি রে এতো পুরো আস্ত টসটসে সুস্বাদু মাল৷”
অরশীর এমন তাকানো দেখে আশিস হেসে বলে,,”চোখ দিয়ে গিলছো কেন?”
অরশী মুখ ভেঙিয়ে বলে,,,,”হাহ্ ভাবছিলাম রুমের ভেতর গরুর আসলো কোথা থেকে এখন দেখি ডাইনী বুড়ি নাতী টা।”
অরশী সামনে যেতেই আশিস একটানে অরশীকে নিজের কাছে টেনে আনে।
অরশী বলে,,”সমস্যা কি?? কি করছিস শালা একদম মেরে,,,,”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
অরশীকে বলতে না দিয়ে আশিস অরশীর গালে মুখে টুপটুপ চুমু খেতে থাকে অরশী নিজেকে ছাড়াতেও পারছে। বার বার বলছে,,”ছাড় জলহস্তি, ছাড় বলছি গাম্বুস।”
আশিস থেমে বলে,,”কিউটিপাই তুমি দেখতে না পুরাই মিষ্টি এত মিষ্টি যে দেখলেই,,,”
কথার মাঝেই অরশী ঠাস করে এক থাপ্পড় বসিয়ে দেয় আশিসের গালে আর বলে,,”মিষ্টির মাইরে বাপ ছাড় আমারে শালা ধান্দাবাজ। ”
আশিস নিজের একহাত গালে রেখে ভ্রুকুচকে বলে,,”যদি না ছাড়ি?”
অরশী কিছু বলবে তখনই চোখ যায় আশিসের দাদী দরজা ঘেষে আড়িপেতে আছে। অরশী তখন নিজের হাত আশিসের গলায় জুলিয়ে বলে,,”তাহলে কিছুই হবে না জামাইজান।”
আশিস ভ্রুকুচকে তাকায় তার বউয়ের দুমিনিট পরপর পাল্টে যাওয়া হজম করাও কষ্ট হচ্ছে। আশিস সব বাদ দিয়ে অরশীর কোমড় টেনে বাকি দূরত্ব গুচিয়ে দেয়।
অরশী মনে মনে বলে,,”শালা সুযোগ পেয়ে বাঁদরের মতো মাথায় উঠছে, বুড়িটা এসব দেখে তালাকে ব্যবস্তা একবার করুক ব্যাস তারপর,,
অরশীর ভাবনার মাঝেই আশিস গেয়ে উঠে,,,
~তুই আমার রাণী আমি তোর রাজা রে~
~পাবি না আমার মতো বাংলাবাজারে~
~ পরে নে বেনারসি পালকি সাজারে~
~ পাবি না আমার মতো বাংলাবাজা রে~
~ আমি তোর হিরো আমি তোর হিরো ~
~বাকি সব জিরো~
অরশী আড়চোখে দেখে আশিসের দাদী এবার তার মাথা বের করে দেখছে। ব্যাস অরশীও শুরু করে দেয় আশিসের হাত ধরে নাচতে নাচতে বলে,,
~তুই আমার হিরো তুই আমার হিরো~
~ বাকি সব জিরো ~
দুজন মিলে নাচানাচিতে আশিসের দাদী রেগে ভেতরে চলে আসে আর আশিস আর অরশী দুদিকে দাঁড়িয়ে যায়। অরশী বলে,,,”ছিহ্ দাদী একটু তোহ্ নক করে আসতে পারতেন বুঝেনি তোহ্ নতুন নতুন”
“চুপ কর মাতারী আমার নাতীর লগে কি করতাছিল তুই?”
অরশী আশিসের দাদীর সামনে গিয়ে বলে,,”কি করি বুঝেন না আপনার জন্য তোহ্ করতেই পারলাম না হাহ্”এই বলে চুল উল্টে অরশী বেরিয়ে যায়।
আশিসের দাদী চিল্লাতে থাকে,,”বগীর বাচ্চা আমার সোনার চাঁন নাতিডার দিকে নজর মারাইছোত তোরে আমি বলি মারমো মাতারী”
আশিস কোনো মতে পাশ কেটে বেরিয়ে যায়।
নাস্তার টেবিলে অরশী আর আশিসের মাঝখানে আশিসের দাদী বসে আছে।
তখন অরশী বলে,,”এই শুনছেন আপনার কিছু লাগবে?”
আশিসের দাদী বলে,,,” তুই খা আমার নাতী ডা আমি বুঝমো”
“এমা দাদী কি বলেন সোয়ামী যত্ন করতে হইবো না? আপনি না বললে সোয়ামীর আদর সোহাগ পাইলে আমি ঠিক হইয়া যামু তার লিগাই তোহ্ যত্ন করতাছি। যত্ন না করলে কি আদর পামো? বলেন দাদী?
অরশীর কথা শুনে আশিসের কাশি এসে পড়ে বেচারা কাশতে কাশতে দম যায়। সবাই পানি ধরে অরশী একলাফে উঠে গিয়ে আশিসের মাথায় হাত বুলিয়ে কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে,,”কি হলো সোয়ামী, আপনার কিছু হয় নি তোহ্ সোয়ামী,আপনার কিছু হলে এই অরশী যে মরে যাবে সোয়ামী গো কথা বলেন।”
আশিসের দাদী চেচিয়ে বলে,,”সর বগীর বাচ্চা আমার নাতীরে ছুবি না মাতারী তোর মুখের কি ছিরি ”
অরশী বলে,,”কন কি দাদী? কি ছিরি মুখের আমার আমি কি দেখতে খারাপ?আচ্ছা আপনি চুপ থাকেন আচ্ছা সোয়ামী আপনি বলে,,আমি কি দেখতে খারাপ?
আশিস কোনোমতে উঠে বলে,,”না না কি বলো তুমি তো,,,”
আশিসকে বলতে না দিয়ে আশিসের দাদী বলে,,”তুই আমার নারিকেল গাছের শাঁকচুন্নি আজকাই ওজা আনমো তরে আমি চিনছি এত বছর পর প্রতিশোধ নিবার আইছত বুঝছিরে বগী”।
আশিস বলে,,”দাদী তুমি এখনো পুরান যুগেই আছো আর অরশী শুনো আমি যাচ্ছি।”
অরশী আশিসের টাই ধরে ঠিক করার ভান করে বলে,,,,,”সাবধানে যাবেন আর তাড়াতাড়ি ফিরবেন বুঝেছেন।”
আশিস মুচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে চলে যায়।
বাড়িতে আশিসের দাদী, দীপার বাবা-মা আর তাদের ছোট ছেলে আহান। আর রান্না করার মেয়ে তানু দি। বিয়ে উপলক্ষে দীপার মামীসহ তার এক মেয়ে টয়া আর ছেলে তামিম এসেছে।
আশিস যাওয়া মাত্রই। অরশী বলে,,”তানুবেবি এক কাপ দুধ চা দিয়ে যাও ছাদে যাচ্ছি।”
আশিসের দাদী বলে,,”খবরদার তানু ঐ বজ্জাত ছেমরিরে চা দিবি না”
অরশী বলে,,”সমস্যা কি তোমার বুড়ি? খেতেও দিবে না?”
“না দিমু না আমি ফোন দিছি ওজা আইতাছে। তারপর তোরে খাওন দিমু”
অরশী বিরক্তিতে উপরে চলে যায়। অরশী বসে বসে ভাবছে,,কি করে বাঁচবে না তাকে ফোন দিয়েছে আশিস আর না বাড়ির কারো সাথে মিল হচ্ছে। তখনই দরজায় কড়া নারে দীপার মা।অরশী বলে,,”আন্টি আসুন নক করার কি দরকার?”
দীপার মা এসে অরশীর মাথায় হাত রেখে বলে,,”ছোট মা বলবে কেমন? ”
অরশী মাথা নাড়ায়। দীপার মা বলা শুরু করে,,”জানি বিয়েটা তোমার পক্ষে মানা কষ্টসাধ্য তবে একটা কথাই বলবো আশিস খারাপ ছেলে না। আশিসের মা আমার বড় ভাবী ছিলেন মাটির মানুষ। আশিসের জন্মের কিছুদিন পরেই তিনি মারা যান। এথেকেই বাপ ছেলের বিশাল পরির্বতন এসে পড়ে। আশিসকে আমি আর ওর দাদীর দেখেশুনে রেখেছি নিজের ছেলের মতো করে। তবে আমি আশিসকে এসে ছয়বছরের পেয়েছি। আশিসের দাদী খুব শখ আহ্লাদ করে নিজের নাতীকে বড় করেছে তাই তোহ্ এতোটান। আশিসও ওর দাদীর উপরে কিছু বলতে পারে না।আম্মাকে তুমি কি মনে করো জানি না তবে ওনি এভাবেই কথা বলে তবে তার মন জিততে পারলে তোমাকেও ভালোবাসবে।”
অরশী মাথা নিচু করে সব হজম করছে। পরিবারটা তার ভালো লাগলেও মোটেও সে থাকবে না। কারণ সংসার যার সাথে করবে সে তোহ্ ঠিক নেই।
অরশী বলে,,”ছোট মা আমার সময় লাগবে”
দীপার মা হেসে বলে,,”এতদিন আনন্দ করো আমরা সবাই তোহ্ একই।”
দুপুরে অরশী গোসল সেরে চুলগুলো খুলে একটা লাল শাড়ী পড়ে নিচে নেমে আসে। সবাই হা করে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে সিড়ি বেয়ে একটা লাল পরী নিচে নামছে। অরশীকে দেখেই আশিসের দাদী একটা ভেঙচি কেটে সামনের ওজাকে বলে,,”এই সেই শাঁকচুন্নি।”
ওজা হা করে তাকিয়ে বলে,,”এ তো স্বর্গের পরী।”
আশিসের দাদী চিল্লিয়ে বলে,,”ঐ বেডা তুই শাঁকচুন্নি ছোডা।”
ওজা থতমত খেয়ে আবার ভং ধরে বসে।
অরশী নিচে নেমে অসংখ্য পুতির মালা পড়া লোকটাকে দেখে বলে,,,”আসসালামু আলাইকুম ভন্ড বাবা’।
ওজা রেগে বলে,,,”কি বললি তুই জানিস আমি কে?”
অরশী টেবিল থেকে একটা আপেল নিয়ে খেতে খেতে বলে,,,,”তুই কে আমি কেমনে বলমু তবে তুই ভন্ড এটা জানি তর মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে, তা কত মেরেছিস দাদীর থেকে?”
ওজা চিল্লিয়ে বলে,,”দাদী ঠিক বলছিস এটা শাঁকচুন্নি তবে যেই সেই শাঁকচুন্নি না ভয়ংকর শাঁকচুন্নি”
অরশী বলে,,”আরেকবার শাঁকচুন্নি বলে ঝাটার বারি মেরে বের করব ভন্ড বাবা।”
আবার ওজা বলে উঠে,,”দাদী শাঁকচুন্নি খেপেছে ঐ এরে ধর।”
ওজার পেছন থেকে দুটো লোক আসতে নেয়। অরশী শাড়ী কোমড়ে গুজে বলে,,”তানুবেবি ঝাটা আন তো।”
তানু কাছেই ছিলো হাতের ঝাড়ু অরশীর হাতে দিয়ে বলে,,”কি করবেন ভাবীসাব?”
অরশী বলে,,,”দেখতে থাক”।
অরশী হুড়মুড়িয়ে ঝাটা দিয়ে লোকদুটোকে কতক্ষণ মেরে বলে,,,”হাইস্কুলে কুংফু শিখেছিলাম এভাবে শ্বশুরবাড়ি কাজে লাগবে ভাবি নি।”
অরশী এবার ডাইরেক মেইন ওজার কলার ধরে উঠিয়ে বলে,,”আমি শাঁকচুন্নি তাই না দেখাচ্ছি শাঁকচুন্নির রুপ”
ওজা ঝাটার বারি খেতে খেতে বলে,,”ছেড়ে দে মা মাপ কর আর তর সামনে আমু না, ছাইড়া দে দয়া কর রে মা,বইন,মাসি,পিসি মাফ কইরা দে”
এসব দেখে আশিসসের দাদী পিছনের দিকে এককোনায় দাঁড়িয়ে যায় কখন ঝাটার বারি পরে এই ভয়ে।
এদিকে অরশী না থেমে হাতে ঝাটা দিয়ে লোক তিনটাকে মারতে মারতে বাইরে বের করে বলে,,,”আর কোনোদিন সামনে পরলে একদম বালি চাপা দিয়ে দিব শালা ভন্ডের বাচ্চা। ”
অরশী ঘুরতেই দেখে আশিসের দাদী রেগে তাকিয়ে। অরশী নিজের কোমড় থেকে শাড়ীর আঁচল খুলে মাথায় কাপড় দিয়ে বলে,,”দাদীজান কেমন লাগছে আমাকে? আপনার নাতী পাগল হবে তোহ্?”
“সর মাতারী নিলর্জ্জ।”
অরশী মুচকি হেসে ভেতরে চলে আসে।
অরশী যেতেই তানু এসে দাঁড়িয়ে বলে,,”ভাবি আপনে আমারে তানুবেবি বলেন কেন?”
অরশী বলে,,”তুই দেখতেই বেবি বেবি তাই ভালোবেসে দিয়ে দিলাম তানুবেবি।”
তানু মুচকি হেসে বলে,,”তয় নাম ডা মোর পছন্দ হইছে আর আপনার মাইরটা দেইহা তো আপনার ফেন হইয়া গেলাম ভাবীসাব”
অরশী মুচকি হেসে বলে,,”হইছে হইছে সর”
অরশী যেতেই সামনে দাঁড়ায় দীপার মা আর দীপার মামী অরশী ভ্রুকুচকে তাদের পাণে তাকায়। দীপার মা জোরে হেসে বলে,,”বেশ করেছো।” এটা শুনে অরশীও হেসে ফেলে।
আশিসের দাদী নিজের রুমে পান চিবোচ্ছে আর বলছে,,”বুঝলি তানু এই বউ রাখুম না, কি তেজ ছেমরির, তিন তিনটা বেডারে পিডাইলো গরুর মতো ভাবা যায়?”
love with a slap part 6
“দাদী ভাবী তোহ্ ভুল করে নাই আর মাইর গুলা কি জোশ আছিলো দেখলেন নাহ্”
“ঐ তুই চুপ থাক ভাবীর চামচা আইছে।সর ঘর থেইকা বাইর হ। আলগা পিরিতি দুই দিনের অতিথি তার আবার চামচা কত ডি থুহহ্”