mad for you part 16

mad for you part 16
তানিয়া খাতুন

দরজাটা খোলার সাথে সাথেই ক্রিশ অবাক হয়ে যায়—তার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন তার বাবা, সৱিফুল সাহেব।
অথচ বাবার এখন এখানে আসার কথা নয়, তিনি তো পার্টির কাজে বিদেশে গিয়েছিলেন।
সরিফুল সাহেব (রাগে গর্জে ওঠেন):
“তোমার সাহস কী কৱে হলো ক্রিশ?
আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করাৱ এতদিন ধরে আমি তোমার জন্য মেয়ে খুঁজে রেখেছি, বারবার বলেছি বিয়ে করো, বিয়ে করো— তুমি কৱোনি।
আর হঠাং তুমি রাস্তার এক সস্তা মেয়েকে এনে বিয়ে করে বসেছো!”
ক্রিশ (রাগে চিৎকার করে):
“Enough! Enough! This enough mr. soriful khan!”
ক্রিশের এমন চিৎকারে রান্নাঘর থেকে দৌড়ে আসে রুহি।
সামনে দাঁড়ানো মানুষটাকে দেখে ওর বুক ধকধক করে ওঠে—এই মানুষটাকে তো ও বহুবার টিভিতে দেখেছে, ক্রিশের বাবা!
সরিফুল সাহেবের স্ত্রী (তাড়াহুড়ো করে):

“এই তুমি একটু শান্ত হও, আগে ঘরে চল, তারপর শান্তভাবে কথা বলো।”
ক্রিশ (ঠান্ডা অথচ গর্জনভরা স্বরে):
“Ms. Khan, আমি আমার ব্যাপারে কারও অনুমতি নি না আৱ না কাৱোৱ সাথে কথা বলাৱ প্ৰয়োজন মনে কৱি।
আর Mr. Soriful Khan—আপনি আমার ব্যক্তিগত জীবনে কথা বলার কোনো অধিকার রাখেন না।
(রুহির দিকে তাকিয়ে) She is my wife.
ওৱ ব্যাপারে ভদ্রভাবে কথা বলবেন।
দ্বিতীয়বার যদি এরকম কিছু শুনি, আমি ভুলে যাবো আপনি আমার বাবা।
আপনাৱ জিভ টেনে ছিঁড়ে ফেলতে আমি দু বাৱ ভাববো না!”
রুহি থমকে যায়। ক্রিশের এমন উত্তেজিত কণ্ঠে তার গলা শুকিয়ে আসে, কিন্তু সাহস করে ওর হাতটা ধরে ফেলে—
রুহি (ধীরে): “আপনি রাগ করছেন কেন? শান্তভাবে কথা বললেই তো হয়, তাই না?”
সরিফুল (বিদ্রূপের হাসি দিয়ে): “এই মেয়ে টাকার জন্যই আমার ছেলেকে ফুসলিয়ে বিয়ে করেছো। এখন ভালো সাজছো!”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

এই একটিমাত্র কথাতেই যেন ক্রিশের সব বাঁধ ভেঙে যায়।
মুহূর্তেই সে এগিয়ে গিয়ে সরিফুল সাহেবের কলার চেপে ধরে—
ক্রিশ (চোখ লাল হয়ে উঠেছে):
“Mr. Soriful Khan! আপনি কি আমাৱ হাতে খুন হতে চাইছেন?
কাকে ‘ফালতু মেয়ে’ বলছেন আপনি?
আপনাদের মতো নোংরা মানসিকতার মানুষ বুঝবে না—ও আমাকে ভালোবেসেছে আমার টাকার জন্য নয়, আমার জন্য।
আর ও আমাকে কোনোদিন ছেড়ে যাবে না… কখনোই না!”
রুহির চোখ ভিজে ওঠে, ওর আঙুলগুলো কাঁপছে, তবুও ক্রিশের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে থাকে—
কারণ এই মুহূর্তে ওর পাশে শুধু একজন মানুষ আছে—যে পৃথিবীর সব সম্পর্ক ভেঙে ফেলতেও দ্বিধা করবে না, শুধু তাকে বাঁচাতে।
ঘরের ভেতর যেন মুহূর্তেই ঝড় বয়ে গেল।
সরিফুল সাহেবের চোখে কঠিন বিদ্বেষ, ঠোঁটে হালকা ব্যঙ্গ—
সরিফুল (ঠান্ডা, কাঁটায় মোড়া কণ্ঠে):

“প্রমাণ কী আছে যে ও তোমাকে ভালোবাসে, ক্রিশ?
আর তুমিই বা কী প্রমাণ দিতে পারো যে তুমিও ওকে ভালোবাসো?
তোমার টাকার জন্য তো অনেক মেয়েই তোমার পেছনে পড়েছিল, আর তুমিও তো হাজারটা মেয়ের সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছো!”
সরিফুল সাহেবের স্ত্রী (চোখ ঘুরিয়ে):
“এই মেয়ে তুমি চেনো না, ক্রিশ কে।
দু’দিনেই তোমার প্রতি মন ভরে যাবে—এরপরই রাস্তায় ফেলে চলে যাবে।”
ক্রিশের মুখে তীব্র রাগের ঝলক দেখা যায়, সে এগিয়ে কিছু বলবে, কিন্তু রুহি তাড়াতাড়ি এগিয়ে এসে ওর হাত ধরে থামিয়ে দেয়।
সরিফুল (বিদ্রূপভরা স্বরে):

“যতদিন তোমার টাকা আছে, ততদিন এই মেয়েও থাকবে।
আর তুমিও টাকার গদির উপরে বসে এই মেয়েকে ভোগ করবে।
দিন আসবে, —তোমরা একে অপরকে ফেলে দেবে।
বাস্তবে, টাকা ছাড়া ভালোবাসা জানলা দিয়ে পালাই।”
এইবার ক্রিশের চোখ রক্তবর্ণ হয়ে ওঠে। ও রুহির হাতটা ধীরে ছেড়ে দিয়ে গর্জে ওঠে—
ক্রিশ: “Mr. Soriful Khan, তাহলে একটা কথা শোনেন—আজ আমি, ক্ৰিশ খান,
এই বাড়ি, গাড়ি, প্রপার্টি, টাকা—সব কিছু ছেড়ে চলে যাচ্ছি!
এই জাঁকজমক জীবন ছাড়াও আমি আমার Butterfly-কে ভালোবাসি, আর ও-ও আমাকে ভালোবাসে—এটা আমি আপনাকে প্রমাণ করে দেখাবো।

এক বছর—শুধু এক বছর সময় দিন।
আমি নিজে উপার্জন করব, আমার স্ত্রীকে খাওয়াবো, নিজের হাতে ওর জীবন সাজাবো।
আর ওই এক বছর পর, আমি আপনাদের এই বাড়ি, প্রপার্টি সবকিছু থেকে আপনাকে বের করে দেব—কারণ এগুলো আমার মায়ের, আপনার নয়!”
সরিফুল সাহেব ঠোঁটে এক ঠান্ডা হাসি খেলিয়ে বললেন—
“আর যদি এক বছর পর তুমি কিছুই করতে না পারো?
যদি তোমার এই বউ তোমাকে ছেড়ে চলে যায়?”
ক্রিশ (দৃঢ় চোখে):

“তাহলে সব আপনার নামে করে দেব, Deal done.”
তারপর রুহির হাতটা শক্ত করে ধরে ওর চোখে চোখ রেখে বলে—
ক্রিশ:“পারবে তো, Butterfly? আমার সঙ্গে থাকতে, যখন আমার কাছে কিছুই থাকবে না?”
রুহির চোখে জল চিকচিক করে ওঠে, কিন্তু ওর কণ্ঠ দৃঢ়— “পারব।
আপনি যেখানেই থাকবেন, আমি সবসময় আপনার পাশে আছি।”
ক্রিশ তখন পকেট থেকে তিনটা কার্ড বের করে সরিফুল সাহেবের মুখের দিকে ছুঁড়ে মারে।
কার্ডগুলো উড়ে গিয়ে টেবিলে পড়ে ছড়িয়ে যায়।
এক মুহূর্ত নীরবতা।
তারপর ক্রিশ রুহির হাত ধরে দরজার দিকে হাঁটতে শুরু করে—একবারও পেছনে না তাকিয়ে।
সরিফুল সাহেব বুকের উপর হাত রেখে সোফায় বসে পড়েন।
স্ত্রী (ছুটে গিয়ে):

“আপনি ঠিক আছেন? একটু পানি খাবেন?”
সরিফুল (হতভম্ব):
“আমি কি বড় ভুল করলাম ছেলেটার সঙ্গে?”
স্ত্রী মুখে নরম স্বর রাখলেও মনে মনে বিষাক্ত হাসি চেপে রাখেন—
(ভেতরে ভেতরে ভাবেন):
“এই সুযোগেই তো সব সম্পত্তি নিজের হাতে নিতে হবে… এখন থেকে খেলাটা আমিই খেলব।”
বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর ক্রিশ নিজের পুরনো বুলেট বাইকটার কাছে এসে দাঁড়াল।
বাইকটার গায়ে হাত রেখে ধীরে বলল,
ক্রিশ: “বসে পড়ো, Butterfly।
এটা আমার আম্মুর দেওয়া বাইক। আমি এটাকে খুব ভালোবাসি… এটা ছাড়া আমি থাকতে পারব না।”
রুহি হেসে সিটে উঠে বসলো।
ক্রিশ বাইক স্টার্ট দিল, আর জোরে ছুটে বেরিয়ে গেল তারা।
রুহি হঠাৎ হেসে বলল,

রুহি: “আচ্ছা, এই বাইকটা অনেক পুরনো না?”
ক্রিশ (হেসে): “হ্যাঁ, আমাৱ তখন আট বছর বয়স এটাকে কেনাৱ জেদ ধৱেছিলাম।
তখন আম্মু কিছু বলেননি, শুধু বলেছিলেন—
‘যেদিন আমি থাকব না, বাইকটা দেখলে তোৱ আমার কথা মনে পড়বে।’”
রুহির চোখে মুগ্ধতা ফুটে উঠল।
রুহি: “কিন্তু তখন তো আপনি বাইক চালাতেই পারতেন না!”
ক্রিশ (মুচকি হেসে): “লেদু, বড় হয়ে আমি শিখেছি”।
বাইকটা ছুটে চলেছে শহরের শেষপ্রান্তের দিকে।
রুহি (কৌতূহলে): “আচ্ছা, এখন আমরা কোথায় যাচ্ছি?”
ক্রিশ: “ফোনটা পকেট থেকে বাৱ কৱে দাও তো। আমানকে কল দাও”
রুহি পকেট থেকে ফোন বের করতে গিয়ে ক্রিশের কথায় থমকে গেল।
ক্রিশ (হেসে): “সাবধানে Butterfly, ভুল করে অন্য জায়গায় হাত দিও না।”
রুহি (রেগে গিয়ে): “অসভ্য লোক!”

ক্রিশ হেসে ওঠে। রুহি ফোনটা ডায়াল করে কানে ধরে দেয়।
ওপাশে আমানের গলা ভেসে আসে।
ক্রিশ: “এই, তোর কাছে কি কোনো সস্তা ভাড়া ঘরের খবর আছে?
যেখানে কিছুদিন থাকা যাবে?”
ওপাশ থেকে কী বলল শোনা গেল না, ক্রিশ আবার বলল,
“তোর বাসা লাগবে না, আমান।
একটা ভাড়ার ঘর লাগবে। ঠিকানা পাঠা, আমি যাচ্ছি।”
আমান: “ঠিক আছে, আমি-ও যাচ্ছি, ঠিকানা পাঠাচ্ছি।”
ফোন কেটে গেলে রুহি হেসে বলে,
রুহি: “আপনি কি জানেন, আপনাকে এখন সত্যি সিনেমার হিরোর মতো লাগছে”
ক্রিশ কিছু বলে না, শুধু হাসে। বাতাসে ওদের চুল উড়ে যায়, বাইকটা গর্জে ওঠে, আর শহরের আলো পিছনে পড়ে থাকে।
সামনে অজানা পথ, কিন্তু ওদের চোখে ভরপুর বিশ্বাস—
একটা নতুন জীবনের দিকে যাত্রা শুরু হলো।

সকালের রোদটা তখন একটু তেজ পেয়েছে।
রাস্তার ধারে শুকনো পাতার ওপর দিয়ে ক্রিশের বাইকটা ধীরে ধীরে এসে থামে।
ওরা একটা সরু গলির সামনে এসে পৌঁছেছে—গলিটা একটু নির্জন, দু’পাশে পুরনো দোতলা বাড়ি।
বাইক থামাতেই ক্রিশ দেখে, সামনেই রুদ্র আর আমান দাঁড়িয়ে আছে।
দু’জনেই যেন অপেক্ষা করছিল ওদের জন্য।
রুদ্র এগিয়ে আসে, মুখে একটু দুষ্টু হাসি।
রুদ্র: “কি রে ভাই, এই বাড়ি ভাড়া নিয়ে কি করবি?”
ক্রিশ হালকা হেসে হেলমেট খুলে বলে,
ক্রিশ: “থাকব।”

আমান অবিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে থাকে।
আমান: “সিরিয়াসলি? তুই এই বাড়িতে থাকবি, তাও আবার রুহিকে নিয়ে?”
ক্রিশ: “হ্যাঁ। চাবিটা দে, বাড়িওয়ালা কোথায়?”
রুদ্র পকেট থেকে একটা চাবির গোছা বের করে হালকা ঘোরায়।
রুদ্র: “বাড়িওয়ালার সঙ্গে আমি কথা বলেছি। চাবিটা আমার কাছেই আছে।
তবে ভাই, আর একটু খুঁজলে ভালো বাড়ি পেতে পারতি।”
ক্রিশ কাঁধ ঝাঁকায়, হালকা হেসে বলে,
ক্রিশ: “এখন আপাতত এইটাতেই হবে।”
আমান পাশে দাঁড়িয়ে মাথা নাড়ে।

আমান: “আমি তো এখনও বুঝতে পারছি না, তুই হঠাৎ বাড়ি ছেড়ে এখানে থাকতে এলি কেন?”
ওদের কথার মাঝেই রুহি একটু এগিয়ে আসে, মুখে শান্ত একটা হাসি।
রুহি: “আসলে আমি চাই আমাদের নিজেদের একটা ছোট্ট বাড়ি হোক।
উনি নিজে কাজ করবেন, নিজের টাকায় আমায় খাওয়াবেন—বাড়ির টাকায় না।”
ক্রিশ রুহির দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে মাথা নাড়ে।
ক্রিশ: “চল, বাড়িটা আগে দেখি। আপাতত এখানেই থাকব।
ভালো কোনো কাজ পেলে এরপর ভালো বাড়ি নেব।”
আমান হালকা হেসে বলে,
“ঠিক আছে, চল তবে। দেখি তোমাদের নতুন ‘রাজপ্রাসাদটা’ কেমন।”
তিনজন হাসতে হাসতে গলিটার ভেতরে ঢুকে যায়, রুহি পিছন থেকে ক্রিশের হাতটা আলতো করে ধরে।
তিনজন গলির ভেতর দিয়ে হেঁটে এল।
গলিটার শেষ মাথায় একটা ছোট্ট বাড়ি।

— কিন্তু কাছ থেকে দেখলে বোঝা যায়, অনেক পুরনো, ভাঙাচোরা।
রুদ্র চাবিটা তালায় ঘুরাতেই একদম কর্কশ শব্দে দরজাটা খুলে গেল।
ভেতরে ঢুকতেই ধুলোর গন্ধ নাকে এল, যেন বহুদিন কেউ এখানে থাকেনি।
সকালের আলোটা একটা ভাঙা জানালা দিয়ে ভেতরে ঢুকছে, তাতে বাতাসে ধুলোর কণা উড়ে বেড়াচ্ছে।
ঘরটা ছোট, মাটির মেঝে, চারদিকে ফাটল ধরা দেওয়াল।
চোখে পড়ল এক কোণে একটা ছোটো চৌকি রাখা কিন্তু তাতেও ধুলো জমে আছে।
ঘরের ডানদিকে একটা চোট্ট বাথরুম, দরজাটা টিনের — কাঁপলে কিঁচকিঁচ করে।
ভেতরে একটা পুরনো কল, তাতে জল আসে কিনা তাও বোঝা মুশকিল।
আর পেছনের দিকের দেয়াল ঘেঁষে একটা চোট্ট বারান্দা — বারান্দা মানে একটা খোলা জায়গা, যেখানে দাঁড়ালে বাইরে রাস্তা দেখা যায়।

সেখানে একটা পুরনো চেয়ার পড়ে আছে, এক পায়ে ভাঙা।
ছাদের দিকে তাকাতেই বোঝা গেল, পুরো ঘরটার উপরে শুধু টালি দেওয়া ছাউনি, বাঁশের কাঠামো।
ক্রিশ ধীরে ধীরে চারপাশে তাকায়, চোখে একটুখানি হাসি।
ক্রিশ: “ঘরটা ছোট, কিন্তু নিজের বলেই ভালো লাগছে।”
রুহি মৃদু হেসে বলে: “এখনো কিছুই তো নেই… একটা চেয়ার, একটা খাট আছে পর্দা আৱ বাসন থালা আৱ কিছু দৱকাৱি জিনিষ কিনতে হবে।”

আমান হেসে বলে: “দেখে মনে হচ্ছে, তোরা এখনই ঘর সাজানোর কাজ শুরু করবি!”
ক্রিশ: “হ্যাঁ, এখান থেকেই শুরু হবে ”।
রুহি চারপাশে একবার তাকিয়ে নেয়। ঘরটা একদম ফাঁকা—ধুলো, জাল আর পুরনো গন্ধে ভরা।
তবুও তার মুখে একটা আলাদা উচ্ছ্বাস।
সে নিজের ওড়না শক্ত করে বেঁধে বলে উঠল,
রুহি: “চলুন, কাজ শুরু করি। নতুন ঘর মানেই প্রথমে পরিষ্কার কৱতে হবে!”
ক্রিশ হেসে মাথা নাড়ে।
রুদ্র আর আমান দরজার পাশে দাঁড়িয়ে হাসে।
রুহি পাশের ঝুড়ি থেকে একটা পুরনো ঝাঁটা বের করে নেয়—ঝাঁটার কাঠি ভাঙা, তবুও সে সেটাই দিয়ে ঘরের কোণ কোণ ঝাড়তে শুরু করে।

রুহিঃ “এই ঘরে এত ধুলো, মনে হচ্ছে কেউ বছর দুয়েক পা রাখেনি।”
আমান (মজা করে): “তুমি পরিষ্কার করো, আমরা বাইরে বসে মনিটর করব!”
রুহি: “আপনাদের অতিথির মতো মনিটর না করে কাপড় দিয়ে জানালা মুছুন!”
সবাই হেসে ওঠে।
রুহি ধুলো উড়িয়ে ঘর মুছতে থাকে, আর ক্রিশ বাইরে বারান্দা থেকে ভাঙা চেয়ারটা টেনে আনে।
চেয়ারটার এক পা ভেঙে গিয়েছিল, কিন্তু ক্রিশ মাটিতে বসে পুরনো দড়ি আর কাঠের টুকরো দিয়ে সেটাকে জোড়া লাগাতে থাকে।

রুহি: “আপনি জানেন, আপনাকে এখন কাঠমিস্ত্রি বলে ডাকতে ইচ্ছে কৱছে!”
ক্রিশ (হেসে): “আমি আমার Butterfly-র জন্নে সব মিস্ত্রি হতে ৱাজি!”
রুহি হেসে ফেলে, ঝাঁটার ধুলো উড়ে গিয়ে তার চুলে লেগে যায়।
ক্রিশ উঠে এসে তার মাথা থেকে ধুলো ঝেড়ে দেয়,
ক্রিশ (আস্তে): “একটু কষ্ট’ কৱ খুব তাৱাতাৱি সব ঠিক করে ফেলব।”
রুহি মাথা নেড়ে হাসে, চোখে একটু জল চিকচিক করে ওঠে।
রুহি: “আমি জানি… আপনি পারবেন।”
এদিকে রুদ্র আর আমান বাইরে দাঁড়িয়ে দেখে—

আমান (আস্তে রুদ্রকে): “দেখলি? ভালোবাসা থাকলে একটা ফাঁকা ঘরও ঘর হয়ে যায়।”
রুদ্র হেসে বলে, “হ্যাঁ ভাই, ওদের ঘরটা হয়তো ছোট… কিন্তু সুখটা বড়।”
ভেতরে তখন ক্রিশ পুরনো চেয়ারটা মেরামত শেষ করে রুহিকে বসতে বলে,
ক্রিশ: “এই নাও, এখন এটা তোমার সিংহাসন।”
রুহি হেসে বসে পড়ে,
রুহি: “আর আপনি?”
ক্রিশ (চোখ টিপে): “আমি তোমার রাজা—এই রাজ্যের একমাত্র প্রজা।”
ঘরের ভেতর হাসির শব্দ ভেসে ওঠে।
ছোট্ট সেই ঘর, ধুলোমাখা মেঝে, টালিৱ ছাদ—সবকিছু যেন নতুন প্রাণ পায়।

দুপুরের গরমে যখন সবাই ঘরে ঢুকে গেছে, তখনও ক্রিশের বাইকটা ছোট্ট গলিটার শেষ মাথায় থামে।
ক্রিশ বাইক থেকে নেমে বাজারের ব্যাগটা হাতে নেয়।
ভেতরে আছে হাঁড়ি, থালা, বালতি, চাল, ডাল, আলু আর কিছু মশলা।
রুহি অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকে।
রুহি: “আপনি একাই এতসব নিয়ে এলেন?”
ক্রিশ (হেসে): “হ্যাঁ। তোকে কিছু করতে হবেনা। তুই শুধু বসে থাক।”
রুহি অবাক হয়ে বলে,
রুহি: “আপনি রাঁধবেন?”
উনুনে ৱান্না কৱতে পাৱবেন?
ক্রিশ: “হ্যাঁ, আমি রাঁধব। তোকে খাওয়াবো।”
সে হাতা গুটিয়ে নেয়, চুলো ধৱাতে যায়।
রুহি থামাতে চায়—
রুহি: “না, আপনি পারবেন না, আমি চেষ্টা কৱি।”
ক্রিশ: “আমি পাৱবো চুপ কৱে বসো।”
রুহি চুপ হয়ে যায়।

ক্রিশ হাঁড়িতে জল ঢালে, চাল ধোয়, ডাল ফোটায়।
ঘরের ভেতর ধীরে ধীরে ভাতের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
জানলা থেকে রোদ এসে পড়ছে, আলোটা তার ঘামভেজা মুখে পড়ে চকচক করছে।
রুহি কোণে দাঁড়িয়ে চুপচাপ তাকিয়ে থাকে —
ভাত হয়ে গেলে ক্রিশ হালকা হেসে বলে,
ক্রিশ: “এই তো, শেষ। এখন তুমি বসে পড়ো, আমি পরিবেশন করি।”
রুহি এগিয়ে এসে বলে,
রুহি: “আপনি হাত মুখ ধুয়ে আসুন, আমি বসে পড়ছি।”
ক্ৰিশ হাত মুখ ধুয়ে আসে,

mad for you part 15

ৱুহি থালা সাজিয়ে ভাত, ডাল, আলুভাজা রাখে।
দু’জনে মাটিতে বসে খেতে শুরু করে।
প্রথম লোকমা মুখে দিতেই রুহির চোখে জল আসে।
রুহি (আস্তে): “এত কষ্ট করছেন কেন?”
আমাকে না বিয়ে কৱলে আপনাকে এত কষ্ট’ কৱতে হতো না।
ক্রিশ (মুচকি হেসে): “খাওয়াৱ সময় কাঁদতে নেই্ হাবি এদিকে আয় আমি খাইয়ে দি।”

mad for you part 17

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here