mad for you part 21

mad for you part 21
তানিয়া খাতুন

রাত তখন ঘড়ির কাঁটা ঠিক বাৱোটা ছুঁই ছুঁই।
বাইরে অদ্ভুত নীরবতা, কিন্তু ক্রিশের মুখে সেই নীরবতার গন্ধ নেই—তার হাবভাব দেখলে মনে হচ্ছে মাত্রই সন্ধে হয়েছে।
রুহির দেওয়া শার্ট আর প্যান্ট পরে ক্রিশ নানা রকম পোজ দিচ্ছে।
ক্রিশ যেন পুরো মডেলিং শো বসিয়ে ফেলেছে—কখনো হাত চুলে চালায়, কখনো পাশ ফিরে দাঁড়ায়, আবার কখনো রুহির দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে হাসে।
রুহি ফোনে ফটো তুলতে তুলতে বিরক্ত হয়ে যায়।

ক্রিশ: “এই শার্টটাই হেভি লাগছে আমায়, বাটারফ্লাই… আর একটা তোলো না।”
রুহি: “দূর, আপনি বসুন তো… আর কত ছবি তুলবেন? আপনার সাথে আমার কথা আছে।”
রুহির ৱাগ কৱা দেখে ক্রিশ পোজ দেওয়া ছাড়ে। সে এগিয়ে এসে চৌকিতে বসে, তারপর খুব সহজে রুহির কোমর ধরে তাকে নিজের কোলে তুলে নেয়।
রুহির নিশ্বাস আটকে আসে।
ক্রিশ: “আগে এটা বলো—এত টাকা কোথায় পেলে? ‌কে এত পাকনামি কৱতে বলেছে হ্যাঁ ?”
রুহি হালকা কাঁপা কাঁপা গলায় ক্রিশের বুকে ঢলে পড়ে—এমনভাবে যেন পুরো শরীরটাই ক্রিশের ভেতর ঢুকে যেতে চাইছে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রুহি: “এটা আমার কলারশিপের টাকা… অনেক দিন জমিয়ে রেখেছিলাম, এখনও আছে কিছু।”
ক্রিশ হেসে তার গলা জড়িয়ে ধরে নাকে নাক ঘষে।
ক্রিশ: “বা! আমার বউ আমার থেকেও বড়লোক! তবে আর খরচা করবে না। যা লাগবে, আমাকে বলবে।”
রুহি ঠোঁট ফুলিয়ে বলে—
“কিন্তু… আমি তো আরও কিছু কিনেছি।”
ক্রিশ: “আবার কি কিনেছো?”
রুহি তার কোলে থেকে নামল, ব্যাগটা টেনে নিয়ে বেশ কয়েকটা বুক আর নোটস বের করে ক্রিশের সামনে রাখল।
তারপর আবার আগের মতো তার কোলে উঠে বসল।
ক্রিশ পুরো অবাক। সে এক মুহূর্ত রুহির কান্ড দেখে কিছুই বলতে পারে না।
রুহি: “এগুলো দেখছেন? এগুলো আপনার বুক আর নোটস।
আজ থেকে আপনি আমার কাছে পড়বেন… এস্কাম দেবেন তারপর একটা ভালো কোম্পানিতে জব করবেন।”
ক্রিশ রুহির মাথায় হালকা ঠোকা দেয়।
ক্রিশ: “পাগল নাকি? এগুলো আমার দ্বারা হবে না। আর কাজেও তো যেতে হবে—পড়বো কখন? এগুলো ফেৱত দিয়ে দেবে।”

রুহি সঙ্গে সঙ্গে মুখ ফুলিয়ে ফেলে—চোখে হালকা পানি জমে ওঠে।
রুহি: “আপনি আমায় একটুও ভালোবাসেন না! যান কথা বলবেন না আমার সাথে!”
ক্রিশ: “এসব কী বাচ্চাদের মতো কথা? এখানে ভালোবাসার কথা ঢুকলো কেন?”
রুহি: “আপনি দিনে কাজ করবেন, রাতে এসে পড়বেন—তাহলেই বুঝব আপনি আমায় ভালোবাসেন।”
এবার আর ক্রিশ নিজেকে ধরে রাখতে পারে না—সে রুহিকে জড়িয়ে শক্ত করে নিজের বুকে চেপে ধরে।
ক্রিশ: “বুঝার চেষ্টা করো জান… রাতে পড়াশোনা করলে তোমায় আদর করবো কখন?”
রুহি গম্ভীর মুখে বলে—

রুহি: “আপনি পড়াশোনা করবেন… তারপর আমি আপনাকে আদর করতে দেব।
নয়তো দেবো না। পাশে ঘুমাতেও নেবো না। হু!”
ক্রিশ গভীর নিশ্বাস ফেলে—রুহি জেদ ধৱেছে মানে সেটা কৱেই ছাড়বে। এভাবে ওকে বোঝানো যাবে না।
অবশেষে পরাজিত ভঙ্গিতে বলে—
ক্রিশ: “বেশ… তবে পড়ান আমাকে, ম্যাডাম।”
রুহি খিলখিল করে হেসে একটা বুক তুলে নেয়।
তারপর শিক্ষিকার মতো চোখ বড় বড় করে পাতার দিকে তাকায়।
ক্রিশ রুহির মুখের দিকে তাকিয়ে বোকার মতো হাঁসে—
রুহি পড়ানো শুরু করে…
আর ক্রিশ?
সে সত্যিই বোঝার চেষ্টা করে—কারণ রুহির জেদের কাছে তার সবকিছুই হার মানে।

সকালবেলা ক্ৰিশ বাইরে গেছে কিছু জিনিস আনতে— সব দিয়ে তাৱপৱ কাজে যাবে।
ৱুহি আজ থেকে কলেজে যাবে না বলে দিয়েছে।
সারাদিন বাসায় থেকে পড়াশোনা করবে—এমনটাই ভেবেছে।
গোছগাছ সেরে ৱুহি স্নান করতে ঢুকল ওয়াশরুমে। বের হবে তখনি ওর মনে পড়ে—গোসল করতে এত তাড়াহুড়ো করেছে যে জামাকাপড় আনতে ভুলে গেছে।
তোয়ালেটা শক্ত করে গায়ে জড়িয়ে ৱুহি একটু ইতস্তত করল।
তারপর ধীরে ধীরে ঘরের দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি মারল—ক্ৰিশ আছে কিনা দেখার জন্য।
ঘর পুরো চুপচাপ।

ক্ৰিশ নেই বুঝে ৱুহি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
ও দ্রুত ভেতরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল।
দেয়ালের পাশে ঝোলানো দড়ি থেকে নিজের চুড়িদার নামাতে যাবে—ঠিক তখনই—
হঠাৎ পিছন থেকে কারোর শক্ত, উষ্ণ বুকের সঙ্গে ধাক্কা খায় ও।
ৱুহি স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে যায়।
ক্ৰিশ দুই হাত দিয়ে ৱুহি’র কোমর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে।
এক মুহূর্তে যেন পুরো ঘরটা থমকে গেল।
ক্ৰিশ ধীরে ধীরে ৱুহিকে ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখে নেয়—
ভেজা চুল কোমর পর্যন্ত ঝরে পড়ছে,

মুখের কোণে পানির ফোঁটা গড়িয়ে এসে থুতনিতে জমছে,
চোখ দুটো একটু ভীত–বিহ্বল,
আর সারা শরীর জুড়ে পানির ছোট ছোট ফোঁটা ঝিলমিল করছে।
তোয়ালেটার নীচ থেকে উন্মুক্ত ফুটফুটে ফর্সা পা—
এই অর্ধেক লুকানো, অর্ধেক ভেজা রূপ ক্ৰিশেৱ–এর মনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ক্ৰিশ আর চোখ ফেরাতে পারে না।
সে কেমন মোহগ্রস্তের মতো দাঁড়িয়ে ৱুহি’কে দেখে যাচ্ছে—
ৱূহি স্থির…

ক্ৰিশ দু’হাতে ৱুহির কোমর জড়িয়ে ধরল। তারপর ধীরে ধীরে তার ভেজা চুলগুলো কানের পিছনে গুঁজে দিল।
চোখে অদ্ভুত এক অধিকার, গলায় গভীরতা—
ক্ৰিশঃ “Butterfly… এই পানিগুলো তোকে ছুঁয়েছে কোন অধিকার?
তোকে ছোঁয়ার অধিকার তো শুধু আমার।”
কথাটা শুনে ৱুহি হকচকিয়ে যায়।
মনে মনে ভাবে—এ কেমন কথা! সে কি তাহলে স্নান করবে, ক্ৰিশেৱ এই উগ্র আচরণ ৱুহিৱ মাথায় ঢোকে না।
ক্ৰিশ তার আঙুলগুলো ৱুহির গলার ওপর বোলাতে বোলাতে পানি মুছে দিতে থাকে।
তার স্পর্শে ৱুহির শরীর কেঁপে ওঠে, চোখ দুটো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসে।
শ্বাসটাও যেন আটকে যায়।
ৱুহি খুব আস্তে বলে—

“আপনি কাজে যাবেন না?”
ক্ৰিশ তার মুখটা ৱুহির কানের কাছে এনে ফিসফিস
“যাবো, butterfly… তার আগে আমাৱ কিছু কৱতে মন চাইছে।
এই পানিগুলোকে দেখে আমার খুব হিংসা হচ্ছে…
আমি আমার নিজের ছোঁয়ায় সব পানি মুছে দেব।”
বলেই ক্ৰিশ নিচু হয়ে ৱুহির গলার উপর দিয়ে গড়িয়ে নামা জলফোঁটাগুলো জিভ দিয়ে আস্তে আস্তে শুষে নেয়।
ৱুহি শ্বাস আটকে ফেলে।
চোখ বন্ধ, ঠোঁট কাঁপছে—শব্দ বের হয় না।
শেষমেশ সে কাঁপা কণ্ঠে বলে—
ৱুহিঃ “আমি এখনই স্নান করে আসছি… আবার স্নান করতে পারব না… আর দেখুন, ৮টা বেজে গেছে… আপনার কাজে দেরি হয়ে যাবে…”

ক্ৰিশ গভীর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
নিজের ভেতরের আগুন চাপা দিতে পাঁচ’সেকেন্ড চোখ বন্ধ করে থাকে।
মনে হয় নিজের শরীরটাকেই নিয়ন্ত্রণ করছে।
ৱুহি আস্তে করে সরে যাওয়ার চেষ্টা করতেই—
ক্ৰিশ এক লাফে সামনে এসে পথ আটকে দাঁড়ায়।
ৱুহি ডানদিকে গেলে ক্ৰিশ‌ও ডানদিকে যায়।
ৱুহি বাঁ দিকে সরতেই বাঁ দিকে আবার বাঁ দিকেই চলে আসে।
ক্ৰিশ: “এই টিকটিকি টা কোথা থেকে এলো?”
টিকটিকির নাম শুনতেই ৱুহি চমকে লাফিয়ে উঠে।
পিছনে তাকানোর সাহস নেই—
এক লাফে সোজা ক্ৰিশে–এর কোলে উঠে পড়ে।
তার ভয়ে জড়িয়ে ধরা এত শক্ত যে ক্ৰিশেৱ ভেতৱে কাৱেন্ট লাগে।
ক্ৰিশঃ “ভাবছি একটা টিকটিকি পুষবো… যখনই আমার কাছে আসতে চাইবি না, তখনই গায়ে ছাড়ব।”
ৱুহি চোখ দুটো শক্ত করে বন্ধ করে ফিসফিস করে
“Please… ওটা সরান প্লিজ…”

ক্ৰিশ ঠোঁট কামড়ে দুষ্টু হেসে বলে—
“কিছু থাকলে… তারপর না সরাবো?”
ৱুহি ভুরু কুঁচকে তার দিকে তাকায়।
ৱুহি: “মানে? আপনি আমাকে ভয় দেখাচ্ছেন!”
মুহূর্তেই ৱুহি তাড়াহুড়ো করে ক্ৰিশেৱ কোল থেকে নেমে যায়।
তারপর ক্ৰিশের বুকে কয়েকটা কিল দেয় রাগ মেশানো ভঙ্গিতে।
ক্ৰিশ তার হাতগুলো চেপে ধরে হালকা বাঁকা হাঁসিতে তাকিয়ে থাকে ৱুহির দিকে—
ঠিক তখনই র তোয়ালেটা আলগা হয়ে ফসস করে নিচে পড়ে যায়।
ৱুহিঃ “আহহহহহহহহহহহহহ… অসভ্য লোক!”
ক্ৰিশ চিৎকার করে তোয়ালে ধরতে যায়,

আর ক্ৰিশ অবাক হয়ে থেমে যায়—চোখ বড় বড় কৱে।
ৱুহিৱ চিৎকার কৱতেই ক্ৰিশ তাড়াতাড়ি হাত দিয়ে নিজের চোখ ঢেকে নেয়।
ক্ৰিশ: “কাঁদে না লেদু সোনা, আমি কিছু দেখিনি… প্রমিস!”
ৱুহিঃ “আপনি মিথ্যে বলছেন!”
ক্ৰিশ হেঁসে বলে—
“ঠিক আছে, তাহলে ভালো করে দেখি…”
বলে সে চোখ থেকে হাত সরাতে চাইলেই—
ৱুহি তৎক্ষণাৎ নিজেৱ দুহাত দিয়ে হাতটাই দিয়ে ক্ৰিশের চোখ ঢেকে দেয়!
ৱুহি: “অসভ্য লোক… যান! কাজে যান!”
ক্ৰিশ দুষ্টু হাসি থামাতে না পেরে পেছন দিকে একটু হেলে দাঁড়িয়ে থাকে, আর ৱুহি তাড়াহুড়ো করে তোয়ালে তুলে গায়ে জড়িয়ে নেয়।

বিকেলে রুহি হাতে বই নিয়ে উঠোনে পায়চারি করছিল।
পাতায় পাতায় ডুবে থাকা মেয়েটা হঠাৎ থমকে যায়—ক্রিশ সাইকেল চালিয়ে আসছে।
রুহি একটু অবাক হয়ে এগিয়ে গিয়ে মুচকি হেসে বলল,
“আমি কি ঠিক দেখছি, মি. ক্রিশ খান? সাইকেল? ইন্টারেস্টিং তো।”
ক্রিশ সাইকেল থেকে নামতেই তার চোখে সেই চেনা দুষ্টু হাসি।
“তোমার প্রেমে আমি এমন ভাবে ডুবেছি, বাটারফ্লাই… যে তোমার জন্য আমি সব করতে পারি।”
রুহি চোখ উঁচু করে বলল,

“এই ভন্ডামি বাদ দিন। প্রথমেই বলুন, আপনার বাইকটা কোথায়?”
ক্রিশ মাথা চুলকে হালকা -হাসি দিয়ে বলল,
“ওটার একটু সমস্যা হয়েছে। সার্ভিসে দিয়েছি। এই সাইকেলটা রোহিমের কাছ থেকে নিয়েছি, তিন দিন ধরে এটাতে চলতে হবে।”
রুহি মুচকি হেসে বলল,
“আচ্ছা, চলুন তাহলে। আগে খেয়ে নিন। মনে আছে তো—আপনি আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবেন বলেছেন?”
ক্রিশ হঠাৎ এগিয়ে এসে রুহিকে কোলে তুলে নিল।
ঘরের ভেতর ঢুকতে ঢুকতে বলল,
“আজকে তো বাইক নাই, বউ। আমার ম্যাডাম কি সাইকেলে উঠতে পারবে?”
রুহি লাজুক হাসি দিয়ে বলল,
“খুব পারব। আজ আপনিই আমাকে সাইকেলে করে ঘোরাবেন… আর হ্যাঁ, ফুচকাও খাব।”
ৱুহি চৌকিতে বসিয়ে ক্রিশ বলল,
“ব্যাস , এইটুকু।”
রুহি মাথা নেড়ে,
“উম্ম… হ্যাঁ, আপাতত এইটুকুই।”
ক্রিশঃ “বেশ, তুমি খাওয়ার রেডি করো। আমি আসছি।”

সন্ধ্যা নেমে এসেছে। চারদিকে মৃদু অন্ধকার, বাতাসে শীতল নরম হাওয়া।
রুহি রেডি হয়ে বারান্দায় দাঁড়াতেই দেখে—ক্রিশ সাইকেল নিয়ে বাইরে অপেক্ষা করছে।
তার চোখে সেই চেনা শান্ত হাসি, যেন সারাদিনের ক্লান্তি ধুয়ে দিয়েছে।
রুহি হাসতে হাসতে এগিয়ে এসে বলল,
“চলুন।”
ক্রিশ একটু অস্বস্তি নিয়ে বলল,
“আমি একটা রিকশা ডাকি… না মানে, সাইকেলে তোর অসুবিধা হবে, বাটারফ্লাই।”
রুহি ভ্রু তুলে মাথা নেড়ে বলল,
“না, আমি সাইকেলেই যাব।”
বলে সে সাইকেলের সামনে গিয়ে আলতো করে বসে পড়ে।
ক্রিশ অবাক হয়ে বলল,
“এখানে বসবে? পায়ে ব্যথা হবে তো।”
রুহি ঠোঁট কামড়ে মুচকি হেসে বলল,
“কিছু হবে না, চলুন।”

ক্রিশ একটু থেমে তাকিয়ে রুহির মুখে সেই জেদ মেশানো মিষ্টি হাসি দেখে নিজেও হাঁসল।
ধীরে কাছে এসে রুহির কপালে একটা নরম চুমু দিল।
তারপর সাইকেল চালানো শুরু করতেই রুহি স্বভাবতই সামান্য পিছনে হেলে ক্রিশের বুকে ঠেস দিয়ে বসল।
ক্রিশের শ্বাস তার চুল ছুঁয়ে যাচ্ছে।
রুহির চুল বাতাসে উড়ছে, সেই সুবাস ক্রিশের গলা জড়িয়ে আছে।
রুহি হাসতে হাসতে মাথা ঘুরিয়ে ক্রিশের দিকে তাকাল—
তার চোখে আনন্দ, নিরাপত্তা আর ভালোবাসার মিশ্র আলো।
ক্রিশ এক হাত দিয়ে হ্যান্ডেল ধরে, অন্য হাত রুহির কোমরের কাছে হালকা নিরাপত্তা দিয়ে রাখল।
নরম হাওয়ার সাথে দুইজনের নীরব ঘনিষ্ঠতা—যেন পৃথিবীৱ সময় কে থামিয়ে দিয়েছিল।
ক্রিশ সাইকেল চালাতে চালাতে অনেক দূর এগিয়ে গেছে।
রুহির চুলে হাওয়া খেলছে, মুখে সেই খুশির ঝিলিক।
হঠাৎ রুহি আঙুল তুলে সামনে দেখাল—

“ওই তো ফুচকা! ওখানেই চলুন… আমাৱ খিদে পেয়েছে।”
ক্রিশ হেঁসে সাইকেলটা ঠিক দোকানের সামনে থামাল।
রুহি লাফিয়ে নেমে গিয়ে বলল,
“কাকু, বেশি করে ঝাল দিয়ে ফুচকা বানাবেন।”
ক্রিশ ভ্রু কুঁচকে বলল,
“হাঁ, তবে বেশি না… শরীর খারাপ করবে।”
রুহি চোখ বড় করে বলল,
“শুধু আমি না, আপনিও খাবেন।”
ক্রিশ হেসে কিছু বলতে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই তার ফোন বেজে উঠল।
সে একটু সরে গিয়ে ফোন কানে ধরল।
দোকানদার রুহিকে ফুচকা ধরিয়ে দিল।
রুহি একটা মুখে পুরে হাসতে হাসতে ক্রিশের কাছে এগোতে লাগল—
তার চোখে আনন্দ, মুখে ফুচকার ঝাল মাখা লাল আভা।
ঠিক সেই সময়—

একটা বাইক হঠাৎ তীব্র গতিতে এসে রুহির সামনে ব্রেক কষল।
বাইকের পেছন থেকে কেউ কিছু একটা ছুঁড়ে মারল রুহির মুখের দিকে—
আর মুহূর্তেই বাইকটা গতি বাড়িয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেল।
ছপ্!
রুহি মুহূর্তেই চিৎকার করে উঠল—
“আআআআআআআআআআআআআআ!”
সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল, দু’হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে চিংকাৱ কৱে কাঁদতে লাগল জ্বালায় ছট্ফটিয়ে উঠলো। ৱুহি বুঝলো এটা পুড়ে যাওয়ার কষ্ট…
এটা অ্যাসিড।
ক্রিশ দাঁড়িয়ে—রুহির চিৎকার তার কানে তীক্ষ্ণ ছুরির মতো ফুটে ঢুকল।
ফোন তার হাত থেকে পড়ে গেল পথের ধুলোয়।
ক্রিশ আর কিছু ভাবতে পারল না—

পাগলের মতো দৌড়াতে দৌড়াতে রুহির দিকে ছুটল।
মাটিতে কুঁকড়ে থাকা রুহিকে আগলে কোলে তুলে নিল।
“কি হইছে বাটারফ্লাই?দেখি কী হয়েছে?”
রুহির কণ্ঠ কাঁপছে, চোখে পানি, তার হাত, গাল, চিবুক জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে অ্যাসিডে।
ৱুহিঃ “ক্রিশ… আমার মুখ জ্বলে যাচ্ছে… জ্বলে যাচ্ছে… পুৱে যাচ্ছে…”
ক্রিশের বুকটা মুহূর্তে খালি হয়ে গেল।
তার চোখ লাল, শ্বাস কাঁপছে—
“কিছু হবে না! কিছু হবে না, বাটারফ্লাই!
আমি আছি তো…
কে করল এটা?

কোন মাদার…** দম‌ থাকলে সামনে আয় বেহেন”**
ঠিক তখন পাশে থাকা এক লোক এগিয়ে এল।
তার কণ্ঠ স্থির, উদ্বিগ্ন—
“ভাই, আসুন। আমার গাড়ি আছে। হসপিটালে নিয়ে চলুন।”
ক্রিশ রুহিকে শক্ত করে কোলে চেপে ধরে বলল,
“ভাই, অনেক ধন্যবাদ… প্লিজ, তাড়াতাড়ি চলুন।
আমার বাটারফ্লাই অনেক কষ্ট পাচ্ছে… প্লিজ…”

mad for you part 20

লোকটা পথ দেখাতে লাগল গাড়িৱ কাছে নিয়ে যায়।
ক্রিশ রুহিকে বুকে আগলে ধরে দৌড়াতে দৌড়াতে বলল—
“কিছু হবে না, বাটারফ্লাই এই বাটারফ্লাই চোঁখ খোল দেখ … আমি আছি… আমি তোকে কিছু হতে দেব না… দেখ না বাটারফ্লাই , কথা বল না , কথা বলছিস না কেনো?”

mad for you part 22

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here