mad for you part 3

mad for you part 3
তানিয়া খাতুন

রাত হয়ে গেছে, চারিদিক অন্ধকারে ঢেকে গেছে।
রুহি হোস্টেলের রুমে বসে পড়াশোনা করছিল।
তার থেকে কিছুটা দূরে সিমরান ফোনে ব্যস্ত।
হঠাৎ রুহির চোখের সামনে ক্রিশের মুখ ভেসে উঠল।
রুহি চোখ বন্ধ কৱে মাথা নাড়ল আবার পড়ার দিকে মন দেওয়ার চেষ্টা করল।
ক্রিশ সাদা শার্ট পরে বাইকে আসার দৃশ্যটা মনে পড়তেই রুহি বিরক্ত হয়ে উঠে বিছানার দিকে চলে গেল।
তারপর সিমরানের পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ল।

সিমরানঃ “কি ব্যাপার মা, তুমি এতো তাড়াতাড়ি পড়া ছেড়ে উঠে গেলে?”
রুহিঃ “আচ্ছা সিমরান, আমার কি ওনার কাছে সরি বলা উচিত?”
সিমরান অবাক হয়ে বলল, “এই উনি টা কে আবার?”
রুহিঃ “ওই যে, কলেজের ক্রিশ ভাই।”
সিমরানঃ “ওহ, আচ্ছা কলেজের ক্রিশ ভাই।”
“ছিঃ ছিঃ, ওটা তো কি সুন্দর হ্যান্ডসোম ছেলে! ভাই বললে কেমন লাগে, ওফফ কী হাইট, কী ফিগাৱ পুৱাই মাৱ ডালা।
আমি তো ওকে লাভ লেটার দেব।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রুহি সিমরানের মাথায় গাট্টা মেৱে বলে “তোর তো সব ছেলেকেই ভালো লাগে, ফালতু মহিলা।
যেটা জিজ্ঞেসা কৱেছি , সঠিক উত্তর দে।”
সিমরানঃ “ওহ হ্যাঁ, কি জানি বললি, তুই সরি বলবি কি না তাই তো?
একদম ঠিক, তুই ওর অনুমতি না নিয়ে ওর ইজ্জত হাত দিয়েছিস , সরি তো বলতেই হবে।”
রুহি চোখ ছোট করে তাকিয়ে সিমরানের দিকে দেখল।
সিমরান মৃদু হাসল, “না মানে, তুই শুধু কিস করেছিস, এটা নরমাল।
কিন্তু ভাই, আমি যদি তোর জায়গায় থাকতাম, তাহলে ভালো হতো। ওহ, তোর ভাগ্য কতটা ভালো!”
রুহিঃ “ভাট বকা বন্ধ করে ঘুমা, কাল কলেজে যেতে হবে।”
সিমরানঃ “আচ্ছা, সোন, বলি কি? তুমি তো ওকে সরি বলবি, সেটা কি শুধু মুখে বলা ভালো দেখায়?”
রুহিঃ “তাহলে কি মুখে বলব?”
সিমরানঃ “না মানে, তুই একটা চকোলেট বক্স দিয়ে বলতে পারিস।”
রুহিঃ “ওকে, কাল সকালে দেখা যাবে, আমাকে ঘুমাতে দে, মাথা যন্ত্রনা করছে।”
সিমরান মৃদু হেসে মনে মনে খুশি হলো, কাৱন তাৱ মাথায় কিছু চলছে।

ক্লাবের তীব্র মিউজিকের তালে তালে ছেলে মেয়েরা নাচছে, আলো আর ধোঁয়ার মধ্যে এক অদ্ভুত উন্মাদনা।
ক্রিশ এক কোণে বসে একটার পর একটা পেগ শেষ করছে।
আমান হালকা দুলতে দুলতে ক্রিশের পাশে এসে বসল।
আমান: কী ব্যাপার ব্রো, আজ এমন ঝিমাচ্ছিস কেন?
ক্রিশ (চুপচাপ গ্লাসেৱ দিকে তাকিয়ে): আচ্ছা, কারও কথা যদি বারবার মনে পড়ে, তাহলে কী করা উচিত বলে তুই মনে করিস?
আমান (হেসে): সেটা নির্ভর করছে তুই কার কথা ভাবছিস তার ওপর, ভাই।
ক্রিশ হঠাৎ গ্লাসটা টেবিলে আছড়ে ফেলে উঠে দাঁড়াল।
ক্রিশ: একটা লেদা-মার্কা মেয়ে বারবার মনে পড়ছে, সালা— মেজাজটাই বিগড়ে দিচ্ছে।
তার ঠোঁট, তার চোখ, চুল… সব কিছু যেন আমাকে চুম্বকের মতো টেনে নিচ্ছে!
এই সময় ছোট ড্রেস পরা এক মেয়ে এগিয়ে এসে ক্রিশকে জড়িয়ে ধরে, ক্ৰিশ ঘুৱে তাৱ ঠোঁটে ঠোঁট মেলায়।
কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ক্রিশ তাকে ঠেলে সরিয়ে দেয় আর এক চড় মারে।

ক্রিশ (রাগে): চল! হাট সালি!
আমান তাড়াতাড়ি এসে ক্রিশকে ধরে।
আমান: ভাই, বাড়ি চল। আজ তোকে দেখে মনে হচ্ছে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেছিস।
ক্রিশ টলতে টলতে বলে,
ক্রিশ: ওই সালাটাকে ফোন কর, বল আমাৱ ড্রাগস লাগবে।
আমান: কী করবি ওসব দিয়ে? ‌আজ তোৱ মেয়ে লাগবে না।
ক্রিশ (রাগে): না আমি ড্রাগস দিয়ে কাজ চালিয়ে নেবো।
এই মেয়েগুলোকেও সহ্য করতে পারছি না।
তুই করবি? চল, তোর সঙ্গে করি!
আমান (হকচকিয়ে): আরে না ভাই, আমি পুরো ভার্জিন মানুষ, তোৱ সালা মতলব ভালো না দূৱে দূৱে থাকতে হবে তোৱ কাছ দিয়ে!

রুহি আর সিমৱান বেলা কৱে ক্লাসে ঢোকার আগে কলেজের সামনের দোকানটা থেকে একটা চকলেটের বক্স কিনল।
রোদের আলোতে চকোলেটের মোড়কের চকচকে আভা যেন রুহির মুখে পড়ে আরও উজ্জ্বল করে তুলছিল তাকে।
আজ রুহি পরেছে হালকা হলুদ রঙের চুড়িদার — একদম সাদাসিধে, কিন্তু চোখে পড়ার মতো।
চুলগুলো সুন্দর করে বেণি করা, কপালে ছোট্ট টিপ, আর ঠোঁটে হালকা হাসি।
সিমৱান তাকিয়েই বলে ফেলল —

“তুই যেদিনই এমন করে সাজিস, সেদিন সবাই তোৱ দিকে তাকিয়ে থাকে।”
রুহি হেসে মাথা নাড়ল, “বোকা, আমি তো এমনিতেই রোজকার মতোই সাজি।”
দু’জনেই হেসে কলেজের গেট দিয়ে ভেতরে ঢোকে।
তারা সরাসরি চলে গেল সেই জায়গাটায়, যেখানে আগের দিন ক্ৰিশ আর তার বন্ধুরা বসেছিল।
চারপাশে একটু নিরবতা, পাতা ঝরে পড়ছে, বাতাসে হালকা ধুলো।
আজ জায়গাটা একদম ফাঁকা। কোনো হাসির শব্দ নেই, কোনো চেনা মুখও না।
সিমৱান মুখ বাঁকিয়ে বলল, “কী ব্যাপার, আজ ক্ৰিশ রা কেউ এল না নাকি?”
রুহি কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলল, “কে জানে! চল, ক্লাসে যাই।”
কিন্তু সিমৱান দাঁত কামড়ে বলল, “না না, আমরা এখানেই থাকব।
ওরা এলে এখানেই আসবে নিশ্চয় , চকলেট টা এনেছি যখন দিয়েই যাবো।”
রুহি অবাক হয়ে তাকাল, “এত সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছিস কেনো?”

সিমরান মুচকি হেসে মুখ ফিরিয়ে নিল, “না রে, কিছু না। তুই বুঝবি না।”
(মনে মনে ভাবে) — “আমি তো লাভ লেটারটা চকলেট বস্কেৱ ভিতৱ ঢুকিয়ে দিয়েছি।
পরে আলাদা করে দেওয়াৱ মতো সাহস আমাৱ নেই্, তাই এই বক্সটা ‌আজ দিতেই হবে।”
রুহি আবার জিজ্ঞেস করল, “এত কী ভাবছিস রে?”
“না মানে… কিছু না,” — সিমৱান তাড়াতাড়ি উত্তর দিল।
ঠিক তখনই তার ফোন বেজে উঠল।
“এক মিনিট, বাড়ি থেকে ফোন এসেছে, একটু কথা বলে আসি।”
বলে সে ফোন নিয়ে একটু দূরে চলে গেল।
রুহি একা দাঁড়িয়ে রইল, বাতাসে তার চুলগুলো একটু এলোমেলো হয়ে গিয়েছে।
হঠাৎই গেটের দিক থেকে ইঞ্জিনের আওয়াজ শোনা গেল। রুহির চোখ সেদিকে ঘুরল।
গেট দিয়ে ঢুকছে ক্ৰিশ, কালো রঙের শার্ট আর কালো জিন্স পরা।
সূর্যের আলো পড়ে শার্টটা যেন আরও চকচক করছে।
পেছনে আমান বসে আছে, মুখে হালকা হাসি।

ক্ৰিশের চোখে সানগ্লাস, কিন্তু তবুও ওর উপস্থিতিতে একটা অদ্ভুত আকর্ষণ, যেন চারপাশের হাওয়াটাই থেমে গেছে।
রুহির বুক ধক করে উঠল। সে নিঃশব্দে তাকিয়ে রইল, চোখ সরাতে পারছিল না।
ওই মুহূর্তে সিমৱান ফোনে কথা শেষ করে ফিরে এল।
সিমৱান: “চল, অন্য জায়গায় খুঁজি ওদের। হয়তো ক্যান্টিনের দিকে আছে।”
রুহি (চোখ না সরিয়ে): “না, দরকার নেই। দেখ, ওইদিকে।”
সিমৱান তাকিয়ে দেখল ক্ৰিশ বাইকে হেলান দিয়ে দাঁড়ালো ভঙ্গিটা দেখে ওর বুকেও হালকা ধাক্কা খেল।
রুহি আস্তে বলল, “চল, যাই ওর দিকে।”
দু’জন ধীরে ধীরে ক্ৰিশের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল।
ক্ৰিশ বাইকটা স্ট্যান্ডে দিয়ে বসে সিগারেট ধরাল।
আকাশে হালকা রোদ, কলেজের মাঠের ধারে কয়েকটা পাতা উড়ছে, আর ক্ৰিশের চোখে একরকম অলসতা।
আমান হঠাৎ কনুই দিয়ে ঠেলে বলল,

“ভাই, সামনে তাকা… দুইজন সুন্দরী আমাদের দিকেই আসছে।”
ক্ৰিশ ধোঁয়া ছেড়ে অলসভাবে বলল,
“সুন্দরী নাকি, দেখি তো…”
ধোঁয়ার ফাঁক দিয়ে চোখ তুলে তাকাতেই ওর দৃষ্টি থেমে গেল।
দূর থেকে দু’জন মেয়ে এগিয়ে আসছে — একজন পরেছে পিঙ্ক স্যুট, আরেকজন হলুদ রঙের চুড়িদার। সূর্যের আলো পড়ে সেই হলুদটা যেন সোনার মতো ঝলমল করছে।
আর তখনই ক্ৰিশের চোখ আটকে গেল সেই হলুদ পোশাক পরা মেয়েটির মুখে।
একটা সরল মুখ, যেন নরম ফুলের পাপড়ির মতো।
চোখে একরাশ লাজুকতা, তবুও একটুখানি হাসির ছায়া আছে ঠোঁটে।
ক্ৰিশেৱ গলা শুকিয়ে গেল।
সিগারেটের ধোঁয়া এক মুহূর্তে বাতাসে মিলিয়ে গেল, কিন্তু ওর চোখ আর নড়ল না।
ক্ৰিশ (মনে মনে) — “পুৱো হলুদ পৱি! এই মেয়েটা আমায় শেষ করে দেবে মনে হচ্ছে। কেন এতো সুন্দৱ হলো, কে বলেছিলো এত সুন্দৱ হতে।”

আমান পাশে থেকে ফিসফিস করে বলল,
“কী রে ভাই, জমে গেলি কেন? দেখেই তো থেমে গেলি!”
ক্ৰিশ ধীরে ধীরে হাসল, কিন্তু চোখ এখনো রুহির দিকেই —
বাতাসে রুহির বেণি দুলে উঠছে, ক্ৰিশের মনে হল, যেন প্রতিটা দুলুনি তার বুকের ভেতরে কোনো অজানা সুর বাজাচ্ছে।
তার সিগারেটটা আধখাওয়া অবস্থায় মাটিতে ছুড়ে দিয়ে পায়ে চাপা দিল ক্ৰিশ।
চোখ নামাতে চাইল, কিন্তু নামাতে পারল না।
মনে হল, এই মেয়েটাৱ মধ্যে একটা অলৌকিক ক্ষমতা আছে যা ক্ৰিশ কে টানছে।
রুহি আর সিমৱান ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে ক্ৰিশ আর আমনের সামনে দাঁড়াল।
চারপাশে হালকা হাওয়া বইছে, তবুও রুহির বুকের ভেতরটা কেমন জানি ধকধক করছে।
হাতের চকোলেট বক্সটা শক্ত করে ধরে রেখেছে সে।
রুহি থেমে গিয়ে লাজুক গলায় বলল —

“সরি, ক্ৰিশ ভাই… আগের দিন আমি ইচ্ছে করে কিছু করিনি।
সেদিন যা ঘটেছিল, তার জন্য খুবই দুঃখিত।”
সে আস্তে করে হাত বাড়িয়ে চকোলেটের বক্সটা দিল।
ক্ৰিশ ভ্রু কুঁচকে একটু অবাক গলায় বলল,
“Who are you? আর কাল কী হয়েছিল?”
আমান হেসে বলল,
“ভাই, তোর মনে নেই কালকে—”
কিন্তু ক্ৰিশ সঙ্গে সঙ্গে থামিয়ে দিল,
“তুই চুপ কর আমান!
এই মেয়ে তুমি বলো, কাল কী হয়েছিল? আমি তো তোমায় চিনি না।”
রুহি ভয় পেয়ে গেল।
মনে মনে ভাবল, “লোকটা কি পাগল নাকি?
একদিন আগের দিনেৱ সব ভুলে গেছে?”
তবুও সাহস করে বলল —
“আগের দিন আপনার ফ্রেন্ডরা র‍্যাগিং করছিল, তারা বলেছিল আপনাকে কিস করতে, তাই আমি… আমি তাই করেছিলাম।

আর সেই জন্যই আজকে আপনাকে sorry বলতে এসেছি, এই চকোলেটটা দিতে… আৱ আমি রুহি।”
ক্ৰিশ একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিল রুহির ঠোঁটের নড়াচড়ার দিকে।
যেন শব্দগুলো শোনার চেয়ে তার মুখের দিকেই মনোযোগ বেশি ছিল।
কিন্তু ৱুহিৱ ভাই ডাক শুনে তাৱ মাথা বিগৱে যায়!”
ক্ৰিশঃ “এই লেদা মাৱকা মেয়ে, আমি কোন এঙ্গেল দিয়ে তোমাৱ ভাই লাগি”
তার গলার ধমকে রুহি চমকে উঠল, চোখ বড় বড় হয়ে গেল।
তবুও কাঁপা গলায় বলল —
“না মানে… সবাই তো আপনাকে ভাই বলে—”
ক্ৰিশ কড়া গলায়ঃ “সবাই বলুক, কিন্তু তুমি বলবে না। আমার নাম ধরে ডাকবে। ক্লিয়ার?”
রুহি নিঃশব্দে মাথা নাড়ল, বুকের ভেতর কাঁপন লেগে আছে।
ক্ৰিশ ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি এনে বলল,
“আমাকে কি তোমার কিন্ডারগার্ডেনেৱ
বাচ্চা মনে হয়, যাকে চকলেট দিয়ে শান্ত করতে হবে?”

সিমৱান তাড়াতাড়ি বলল,
“না না, আসলে এটা sorry gift, ভাই… মানে—”
ক্ৰিশ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
“আমি কি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি?”
সিমৱান চুপ করে গেল। ওর চোখে ভয়, মুখে কোনো শব্দ নেই।
ক্ৰিশ তখন নিচু গলায় বলল,
“এখন যাও। ক্লাসে যাও দু’জনেই।”
রুহি মাথা নিচু করে সিমৱানের হাত ধরে চলে যেতে লাগল।
কিন্তু তখনই পিছন থেকে ক্ৰিশের গলা শোনা গেল —
“এই লেদা মার্কা মেয়ে, শোনো!”
রুহি চমকে পিছন ফিরল, “জী…?”
ক্ৰিশ এগিয়ে এসে ওর হাত থেকে চকোলেটের বক্সটা নিয়ে বলল,
“আমার একটা কুকুর আছে, ও চকোলেট খেতে খুব ভালোবাসে। এটা ওকে খাইয়ে দেব।”
রুহি স্তব্ধ হয়ে গেল। ওর গলা শুকিয়ে গেছে।
সিমৱান মুখ চেপে হাসি লুকিয়ে ফেলল, কিন্তু মনটা খুশিতে ভরে গেল — “তাৱ চিঠি পড়বে কৃশ!”
সে রুহির হাত টেনে বলল,
“চল, ক্লাসে যাই।”
দু’জন আস্তে আস্তে হেঁটে চলে গেল।
পিছনে দাঁড়িয়ে ক্ৰিশ চকোলেটের বক্সটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে, ঠোঁটে এক চিলতে হাসি খেলছে।

সন্ধ্যার নরম আলোয় শহরটা ধীরে ধীরে নিস্তব্ধ হয়ে আসছে।
সেই সময়েই ক্ৰিশ বাড়ি ফিরে এল—ঘামে ভেজা শরীর, মুখে ক্লান্তির ছাপ, কিন্তু চোখে এক অদ্ভুত চিন্তার রেখা।
যেন সারাটা পথজুড়ে সে কারও কথা ভেবে এসেছে।
বাথরুমের দরজা বন্ধ করে ক্ৰিশ শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে পড়ল।
ঠান্ডা জলের ধারা তার কাঁধ বেয়ে নামছে, অথচ মনটা অন্য কোথাও হারিয়ে গেছে।
রুহির হাসিটা, তার ঠোঁটের নড়াচড়া, “সরি ক্ৰিশ ভাই” বলে চকলেট বক্সটা এগিয়ে দেওয়া—সব কিছুই আবার চোখের সামনে ভেসে উঠল।
নিজের সঙ্গে নিজেই কথা বলে ওঠে ক্ৰিশ—
“কি হয়েছে তোর? তুই তো এরকম ছিলি না। ঐ একটা লেদা মাৱকা মেয়ের কথা এত মনে পড়ছে কেন?”
স্নান শেষে তোয়ালে পেঁচিয়ে আয়নার সামনে এসে দাঁড়ায় সে।
হঠাৎই তার নজর পড়ে বিছানার উপর ফেলে রাখা রুহির দেওয়া চকলেট বক্সটার দিকে।
ঠিক তখনই তার পোষা কুকুর টমি ছুটে আসে।
বিছানায় লাফ দিয়ে উঠে সরাসরি বক্সটার উপর হামলা চালায়।
ক্ৰিশ তাড়াতাড়ি বক্সটা ছাড়িয়ে নিয়ে বলে—

“এই টমি একদম না!
এটা তোৱ বাবাকে তোর মা দিয়েছে! জানিস না, বাবা-মায়ের পার্সোনাল জিনিসে হাত দিতে নেই?”
টমি ক্ৰিশের কোলে উঠে আসে, গায়ে মুখ ঘষে আদর করতে থাকে।
ক্ৰিশ হেসে বলে—
“উম্ম, একদম না! এটা আমার, তুই একটাও পাবি না।
চল, যা তোর খাবার দিয়ে এসেছি ৱান্নাঘৱে ।
টমি মুখ ভার করে কোলে থেকে নেমে যায়।
ক্ৰিশ কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে থাকে, তারপর আবার বক্সটার দিকে মন দেয়।
বক্স খুলতেই ভেতর থেকে নানা রকম চকলেটের মিষ্টি গন্ধ বেরিয়ে আসে।
তার মাঝখানে একটা ভাঁজ করা ছোট কাগজ।

mad for you part 2

ক্ৰিশ অবাক হয়ে কাগজটা তুলে নিল।
খুলতেই হাতের লেখা অক্ষরগুলো চোখে পড়ল।
কাগজে লেখা প্রতিটি শব্দ যেন ধীরে ধীরে ক্ৰিশেৱ বুকের ভেতর কেঁপে উঠল।
চোখের কোণে হালকা হাসি ফুটে ওঠে, ভ্রু কুঁচকে যায়, তারপর ঠোঁটের কোণে মিষ্টি এক দুষ্টু হাসি।
সে ফিসফিস করে বলে—
“বাহ, যতটা লেদা ভেবেছিলাম, ততটা না! লাভ লেটার লিখতেও জানে মেয়েটা…intresting.
শিকার নিজেই এসে শিকারির কাছে ধরা দিচ্ছে—এই সুযোগ কি আর হাত ছাড়া কৱা যায়?”

mad for you part 4

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here